১.
বাংলার আকাশে এখন বৈশাখী সংকীর্তন। দ্রুতবেগে ধাবমান বিশাখা নক্ষত্র। আজ বাদে কাল ভোরেই সে আছড়ে পড়বে বাংলার দুয়ারে দুয়ারে। বরণের ডালা নিয়ে তাই মানুষের অপলক অপেক্ষা নির্নিমেষ নয়নে।
২.
বৈশাখের উত্তাপ আমার ভিতরও সংক্রমিত হল। একসময় টিকতে না পেরে রাকিবকে ফোন দিলাম, – ‘কাল রমনায় যাবি?’
রাকিব নিরুত্তাপ কণ্ঠে বলল, – ‘ঐ জায়গায় যাওয়ার কোন ইচ্ছা আপাতত আমার নাই।‘
আমি বললাম, – ‘ক্যান, তুই বুমারে ডরাস নিকি?’
রাকিব বলল,- ‘আসলে এইসব অনুষ্ঠানে যাওয়া ঠিক না। ইমান নষ্ট হওয়ার চান্স আছে।‘
আমি অবাক হয়ে বললাম,- ‘কি বলিস, দুই-চারটা গান শুনলেই ইমান নষ্ট হয়ে যায়? তোগো ইমাম সাহেবের নয়া ফরমান নাতো আবার?’ রাকিবের কাছেই শুনেছি ওদের পাড়ার জাঁদরেল এক ইমাম সাহেবের কথা, যিনি নিত্য নতুন ধারা উপধারা জারি করে এলাকাটিকে ধর্মের সুশীতল ছায়ায় নিয়ে আসছেন আস্তে আস্তে। সবাই সেখানে নাক-চোখ-মুখ বুঁজে ইমাম সাহেবের কথামৃত গেলাসে গেলাসে পান করে।
রাকিব যেন কিছুটা শ্রাগ করল, – ‘শুনছি ছায়ানট একটা শয়তানের আখড়া। ছায়ানটের ছাত্র-ছাত্রীরা প্রকাশ্যে ঢলাঢলি করে। নেশা করে। তাই ইমাম রমনায় যাইতে নিষেধ কইরা ভুল কিছু করে নাই। ‘
আমি বললাম, – ‘কিন্তু আমরা তো ওগো ঢলাঢলি দেখতে যাইতেছি না; আমরা যাইতেছি গান শুনতে।’
রাকিব বলল, – ‘ঐসব বিধর্মী গান শোনাও ঠিক না।‘
আমি বললাম, – ‘তাইলে তুই আগামীকাল কি করবি? সারা দিন কাথামুড়ি দিয়ে নিদ্রা যাবি নাকি?’
রাকিব বলল, – ‘রনিদের খেলার মাঠে বিকালে ব্যান্ড সংগীত আছে। ঐখানে যামু চিন্তা করতাছি। আর রনি কইছে, রাতে মালের ব্যবস্থাও থাকব। তুই তাড়াতাড়ি আইসা পড়িস। এক লগে বাইর হমুনে।‘
আমি বললাম, – ‘আরে কি কইলি? আমি ভুল শুনলাম না তো? তুই ব্যান্ড সংগীত শুনবি? মাল খাবি? তোমার ইমান থাকবো তো দোস্ত?’
রাকিব বলল, -‘দেখ, গান শুনি, মাল টানি আর যাই করি না কেন, আমার ইমান মজবুত আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে ইনশাল্লাহ। কিন্তু তোর ছায়ানট, চারুকলার পোলা-মাইয়াগুলি তো আল্লা-রাসুলই মানে না।‘
আমি আমোদিত হয়ে বললাম, – ‘তাইলে বলছিস, গান শোনা আর মাল টানার পরও ইমান থাকে? আচ্ছা, তোগো মসজিদের ইমাম মদ খাওয়া, ব্যান্ড শোনা -এগুলো নিয়া কোন ওয়াজ করে না?’
রাকিব বলল, – ‘এগুলো তো সেকেন্ডারি বিষয়। এগুলি নিয়া ইমামের মাথা ঘামানোর সময় কোথায়? ওয়ার্ল্ডের সবখানে মুসলমানরা মার খাইতেছে। ইহুদি-নাসারা-হিন্দু সব বিধর্মীরা আজ একজোট হইছে মুসলিম জাতির চিহ্ন দুনিয়া থেকে মুইছা ফেলানোর জন্য।‘
আমি বললাম, – ‘এই সর্বধর্মিয় ষড়যন্ত্রের জ্ঞানও কি ইমামের কাছ থেকে পাইলি?’
রাকিব আবারও শ্রাগ করল, – ‘এই কথা পুস্তকেই ভবিষ্যতবাণী করা আছে। পড়লেই জানতে পারবি। শুধু তাই না, বিধর্মীদের সাথে যুদ্ধে মুসলিমরাই শেষ পর্যন্ত জয়লাভ করবে। তখন পৃথিবীতে খালি একটা ধর্মই থাকবে- আর তা হইল গিয়া আমাদের ইসলাম।‘
আমি বেশ আহলাদিত হয়ে বললাম, – ‘লেখা যখন আছে, তখন তো হইয়াই যাইব। মুস্লিম জাতির আর চিন্তা কি? এখন মুসলিম জওয়ানেরা ঝাঁকে ঝাঁকে ঝাপাইয়া পড়লেই খেল খতম!’
রাকিব উৎসাহভরা কন্ঠে বলল, – ‘আর, সে জন্যই তো ইমাম প্রতি শুক্রবার একবার কইরা জেহাদের কথা মনে করায় দেয়।’ ’
আমি বললাম, – ‘আচ্ছা, হুজুর কি খালি জিহাদের কথাই কয়? চুরি, ডাকাতি, খুন-খারাবি, ঘুষ, মজুদদারি এগুলি নিয়া কোন কথা কয় না?’
রাকিব বলল – ‘এখন প্রাইমারি টার্গেট হইল মুসলিম জাতির অস্তিত্ব রক্ষা। এখন ঐসব ছোটখাট বিষয় নিয়ে কথা বলার সময় নাই ইমামের।‘
রাকিবকে ফোন করার আগে আমি বৈশাখী জ্বরে আক্রান্ত ছিলাম। কিন্তু এখন রীতিমত ঘামছি। কিন্তু এই ঘাম জ্বর না ছাড়িয়ে তাকে উলটো আরও বাড়িয়ে তুলল। আমি স্টুপিডটার সাথে আর কথা না বাড়িয়ে দড়াম করে ফোন রেখে দিলাম।
৩.
ড্রয়িং রুমে যেয়ে দেখি বড় চাচা পত্রিকা হাতে বসে রয়েছেন। উনি সরকারী কর্মচারী ছিলেন। সম্প্রতি অবসর নিয়েছেন। ব্যাপক অর্থ-সম্পদের মালিক। চাচাকে লম্বা সালাম দিলাম। আমার চাচা আবার পরহেজগার মানুষ। লম্বা সালাম শুনতে ভালবাসেন।
চাচার সাথে টুকটাক কথা হচ্ছিল। একটু পরে মা ছানার সন্দেশ দিয়ে গেলেন আমাদের। বড়চাচা জিজ্ঞেস করলেন, – ‘সন্দেশ কেন হঠাৎ?’
আমি বললাম, – ‘ পয়লা বৈশাখের সন্দেশ, চাচা। আপনি আসাতে কালকের জিনিস এডভান্স খেতে পারছি।’
চাচা বেখুশ হয়ে বললেন, ‘ব্যাপার স্যাপার তো বুঝতিছা না! তোমরা দেখি পয়লা বৈশাখরে ঈদ বানায় ফালাইতেছো?’
আমি বললাম, – ‘পয়লা বৈশাখ তো ঈদের মতই আনন্দের দিন, চাচা।‘
চাচা বললেন, – ‘খবরদার, এমন কথা যেন আর না শুনি। মুসলমানদের কেবল দুইটা ঈদ। এ ছাড়া মুসলমানদের আর কোন আনন্দের দিন থাকতে পারে না। ইসলামের নিয়মকানুন ঠিকমত জাইনা-বুইঝা কথা বলতে আসবা‘
আমি তখন মনে মনে আমার ইমানদার চাচা কি করে এত বিত্ত বৈভবের মালিক হল, তার উত্তর তালাসে ব্যস্ত। এক সময় চাচাকে একটু বাজিয়ে দেখার জন্য জিজ্ঞেস করি, – ‘আমরা কি জানা থাকলেই ইসলামের সব নিয়ম-কানুন মানতে পারি, চাচা?’
চাচা কিছুক্ষণ চিন্তা করে বললেন, – ‘এইটা ঠিক যে, আমরা সবসময় মানতে পারি না। কিন্তু যেটা পারবা, সেটা তো অন্তত পালন করবা। যেমন ধর, তুমি পয়লা বৈশাখের বিজাতীয় অনুষ্ঠান ইচ্ছাশক্তি দ্বারাই বর্জন করতে পার। তুমি ইচ্ছা করলেই নামায পড়তে পার, রোযা করতে পার। এগুলোর জন্য কোন অর্থকড়ি লাগে না। সামান্য ইচ্ছাই যথেষ্ট।‘
কিন্তু চাচার উত্তরে আমি সন্তুষ্ট হতে পারি না। ইসলামের কোন নিয়মটা আমরা জানা থাকার পরও মানতে পারি না, তার জন্য খানিক ব্রেইনস্টর্মিং করলাম। বেশিদূর যেতে হল না। চাচার জীবন বিশ্লেষণ করতেই গড়গড় করে স্লট থেকে কাচা পয়সার মত উত্তর বেরিয়ে আসলো। তবে এ নিয়ে চাচাকে আর প্রশ্ন করতে লজ্জা লাগছিল।
চাচার মিষ্টি তখনো পাতে পড়ে ছিল। আমি বললাম, ‘চাচা, আপনি কি পয়লা বৈশাখের মিষ্টি খাবেন?’
চাচা আমাকে অবাক করে দিয়ে বললেন, – ‘কেন খাব না? অবশ্যই খাব। প্রত্যেকটা খাবার জিনিস আল্লাহর নেয়ামত। এগুলো ফালায় দিলে কবিরা গুনাহ হবে।‘
মনে মনে চাচার প্রতি মুগ্ধতা বাড়ছে আমার। চাচা আসলে যেকোনো খাওয়ার জিনিসকেই আল্লাহর নেয়ামত বানাতে পারেন। চাকুরিকালীন সময়ে করা তার অঢেল সম্পত্তি আল্লাহর নেয়ামত বলেই হয়ত ফিরিয়ে দিতে পারেননি, এমনকি ধর্মের নিয়মকানুন ব্যাপকভাবে জানা থাকা সত্ত্বেও।
চাচাকে আর একটা সালাম দেই আমি। মন থেকে। চিরদিনের জন্য।
এই অংশটা জটিল হয়েছে। তবে গল্পটা বড় করলে আরও ভালো লাগতো যেহেতু প্লটটা বোরিং নয়।
@সাদ বিন শহিদ,
ঠিক বলেছেন, ভাইয়া। রাকিব বা চাচাদের কথাবার্তা ব্যাপক বিনোদন দানে সক্ষম। সুখের বিষয় হল, তারা তাদের এই ক্ষমতা সম্পর্কে সচেতন নয়, তাই আমাদের বিনোদিত হওয়ার সুযোগ অটুট থাকবে আরও বেশ কিছুদিন!
ভাল থাকবেন। নববর্ষের শুভেচ্ছা!
শূন্যের নীচের তাপমাত্রায় বঙ্গীয় নববর্ষ কখন এসে চলে গেল, কিছুই বুঝালাম না। তারপরও বঙ্গীয় নববর্ষ বলে কথা !
সবাইকে শুভেচ্ছা। (F)
@সংশপ্তক,
নববর্ষের শুভেচ্ছা!
httpv://http://soundcloud.com/soptok/fath
একটি কবিতা শেয়ার করলাম,কতটা প্রাসঙ্গিক জানিনা।
http://soundcloud.com/soptok/father
অনবদ্য হয়েছে লেখাটি। সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা।
@রিজওয়ান,
ধন্যবাদ! নববর্ষের শুভেচ্ছা আপনাকেও!
মামুন এক্কেবারে জায়গামত দিছেন। আপনি সৃজনশীল মানুষ, ভালভাবেই বাশ দিলেন।।আই মিন সৃজনশীল ভাবেই। পহেলা বৈশাখ নিয়ে অনেক আতেলেরও উন্নাসিকতা আছে, কেয়ার করি নাই কখনো,ইলিশ পান্তা খাইছি, হু কেয়ারস?… যা ভালো লাগে তাই আমার সাংস্ক্রিতি,”উন্নাসিকতা নিপাত যাক,মুক্তমন মুক্তি পাক”।
নববর্ষের শুভেচ্ছা (F)
@সপ্তক ভাই,
অনেক ধন্যবাদ।
অন্য একটা ব্লগে পড়লাম, পহেলা বৈশাখে ব্যাপক খরচাপাতি করার জন্য একটি গোষ্ঠি বেশ সমালোচনামুখর। তাদের কথা, দেশে কত গরীব মানুষ আছে, সীমান্তে কত মানুষ মরছে; তারপরও আমরা কেন মূল্যবান দেশীয় মুদ্রা খরচ করছি; বস্তুত এ নিয়ে তাদের হাপিত্যেশের শেষ নেই। এদের চিনতে অসুবিধা হচ্ছে নাতো, সপ্তক ভাই? এরা কিন্তু তারাই যারা বলে, বৃদ্ধ গোলাম আযমকে গ্রেফতার না করে সরকার কি অন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো (মানে, বিদ্যুত, ব্রিজ ইত্যাদি) করতে পারে না? এরা কিন্তু তারাই যারা ঈদে অঢেল খরচ করে; অথচ সীমান্ত বর্বরতা, গরীব মানুষ প্রভৃতির কথা তখন তাদের মনে থাকে না। আসলে এরা কখনই সরাসরি এদের মনোভাব (মানে রাজাকারদের বিচার ও বাংলা নববর্ষ পালনকে অসহ্য মনে হওয়া) প্রকাশ করতে পারে না। তাই ঘুরিয়ে-পেচিয়ে কথা বলার জন্য বিশেষভাবে দক্ষ হতে হয় এদের!
নববর্ষের শুভেচ্ছা! (F)
@কাজি মামুন,
এদের চিনতে যার অসুবিধা হয় তারা এখনো মাতৃগর্ভে ই আছে মামুন। রমনা বটমূলে এরা মাজার আবিস্কার করেছিল,শহিদ মিনারের পেছনে মাজার আবিস্কার করেছিল, সাইদি ফতোয়া দিয়েছিল,” মিনার থাকে মসজিদের উপরে, শহীদ মিনারে আবার কিসের মিনার?”… এদের চিনি, এদের বিরুদ্ধে ই আমাদের এবারে যুদ্ধ। :guli:
@কাজি মামুন,
সপ্তক আঁতেলদের রূপ ধরতে পেরেছেন। আজকাল মডারেইট মুসলিমদের পাশাপাশি এক প্রকার অতিমানবতাবাদী বাম ঘরানার নাস্তিক শিক্ষিত লোকের আবির্ভাব হয়েছে, তারা ধর্মের বা মুহাম্মদ, মুহাম্মদের ইসলাম, কোরান হাদিসের সমালোচনা তো করবেই না বরং অন্যরা করলে নাক উঁচায়। চোখের সামনে ঘটিত মুহাম্মদপ্রেমীদের খুন-হত্যা, জ্বালানি-পোড়ানি, ধ্বংসাত্বক কার্যকলাপ দেখেনা। সন্ত্রাসি জিহাদীরা যেখানে নিজ মুখে দাবী করে, তারা যা করে তা কোরান সম্মত, কোরানের নির্দেশনা মেনেই করে, তখন একদল অবিশ্বাসী শিক্ষিত নিজেদের মানবতাবাদী প্রমাণ করতে চিৎকার দিবে – ‘ইসলাম সন্ত্রাস সমর্থন করেনা, মুহাম্মদ একজন সমাজ সংস্কারক ছিলেন’। এদের আস্কারা পেয়ে ৪০ বছরে দেশ আজ এই অবস্তায় এসেছে। অথচ এমনটি হওয়ার কথা ছিলনা।
আপনি ঠিকই বলেছেন, একদিনের বৈশাখী মেলায় মানুষের উপস্থিতি দেশের সার্বিক অবস্তা প্রমাণ করেনা। যারা জেগে জেগে ঘুমায় তাদেরকে জাগানো যাবেনা। যারা সাধারণ মানুষের মাঝে বাস করে,একমাত্র তারাই পারবে জাগাতে অশিক্ষিত সাধারণ মানুষকে। তাদেরকে নিয়ে একটা সাংস্কৃতিক বিপ্লব ছাড়া এদেশের মুক্তির কোন উপায় দেখিনা।
তবু আমরা আশায় ঘর বাঁধি, সুখের সপ্ন দেখি। চলুন এই খুশির দিনে কাদেরী কিবরিয়ার কণ্ঠে কবি গুরুর গানটি শুনা যাক-
httpv://www.youtube.com/watch?v=SN2tNL4-Gl0&feature=related
@আকাশ মালিক,
কাদেরী কিবরয়ার কণ্ঠে, ‘ এসো হে বৈশাখ’ সাথে উৎসবের কিছু ছবি; চমৎকার। দূর দেশে – পত্রিকার পাতায় ছবি আর উৎসবের খবর খুঁজে বেড়াই। প্রথম আলোতে অল্পকিছু, আর কিছু মিলেনি এখনো।
আপনার কল্যাণে একটুখানি বারিবর্ষণ হলো যেন।
আর হ্যাঁ, সাংস্কৃতিক আন্দোলন ছাড়া উপায় নেই। এবার ‘আমি বাঙলায় গান গাই’ প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠ
httpv://www.youtube.com/watch?v=u5zkgaOuQ8A&feature=player_embedded
শুভ নববর্ষ।
@স্বপন মাঝি,
বেশ, তাহলে কি আমরা আরো কিছুক্ষণ গানে গানে কাটাবো? ওরিজিন্যাল গানটা আগে কোনদিন শুনা হয়নি, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। স্বাধীনতার তিরিশ বছর পরের বাংলাদেশের জনজীবনের একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র ফুটে উঠেছে হায়দার হুসেনের এই গানটিতে। গানটি আমি অনেকবার শুনেছি, তবু বারবার শুনি আর কল্পনা করি এমনটা তো হওয়ার কথা ছিলনা- আমরা কি সত্যিই ঘুরে দাঁড়াতে পারবো?
httpv://www.youtube.com/watch?v=zqESVOHHxFc&feature=related
@আকাশ মালিক,
গানটা আমারও খুব প্রিয়। বাংলাদেশের জনজীবনের একটি পূর্নাঙ্গা চিত্র -আপনি যথার্থ বলেছেন। তবে আমি ঘুরে দাঁড়ানোর, ঘুরে দাঁড়ানোর, ঘুরে দাঁড়ানোর পথ চলতেই পছন্দ করি। কতটুকু কি হবে জানি না। ঐ ‘পথ চলাতে আমার আনন্দ’
বাংলাকে খন্ডিত করণের মধ্য দিয়ে এর যাত্রা শুরু।
httpv://www.youtube.com/watch?v=PLkHwI-mw7w
গানে গানেও যদি আমাদের ঘুম একটুখানি ভাঙ্গে, তো মন্দ কী?
লেখাটি খুবই ভাল লাগলো। সুন্দর, স্বাচ্ছন্দ্য ও সাবলীল।। সংক্ষেপে বাঙ্গালী তথাকথিত মোডারেট মুসলমানদের ইসলামী মানসিকতার বাস্তব চিত্রের অনবদ্য-রূপ। আমার মতে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে সফলতম পেশা হলো “জাযকবৃত্তি“। বিদ্যা-বুদ্ধি, জ্ঞান-গরিমা, শিক্ষা-দীক্ষা ও ভাবনা-চিন্তায় অন্যান্য পেশাজীবীদের তুলনায় নিম্নতম অবস্থানে থেকেও তারা কত নামী-দামী উচ্চশিক্ষিত ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার-ডক্টরেট-প্রভাষক-প্রফেসার সহ সমাজের সর্বশ্রেণীর মানুষকে অবলীলায় শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে প্রভাবিত করে চলেছেন তা ভাবতেও অবাক লাগে!
লেখক কাজী মামুনকে অনেক ধন্যবাদ। ধন্যবাদ নিলীম আহসানকে ১৪১৯ নববর্ষের এই চমৎকার ব্যানারটি উপহার দেয়ার জন্য। মুক্তমনা কর্তৃপক্ষ, লেখক, পাঠক, সমালোচক – সবাইকে ১৪১৯ নববর্ষের শুভেচ্ছা। ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন।
@গোলাপ ভাই,
অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য। নবর্ষের শুভেচ্ছা আপনাকেও।
লেখকের লেখায় বুঝলাম রাকিব ও চাচা ইসলামের কথা বললেও ইসলামকে সঠিকভাবে অনুসরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।এমন কি ইমাম সাহেবও ইসলামকে যথাযথভাবে অনুসরণ করেনি।তারা যদি ইসলামকে সঠিকভাবে অনুসরণ করতো,অর্থাৎ রাকিব যদি ব্যান্ড সংগীত ও গরম পানীয়তে অভ্যস্থ না হতো,চাচা যদি টু-পাইস না কামাতো,ইমাম সাহেব যদি জিহাদ ও অন্যান্য কর্মকান্ডে ইন্ধন যোগাতো তাহলে তাদের কোন দোষ বা ত্রুটি পরিলক্ষিত হত না। অর্থাৎ ইসলাম ঠিক আছে,তারা সঠিকভাবে ইসলাম পালন করে নাই।
@বোকা বলাকা,
আপনি এভাবে ভাবতেই পারেন, পাঠক হিসাবে আপনার সেই স্বাধীনতা রয়েছে। অন্যদিকে, আমি যা বলতে চাই, তা যদি পাঠক বুঝতে না পারেন, তা আমারই ব্যর্থতা।
রাকিব ব্যান্ড সংগীত ও গরম পানিয়তে অভ্যস্ত না হলেও তার ভয়াবহ ত্রুটি পরিলক্ষিত হত, কারণ সে বাংলাদেশের নাগরিক হয়েও বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অন্যতম ধারক ও বাহক ছায়ানট, চারুকলা প্রভৃতিকে অসন্মান করেছে, রমনা বটমূলের অনুষ্ঠান, গান-বাজনাকে বিধর্মী বলে উপহাস করেছে।
কিন্তু তাহলে ব্যান্ড সংগীত আর গরম পানির অবতারণা করা হল কেন গল্পটিতে? উত্তর হচ্ছে, রাকিবের ভণ্ডামি তুলে ধরতে। রাকিব ধর্মের যুক্তি দেখিয়ে ছায়ানট বা রমনাকে অস্বীকার করে; কিন্তু সেই আবার ব্যান্ড সংগীত ও গরম পানির লোভ সামলাতে পারে না। সুতরাং, রাকিবের ধর্মপ্রেম আসলে লোক দেখানো; এরকম অসংখ্য রাকিব কিন্তু রয়েছে আমাদের আশে-পাশে এবং এদের চরিত্র গল্পে আঁকা যেতেই পারে, কি বলেন?
চাচার ক্ষেত্রেও একই কথা। সে সৎ চাকুরে হলেও শুধুমাত্র বাংলা কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে অপমান করার জন্য অবশ্যই ঘৃণিত হত। কিন্তু তার উপরি সম্পত্তিকে নিয়ে আসা হয়েছে তার ভণ্ডামি তুলে ধরার জন্য। তার ধর্মপ্রেম আসলে রাকিবের মতই কপট। এবং এ ধরণের চাচার সংখ্যাও পৃথিবীতে কম নয়। এই চাচারা যেটুকু তাদের পক্ষে মানা সহজ ও সম্ভব (যেমন, পহেলা বৈশাখকে হিন্দুয়ানী বলা, নামায প্রভৃতি), তা পালন করবে অক্ষরে অক্ষরে; কিন্তু যেটুকু মানা সম্ভব না (যেমন, ঘুষ পরিহার), তা মানবে না। সুতরাং, এদের ধর্ম হচ্ছে, সুবিধাবাদী ধর্ম। এরা আসলে এমনকি প্রকৃত ধার্মিকও নয়। এখন এদের কথা গল্পে তুলে আনাটা কি অন্যায়?
এবার আসা যাক ইমাম সাহেবদের কথায়। আমাদের ইমাম সাহেবরা কখনো সামাজিক সমস্যা নিয়ে কথা বলেন না। তার সামনে উপবিষ্ট থাকে ঘুষখোর, দুর্নীতিপরায়ণ, মজুদদার, মুনাফাখোরসহ সমাজের তাবৎ জনগোষ্ঠী। কিন্তু এগুলো নিয়ে কখনো কথা বলতে দেখিনি তাদের। তারা শুধু জেহাদ, পুলসিরাত, জেনানা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তো এদের চিত্র আঁকাও কি খুব দোষের?
দেখুন ধর্ম যদি সহিংসতা না ছড়াত, মানুষের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ না করত অথবা জ্ঞান-বিজ্ঞানের পথে বাঁধার প্রাচীর না হয়ে দাঁড়াত, তাহলে ধর্ম একটি সাংস্কৃতিক অনুষঙ্গ হিসাবে ইতিবাচকভাবে চলতে পারত। প্রাচীন এথেন্সের ইতিহাস আপনার নিশ্চয়ই জানা আছে। সেখানে অকল্পনীয় সহনশীল পরিবেশ ছিল; ধর্ম কখনো মানুষের স্বাধীন চিন্তার পথে বাঁধা হয়ে দাড়ায়নি।
পরিশেষে, আপনার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখার মাধ্যমে আলোচনার সুযোগ করে দিয়েছেন।
নববর্ষের শুভেচ্ছা!
@কাজি মামুন,
রাকিব বা চাচা যে ভন্ডামী করছে তাতো আমি অস্বীকার করিনাই।কিন্তু যেটুক তারা পরিপালন করেছে অর্থাৎ আমাদের সমাজ সংস্কৃতির বিরুদ্ধে, তা ধর্মের আলোকেই করেছে।তারা যদি ধর্মকে সুষ্ঠভাবে ধারণ করতো অর্থাৎ সমাজ,সংস্কৃতি মেনে চলতো তাহলে তাদের দোষের কিছু থাকতো না,এটাই আমি বলতে চেয়েছি।ধর্মের আলোকে যা করেনি তা তুলে ধরেছেন,এবং যা করেছে তা সঠিক এটাই ফুটে উঠেছে লেখায়।কিন্তু ধর্ম নামক কীট যে আমাদের মানবতাকে কুরে কুরে খাচ্ছে সে বিষয়টা আমি দেখতে পাইনি।একই কথা ইমাম সাহেবের বেলায়ও প্রযোজ্য।
@বোকা বলাকা,
সত্যি এমনটাই ফুটে উঠেছে? তাহলে নিজেকে ক্ষমা করতে পারব না।
আমার মন্তব্যে প্রাচীন গ্রিসের এথেন্স নগরীর কথা বলেছিলাম। আপনি সে বিষয়ে কিছু বললেন না। বর্তমানে ধর্মের যে প্রচলিত রূপটি আমরা দেখতে পাই, তা শুধু সুবিধাবাদীতারই জন্ম দেয়, ভণ্ডামির পোশাকে আগাগোড়া মোড়া সে, আধ্যাত্মিকতার সাথে তার সম্পর্ক শক্তিশালী অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়েও আর খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। এই সর্বগ্রাসী সুবিধাবাদকে আঁকার সামান্য চেষ্টা করা হয়েছে মাত্র।
প্রাচীন এথেন্সে ধর্ম কিন্তু কখনো জ্ঞান-বিজ্ঞানের পথে বাঁধা হয়ে দাড়ায়নি। একজন মানুষ ধ্যানমগ্ন হয়ে পাহাড়ে-পর্বতে-জংগলে পরে থাকতে চাইলে আপনি তাকে বাঁধা দিতে পারেন না। কিন্তু সমস্যা হয়ে যায় তখনই যখন ঐ লোকটি জনপদে ফিরে আসে এবং চাপিয়ে দিতে শুরু করে তার বিশ্বাস ছলে-সন্ত্রাসে!
ভালোলাগা জানিয়ে গেলাম।
সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা- (F)
@আফরোজা আপু,
অনেক ধন্যবাদ সবসময় পাশে থাকার জন্য। নববর্ষের শুভেচ্ছা। (F)
নিলীমের ব্যানার এবং মামুনের অনবদ্য লিখার জন্য ধন্যবাদ,সেই সাথে মুক্ত মনার সবাইকে নববষের শুভেচ্ছা ! (F)
@মাসুদ ভাই,
অনেক ধন্যবাদ। নববর্ষের শুভেচ্ছা আপনাকেও। (F)
২০০৬ সালে পহেলা বৈশাখ ছিল শুক্রবার। আমি তখন দেশে। সকাল বেলা সিলেট গুলশান হোটেলের পাশ দিয়ে মাদ্রাসার ছাত্রদের বিরাট একটা মিছিল চলে যেতে দেখলাম। দুপুরে শহর থেকে বাড়ি ফেরার পথে গ্রামের পর গ্রাম পের হলাম শুধু আজান আর আজান, ওয়াজ আর ওয়াজ শুনে শুনে, কোথাও বৈশাখী উৎসব দেখলাম না। আমার গ্রামের হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করায় তিনিও অবাক বিষ্ময়ভরা চোখে বলেছিলেন- ‘বোমার ডর ভয় নাই আপনার’?
উপরে কাশেম ভাই যা বলেছেন সেটাই বাস্তব, সেটাই হবে। পাহাড় জ্বলছে, সাতক্ষীরা জ্বলছে, জ্বলছে অমুসলিমদের ঘর বাড়ি, জ্বলবে সারা বাংলাদেশ, উদ্ভাস্ত হবে সংখ্যালঘুরা, একদিন সব কিছু চলে যাবে নষ্টের হাতে। নিরাপদ দূরত্বে থেকে স্বার্থ ও লোভের কাছে মগজ বন্ধক দেয়া শিক্ষিত সুশীল ভদ্র লোকেরা জ্ঞান দান করবে আর বলবে- মুহাম্মদ নিয়ে স্যাটায়ার নাটক আবুল মনসুর না লিখলেও পারতেন। সাতক্ষীরার হিন্দুরা আজ নববর্ষ উৎসব পালন করবেনা। মুহাম্মদ প্রেমীরা তাদের ঘর ছাড়া, ভিটে হীন করে দিয়েছে। তাদের অপরাধ তারা বাংলাদেশে জন্ম নিয়েছিল।
আপনার এমন সুন্দর লেখাটি পড়ে, এই আনন্দ উল্লাসের বেলায়ও সাতক্ষীরার মানুষের ভাবনায় বেদনাচ্ছন্ন মনে কিছুটা ক্ষোভ ব্যক্ত করে ফেললাম।
[img]http://i1088.photobucket.com/albums/i332/malik1956/untitled-6.jpg[/img]
@আকাশ মালিক, আপনার মন্তব্যটি পড়ে আমারও একটি ঘটনা মনে পড়ল। এমনি ২০০৫ অথবা ০৬ সালের ঘটনা হবে, শুনলাম এবার আমাদের এলাকায় কোন বৈশাখী অনুষ্ঠান বা মেলার আয়োজন হবেনা! শুনেতো টাস্কি খেয়ে গেলাম!! বলে কি ১লা বৈশাখ আর মেলা হবেনা, কোন অনুষ্ঠান হবেনা!!! এই মাঠে আমরা বুঝতে শেখার পর থেকে দেখছি বৈশাখী মেলা হয়, প্রতি বছর মেলায় কতনা আনন্দ করি, আর সেখানে এবার মেলা হবেনা! কেন??? প্রশ্নের উত্তর খুজতে গিয়ে দেখি আমাদের এলাকায় নতুন একটা মসজিদ ও মাদ্রাসা হয়েছে (মসজিদ ও মাদ্রাসাটি করেছে আমাদের এলাকার এক প্রতাবশালী ব্যক্তি এবং অগাধ টাকার মালিক কিন্তু পেশায় যিনি আদালতের একজন সামান্য পেষকার। তাহলে বুঝতেই পারছেন তাঁর এই অগাধ টাকা ও সম্পদের উৎস কোথা থেকে।) সেই মসজিদে একজন ইয়াং ইমাম এসেছেন, যিনি এলাকার মুরব্বীদের ও সাগু ইয়াং ছেলেদের বুঝাতে সক্ষম হয়েছেন যে ১লা বৈশাখের এই কালচার হিন্দুদের থেকে এসেছে, মুসলমানদের জন্য এটা হারাম সুতরাং এবার সেখানে কোন মেলা হবেনা, সেদিন মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয় সেখানে। পরে অবশ্য আমাদের কয়েকজনের প্রতিবাদের মুখে এলাকার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পদক্ষেপে সেই ইমাম ভুল শিকার করে এবং এই ঘটনার জন্য ক্ষমা চায়। পরের বছর থেকে যথারীতি ১লা বৈশাখের অনুষ্ঠান ও মেলার আয়োজন হয় সেখানে।
আমরা সেদিন যদি প্রতিবাদ না করতাম তাহলে হয়তো আজ ১লা বৈশাখের দিনেও সেখানে আল্লা-হুমা-সল্লে-আলা’ই পড়তে হতো!!! :guru: :guru: :guru:
@আকাশ মালিক ভাই,
সাতক্ষীরার কাহিনী পড়ে শোকার্ত হয়েছি; কিন্তু অবাক হইনি। আমি আমার চারপাশ দেখছি তো! এ কথা বললে অনেকে আবার মাইন্ড করতে পারে। কিন্তু আমার পর্যবেক্ষণ বলছে, বাংলাদেশের মানুষ দিন দিন আরও ধর্মান্ধ হয়ে যাচ্ছে। ছোটবেলায় যে পরিবারকে দেখেছি বৈশাখ নিয়ে মাতোয়ারা হতে, তারাই আজ নিজেদের জীবন শুধরে নিয়েছে (তাদের ভাষায়) পহেলা বৈশাখকে বর্জন করে (তাদের ভাষায় অনৈসলামিক কার্যকলাপ)। মেলায় লোকসংখ্যার আধিক্য দিয়ে পহেলা বৈশাখের জনপ্রিয়তা মাপার চেষ্টা বোকামি হবে, যেহেতু জনসংখ্যা বৃদ্ধি, প্রচার প্রভৃতির কারণে মেলায় লোক বাড়তে পারে।
সাতক্ষীরার ঘটনাটি আমাদের জন্য একটি মহা-বিপদসংকেত। অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির ধারক রাজনৈতিক দলগুলোর ক্রম আপোষকামিতাই আমাদের অসাম্প্রদায়িক আন্দোলনকে দুর্বল করে ফেলেছে আর সুযোগ করে দিয়েছে ব্যাপক হারে মৌলবাদ চাষের।
ভিন্ন আঙ্গিকে মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। নববর্ষের শুভেচ্ছা!
চমৎকার লেখা একটা।
বাংলাদেশে বাঙ্গালী তাদের প্রানের উৎসব বৈশাখী উৎসব প্রতি বছর বড় থেকে আরো বড় করে চলেছে ক্রমান্বয়ে। চেতনায় ধারন করবার মত এই বিশাল ব্যাপারটি। বাঙ্গালী চেতনার আবেশে ভালোবেসে প্রানের আবেগ দিয়ে চর্চা হচ্ছে আমাদের সংস্কৃতির একটি রক্ষাবর্ম। ধর্মাচার দিয়ে সংস্কৃতিকে অতিক্রম করা যায়না। যায়নি।
সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা (F)
@কাজী রহমান,
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
‘রক্ষাবর্ম’ শব্দটা আমার খুব পছন্দ হইছে রহমান ভাই। পহেলা বৈশাখ নিয়ে আমি যতই ভাবি, ততই অবাক হই এর অমিত সম্ভাবনা ও তাৎপর্য নিয়ে। পহেলা বৈশাখ আমাদের মুক্তি দিতে ধর্মিয় গোঁড়ামি থেকে, মুক্তি দিতে পারে রাজনৈতিক ও সামাজিক হানাহানি থেকে জাতীয় ঐক্যকে সংহত করার মাধ্যমে, মুক্তি দিতে পারে পরদেশের দাসত্ব থেকে, মুক্তি দিতে পারে সাম্রাজ্যবাদের পদলেহন থেকে।
এই অমিত সম্ভাবনার দিনে আপনাকে অমিত শুভেচ্ছা! (F)
“শুভ নববর্ষ” মুক্তমনার সবাইকে । শুভ হোক” ১৪১৯”!
@লাইজু নাহার,
ধন্যবাদ! নববর্ষের শুভেচ্ছা!
যখন গ্রামে ছিলাম, বৈশাখী মেলা নিয়ে কোন খারাপ কথা শুনিনি। উৎসবের আমেজ শুরু হয়ে যেত চৈত্র মাসেই। গ্রামীণ অর্থনীতি একটা কারণ হতে পারে। খারাপ কথা শুনতে শুরু করলাম শহরে এসে। এ হলো আমার দেখা গ্রাম আর শহর।
বৈশাখের সাথে কুবেরবাবু কিভাবে আপনার চাচার হরিহর আত্মা হয়ে গেল, তা দেখে বৈশাখী আনন্দে মন ভরে গেল। মিষ্টি না খেলেও চলবে, মানে কপালে নেই।
নিলীমের ব্যানারটা খুব খুব সন্দর হয়েছে। ধন্যবাদ।
@স্বপন মাঝি,
মিষ্টিকে নেয়ামত বানানোর ক্ষমতা যাদের আছে, মিষ্টি তাদের কপালেই জুটবে। আর কপালের লিখন স্বয়ং প্রভু সেট করে দেন কিনা! প্রভুভক্তরা ছাড়া আর কে তার ‘বস্তুসমূহ’ পেতে পারে বলেন?
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ স্বপন ভাই! আপনাকে নববর্ষের শুভেচ্ছা!
সবাইকে শুভ নববর্ষের শুভেচ্ছা।
নববর্ষ উপলক্ষে মুক্তমনার জন্য একটি চমৎকার ব্যানার করেছেন নিলীম –
[img]http://blog.mukto-mona.com/wp-content/themes/neobox/headers/mukto-mona-banner-03.png[/img]
তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আর মামুনকেও এই অনবদ্য লেখাটির জন্য সাধুবাদ।
@অভিজিৎ,
আজ মুক্তমনায় এসেই ব্যানারটি দেখে মনে হলো, কি সুন্দর! মনটা ভরে গেল। এই ভালোলাগা টুকু কিভাবে জানানো যায়, আমার অজানা ছিল। এখানে জানাতে পেরে খুব ভালো লাগছে। নুতন বছর রঙ্গিন এক মুক্তমনে অনেক ভালো লাগার মাধ্যমেই প্রবেশ! 🙂
@কাজী মামুন,
লিখাটি গতকালই পড়েছি। পড়ার পরের প্রতিক্রিয়া যা হয়েছিল তা জন্ম বাচাল বলে লিখার আগে মস্তিষ্কে কাটছাট করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। খসড়ার কাটছাট এখনো চলছে। সংশোধিত রূপটি তৈরী হলেই আপনার উদ্দেশ্যে প্রেরীত হইবে… 🙂
@ছিন্ন পাতা,
অধীর প্রতীক্ষার প্রহর গুনিতেছি; কখন খসড়ার খোসা ছাড়াইয়া আবির্ভূত হইবেক সেই সংশোধিত রূপ কথা…..
ভাল থাকবেন! নববর্ষের শুভেচ্ছা!
@অভিজিৎদা,
লেখা অনবদ্য হয়নি; কিন্তু আপনার বা আপনাদের অনবদ্য উৎসাহে হয়ত ভবিষ্যতে অনবদ্য কোন লেখা লিখেও ফেলতে পারি। 🙂
আর চমৎকার ব্যানার তৈরি করার জন্য নিলীমকে অশেষ ধন্যবাদ।
আপনাকে ও বন্যা আপাকে নববর্ষের শুভেচ্ছা। নিলীমকেও নববর্ষের শুভেচ্ছা।
লেখা ভালো হয়েছে।
সংস্কৃতি হত্যার জন্য মুসলিমদের দোষ দেওয়া যায় না।
ইসলাম যে সমাজে ঢুকেছে সেই সমাজের আদি সাহিত্য, সংস্কৃতি, পালা, পর্বণ, আচার, বিচার সব কিছুর বিলুপ্তি ঘটিয়েছে। যারা সত্যিকার মুসলিম তাদের উচিত হবে নিজস্ব সংস্কৃতির মৃত্যু ঘটিয়ে ইসলামি সংস্কৃতি–তথা আরব বেদুঈন সংস্কৃতি আঁকড়ে ধরা।
নবীজি বলেছেন, ইসলাম গ্রহন করা হচ্ছে–নতুনভাবে জন্মগ্রহন করা, মানে অতীতকে মুছে ফেলা।
@আবুল কাশেম,
(Y)
মন্তব্যে জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। নববর্ষের শুভেচ্ছা!
কেন জানি গল্প পড়তে আমি সাধারণত খুব আলসে বোধ করি কিন্তু শিরোনামে বৈশাখ শব্দটি যুক্ত থাকায় আমার চোখ আটকে গেল। ধর্মান্ধদের মনোজাগতিক চিন্তা চেতনার প্রতিফলন সুন্দর ভাবে ফুটে উঠায় লেখাটি আমার কাছে অনবদ্য লাগল। অতঃপর পড়ার পর মনে হল মন্তব্য না করলে আপনার প্রতি অন্যায় করা হবে তাই অপরাধ না বাড়িয়ে ঝটপট মন্তব্য ঝেড়ে দিলাম। (F)
@রাজেশ তালুকদার,
ভাগ্যিস, শিরোনামে ‘বৈশাখ’ শব্দটি ছিল।
কেন লজ্জা দিচ্ছেন, রাজেশ ভাই!
আপনাকে নববর্ষের অফুরান শুভেচ্ছা!
শাস্ত্রীয় ধর্ম গুলি সর্বদা মানব ধর্মের পরিপন্থী! মানব মনের হাঁসি-উল্লাস, আনন্দ-উচ্ছ্বাস, উৎসব সমূহ তথা মানবীয় ধর্ম-কর্মকে শাস্ত্রী-প্রেমিক, আজ্ঞানী ধার্মিক কখনই সুদৃষ্টিতে নেই না বরং অশুভ অসুন্দর ভাবে গ্রহণ করে তারা মেকি-আনন্দ পায়। তাদের কাছে মানুষ বা সত্য থেকে শাস্ত্র বড়! তাই তারা মানুষকে বা মানুষের আনন্দকে রীতিমত উপেক্ষা বা অবজ্ঞা ও ঘৃনার চোখে দেখে! সত্যিই মানব জাতির চিন্তা-ভাবনা কত বিচিত্র রকমফের!
আপনার সুন্দর প্রাসঙ্গিক লেখাটা সত্যি প্রশংসনীয় ও ধন্যবাদ যোগ্য! পরিশেষে……
নব নব বারতায় আনন্দের উচ্ছলতায়
এসো হে বৈশাখ, এসো হে বাঙ্গালীর মনে-প্রাণে
সুর-সঙ্গীতে, নবান্নের আনন্দে বাঙ্গালীর ঘরে-ঘরে!
পান্তা-ইলিশ, ইলিশ-পোলাও, সর্ষে-ইলিশ
দই-মিষ্টি-চিড়া-খৈ, মুড়ি-মোয়া-মুড়কি কই?
আপনি সহ মুক্তমনার সকলকে নববর্ষের শুভেচ্ছা!(F) (F) (F)
@শামিম মিঠু,
একদম সত্যি।
অসাধারণ মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। নববর্ষের শুভেচ্ছা।
:lotpot: :lotpot: :lotpot:
@shilpi,
নববর্ষের শুভেচ্ছা!
ভাই খুব মন খারাপের সময় আপনার লেখাটা পরলাম।সুন্দরভাবে সমাজের ভ্রান্তিভরা কদর্য রুপটা তুলে ধরেছেন।আজকেই বাংলা একাডেমী্যাওয়ার সময় সিএনজি চালকের কাছে বৈশাখী উৎসব হিন্দুয়ানী তা নিয়ে মুসলমানদের এত ফালাফালি ঠিক না শুনে টাশকি খেলাম।যদিও উনাকে ব্যাখ্যা দেয়ার পর উনি অনেকটা বুঝেছেন এটা বাঙ্গালীর প্রাণের উৎসব।হ্যা এটা ঠিক যে চৈত্র সংক্রান্তি ও বৈশাখের অনেক ব্যাপার হিন্দু ধর্মের লোকাচার সম্পর্কিত এবং বিক্রমাব্দ অনেকটাই মহান বাদশা :lotpot: আকবরের হাতে পরিশীলিত হয়ে বঙ্গাব্দ হয়েছে তাও পয়লা বৈশাখ যে আমাদের বর্ষবরণের উৎসবের মাধ্যমে প্রাণের মেলায় মিলার উপলক্ষ্য হয়ে উঠেছে তা অনস্বীকার্য।আপনি সহ সকল মুক্তমনাকে “শুভ নববর্ষ”।
@ডেথনাইট,
‘তাও’ শব্দটি সামান্য ব্যাখ্যা করলে ভাল হয়। বর্তমানে আমরা বাংলা নববর্ষ যে রূপে দেখতে অভ্যস্ত, সবসময় তা একই রূপে বিরাজমান ছিল না; অন্য মাস দিয়েও বর্ষ শুরু হয়েছে। বর্তমানের রূপটি আসলে ‘ফসলি সন’ যা প্রবর্তনের কৃতিত্ব সম্রাট আকবরের। কিন্তু বিক্রমাব্দ থেকে এটা আসতেই পারে। কিন্তু তাতে ‘তাও’ শব্দের প্রয়োগ হবে কেন? এটা কেমন একপ্রকার সংশয়/দ্বিধাগ্রস্ততাকে ইঙ্গিত করছে। আমাদের ভাষাতেও হিন্দু/বৌদ্ধ সংস্কৃতির প্রভাব রয়েছে। তাই বলে আমি বাংলা বলব না? নববর্ষের ব্যাপারটি তেমনি।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। আপনাকেও নবর্ষের শুভেচ্ছা।
দারুণ। (Y) সবাইকে নব বর্ষের প্রাণঢালা শুভেচ্ছা।
@তামান্না ঝুমু,
অনেক ধন্যবাদ, আপু! নববর্ষের শুভেচ্ছা!
আমাদের আশেপাশে রাকিব আর চাচাদের ছড়াছড়ি।
লেখাটি ভাল লাগল।লেখা অব্যাহত থাকুক।
@গীতা দাস,
অনেক ধন্যবাদ গীতাদি। অনেক দিন পর আবার আপনাকে মুক্তমনায় দেখতে পেয়ে অসম্ভব ভাল লাগছে। আপনার মন্তব্য সবসময় আমাকে উৎসাহ দেয়।
বাংলা নববর্ষের অফুরান শুভেচ্ছা আপনাকে, আপনার পরিবারকে।
কঠিন জিনিস হয়েছে। সাবালক হচ্ছেন আপনি। সাবাস। (Y)
@ফরিদ আহমেদ,
ফরিদ ভাই, আপনার এই মন্তব্য এবারের বৈশাখে আমার সেরা উপহার। আমি যে কি পরিমাণ আনন্দিত তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। লেখাটার শেষ লাইন নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। আপনার মন্তব্যে সব সংশয়ের অবসান হয়েছে।
আপনাকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা। মুক্তমনা পরিবারকেও নববর্ষের শুভেচ্ছা।