পুত্রটি শত সাধনার ধন
অমূল্য মানিক-রতন।
কতোনা আদর তাহার কতোনা যতন!
কন্যাটি অপ্রত্যাশিত। তাই
ঘুরে বেড়ায় অযত্নে অবহেলায়।
তার দিন কেটে যায়
আদর বিনে হেলায় ফেলায়।
পুত্রটি খায় পঞ্চামৃত
দুগ্ধ, দধি, মধু, চিনি, ঘৃত।
তার খাবারের কতো আয়োজন
কতো সাধাসাধি,
কতো হাতে-পায়ে ধরাধরি!
আর কন্যাটি খায় পুত্রটির উচ্ছিষ্ট।
সে যাহা খেতে পায় তাহাতেই তুষ্ট
তাহাই তার কাছে অমৃত।
প্রার্থিত পুত্রের জন্মে আনন্দ উৎসবের ধুম।
অনাকাঙ্ক্ষিত কন্যার জন্মে শোকের কালোছায়া
কান্নাকাটির হুলুস্থুল।
বিষম দুঃখে অনেকের উবে যায় ঘুম।
পরিবারের সকল মঙ্গল ঘটে পুত্রের সৌভাগ্যে,
কন্যাই সকল অমঙ্গলের মূল।
ক্ষণজন্মা পুত্রটি জন্ম নেয় যেই ক্ষণে
সেই ক্ষণটি হয়ে যায় শুভ।
কুক্ষণা কন্যাটি যেই ক্ষণে জন্মে
সেই ক্ষণটি হয়ে যায় অশুভ।
কন্যার তরে অত্যাবশ্যক দায়ে প’ড়ে
যৎকিঞ্চিৎ অর্থ ব্যয়ও বৃথা।
সবই জলে বিসর্জন,
কষ্টার্জিত অর্থের অযথা ভস্মীকরণ।
পুত্রের তরে অকাতরে
অর্থ ও স্নেহের বিনিয়োগে
জীবনের শেষে পাওয়া যাবে অবশেষে
বিনিয়োগের মূলধন ও সুদ সহযোগে।
কন্যা কভু পুত্রের সমতুল্য নয়।
কোন কোন ক্ষেত্রে দুটি কন্যা
মিলে একটি পুত্রের সমান হয়।
কোন কোন ক্ষেত্রে কন্যা
গননারই যোগ্য নয়।
সেই কন্যার তরে এমনতর মনোভাব
বিস্ময়ের কিছু নয়।
কবিতাটা অসাধারণ লেগেছে। আমাদের সমাজের নির্মম,কঠিন,না বলা সত্যগুলো আপনার কবিতায় উঠে এসেছে।
সবচেয়ে কঠিন আর সবচেয়ে সত্য কথা। পুরুষ নারীর থেকে উন্নত প্রজাতি এই ধারণা সভ্যতার আদিকাল থেকে চলে আসছে। ধর্ম,সমাজ,সভ্যতা সবখানে পুরুষের জয়জয়কার। জানি না একে পুরোপুরিভাবে উচ্ছেদ করা যাবে কিভাবে। তবুও শুভেচ্ছা রইল আপনাদের মত দ্রোহী নারীদের প্রতি যারা প্রতিনিয়ত শিকল ভাঙার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। (Y) (Y)
@আলোকের অভিযাত্রী,
শেকল পড়েই শেকল মোরা করব রে বিকল।
কন্যা সন্তানের জন্মকেই অনেকে উপর ওয়ালার অভিশাপ মনে করে। আর একাধিক হলে ত কথাই নেই।অন্তত একটি পুত্রের আশায় অসীম ধর্য্যের সাথে কেউ কেউ পর পর কয়েকটি কন্যার জন্ম দিয়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধি করে থাকে।
@তামান্না ঝুমু,
(Y)
@তামান্না ঝুমু,
একদম খাঁটি কথা (Y) (Y)
কালকেই সদ্য বেরোনো দেশ পত্রিকায় দেবাশিষ সেনের গো-বলয়ের দিকে থাকার সময় তিনটি কন্যাসন্তান জন্মানোর অভিজ্ঞতার কথা পড়ছিলাম। ভদ্রলোক খুবই সরস করে লিখলেও, দুঃখজনক!
যখন পশ্চিমা দেশে অভিবাসন নিয়ে আসি একটি বুকলেট ধরিয়ে দেয়া হয়েছিল । আমার দায়িত্ত এবং অধিকার সম্পর্কে। সেই বুকলেটে লেখা ছিল , নারীর প্রতি কিভাবে ব্যবহার করতে হবে, শিশুর প্রতি ব্যবহার এবং গৃহপালিত পশুর প্রতি আচরনের দিকনির্দেশনা। কিন্তু ছিল না পুরুষের প্রতি ব্যবহারের কোন দিকনির্দেশনা। ভেবেছিলাম আমি কোথায়?। পড়ে দেখলাম আমি সব যায়গায় আছি, সুপ্তভাবে। পশ্চিমা দুনিয়ায় ভেবেছিলাম নারী বুঝি খুব স্বাধীন, পড়ে বুঝলাম নারী এখানেও আসলে নারীই মানুষ না।নারী নির্যাতনের সরূপ এখানেও ভয়াবহ। খুন,গুম,এসিড নিক্ষেপ,যৌন নির্যাতন সবই আছে এখানে।
তবে ইয়ে মানে বাংলাদেশের মত আমার ঘড়ের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীও নারী 😕
@সপ্তক,
পুরুষের প্রতি কারো দাতিত্ব ও আচরণের জন্য কোন আইন প্রণয়ন করতে হয়না। কারণ আবহমানকাল ধরে পুরুষই শাসন ও শোষণ করে আসেছে।
যাক একজন নারীর অন্তত অবস্থাগত সুখবর পাওয়া গেল। যদিও সত্য যাচাইয়ের কোন ব্যবস্থা নেই:-P(জোকিং)) । অবশ্য প্রবাদ আছে, সুসংবাদ মিথ্যেও ভাল:-)
@তামান্না ঝুমু,
দাতিত্ব-দায়িত্ব।
@তামান্না ঝুমু,
দ্বিমত করিবার অবকাশ নাই। নারী “না” বলিতে শিখুক ইহাই অন্তকরনে কামনা করি।
@সপ্তক,সবক্ষেত্রে “না” বললে কিন্তু হবেনা। যেমন; নারীকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, নারী তুমি ভাত খাবে? নারী বলবে, ‘না’। তুমি কি স্বাবলম্বি হতে চাও? নারী বলবে ‘না।’ তাহলে ত চলবে না।
নারী অধিকার সচেতন হবে, অন্যায়ের প্রতিবাদী হবে। শুধু নারী হয়ে নয় মানুশ হয়ে নিজের মত বাঁচবে।
@তামান্না ঝুমু,
হাঁ
সত্যি আসলেই মেয়ে দের এই সমাজে খুব কম মূল্যায়ন করা হয়, আমার নিজের পরিবার এর ভিতরেই দেখতে পারি এই বৈষম্য। আর একটু গ্রামের দিকে গেলে সেদিক তো আরও ভয়াবহ অবস্থা। (G)
@বেয়াদপ পোলা,
যেকোন ধর্মে, যেকোন সমাজেই নারী পদদলিত।
চমৎকার। (Y)
@অভিজিৎ,
ধন্যবাদ।
তবুও আমাদের বিস্ময়ের উদ্রেক হয়,
কেননা না হওয়াটা হওয়ার থেকে চরম বিস্ময়ের।
একটি কথা মনে হয় বলা এখন জরুরী হয়ে পড়েছে, তা হলো,
‘হতাশার গান গাইবো কত আর
হতাশা থেকে নাই কী নিস্তার?
@শাহ মাইদুল ইসলাম,
চরম অবমাননায়, অবিচারে যাদেরকে পদতলে রাখা হয়েছে নানা রকম দুরভিসন্ধি করে তাদের দুঃখ আর হতাশা ছাড়া আর কি থাকতে পারে? অবশ্য কেউ কেউ বিদ্রোহ করেছে ও করছে এই অনাচারের। তি ত কছুটা পরিবর্তন হয়েছে কোথাও কোথাও। অনেকে আবার দুর্দশায় থেকেও পরমানন্দিত। নিজেদের দুরাবস্থার উন্নতি তারা চায়না। এ জন্য অবশ্য ওরা দায়ী নয়। দায়ী হচ্ছে দীর্ঘকালের চাপানো অনাচারগুলো।
@তামান্না ঝুমু, তাহলে উপায় ?
আচ্ছা পুত্র সন্তানদের এত মূল্য দে’য়া হতো কেন? কেন-ই-বা মহাভারতে দেখা যায় ছেলেদের বলা হচ্ছে, আয়ুস্মান হও, আর মেয়েদের ‘শত পুত্রে্র মা হও’।
বেঁচে থাকার বাজারে এর চেয়ে ভাল বিনিয়োগ আর কি হতে পারে?
@স্বপন মাঝি,
ঘরের কাজগুলো মেয়েরাই করে। আর ছেলেরা টর্নেডোর মত এসে সব লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে যায়। বাবা-মাকে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরাই বেশি দেখাশোনা করে। তারপরেও অধিকাংশ বাবা-মা পুত্রসন্তান কামনা করেন এবং পুত্রের পক্ষপাতিত্ব করেন।
সমাজ,ধর্ম,পরিবার সবাই-ই নারীকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেছে। মানুষ ব’লে কেউ স্বীকার করেনি কভুও। তবু নারী সবকিছু আঁকড়ে ধরে রাখে। সে ত সর্বংসহা,মূক, বধির,রক্তমাংসের রোবট।
@তামান্না ঝুমু,
একদম ঠিক বলেছেন (F) (F)
@পাহাড়ি, (F) (F)
এই দুনিয়াতে মেয়েদের এত যন্ত্রনা কিন্তু তারপরও তাদের ধম্ম কম্মের কমতি নাই। মেয়েদের কি করা উচিৎ একটু বয়ান টয়ান করেন :))