প্রথম ব্লগ লিখতে বসেছি। তাই যা বলতে চাইছি তার ঠিক কতটুকু গুছিয়ে বলতে পারবো সেই সন্দেহ নিয়েই শুরু করছি।
৪০ বছর হয়ে গেলো, ৪০ বছর! আজও দেখি অনেকে বিজয় দিবসকে স্বাধীনতা দিবস বানিয়ে দেয়। এইটুকু ভুল হয়ত আমি ক্ষমা করে দিতে রাজি আছি, কিন্তু সেদিন দেখা গেলো এক কোচিং সেন্টারের জনৈক শিক্ষার্থীকে (সে সম্ভবত এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবে), তাকে জিজ্ঞেস করা হল গোলাম আযম কে? উত্তরে সে কিছুক্ষণ আমতা আমতা করে জবাব দিলো, “আমি ঠিক নিশ্চিত নই, শুধু এটুকু জানি উনি একজন বীরশ্রেষ্ঠ।” অন্য আরেকজনের কাছেতো শোনা গেলো মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭২ সালে হয়েছিল। কারো কাছ থেকেই ৭জন বীরশ্রেষ্ঠের নাম পুরোপুরি জানা গেলো না। এই মানুষগুলোও এই দেশেরই মানুষ বিশ্বাস করতে আমি এখনো কিছুটা দ্বিধায় ভুগি। এতোটুকু পড়ে আপনি হয়তো ভাবছেন আমি একজন খাঁটি দেশপ্রেমিক। না, আমি বোধহয় ঠিক দেশপ্রেমিক নই।
যে গল্পটা শুরু করতে যাচ্ছি সেখানে দুটি চরিত্র। আমি ‘ফ’ এবং ‘ন’, আমার প্রেমিকা। আমি বগুড়ার ছেলে। স্কুলজীবন পর্যন্ত কেটেছে বগুড়াতেই। ততদিন পর্যন্ত ওখানে বিজয় দিবস, একুশে ফেব্রুয়ারী বা পহেলা বৈশাখ বেশ সাদামাটাভাবেই পালিত হতে দেখেছি। এখন অবশ্য শুনি ওখানেও প্রায় ঢাকার মতই ঘটা করে উদযাপন চলে। যাহোক, একারণেই হয়ত আমার ঠিক শহীদ মিনারে ফুল দিতে যাবার বা বিজয় উৎসবে যোগ দেবার অভ্যাস গড়ে ওঠেনি। পত্রিকায় এসবের ছবি দেখে ভালোই লাগতো, নটরডেম কলেজে সময় থেকেই ভাবতাম একবার ঠিকই যাব। কিন্তু ছুটির দিনের আলসেমি দূর করে কখনই ঠিক যাওয়া হয়ে ওঠেনি। এবারও সেই একই পরিকল্পনা ছিল। আর দশজনের মত ফেসবুকে প্রোফাইল পিকচার চেঞ্জ করে আর বিজয় দিবস উপলক্ষে একটা স্ট্যাটাস দিয়ে দিব্যি শুয়েছিলাম। কিন্তু ‘ন’ ফোন করে জানালো স্বাধীনতা স্তম্ভে বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের ইতিহাসকে উপজীব্য করে লাইট এন্ড সাউন্ড শো দেখতে যাবে আর জানতে চাইলো আমি যেতে চাই কিনা। আগেই বলেছি আমারও আগে থেকেই ইচ্ছা ছিলো তাই রাজি হয়ে গেলাম। এখানে বলে রাখা উচিৎ, ‘ন’ আমার মত দেশ সম্পর্কে এতটা উদাসীন না। সে অনেক আশাবাদী আর দেশ নিয়ে তার অনেক স্বপ্ন। বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের সক্রিয় প্রতিযোগী ছিলো একসময়। মুহম্মদ জাফর ইকবাল বা মুনির হাসানদের মত মানুষেরা যে স্বপ্ন ঢুকিয়ে দিয়েছে ওদের মনে সেগুলো বেশ ভালোভাবেই ধারণ করেছে সে।
যাহোক, ৬টায় শো। আমরা সোয়া পাঁচটায় বুয়েট থেকে রিকশা নিয়ে রওনা দিলাম। রিকশা থেকেই চারপাশের অসংখ্য মানুষকে খেয়াল করছিলাম। চারিদিকে শুধু মানুষ আর মানুষ। এর মধ্যে আবার ট্রাকের পর ট্রাক। কোন কোন ট্রাকে সাউন্ড সিস্টেমও আছে, অধিকাংশ ট্রাক ভর্তি মানুষ। তাদের গালে আবার পতাকা আঁকা এবং তারা দেখলাম ভীষণ খুশিও। আমি ‘ন’ কে বলছিলাম যে ঢাকার মানুষ যে এতো বিপুল উদ্দীপনায় বিজয় দিবস পালন করে জানতাম না। দেখে মনে হচ্ছিলো আমি বুঝি ১৯৭১ সালেই চলে এসেছি! ‘ন’ কেও দেখলাম বেশ উৎফুল্ল এরকম উৎসব উৎসব পরিবেশ দেখে।
সোহরাওয়ার্দীর গেটে পৌঁছলাম একসময়। ততক্ষণে আমরা রিকশা ছেড়ে দিয়েছি। অবর্ণনীয় ভীড়। মানুষের কথাতো বাদই দিলাম, কেউ কেউ তার মধ্যে মোটর সাইকেল ঢুকিয়েছে। এত্ত ভীড় সত্ত্বেও ঢুকেই পড়লাম। কিন্তু মানুষের স্রোত থামছিলো না। আমি খুব বিরক্তি সহকারে তাকালাম ‘ন’ এর দিকে। মনে মনে ভাবছিলাম এ কোথায় নিয়ে এলো ও আমাকে যেখানে হাঁটাতো দূরের কথা ঠিকঠাক দাঁড়াতেও পারছিনা। চারপাশে তাকিয়ে দেখি ‘ন’ ই একমাত্র মেয়ে ওখানে। এমন সময় শুরু হল প্রচন্ড ধাক্কাধাক্কি। ‘ন’ কে বললাম চল, বের হয়ে যাই এখান থেকে। ‘ন’ এমন দৃষ্টিতে তাকালো আমার দিকে যার মানে হল এমনতো হয়ই বাংলাদেশে তার জন্যে কি এটা না দেখে চলে যেতে হবে নাকি? কিন্তু ধাক্কাধাক্কি একসময় মাত্রা ছাড়িয়ে গেলো। পেছন থেকে প্রচন্ড জোরে মানুষ ঠেলে চলছিল। এতোক্ষন হাত ধরে থাকলেও, তখন আর সম্ভব হচ্ছিলো না, ‘ন’ ছিটকে কোথায় যেন চলে গেল। এবং কিছুক্ষণ পরে আমি দেখতে পেলাম ‘ন’ মাটিতে পড়ে আছে আর ওর চারপাশে অসংখ্য হায়েনা! প্রানপণ চেষ্টা করে ওর কাছে গিয়ে ওকে তুলে বাইরে বের হওয়ার চেষ্টা করতে থাকলাম। ‘ন’ এর দিকে তাকিয়েই বুঝতে পারছিলাম যে ওর উপর দিয়ে কি ঝড় বয়ে যাচ্ছে, কিন্তু এর তীব্রতা টের পেলাম যখন কেউ আমার যৌনাঙ্গ ধরে টানাটানি শুরু করলো! আমার টাকা-পয়সা আর মোবাইল ফোনও হাতড়াবার চেষ্টা চালালো হায়েনাগুলো। আমি চিৎকার করে কাকুতি মিনতি করে বাইরে বের হওয়ার জন্য সাহায্য পাবার চেষ্টা করলাম। এভাবে কিভাবে যেন একসময় গেটের কছে চলে এলাম। বের হয়ে দুইজন কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে সম্ভবত বুঝতে চেষ্টা করলাম কি হল কিছুক্ষণ আগে আমাদের সাথে! ‘ন’ কে একবার জিজ্ঞেস করতেও সাহস পেলাম না যে ও ঠিক আছে কিনা। শুধু একবার সে বলল যে আমি ভেবেছিলাম আজ বেঁচে ফিরতে পারবোনা। ও যে এর মাঝেও সংজ্ঞাহীন হয়ে যায়নি এতেই আমি বেশ অবাক হচ্ছিলাম। শুধু জিজ্ঞেস করলাম যেতে পারবে? ও হ্যাঁসূচকভাবে মাথা নাড়তেই দুজনে হাঁটতে শুরু করলাম।
ওকে পৌঁছে দিয়ে নিজে বাসায় ফিরলাম। সারা রাস্তায় ভয়ে জিজ্ঞেস করতে পারিনি ঠিক কি কি হয়েছে ওর সাথে।শুধু একবার সে বলল যে আমি ভেবেছিলাম আজ বেঁচে ফিরতে পারবোনা। ফিরে এসে ফেসবুকে আমাদের অনেক পরিচিত বন্ধুদের সাথে যখন ঘটনাটা শেয়ার করছিলাম তখন ‘ন’ শুধু এই কথাগুলো লিখেছিল, “কি হচ্ছে কিছু বুঝে উঠতে পারছিলাম না। শুধু একবার শুনলাম ‘ফ’ বলছে, ‘ন’ ঢুকতে পারবে না। চলো বের হই। এটা শোনা মাত্র দেখলাম আমি মানুষের ধাক্কায় কই যেন চলে যাচ্ছি। ‘ফ’ আমাকে টানার চেষ্টা করছে। আমি কোনভাবেই নিজের ব্যালান্স রাখতে পারছি না। এবং আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন হাত ঘোরাঘুরি করছে। আমি পড়ে গেলাম ওখানে,আমার মনে হল এখনই মানুষের পায়ের চাপে আমি মারা যাবো। হঠাৎ দেখলাম ‘ফ’ কিভাবে যেন হাত দিয়ে আমাকে টেনে তোলার চেষ্টা করছে। যেই আমি উঠে দাঁড়ালাম,বুঝতে পারলাম আমার শরীরে এমন কোন জায়গা নেই যেখানে কারো হাত নেই। এমনকি আমার কাপড় খুলে ফেলার চেষ্টা চলছে। আমি যদি জিন্স না পড়ে একটা সালোয়ার পড়ে যেতাম তাহলে আজকে এই খবর সবাইকে পত্রিকায় পড়তে হত। আমি আর ‘ফ’ পাগলের মত হেল্প হেল্প করে চিৎকার করছিলাম। এবং সবার দিকে তাকিয়েই আমি বুঝতে পারছিলাম, এখানে হেল্প করার কেউ নেই। সবাই একই কাজে ব্যস্ত।একসময় বুঝলাম ‘ফ’ কোনভাবে আমার পেছনে এসে আমাকে ঠেলে সামনে নিয়ে আসছে। তারপরে কিভাবে যে বের হলাম, আমি নিজেও ঠিক sure না।”
এটুকু লেখার পর ‘ন’ ওর পরিচিত বন্ধুদেরকে একটা প্রশ্ন করেছিল, “পাকিস্তানিরা নির্মমভাবে বাঙ্গালীদের হত্যা করেছিলো, নারীদের ধর্ষন করেছিলো।তাই আমরা তাদের ঘৃণা করি। আজকে আমি যদি আমার দেশে গণ ধর্ষন হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাই, আমার দেশে যদি নির্দ্বিধায় মানুষ গণপিটুনি দিয়ে কাউকে মেরে ফেলতে পারে আমি কিভাবে আমার দেশকে ভালোবাসবো??
প্লিজ, আমার এই প্রশ্নের উত্তর এখন খুব দরকার।”
বন্ধুদের সাথে শেয়ার করার সময় অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম এতো ভয়াবহ না হলেও এমন অভিজ্ঞতা অনেকেরই আছে। কারো হয়তো শহীদ মিনারে গিয়ে পশ্চাদদেশে থাবা পড়েছে, আবার কারো বইমেলায়। প্রবাসী এক বন্ধুর কাছে জানতে পারলাম তার প্রেমিকাও আজ একই জায়গায় গিয়ে একই ঘটনার স্বীকার হয়েছে। দূর থেকে তার কষ্ট আমি শুধু কল্পনাই করতে পারি।
এসব শুনছিলাম আর প্রচন্ড ঘেন্না হচ্ছিলো নিজের উপর, পুরুষ হবার জন্য। পরে মনে হল আমি বোধ হয় ঠিক পুরুষ হতে পারিনি। ভীড়ের মধ্যে আমার পাশে থাকা নারীকে যৌন হেনস্থা করার পাশবিক আনন্দ পেতে আমার কখনোই ইচ্ছে করেনি, সুন্দর মেয়ে দেখে তাকে আদ্যন্ত নগ্ন কল্পনা করে আমার মুখে কখনো লালা জমে ওঠেনি। আমি ভেবেছি সুন্দর কিছু দেখে আমার মুগ্ধ হবার কথা, লালা জমিয়ে শিশ্ন উঁচিয়ে কাউকে চিরে খুঁড়ে খাবার কল্পনা কখনো করা হয়নি। একেকটা পুরুষ যেন মানসিকভাবে একেকটা হায়েনা।
আমি আর ‘ন’ যখন হাঁটছিলাম তখন কেন জানি পুরো ক্ষোভটাই দেশের উপর গিয়ে পড়ছিলো! ঘটনার দুইদিন পরে যখন লিখছি তখন অনেকটাই শান্ত হবার পরও আমারও কিছু প্রশ্ন থেকে যায়। বন্ধুরা আমাকে বুঝাচ্ছিলো যে এরকম যেকোন দেশেই হতে পারে। USA তেও pedophile/ sex offender দের অভাব নেই। আমি জানিনা, কিন্তু যারা সেদিন ওখানে ছিল তারাতো কোন একই পরিবার থেকে আসেনি কিংবা তারাতো কোন গ্রুপ হয়েও আসেনি। বিভিন্ন পরিবার থেকে, বিভিন্ন জায়গা থেকে তারা এসেছিল ওখানে কিন্তু কেউই হেনস্থা করতে একবিন্দু ছাড় দেয়নি। এরকম একদল sex offender এর মহাবেশের কোন দেশ আছে কি? আমারতো মনে হয় এরাই এখন এই দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ। যারা ভীড়ের মধ্যে সুজোগ পেয়েও কিছু করবেনা, তারাই কি আজ সংখ্যালঘু না? দেশ জিনিসটা কি আলাদা কোন বিশেষ অস্তিত্ব? আমাকে যদি এই দেশের এসব হায়েনাকে ভালোবাসা নিবেদন করতে বলা হয়, তাহলেতো এটা আমার পক্ষে সম্ভব হবে না। আর এই দেশের সংস্কৃতি? ঘৃণা করি আমি এই সংস্কৃতিকে। ছোটবেলা থেকেই খুব ভালোভাবে পরিবার থেকে পুরুষদের হায়েনা হবার আর নারীদের পুতুল হবার প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। (সিগমন্ড ফ্রয়েড নারীদের ‘penis envy’ নিয়ে আস্ত একটা থিওরী দিয়ে বসে আছেন, ভাব খানা এমন যে একখানা শিশ্ন দিয়ে উনি বিশ্ব জয় করে ফেলবেন। নগন্য সংখ্যক মানুষের কথা আর কি বলবো!) সংস্কৃতির মানেতো আর শুধু রবি ঠাকুর আর নজরুল না, পরিবারের শিক্ষা দীক্ষাওতো এর মধ্যে পড়ে, তাই না?
কোথাও একবার পড়েছিলাম, একজন ভালো মানুষ হবার জন্য ৫টি গুণাবলী থাকা প্রয়োজন। এখন ঠিক মনে করতে পারছি না কি কি গুণাবলী ছিল, কিন্তু এটুকু মনে আছে যে এর মাঝে দেশপ্রেম ছিল। আমি জানি মুক্তমনার অধিকাংশ লেখক-পাঠক দেশ নিয়ে অনেক ভাবেন। রিচার্ড ডকিন্সকে একবার বলতে শুনেছিলাম, ‘একজন মুসলিম বা হিন্দু বা খ্রিষ্টান হওয়া কিভাবে একটা গর্ব করার মত বিষয় হতে পারে? এটাতো সে অর্জন করেনি, এটা শুধুই একটা ঘটনা বা দুর্ঘটনা যে সে একটা মুসলিম/হিন্দু/খ্রিষ্টান পরিবারে জন্ম গ্রহন করেছে। তেমনি আমার মতে এই কথাটাতো দেশের জন্যও প্রযোজ্য। একটি বিশেষ দেশে জন্ম নেয়াতো একটা নিছক ঘটনাই। আমি আজকে কেনিয়াতে বা ফিজিতে বা সুইজারল্যান্ডে জন্ম নিতে পারতাম। শুধুমাত্র বাংলাদেশে জন্ম নিয়েছি বলেই আমাকে শুধু এই দেশকেই ভালবাসতে হবে, এই তত্ত্বটা আমি ঠিক মানতে পারিনা। আমি কোন বিশেষ একটা দেশ নিয়ে গর্ব করার কিছু পাইনা। গত বছর যখন মালয়েশিয়া গিয়েছিলাম তখন ফেরার আগের দিন ভাবছিলাম, কত ছোট এই পৃথিবী। আজ আমি কুয়ালালামপুরের রাস্তায় কাল হয়তো ফার্মগেটে থাকবো। ছোট্ট একটা পৃথিবীকে ভেঙ্গে দেশ-জাতি কত কিই না বানিয়েছি আমরা। আর বিভেদের পরিণাম কখনই শুভ হয়নি। যত বিভেদ বেড়েছে হানাহানি, হিংস্রতা ততই বেড়েছে। আমি এতো ভেদাভেদ চাই না, আমি তাই বিশ্ব নাগরিক হতে চাই। বাংলাদেশের শীতার্ত বা বন্যার্তদের যেমন সাহায্য করতে চাই, আফ্রিকার বাচ্চাদের দিকেও তেমনি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে চাই।
আমি পুরো বিশ্বের বিজয় উদযাপন করতে চাই। আর হায়েনার বদলে ঘরে ঘরে মানুষ দেখতে চাই।
এ ধরণের ঘটনার মধ্য দিয়ে যাদের যেতে হয় তারাই বোঝে কতটা অসহায় আর বিপন্ন লাগে নিজেদের তখন। যে তরুণ সমাজকে নিয়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখা হচ্ছে – তাদের হাতেই অপমানিত হতে হচ্ছে বাংলাদেশের মেয়েদের। ভীড়ের মধ্যে সবগুলো হাত থাবা দিতে ইচ্ছুক – একটা হাতও এগিয়ে এলো না সাহায্য করতে! “বদলে যাও বদলে দাও” আন্দোলন তবে কাদের নিয়ে?
লেখকের অভিজ্ঞতা পরে খুব কষ্ট লাগল।
এই দেশে মেয়েদের কোন প্রকার নিরাপত্তা নাই। অনেকটা এমন অবস্থায় আমি নিজে অনেকবার পরেছি আর হাজার বার অনুভব করেছি এই দেশে মেয়েদের কোন প্রকার নিরাপত্তা নাই। আর এই যে হায়নার মত জন্তু গুলো, এই দেশের অধিকাংশ যুব সমাজ, পুরুষ সমাজ এমন মানসিকতার।
আমার নিজের বোন, স্ত্রী আর মেয়ে জাতে একটি নিরাপদ জীবন পায় তার জন্য আমার এই দেশ ছেড়ে চলে যেতে ইচ্ছা করে, যে আমি কোন দিন আমার দেশ ছারার কথা ভাবতেও পারতাম না।
এই হায়না গুলো সংখায় বেশী থাকে, তারা মেয়েদের যেকোনো প্রকার টিজ করে যায়। আমদের সামনে আমাদের বোন বা আমাদের স্ত্রী কে টিজ করে ফেলে অথচ আমরা কিচছু করতে পারি না। এই অসহায়ত্তের অনুভুতি চেয়ে কষ্টের কিছু নাই। আর যারা প্রতিবাদ করতে যায়, তাদের কি পরিনিতি হয় তা তো রোজদিন খবরের কাগজ এ পড়ি।
আসলে আমরা যারা এদের হাতে পরি,আমরা একা থাকি তাই এই এরা এত সাহস পায়ে যায়। দেশ ভরে গেছে এই জন্তু গুলো দিয়ে। যেকোনো ভাবে আমাদের সবার একত্র হতে হবে এদের নির্মূল করার জন্য।
@তারেক আজিজ,
থু দিতেও ঘিন্না লাগছে।
“ন”,”ফ” কে শুভকামনা । ভাই ভাল থাকিস ।
কুকুরদের ভয়ে মানুষরা ঘরে বসে থাকবে এই হল তারেক আজিজ সাহেবের ফতোয়া। আজিজ সাহেব কুত্তাদের এখন থেকে পিটুনি দিতে শিখুন।
মেয়েরা কোথায় যাবে- না যাবে, কি করবে- না করবে, কি কাপড় পরবে, কিভাবে পরবে এসবের মাতব্বরি করার দিন শেষ। মেয়েরা যা ইচ্ছা তাই করবে, যেখানে যেতে চায় সেখানেই যাবে- আপনি মানুষ হলে আপনার দায়িত্ব পুরুষ-রুপি হায়েনাদের ছেঁচা দেয়া, ভিকটিমকে উপদেশ দেয়া নয়।
@ রিজওয়ান, মুক্তমনায় স্বাগতম এবং আপনাকে ধন্যবাদ এ রকম একটি ঘটনা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। এতে জানোয়ারেরা হয়তো বুঝতেও পারে তাদের জন্য মানুষেরা কত ঘৃণা জমা করে রাখে।
আমি উপরে প্রথম একটা মন্তব্য করেছি বিশ্ব নাগরিক হওয়াকে কেন্দ্র করে। এ লেখাটি আমি প্রথমে পড়াশুরু করে ভেবেছিলাম আমাদের স্বাধীনতার এতটা বছর পার হয়াব্র পরেও দৈন্য দশা নিয়ে কোন গতানুগতিক লেখা। তাই লেখাটি উপর-নীচ করে হটাত বিশ্ব নাগরিক শব্দটি চোখে পড়লে মন্তব্য করে চলে যাই। লেখার মাঝে এমন একটা নিদারুন ব্যপার আছে পরে পুরোটা পড়ার পর টের পাই এবং পাবার পর আবার সেই যন্ত্রনা… আমিও পুরুষ!! স্কুল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় এ পড়ার সময় দেখেছি কিছু ছেলে(এদের সঙ্খ্যা কম), গাউসিয়া মার্কেট এবং সিনেমা হল এ যেতই মেয়েদের বিশেষ অঙ্গে হাত দেবার জন্য এবং এটা বন্ধুদের মাঝে আবার গর্ব করে বর্ণনা করত। আমি এমন একজন কে বলেওছিলাম , তোর ও ত বোন আছে, জবাব দিয়েছিল,আমার বোনেরও যৌবন আছে!!! আমি থ মেরে গিয়েছিলাম। কিসের সাথে কিসের তুলনা দিল!!!। বেশী হতবাক হয়েছিলাম এ জন্যে যে আমার বোন নেই,অথচ … কি ই বা বলব …
মেয়েরা আবার মানুষ হলো কবে? তারা তো ভোগের জন্য, “পুরুষ” নামক কতগুলো জানোয়ারের খাদ্য বস্তু । খাবার জিনিষ যেচে পরে প্লেটে হাজির হইছে, তাও আবার জিন্স পরে নিজেকে সুখাদ্য বানিয়ে ।
এই লেখাটা পড়ার পরে সকাল থেকে শুধু একটা কথাই মাথায় ঘুরতেছে – সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে ।
কি বলব বুঝতে পারছি না… আসলে রাস্তাঘাটে সুযোগ পেলেই মেয়েদের গায়ে পুরুষরা হাত দিবে এইটা এখন খুবই স্বাভাবিক একটা ঘটনা। সত্যি বলতে কি, এ দেশে বসবাস করছে এবং ঘরের বাইরে যাতায়াত আছে এমন প্রতিটা নারীরই এই বীভৎস পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার কমবেশি অভিজ্ঞতা আছে… বলতে লজ্জা নেই, আমি নিজেও এই ধরনের ঘৃণ্য আচরণের শিকার হয়েছি…। এই ব্যাপারটা যে মানসিকভাবে কতটা যন্ত্রণাদায়ক তা যারা পরিস্থিতির শিকার হয়নি তারা কখনো অনুভব করতে পারবে না…। এখন তো রাস্তায় বের হলে আমি ধরেই নেই আমি এ ধরণের আচরণের শিকার হব… আমি নির্যাতিত হব। কারণ আমি নারী… মানুষ না। আর যাতে এই ধরণের নির্যাতন থেকে বাঁচতে পারি সেজন্য খুবই সতর্কতার সাথে ভিড়ের মধ্যে হাঁটতে হয়। ব্যাপারটা চিন্তা করলে আগে কান্না আসত… এখন হাসি পায়… হা হা হা…। কারণ এখন এইটা আমার কাছে একধরনের খেলা মনে হয়। পুরুষ নামক জানোয়ারের হাত থেকে গা বাঁচানোর খেলা। আমার চারপাশে আমি এখন আর কোন মানুষ দেখতে পাই না… শুধু পুরুষরুপী জানোয়ার দেখি। যেদিন এই জানোয়ারদের হাত এড়িয়ে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারি সেদিন নিজেকে এই খেলায় বিজয়ী মনে হয়, সত্যিই অনেক ভাল লাগে সেদিন। তবে আমি জানি না, সত্যি জানি না আমাদের এই খেলা কবে শেষ হবে। :'( :'( :'(
@সপ্তর্ষি,
এ তো পলায়নপরতা, এ বিজয়ের কোন অর্থ হয়না। পশ্চিমের নারীরা সত্যিকারের বিজয় অর্জন করতে পেরেছে অনেক ত্যাগ ও দীর্ঘ সংগ্রামের পরে, আপনারাও পারবেন। বাংলাদেশের ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এক ইঞ্চি জায়গাও অমানুষ জানোয়ারদের হাতে ছেড়ে দেয়া যাবেনা। এ দেশ বিরাঙ্গনাদের দেশ। আপনারা যাবেন শহিদ মিনারে খালি পায়ে, রমনা পার্কে হাটবেন স্বাধীনভাবে, সবুজ ঘাসের উপর পা ছড়িয়ে বসবেন নির্ভয়ে , আপনারা বই মেলায় যাবেন, দূর্গাপুজোয়, বৈশাখী মেলায় যাবেন ইচ্ছেস্বাধীন বস্ত্র-গায়ে, বিজয় দিবস উদযাপনে যাবেন লক্ষ ধর্ষিতা বোনের পবিত্র রক্তে রাঙ্গানো পতাকা হাতে। কোন হারামীর বাচ্চার অধিকার নেই আপনাদেরকে বাধা দেয়।
নবীণেরা জাগো, ভাই বোন হাতে হাত ধরে রাস্থায় বেরিয়ে আসো, পুরুষ নামের কয়েকটা জানোয়ারকে ধরে ফেলো। প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হও জুঁই এর হাতকাটার বিচার না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরবেনা। শ্লোগানে শ্লোগানে হায়েনাদের নাড়িভুড়ি কাঁপিয়ে তুলো- আর যেন এই বাংলায় একজন নারীও ধর্ষিতা না হয়, আর যেন কোন বোনের হাতকাটা না যায়। তোমরা পারবে, আমি জানি তোমরা পারবে। তোমাদের দাবী না মানা পর্যন্ত পার্লামেন্ট ঘেরাও করে রাখো। মনে রেখো পরাধীন বন্দীশালার জীবন নিয়ে বারবার মরার চেয়ে স্বাধীনভাবে যুদ্ধের মাঠে একবার মরা সহস্রগুণ শ্রেয়।
তারেক আজিজদের জন্য দুঃখ হচ্ছে। এরা নিজেদের পুরুষ হবার সাফল্যে বড় বেশীই উচ্ছসিত। এরা ভুলে যায় সবাই প্রথমে নারী, এরপরেই লিংগ নির্ধারনের খেলায় পুরুষ হয়। পরজন্মে বিশ্বাস থাকলে বলতাম আমি আশা করি আপনি এরপরের জন্মে বাংলাদেশী সাধারন নারী হয়ে জন্মাবেন। আফসোস, ডারুইন দুষ্ট লুক্টা এই আশাটাও কেড়ে নিয়েছে।
@দুষ্ট বালিকা, বিনয়ের সাথে বলতে চাই, আমার মনে হয়, আপনি(এবং আপ্নারা) তাকে ভুল বুঝছেন, বা বুঝতেই চাইছেন না, অথবা তাকে স্রেফ হেয়-প্রতিপন্ন মজা পেতে চাচ্ছেন।
এটা আন্ডারএস্টিমেট করার বা অফেন্সিভ আচরণ প্রদর্শণের ব্লগ নয়!
তারেখ আজিজ বুঝে নাই সিংহ এর গুহায় পা দিছে। বেচারারে ছাইরা দেন সবাই,কাইন্দা বাচুক :lotpot:
@সপ্তক,
স্যাটায়ার করতে চাইছেন বোধহয় !!!
বাদ দিন , সবাইকে দিয়ে ওইটা হয় না !!! 🙂
@তারেক আজিজ,
“স্যাটায়ার করতে চাইছেন বোধহয় !!!”
কইলাম কি আর বুঝল কি?… কার লগে স্যটায়ার করমু?। আকাশ মালিক আপনেরে আম পাতা দিছে খাইয়া মুখ বন্ধ করতে… দেখেন উপরে…:-X
@সপ্তক,
আরে সাহেব আপনি চিনলেন না, আমি তারে আসলটাই দিছি।
লেখাটা বেশ কিছুক্ষণ আগেই পড়েছি। আপনার জায়গাতে নিজেকে কল্পনা করলাম, এবং একটা নিদারুণ অসহায়ত্ব আর অন্ধ রাগ অনুভব করলাম। মন্তব্য করার মতো অবস্থা তখন ছিল না।
এবার লেখার সাথে মন্তব্যগুলোও পড়লাম। সত্যি বলতে কী, আমি ক্রমশ নৈরাশ্যবাদী হয়ে পড়তে চলেছি আমার আশেপাশে কিছু জানোয়ার এবং প্রচুর জানোয়ার সমর্থক দেখে।
আপনাদের জন্য শুভকামনা রইল। যদি পারেন, আন-আর্মড কম্ব্যাট এর অনেকগুলো ধরন প্রচলিত, কোনো একটা শিখে নিন ভালোভাবে। আমার ধারণা, কিছু কিছু ক্ষেত্রে জানোয়ারদেরকে সরাসরি বুঝিয়ে দিতে হয়, জঙ্গলে তারা রাজত্ব করলেও, মানুষের সমাজে এসে তাদেরকে খাঁচাবন্দী হয়েই থাকতে হবে।
🙁
কয়েক মাস হল জার্মানীতে এসেছি। সিনামার গল্প কাহিনীতে দেখে আমাদের সবারই এক প্রকার ধারনা হয়, পাশ্চাত্যের দেশগুলো মানে অবাধ মেলামেশার সুযোগ, চারদিকে শুধু নগ্নতা আর যৌনতা। কিন্তু এখানে এসে যেই সত্যটা চোখের সামনে দেখছি তা হল পরস্পরের প্রতি এদের অকল্পনীয় শ্রদ্ধাবোধ। লাখ লাখ মানুষের জমায়েত ‘OCTOBER FEST’ এ যাওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। দেখেছি কত স্বল্প কাপড়ে মেয়েরা ঘুরে বেড়াচ্ছে, কিন্তু কারো প্রতি কোন বিন্দুমাত্র নিরাপত্তাহীনতার অভাব নেই। মাঝ রাতের ট্রেনে মেয়েরা নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়ায় কোথাও কোন কটাক্ষ নেই।
আপনার মত পরিস্থিতিতে নিজেকে কল্পনা করতে শিউরে উঠছি। কিন্তু দেশের সব ছেলেদের মানসিকতা ক্যান যেন এরকমই হয়ে গেছে। একটু সুযোগ পেলে সব হায়েনা হয়ে যায়।
সমস্যা মনে হয় আমাদের নৈতিকতার অভাববোধ, তার কিছু দায়ভার আমাদের সংস্কৃতির উপরেও পড়ে।
অপ্রাসংগিকঃ মাঝে মাঝে চিন্তা করি, দেশের যেসব কাঠমোল্লারা ইসলাম এর অভাবে মেয়েদের নিরাপত্তা নেই বলে চিল্লাচিল্লি করে, তাদের একবার ইউরোপ ঘুরতে নিয়ে আসার দরকার।
@সোহেল, ধন্যবাদ। আমার মন্তব্যটা কি একটু দেখবেন দয়া করে? নিচের দিকে আছে…
@সোহেল, মিউনিখের মত ভদ্র শহর দুনিয়াতে খুব কমই আছে।
লেখাটা ভালো হয়েছে। কিন্তু এই ভালো লেখা পড়ে আমার মনটা তো খারাপ হয়ে গেল। আমি অবাক বাঙ্গালীদের এই অধঃপতন দেখে। আমি গ্রামেই মানুষ থাকি গ্রামেই। এই ধরনের তিক্ত অভিজ্ঞতা কখনো হয়নি। কারো কাছ থেকে কখনও শুনিও নি। যে জাতিকে নিয়ে আমার এত গর্ব এত অহংকার তাদের এত নিচে নেমে যাওয়া আমার সকল বিশ্বাস কে আস্থা কে নষ্ট করল। মনে হয় আর কথায় কথায় বলতে পারবনা
যে
” বাংলা আমার আমি বাংলার
বাংলা আমার অমিয়ধারা”
এইরকম একটি ঘটনা ঘটে গেল শাবিপ্রবি তে গত ১৬ ডিসেম্বর ।। বখাটেদের হাত থেকে ছাত্রীদের বাঁচাতে যেয়ে ক্যামিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং এর দুই ছাত্র অনিক এবং খায়রুল শেষ পর্যন্ত নিহত হয় ।। বড়োজোর বেঁচে গেলেন ।।
“ন”,”ফ” কে শুভকামনা ।।
হায়নাদের প্রতি থুঃ…
“আমি তাই বিশ্ব নাগরিক হতে চাই। ”
আমিও হইতে চাইছিলাম।কানাডার নাগরিক হইয়া দেখি এখন বাংলাদেশে যাইতে ভিসা লাগে।এইকুল অইকুল দুইকুল ই গেছে, অহন আমি না ঘরকা না ঘাটকা… ভাবছিলাম কানাডার পাসপোর্ট ে ভিসা লাগব না…কিসের কানাডা আর ভানাডা ।।এরশাদ চাচা বুড়া আঙ্গুল দেখাইয়া ভিসা চালু কইরা দিছে।অহন আমি কোন দেশের নাগরিক বুঝি না।।তয় নিজেরে বিশ্ব নাগরিক কয়া একটু সান্ত্বনা পাই। :))
@সপ্তক, “নো ভিসা রিকোয়ার্ড” সিল লাগিয়ে নিলে বাংলাদেশে যেতে ভিসা লাগে না বলে জানি।
তোমাকে মুক্তমনায় স্বাগতম, কিন্তু সত্যি দুঃখ লাগছে এমন একটা বাজে অভিজ্ঞতা দিয়ে তোমার ব্লগিং শুরু হল… একজন মেয়ে হিসেবে অভিজ্ঞতা তো অনেকই হয়েছে এ ধরণের… তাও মন কেমন জানি ভোতা হয়ে আছে তোমাদের অভিজ্ঞতা পড়ে….. আমিও গিয়েছিলাম ওখানে ১৬ তারিখে কিন্তু ভিড় দেখে বেশি ভেতরে ঢুকিনি, টি এস সিতে খেলা দেখতে গিয়ে আমার বন্ধুরা আগে আগে বের করে নিয়ে এসেছিল আমাদের, সবখানেই থাকতে হয় সাবধানে, কারণ আমি মেয়ে, আমার বয়ফ্রেন্ড, ফ্রেন্ড বা ভাই একটা মেয়ে নিয়ে বাইরে বেরিয়েছে বলে তাদেরও থাকতে হয় সতর্ক। এই সাবধানতা, সতর্কতা কেমন যেন লজ্জা দেয় আমাকে।এসব জায়গায় তো বিভিন্ন ব্যাকগ্রাউন্ড,শিক্ষার ছেলেরা থাকে, তার মানে কি অসুস্থ মানসিকতা শিক্ষিত আর অশিক্ষিত, গ্রাম্য আর শহুরে কিছুই মানেনা?
লেখক খুব বেশি মাত্রায় ক্ষুব্ধ । উনার ক্ষোভ প্রকাশের মাধ্যম দেখে আমি নিজেই উনার উপর ক্ষুব্ধ ।
@তারেক আজিজ, আমার ক্ষুব্ধতার জন্য খমাপ্রারথি। দয়া করে আমাকে একটু জানাবেন প্লিজ কিভাবে এই ঘটনা এড়াতে পারতাম।
@তারেক আজিজ,
এখন তারেক আজিজেরা এসেছেন ধর্ষকামী হায়েনাদের পক্ষ হয়ে সাফাই গাইতে। মানুষ না, পুরুষগুলো তো পুরুষ, পুরুষাঙ্গ গুলো তো নারী দেখলে উত্তেজিত হবেই, নারী কেন রাস্তা ঘাটে সামনে আসবে? তাইলেই তো হয়। ওররে, এই মেয়ে তো আবার জিন্স পড়ে গিয়েছিল। ধর্ম টর্ম কিচ্ছু মানে না। জিন্স পড়া মর্ডান মেয়ের এই ঘটনা ঘটবে না তো কার ঘটবে? ধর্ম মানলে কি এমন হত নাকি? ( ধর্ষকামী হায়েনা গুলো রাগে চুল ছেড়ে, মেয়েটা জিন্স না পরে সালোয়ার পড়ে গেলে এক হ্যাচকা টানে কাজ সেরে ফেলা যেতো। বেয়াদপ মেয়ে, জিন্স পড়ে মর্ডান হইছ, আর ধর্ষক হায়েনাগুলোরে ধর্ষন করতে দাও নাই। সব বেধর্মীর দল!)
মিস্টার তারেক আজিজ, ঐ ধর্ষকামী হায়েনাগুলোর জন্য আমার মুখে অনেক থুথু জমা হয়ছে। দোষ তো আমারই। এই ব্লগ পড়তে আসলাম কেন! তাই না? আর আপনার মন্তব্যের উত্তরটাই বা দিলাম ক্যান!
@তারেক আজিজ,
অসভ্য কোথাকার। ভদ্রভাবে কথা বলতে শিখেন নাই? এমনিতেই পরপর কয়েকটা মর্মান্তিক দুঃখজনক ঘটনা পড়ে মনটা বিলা হয়ে আছে, (জানিনা বিলা শব্দের আসল অর্থ কী, ধরে নিচ্ছি দুঃখ ভরাক্রান্ত বা খারাপ) তার উপর আপনি দেখি কাঁটা গায়ে নুন ছিটিয়েই চলেছেন।
এই নিন, [img]http://i1088.photobucket.com/albums/i332/malik1956/images.jpg[/img]
এবার আল্লাহর ওয়াস্তে মুখটা বন্ধ করেন, সারাক্ষণ ব্যা-ব্যা আর ভাল লাগেনা।
এই নারীরা ধর্ষিত হতে শুরু করে নিজ গৃহ শিক্ষক,অভিভাবক দের থেকে…চলে আমৃত্যু 🙁 বাক্যটা কী বাড়াবাড়ি মনে হচ্ছে? অপেক্ষা করুন, আমি ছোট্ট একটা গল্প লেখার চেষ্টা করছি নিজের দেখা কিছু অভিজ্ঞতা নিয়ে, আমার (হ্যাঁ আমি ছেলে যদিও…ছেলে-শিশুরাও নিরাপদ নয়) এবং আমার মেয়েবন্ধুর কিছু অভিজ্ঞতা নিয়ে।
জাতি হিসেবে আমরা পাকিস্তানি হানাদারদের চেয়ে তেমন উন্নত কিছু হতে পারিনি বোধহয় নাহলে আজও কীভাবে আমৃত্যু ধর্ষন চলতে পারে?
ব্লগারের কথা বলার মধ্যে কেমন যেন খেই হারান বা কেমন যেন অসঙ্গতি বিদ্যমান । আর সমাজের কিছু সুশীল মানুষজন বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে , চলাফেরা করবেন , আর সেই জন্য দোষ দিয়ে যাবেন একটানে সবাইকে , এর কোন মানে নাই । অন্যকে অবশ্যই শোধরাতে হবে , তবে তার আগে নিজেকে শোধরানো , নিজে যেন পরিস্থিতির শিকার না হই — এইটা নিশ্চিত করা আমার কর্তব্য । আর দেশ নিয়া উনার যে ভাবনা , তা সম্বন্ধে বলব , যে আজকে যে ছেলেটা জানে না , গোলাম আজম কে বা বীরশ্রেষ্ঠ কারা কারা —এই না জানা টাই কিন্তু তাঁদের আসল পরিচয় নয় । একজন মানুষের আসল পরিচয় বের হয়ে আসে , যখন সে পরীক্ষার সম্মুখিন হয় । শান্তিকালীন সময়ে “আমি সব জানি , আমি দেশপ্রেম দেখাই , সুতরাং আমি দেশপ্রেমিক”, আর প্রয়োজনের সময়ে লেজ গুটিয়ে পালান — এইরকম লোক ৭১ এ অনেক দেখা গিয়েছে । সুতরাং ,কোন কিছুরই চূড়ান্ত মুল্যায়ন করা উচিত নয় ।
@তারেক আজিজ,
দোষ লেখকের,তাইনা? তিনি যেখানে সেখানে যাবেন কেনো? এভাবে “মেয়েমানুষ” নিয়ে বিজয় মিছিল দেখতে গেলেতো এমনই হবে,এটাই বাস্তবতা,দোষ লেখকেরই তাইনা?? এইসব “সুশীল” দের তাহলে পহেলা বৈশাখের মেলাতেও যাওয়া উচিত না,সেখানেও এসব ঘটে,এটাই বাস্তবতা। অার কত অদ্ভুত মানসিকতার মানুষ যে দেখবো দুনিয়ায়……… :-X :-X :-X :-X ।
প্রথম লেখা ব্লগে খেই হারানো ভাব থাকতেই পারে,লেখক শুরুতেই বলেছেন এটা তার প্রথম লেখা।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
পহেলা বৈশাখে যেতে নিষেধ করি নাই , বলেছি নিজের প্রতি দায়িত্ববান হতে। বাংলাদেশে বসবাস করেন অথচ বাংলাদেশের আবহাওয়া মোতাবেক চলবেন না , এইটা যদি আপনার নীতি হয় তাহলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আরও ঘটার সম্ভাবনা আছে বইকি । কেউ যদি নিজের দোষে তার মান সম্মান হারিয়ে আসেন , আর তারপরে বাসায় বসে নিজের ক্ষোভ সারাজাতির উপর ঝাড়েন , তবে তার প্রতি আমার কোন অনুভুতি কাজ করে না । অবশ্যই এইসব নিন্দনীয় কাজ । অবশ্যই এই সব খারাপ স্বভাব থেকে আমাদের মুক্ত হতে হবে । এবং তার সাথে সাথে অবশ্যই আমাদের নিজেদের নিরাপত্তা নিজেদের নিশ্চিত করতে হবে । এইখানে যদি কেউ হুজুগে ধর্মান্ধতা বা মৌলবাদের গন্ধ পান , তবে আপনার জন্য এই 🙂 ইমো টি ছাড়া আমার আর দেয়ার কিছুই নেই ।
@তারেক আজিজ,
:-Y :-Y :-Y। আসলেই লেখক ভাই আপনি বিশাল দোষ করেছেন বিজয় দিবসে ঘুরতে বেড়িয়ে,সব দোষ আপনার, আপনার বাংলাদেশের আবহাওয়া বুঝে বাসায় বসে টিভি দেখা উচিত ছিলো।
পহেলা বৈশাখের মেলায় মেয়েদের শাড়ি টানাটানি চলে,একটি মেয়ে সেই টানাটানির শিকার হলে আপনি কি বলবেন? ১০-১৫জন মিলে মেয়েটাকে ধরলে সে কিভাবে নিজেকে বাচাবে? আপনার মতো বীরপুরুষরাও ১০-১৫জনের সাথে ১-২জন মিলে পারবেনা। তখন মেয়েটা ব্লগ লিখলে দোষ কাকে দিবেন? বিজয় দিবসেতো ঠিক সেইজিনিসটাই ঘটলো,আর আপনি বললেন নিজের দোষে মান-সম্মান হারিয়েছে। শুনে রাখুন, মানসম্মানের বিন্দুমাত্র ক্ষতি হয়নি “ফ” আর “ন” এর,সম্মান গিয়েছে বেজন্মা হায়েনাগুলোর,অবশ্য তাদের সম্মান কখনো ছিলও না।
যাই হোক মুক্তমনায় আপনার মন্তব্যগুলো ছাপা হওয়াতে খুব ভালো হয়েছে, সব মানসিকতার মানুষকে আমাদের চেনা উচিত, আপনি সে ধরণের মানুষ যে ধর্ষকের দোষ খোজার আগে ধর্ষিতার পোষাকের দোষ খুজে,আপনাকে ধন্যবাদ।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
আপনাদের মত লোকজন যারা সমাজকে ভেঙ্গে আবার নিজেদের মত করে গড়ে তুলতে চান , তাঁদের কাছে নতুন সমাধান চাওয়া ছাড়া আমার আর কিছুই বলার নেই । আমি যদি ধর্ষকের দোষ খোজার আগে ধর্ষিতার পোষাকের দোষ খুজে বেড়ান মানুষ হই , তাহলে আপনি হলেন সেই মানুষ , যারা ধর্ষিত হতে পছন্দ করেন , তাই বেলতলায় গেলে মাথায় বেল পড়বে জেনেও বেলতলায় যান । কারন ধর্ষণ যখন ঘটে তখন তো আর কিছু করা যায় না , তাই ওই মুহূর্তে উপভোগ করাই বাঞ্ছনীয় । আর ধর্ষণ শেষ হলে , হায় হায় !!! আমার সব স্যাশ !!! :'(
লুপের এই চক্কর শেষ হলে আবারো বেলতলায় ফিরে যান ধর্ষিত হবার আশায় , আনন্দ লাভের আশায় , তারপরে বাইরে এসে তেজী গলায় বক্তৃতা দিয়ে বাহবা কুড়ানোর আশায়, লুপ চলতেই থাকে।
আর সব দোষ সমাজের ।
.
.
.
জনাব রামগড়ুড়ের ছানা সাহেব , আমি এটা শুধু মাত্র আপনাকে উদ্দেশ্য করে বলছি ।
লেখকের প্রতি আমার ক্ষোভ দেশ সম্বন্ধে উনার নেতিবাচক ধারনা প্রকাশ করার কারনে , উনি নিজের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেন নাই , এইটা আমি শুধুই স্মরণ করিয়ে দিলাম মাত্র ।
@তারেক আজিজ,
হাহাহা এবারের মন্তব্যটা পুরাই ক্লাসিক। আসুন আমরা বেলতলাগুলো লিস্ট বানাই:
১. পহেলা বৈশাখের মেলা যেখানে মেয়েদের শাড়ি টানাটানি চলে
২. বিজয় দিবসের উতসব
৩. দুর্গা পুজা সহ বিভিন্ন পুজা,হিন্দু বন্ধুদের কাছে অনেকবার শুনেছি পুজায় মেয়েদের হেনস্থা করার কথা
৪. বই মেলা,এটা পুরানো বেলতলা,প্রচন্ড ভীড়ে মেয়েদের গায়ে হাত দেয়া হয়
৫. পাবলিক বাস,এটা আরো পুরানো। হেল্পাররা ভীড়ে মেয়েদের উঠতে দেয়না অথচ হারামীগুলোকে নামিয়ে দিয়েছে এমন ঘটনা একশতে একটা।
লিস্ট করতে থাকলে শেষ হবেনা। আমরা এসব জায়গায় মা-বোনদের নিয়ে যাবোনা,এসব জায়গায় বেল পড়বে এটাই স্বাভাবিক,আমরা নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঘরে বসে আঙ্গুল চুষতে থাকবো :)। বইমেলার ভীড়ে আমার মেয়েবন্ধুর গায়ে কেও হাত দিলে একই বলবেন “বেলতলায় নিয়ে গেসেন ক্যানো? জানেননা ওখানে এসব ঘটে? আগে নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন”। বাড়িতে বসে থাকা ছাড়া এসব ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উপায় কি হতে পারে?
@তারেক আজিজ,
আপনি ধর্ষন নিয়ে যা বললেন, তা নিয়ে ঠান্ডা মাথায় কিছু বলা যায় না। আগের দিন এর rape খুব মজার জিনিস সেই দিন আর নাই। rape kit আছে যেগুলো খুব সঠিক ভাবে rape হবার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে forceful sex এবং rape নির্ণয় করতে পারে। এতদিন যারা মনের আনন্দে একজন রেপ ভিক্টিমের ১/২ সাক্ষী চিন্তা করে দিবাস্বপ্ন দেখতেন তাদের দিন শেষ।
আপনার পরিচিত নারীদের new market পাঠায়েন না।
@তারেক আজিজ,
তার মানে কি আপনি পরোক্ষ ভাবে স্বীকার করে নিলেন যে বাংলাদেশের আবহাওয়া হল এই যে রাস্তায় রাস্তায় অসঙ্খ্য হায়েনা ঘুরবে, আমরা যারা ‘মানুষ’ তারা সাবধানে গর্তে লুকিয়ে চলতে হবে, আর কিছু যদি হয়েই যায় তাহলে আপনার মতো ‘উচ্চমার্গীয় বিবেকবান’ মানুষের কাছ থেকে ‘ঝাড়ি’ শুনতে হবে?
@তারেক আজিজ, আপনার কথার সাথে আমি দ্বিমত পোষণ করছি। আমাকে নিজের প্রতি দায়িত্ববান হয়ে চলতে হবে কেন? আমাকে দেশের আবহাওয়া মোতাবেক চলতে হবে কেন? সবই যদি আমিই করব দেশের আইন আদালত, প্রশাসন করবে টা কি? দেশের সকল মানুষের বিবেক বুদ্ধি তাহলে কি বেকার হয়ে বসে থাকবে? আমি নিজেকে শোধরাবো কেন? আমি কি এমন অন্যায় করলাম?
@রামগড়ুড়ের ছানা, :hahahee:
@তারেক আজিজ, আপনি একদম ঠিক বলেছেন। আমাদের সকলের উচিত ভয়ে বাসায় বসে থাকা, কখনও বের না হয়া। রেযওয়ানের উচিত শোধরান কারণ দোষ তো তারই, তিনি জানতেন না কাপুরুষের মত লুকিয়ে থাকা আমাদের সকলের করণীয়। সেজন্য মনে রাখবেন আপনার মা/বোন যখন কোন দরকারে পরে কোন ভিড় ভর্তি জায়গায় যাবেন তখন আপনার সাপোর্ট পাওয়া সেক্স অফেন্ডাররা তাদের দেহের কোন স্থানে হাত (বা অন্য কিছু) দিলে আপনি কিন্তু তাদের বাধা দিতে পারবেন না কারণ আপনিই তো তাদের সাপোর্ট করছেন। চিন্তা করেন না, আমি সেখানে থাকলে তাদের বাচানোর সর্ব চেষ্টা করব, কারণ আমি আপনার মতের সাথে একমত নই (আগের মতটি সার্কাস্টিক ছিল)
@তন্ময়,
ব্লগে বসে বসে বহুত সুপুরুষ গিরি করা যায় , কার ভিতরে কি আছে তার প্রকাশ পায় মাঠে – ঘাটে । শুধুমাত্র সাহস ই সুপুরুসের মাপকাঠি কখনই হতে পারে না । এর সাথে বুদ্ধিমত্তা , দায়িত্বশীলতা , দূরদর্শিতা , সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে পারার সক্ষমতা এমন অনেক কিছুই জড়িত ।
আমি কি করে আমার মা-বোনদের এইসব সেক্স অফেন্ডার দের হাত থেকে বাঁচাই , তা আপনার সাথে এই মুহূর্তে শেয়ার করতে প্রস্তুত নই । বনে জঙ্গলে মশা মাছি থাকবেই , তাই বলে মশা মাছির আক্রমন থেকে বাঁচার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা কিভাবে মশামাছি কে সমর্থন করা হয় , আমি বুঝতে পারলাম না । মশা মাছি মারার জন্য কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে , ইতিমধ্যে সেটা শুরু ও হয়ে গিয়েছে । কিন্তু মশা মাছি তাই বলে বিলুপ্ত হয়ে যাবে না । এদের থেকে সতর্কতা সবসময়েই নিতে হবে ।
ব্লগে ঘোড়া – হাতি মারার জন্য আসি নাই । ব্যক্তিগত জীবনে আমি কেমন , তা আমি নিজে খুব ভাল করে জানি । পরিস্থিতিতে পড়লে আমি অমুক হাতি মারব , তমুক ঘোরায় চড়ব , এমন ফাঁকা বুলি আওড়াতেও অভ্যস্থ নই । 🙂 🙂
@তারেক আজিজ,
শেয়ার করেন,আমরাও একটু শিখি কিভাবে বাচাতে হয়,আমরাতো ফাকা বুলি আওড়াউ,আপনি মা-বোনদের কিভাবে বাচান সেগুলো জানিয়ে একটু “ভরা” বুলি আউড়ান।
@তারেক আজিজ, আমি স্বীকার করছি যে আমার মন্তব্য একটু অফেন্সিভ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তাই বলে আপনি নিশ্চয় বলবেন না যে লেখক দোষের কিছু করেছিলেন। আচ্ছা, উনি না হয় করেছিলেন, কিন্তু আমার ৩০ জন বন্ধুর মধ্যে ৪/৫ জন এরকম কিছুর শিকার হয়ার কথা স্বীকার করেছেন, আসলে কতজন হয়েছেন, কে জানে। এর মধ্যে ১জন ঢাকার বই মেলা, ১জন চট্টগ্রামের বই মেলা, ১জন পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান এবং অপর জন বাসে এই রকম ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন। এদের মধ্যে আপনার মতে কারা কারা দোষী? যদি অন্তত ১জন কেও দোষী বলেন তাহলে ত বলতে হয় আমাদের সবার উচিত ভয় পেয়ে বাসায় বসে থাকা, কিন্তু আমরা এত ভয় পেতে থাকলে কিছুদিন পরে তারা ত আমাদের বাসার দরজা ভেংগে ঢুকে এই সব করার সাহস পেয়ে যাবে, তাই না? ভয় পেয়ে ‘সতর্ক’ হয়ার থেকে সেই ভয়ের কারণ দূর করা বেশি যুক্তি সম্পন্ন নয় কি?
@তারেক আজিজ,
আমিও আপনার কাছে আরেকটি জবাব চাই । সেটা হল –
জুঁই কিভাবে তার হাত কাটা থেকে রক্ষা পেতে পারত?
তার ভাই তাকে কিভাবে বাচাঁতে পারত?
আমার জবাব টাও শুনে যান –
স্বামীর কথা শুনে পড়াশুনা বন্ধ করাটাই বোধহয় সবচেয়ে ভাল সাবধানতা হত।
@তারেক আজিজ, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। আমি একমত আপনার সাথে যে আমি একজন কাপুরুষ। এই অধম একটু জানতে চায় কি ভাবে আমি এই পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে পারতাম। আমার নিজের মাথায় একটা চিন্তা মাথায় আসছে, সম্ভবত ‘ন’ বোরখা পড়ে গেলে এরকম হতনা। আপনি কি বলেন?আর একটি কথা, এই ঘটনার জন্য যদি এতই মানসম্মান হিনতায় ভুগতাম, তাইলে তো আর এই ব্লগ টা লিখতাম না,তাই না?
@রিজওয়ান, বোরখা পরলেই বুঝি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? আগে বোরখা পরানো উচিত সেই সমস্ত হায়েনাদের বিবেকে। তাদের চিন্তাচেতনা নির্লজ্জ তাই তাদের চিন্তার জগত কে আগে বোরখা পরাতে হবে, সত্যিই বোরখা যদি নিরাপত্তার প্রতিক হয়।
@মাসুদ রানা, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। বোরখা বিষয়ক আমার মন্তব্য টি sarcastic ছিল। বন্দিত্ব কখনই সমাধান হতে পারেনা।
ভাল থাকবেন।
আপনি মাত্র একটি জায়গার বর্ণনা দিয়েছেন। বাকি কে দিবে ? এইত কিছুদিন আগে আম্মার কিডনি অপারেশান এর জন্যে ঢাকায় যেতে হয়েছিল, সঙ্গে ছিল ছোটবোন। সবে মাত্র সায়েদাবাদে নেমেছিলাম, তারপর যা হল তা আজ বর্ণনা করতে পারব না। মনে হল, ঢাকায় কোন মানুষ থাকে না, থাকে সব জানোয়ার।
@কামরুল আলম, ভাই, সব খানেই হয় এই সব। এই ব্লগ লেখার পর অনেকেই ফেসবুক এ মেসেজ করে জানিয়েছে যে তাদের জীবনেও এই সব জঘন্য ঘটনা ঘটেছে। তাদের মেসেজ পরছি আর অবাক হয়ে ভাবছি কি অসভ্য জাতি ই না আমরা!
আমার কথা কিভাবে নেবেন জানিনা তবে ঘুরেফিরে কথা একটাই। এসব কিছুর জন্য কি ধর্মের বিষবাষ্পই দায়ী নয়?
প্রশ্ন রাখলাম।
@আসিফ মুজতবা, আমার মনে হয়না ধর্মের বিষবাষ্পই দায়ী এসবের জন্য। সমাজের অর্থনৈতিক অবস্থা এতটাই অশামঞ্জাসসতা যে সমস্যা আর ও গভীরে বলেই মনে হয়। পারিবারিক শিক্ষার অভাব ও একটা বড় কারন।
খুবই দুঃখজনক। এই ধর্ষকামীরা এখন সর্বত্র; এটিই সবচেয়ে আশঙ্কার কথা।
মুক্তমনায় স্বাগতম। (Y)
@রিজওয়ান,
অসাধারণ লিখেছেন ভাই। রুঢ় শোনালেও এটাই সত্যি যে অধিকাংশ বাঙালী পুরুষের অবস্থা একই। নারীকে ভোগের বস্তু না ভেবে নিজের লিঙ্গের মতই পরিপূর্ণ মানুষ ভাবা ও তাকে সেই সম্মান দেয়া বাঙালী পুরুষের পক্ষে খুবই কঠিন কাজ কারণ পরিবার,সমাজ,ধর্ম থেকে আমরা উল্টোটাই শিখে এসেছি। আমি নিজেও জানিনা কতটুকু স্রোতের বিপরীতে চলতে পারি কিন্তু চেষ্টা করি।
আমার অবস্থাও একই। আমিও বোধয় ঠিক “পুরুষ” হতে পারিনি। তবে “পুরুষ” হতে গিয়ে মনুষ্যত্ব খোয়ানোর চেয়ে “মানুষ” হতে গিয়ে পুরুষত্ব খোয়ানো ভাল। এটাই সান্ত্বনা। ভাল থাকবেন আর “ন” এর জন্য রইল শুভকামনা।
দারুন একটি লেখার জন্য ধন্যবাদ।
@প্রদীপ্ত, আপনাকেও ধন্যবাদ।
অসাধারন একটি লিখা। আর কিছু বললাম না।বাকি টা দেখা হলে বলব।
“পাকিস্তানিরা নির্মমভাবে বাঙ্গালীদের হত্যা করেছিলো, নারীদের ধর্ষন করেছিলো।তাই আমরা তাদের ঘৃণা করি। আজকে আমি যদি আমার দেশে গণ ধর্ষন হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাই, আমার দেশে যদি নির্দ্বিধায় মানুষ গণপিটুনি দিয়ে কাউকে মেরে ফেলতে পারে আমি কিভাবে আমার দেশকে ভালোবাসবো??”
@Zihad, ধন্যবাদ।
মেজাজ বিলা । ভাষার সুশীলতা বজায় রাখাও মুশকিল তাই “ন” এবং “ফ” এর প্রতি ভালোবাসা ও সহমর্মিতা জানালাম শুধু ।
মুক্তমনায় স্বাগতম ।
@নুরুজ্জামান মানিক, ধন্যবাদ।
এটুকু বাদে “ন” এবং “ফ” এর প্রতি ভালোবাসা ও সহমর্মিতা জানানো ছাড়া আর কিছুই নেই বলার।
@নিঃসঙ্গ বায়স, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।
(Y)
@O’Lee, ধন্যবাদ।
বলার কিছু নেই, এতো মানুষের দেশে অসভ্যের সংখ্যা দশ ভাগ হলেও অনেক হয়ে যায়। তবে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে দশ ভাগেরও অনেক বেশি হয়ে দাড়িয়েছে অসভ্যের সংখ্যা।
@স্বাধীন, দশ ভাগ তো দুরের কথা, আমার মনে হয় এরকম অসভ্যের সংখ্যা বাংলাদেশে শত্তর ভাগ। আসলে পরিবার থেকেই ছেলেদের সব সময় লাই দিয়ে দিয়ে মাথায় তোলে আর দুনিয়ার সব কিছু কেই নিজের সম্পত্তি বলে ধরে নেয়।
ভালো থাকবেন।
@রিজওয়ান,
মিলিয়ন ডলারের বাক্যটি বলে দিলেন। এইসব ইতর শ্রেনীর জঘন্যতম কাজগুলোর জন্য বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এটা একটা অন্যতম কারন বলে ধরে নেয়া যায়। ছোটবেলায় পরিবার থেকেই এইসব ছেলেদেরকে উদ্ধত আচরন করতে শেখানো হয়, বুঝানো হয় যে ছেলে বলেই তাদের সাত খুন মাফ, তাদের অনেক অন্যায় কর্মগুলোকে পরিবারে যৌক্তিক বলে মেনে নেয়া হয়। অন্যদিকে মেয়েদেরকে পরিবার থেকে এইসব অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে শেখানোতো হয়ইনা বরং প্রতিবাদ করলে নিজ পরিবার থেকেই বিভিন্নভাবে তাকে হেনস্থার শিকার হতে হয়।
লেখাটা পড়ে মনে হচ্ছে গলায় কিছু একটা বেঁধে আছে। ন এবং ফ উভয়ের জন্য ভালোবাসা। চাই না কিছু অপ্রকৃস্থ মানুষের জন্য ন এর দেশ নিয়ে স্বপ্ন দেখা বন্ধ হোক।
-সাধুবাদ।
@নির্মিতব্য, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। আমি আমার লেখাতেই বলেছি, আমার মনে হয় এই অপ্রকৃস্থ লোকের সংখ্যাই কিন্তু বাংলাদেশে বেশি। তাই খুব বেশি উচ্চাভিলাষী না হলে স্বপ্ন দেখা আসলে কষ্টকর।
ভালো থাকবেন।
খুবই দুঃখজনক, আমি মর্মাহত। বিজয় দিবসটাও একচ্ছত্র পুরুষের দখলে, তো আর বাকী রইলোটা কী?
মুক্তমনায় স্বাগতম। আরো লেখা চাই, অগ্রিম শুভেচ্ছা (F)
@আকাশ মালিক, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। আসলে সব কিছুই পুরুষের দখলে। বইমেলা, শহিদ মিনার সবখানেই এই রকম ঘটনা অহরহ ঘটছে।
ভালো থাকবেন।
আমি কেবলই নারীবাদী নই কিন্তু লেখাটি ভাবতে বাধ্য করল যে, প্রায় সব পুরুষের মাঝেই হয়ত একজন পাকি ধর্ষক সেনার অস্তিত্ব থাকে। দেশ-কাল-পরিবেশ-পাত্র ভেদে Y ক্রোমোসোম বহনকারী প্রায় সবাই এখনোও বিবর্তিত হয়ে মানুষে পরিণত হয় নি। মাঝে মাঝে মনে হয়, মস্তিষ্কের এমন ত্রুটিপূর্ণ বিবর্তন হওয়ার আদৌ কোন প্রয়োজন ছিল কিনা !!!
“ন” এর প্রতি অসীম ভালোবাসা। (F) (F) (F) (F) (F) (F) (F) (F) ……………………….
@শুভ্রা, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। বাক্তিগত ভাবে আমি মনে করি বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া আর পাকিস্তান এর মানুষের মন মানসিকতা অনেকটা একই ধরনের। পাহারিদের সাথে এখন বাংলাদেশ যা করছে, এইটা দেখেই বোঝা যায় যে ১৯৭১ এ পাকিস্তান এর জায়গায় বাংলাদেশ হলে আর বাংলাদেশ এর জায়গায় পাকিস্তান হলেও ইতিহাস মোটামুটি একই থাকত। এইসব যুদ্ধ, দেশপ্রেম, ধর্ম- সব ই তো শাসক শ্রেণির সৃষ্টি এবং তাদের সুবিধার জন্যই এগুলো কে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বলে আমাদের মগজে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। ভালো থাকবেন।
কি বলব লেখাটা পড়ে! অক্ষম ক্রোধে হাত মুঠি করা ছাড়া আর কীই বা করতে পারি। ভাবছিলাম কোন কমেন্ট করব না। কিন্তু যদি আমার একটা ক্ষুদ্র কমেন্টও আপনার জন্য শক্তি হিসেবে আসে, সেটাই আমার বড় পাওয়া।
আর আপনার এই কথাটা কী নিদারুণ সত্যি –
অতিমাত্রায় দেশপ্রেমও যে এক ধরণের ডগমাই এ কথাটাই আমি একটু ভিন্নভাবে বলেছিলাম , আমার এই লেখাটায় –
মোর গাঁয়ের সীমানার পাহাড়ের ওপারে প্রতিধ্বনি শুনি
আপনার ‘ন’ এর প্রতি আন্তরিক শুভকামনা রইলো।
@অভিজিৎ দা , ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। আপনার সব লেখাই মনোযোগ দিয়ে পড়ার চেষ্টা করি। এই ঘটনার পর চেষ্টা করছি মানুষকে একটু সাবধান করতে। যারা এই কাজ গুলো করে, তারা মনে হয় না ব্লগ পড়ে। আর তাদের যুক্তি বোঝার কত টুকু ক্ষমতা আছে, সেই প্রশ্ন তো রয়েই যায়। ভালো থাকবেন।
মুক্তমনায় স্বাগতম,আশা করি ভবিষ্যতে আরো লিখবেন। ফেসবুকে আপনার কাছে ঘটনাটা জানার পর স্তম্ভিত হয়ে ছিলাম অনেক্ষন, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এমন ঘটনা ঘটবে ভাবে যায়না। আপনার জায়গায় আমিও থাকতে পারতাম মেয়েবন্ধু সহ, হয়তো বোনকেও বিজয় মিছিল দেখাতে আনতে পারতাম। সবাইকে অনুরোধ করবো খুব খুব সাবধানে চলাফেরা করতে,বাংলাদেশের একটি জায়গাও এখন নিরাপদ নয়।
@রামগড়ুড়ের ছানা, ধন্যবাদ। মুক্তমনায় অনেক আগে থেকেই লেখার ইচ্ছা ছিল। এরকম একটা লেখা দিয়ে শুরু করব কখনও কল্পনা করিনি। যাই হোক, ভবিষ্যতে নিয়মিত হবার ইচ্ছা আছে।