তাং-১৪/০৯/১১
কারবারী,
পত্রে আমার শুভেচ্ছা নিবেন। আশাকরি পাড়ার সকলকে নিয়ে ভাল আছেন।
পর বার্তা আগামী ১৮/০৯/১১ ইং রোজ রবিবার সকাল ১০.০০ ঘটিকায় ক্যাম্প গণসংযোগ মিটিং অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত মিটিং এ আপনী হাজির থাকবেন।বি:দ্র: ০৫ কেজি মোরগ নিয়ে আসবেন।
ক্যাপ্টেন
ক্যাম্প কমান্ডার
মদক বিওপি
(স্বাক্ষর-অস্পষ্ট)
বান্দরবানের দুর্গম থানচি উপজেলার রেমাক্রি ইউনিয়নে বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর বর্ডার অবজার্ভিং পোস্ট (বিওপি)-এর ক্যাম্প কমান্ডার ক্যাপ্টেন রশিদ-এর পত্র এটি। বানানরীতি হুবহু রাখা হয়েছে। তিনি এই পত্রটি লিখেছেন স্থানীয় একজন মারমা আদিবাসী পাহাড়ি গ্রাম প্রধানকে (কারবারী)।
এই লেখকের নিজস্ব সূত্রে পাওয়া পত্রটির একটি বিষয় লক্ষ্যনীয়, তারিখ ও স্বাক্ষর বাদে মাত্র পাঁচটি বাক্যের এই হাতচিঠির শেষ দুটি বাক্য সরাসরি আদেশ :
উক্ত মিটিং এ আপনী হাজির থাকবেন। বি:দ্র: ০৫ কেজি মোরগ নিয়ে আসবেন।
পার্বত্য শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর ও সাবেক গেরিলা গ্রুপ শান্তিবাহিনী অস্র সমর্পনের মাধ্যমে বিলুপ্তির দেড় দশক পরেও পাহাড়ে যে নির্ভেজাল সামরিক শাসন চলছে, ওই হাতচিঠিটি তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। নইলে সীমান্ত রক্ষার মহান ব্রত বাদ দিয়ে একজন শাসকের কায়দায় তিনি ‘ক্যাম্প গণসংযোগ মিটিং’ এর এখতিয়ার রাখেন কী ভাবে? শুধু তাই-ই নয়, পাহাড়ের এক সময়ের সামন্ত প্রভু রাজাদের সঙ্গে দেখা করতে এলে কারবারী বা হেডম্যানদের (মৌজা প্রধান) জোড়া মোরগ, দু-এক বোতল মদ ভেট হিসেবে নিয়ে আসতে হতো। ক্যাপ্টেন রশিদের ‘০৫ কেজি মোরগ’ নিয়ে আসার আদেশ সেই সামন্ত-অবশেষ বন্দুকবাজীর কথাই মনে করিয়ে দেয়।
যারাই পার্বত্য চট্টগ্রাম সর্ম্পকে খোঁজ-খবর রাখেন, তারাই জানেন, শান্তিচুক্তিতে তিন পার্বত্য জেলায় ছয়টি সেনা নিবাস ছাড়া সকল অস্থায়ী সেনা ছাউনি প্রত্যাহারের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু চুক্তি লংঘন করে এখনো সেখানে দাপটের সঙ্গেই চলছে সেনা বাহিনীর ‘অপারেশন উত্তরণ’। এখনো সেখানে প্রায় সাড়ে ৪০০ অস্থায়ী সেনা ছাউনি বহাল বহাল রয়েছে। এর বাইরে রয়েছে ড়্যাব, বিজিবি, পুলিশ, আনসার, ভিডিপি ও বনরক্ষী বাহিনীর অসংখ্য স্থায়ী ও অস্থায়ী ছাউনি। শান্তিচুক্তির আগে সেনা বাহিনীর প্রত্যক্ষ মদদে এই সব নিরাপত্তা বাহিনী ও পাহাড়ে অভিবাসিত বাঙালি সেটেলাররা অন্তত ১৩ টি গণহত্যায় সরাসরি নেতৃত্ব দিয়েছে।
সে সময় ‘নারায়ে তাকবির’ ধ্বনী দিয়ে কসাইয়ের মতো দা দিয়ে কুপিয়ে, মেশিনগানের গুলিতে ঝাঁঝড়া করা হয়েছে শত শত নিরীহ আদিবাসী পাহাড়ি।… লোগাং, লংগদু, ন্যান্যাচর, বরকল, কাউখালি, দীঘিনাল, পানছড়িসহ একের পর এক গণহত্যায় নিভে গেছে শত শত আদিবাসীর তাজা প্রাণ। সহায় সম্বল সব কিছু ফেলে জীবন বাঁচাতে প্রায় ৭০ হাজার পাহাড়িকে একযুগ শরণার্থীর গ্লানিময় জীবন বেছে নিতে হয়েছিল ত্রিপুরার আশ্রয় শিবিরে।
পার্বত্য শান্তিচুক্তি সাক্ষরের পরেও প্রত্যক্ষ সেনা মদদে অন্তত ১৪ টি সহিংস ঘটনায় পাহাড়িরা আক্রান্ত, খুন, ধর্ষণ ও ঘর-বাড়ি ছাড়া হয়েছেন। বাঘাইছড়িতে এই সেদিনও সেনা-সেটেলার যৌথ অভিযানে পুড়েছে প্রায় ৩০০ পাহাড়ি ঘরবাড়ি, নিহত হয়েছেন দু’জন। এরপরেই রামগড় সহিংসতায় নিহত হয়েছেন তিনজন বাঙালি, পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে অসংখ্য পাহাড়িদের ঘরবাড়ি, মারপিট ও জখম করা হয়েছে আরো অসংখ্যজনকে। আরো স্পষ্ট করে বললে বলতে হয়, এই সেনা-সেটেলাররাই পাহাড়ের হর্তা-কর্তা-অধিকর্তা। তারাই সেখানের প্রধান প্রশাসন, রাষ্ট্রের ভেতর আরেক তালেবান রাষ্ট্র। …
আর এসবই সেনা বাহিনী করছে, লেফটেনেন্ট জেনারেল জিয়াউর রহমানের আমলে জারি করা ছয়-ছয়টি ‘ইনসার্জেন্ট অর্ডার’ বলে, যা শান্তিবাহিনী বিলুপ্তির দেড় দশক পরে এখনো কার্যকর!
দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত পার্বত্য চট্টগ্রামের আয়তন বাংলাদেশের ১০ ভাগের এক ভাগ। রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান — এই তিন পার্বত্য জেলা নিয়ে বিন্যস্ত পাঁচ হাজার ৯৩ বর্গমাইল এলাকার পার্বত্যাঞ্চলে পাহাড়ি-বাঙালি মিলিয়ে প্রায় ১৪ লাখ লোক বাস করেন। ১৯৮১ সালে পার্বত্যাঞ্চলে পাহাড়ির সংখ্যা ছিল ৫৮ দশমিক ৬ শতাংশ এবং বাঙালি ৪১ দশমিক ৪ শতাংশ। ১৯৯১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, সেখানে ৫১ শতাংশ বাঙালি ও ৪৯ শতাংশ পাহাড়ির বসবাস। সর্বশেষ ২০০১ সালের হিসাবে ৫৯ শতাংশ বাঙালি ও ৪১ শতাংশ পাহাড়ি সেখানকার বাসিন্দা।
—
আরো পড়ুন: লেখকের ই-বুক, ‘রিপোর্টারের ডায়েরি: পাহাড়ের পথে পথে’, মুক্তমনা ডটকম।
এই জায়গাটায় এসে বাঙালি জাতীয়তাবাদীরা জামাতিদের মতো চুপ মেরে যায়। মাঝে মাঝে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতার পরিণাম এসব-সেসব কীসব আউড়িয়ে নিপীড়ন হালাল করতে চায়। পাহাড়ে অত্যাচার বন্ধে বাঙালিদের ব্যর্থতার অন্যতম বড় কারণ হলো জাতীয়তাবাদী দ্বন্দ্ব। সে জায়গায় তাই বাঙালি জাতীয়তাবাদীরা জামাতিদের সাথে মিলে মিশে কাজ করে।
@রূপম (ধ্রুব),
এ ক ম ত।
আর দেখুন এই লেখাটি অন্য একটি ব্লগে শেয়ার করার পর জলপাই আস্ফালন (দ্র. ম্যাক্সিমাস ও কালো চিতার মন্তব্য পোস্ট)! এ নিয়ে গত কিছুদিন সংশ্লিষ্ট ব্লগ বারান্দায় ঝড় বয়ে গেছে। তবে শুভ বুদ্ধির সব ব্লগারই পাহাড়ের সেনা দুঃশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন। (Y)
@বিপ্লব রহমান,
আপনার লিংকের লেখা গেলো কই?
বাংলাদেশে বাঙালীদের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজনের মধ্যে বিপ্লব রহমান একজন যার লেখনি জাতিগত সংখ্যালঘুদের জন্য সমর্পিত।
ফলাফল শূন্য হবে জেনেও কি ক্যাম্প কমান্ডারের বিরুদ্ধে অভিযোগ কি দায়ের করা যায় না? এমন প্রমানসহ লেখার অব্যাহত থাকুক।
@গীতা দি,
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ওই শুধু ওই ক্যাম্প কমান্ডার কেন, পাহাড়ের আরো রথি-মহারথিদের বিরুদ্ধেও তো আমরা অভিযোগ দিচ্ছি, প্রতিবাদ জানাচ্ছি, আন্দোলন-সংগ্রাম চলছে…বিনিময়ে নেমে আসছে হুমকি-ধামকি, নির্যাতন-নিপীড়ন…তবু প্রতিবাদ চলছেই। …
আপনি খাগড়াছড়িতে হত্যাকান্ডের যে রেফারেন্স দিয়েছেন, তা নিয়ে কিছু কথা। অন্যগুলোর ব্যপারে জানা নেই। গত দুই সপ্তাহ আগে আমি খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় থানার বইদ্যপাড়া গ্রামে যাই। উদ্দেশ্য ছিল, পাহাড়ি-বাঙ্গালীদের মধ্যে সম্পর্কের একটা বাস্তব ছবি নিজে অবলোকন করা।
বাঙ্গালিদের কথাঃ
১৯৮৬ সালের আগে যেখানে ঘর-দোর, জমি জিরাত, গবাদি পশু আর বাগান বাঙ্গালিদের দখলে ছিল, তার বেশিরভাগ এখন পাহাড়িদের দখলে। তারাই গবাদিপশু (গরু-ছাগল) ব্যাবসার কর্ণধার। জমির মালিক হওয়াতে ধান-চাল শাক-সবজি ইত্যাদির মূল কারবারি তারা। ১৯৮৬ সালের ২২শে ডিসেম্বর শান্তিবাহিনী নামের একদল পশু যেভাবে নারকীয় অত্যাচার করে বাঙালিদের সেখান থেকে উতখাত করেছে, তারপরে সেখানে আবার বসতি গড়তে কেউ খুব একটা সাহস করেনা।
পাহাড়িদের কথাঃ
স্থানীয় ইউপি মেম্বারের সাথে কথা বলে পাহাড়িদের অবস্থাটা বোঝার চেষ্টা করলাম। তাদের বেশির ভাগই ত্রিপুরা এবং মারমা। শান্তি চুক্তি অনুযায়ী আগের মত বিডিআর, আর্মি ক্যাম্প না থাকায় খাগড়াছড়ি, দীঘিনালা, পানছড়ি থেকে পাহাড়িদের নেতাগোছের লোকজন এসে চাঁদাবাজি করতে সুবিধা হয়েছে। প্রতিটি পরিবার থেকে ১০০-৫০০ টাকা হারে তারা চাদা আদায় করে থাকে প্রতি মাসে। তাদেরকে বোঝানো হয়, এই টাকা দিয়ে তাদের উন্নয়ন করা হবে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। লক্ষ লক্ষ টাকার চাঁদাবাজিতে কিছু ভুঁইফোড় সংগঠন গড়ে উঠেছে। যাদের কাজই হচ্ছে পাহাড়ি-বাঙ্গালি সবাইকে অস্ত্রের মাধ্যমে জিম্মি করে টাকা আদায় করা।
পরিশেষেঃ
বাঙ্গালি মেম্বার সাহেব আর তার মারমা স্ত্রীর কথায় আমি যা বুঝলাম, আসলে পাহাড়ের থেকে নিচে বসে বসে পাহাড়ে বাস করা মানুষের দুঃখ কষ্ট বোঝা সহজ নয়। ইদানিং মোবাইল নেটওয়ার্ক বিস্তৃত হওয়ায় যোগাযোগ আগের তুলনায় ভাল হলেও পাহাড়ি-বাঙ্গালি সবারই পড়ালেখার প্রতি অনাগ্রহ আর ভাল স্কুল কলেজের অভাব পাহাড়ের মানুষগুলোর এগিয়ে যাবার প্রধান অন্তরায়।
@রাব্বি,
এ ক ম ত। সত্যিকথা বলতে কি, বইদ্যপাড়া অভিজ্ঞতালব্ধ যে জ্ঞান আপনি এখানে বয়ান করেছেন, তার একমাত্র এই পয়েন্টটির সঙ্গেই আমি একমত। নইলে আমার উদ্ধৃত ১৩টি গণহত্যার রেফারেন্সের ভেতর এই রেফারেন্সটি আপনার নজর এড়াবে কেন, যেখানে এই লেখকের একটি গণহত্যার প্রত্যক্ষ বর্ণনা রয়েছে?
এরপরেও বলি, আপনার বৈদ্যপাড়ার বয়ান, পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কিত প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা, দর্শন শুধু ত্রুটিপূর্ণই নয়, মারাত্নক উগ্র জাতীয়তাবাদী মিথ্যাচারে পরিপূর্ণ, নইলে বাঙালি সেটেলারদের জমি দখল করে পাহাড়িদের বসতি গড়ার (!)আজগুবি বয়ান দেওয়ার সময় সাবেক বিএনপির গডফাদার ওয়াদুদ ভূঁইয়া এমপি রামগড়ে যে পাহাড়িদের বসতভূমিতে সেটেলারদের বসতি দিয়ে ‘ওয়াদুদ পল্লী’ গড়ে তুলেছেন, তা আপনার নজর এড়াবে কেন? ধন্য আপনার গবেষণা!! (W)
@বিপ্লব রহমান,
কিছু বেসিক প্রশ্ন। এর উত্তর আমার সঠিক জানা না থাকলে এই থ্রেডে বিতর্ক করা অর্থহীন।
“বাঙালি সেটেলার”দের পাহাড়ে বসত গড়ার সিদ্ধান্ত কি ভুল ছিল? নাকি পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ে বাঙালিরা বসত গড়তে পারবেনা?
আপনি কেন ভাবছেন বাঙালি সেটেলার মাত্রই পাহাড়িদের জমি দখলকারি?
বিপ্লব রহমান, আপনি হয়ত এ সম্পর্কিত গবেষনার সাথে অনেক আগে থেকে জড়িত। কিন্তু নতুন গবেষকদের প্রথমেই “উগ্র জাতীয়তাবাদ” এর সাথে জড়ানোর আগে একবার ভেবে দেখা জরুরী নয় কি?
@রাব্বি,
শুধু ভুল না, মহা ভুল।অবাক হচ্ছি, এ প্রশ্নের উত্তর আপনি এখনো জানেননা বলে।
আমাদের দেশেও যে বর্ণবৈষম্য (aprtheid) চলছে পুরোদমে তা আপনার প্রতিটি লেখায় ফুটে উঠেছে। বাঙালিদের এর জন্য অসীম লজ্জা বোধ করা দরকার।
আপনার লেখা আমি সর্বদাই মনোযোগ দিয়ে পড়ি। নিজের লেখায় ব্যস্ত থাকার জন্য আপনার এই লেখাটি পড়তে বেশ দেরী হয়ে গেল।
@আবুল কাশেম,
সঙ্গে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ। (Y)
যুদ্ধ অপরাধীদের বিচারে সোচ্চার আমরা, অথচ নিজেরাই যুদ্ধ অপরাধীর কাজ করে যাচ্ছি। বিপ্লব রহমান কে ধন্যবাদ। ভালো লিখেছেন (Y) ।
তবে এখানে, “বি:দ্র: ০৫ কেজি মোরগ নিয়ে আসবেন।”_এই বাক্যের হাতের লেখা ও মূল চিঠির হাতের লেখা ঠিক মিলছে না। 🙁 । এছাড়া সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বলা “এরাই নাকি আমাদের ‘দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী’! হায় দেশ!! হায় প্রেম!!! ” _ এই বাক্যটি ঠিক বলে মনে করি না। কেননা দেশে গণতান্ত্রিক সরকার বিদ্যমান। এ অবস্থায় সেনাবাহিনী সরকারের অধীন। সুতরাং যেকোনো ভুলের জন্যে বাংলাদেশ সরকারই দায়ী।
@অরণ্য,
লালকালির ভিন্নতা ছাড়া ‘০৫ কেজি মোরগ’ সম্পর্কিত হাতের লেখা ঠিকই আছে, একটু নজর করলেই বুঝতে পারবেন। আর পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে খানিকটা প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা থাকলে আরো বুঝবেন, ওই হাতচিঠি একটি সামান্য উদাহরণ মাত্র। সেনা দুঃশাসনের ভায়লচিত্রটি আরো ভয়ংকর।
আর ‘দেশ প্রেমিক সেনা বাহিনী’কে সমালোচনা করায় আহত হওয়ার কিছু নেই। আপনার কথিত ‘গণতান্ত্রিক সরকার’ই চলছে বেয়নেটের আগায়, এটিই হচ্ছে মূল কথা।
অনেক ধন্যবাদ। (Y)
@বিপ্লব রহমান,
১৯৭১ এ স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়েছিল বটে, শেষ হয় নাই…
@অরণ্য,
এ ক ম ত।
আমরা ৭১ এর যুদ্ধাপরাধ এর বিচার চাই কিন্তু আমরা সে অধিকার হারিয়েছি,কারন এখন আমরাই যুদ্ধাপরাধি!!!
@সপ্তক,
🙁
@ বিপ্লব রহমান,
এই কমান্ডার ক্যাপ্টেন রশিদ চিজটাকে জেলের মোরগ খাওয়ানোর দরকার।
তার আদেশ নামা দেখে তো মনে হচ্ছে সে কোন এক পীর-দরবেশ অথবা সম্রাট আকবর।
আওয়ামী লীগ নিজে ক্ষমতায় থেকে তাদেরই করা শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন করে না, আবার সেই শান্তি চুক্তির কারণে নোবেল না পাওয়ায় মাঝে মাঝে শুনি তাদের ক্ষোভের কথা। ভবিষ্যতে হয়তো একদিন আরেকটি যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবোনালে এই সব জলপাই বাদশাদের পাশাপাশি আমাদের আজকের রাজনৈতিক নেতারাও অভিযুক্ত হবেন।
তবে কি তারা শান্তি চুক্তি করেছিল পাহাড়িদের হাত থেকে অস্ত্র কেড়ে নিয়ে সেখানে নির্ভয়ে পাহাড় দখল করতে আর আকবর বাদশাদের রাজত্ব কায়েম করতে?
@হেলাল,
আমার মনে হয়, আপনি সরকারি কূটচালের ভেতর-কথাটিই বলেছেন। অনেক ধন্যবাদ। (Y)
শোভন ঠিকই বলেছেন। পৃথিবীর সব দেশেই এই ঘটনা ঘটছে। বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশেও একই কাহিনী। যা অমানবিক তা সব জায়গাতেই অমানবিক।
আদিবাসীদের তো মানুষ ভাবা হয়না, ভাবা হয় ক্ষমতাধর “সত্যিকারের মানুষদের” ইচ্ছের পুতুল। “সত্যিকারের মানুষেরা” নির্ধারণ করবে আদিবাসীরা আদৌ বেঁচে থাকবেন কিনা। বেঁচে থাকার সুযোগ দিলেও কোথায় থাকবেন, কিভাবে থাকবেন, নিজেদের কোন জাতি বলে পরিচয় দেবেন ইত্যাদি।
যারা এখন “সত্যিকারের মানুষ”, আগামীকাল তাদের চাইতেও ক্ষমতাধর একদল এসে নির্ধারণ করবে তাদের থাকার আর বেঁচে থাকার জায়গা। তখন সবার মুখে মুখে জেগে উঠবে মানবতা আর মানবাধিকারের চর্চা। রোল পালটে গেলে সবার মুখের বোল পালটে যায় খুব দ্রুত। লজ্জাবোধ কারোই নেই। যেখানে মানবতা বোধই নেই, সেখানে আবার লজ্জাবোধ! হায়, মানুষ নামের অমানুষেরা সাজা ছাড়াই পার পেয়ে যাচ্ছে।
***বিপ্লব রহমান কে ধন্যবাদ। এই মানুষদের নিয়ে/জন্য বলার লোক বেশি নেই। যারা আছেন, তাদেরও প্রান নাশের আশংকা প্রতিনিয়ত। আশাবাদী হয়েও মনে হয় কারা এ লড়াইএ জিতবে আর কারা হারবে তা খুবই স্পষ্ট। (দীর্ঘশ্বাস)***
@ছিন্ন পাতা,
এখনো পাহাড় ও সমতলে আদিবাসী গ্রামে গেলে যখন তারা বিলুপ্ত আদিবাসী গ্রামগুলোর কথা বলেন, দেশান্তরী হওয়ার ইতিকথা জানান, তখন লজ্জায় মাথা হেট হয়ে যায়। …
সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। (Y)
মুক্তমনায় আদিবাসীর দুঃখের কথা লেখা দেখে খুব খুশি হলাম।
:lotpot:
@হেগাবগা,
এই ব্লগে কেউ একজন এ রকম লিখেছিলেন, ছদ্মনামে টয়লেটে কুৎসিত কথা লেখা সহজ, ব্লগ পাতায় নিজ নাম-পরিচয়ে সত্য উচ্চারণ সহজ নয়।
আপনার নাম, “খুব খুশী হওয়া” এবং লটপটি ইমো সেই কথাটিই মনে করিয়ে দিল। অনেক ধন্যবাদ। (Y)
আপনি লেখাগুলো দেন বলে ছবিগুলো বেশ কাছ থেকে দেখা যায়। মানবতাবাদী ব্লগ ছাড়িয়ে আরো একটু গভীরে, জাতিসঙ্ঘ বা ওই ধরনের কোথাও, অনুবাদ করে সবসময় একটা অনুলিপি পাঠানো যায় নাকি? আপনি সময় না পেলে অন্য কিছু আগ্রহী মানুষ নিশ্চই আছে যারা সাহাজ্য করতে পারে। কি বলেন?
@কাজী রহমান,
এ বিষয়ে আমার অন্যান্য সহকর্মীরা নিরলস কাজ করছেন। আপনার আগ্রহকে সাধুবাদ জানাই। চলুক। (Y)
🙁
@শাব্দিক,
🙁
জলপাই জমিদারবাবুরা মোরগ মোসল্লাম খেয়ে পাহাড়ে বেশ সুখেই আছে দেখছি।
@ফরিদ আহমেদ,
আপনাকে ধন্যবাদ। (Y)
😀 😀 😀
@নিটোল,
কস্কী মমিন? 😉
লেখককে ধন্যবাদ এমন একটি সময়োপযোগী লেখা উপহার দেয়ার জন্য।
এই অংশটুকু পড়ে ১৯৭১ সনে বাংলাদেশের মানুষের উপর পাক বাহিনীর বর্বর হামলার কথা মনে পড়ল। ছবিগুলো সবই এক। সাধারণত একটি নির্যাতিত জনগোষ্ঠী একই ধরনের নির্যাতনের স্বীকার অন্য একটি জাতির মর্মবেদনা উপলব্ধি করতে পারে। হিরোশিমার মানুষদের কথাই ধরা যাক না। তারা এখন বিশ্ব শান্তির পতাকা বহন করে যাচ্ছে। অন্যদিকে আমরা শুধুমাত্র সংখ্যাধিক্যের জোরে একটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীকে বিলুপ্তির দিকে ঠেলে দিচ্ছি!
আপনার এই পরিসংখ্যান প্যালেস্টাইনের কথা মনে করিয়ে দেয়। ১৯৬৭ সালে প্যালেস্টাইনের যত প্রাপ্য ছিল তার চেয়ে অনেক কম ভূমি দাবী করেও ইসরায়েলের স্বীকৃতি পাচ্ছে না এখন। মজার ব্যাপার হলো, চাইলেই বাংলাদেশে প্যালেস্টাইনের স্বপক্ষে প্রচুর লোক পাওয়া যাবে। কিন্তু এই লোকগুলোই আবার ১৯৯৮ সনের পার্বত্য শান্তি চুক্তির (যেখানে পার্বত্যবাসীকে যথেষ্ট ছাড় দিতে হয়েছে) কঠোর বিরোধিতা করে বলবে যে এর মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রায় এক দশমাংশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দেয়া হয়েছে!
@কাজি মামুন,
আপনার পাঠ ও প্রতিক্রিয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। মূল বক্তব্যের সঙ্গে এ ক ম ত। তবে আপনার কথিত “ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি” অভিধায় আমার প্রচণ্ড আপত্তি আছে।
কেনো? তা জানতে এই লেখাটি পড়ার বিনীত অনুরোধ জানাই।
চলুক। (Y)
@বিপ্লব রহমান,
ভাই, আপনার লিংকটি পড়লাম। কিন্তু ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী’ নিয়ে আপনার আপত্তির পেছনের কারণগুলি আবিষ্কার করতে ব্যর্থ হয়েছি। আপনি কি ‘আদিবাসী’ শব্দটি ব্যবহারের পক্ষপাতী? সেক্ষেত্রে, আমার ঐ শব্দ নিয়ে কোন আপত্তি নেই। আমি আদিবাসীদের আমার দেশের অপরিহার্য অংশ মনে করি এবং চাই তারাও পরিপূর্ণ নাগরিক অধিকার নিয়ে এই দেশে বাস করবে এবং তাদের জীবন-সমাজ-সংস্কৃতির সর্বোত্তম বিকাশ ঘটাবে! তবে জানেন কি, আমার কাছে ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী’, ‘আদিবাসী’, ‘উপজাতি’ ইত্যাদি শব্দ ততটা গুরুত্ব বহন করে না। এমনকি সাংবিধানিক স্বীকৃতিও কি সর্বদা সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করে? এখন পর্যন্ত ন্যয়পাল সৃষ্টি করা হয়নি। মানবাধিকার কমিশনকে অকেজো করে রাখা হয়েছে। শুধুমাত্র নিরন্তর সামাজিক আন্দোলনই শোষক শ্রেণীর হাত থেকে আমাদের অধিকারগুলোকে রক্ষা করতে পারে। আপনার লেখাটিও এই আন্দোলনের অংশ বিধায় আপনার প্রতি আমার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।
@কাজি মামুন,
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
‘আদিবাসী’ অভিধাটির মধ্য দিয়ে ভাষাগত সংখ্যালঘু জনজাতির ভূমি, ভাষা, সংস্কৃতি, রীতি-নীতি, ঐতিহ্যকে স্বীকার করে নেওয়া হয়। এ জন্যই সংবিধানে আদিবাসীর স্বীকৃতি থাকা চাই। এই অভিধাটি অনেক বেশী মানবিক। কিন্তু ‘ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠি’ বা ‘উপজাতি’ অভিধাটি তেমন গুরুত্ব বহন করে না। আবার আদিবাসীর সংবিধানিক স্বীকৃতি হলেই তাদের সব সমস্যার সমাধান হবে না; শুধু মৌলিক মানবিক অধিকারের একটি আইনগত ভিত্তি দাঁড়াবে, অস্তিত্ব রক্ষার জন্যও বিষয়টি জরুরি।
অন্যদিকে দেখুন, এদেশের ভাষাগত জনজাতিগুলোকে সাংবিধানিকভাবে ‘উপজাতি’, ‘ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠি’ ইত্যাদি অভিধায় চিহ্নিত করে এবং সরকার সম্প্রতি জনজাতিগুলোকে ‘বহিরাগত’ এবং ‘বাঙালিরাই আদিবাসী’ এমন আপত্তিকর ও হাস্যকর বক্তব্য দিয়ে সাংবিধানিক স্বীকৃতি আদায়ে ৪০ বছরের দাবিটিকে শুধু ফ্যাসিস্ট কায়দায় দমনই করেনি, উগ্র জাত্যাভিমান ও চরম সাম্প্রদায়িকতাকেও উস্কে দিয়েছে।
এরফলে সারাদেশে প্রায় ৭০টি জনজাতির ২৫ লাখ মানুষের কাছে যেটুকু জমি, জলা, অরণ্য, পাহাড় ও অন্যান্য সম্পদ রয়েছে, সেটুকুও শেষ পর্যন্ত বৃহত্তর বাংলাভাষী দখলদাররা কেড়ে নেওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে!
এরই মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামে বেনামে সেনা বাহিনী পোস্টারিং করেছে:
আদিবাসীর সাংবিধানিক স্বীকৃতিদানের প্রশ্নে সরকার সম্প্রতি সারাদেশে ভাষীক সংখ্যালঘু জনজাতির মধ্যে যে ক্ষোভ ছড়িয়ে দিয়েছে, তা আগে কখনো দেখা যায়নি।
এ পর্যায়ে বিষয়টি গভীরভাবে তলিয়ে দেখার বিনীত অনুরোধ জানাই। চলুক। (Y)
‘জোর যার মুল্লুক তার’ এর নগ্ন প্রকাশ। যদিও নগ্নতাকে( আমরা সভ্য, তাই) রং-বেরঙের বিজ্ঞাপণের মোড়কে ঢেকে রাখা হয়, দেশের ‘ভাবমূর্তি’ রক্ষার জন্য। মোহ-মূ্র্তি ভাঙার পথে আপনার এই প্রয়াস সার্থক হোক।
@স্বপন মাঝি,
ঠিক তাই। এরাই নাকি আমাদের ‘দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী’! হায় দেশ!! হায় প্রেম!!! 😕
এই প্রবন্ধের জন্য ধন্যবাদ। দুর্ভাগ্যবশতঃ এটা শুধু বাংলাদেশের চিত্র নয়, পৃথিবীর যেকোনও দেশেই এই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখা যায়। শুধু স্থান, কাল আর পাত্র বদলে যায়! 🙁
@শোভন,
হয়তো বন্দুকের শাসনটির ধরণই এই। তবে কথা হচ্ছে বাংলাদেশ নিয়ে।
যে বাংলাদেশ জাতিগত নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই করে চরম আত্নত্যাগের মধ্যদিয়ে ১৯৭১ এ জন্মগ্রহণ করেছে, সেই একই স্বাধীন দেশে আবার পাকি-কায়দায় জাতিগত নিপীড়ন মেনে নেওয়া যায় না। আবার লক্ষ্যনীয়, পাহাড়ে সব ধরণের মানবাধিকার লঙ্খনকারী এই সেনা বাহিনীই আবার জাতি সংঘের শান্তি মিশনে গিয়ে শান্তির নসিহত করে, দেশের জন্য ইউরো-সুনাম দুইই কামায়! 😛
:-Y
@রৌরব,
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।