বায়েজিদ বোস্তামী আমাদের দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের কাছে অলৌকিক এক ব্যক্তিত্ব, ঈশ্বর ভক্তের প্রতীক, অনুকরণীয় এক ইসলামী আদর্শ বলে স্মরিত। প্রচলিত আছে তাঁর হাত ধরে বাংলাদেশে ইসলাম প্রচারের কল্প কাহিনী, অভাব নেই শ্রদ্ধা ভক্তি মিশানো গাল গল্পের, আছে এক সুবিশাল কথিত মাজার বার আউলিয়ার দেশে বলে খ্যাত চট্টগ্রাম শহরের অদূরে। মোদ্দাকথায় তিনি এক ধ্রুব তারা বাংলার ইসলামী ধর্ম আকাশে। মরণোত্তর বায়েজিদের প্রতিভাসিত প্রচলিত কাহিনীর বাতায়নে স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন আসে তিনি কি সত্যি বাংলার মাটিতে কখনো পদ ধুলি দিয়েছিলেন? বাংলাদেশের ইসলাম প্রচারে সরাসরি তাঁর কি কোন ভূমিকা আছে? এর এক কথায় উত্তর- না। ধর্মীয় বিশ্বাসের উত্তপ্ত হাওয়া সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের বিচার বুদ্ধি কতখানি দূরীভূত করে, ধর্মের রঙিন বর্ণনা কি ভাবে তাদের নেশা গ্রস্থ করে রাখে, তারা যে সত্য অসত্য বিচারে তথ্য প্রমাণের খোজ রাখে না, ধর্মের অলৌকিকত্বে সহজে মুগ্ধ হয়ে তারা ছাইপাসেও পূর্ণ বিশ্বাস আনে- তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বায়েজিদ বোস্তামী সম্পর্কে প্রচলিত গল্পকথা।
ছোট বেলায় বাবার সাথে একবার গিয়েছিলাম সেই মাজার দেখতে। মাজারের কোন মর্মার্থ বুঝার বয়স তখনো হয়নি আমার, বায়েজিদ কে ছিলেন তাও জানতাম না। সেখানে গিয়ে ধাক্কা খেয়েছি কিছু মানুষের মাজার সন্মুখে উচ্চঃস্বরে ক্রন্দন দৃশ্য দেখে (সম্ভবত জীবণ যুদ্ধে পরাজয়ের প্রচন্ড হতাশা থেকে) এই দৃশ্য আমাকেও ব্যথিত করেছে, আবার মজা পেয়েছি মাজারের সামনের এক পুকুরে ইয়া বড় বড় কচ্ছপের বিচরণ দেখে, তাদের খাইয়ে।
কচ্ছপের কথা যখন উঠেই গেছে তখন এই ফাঁকে এই বিরল প্রজাতির কচ্ছপ নিয়ে দু-চার কথা বলে নিই। এর বৈজ্ঞানিক নাম হল অ্যাসপিডেরিটিস নাইগ্রিক্যান্স। প্রাণিবিজ্ঞানী অ্যান্ডারসন ১৮৭৫ সালে সর্বপ্রথম ভারতের জাদুঘরে রক্ষিত দুটি নমুনা থেকে বোস্তামীর কচ্ছপের প্রজাতিটির সন্ধান পান। রক্ষিত নমুনা দুটি ছিল চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী পুকুর থেকে সংগৃহীত। ১৯১২ সালে প্রাণিবিজ্ঞানী এন এনানডেলের মতে বোস্তামীর কচ্ছপ একসময় ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকা থেকে মিয়ানমার পর্যন্ত বিশাল এলাকাজুড়ে বিচরণ করত। এই পুকুরে কচ্ছপ গুলো কিভাবে এল এতদিন পরে তা জানার কোন উপায় নেই আজ। তবে যেভাবে আসুক না কেন মাজারের এই পুকুরে শত শত বছর ধরে বাস করা কাচ্ছপগুলো বিশ্বে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া প্রজাতির তা নিয়ে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। এই প্রজাতির কচ্ছপ এতই দূর্লভ ১৯১৪ সালে প্রাণিবিজ্ঞানী এন এনানডেলের ও অন্য প্রাণিবিজ্ঞানী এম শাস্ত্রী এক গবেষণায় উল্লেখ করেন বোস্তামীর কচ্ছপ বর্তমানে শুধু চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী মাজার সংলগ্ন পুকুরেই টিকে আছে। পৃথিবীর কোথাও এই প্রজাতির কচ্ছপ আর দেখা যায় না। ২০০২ সালে পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণে আন্তর্জাতিক সংস্থা, আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (IUCN) কর্তৃক বোস্তামী কচ্ছপ কে চরমভাবে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতি হিসাবে তালিকাভুক্ত করা হয়। তাই এই কচ্ছপেরর ওপর ২০০৭ সালে ন্যাশনাল জিওগ্রাফি চ্যানেল এক ডকুমেন্টারি তৈরি করে নিয়ে যায়। এগুলোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য- আকারে এই কচ্ছপ অনেক বড় হয় এবং ওজনও নাকি বেশি হয়। কালের সাক্ষ্যি হয়ে শত শত বছর এদের বেঁচে থাকার অপূর্ব ক্ষমতা আছে। মিথ প্রচলিত আছে বায়েজিদ বোস্তামী নিজে এসব কচ্ছপ চট্টগ্রামে নিয়ে এসেছিলেন।আবার কেউ কেউ বিশ্বাস করেন বায়েজিদ দুষ্ট জ্বীনদের কচ্ছপ বানিয়ে বন্ধী করে রেখেছেন।
দুঃখজনক খবর জীব বৈচিত্রের নিদর্শন নিরীহ এই কচ্ছপগুলোকে ২০০৪ সালের মে মাসে একবার পুকুরে বিষ ঢেলে এদের বংশ র্নিবংশ করার চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তু জাতীয় বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের ত্বরিত পদক্ষেপে কোনমতে রক্ষা পেয়ে যায় কচ্ছপ গুলো।
ধর্ম জগতে বিচরণ করা এই চরিত্রটিকে নিয়ে অনেক দিন লিখব লিখব করে লেখাটায় হাত দেয়া হয়ে উঠেনি। তার সম্পর্কে কিছু ব্লগে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেখে আবারো লেখার তাগাদা অনুভব করলাম।
বায়েজিদ বোস্তামী ৮০৪ খ্রীষ্টাব্দে ইরানের বোস্তাম শহরে জন্ম গ্রহণ করেন এক ধর্মাশ্রিত পরিবারে। আগেকার দিনে কিছু কিছু দেশে নামের শেষে জন্ম গ্রহণকারী অঞ্চলের নাম জুড়ে দেওয়ার রীতি বেশ প্রচলিত ছিল। তারি ধারাবাহিকতায় তাঁর নামের শেষে বসে যায় বোস্তামী শব্দটি। বোস্তামী মানে- বোস্তাম শহরের বাসিন্দা। পিতা মাতার দেওয়া তাঁর নাম ছিল আবু ইয়াজিদ বিস্তামী। তাঁর পিতার নাম ছিল তয়ফুর। বাবার নামানুসারে আবার কেউ কেউ তাঁকে ডাকেন তায়ফুর আবু ইয়াজিদ আল্ বোস্তামী নামে। তখন পৃথিবী জুড়েই ঝাঁকিয়ে বসেছিল ধর্মীয় উন্মাদনার গণজোয়ার। একে অন্যের সাথে প্রতিযোগিতা করে মানত ধর্মীয় অনুশাসন। সবার মনের গহীনে কম বেশি উঁকি দিত ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব হওয়ার স্বপ্ন।
বায়েজীদের বাবা চাচা সবাই বেশ কঠোর ধর্ম চর্চা করতেন। শোনা যায় তাঁরা তপস্বী ছিলেন। তাঁর পিতামহও ছিলেন বেশ ধার্মিক প্রকৃতির লোক। তিনি কোন এক সময়ের প্রতাপশালী এক ঈশ্বরবাদের সূচনাকারী ধর্ম জরোষ্টার ত্যাগ করে গ্রহণ করেছিলেন ইসলাম। অর্থাৎ ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস ও আস্থা ঠিক রেখেই বদলিয়েছেন শুধু লেবেলটা। এই লেবেল বদলানোর পিছনে কাজ করেছে নিঃসন্দেহে ইরানের রাজনৈতিক ক্ষমতা ও পারিপার্শ্বিক পট পরিবর্তনের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় প্রভাব। ইসলাম প্রতিষ্ঠার বাঁশিতে ফু দিয়ে নবিজী নিজে যে যুদ্ধ শুরু করেছিলেন সেই যুদ্ধকে আরো বিস্তৃত রূপ দেন তাঁর মৃত্যু পরবর্তী ইসলামী শাসকেরা। ইসলাম প্রচারের চেয়েও এই যুদ্ধে তাদের নগদ লাভ হত পররাজ্য, ক্ষমতা, প্রাচুর্য্য, বিত্ত বৈভব, প্রচুর দাস ও গনিমতের মাল হিসাবে অবস্থাপন্ন পরিবারের অসংখ্য সুন্দরী মেয়ে। এই সব নগদ প্রাপ্তির লোভ তাদের যুদ্ধে প্রলুব্ধ করত সব সময়। তাছাড়া ক্রমাগত যুদ্ধ জয়ে তাদের মানসিক শক্তি হয়ে পড়েছিল বেশ দৃঢ়, আত্মবিশ্বাস ছিল তুঙ্গে, যুদ্ধবিদ্যা ও রণকৌশলে হয়ে গিয়েছিল অত্যন্ত পারদর্শী, তাদের কাছে মূহুর্তে যে কাউকে হত্যা করা ছিল মামুলি কাজ।
শুধু ২য় খলিফা ওমরের শাসনামলের যুদ্ধের বছর গুলো হিসাব করলে প্রতিটি মানবতা সম্পন্ন বিবেকবান মানুষ বুঝতে পারবে আরব জাহান জুড়ে কি ত্রাসের রাজত্ব তিনি কায়েম করেছিলেন(অমুসলিমদের জন্য), কত হাজারো নিরীহ মানুষের জীবণ নিয়েছেন, কত মানুষকে বানিয়েছেন দাস-দাসী, কত প্রাচীণ সভ্যতা ও সংস্কৃতি তিনি ধ্বংস করে সেখানে বুনেছেন শান্তির বীজ! সেই বীজ আজ মহীরুহ ধারণ করে আছে সমগ্র আরব অঞ্চল জুড়ে।
During the reign of Omar Ibne Khattab, another father in law, 2nd Caliph (r 634-644)
For expanding the domain of Islam:
1) Battle of bridge in Iraq (Muslims defeated by Persian) – 634 CE
2) Battle of Fihl, Damascus (Syria) – 635 CE
3) Battle of Yermuk (decisive battle against Byzantine) – 636 CE
4) Battle of Qadisiya in Iraq and Madain – 636 CE
5) Battle of Jalula – 637 CE
6) Battle of Yarmuk (conquest of Jerusalem and Jazirah) – 638 CE
7) Conquest of Khujistan and movement into Egypt – 639 CE. Conquest of Egypt, lead by Amr bin al-‘As – 640 -641CE
9) Battle of Nihawand (final defeat of Persians) – 641-642 CE
10) Battle of Ray in Persia – 642 CE
11) Conquest of Azerbaijan – 643 CE
12) Conquest of Fars – 644 CE
৬৩৪-৬৪৪ সাল এই দশটা বছর তাঁর শাসনামল কেটেছে ১২টা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করে। যুদ্ধ মানেই প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি, ধ্বংস, রক্তারক্তি, সম্পদহানি, অন্যের জান তুলে নিয়ে নিজের জান বাঁচানোর মর্মান্তিক খেলা। কিন্তু ইসলামের ক্ষেত্রে বিষয়টা হয়েছিল উল্টো। যুদ্ধে প্রচুর নগদ কড় কড়ে লাভ বয়ে আনত ইসলামীদের। সেজন্য অস্ত্র হাতে নিয়ে নতুন দেশ আক্রমণে তারা মোটেই কুন্ঠিত হতো না।
শান্তিপূর্ণ ভাবে ইসলাম প্রচারই যদি তাদের মূখ্য উদ্দেশ্য হত তাহলে মক্কা মদীনা ছেড়ে দূরবর্তী আরবের অনান্য দেশ যেমন- ইরাক, সিরিয়া, মিশর, কাজাকিস্তান, ইরান, জেরুজামেন ইত্যাদি খ্রীষ্টান, ইহুদি, প্যাগান, জরোষ্টার অধ্যুষিত অঞ্চলে ক্ষুধার্ত হায়েনার মত ঝাঁপিয়ে পড়ার যৌক্তিক প্রযোজন ছিল বলে জোরালো কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না। এও প্রমাণ মেলেনা এই সব দেশে কোরান, পীর, দরবেশ ও ইসলামী বিশ্বাসীদের দিয়ে ইসলাম প্রচারের চেষ্টা করতে। স্মর্তব্য এই সমস্ত দেশগুলোর শাসক ও জন সাধারণ স্বেচ্ছায় ইসলামকে মেনে না নিলেও কখনোই ইসলামীদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করেনি। মুসলমানেরাই বরং তাদের আক্রমণ করে তাদের রাজ্য দখল করে সর্বত্র ইসলামীকরণ করেছিল বিজিত দেশেগুলোতে। ইরানো তার ব্যতিক্রম নয়। যা আমরা উপরে ওমরের শাসনামলে আক্রমণের তালিকায় দেখেছি। ফলে বায়েজিদের পিতামহ স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন সেই দাবি উদ্ভুত পরিস্থিতির পারিপার্শ্বিকতার বিচারে প্রশ্নবিদ্ধ থেকেই যায়। পারস্য অর্থাৎ ইরানীদেরও যে দাস হতে হয়েছিল ইসলামের শাসকদের তা সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণ হয় ইসলামের ২য় খলিফা ওমরের খুনি হিসাবে আবু লুলু ফিরোজ নামের এক পার্সীয়ান দাসের নাম উঠে আসায়।
পারস্য তথা ইরানের লোকেরা এক সময় ইসলাম গ্রহণ করলেও এখানে ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল শিয়া ও সুফি মতবাদ। ইরানের জনসংখ্যার প্রায় ৯০ ভাগ লোক শিয়া মতবাদ অনুসারী। যাকে আবার সংখ্যা গরিষ্ট সুন্নিরা প্রকৃত ইসলাম বলে স্বীকার করতে নারাজ। প্রকৃত ইসলামের সাথে চর্চিত হয়ে আসা স্থানীয় ধর্মীয় আচার-আচরণ ও বিশ্বাসের ধীরে ধীরে সমন্বয়ের ফলে এখানে সুফিবাদের প্রসার ঘটে। ইতিহাসবিদেরা আরো দাবি করেন ভারতবর্ষের সীমানা পেরিয়ে আফগানিস্তানের উপর দিয়ে পারস্যের সাথে দীর্ঘ দিনের যোগাযোগের ফলে ভারতীয় ধর্ম দর্শনের কিছুটা আঁচ চালান হয়ে ঢুকে যায় পারস্যের সুফিবাদে। সুফি দর্শন মতে সুফি ঈশ্বরের সাথে আধ্যাত্মিক সম্পর্ক তৈরী করে বিশেষ শক্তি প্রাপ্ত হন। তখন সুফির অন্তরে সার্বক্ষণিক শান্তি ও আনন্দ বিরাজ করে। এই দর্শন মূল ইসলামী বিশ্বাসের সাথে ঠিক খাপ খায় না বরং কিছুটা প্রচ্ছন্ন ছাপ দেখা যায় বুদ্ধের নির্বান তত্ত্বের সাথে। বুদ্ধ কঠোর ধ্যান সাধনার মাধ্যমে মনের চাঞ্চল্য দূর করে মনকে এমন এক স্তরে নিয়ে যাওয়া্র কথা বলেছেন যেখানে সুখে দুঃখে মন থাকে অবিচল। মনে প্রশান্তি বিরাজ করে সবসময়, ছিন্ন হয় দুঃখ কষ্টের বন্ধন। এই জন্যই পারস্যের সুফিবাদী ইসলাম আর অনান্য আরব দেশের ইসলামের সাথে দেখা যায় বিশাল ফাঁক। প্রকৃত ইসলামে আল্লাহ্ প্রভু, তিনিই মালিক, তিনিই পরিচালক তিনিই সব। মানুষ তাঁর গোলাম বা দাস বা সেবক। এখানে মানুষ শুধু বিনা প্রশ্নে আল্লাহ্র আদেশ নির্দেশ মানতে বাধ্য থাকবে। এখানে প্রেমের সম্পর্ক মূখ্য নয়। সম্পর্ক আদেশ পালনের, সম্পর্ক প্রভু ভৃত্যের। অপরদিকে সুফিবাদের দর্শন মতে নিরাকার স্রষ্টা বিরাজমান থাকেন তাঁর সকল সৃষ্টির মাঝেই। তাই আল্লাহ্র সাথে বান্দার সম্পর্ক কখনো প্রভু ভৃত্যের নয় বরং তা স্নেহ-মমতার, প্রেম- ভালোবাসার।
বায়েজিদের জীবনী সম্পর্কে তেমন বিস্তারিত বিশেষ কিছু জানা যায় না। তিনি থেকে গেছেন অনেকটা আলোআধারি খেলার মত। তাঁর বাবা ছিলেন এক জন সুফি সাধক, মাও ছিলেন ধর্মপ্রাণ মহিলা। তাই এই কথা আমরা নির্দ্বিধায় বলতে পারি শুরু থেকাই তিনি বেড়ে উঠেছেন ভীষণ বিশ্বাসী ধর্মীয় পরিমন্ডলে। ঈশ্বর চিন্তায় সদামগ্ন পরিবেশে। শোনা যায় ছোটবেলায় তাঁর বেশিরভাগ সময় নাকি কাটত ঘর থেকে মসজিদ আর মসজিদ থেকে ঘরে যাওয়া আসা করেই। তাঁর জ্ঞান বুদ্ধি তাতে কতটুকু বিকশিত হয়েছিল তা নিয়ে ঘোর সংশয় সৃষ্টি হয় কবি কালিদাস রায়ের ‘মাতৃভক্তি’ কবিতাটি পড়লেই। কবিতায় বায়েজিদ বোস্তামীর বালক বয়সের মাতৃভক্তির যে কাহিনী ফুটে উঠেছে তা এরূপ- একদিন বায়েজিদ বোস্তামীর মা গভীর রাতে হঠাৎ ঘুম থেকে জেগে পানি খেতে চাইলেন। বালক বায়েজিদ পানি আনতে গিয়ে দেখলেন কলসিতে পানি নেই। অতগ্য তিনি রাত দুপুরে বহু দুরের ঝর্ণা হতে পানি নিয়ে এসে দেখলেন মা আবারো ঘুমিয়ে পড়েছেন। কিন্তু তিনি মায়ের ঘুম না ভাঙ্গিয়ে সারারাত পানির গ্লাস হাতে মায়ের শিয়রের কাছে দাঁড়িয়ে প্রতিক্ষায় রইলেন মায়ের ঘুম ভাঙ্গার? এক সময় রাত কেটে সকাল হল। মা জেগে দেখলেন বায়েজিদ তখনো দাঁড়িয়ে আছে গ্লাসে পানি নিয়ে। মায়ের প্রতি এই ভক্তি দেখে মা আবেগ তাড়িত হয়ে কেঁদে বলেন-
কহিল মা, মরি মরি!
বাছারে আমার পানি হাতে করে সারা রাত্রটি ধরি
দাঁড়াইয়া আছো? ঘুমাওনি আজ? চোখে এলো জল ভরি।
কালিদাস বাঙ্গালী কবি ছিলেন তাই আমরা ধরে নিতে পারি লোক মুখে প্রচলিত বায়েজিদের মাতৃভক্তির কাহিনী শুনেই তিনি কবিতাটি রচনা করেন। এতে অবশ্য কাব্যিক প্রয়োজনে কিছুটা বাহুল্য থাকা বিচিত্র কিছু নয়। বাহুল্য যদি থেকে থাকে তাহলে আমার বলার কিছু নেই। আর যদি ঘটনা সত্যি হয়ে থাকে তবে তা বালক বায়েজিদের মাতৃভক্তির চেয়ে কান্ড জ্ঞানহীন বোকামি প্রকাশ করে ঢের বেশি। কারণ কোন বুদ্ধিমান বালক পিপাসার্ত মাকে পানি না খাইয়ে সকাল পর্যন্ত পানি নিয়ে অপেক্ষায় থাকবেনা। বায়েজিদ ঠিক কত বছর বয়সে এই কাজটি করেছিলেন বালক শব্দ ব্যবহার করায় তাও অস্পষ্ট। তবে বয়স যে অল্প ছিল না তা আমরা ধারণা করতে পারি রাতের আঁধারে দূরের ঝর্ণা থেকে পানি নিয়ে আসায়। অল্প বয়সী কোন ছেলের পক্ষে রাতের আঁধারে ঘর থেকে একা বের হওয়ার কথা বিশ্বাস যোগ্য নয় মোটেই।
বায়েজিদের জন্মের পূর্বে থেকেই ইসলামে সুফিবাদের বিক্ষিপ্ত কিছু প্রভাব দেখা যায়। তবে সুফিরা দাবী করেন বায়েজিদ সুফিবাদকে জনপ্রিয় করে সুফিবাদকে একটা দৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করে যান। জীবনের সুদীর্ঘ ত্রিশটি বছর তিনি সুফিবাদ প্রচারে ব্যয় করলেও তাঁর জীবনের উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলি নিয়ে সত্যিকার বিশ্বাসযোগ্য কোন লিখিত প্রমাণিক ইতিহাস পাওয়া যায় না। তাতে সন্দেহ আরো বদ্ধমূল হয় তিনি সত্যি কি এমন অবিস্মরণীয় কাজ করে গেছেন অথচ তা কালের সাক্ষ্য দিচ্ছেনা? তবে তাঁকে নিয়ে প্রচুর মিথ ও গালগল্প ছড়িয়ে আছে সুফি সাহিত্যে। যা এ কান ও কান হয়ে ফুলে ফেঁপে তাঁকে পরিচিতি দিয়েছে এক অলৌকিক চরিত্রে।
বায়েজিদের সারা জীবন কেটেছে ঈশ্বর সাধনায়। ছোট বেলা থেকেই ঈশ্বর চিন্তায় আচ্ছন্ন ছিলেন তিনি। সম্ভবত নবী মুসা বা নবী মুহাম্মদের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ঈশ্বর মগ্নতায় বুদ হয়ে ভেবেছিলেন তাঁরা যদি ঈশ্বরের সাথে দেখা করে কথা বলতে পারে আমিও নিশ্চইয় পারব। মনের আকাঙ্খা বাস্তবায়নে প্রবল বিশ্বাস নিয়ে তিনি তিন তিনবার ঈশ্বরের ঘর মক্কা ভ্রমণ করেন সরাসরি ঈশ্বরের সাক্ষাৎ পেতে।
উপরে আমরা কালীদাস রায় থেকে বালক বায়েজিদের মাতৃভক্তির গল্প শুনেছিলাম। এবার প্রাচীন সুফিবাদের গবেষক হুজুইরি কাস্ফ আল মাহজাব থেকে শুনি পরিণত বয়সে তাঁর ঈশ্বরের সাথে দেখা করতে মক্কা যাওয়ার কাহিনী।
Adapted from Hujwiri 1976, p. 108
Bayazid said: “I went to Mecca and saw a House standing apart. I said, ‘My pilgrimage is not accepted, for I have seen many stones of this sort.’ I went again, and saw the House and also the Lord of the House. I said, ‘This is not yet real unity.’ I went a third time, and saw only the Lord of the House. A voice in my heart whispered, ‘O Bayazid, if you did not see yourself, you would not have been an idol-worshipper even though you saw the whole universe, but since you see yourself, you are an idol-worshipper blind to the whole universe. ‘Thereupon I repented, and once more I repented of my repentance, and yet once more I repented of seeing my own existence’.
হুজুইরির বর্ণনা বিশ্লেষণ করে পাই, বায়েজিদ ১ম বার মক্কা গিয়ে শুন্য ঘর ও কিছু পাথর ছাড়া কিছুই দেখতে পেলেন না। ভাবলেন হয়তো ঈশ্বর তাঁর তীর্থভ্রমণ গ্রহণ করেন নি। তাই দেখা দেন নি। ২য় বার আবার গেলেন সেখানে, ঐ ঘর আবার দেখতে পেলেন এবং সেই সাথে ঐ ঘরের প্রভুকে দেখতে পাওয়ার দাবি জানালেন। তবে এই ঘরের প্রভুটি কে? তিনই মানুষ নাকি দেবতা বা ঈশ্বর? উনি দেখতে কেমন? কি তার আকার আকৃতি, বেশভূষা? কিছুই তিনি ব্যখ্যা করেন নি। বোধকরি মক্কায় তখন আরো অনেক লোক ছিল, তারা কেউ বায়েজিদের এই দাবীর পক্ষে সাক্ষ্য দেয়নি। তবে তিনি কি ঈশ্বর? সেই দ্বন্দ্ব তিনি নিজেই ঘোলাটা করেছেন -‘This is not yet real unity.’ বলে। তাঁর কাছে মনে হল গড়বড় আছে কিছু, কোথায় যেন ঠিক মিলছে না। ঈশ্বরকে দেখেছেন অথচ কিছু মেলাতে পারছেন না, তাতো হতে পারে না। অত্যধিক ঈশ্বর চিন্তায় মানসিক বিকারগ্রস্থ হয়ে দৃষ্টিভ্রম হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। দিনের আলোতে যে ঈশ্বরকে তিনি দেখতে পেলেন না অথচ সেই ঈশ্বরকে তিনি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখলেন এবং ঘুমের ঘোরে ঈশ্বরের সাথে নাকি কথা বলল্লেন। আট্টারের সূত্র থেকে আমরা জানতে পারি বায়েজিদ দাবী করেছেন -“I saw God in a dream and asked Him what is the path towards You? He replied, Abandon yourself and you are already there.” (Attar 1976). আবার মূল প্রসঙ্গে আসি, ঈশ্বরের সাক্ষাত পেতেই হবে এই সংকল্প নিয়ে ৩য় বারের মত তিনি আবার মক্কা গেলেন এইবার শুধু ঘরের প্রভুটিকে দেখতে পেলেন। তখন বিড়বিড় করে আত্মউপলব্ধি করলেন-“ও বায়েজিদ, তুমি নিজেকে না জেনে গোটা পৃথিবী জানলেও তুমি সত্যিকারের ঈশ্বর-ভক্ত হতে পারবেনা, যখনি তুমি নিজেকে জানবে তখনি চিনতে পারবে পুরো বিশ্বব্রহ্মান্ড হবে প্রকৃত ঈশ্বর ভক্ত”, তাঁর বোধদয় হল মানুষের নিজের মনের মাঝেই ঈশ্বর বিরাজমান শুধু তাঁকে দেখার মত অন্তঃদৃষ্টি চাই, আরো উপলব্ধি জন্মাল মানুষের কল্পনার ঈশ্বর আর প্রকৃত ঈশ্বরের মধ্যে বিস্তর ব্যবধান।
মক্কাকে ঈশ্বরের ঘর মেনে নিলেও ঈশ্বর দেখার ইচ্ছা নিয়ে কোন মুসলমান মক্কা যায় না কারণ তারা ভাল করেই জানে এখানে ঈশ্বর বাস করেন না। অথচ বায়েজিদ এই কথা জেনেও বারবার মক্কায় গেলেন ঈশ্বরকে দেখতে! তাঁর এই অবোধ শিশু সুলভ চিন্তা ভাবনার জন্য তাঁকে সুস্থ মানসিকতা সম্পন্ন ব্যক্তি পর্যায়ে বিবেচনা করতে কেন জানি বারবার সংশয়াচ্ছন্ন হতে হয়। এছাড়া তাঁর এই দর্শন প্রকৃত ইসলামের পরিপন্থি, ইসলামের মূল আদর্শ ঈশ্বরকে খুজে বের করে ঈশ্বরের সাথে সাক্ষাৎ করা নয়, ঈশ্বর ও নবীর প্রতি বিশ্বাস আনাই ইসলামের মূল কথা।
বায়েজিদের জীবদ্দশায় তাঁর এই ঈশ্বর দর্শন নিয়ে প্রচুর মতবিরোধের জন্ম দিয়েছিল। অবশেষে বায়েজিদ ৮৭৪ সালে ৭০ ঊর্ধ বছর বয়সে মারা যান। তাঁকে সমাহিত করা হয় বোস্তাম শহরেই।
মৃত্যু পূর্বে কেউ একজন তাঁর বয়স জিজ্ঞেস করলে তাঁর জবাব ছিল বেশ চমকপ্রদ-
“I am four years old. For seventy years I was veiled. I got rid of my veils only four years ago.”
অর্থাৎ মৃত্যুর পূর্বে তাঁকে নিয়ে সকল সংশয় দূর করতে তিনি নিজেই যেন স্বীকার করে গেলেন শেষ চার বছর বাদ দিলে বাকি জীবনটায় তিনি কাটিয়েছেন এক ঘোরের মধ্যে।
কোনটা যে রিয়াল আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না ।
এটা জানা কি এতটাই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়???
We are the dewllers of Chittagong. We don’t believe that Baizid came to our Chittagong without some business minded people, Majer’s followers and uneducated persons.
And the Mazar is totally fake.
সুহৃদ রাজীব তালুকদার
আপনার লেখা পরে খুবই ভাল লাগলো । এভাবে লিখে যান । শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে জমে থাকা গভীর অন্ধকার যদি কিছুটা হলেও দূর হয়(একদিন আলো ফুটবেই) তাহলে আপনার সাথে আমিও ধন্য হব । আমার কৃতজ্ঞতা জড়িত শুভেচ্ছা রইল ।
আপনি বলছেন গুমন্ত মায়ের ঘুম ভাঙ্গিয়ে পানি খাওয়ানোর জন্য এটা আপনার কেমন বুদ্ধির বিচার আমার বোধগম্য নয়… আপনার জেনে থাকা ভালো যে কারো তৃষ্ণা পেলে এমনিতেই তার ঘুম ভাঙবে তাকে জাগিয়ে স্মরণ করাবার প্রয়োজন হবে না ।..বিজ্ঞান বলে স্বাভাবিক অবস্তায় খাবারের চেয়ে ঘুম বেশি প্রয়োজন ।একজন লোক ৭ দিন না খেয়ে বেঁচে থাকতে পারলেও ৭ দিন না ঘুমিয়ে থাকলে সে মস্তিষ্ক বিকৃত হতে পারে(এটা আমার কথা নয়,বিজ্ঞানের দেয়া তথ্য)।
তাছাড়া ইসলামে ঈশ্বর বলে কাউকে সন্তুষ্ট করতে বলা হয় নি।।বারবার উল্টা-পাল্টা কথা বলছেন।
ইসলামে আল্লাহ্ কে সন্তুষ্ট করতে বলা হয়েছে,তাছাড়া আল্লাহ’র গুণবাচক ৯৯ নাম রেখে আপনি মুসলমান হয়ে ঈশ্বর বলে ডাকতে যাবেন কেন?
ইসলামে মাজার পূজারীদের কোন স্থান নেই,তাই যারা ওইসব মাজারে যায় কোন ইচ্ছা নিয়ে তাদের যথেষ্ট ধর্মীয় শিক্ষার অভাব আছে।
রাজেশ তালুকদার কে অনেক সাধুবাদ, সাধুদের নিয়ে তথ্যভিত্তিক একটি উপাত্য আমাদের জন্য অনেক কষ্ট করে তৈরীকরেছেন। অনেক কিছু জানলাম, ভাল লাগল। তবে,ওরা ধর্মান্ধ, ভণ্ড যাই হক না কেন, আমরা জেন মাজার উচ্ছেদ করতে ন’যাই। কারন মাজারের কিছু ভাল দিক রয়েছে – পথ শিশুদের খাবারের জোগান, সাধারণ মানুষের গান-বাজনার মাধ্যমে বিনোদন, পথ যৌন-কর্মীদের খদ্দের, স্থানীয় দরিদ্র লোকদের মাজার কেন্দ্রিক ব্যবসা- যা এই মানুষ গুলোকে বেঁচে থাকতে সহায়তা করে। ক্ষতিকর দিক গুলোও অবশ্য হেলাল ভাই তুলে ধরেছেন। তবে আমার মনে হয় মোল্লা তন্ত্র- থেকে মাজার তন্ত্র-ই উৎকৃষ্ট। বানান ভুল থাকতে পারে, বিরক্ত না হয়ে ধরিয়ে দিলে উপকৃত হই। (F)
বাওজিদ বস্তামি নিয়ে আমাদের মাথা বাথার কোন কারন নেই । কারন ও ব্যাটা ধর্মের পুজারি তথা মিথ্যার সেবক ছিল
কোথায় যেন শুনেছিলাম বুজুর্গরা নাকি একই সাথে কয়েক জায়গায় থাকতে পারে এবং একই সাথে কয়েক জায়গায় মরতেও পারে। কেউ যদি ভুতের গল্পের জন্য অপেক্ষা করে তখন আপনি বাস্তব গল্প বললে সে শুনবে কেন।
তাছাড়া মাজারগুলো সাধারণ মানুষকে গান-বাজনার মাধ্যমে বিনোদন, পথ শিশুদের ভাল খাবার, বিশ্বাসিদের রোগের চিকিতসা এবং দুষ্ট জীনের উৎপাত হতে রক্ষা, গাজা খোরদের নিরাপদ আস্তানা, ভয়ংকর ক্রিমিনালদের অভয়ারণ্য, পথ যৌন-কর্মীদের খদ্দের, খাদেমদের অর্থের খনি, পুলিশকে উপরি কামাই, স্থানীয় লোকদের মাজার কেন্দ্রিক ব্যবসা, সরকারকে ট্যাক্স ইত্যাদির মাধ্যমে মোটামুটি সব শ্রেণীর মানুষকে তুষ্ট রাখে।
ইদানীং গ্রামে মোল্লা-তন্ত্র শক্তিশালী হওয়ায় তাদের ধাবড়ানি খেয়ে মাজার ওয়ালারা কিছুটা পিছিয়েছে।
রাজেশ দাদা অনেক জানেন।
তাঁর জানার শেষ নেই।
আমি অবাক তাকিয়ে দেখি
কত অবলিলায় তিনি
নিজের পৃথিবীকে বিশ্বজগত ঠাউরে নিয়েছেন।
জয় হোক রাজেশ দাদার।
জয় হোক সকল গ্রন্হকীটের।
আপনি সব ঝামেলা চুকিয়ে আমাদের মধ্যে যে ফিরে এসেছেন তাতেই আমি খুশি। আশাকরি বন্যাদি দ্রুতই সুস্থ হয়ে উঠছেন।
@রাজেশ তালুকদার,
বায়েজিদ বাস্তামী চট্টগ্রাম কি বাংলাদেশেই কোনদিন আসেন নি। তাতে কি? সিলেটে সৈয়দ শাহ নূরের কবর দুই জায়গায় আছে। অনেক তো আলোচনা হলো, চলেন কচ্ছপগুলো একবার দেখে নিই-
httpv://www.youtube.com/watch?v=oeNLFjXNXBw
এবার এক কেজি গাজা নিয়ে চলুন সিলেট শাহ জালালের মাজারটা ঘুরে আসি-
httpv://www.youtube.com/watch?v=S9E9OlG1u50&feature=related
চমৎকার লেখাটির জন্য অনেক আগেই ধন্যবাদ দেয়া উচিৎ ছিলো। ব্যক্তিগত ঝামেলা টামেলায় এতোই ব্যস্ত হয়ে গেলাম যে ব্লগে এসে মন্তব্য করার সুযোগই ছিলো না।
সুফি সাধকদের কাজ তো নির্মোহ দৃষ্টিকোন থেকে দেখার অবকাশই হয় না, মিথ এবং অতিকথনের ভীড়ে। লেখাটি ব্যতিক্রমী বেশ ভাল লাগল।
ব্লগ সুবিধা কাজে লাগিয়ে যে ভাবে কেঁচো খুড়তে সাপ বের হচ্ছে তাতে এই রাজত্বের আয়ু আর শ বছরের বেশী বলে মনে হয় না।ইউরোপে এসব বিশ্বাস এখন অনেকটাই মৃত বলা যায়।
আপনাকেও ধন্যবাদ মতামত প্রকাশ করার জন্য।
সাধে কি আর বলে আমরা বাঙলীরা হলাম হুইন্না মুসলমান । এলেখাটির মাধ্যমে তা আর একবার প্রমানিত হলো। ১১ শতকের দিকে মুসলমান ধর্মের পূজারী পীর-আউলিয়া ও দরবেশরা যে ভারতবর্ষে পা দিয়ে এই উপমহাদেশে রাজত্ব গড়ল তার আর সলিল-সমাধী হল না,এবং আর কত শত বছর যে এদের রাজত্ব থাকবে কে জানে !!!
এমন আজগুবী বোস্তামীর গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ রলো।
(F)
পড়ে ভাল লাগলো।
চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামীর মাজারে গেলে কচ্ছপগুলোর জন্য ভয়ানক মায়া হয়! আর ইরানের বাস্তাম শহরের বোস্তামীর কবর কমপ্লেক্সে গেলে বোস্তামীর জন্য মায়া হয়! আমাদের এদেশীয় কেউ বোস্তামীর আসল মাজার দেখলে ভিরমী খেয়ে মরে যাবে বলে আমার বিশ্বাস। বায়েজীদ বোস্তামীর(আসলে হবে বায়েজিদ বাস্তামী-শহরের নাম বাস্তাম বলে) শহর বাস্তাম ইরানিয়ান স্ট্যান্ডার্ডে একটা ছোট মফস্বল শহরের বেশী কিছু নয়। তার তুলনায় কিছু দূরের শাহরুদ বরং অনেক বড় শহর। আর বাস্তামীর কবর যে কমপ্লেক্সে, সেখানে বলা হয় একজন বড় পীরের কবর আছে, আমাদের দেশীয় যে কোন পীরের মাজারের মতোই আড়ম্বর তার, লাল সালু, ভক্তিমুলক কাপড়ের টুকরা, মানত করে ফেলে আসা মুদ্রা কি নেই! তবে সেটা আমাদের বায়েজিদ বোস্তামীর কবর না। তার কবর পাওয়া যাবে কয়েকটা নির্জন কোর্ট ইয়ার্ড বা উঠোনের একটার এক কোনায়। শুকনো পাতা ছড়ানে বাঁধানো কবর, কোন জৌলুসের ছিটেফোঁটাও নেই, কেবল অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার মতো একটা ভাব। তার তুলনায় আমাদের চট্টগ্রামের কথিত কবর বরং অনেক আড়ম্বর পূর্ণ!
তবে কি না ভক্তি রস জিনিসটা যেহেতু আমার মধ্যে শত চেষ্টা করেও জাগানো যায় নি, তাই আমার কাছে আসল কবরটাই বরং অনেক সুন্দর ও আরামের মনে হয়, কোলাহল মুক্ত, শান্ত!
@থাবা,
আপনি চমৎকার তথ্য মূলক মন্তব্য করেছেন। তথা কথিত নানা ইরানী সুফি পীর দরবেশ (অধিকাংশই ভাগ্যন্বেসী) বাংলায় আগমনের ফলে বায়েজিদের গাল গল্প যে ভাবে ছড়িয়েছে তাতে তাঁকে অতি মানব হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে আমাদের দেশে। অথচ দেখেন তাঁর নিজের দেশেই তাঁর তেমন কোন প্রভাব নেই। কি আজব আমাদের দেশের বিশ্বাসী লোকজন।
@রাজেশ তালুকদার, পীর কথাটার অর্থ হলো বৃদ্ধ। ঐ দিক থেকে আসা দাড়িওয়ালা তরুনরাও তাই এদেশে খুব ধার্মিক বৃদ্ধের মর্যাদা পেয়ে গিয়েছিল। আর নিজের দেশে এদের কেউ চেনেও না!
আমার অকিঞ্চিতকর মন্তব্যটা আপনার চোখে পড়েছে, ধন্যবাদ!
বিশ্বাসের বিষ যতটা ধর্মতন্ত্রের, তার চেয়ে অনেক বেশি ব্যক্তির প্রভাব। সেই প্রভাবের আবার ডালপালা গজায়। তাই ধর্মতন্ত্র খন্ডনের পাশাপাশি ব্যক্তির কল্পকাহিনীগুলো তুলে ধরা আরো জরুরী। মানুষ ধর্ম মানে, মানুষকে সামনে রেখে, ঈশ্বরকে নয়। অলৌকিক (?) ক্ষমতার ধার্মিক মানুষ না থাকলে ঈশ্বর কতদিন বেঁচে থাকতেন, সংশয় আছে। এখন আবার অলৌকিক ক্ষমতার জায়গা দখল, তার নাম ধর্মীয় রাজনীতি। থেকেই যাচ্ছে কোন না কোনভাবে।
পেটের ভাতের যোগান দিতে না পেরে যে মানুষ আত্মহত্যা করে তাকে বলছেন, সত্য অসত্য বিচারে তথ্য প্রমাণের খোঁজ রাখতে?
ঠিক তাই।
অনেক অনেক ধন্যবাদ, সত্য উম্মোচনে সহায়ক আপনার এই প্রয়াসকে।
@স্বপন মাঝি,
সঠিক কথাই বলেছেন। ব্যক্তি প্রভাব অবলম্বনেই আজকের ধর্মগুলোর প্রচার প্রসার ও প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য (B)
প্রায় ১৭ বছর আগে আমিও একবার বায়েজিদ বোস্তামী গিয়ে বিস্মিত হয়েছিলাম, ভক্তিও জেগেছিল মনে। পরে সব জেনে বুঝে সব কিছু বালখিল্যতায় ভরা মনে হতো। আপনার লেখা পড়ে আরও জানলাম। ধন্যবাদ।
@শাখা নির্ভানা,
আপনি তো গল্পকার এই সব নিয়ে গল্প লিখুন না কেন?
মাজার সম্পর্কে আমার কখনই কোন সম্মোহন জাগেনি। আমাদের এলাকাতেও একটা মাজার আছে, আমার মনে আছে ছোট বেলায় আমার মা আমার অসুস্থতার জন্য মোরগ ও মোমবাতি মানত করেছিল। আমি বড় হওয়ার পরও সেখানে অনেক বার গিয়েছি, (কারন আমি একটি মোম-এর কারখানা দিয়েছিলাম আমার বাসাতেই) সেই মাজারে ব্যাঙ এর ছাতার মত কতগুলো টং দোকান গজেছে, সেখানে আমি মোমবাতি ছাপ্লাই দিতাম। যেহেতু আমাকে মালগুলো পৌঁছাতে হতো আবার বিক্রিত মালের টাকা তুলে আনতে হতো তাই মাঝে মাঝেই সবগুলো দোকানের টাকা ক্যাশ করার জন্য অনেক সময় ধরে অপেক্ষা করতে হতো। এর মধ্যে মানুষের আনাগোনা চলছেই, কেউ বাদক দলসহ বাদ্য বাজিয়ে মাজারে এসে খাসী জবাই করে খিচুরী রান্না করছে; কেউ মোম বাতি, মোরগ, গরুর দুধ, গাছের ফল ইত্যাদি মাজারের খাদেমকে দিয়ে যাচ্ছে। সবচেয়ে মজার বিষয় এরা প্রায় সবাই দান শেষে মাজার জিয়ারতের নামে মাজারের চারপাশে সেজদা দিতো আর হাউ-মাউ করে কাঁদতো। আমি এই বিষয়টা খুব উপভোগ করতাম। আমার মনে হতো, আমি কোন নাট্যমঞ্চের দর্শক!!! কি করুণ দৃশ্য! একটা মাটির স্তূপকে ঘিরে একেক জন নানা রকম ঢং এ আহাজারি করছে, কান্নাকাটি করছে!!! এই দৃশ্য যদি কেউ না দেখে থাকেন বুঝানো যাবে না।
@জিল্লুর রহমান,
এটা কোন পীরের মাজার এবং কোথায়,সেটা একটু জানতে উৎসাহ বোধ করতেছিলাম।
জানাবেন কি ?
ধন্যবাদ
মুক্তমনায় সত্য উদ্ঘাটনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এর দ্বারা বাস্তবে আমি উপকৃত হয়েছি।
তাহলে ঘটনাটি পূর্বে একবার উল্লেখ করলে ও আবার উল্লেখ করছি।
আমার বড় ভাই যিনি একজন অত্যন্ত ধার্মিক, আলহাজ ব্যারিষ্টার। তিনি এখানে টুরিস্ট ভিষায় কয়েকমাস আগে এসেছিলেন।
তিনি একদিন আমাকে বল্লেন আমি ইত্তেফাকে দেখিয়াছি, একজন বিদেশী কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ কম্পিউটার দ্বারা অনুসন্ধান চালিয়ে দেখতে পেরেছেন কোরানের সব কিছু ১৯ সংখ্যা দ্বারা বিভাজ্য। কোন মানুষে কোরান সংকলন করলে এরূপ ঘটা কোন রকমই সম্ভব নয়। অতএব কোরান আল্লাহ প্রদত্ত বানী হতে বাধ্য।
তোর মুক্তমনা লেখকদের একটু জিজ্ঞাসা করে দেখতো তারা কি বলে ?মূক্তমনার কোন লেখকেরই ক্ষমতা নাই কম্পিউটার দ্বারা অনুসন্ধান কৃত এত বড় সঠিক যুক্তি খন্ডন করার। তাদের অবশ্যই কোন জবাব দেওয়ার কিছুই থাকবেনা। তারাও বাধ্য হয়ে মেনে নিবে।
এরপর আমি যে কাজটি করলাম তা হল:
আমি মুক্তমনা হতে সৈকত চৌধুরীর “কোরানের উনিসের মিরাকল” সুদীর্ঘ পবন্ধটি পড়িয়া শুনাইলাম। এই মিরাকলের প্রতিষ্ঠাতা স্বঘোষিত আল্লাহর নবীর দাবিদার জনাব রাহাত খলিফা সাহেবের কলঙ্কিত জীবনী ও চরম পরিনতির বিষয় টির ও উল্লেখ ও রয়েছে। যে কেহ ওটা পড়েও দেখতে পারেন।
সব শুনে আমার ভাই বল্লেন আমি কত বড় একটি ভ্রান্ত ধারনার মধ্যে ছিলাম তা এখন বুঝতে পারছি। আমাদের দেশের পত্রিকায় এগুলি বিস্তারিত কিছু লিখেনা।
আমাদর দেশের মসজিদেও অনেক ইমাম সাহেবরা এই মিরাকল টা প্রচার করে থাকেন। তারাও বোধ হয় এর উৎস ও বিস্তারিত জানেননা।
মুক্তমনায় যদি এভাবে সঠিক সত্যটি জন সম্মুখে তুলে না ধরে, তাহলে তো সুধু সাধারন জন গনই নয় বড় বড় উচ্চ শিক্ষিত জ্ঞানী গুনী ব্যক্তি বর্গরা ও অন্ধ্কারের মধ্যে আজীবন নিমজ্জিত থাকিয়া যাইবেন। এটা কি সমাজে উন্নতি বয়ে আনতে পারবে ?
ধন্যবাদান্তে,
আঃ হাকিম চাকলাদার
নিউ ইয়র্ক
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
এভাবে পাবলিক ব্লগে কারো ফোন নাম্বার দেয়া উচিত না আমি মনে করি,যার নম্বর দিয়েছেন তার নানা রকম অনাকাঙ্খিত ঝামেলা হতে পারে,ব্লগে কখন কে কোন উদ্দেশ্য ঢুকে কিছুই বলা যায়না । এর থেকে ভালো হতো যদি যার দরকার সে আপনাকে মেইল করে নম্বর নেয়। তাই আমার মনে হয় নম্বরটি সরিয়ে নেয়াই ভালো,আপনি কি বলেন?
আরেকটা ব্যাপার,মন্তব্য আপনার নাম কিন্তু এমনিতেই উপরে আসছে,নিচে আবার লেখা বাহুল্য।
ধন্যবাদ :)।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
ধন্যবাদ ভুলটি ধরিয়ে দেয়ার জন্য। আপনি ঠিকই বলেছেন।
এক্ষনিই নাম্বারটি মুছে দিন।
ধন্যবাদ
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
সরিয়ে দেয়া হয়েছে,ধন্যবাদ।
তথ্যবহুল লেখাটির জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞাতা প্রকাশ করছি। অনেক বই পড়ে যা জানতে হত তা আপনার একটা লেখাতেই পেয়ে গেলাম।
অন্যান্য মন্দির ও মাজার নিয়েও লেখার অনুরোধ রইল।
@গীতা দাস,
দিদি আমি শুরু থেকেই লক্ষ্য করেছি আপনি আমার লেখার সাথেই আছেন। যা আমাকে অনেক আনন্দ ও উৎসাহ যোগায়। কথা দিতে পারছি না তবে আপনার অনুরোধ রক্ষার চেষ্টা করব। বুঝেনতো প্রচলিত মিথ গুলো খন্ডনে এত দিন পরে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য প্রমাণের যথেষ্ট ঘাটতি আছে।
তাছাড়া লেখা এদিক ওদিক হলেইতো গদাম অপেক্ষা করবে। 🙂
@রাজেশ তালুকদার,
স্যার আপনার লেখাটি আমার খুব ভালো লেগেছে ,বিশেষত; আমিও মাজার ও পীর এসব বিশ্বাস করতাম না ।তাছারা মানুষ মাজারে গিয়ে যে অহেতুক কাজ করে যেমন; সন্তান হওয়া ,বিয়ে হওয়া ,পড়িক্কা পাশ ইত্যাদি ঐ মাজারে আব্দার না করে নিজে চেষ্টা করলে ফল পেতো । তথাপি বায়েজিদ পানি নিয়ে মায়ের শয়নের পাশে দাড়িয়ে থাকাকে তার বুকামি হতে পারেনা ।হয়তো উনার মা অসুস্থ ছিলেন [যেহেতু কালিদাসের কবিতায় জানা যায়নি তিনি সুস্থ /অসুস্থ ছিলেন ]তাই তিনি অসুস্থ মাকে এত কষ্টের ঘুম ভাঙাতে চাননি [অসুস্থ অবস্তায় ঘুম কমই হয়]আবার মা ঘুম থেকে জেগে পানি চাইতে পারেন তাই তিনি জেগে ছিলেন ,ঠিক আপনি যেমন নানীর জন্য জেগে ছিলেন । 🙂
@ রাজেশ তালুকদার,
নিঃসন্দেহে খুবই শ্রমসাধ্য লেখা। শত শত বছরের প্রতিষ্ঠিত ‘বিশ্বাসের মিথ’ এর বিপরীতে তথ্য-উপাত্ত জোগার বেশ দুরহ। লিখাটি বেশ ভাল লাগলো।
যতার্থ বলেছেন।
ইসলামের আসল রুপটি হল যুগে যুগে বিভিন্ন এই সকল সাধকগন। আব্দুল কাদের জীলানী, মাওলানা রুমী, নজরুল, লালন, আল্লামা ইকবাল, খাজা বাবা…প্রমুখ। ইনারা হলেন ইসলামের জলন্ত শিখা, ইনারাই প্রকৃত ইসলাম।
আর বাকি আপনে যেই সকল ইসলামের কথা বলছেন- এগুলো ৭৩ ভাগের ৭২ ভাগ। নবী (সাঃ) বলেছিলেন এমন এক সময় আসবে যখন ইসলাম ৭৩ ভাগে ভাগ হবে, এক ভাগ সত্য থাকবে। সেই এক ভাগ সত্য হইল এই পীর আউলিয়ার ভাগ। যেখানে সত্য জানা যায়। এখনও ইনাদের মত মহৎ মানবের বিচরন আছে। শুধু ভাগ্য লাগে সংস্পর্ষের।
নবী (সাঃ) নিয়ে এই সাইটের সকল অক্ষর বিদ্যান ব্যক্তিদের ভিতর এক ধরনের জ্বালা পুড়া আছে। এই বিষয় কিছু বলব না। এই ওলী আউলিয়া গনের শিরমনি হইলেন আহলে বায়াতের প্রধান মোহাম্মদ (সাঃ)। এমনকি যুগে যুগে যত নবী রসুল, জ্ঞানী গুনী, বিজ্ঞানী যাই আসুক না কেন সকলের সর্দার হইলেন এই মোহাম্মদ (সাঃ) ।
আবার তিনি এত ফেরকা বাদায় দিয়ে গেছেন। তিনি সকল কিছুর ভিতর প্যচ রেখে গেছেন। সৃষ্টি চলছে তার নিয়মে। সেই নিয়মের নিয়ম দাতা এই মোহম্মদ ও তার বংসধরগন। মুক্তমনা নামক অক্ষর বিদ্যার জাহাজেরা সেই প্যচে বসে গিট্টি খুলে খুলে হয়রান, আসল সত্য বুঝার সেই বিন্দু থেকে বিন্দু পরিমান কপাল নেই। যাইহোক বাদ দেই।
তবে আপনার লেখা পড়ে ভাল লাগল। অনেক কিছুই জানতে পারলাম। আপনাকে ধন্যবাদ।
@Russell,
নজরুল,লালনেরা কীভাবেপ্রকৃত ইসলামের ধারক হলেন তা বুঝলামনা!নজরুল দেদারছে শ্যামাদেবী,শিব প্রমুখ দেব দেবীর মূর্তিপূজা নিয়ে গান লিখেছেন,আর লালন তো পুরোপুরি ধর্মবিরোধী,
“এমন সমাজ কবে গো সৃজন হবে,
যেদিন হিন্দু-মুস্লিম,বৌদ্ধ-খ্রিস্টান জাতিগোত্র নাহি রবে।”
আপনি যে পীরদরবেশদের কথা বললেন,এদের নিয়ে অনেক মতভেদ আছে।বিশেষত,চট্টগ্রামের মানুষেরা এ ব্যপারে সেন্সিটিভ।তাদের এক অনুসারীরা মহানবীকে শ্রেষ্ঠ মানলেও ওয়াজে জিকির করে আব্দুল কাদের জিলানীর নামে।তারা সরাসরি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা না করে সেটা করে জিলানী সাহেবের মাধ্যমে,যে তিনিই তাদের প্রার্থনা আল্লাহর কাছে পৌছে দেবেন।এদের মধ্যে আবার বহু মতভিন্নতা আছে।
আসলে পুরো ব্যাপারটিই হচ্ছে বিশ্বাস।যে যেটা বিশ্বাস করে সেটাই তার কাছে সত্য।যেমন আপনি আপ্নারটা নিয়ে গোঁ ধরে বসে আছেন।আপনি নিজে ইচ্ছা নাকরলে কারো বাপের সাধ্য নেই আপনাকে বোঝানোর।আপনি যারটাকে ভুল বলছেন সেও তার বিশ্বাসে পুরোপুরি অটল।তাকে ভুল বলবেন কীকরে?
এখানেই যুক্তিবাদের গ্রহণযোগ্যতা বেশি।
আপনার মত সবাই যদি আগে থেকে সব বুঝ যেত তাহলে পৃথিবীতে জ্ঞানবিজ্ঞআনের আর উন্নতি হওয়া লাগতোনা।
@সমুদ্র, \\
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।।
@Russell,
আস সত্যের যোগান দেয়ার জন্য আপনারা তো আছেন। তো যোগান দেন এবং আমরা তা পেয়ে ধন্য হই। তবে এর আগে মুহাম্মদ ও কোরান-হাদিস সম্পর্কে একটু বিশদ জানা চাই। ইমান থাকার ফলে ইসলামে যা আছে তাই কল্যাণকর এভাবে ভাবলে সমস্যা কিঞ্চিত হতে পারে।
@Russell,
আপনার মন্তব্যের মাধ্যমে আপনার বিশ্বাসের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। সমূদ্র আপনাকে সুন্দর জবাব দিয়েছেন তাই এই বিষয়ে আমি নিশ্চুপ থাকাই শ্রেয় মনে করি।শুধু সামান্য যোগ করতে চাই বায়েজিদের জীবনী আপনি জানার আগে বায়েজিদকেও নিশ্চই আপনি আপনার দেয়া এক ভাগ প্রকৃত ইসলামীদের তালিকায় স্থান দিতেন সে বিষয়ে কোন অনিশ্চয়তা ছিল কি? আপনার তৈরী তালিকায় নজরুল ও লালনের নাম দেখে নিশ্চিত হওয়া যায় এদের সম্পর্কে আপনার জানা খুবই সীমিত। আগে ভাল ভাবে এদের জীবনী জানুন। তারপর সিদ্ধান্তে আসুন।
এতটা নিশ্চিত হলেন কি ভাবে? আবেগি কথা বার্তা না বলে বাস্তবতায় ফিরে আসুন। জ্ঞানী গুণী, বিজ্ঞানীদের কোন সর্দারের প্রয়োজন হয় না তাদের প্রয়োজন হয় নিরলস গবেষণার, চেষ্টার, পরিশ্রমের।
ধন্যবাদ।
@Russell,
আপনার বিশ্বাসের গভীরতা দেখে অবাকই হতে হয় বৈকি!!! বেশ কিছুদিন আগে ড. মোঃ আতাউর রহমান মিয়াজী একটি কলাম লিখেছিলেন “মিরাজ ও বিজ্ঞান” নিয়ে। (লিংকটা আগে ও দিয়েছিলাম একবার আবুল কাশেম ভাইয়ের একটি পোষ্টে)। উনার বিজ্ঞানভিত্তিক বিশ্লেষন ( মিরাজ ও আপেক্ষিক ত্বত্ত) সম্মন্ধে জানার জন্য আমার যোগাযোগের চেষ্টাটা এখন ও পর্যন্ত ব্যর্থ। তাই গত শুক্রবার মেইল করেছি আরেকজন কলামিষ্ট ড. আবুল মুনিম খান কে এই ব্যাপারে সহযোগিতার জন্য (এখনো উত্তর পাইনি)। তাই বলি
– এই ধরনের কমেন্ট করার আগে আরেকবার ভাবুন, জানুন, বুঝুন- কারন ভাববেন না আপনারা এত সহজে পার পেয়ে যাবেন এইসব যুক্তিহীন কথা বলে। আশা রাখি জ্ঞ্যানের আলোয় আলোকিত করবেন নিজেকে। আর রাজেশদার কমেন্ট টা ভাল করে পড়ুন ও উপলব্ধি করার চেষ্টা করুন।
@Russell,
ব্যাবাক্তে যদি বাদই দিলেন, তাইলে লিখুনের কাম কি??
@Russell,
এ সর্দার আর তাঁর সাঙ্গ-পাঙ্গরা এত বছরের চেষ্টায় নিতান্ত একটা স্যানিটারি ল্যাট্রিন এর মতো বস্তুও আবিষ্কার-ব্যবহার করতে পারলো না। ছয়শ’ পাখাধারী জিবরিল বা তাঁর প্রভুর চিন্তায়ও এসব এলো না…..।
বরং একথা বলুন যুগে যুগে যত প্রতারক, যুদ্ধবাজ, নারীলিপ্সু, শিশুকামী যাই আসুক না কেন সকলের সর্দার হইলেন এই মোহাম্মদ (সাঃ), সভ্য দুনিয়া আপনার সাথে একমত হবে।
বেশ শ্রমসাধ্য লেখা। অনেক কিছুই জানা হলো। অনেক ধন্যবাদ লেখাটির জন্যে। (Y)
আপনার উত্তরটা আমাকে খুব মজা দিয়েছে। আপনি তো একজন বেশ মজাদার লোক ও বটে। হ্যাঁ আমি একজন নিয়মিত মসজিদে যাতায়াত কারী ধার্মিক লোক। মুক্তমনায় দুই একজন আল্লাহ ওয়ালা ধার্মিক লোক থাকার দরকার আছে বই কি ? আল্লাহর সাহায্য না আসলে মুক্তমনার যাত্রা সফল হইবেনা। এই যাত্রাকে সফলতা রুপ দিতে হইলে আল্লাহ/ইশ্বর/GOD এর সাহায্য কামনা করিতে হইবে। এটা অত্যন্ত জটিল কাজ।
শত শত বৎসরের মিথ্যার ঝুলি বংশ পরম্পরায় আমাদের কাঁধের উপর বোঝা আকারে দাড়িয়েছে। ঠিক যে ভাবে genetics এর মাধ্যমে বংশ পরম্র্পরায় রোগ যাইতে থাকে।
হ্যাঁ, ধর্ম তো এটাই বলে : যেমন,
১। তুমি সত্য বলিবে।
২। তুমি সত্য প্রচার করিবে।
৩। মানুষ ও সমাজের জন্য মঙ্গল জনক কার্য করিবে।
ইত্যাদ।
এখন যদি এই ধর্মের মধ্যেই আমরা কোন মিথ্যার ঝুলি পেয়ে যাই, মানুষ ও সমাজের অমঙ্গল জনক বিষয়াদি পেয়ে যাই, তাহলে এটাকেও প্রতিরোধ করা ও ধর্মের কাজ এবং এটাও আল্লাহ/ইশ্বর/GOD এর সব চাইতে বড় নির্দেশ।
এটা পালন করলে সৃষ্টি কর্তার উদ্দেশ্যই পালন করা হইবে। তিনি আমাদেরকে আরো বেশী পুরস্কৃত করিবেন। তার উদ্যেশ্য পৃথিবীতে সত্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠিত করা।
সৃষ্টিকর্তা কাকেও এক চেটিয়া এজেন্সি দিয়া বসিয়া থাকেন নাই। তিনি সকলের কাছেই সমান। যেকোন ব্যক্তির তার কাছে সমান অধকার ও দাবি আছে।
বরং মিথ্যা প্রচার কারীদের সংগে সৃষ্টিকর্তা কখনই থাকবেন না।
আপনারা যারা মিথ্যার ঝুলি উদঘাটন করিয়া মানুষের ও সমাজের মঙ্গল করিতেছেন তারাই বরং সৃষ্টি কর্তার উদ্যেশ্য সাধন করিতেছেন।
সৃস্টিকর্তা অবশ্যই আপনাদের সংগে থাকিবেন।
হ্যাঁ,এগুলি লেখা অত্যন্ত মেহনতের কাজ। আমি তো কখনই এটা করতে পারবনা। আপনারা (যেমন ভাই আবুল কাশেম, আকাশ মালিক,ভবঘুরে ও আরো অনেকে)যখন সমুদ্র সিন্চন করে মানিকটা আমাদের সম্মুখে তুলে ধরেন তখন আমরা এটা শূধু ভোগ করতে পারি।
হ্যাঁ কষ্ট করে হলেও সত্য উদ্ঘাটন করা চালিয়ে যান।
ধন্যবাদান্তে,
আঃ হাকিম চাকলাদার
নিউ ইয়র্ক
বাগেরহাট খান জাহান আলীর দরগাহে বড় দীঘি আছে। সে দীঘিতে খান জাহান আলীর দেওয়া কুমীর আছে। লোকেরা মান্নত মানিয়া মুরগী, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি আনিয়া এই কুমীরদেরকে খেতে দেয়।
কথিত আছে যে এই কুমীরে কখনো মানূষকে আক্রমন করেনা।
কিন্তু ইতিমধ্যে বেশ কিছু মানুষকে কুমীরে আক্রমন করার পর থেকে সরকার দীঘিতে নামা নিষিদ্ধ করিয়া দিয়াছে।
ধন্যবাদান্তে,
আঃ হাকিম চাকলাদার
নিউ ইয়র্ক
অনেক খেটে লিখেছেন বোঝাই যাচ্ছে (Y)
@রামগড়ুড়ের ছানা,
খাটা খাটুনি তুমি ওতো মুক্তমনার জন্য কম কর না। ধন্যবাদ তোমারো অনেক প্রাপ্য।
Love is a real foolishness! অথবা এই বোকামিটাই ভালবাসা।
আশা করি আপনার ছেলে মেয়েরা খুবই বুদ্ধিমান। এবং তাদের উচিৎ হবে তাদের বাবা মায়ের বয়স বারার শুরুতেই তাঁদেরকে বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে আসা।
** বাকি লিখা ভালো লাগলো। (Y) ভণ্ডামি সমূলে উৎপাটিত হয়া উচিৎ।
@অরণ্য,
বুদ্ধিমানের সাথে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানোর সম্পর্কটা দিয়ে কি বুঝাতে চাচ্ছেন পরিষ্কার হলো না।
আপনার ভালো লাগায় আমারো ভালো লাগল।
@রাজেশ তালুকদার,
বায়েজিদের মাতৃভক্তিকে কান্ড জ্ঞানহীন ও বোকামি বলে যে যুক্তি আপনি দেখালেন, সেই পথে এগিয়ে গেলে প্রত্যেক বুদ্ধিমান(?) সাবালকের উচিৎ হবে তাঁর বৃদ্ধ উপার্জন অক্ষম পিতা মাতা কে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানো! নয় কি?
কেউ যদি ভালবাসা বা শ্রদ্ধার কথা বলেও, ওসব তো আর পরীক্ষাগারে কাটাকুটি করে দেখা যাবে না। সুতরাং ওসব স্রষ্টার মতই অসাড়!
@অরণ্য,
আপনি যেটা বুদ্ধিমান বুঝাতে চেয়েছে আমার দৃষ্টিতে সেটা কুলঙ্গার, স্বার্থপর ছেলে। আপনি মনে হয় আমার কথার সুরটা ধরতে পারেন নি।
বায়েজিদের রাতের আঁধারে পানি আনতে যাওয়াকে আমি বোকামি বলিনি। আমি নিশ্চিত অধিকাংশ ছেলে নিজের মায়ের জন্য তা করবে। এমন কি এর চেয়ে অনেক কঠিন কাজ ও করবে। আমি বোকামি বুঝিয়েছি মাকে পানি না খাইয়ে পানি হাতে দাঁড়িয়ে থাকাকে। মা যেহেতু তৃষ্ণার্ত তাঁর উচিত ছিল মাকে ডেকে পানি খাওয়ানো কিন্তু তিনি তা করেন নি। স্বাভাবিক দৃষ্টিকোন থেকে আপনি চিন্তা করে দেখুন কেউ যদি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে তার তো পানি খাওয়ার আর দরকার হয় না। ঘুম থেকে উঠেই তিনই স্বাভাবিক হয়ে যাবেন। আর মা যদি অসুস্থ হতেন তাহলে ভিন্ন কথা ছিল। কিন্তু মা অসুস্থ তা আমরা কবিতায় পাই না। আমরা ধরে নিতে পারি তিনি সুস্থ স্বাভাবিক ছিলেন। আমার নানী মৃত্যুর পূর্বে মেডিকেলে ভর্তি হয়েছিলেন। আমি সারারাত জেগে ছিলাম তাঁর পাশে কখন কি প্রয়োজন হয়। একে কি আপনি আমার নানীভক্তি বলবেন নাকি অবিহিত করবেন আমার কর্তব্য বলে।
ধন্যবাদ।
@রাজেশ তালুকদার,
আপনি বোধ হয় আমার লেখা বাক্যের বুদ্ধিমান শব্দটির পরে বন্ধনীর মধ্যে লেখা “?”/ প্রশ্নবোধক চিহ্নটি খেয়াল করেন নি। বাক্য টা একটু অভিমানের।
আমি বলব দুটোই। আমি যা বলব না, তাহলো, ‘অসাড়, নির্বোধ, জ্ঞানহীন’। যেমনটা আপনি বালক বায়েজিদ কে বলেছেন।
আপনি নিজেই বলছেন আপনি আপনার নানীর কখন কি প্রয়োজন হয় এই চিন্তায় আপনি সারা রাত জেগে কাটিয়েছেন। বায়েজিদ করলে কেন দোষ হবে? তৃষ্ণার্ত মা কে সে পানি খাওয়াতে না পেরে তাঁর কি চিন্তা হতে পারে না? একটু পরেই মা হয়ত আবার জেগে পানি খেতে চাইবে, নিজে ঘুমিয়া পরলে হয়ত মা তৃষ্ণার্তই থেকে যাবে, এই চিন্তা কি বালক বায়েজিদের হতে পারে না?
দায়িত্ব কর্তব্যই শেষ কথা নয়। ভক্তি বা ভালবাসা কে কোন পরিসীমানায় ফেলা যায় না।
বালক বায়েজিদ তাঁর তৃষ্ণার্ত মায়ের জেগে ওঠার অপেক্ষায় থাকাকে আপনি ‘অসাড়, নির্বোধ, জ্ঞানহীন’ ইত্যাদি বিশেষণে বিশোষিত করতে পারেন না। তাঁর ভালবাসা বা ভক্তি বেশি থাকাটা কোন অপরাধ নয়।
আর একটা ব্যাপারে আমি বলতে চাই।তাহলো, ধর্মের সাথে বায়েজিদ বস্তামির নামটা জড়িয়ে থাকার কারনে তাকে পুরপুরি হেনস্থা করতে হবে এমনটা হউয়া উচিৎ না। তাঁর জীবনের ভালো দিক গুলকেও খারাপ ভাবে উপস্থাপন করা ঠিক নয়। তাঁর নামে কেউ যদি ভণ্ডামি করে তাঁর জন্যে ব্যাক্তি বায়েজিদ কে কেন এত অপবাদ দেয়া?
@রাজেশ দা,
বায়েজিদ বোস্তামি নিয়ে এই লেখাটা খুবই তথ্যবহুল। আমি চট্টগ্রামের বাসিন্দা হেতু অনেকবার গিয়েছিলাম এই গাঞ্জাখানায়, তবে ধর্ম বা গাঞ্জার জন্য নয় :-[ :)) | খুব ভাল লাগতো দেখতে যখন কাছিমগুলো পুকুরের অপর পাড়ে ধানক্ষেতে যেত ডিম পাড়তে। আমি বেশী অবাক হতাম হিন্দু ছাগুদের বিপুল উপস্হিতি দেখে ওখানে। ওখানের খাদিমরা তো অবিশ্বাস্য রকমের গঞ্জিকা সেবনকারী আর অনেক দুষ্টামী ও করেছিলাম ঐসব গাঁজাটি ছাগু দের দিয়ে (যুবক বয়সে যা হয় আরকি!!!)। এখন তো শুনি খুবই অনিরাপদ জায়গা, জানিনা কতটুকু সত্যি। যাই হোক, খুব ভাল লাগলো আপনার লেখাটা পড়ে। আরো লিখুন। (Y)
@আমি আমার,
উৎসাহিত করার জন্য শুভেচ্ছা।
আবার আর একটা খাটুনি খেটে লেখা। এই সব তথ্য সহজে মেলে না। আগের লেখাগুলোও প্রচূর খাটুনি করে লেখা।
চোখের সামনে ভন্ডামি চলছে দিনের পর দিন। গোয়েবলসের মিথ্যাচারের পদ্ধতি অনুসরণ করে অনেক মিথ্যা অনেক ভণ্ডামি এখন সত্যি হয়ে গেছে। কেউ প্রশ্ন করে না। কেউ জানতেও চায়না। অল্প দু চারজনকে কষ্ট করে সত্যি জানাবার চেষ্টার এই সচেতন প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক।
রাজেশ তালুকদারকে ধন্যবাদ এবং :clap
@কাজী রহমান,
কম্পু হাতে আপনিও এই আদর্শের এক জন বীর সৈনিক। অবদান আপনারও কম নয়। ধন্যবাদ আপানারো প্রাপ্য।
লিখতে ভুলে গেছিলাম–
চট্টলার অনেকেই বলেন যে বায়েজিদ বোস্তামী পানির উপর দিইয়ে হাঁটতে পারতেন আর পানির উপর হেঁটেই উনি চট্টগ্রামে এসেছিলেন। অনেকেই বায়েজিদ বোস্তামির বংশধর বলে মনে করেন–বিশেষতঃ হুজুর এবং বুজুর্গরা।
অবাক পৃথিবী!!
পোস্টের বিষয়বস্তু খুবই চমৎকার। এরকম অন্যান্য মাজার বা দরগাহ নিয়ে আপনার বা অন্যকারো লেখা পড়ার ইচ্ছা করছি।
আপনারা অনেক কষ্ট করে, পড়াশুনা করে, সময় নষ্ট করে এক একটা লেখা তৈরি করেন। আমার অনুরোধ ইংরেজি উদ্ধৃতি দেয়ার পড়ে তার বাংলা অনুবাদটাও আর একটু কষ্ট করে দিয়ে দিবেন। এতে সাধারণ পাঠকরা খুবই উপকৃত হবে বলে আমার বিশ্বাস।
@মো. আবুল হোসেন মিঞা,
চাকলাদার ভাইকে যে কথা বলেছি আপনাকেও একই কথা বলছি এই সমস্ত লেখা লিখতে আসলে বিশ্বাস যোগ্য তথ্য উপাত্তের বড়ই অভাব। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এই সব বিষয়ে লিখতে গেলে তথ্য যোগাড় করা খুব দুষ্কর হয়ে পড়ে। তবে আশা রাখছি আমি না পারলেও অন্যকেউ ঠিকই লেখা চালিয়ে যাবেন।
আপনি যুক্তি সঙ্গত কথাই বলেছেন। সমস্যা হল অনেক সময় অনুবাদ করার সময় দেখা যায় উপযুক্ত বাংলা প্রতিশব্দ পাওয়া যায় না অন্যদিকে লেখার কলরব বেড়ে যায়। লেখা বেশি বড় হলে আবার পাঠকদের ধৈর্যচুত্য ঘটে। সব দিক বিবেচনা করেই এক জন লেখককে লেখা লিখতে হয়।
আপনার গঠন মূলক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
বোস্তামীর mystery সম্পর্কে অনেকটা খোলাসা হওয়া গেল। অসংখ্য ধন্যবাদ তথ্যপূর্ণ লেখাটির জন্য।
কথা হলঃ বোস্তামীর জীবদ্দশায় বাংলায় ইসলামের চিহ্ন ছিল কি? আমার তো ধারণা তখনো কোন মুসলিম বাংলা পর্যন্ত এসে পৌছে নি — ধর্মান্তরের বন্যা বইয়ে দেওয়া তো দূরে থাক।
@অবিশ্বাসী,
অনেকেই জানেনা এই দেশে এক সময় বৌদ্ধ বা হিন্দু প্রাধান্য ছিল। তারা জানে না কখন কিভাবে এদেশ মুসলমানদের আনাগোনা শুরু হয়। তারা ভাবে মুসলমানেরাই এখানকার আদি অধিবাসী।
আপনাকেও ধন্যবাদ ধৈর্য ধরে পড়ার জন্য।
খাদিমরা যদি বলে এটা বায়েজিদের কবর না। তাহলে লোকজন কি সেখানে যাবে? দান বাক্সে মাল কড়ি ঢালবে? খাদেমদের দানা পানির কি ব্যবস্থা হবে তা কি ভেবেদেখেছেন?
হা যায়। ওখানে একটা বোস্তামী কমপ্লেক্স তৈরী করা হয়েছে।
[img]http://caravanofdreams.files.wordpress.com/2011/09/images-1.jpg?w=272&h=185[/img]
@ রাজেশ ভাই,
তাঁকে সমাহিত করা হয় বোস্তাম শহরেই।
মাজার তো হয় জানতাম কাউকে কবর দেয়া হলে। মাজারের খাদিমরা কি দাবি করে যে বায়েজিদের কবর চট্টগ্রামের মাজারে? তাছাড়া বোস্তাম শহরে এখনও কি বায়েজিদের কবরটি চিন্হিত করা যায়?
মাজার গুলোতে শুনেছি ফ্রি গাঞ্জা খাওয়ার উত্তম জায়গা।
@হেলাল,
কবরতো অনেক দূরের ব্যাপার। বায়েজিদ বোস্তামি কখনোই বাংলাদেশে আসেন নি। সে কারণে বাংলাদেশের ইসলামি পণ্ডিতদের কেউ কেউ একে বায়েজিদ বোস্তামির মাজারের নকল বলে থাকেন।
বায়েজিদ বোস্তামির মাজারে বহু বছর আগে আমিও একবার গিয়েছিলাম। বায়েজিদ বোস্তামির মাজার ও পুকুরের দুস্ট জিন হতে রুপান্তরিত কাছিম গুলিও দেখিয়াছিলাম।
কিন্তু আপনি এ কী কথা শুনাইলেন ?
রমরমা মাজার বানিজ্য টা তো নষ্ট হয়ে যাবে্য।
বাগেরহাটের খানজাহান আলীর দরগাহ সম্পর্কে কিছু লিখতে পারেন ? সেখানেও মাজার বাণিজ্য প্রচন্ড রমরমাট।
ধন্যবাদান্তে,
আঃ হাকিম চাকলাদার
নিউ ইয়র্ক
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
এই সমস্ত লেখা লিখতে আসলে বিশ্বাস যোগ্য তথ্য উপাত্তের বড়ই অভাব। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এই সব বিষয়ে লিখতে গেলে তথ্য যোগাড় করা খুব দুষ্কর হয়ে পড়ে।
আপনার মত ধার্মিক ব্যক্তি এই সব অধার্মিক লেখা পড়লেতো দোযখের আগুন আপনাকে কাবাব বানাবে :))
আমি অনেকবার বায়েজিদ বোস্তামির এই স্থানে গেছি। কাছিমদেরকে খাওয়ানর জন্য অনেকগুলি মাংসের দোকান আছে যেখানে পশুর ফুসফুস অথবা যকৃত এবং কলিজা বিক্রি হয়। দুর্গন্ধে ভরপূর এই স্থান অতিশয় অস্বাস্থ্যকর। আমি জানিনা আজ এই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে কি না।
এখানে একটা পাকা বাড়িতে কবর আছে। এই কবর কার? এছাড়াও মসজিদের বাইরে, অল্প একটু দূরে আরও কয়েকটি কবর আছে। এই কবরগুলিই বা কার? এইস্থানের বৃক্ষের ডালপালায় অনেকেই লাল রঙের সূতা বেঁধে দেন। মাজারের খাদিমেরা বলে এইভাবে লাল সূতা বাঁধলে নাকি মনের ইচ্ছা পূর্ণ হয়।
বলাবাহুল্য খাদেমদেরকে পয়সা দিতে হবে–তবেই তারা লাল সূতা দিবে, এবং সেই সূতা বাঁধতে হবে। নিজের লাল সূতা বাঁধেলে কাজ হবে না।
আমি পয়সা দিয়ে লাল সূতা কিনলাম, বাঁধলাম। আজ পর্যন্ত মনের ইচ্ছা মনেই রয়ে গেল–পূর্ণ হল না। কাছেমগুলিকে খাওয়ালে নাকি অনেক পুণ্য পাওয়া যায়—তাই অনেক খুনী, ডাকাত, বদমায়েশ, চোর, বাটপারের উৎপাত হচ্ছে এই মাজার শরীফে।
আজকাল কী তেমন উন্নতি হয়েছে?
@আবুল কাশেম,
মনে হচ্ছে চাটগাইয়া নওজোয়ান ছিলেন। সেই সাথে বোস্তামী পাগলাও ছিলেন :))
সেই ছোটবেলায় একবার গিয়েছিলাম। এর পরে আর কখনো যাই নি। লোক সমাগম যেহেতু আছে উন্নতি হওয়াটাই স্বাভাবিক। ব্যবসা বলে কথা।
@রাজেশ তালুকদার,
আমার জন্মভুমি চট্টগ্রামে না হলেও সেখানে অনেকদিন ছিলাম–পিতার কর্মস্থল ছিল তাই। আমি চট্টগ্রাম মহাবিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হয়েছিলাম। বায়েজিদ বোস্তামী প্রায়ই যাওয়া হত।
@রাজেশ তালুকদার,
উহ লিখতে ভুলে গেছিলাম।
চট্টগ্রামের শতকরা ৯৯.৯৯% বাসিন্দারা বিশ্বাস করে হযরত বাইয়েজিদ বোস্তামী চট্টলাতে এসেছিলেন এবং উনিই জিনদেরকে কচ্ছপ বানিয়ে দিয়েছিলেন। অনেকেই বিশ্বাস করে যে মাজার দুটি অতিশয় ফুল এবং দামী চাদর স্বারা আবৃত, উঁচু করে রাখা, যার পাদদেশে চব্বিশ ঘণ্টা কোরান তেলাওয়াত সে কবর বায়েজিদ বোস্তামীরই।
আমার মনে হয় না একজন চট্টলবাসীও বিশ্বাস করবে আপনার কথা–যথা বায়েজিদ কোন দিনই চট্টগ্রাম ত দুরের কথা বাঙলা অথবা ভারতবর্ষে পদার্পণ করেছেন। ধর্ম, কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াই করা চাট্টিখানি কথা নয়। আমরা তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি।
হয়ত দেখবেন–আপনার লেখার ফল–আরও বেশী বেশী ভক্ত বায়েজিদের মাজার জিয়ারত করবে। কারণ ঐ স্থানকে বায়েজিদের মাজারখানাই বলা হয়। এই নামের কোন পরিবর্তন হবার সম্ভাবনা নাই।
খুব সাবলিল একটি লেখা।ভাল লাগ্্ল।্ধন্নবাদ আপ্নাকে।
এত বড় লেখা, পড়ে পড়ব, ঘুমাতে গেলাম (O)
@বেয়াদপ পোলা, কাজে নয়, নামেই পরিচয়। :lotpot: :lotpot: :lotpot: