আমি ইদানীং বেশ সাহসী হয়ে উঠছি। তার প্রমাণ হুমায়ুন আজাদকে নিয়ে আমার এই লেখা। হুমায়ুন আজাদেরই কোন এক প্রবন্ধে পড়েছিলাম স্যামুয়েলসন নামে এক ভদ্রলোক সেই ব্যাক্তির সাথে কথাই বলতে চাননি যার লেখার তুলনায় পড়ার পরিমান কম। হুমায়ুন আজাদের বই বলতে আমি পড়েছি তাঁর অসাধারণ গ্রন্থ ‘নারী’, ‘আমার অবিশ্বাস’, ‘ধর্মানুভূতির উপকথা ও অন্যান্য’, ‘নির্বাচিত প্রবন্ধ’ ইত্যাদি প্রবন্ধ গ্রন্থ, উনার কিছু কবিতা (“শ্রেষ্ঠ কবিতা” গ্রন্থ থেকে) এবং উপন্যাস পড়েছি ‘পাক সার জমিন সাদ বাদ’ এবং ‘মানুষ হিসেবে আমার অপরাধসমূহ’। এছাড়া সংগ্রহে আছে এখনো পড়া হয়নি এমন বই হল “লাল নীল দীপাবলী”, “শুভব্রত ও তার সম্পর্কিত সুসমাচার”, “দ্বিতীয় লিঙ্গ” এবং আধুনিক বাংলা কবিতা নিয়ে একটি সম্পাদনা গ্রন্থ। আমার জানার ক্ষুদ্র পরিসরের মাঝে যে হুমায়ুন আজাদ তাঁকে নিয়েই দু’কলম লিখতে বসলাম।
হুমায়ুন আজাদের পরিচয় হিসেবে তার নামের আগে অনেকগুলো বিশেষণ লাগানো যায় যার প্রত্যেকটিকেই তিনি সত্য বলে প্রমাণ করেছেন নিজের যোগ্যতা, কীর্তি এবং আচরণের দ্বারা। তিনি আমাদের দেশের বিশিষ্ট ভাষাবিজ্ঞানী, সমালোচক, কবি, ঔপন্যাসিক, কিশোর সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক-সর্বোপরি এদেশের গুরত্বপূর্ণ বহুমাত্রিক সাহিত্যিকদের মাঝে একজন। তবে তাঁকে সকলের মাঝে অন্যতম করে তুলেছে এবং অগণিত মানুষের কাছে প্রিয় ও অনুরাগভাজন এবং অনেক মানুষের কাছে অপ্রিয় ও অস্বস্তিকর করে তুলেছে তাঁর প্রথাবিরোধিতা, সত্যনিষ্ঠা, স্পষ্টবাদিতা এবং যুক্তিপ্রিয়তা ও যৌক্তিকতা।
তিনি সবসময় বলেছেন নিজেকে কবি হিসেবে ভাবতে তিনি সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন। কিন্তু লেখকের দায়িত্ববোধ থেকে তিনি সাহিত্যের প্রায় সকল ক্ষেত্রে রেখেছেন নিজের সরবতা ও অসাধারণ লেখার যোগ্যতার স্বাক্ষর। তবে যে কারণে তিনি সবচেয়ে বেশি নন্দিত এবং নিন্দিত হয়েছেন তা হল সকল ধরণের গোঁড়ামি ও অন্ধত্বের বিপক্ষে নিজের যৌক্তিক ও সাবলীল লেখনী। তাঁর সবচেয়ে বেশি আলোচিত দুটি গ্রন্থের নাম সম্ভবত “আমার অবিশ্বাস” এবং “নারী”।
“নারী” সম্পর্কে এত কম পরিসরে কিছু বলা খুবই কষ্টকর, তাই শুধু বলতে চাই “নারী” আমাকে নিজেকে “মানুষ” বলে ভাবতে শিখিয়েছে। “নারী” বইটি লেখার পিছনের প্রচেষ্টা জেনে আমি বিস্মিত ও শ্রদ্ধানত হয়েছি। বুঝেছি বই রাতারাতি “প্রসব” হয়না। জানার জন্য অনেক অধ্যবসায়, পরিশ্রম করে তবেই অন্য কাউকে সে বিষয়টা সম্পর্কে জানানোর যোগ্যতা অর্জন করা যায়। এই বই লেখার আগে উনি এডিনবরাসহ নানা স্থান থেকে নারীবাদ সংশ্লিষ্ট যত বই সংগ্রহ করেছিলেন সব পড়েছেন তিনি। তারপর লিখেছেন। এধরণের শ্রদ্ধা ও অধ্যবসায় তার প্রতিটি লেখার পেছনেই ছিল। উপরে উল্লিখিত স্যামুয়েলসনের কথাটি হুমায়ুন আজাদ প্রচন্ডভাবে চর্চা করেছেন। তার প্রতিটি বইয়ের প্রতিটি লাইন পড়লেই বোঝা যায় উনার জ্ঞানের পরিধি কত বিশাল ছিল এবং একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় উনার লেখার পরিমাণ উনার পড়ার ও জানার তুলনায় খুবই সামান্য ছিল। এ ব্যাপারটা দিয়েই হুমায়ুন আজাদ তার প্রতি আমার সিংহভাগ শ্রদ্ধা অর্জন করে নিয়েছেন।
তার লেখায় আমি আরো পেয়েছি সৌন্দর্যের প্রতি অসীম ভালবাসা ও আকর্ষণ। একারণেই আমি যতবার উনার “সুখী বোধ করছি বা সুখী বোধ করি” এধরণের লাইন পড়ি, নিজেও এক ধরণের সুখ পাই। তার কবিতাগুলো নিখাদ অনুভূতির আকর। কখনো তাতে থেকে সৌন্দর্য, কখনো কদর্যতা, কখনো ভালবাসা, কখনো বিতৃষ্ণা, কখনো হাহাকার, কখনো তৃষ্ণা, কখনো বেদনা, কখনো সুখ, কখনোবা অনেক অনুভবের সমন্বয়- আর এসবকিছুর মাঝে থাকে তীব্রতা, অনুভবে থরথর করে কাঁপার মত প্রচন্ডতা।
আমি উনার কাছ থেকেই প্রথম পাঠ পাই সূক্ষ্ম ও স্বতন্ত্র উপলব্ধির ধারণার। আমি তার একথাটা অনেক মূল্য দিই-
‘ভক্ত কখনো আমি হ’তে পারিনি, যদিও আমি অনেকেরই অনুরাগী।’
রবীন্দ্রনাথ, এলিয়ট, দান্তেসহ সকল প্রতিভাবানদের কর্মের অনুরাগী ছিলেন তিনি। তাদের সৃষ্ট চরণগুলোর দ্যোতনায় শিহরিত ও মুগ্ধ হয়েছিলান তিনি, কিন্তু তাদের অযৌক্তিক কোন দর্শনকে বা ধারণা বিশ্বাস বা গ্রহন করেননি। এবং আমার মতে এদের পায়ে না পড়ে, তাদের অন্ধ পূজা না করেই উনি এই প্রতিভাবানদের কর্মের ও যোগ্যতার উপযুক্ত মর্যাদা দিয়েছিলেন, নির্বোধের মত মাথা না দেখে শুধু পা জড়িয়ে ধরে তাদেরকে বিব্রত করেননি।
তার উপন্যাসগুলো পড়তে অনেক কষ্ট হয়, কারণ সেগুলো আমার মাথায় প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করে। “পাক সার জমিন সাদ বাদ” শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাকে অনেক চাপের মধ্যে রেখেছে। মন্দিরের ধ্বংস হয়ে যাওয়া দেখে নায়কের মাঝে যে প্রচন্ড অনুভূতির সৃষ্টি হয় তা আমার মাঝেও হয়েছিল। “মানুষ হিসেবে আমার অপরাধসমূহ” পড়ার ক্ষেত্রেও সেই একই অস্বস্তি ও অসুস্থতা অনুভব করেছি। ভেতরটা তছনছ করে দেয়ার এই যে প্রলঙ্কর তীব্রতা এর কারণে আমি তাকে শ্রদ্ধা করি।
উনার লেখার একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হল তা আমাকে বিশ্বাস করতে হয়না আর ফেলেও দেয়া যায় না- তা আমাকে শুধু বলে ভাবতে, চিন্তা করতে। এজন্যই তিনি আমার এত শ্রদ্ধেয়। তার প্রবন্ধ ও কথায় যে যুক্তি দেখেছি, যে বলিষ্ঠতা দেখেছি, যে শক্তি দেখেছি তা জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে চর্চা করার চেষ্টা করি কিন্তু সেভাবে পারিনা। তবু জানি এই চেষ্টা করে যাবার মাঝেই আমার জীবন একটু কম ব্যর্থ হবার গৌরব অর্জন করবে।
উনি বলে গেছেনঃ
আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্যে
(কাব্যগ্রন্থঃ কাফনে মোড়া অশ্রুবিন্দু)
আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্যে মারা যাবো
ছোট্ট ঘাসফুলের জন্যে
একটি টলোমলো শিশিরবিন্দুর জন্যে
আমি হয়তো মারা যাব চৈত্রের বাতাসে
উড়ে যাওয়া একটি পাপড়ির জন্যে
একফোঁটা বৃষ্টির জন্যেআমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্যে মারা যাবো
দোয়েলের শিসের জন্যে
শিশুর গালে একটি টোলের জন্যে
আমি হয়তো মারা যাব কারো চোখের মণিতে
গেঁথে থাকা একবিন্দু অশ্রুর জন্যে
একফোঁটা রৌদ্রের জন্যেআমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্যে মারা যাবো
এককণা জ্যোৎস্নার জন্যে
এক টুকরো মেঘের জন্যে
আমি হয়তো মারা যাব টাওয়ারের একুশ তলায়
হারিয়ে যাওয়া একটি প্রজাপতির জন্যে
একফোঁটা সবুজের জন্যেআমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্যে মারা যাবো
খুব ছোট একটি স্বপ্নের জন্যে
খুব ছোট দুক্ষের জন্যে
আমি হয়তো মারা যাব কারো ঘুমের ভেতরে
একটি ছোট দীর্ঘশ্বাসের জন্যে
একফোঁটা সৌন্দর্যের জন্যে
আমরা কি সেই ছোট্ট স্বপ্নটা বুকে ধরে রাখতে পারিনা যার জন্য মারা যাবার সম্ভাবনা রেখেছিলেন এই মহাকায়?
সবশেষে সেই অমিত শক্তিধর, সৌন্দর্যে ভরপুর লাইনগুলো তুলে দিলাম যা পড়ে সেইরকম স্তব্ধ মুগ্ধতায় এখনো বসে থাকি যেমনটি ছিলাম প্রথম পড়ার পরঃ
‘আমি জানি, ভালো ক’রেই জানি, কিছু অপেক্ষা ক’রে নেই আমার জন্যে; কোনো বিস্মৃতির বিষন্ন জলধারা, কোনো প্রেতলোক, কোনো পুনরুত্থান, কোনো বিচারক, কোনো স্বর্গ, কোনো নরক; আমি আছি, একদিন থাকবো না, মিশে যাবো, অপরিচিত হয়ে যাবো, জানবো না আমি ছিলাম। নিরর্থক সব পুণ্যশ্লোক, তাৎপর্যহীন সমস্ত প্রার্থনা, হাস্যকর উদ্ধত সমাধি; মৃত্যুর পর যে-কোনো জায়গায়ই আমি প’ড়ে থাকতে পারি,-জঙ্গলে, জলাভূমিতে, পথের পাশে, পাহাড়ের চুড়োয়, নদীতে, মরুভূমিতে, তুষারস্তূপে। কিছুই অপবিত্র নয়, যেমন কিছুই পবিত্র নয়; কিন্তু সব কিছুই সুন্দর, সবচেয়ে সুন্দর এই তাৎপর্যহীন জীবন। অমরতা চাইনা আমি, বেঁচে থাকতে চাইনা একশো বছর; আমি প্রস্তুত, তবে আজ নয়। চ’লে যাওয়ার পর কিছু চাইনা আমি; দেহ বা দ্রাক্ষা, ওষ্ঠ বা অমৃত, বা অমরতা; তবে এখনি যেতে চাইনা; তাৎপর্যহীন জীবনকে আমার ইন্দ্রিয়গুলো দিয়ে আমি আরো কিছুকাল তাৎপর্যপূর্ণ ক’রে যেতে চাই। আরো কিছুকাল আমি নক্ষত্র দেখতে চাই, নারী দেখতে চাই, শিশির ছুঁতে চাই, ঘাসের গন্ধ পেতে চাই, পানীয়র স্বাদ পেতে চাই, বর্ণমালা আর ধ্বনিপুঞ্জের সাথে জড়িয়ে থাকতে চাই, মগজে আলোড়ন বোধ করতে চাই। আরো কিছুদিন আমি হেসে যেতে চাই। একদিন নামবে অন্ধকার-মহাজগতের থেকে বিপুল, মহাকালের থেকে অনন্ত; কিন্তু ঘুমিয়ে পড়ার আগে আমি আরো কিছু দূর যেতে চাই।’
আমিও ঘুমিয়ে পড়ার আগে আরো কিছুদূর যেতে চাই…আর এই প্রেরণা যিনি দিয়েছেন, আমাকে যিনি “নারী” থেকে “মানুষ” হবার চেষ্টায় রত হওয়ার উপলব্ধি দিয়েছেন সেই হুমায়ুন আজাদ স্যারকে শ্রদ্ধা।
@পাপ্পু, পড়ার জন্য ধন্যবাদ
হুমায়ুন আজাদ স্যার-এর কাছ থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি, এবং শিখে চলেছি। স্যার এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, নারী লেখার জন্য তিনি প্রায় ৫৬ হাজার পৃষ্ঠা পড়েছেন। এবং নারী বিষয়ক কোনও বই ফুটপাত থেকে শুরু করে যেখানে পেয়েছেন সেখান থেকে কিনে এনেছেন। তাঁর মত এই কাজের পেছনে পরিশ্রম ও সততা যদি আমাদের অন্য লেখকের থাকতো, তাহলে হয়ত দেশের দৃশ্যপট ভিন্ন হয়ে যেত। স্যার আজ নেই তাই সবই কেবল সম্ভাবনার মধ্যেই থেকে গেল।
হুমায়ুন আজাদকে নিয়ে কোনও পরিসরেই লিখে শেষ করা যাবে না। তবুও আপনার লেখাটি বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।
@মোজাফফর হোসেন, উনার এই পরিশ্রমটাই শ্রদ্ধা জাগায়। আমিও এমন করে জানতে চাই।
লীনা,
বারবার ঘুমাবো না, একাবারে ঘুমাব আমরা! শেষ ঘুমেই হবে সমাপ্তি আমাদের। তার আগে না। আমাদের জন্য কারোর দা, চাপাতি উদ্যত হয়ে থাকলেও না।
অনেক পথ পড়ে আছে সামনে, পথের শেষে যেতে পারি বা না পারি, অনেক দূর যেতে হবে আমাদের, আমাদের যেখানে থামতে হবে, সেখান থেকে যেন আরেকদল যাত্রা শুরু করতে পারে।
বেঁচে আছি প্রাণ ভরে। 🙂
@নীল রোদ্দুর, আমিও।
ধন্যবাদ এমন আশাবাদী মন্তব্যের জন্য 🙂
আমারও একই ব্যাপার হয়। সবচেয়ে বেশী হয়েছিল “কড়ি দিয়ে কিনলাম” পড়তে গিয়ে; বছর দশেক আগে। এখন অনেকটা কাটিয়ে উঠেছি 🙂
(হুমায়ূন আহমেদ একটা সাক্ষাতকারে বলেছিলেন যে এরকম লিখতে নাকি তার মনের উপর চাপ পড়ে- তাই এ ধরনের লেখা লেখেন না।)
আপনার ব্যাপারটায় দেখা যাচ্ছে- “নারী জাগরনে” পুরুষের প্রত্যক্ষ ভূমিকা না হলেও চলে; শুধু মেয়েরা যদি আপনার মত এরকম ভাবে পড়তে, পড়ে উপলব্ধি করতে পারত- তাহলেই হতো।
@শ্রাবণ আকাশ, আর বলবেননা, আমার মা বোনকেই আজ পর্যন্ত কিছু বোঝাতে পারলামনা। আবুল কাশেম সাহেবের একটা লেখার লিঙ্ক আমার প্রোফাইলে পোস্ট করেছিলাম যেখানে নারীর প্রতি অবমাননামূলক লাইন দেয়া আছে কুরান আর হাদিসের।সেখানে আমার এক বান্ধবী সাফ বলল ইসলামে নারীকে সর্বোচ্চ সম্মান দেয়া হয়েছে, গাধী বোঝেনাই ঐ কুরান হাদিসের আয়াতগুলো অস্বীকার যদি করে তাহলে তো সে কুরান হাদিসকেই অবমাননা করল, মেজাজ গরম লাগে :-X
প্রিয় স্যার, প্রিয় লেখক, প্রিয় মানুষকে নিয়ে লেখার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। উনার শূণ্যতা পূরণ হবার নয়।
@হামিদা রহমান, শুভেচ্ছা আপনাকে
Amr internet line nei.onk jhamelar por mobile die dhuklam. Pore jobab debo shobar cmnt er. Apnara kotha bolte thaken.ami ashchi.coming soon.
@Leena rahman,
খুব ভাল লিখেছেন। এই রকম আর লিখুন। (Y)
হুমায়ুন আজাদকে বিনম্র শ্রদ্ধা।। (F)
@বিপ্লব রহমান, আগে ক্লাস সামলাই (যদিও আমার একাডেমিক পড়ালেখায় আমার এই মুহূর্তে ন্যূনতম কোন আগ্রহ নেই, গতকাল আমাদের এক জিনিয়েস ম্যাডাম আমাদের ম্যানেজারিয়াল একাউন্টিং বোঝাতে হাতি সাইজের এক উদাহরণের চার্ট পুরো মুখস্থ করে এসেছিলান, গাধীটার মাথায় এটা আসেনাই যে ইচ্ছেমত সংখ্যা বসালেই হয়, বইয়েরটা মুখস্থের দরকার নাই :-Y )
ধন্যবাদ উৎসাহের জন্য
লীনা,
খুব ব্যস্ততা থাকা সত্ত্বেও আপনার এই অসাধারণ লেখাটা পড়ে মনে হল আপনাকে ধন্যবাদ না দিলে আমার অন্যায় হয়ে যাবে।
আপনার হাত থেকে আরও বেশী বেশী লেখা আশা করছি।
(Y) (F) (D)
হুমায়ুন আজাদ এর বাণী বাংলাদেশের ঘরে ঘরে সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়ুক।
@হেলাল, ধন্যবাদ অনুপ্রেরণার জন্য।
মুক্তচিন্তার বীজ ছড়াক প্রতিটি মনে
চমৎকার একটি লেখা। অনেক ধন্যবাদ লেখাটির জন্য। ফরিদ ভাই সহ আরো অনেকে উনাকে নিয়ে লিখবেন এই কামনা করি।
@স্বাধীন, ফরিদ ভাইয়ের লেখার অপেক্ষায় রইলাম আমিও 🙂
হুমায়ুন আজাদ বা আহমদ শরীফের লেখায় যে ব্যাপারটা আমাকে সবচেয়ে বেশী আকৃষ্ট করে তা হল তাদের চিন্তাভাবনার আধুনিকতা। এত বছর পরেও তাদের লেখা বা মন্তব্যগুলো পড়লে অত্যন্ত আধুনিক এবং প্রগতিশীল বলে মনে হয়! যতদূর মনে পড়ে, হুমায়ন আহমেদ তসলিমাকে নিয়ে কিছু আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন যেগুলো তার মত মানুষের মুখে শোভা পায় না (নিজে তসলিমার ফ্যান না হলেও আমি তার বাক-স্বাধীনতার অধিকারে বিশ্বাস করি), কিন্তু এছাড়া বেশীভাগ ক্ষেত্রেই তার চিন্তায় আধুনিকতার মাত্রা দেখে অবাক হয়ে যাই।
@বন্যা আহমেদ,
?? হুমায়ুন আজাদ প্রায়শই হুমায়ুন আহমেদ হয়ে যাচ্ছেন কেন?
(Y)
@লীনা রহমান, দুঃখিত, হুমায়ুন আহমেদ নয় হুমায়ুন আজাদ হবে। ‘হুমায়ুন আজাদ’ হুমায়ুন আহমেদ হয়ে গেলে ব্যাপারটা খুবই লজ্জাজনক হবে :-Y ।
@বন্যা আহমেদ,
সত্যি।
@বন্যা
আমরা স্তুতি অথবা নিন্দাতেই পরম শান্তি লাভ করি।
যেমনটি স্বয়ং করে থাকেন ঈশ্বর।
@গীতা দাস, চঞ্চল আশরাফ , না চঞ্চল মাহমুদ……….. !!!! 😕
@মির্জা গালিব,
চঞ্চল আশরাফ।
নব্বইয়ের দশকের যেকজন উল্লেখযোগ্য কবি আছেন তাদের মধ্যে অন্যতম।
:candle: শোক হোক শূণ্যতা পূরনের শক্তি ।
@মির্জা গালিব,
(Y)
ভাল লেগেছে লেখাটি। তাঁর প্রতি রইলো গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলী :candle:
@তামান্না ঝুমু, 🙂
চমৎকার!
লীনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আমাদের প্রজন্মকে সাহসী হয়ে উঠতেই হবে কারণ হুমায়ুন আজাদের রক্ত থেকেই আমাদের জন্ম।
@সৈকত চৌধুরী,
উনার কথা-লেখা থেকেই আমাদের চিন্তার বিকাশের অনেকটা পাওয়া
লেখাটা অসাধারণ লাগলো!
@তানভীরুল ইসলাম, 🙂
লীনা,
কবি চঞ্চল মাহমুদ হুমায়ুন আজাদ স্যারের একটি সাক্ষাৎকারমূলক লেখা ধারাবাহিকভাবে arts.bdnews.24.com এ পোস্ট দিয়েছিলেন।স্যারের ব্যক্তিত্বকে বুঝার জন্য ঐলেখাটি পড়ে দেখতে পারো। আমার খুব ভাল লেগেছিল। সাক্ষাৎকারমূলক ধারাবাহিক লেখাটি এবার বই মেলায় বই আকারেও প্রকাশ করেছে।
আমরা স্যারকে খুব কম সময় পেয়েছি। কারণ উনি তখন সবে মাত্র জাহাঙ্গীরনগর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছেন। উল্লেখ্য যে হুমায়ুন আজাদ স্যার আমাদেরকে মাস্টার্সে বিহারী লাল পড়াতেন। তখনও উনার স্বরূপের সন্ধান আমরা পাইনি।
পরবর্তী সময়ে প্রতিবার বইমেলায় তো আগামী প্রকাশনীতে যেতাম স্যারের নতুন বইয়ের জন্য। এখন তো আর নতুন হুমায়ুন আজাদ নেই। ( অর্থাত স্যারের নতুন বই আর আসবে না!)
হুমায়ুন আজাদ পাঠে তোমার পাঠ প্রতিক্রিয়া যথারীতি ভাল লেগেছে।
@গীতা দাস,
বইয়ের নাম আমার হুমায়ুন আজাদ। রোদেলা প্রকাশনী থেকে গত বছর বের হয়েছিল। অসাধারন, অনবদ্য একটা বই। বইটি না পড়লে হুমায়ুন আজাদ সম্পর্কে জানতে চায় এমন সবাই পস্তাবে।
@সাইফুল ইসলাম, তবু তো কম সময়ের জন্যে উনাকে পেয়েছেন, আমি তো দেখিইনি 🙁
@গীতা দাস, আপনাকে দেয়া জবাব ভুলে সাইফুল ভাইয়ের নামে চলে গেছে, আমি হুমায়ুন আজাদ স্যারের স্টুডেন্ট খুঁজছিলাম উনি কিভাবে পড়াতেন তা শোনার জন্য। কৌতুহল। আপনাকে পেয়ে ভালই হল, এ ব্যাপারে আলাপ করা যাবে
নাসরীন জাহানের নেয়া এক সাক্ষাতকারে হুমায়ুন আজাদকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলঃ
কাকতালীয় কী জানো? হুমায়ুন আজাদকে নিয়ে আমার কবিতার শেষের লাইনটা হলঃ
🙂
এখানে প্রথম নিজের কথাটা কি বেশী লেখা হয়েছে, নাকি তুমি ইচ্ছা করেই দিয়েছ? মনে হয় ভুলেই এসেছে।
আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্যে কবিতাটা কাফনে মোড়া অশ্রু বিন্দু কাব্যগ্রন্থের। ইচ্ছে করলে দিয়ে দিতে পারো।
সুন্দর লেখা।
@সাইফুল ইসলাম, য়ামি পড়েছি সাক্ষাৎকারটি।
প্রথম “নিজের” কথাটা ভুলে এসেছে, ঠিক করে দিচ্ছি।
আপনার কবিতার
লাইনটা দারুণ সত্যি মনে হয়েছে।
কবিতাটির রেফারেন্স জানতাম আগেই, দিয়ে দিচ্ছি এখনি
দিনটি স্মরণ করে লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ, লীনা! নারী বইটি একটি অসামান্য গ্রন্থ। এই যে আপনি বলেছেন, ‘নারী” আমাকে নিজেকে “মানুষ” বলে ভাবতে শিখিয়েছে’ – এই ব্যাপারটি বাংলাদেশের অনেক নারীরাই স্বীকার করেন। জওশন (নীল রোদ্দুর) একবার একথাটা লিখে আমাদের বিপ্লব পালের বিরাগভাজন হয়েছিলেন, কিন্তু নারী বইটি না পড়লে এর পেছনের অমিত শক্তি টের পাওয়া যায় না।
হুমায়ুন আজাদের গদ্যরীতির অসম্ভব ভক্ত আমি, আমার মতে বাংলাদেশের সবচেয়ে শুদ্ধভাষী লেখক।
@অভিজিৎ,
একমত।
আমার জীবনে “নারী”র ভূমিকা অনেক। আমার চিন্তাজগতের টার্নিং পয়েন্ট এসেছিল হুমায়ুন আজাদের বই থেকে
হৃদয় ছুঁয়ে দেয়া আবেগময় একটি লেখা। লেখককে ধন্যবাদ এমন একটি লেখা উপহার দেয়ার জন্য।
@নিটোল, 🙂
আবেগয়ে আপ্লোত লেখা। দারূণ ভাল লাগল। হুমায়ূন আজাদকে আরও নতুন করে চেনা গেল। অনেক ধন্যবাদ সুন্দর লেখাটির জন্য। কিছু না বলে থাকতে পারলাম না।
@নৃপেন্দ্র সরকার, শুভেচ্ছা 🙂
লীনা, হুমায়ুন আজাদকে নিয়ে চিন্তাশীল লেখাটার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
@ইরতিশাদ, 🙂
এজীবনের মূল কথাই তো লিংগভেদে ভেদাভেদ না করে শুধু নিজেকে একজন মানুষ ভাবা।এবং নিজেকে “মানুষ” ভাবতে আমরা কয়জন আর পারি বলো ?? এই জীবনের সবচাইতে গভীর ও কঠিন শব্দটি হলো এই “মানুষ” হওয়া।কারন হাজার হাজার বছরের বদ্ধ সামাজিক,রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক ও ধর্মের নিষ্ঠুর কুপমন্ডতা তথা সব ধরনের জড়তা ও কুসংস্কার জীবন থেকে ঝেড়ে ফেলা সত্যিই নিজের সাথে এক যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা।
তোমার যেরকম প্রতিকূল অবস্থা চারিদিকে বিরাজ করছে সেরকম পরিস্থিতিতে নিজেকে একজন “মানুষ” বলে ঘোষনা দেওয়ার জন্য আন্তরিক ফুলেল শুভেচ্ছা।(F) (F) (F) (F) (F)
আর এবার তোমার সাথে একসাথে থেকে দেখেছি ও বুঝেছি মানুষ নামের যে গুনাবলী ও সংজ্ঞা আছে তা তোমার মধ্যে বিরাজমান।এগিয়ে যাও শুধু সামনের দিকে।
হুমায়ন আজাদের জীবনের মনে হয় এখানেই স্বার্থকতা তোমাকে সহ আমাদের এবং অসংখ্য নর-নারীকে জীবনে “মানুষ” হতে শিখিয়েছেন।সেজন্যই এরা মরেও অমর এবং ভংগুর সভ্যতাকে এরাই এগিয়ে নিয়ে যান।
জয়তু হুমায়ন আজাদ,আহমেদ শরীফ ও আরজ আলী মাতুব্বররা।
:candle:
@মাহবুব সাঈদ মামুন, ধন্যবাদ ভাইয়া।
জয়তু মুক্তচিন্তা ও মুক্তচিন্তকেরা
যথারীতি চমৎকার। যতদিন না বই নামাচ্ছেন ততদিন আপনাকে বই লেখার কথা বলে তাড়িত করা হবে :-[ ।
🙂 প্রথম যখন পড়লাম লাইনটি, তখন অবাক হয়ে ভেবেছিলাম আজাদ কি তবে irony-র ব্যবহারেও দড় হয়ে উঠলেন? কারণ এই বিশেষ বোধটি তাঁর মধ্যে কখনই দেখিনি। তবে তার পরের লাইনগুলি পরিচিতভাবে আজাদীয়, অর্থাৎ রোমান্টিক। অসামান্য অবশ্যই।
@রৌরব, আমি গত ১০ই আগস্ট থেকে উনাকে নিয়ে একটা লেখা শুরু করেছিলাম, আজো শেষ করতে পারিনি, ঐ যে ভয় লাগে আমার পড়ার পরিমান তো কম, লেখার যোগ্যতা কই? তবুও তো অনেক কিছু লিখি। উনার বই পড়লে অনেকেরই লেখালেখি করতে ভয় চলে আসবে। আমি ভুই পাই 🙁
@লীনা রহমান,
পড়া দরকার, তা বলে অত বেশি পড়ার দরকার নেই। লিখতে লিখতেই কি পড়তে হবে বুঝতে পারবেন 🙂
@রৌরব, জানাটা আমার কাছে অনেক জরুরি মনে হয়, ছোটবেলা থেকে আম লেখক হবার স্বপ্ন নিয়ে বড় হয়েছি, তাই তৈরি হবার আগ পর্যন্ত নিজেকে লেখক বলতে চাইনা, আমার বড় সাধের স্বপ্ন তো, তাই বেশি সচেতন হতে ইচ্ছে করে, এপনার অনুপ্রেরণার জন্য অনেক ধন্যবাদ (F)
লীনা,
সুন্দর আর জোরালো লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ। তোমাদের হাতে, আমাদের হাতেই তো তিনি দিয়ে গিয়েছেন বাকি কাজ গুলো করার জন্য। হুমায়ুন আজাদের অনেক বই আছে। তবে ‘নারী” এমন বই যে বই চেনাতে শেখায় আমাকে। নিজের অস্তিত্ত্বকে। আমার আমিত্ত্বকে। আমি যতোবার বাংলা একাডেমী যাই তত বার যেন তাকে দেখতে পাই। কোথা থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস আমার বুক চিরে বেরিয়ে আসে।
যেদিন প্রথম তার আক্রমনের খবর পাই, ঐদিনই মন বলেছিল আবার আসবে হামলা। এলো।
ছিনিয়ে নিয়ে গেলো। চোখে কেবল অশ্রু আসে যখনই তাঁর কথা ভাবি, যখনই তীর্থ স্থান বাংলা একাদেমী সদম্ভে চলা ফেরা করি।
@আফরোজা আলম, আপু আমিও যতবার পরমাণু শক্তি কমিশনের সামনে দিয়ে যাই উনার কথা মনে পড়ে। আগামীর সামনে গেলে মনে পড়ে। কখনো উনাকে দেখিনি সামনাসামনি, যখন উনি মারা যান তখন বা তার আগে আমার বইমেলায় যাওয়ারও সুযোগ বা অনুমতি ছিলনা বাসা থেকে, যেতে পারলে উনাকে দেখতে পারতাম 🙁
আপনার লেখার হাত চমৎকার–এটা বেশী বলছি না। হুমায়ুন আজাদকে নিয়ে লিখার মধ্যে আপনার লেখা সহজ, ছোট এবং গতিশীল।
আমি এক নিঃস্বাসেই আপনার লেখাটা পরে নিলাম।
হুমায়ুন আজাদের নাম আমি জানতামই না। তারা কারণ বাংলদেশের বাইরে থেকে শুধু পুরোন লেখকদেরকেই মনে করতাম একমাত্র লেখক। ইদানিং বাংলাদেশে বেড়াতে গেলে আমার ছোট বোন আমাকে পড়তে দিল ‘পাক সার জমিন’। নড়বড়ে মন নিয়ে বইটা শুরু করলাম–কিন্তু কয়েক পাতা যাবার পড় নেশার মত পড়ে ফেললাম–যে ভাবে আমি আমি ছোট বেলায় পড়েছিলাম ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’ এবং ‘ওয়ার এণ্ড পিস’।
আপনি ঠিকই লিখেছেন–হুমায়ুন আহমদের লিখার স্টাইল ছিল একেবারে অভিনব–উনি কাউকেই অনুকরন করেন নাই। সেই জন্যই উনার লেখা অসাধারণ ও তুলনাহীন।
আপনাকে ধন্যবাদ এই সুন্দর, গোছানো লিখার জন্যে।
@আবুল কাশেম,
দুঃখিতঃ
হবে হুমায়ুন আজাদ। ভুল করেছিলাম।
@আবুল কাশেম, বইটির নাম “পাক সার জমিন সাদ বাদ”
আমার অনেক ভাল লাগছে আপনার মন্তব্য পেয়ে 🙂
মানুষ এত বড় কিভাবে হয়? নিজের দিকে তাকিয়ে লজ্জা পাচ্ছি। মানুষকে ঠিক কিভাবে শদ্ধা জানাতে হয় জানিনে কিন্তু মন থেকে বলছি, আমিও ঘুমিয়ে পড়ার আগে আরো কিছুদূর যেতে চাই… স্পষ্টভাষী আর স্বাধীনচিন্তা, দেখেছি এর কাঠিন্যতা কিন্তু আর লজ্জা পেতে চাইনা, বরং বলি চাইনে!
@টেকি সওদাগর, ধন্যবাদ পড়ার ও মন্তব্য করার জন্য