আমরা সবাই জানি যে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এজন্য এ্যাডভোকেসি ও লবিং করতে হয়েছিল। এখন বাংলাভাষাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার জন্য চলছে অভিযান। নীচের ছবিটিতে মূল বার্তাটি রয়েছে।
টি এস সিও এর মোড়ে মাইকে গণ স্বাক্ষরতার বিরতিবিহীন আহ্বান চলছে। আমি এবং আফরোজা আপা স্বাক্ষর করে মেলার দিকে রওনা দেই। স্বাক্ষরতা চলছে, তবে খুব একটা ভিড় নেই।
পাঁচ কোটি লক্ষ্যমাত্রা চিন্তা করে প্রচারাভিযান আরও জোরদার করা প্রয়োজন। মুক্ত-মনাও এ অভিযানে অংশ নিতে পারে — অন্তত প্রচারাভিযানে।
একুশের বইমেলা যে বাঙালীর মন, মনন ও মেধা লালন, বিকাশ ও চর্চার কেন্দ্রবিন্দু তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বইমেলায় যারা যায় তারা মননের সন্ধানী,সংবেদনশীল ও সহৃদয় হৃদয় সম্পন্ন বলেই বইমেলায় ঢোকার আগে বেশ কিছু মানবিক আবেদন চোখে পড়ে। যেমনঃ
মেলায় পাঠক বই কেনার পাশাপাশি বিখ্যাত লেখকদের এক নজর দেখতেও আসে। প্রিয় লেখকের হাতের লেখা নিয়ে যেতে চায় নিজের কেনা বইয়ে। কাজেই অনেকেই স্টলে স্টলে খুঁজে বিখ্যাত কবি সাহিত্যিকদের। এমনি কয়েকজনকে ১৪ ফেব্রুয়ারির বই মেলায় পাওয়া গেছে।
আমি আমার বইয়ের তালিকা নিয়ে মেলায় গিয়েও বই কিনতে পারছি না। টাকা তো আগেই বরাদ্ধ করা আছে। কিন্তু একটু নেড়েচেড়ে দেখার সুযোগ তো দূরে থাক, কিছু কিছু স্টলের কাছে ভীষণ ভীড়। সৈয়দ শামসুল হকের ‘মার্জিনে মন্তব্য’ কিনতে গিয়েছিলাম। মেয়েদের জন্য আলাদা কাউন্টার থাকা সত্ত্বেও কিনতে পারিনি।
আসলে পুরুষরা মূল স্টলে আর ‘অন্যপ্রকাশ’ সংলগ্ন ‘অন্যদিন’ পত্রিকার বরাদ্ধকৃত জায়গায় মেয়েদের কাউন্টার। ভীড় ঠেলে ঢুকে শুনি সব বই এখানে নেই এবং পাশে থেকে এনেও দিতে পারবে না। কাজেই বিফল মনোরথ। পরে আমার এক সহকর্মীর হাজব্যান্ডকে এ ভীড় নিয়ে বলতেই মন্তব্য করলেন, ওখানে যে হুমায়ূন আহমেদের বই!!
ছবিতে দেখুন মামুন অটোগ্রাফ দিচ্ছে। কিন্তু কার বইয়ে?
রহস্যের গন্ধ পাচ্ছেন তো? আমরা কয়েক জন শুদ্ধস্বর এর স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। দেখি টুটুল সাহেব একজনকে মামুনের দিকে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে একটা প্যাকেট পাঠাচ্ছে। আমি তা লক্ষ্য করলেও মামুন খেয়াল করেনি। আমি ভাবছি। আগে প্যাকেট আসুক, পরে দেখে নেব। প্যাকেট মামুনকে হস্তান্তরের পর মামুন গিয়ে টুটুল সাহেবকে জিজ্ঞেস করে নিশ্চিত হল যে প্যাকেটটি তারই। কাজেই আগ্রহ নিয়ে সবাই মিলে প্যাকেটটি খুলে দেখি মুক্ত-মনার এক কবির প্রায় বিশটি বই। বইয়ের নাম ‘আলো আঁধারের খেয়া”। কবি স্বাপন মাঝি। মোট ৫৭টি কবিতা। প্রত্যেকটি কবিতা বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষায়। প্রকশকালঃ ফেব্রুয়ারি ২০০৮। মূল্য ৮০ টাকা। চার্বাক প্রকাশনী। প্রচ্ছদ শিল্পী শ্যামল বিশ্বাস।
বইটি মুক্ত-মনার লেখক পাঠকদের জন্য তার বোনকে দিয়ে শুদ্ধস্বর এর স্টলে পাঠিয়ে দিয়েছে। ভালবাসা কারে কয়? দেখুন প্রচ্ছদ ও ফ্ল্যাপ।
এ বই থেকেই উপস্থিত আমাদেরই একটি করে বিতরণ। না, বিতরণ না বলে দান বলা যায়। এরই মধ্যে লিঠু ( কল্যাণ যার সাথে ঘর করে) উপস্থিত। মুক্ত-মনার পাঠক। তাকেও একটা দেওয়ার পর সে অটোগ্রাফ চায়। কিন্তু অটোগ্রাফ কে দেবে ? উত্তর দেওয়া হল যে , কবি তো দেশেই নেই। লিঠুর প্রস্তাব মুক্ত-মনার পক্ষে একজনকে অটোগ্রাফ দিতে হবে। কাজেই মামুনের সৌভাগ্যের দরজা খুলে গেল। সে ই তো এবারের বইমেলায় মুক্ত-মনার নেতা। কবি না হয়েও সদ্য প্রকাশিত কবিতার বইয়ে অটোগ্রাফ দেওয়ার সুযোগ।
যাহোক, বেশ কাটল আমাদের।
গণস্বাক্ষরের উদ্যোগটি চমৎকার! এর সর্বাত্নক সাফল্য কামনা করছি। 🙂
তবে এর ব্যানারে গুরুচণ্ডালী ভাষা ও বানান ত্রুটি দুঃখজনক। 🙁
—
গীতা দি’কে বইমেলা আপডেটের জন্য আবারো ধন্যবাদ জানাবো? নাহ্, থাক। 😉
@বিপ্লব রহমান,
হ্যাঁ, তাই থাক। আমি আপনার ধন্যবাদ এ পোষ্টে নিতে চাচ্ছি না। একদিন অন্তত মেলায় সামনাসামনি দেখা হওয়া উচিত নয় কি?
মুক্তমনায় প্রকাশিত লেখাগুলো পড়া হলেও খুব একটা মন্তব্য করা হয়ে ওঠে না। ইচ্ছে উবে যায় তথ্য-উপাত্ত আর সময়ের অভাবে। বই মেলার কথাচিত্র পড়তে পড়তে এক জায়গায় চোখ আটকে গেল। অচেনা-অজানা একজন মানুষকে, পাঠকের সামনে তুলে ধরা, একজন অগ্রসর মানুষের পক্ষে হয়তো সম্ভব।
বইগুলো উইপোকার খাদ্য হয়ে ওঠার আগেই আপনাদের মত কিছু সৃজনশীল মানুষের কাছে পৌঁছে দে’য়ার তাগিদ থেকে পাঠিয়ে দে’য়া। এখন পড়তে গিয়ে আপনাদের ধৈর্যচ্যুতি না ঘটলেই হলো।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
@স্বপন মাঝি,
আমি আপনার সাথে যোগাযোগের জন্য ই-বার্তায় বার্তা পাঠাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছি। মুক্ত-মনার ই-বার্তা কাজ করছে না। ভাল লাগল যে আপনার দেখা পেলাম। অনেক ধন্যবাদ বইয়ের জন্য। আপনার চার লাইনের ‘অল্পকথন’ শিরোনামে আটটি কবিতা তো অপূর্ব। ফ্ল্যাপের আপনার কবিতা নিয়ে সমুদ্রগুপ্তের বিশ্লেষণধর্মী মন্তব্য অসাধারণ। সাথে আছেন আবুল কাসেম ফজলুল হক।
মুক্ত-মনায় কিছু অল্পকথন ছাড়ুন না!যেমন ছেড়েছেন–
‘রাতভর বৃষ্টি শেষে
ভেসে গেলো ঘর
ভেলায় আমরা দু’জন
যাযাবর।’
পাশাপাশি অন্য পৃষ্ঠায় ইংরেজিতে —
”After an all night rain
the cottage floated away।
We are two in a raft,
Wanderers.”
@গীতা দাস,
(C) (Y)
@গীতা দাস,
মৃত মানুষগুলোকে জাগিয়ে তুলবার, কলমের জোর আপনাদের আছে বটে। আপনাদের মত মানুষগুলো আছে বলেই হয়তো, সবকিছু এখনো দানবদের দখলে যায়নি।
@স্বপন মাঝি,
:clap
@স্বপন মাঝি,
আপনাকে ধন্যবাদ, খুব সুন্দর বইটা উপহার হিসাবে পেয়ে। অনেক ধন্যবাদ। (F)
@আফরোজা আলম,
পড়তে গিয়ে ধৈর্যচ্যুতি না ঘটলেই হলো।
@স্বপন মাঝি,
আপনার প্রশ্ন কবিতা পড়েছিলাম গত বছর (২০১০ ডিসেম্বরে)। প্রশ্ন কবিতাটি “আলো আঁধারের খেয়া”-তে রয়েছে। অথচ এখনও বইটি হাতে পেলাম না। একেই কি ভাগ্য বলে?
@মাহফুজ,
আপনার স্মৃতি-শক্তির প্রশংসা না করে পারছি না। বইটি গৃহবন্দী। মুক্তমনার আলোকিত লেখক-পাঠকদের জন্য ২০ সৌজন্য সংখ্যা পাঠিয়ে দিয়েছিলাম শুদ্ধস্বরে। গৃহবন্দী হয়ে থাকার চেয়ে কারো হাতের ছোঁয়া পেলে, এ হবে আমারই আনন্দ। অনুগ্রহ করে যদি পৌঁছে দে’য়ার উপায় বলে দেন, তো বাধিত হই।
আপনার আগ্রহ আমাকে কিছুটা হলেও আনন্দ দিচ্ছে।
@স্বপন মাঝি,
এতেই আমার মন ভরে গেছে। বইটি গৃহবন্দী থেকে মুক্তি লাভ করুক এই কামনা করি।
খুবই মজার ব্যাপার হচ্ছে- আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হ্ওয়ার অন্তরালে যাদের অবদান রয়েছে তাদের নাম্ও রফিক এবং সালাম।
আগ্রহী পাঠক এ সম্পর্কে জানতে চাইলে অভিজিৎ রায়ের “কিভাবে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হয়ে গেল” পড়ে দেখতে পারেন।
এছাড়া ফতেমোল্লার লেখা The Makers of History: International Mother Language Day ইংরেজীতে আর্টিকেল রয়েছে।
আসুন আমরা একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে অনেক অজানা তথ্য জেনে নিই উপরোক্ত লেখাগুলো থেকে।
@মাহফুজ,
তথ্য জানেন তাতে আপত্তি নেই, তবে অনুরোধ রইল বইমেলায় ঢোকার আগে নিজে স্বাক্ষর দিতে এবং অন্যকে স্বাক্ষর করার কথা বলতে ভুলবেন না।হাতে কলম ধরিয়ে দেবেন।
@গীতা দাস,
মামুন ভাই ও কল্যানদা স্বাক্ষর দিচ্ছেন, আমারই অনুরোধে।
[img]http://img517.imageshack.us/img517/2415/dsc04003b.jpg[/img]
বাংলাভাষাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার জন্য চলছে অভিযান। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে- অনেকেই ইংরেজীতে স্বাক্ষর করছেন।
[img]http://img716.imageshack.us/img716/935/dsc04004h.jpg[/img]
@মাহফুজ,
লিঙ্ক দেবার জন্য ধন্যবাদ।
মামুন ভাইয়ের হাস্যোজ্জ্বল চেহারা দেখে কি যে ভাল লাগছে।
@সৈকত চৌধুরী,
জী আপনি কেবল দেখে যান মামুন ভাই শোন্দর নাকি। আসেন না কেন একদিনও মেলায় এইবার না দেখতে পাইলে খবর আসে, :-[
আমার বই কৈ? লংকাকান্ড ঘটাইয়া দিমু মামুন ভাই আমারে বই না দিলে। :-[ :-[
@সাইফুল ইসলাম,
ইশশ! সামনা সামনি তো গোবেচারা। আমি ভাবলাম কবির লগে একটু কথা কমু, ওমা কবি এইহানে নীরব, শান্ত 😕
এখন আবার বেচারা মামুন ভাইরে ভয় দেখায় :-[
আহা বেচারা মামুন 🙁
@সাইফুল ইসলাম,
শুদ্ধস্বরের টুটুলের সাথে লংকাকান্ড ঘটাইয়া দিয়ে দেখো একখান বই বোগলবাঁধা ঝুলন্ত ঝোলার ভিতরে ঢ়ুকাতে পার কি-না ?
গতকাল মেলায় গিয়ে একসাথে থাকার পর পরে যে কোথায় হারিয়ে গেলা…
তোমার সাথে যেসব কথোপকপন হয়েছে তা যদি রায়হান,লীনা ও গীতাদির সহিত আলোচনা কর তাহলে খুব-ই ভালো হয়।
ভালো থেকো।
১৪ ফেব্রুয়ারী সত্যি আলাদা স্বাদের ছিল। কবিদের সাথে দেখা হওয়া, একসাথে এতো মানুষের স্বাক্ষর
এ এক অভূতপূর্ণ দৃশ্য। যতোদিন এগিয়ে আসছে মন বলছে চলে যাচ্ছে ফেব্রুয়ারী।
আগামী ফেব্রুয়ারী কেমন হবে। আমরা কেমন থাকবো, সদাপ্রফুল্য মামুন ভাইকে আবার পাবোতো? গীতা’দি সাথে যে বন্ধনে জড়িয়েছি তা যেন অটুট থাকুক, অটুট থাকুক, মুক্তমনার সবার সাথে এমন সখ্যতা, এমন মিত্রতা, ভেদাভেদ ভুলে যাবার এই অভাবনীয় মুহূর্ত।
ই বার্তাইয় আবারো ঢোকা যাচ্ছেনা। এই সুযোগে স্বপন মাঝিকে বলছি তার কবিতাগুলোতে একটু চোখ বুলিয়েছিলাম আরেকজনের কাছ থেকে বইটি নিয়ে, ভালই লাগল। আমার জন্য বরাদ্দকৃত সৌজন্য সংখ্যাটির অপেক্ষায় রইলাম। এবং দুঃখিত আমি ঝামেলায় থাকায় আপনার বোনের সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি 🙁
@লীনা রহমান,
তোমার জন্য বরাদ্দকৃত সৌজন্য সংখ্যাটি জন্য এখনই মামুনকে ফোন করে ফেল।
@গীতা দাস, আজ নিয়ে নিলাম… :))
@গীতা দাস,
সৌভাগ্য না গীতাদি, একেই বলে দূর্ভাগ্য,যে কিনা না কবি অথবা নেতা তাকেই করতে হলো আপনাদের চাপে এমন কঠিনতর কাজটি। :-X
আমাদের কবি সাইফুল যে তখন কোথায় ছিল…………:-s
আর,আমার কল্পনায়ও ছিল না আপনি বিষয়টি এভাবে ব্লগে নিয়ে আসবেন ?? :-Y
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
:-Y , অনর্থক মাথে ঠুকে কষ্ট পাওয়ার দরকার নেই।আমরা কিন্তু তোমার নেতৃত্বে মহাখুশি।
@লীনা রহমান,
ঝামেলার ডাল-পালা নিয়েও আমাদের জীবন। সমস্যা হলো সেই ডাল-পালাগুলো কখনো কখনো বাতাসের ইশারায় এমনভাবে পথের সামনের এসে দাঁড়ায়, তখন তো একটুখানি থমকে যেতে হয়।
চোখ বুলাতে গিয়ে ধৈর্যচ্যুতি ঘটেনি, সেইটুকু আমার কাছে অনেক….
ধন্যবাদ।
@স্বপন মাঝি, বই এনেছি আপনারটা। এখন পড়ার অপেক্ষায়। পড়ে মতামত জানাব। আসলে কবিতা পড়তে উপযুক্ত পরিবেশ ও সময় প্রয়োজন নইলে তাতে হারিয়ে যাওয়া যায়না। তাই দেরিতে হলেও শেষ করে আপনাকে মত জানাব 🙂