আবুল কাশেম
ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১১
মুখবন্ধ
প্রায় দশ বছর পূর্বে, যখন আমি সবে মাত্র লেখা শুরু করেছিলাম তখন ‘উইমেন ইন ইসলাম’ নামে একটা ছোট বই লিখেছিলাম। এই লেখা মুক্তমনায় খোঁজ করলে হয়ত আজও পাওয়া যেতে পারে। বইটি পরে আমেরিকার এক অনামা প্রকাশক প্রকাশও করেছিল—যদিও এখন বইটি আউট অব প্রিন্ট। এই বইয়ের এক পাঠক বইটির বাংলা ভাবানুবাদ করার দায়িত্ব নেন। পরে তিনি ‘উইমেন ইন ইসলামের’ ছায়া অবলম্বনে ‘ইসলামে বর্বরতা’ নামে একটা বই লিখায় উদ্যোগী হোন। এই বইয়ের প্রথম অধ্যায় হয় ‘নারী অধ্যায়’ যা ‘উইমেন ইন ইসলামের’ উপর ভিত্তি করে রচনা করা হয়।
দুঃখের বিষয় ঐ পাঠক নানা কারণে মাঝ পথে ‘ইসলামে বর্বরতা’ বইটির লেখা বন্ধ করে দেন। তা আজ প্রায় দশ বছর হতে চলল। অনেকদিন পর আমি পুরানো নথিপত্র ঘাঁটতে ঘাঁটতে আবার হঠাৎ ঐ অসমাপ্ত পাণ্ডুলিপিটা আবিষ্কার করলাম। আমি কিছু পরিবর্তন ও পরিমার্জিত করে ঐ লেখকের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার সিদ্ধান্ত নিলাম। তবে আপাতত: নারী অধ্যায়টুকুই সম্পন্ন করব। সময় পেলে অন্য অধ্যায় সমাপ্ত করার ইচ্ছে রাখলাম।
নিরাপত্তার কারণে আমি ঐ লেখককে XXXX নাম দিয়েছি।
এই লেখার অনেক অংশ XXXX এর লিখা। আমি কিছু নিজে লিখেছি ও কিছু অংশ পরিবর্তন করেছি। যেহেতু এই লেখাটা অনেক পুরানো—কাঁচা হাতের, তাই ভুল ভ্রান্তি থাকতে পারে। এ ব্যাপারে পাঠক যদি ভুল ভ্রান্তি আমার দৃষ্টিতে আনেন তবে আমি কৃতজ্ঞ থাকব।
দশ বছর আগে ইসলামের সমালোচনা করে বাংলায় লেখা পাওয়া দুস্কর ছিল। আজ সেই পরিস্থিতির অনেক পরিবর্তন হয়েছে। এই মুক্তমনাতেই অনেক লেখক আজ কলম ধরেছেন ইসলামকে চ্যালেঞ্জ করে। আমি তাদের প্রতি আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এই রচনা এই সব নির্ভীক বাঙ্গালি তরুণ লেখকদের প্রতি নিবেদিত।
বাংলায় লিখার দক্ষতা আমার অতি নিম্নমানের। তাই পাঠকের কাছে মার্জনা চেয়ে নিচ্ছি।
আবুল কাশেম
(বিঃ দ্রঃ এই লেখার বাংলা কোরান ছাড়া আর সব উধৃতির অনুবাদ লেখকের)
ভূমিকা
যে সমাজে নারীর ওপরে যত কম অত্যাচার হয়, সে সমাজ তত সভ্য। সে হিসেবে এখনো পৃথিবীতে মা-বোনের সামনে আমাদের লজ্জা রাখার জায়গা নেই। সৃষ্টির শুরু থেকে পুরুষ যত রকমে সম্ভব নারীর ওপরে অত্যাচার করেছে। এবং সেজন্য রাষ্ট্র,সাহিত্য, আঞ্চলিক সংস্কৃতি, অর্থনৈতিক কাঠামো এমনকি ধর্ম পর্য্যন্ত কাজে লাগিয়েছে। নারীর ওপরে অত্যাচারকে হালাল করার ব্যাপারে ধর্মের ব্যবহারটা খুবই মোক্ষম।ইসলামের অবস্থাও তাই। সে অত্যাচার ঠেকাবে কি, ওটাকে অত্যাচার বলে মনে করতেই সাহস পায় না কেউ। ইমান নষ্ট হবে তাহলে। এ ব্যাপারে লেখালেখি হয়েছে বিস্তর। ভক্ত মুসলমানরা আর মওলানারা লক্ষ লক্ষ কেতাবে, প্রবন্ধ নিবন্ধে, মিলাদ মজলিসে, আর বক্তৃতায় কোরান হাদিসের নানারকম উদ্ধৃতি দিয়ে দেখিয়েছেন, ইসলামে নারীর জায়গা বড়ই চমৎকার। ইসলাম মেয়েদের একেবারে দুধে-মধুতে রেখেছে। কথাটা যে একেবারে মিথ্যে, তা কিন্তু নয়। মেয়েদের ব্যাপারে মিষ্টি-মধুর অনেক কথাই আছে ইসলামে। আছে মনোহরণ বর্ণনা, আছে চমৎকার উপদেশ, উপরোধ আর অনুরোধ। সেটা হল মূদ্রার একটা দিক। চাঁদের যেমন একটা দিকই পৃথিবীর দিকে সব সময় মুখ করা থাকে, তেমনি মেয়েদের ব্যাপারে ইসলমের ওই মিষ্টি সুন্দর মুখটাই মওলানারা সব জায়গায় দেখিয়ে বেড়ান। অন্য কুৎসিৎ দিকটা জানেন নিশ্চয়ই, কিন্তু ভুলেও দেখান না। কিংবা বোধহয় ইমানের কঠিন দেয়াল ভেঙ্গে মানবতাটা মাথায় ঢুকতেই পারে না। যদি মেয়েদের ইসলাম এতই মাথায় তুলে রাখবে, তা হলে মুসলমান সমাজের ইতিহাসে আর বর্তমানে মেয়েদের এত আর্তনাদ, এত গোঙ্গানীর অন্য কারণ গূলোর সাথে সাথে ইসলামী আইনের নিষ্ঠুরতাটা লুকিয়ে রাখেন বিলকুল। ইসলামকে যদি ঠিকমত জানতে হয়, তবে দু’টো দিকই দেখতে হবে আমাদের।
দলিল থেকে নারীর প্রতি ইসলামের আদর দেখিয়েছেন লক্ষ লক্ষ মওলানা। আর নিষ্ঠুরতা দেখিয়েছেন মুষ্টিমেয় মাত্র কিছু পন্ডিত। দু’একটা বইও আছে ইংরেজীতে এর ওপর। তবে এ বিষয়ে সবচেয়ে বিস্তারিত বলেছেন আবুল কাসেম। ইন্টারনেটের অনেক সাইট তাঁর পুরো গবেষণা ধরে রেখেছে, বিশেষ করে মুক্তমনা। এ বইয়ের অন্য জায়গায় মুক্তমনার ঠিকানা দেয়া আছে। কোরাণ হাদিস আর ইসলামের আদি কেতাবগুলো থেকে তিনি একের পর এক অজস্র দলিল এভাবে তুলে ধরেছেন যে তা থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণ হয় যে মুসলমান মেয়েদের প্রতি যত অত্যাচার হয়েছে, তার একটা বড় অংশের জন্য দায়ী ইসলাম নিজেই। বাংলায় এতবড় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে একটা বইও নেই, এটাই প্রথম। আপনাদের সামনে দেবার আগে বছরের পর বছর ধরে এর প্রতিটি বক্তব্যের সত্যতা সম্বন্ধে সমুদ্র-মন্থন করা হয়েছে কোরান-হাদিস এবং ইসলামের আদি ইতিহাস থেকে। কারণ, আমরা হাড়ে হাড়ে জানি মওলানারা কি চীজ। একটা ভুল পেলেই চীৎকার করে আকাশ পাতাল একাকার করে ফেলবেন। ভুল না পেলেও মুরতাদ-টুরতাদ বলে টাকা-পয়সার ঘোষনা দিয়ে তাঁরা আমার মাথাকাটার চেষ্টা করবেন। যাহোক, কোন মওলানা যদি এর মূল উদ্ধৃতিতে ভুল দেখাতে পারেন, তা হলে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করে এ বই আমি বাজার থেকে উঠিয়ে নেব, এ ওয়াদা থাকল।
এবারে কাজে নামা যাক। আমাদের মা, বোন, স্ত্রী, কন্যাকে ইসলাম কি চোখে দেখছে, মুখের কথায় কি বলছে, আর কাজে কি করছে। আমি আবুল কাসেমের গবেষণা থেকে আলোচনা করব, আমার সিদ্ধান্ত আপনাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেবনা। মাথার মধ্যে মগজ সবারই আছে। সিদ্ধান্ত নেয়ার দায়িত্ব আপনাদের। পাঠক! অবাক এবং ক্রুদ্ধ হবার জন্য প্রস্তুত থাকুন।
ধন্যবাদ।
xxxxx
২৫শে সেপ্টেম্বর, ২০০২ খ্রীষ্টাব্দ।
সূচনা
সব বাংলাদেশীদের মত আমিও ইসলামকে খুবই শান্তির ধর্ম মনে করতাম, সবার মতই আসল ইসলাম সম্বন্ধে জানতাম অল্পই। ইরানে ইসলামী হুকুমত কায়েমে দুনিয়া তার দিকে ফিরে তাকাল। পরে আমিও কৌতুহলী হয়ে ঢুকে পড়লাম ইন্টেরনেটে। ইউরোপ-আমেরিকার শত শত ইসলামী মনিষীর অসংখ্য লেখা পড়ে মনটা খুব খুশী হয়ে গেল। সব সৎ পাঠকের মত আমিও তাদের প্রতিটি কথাই বিশ্বাস করলাম। ইসলামে আমাদের মা-বোনদের জন্য এত ভালো ভালো কথা আছে যে তা দেখে মনটা আমার বড়ই মোহিত হয়ে গেল।
কিন্তু তারপর পৃথিবীর মুসলিম দেশগুলোর দিকে তাকিয়ে কেমন যেন সন্দেহ হল। ইসলামী মনিষীরা এত জোর দিয়ে যা কিছু বলছেন, তার দেখি কিছুই মিলছে না। উল্টে বরং মেয়েদের আর্তনাদে সেখানে কান পাতা দায়। পাকিস্তানে, নাইজিরিয়াতে, আফগানিস্থানে তো মোটামুটি ইসলামী আইন (শারিয়া) চালু আছে, কিন্তু তাহলে সে সব দেশে মেয়েদের অবস্থা এত করুণ কেন? আফগানিস্থানের রাস্তায় পুলিশ লাঠি দিয়ে মেয়েদের পেটাচ্ছে, নাইজিরিয়ায় ধর্ষিতা মেয়ে পুলিশের কাছে নালিশ জানাতে এসে শারিয়া কোর্টে মৃত্যুদন্ড পেল, দুবাই কোর্ট স্বামীদেরকে বৌ-পেটানোর অধিকার দিল, পত্রিকায় এই সব দেখে মাথায় যেন বজ্রাঘাত হল, আতংকে ত্রাসে শির শির করে উঠল বুকের ভেতর। সর্বনাশ! অন্য কেতাবে যা-ই লেখা থাকুক, শারিয়ার কেতাবে তো এগূলোই আছে। বাংলাদেশেও শারিয়া চালু করার চেষ্টা চলছে, এমন ঘটলে আমাদের যে কি সর্বনাশ হয়ে যাবে তা ভেবে ভয়ে হিম হয়ে গেল বুক। তারপর বাধ্য হয়েই ঢুকে পড়লাম ইসলামের ভেতর। ওখানে কি আছে দেখতে হবে, শেকড় খুঁজে বের করতে হবে নারীর ওপর ইসলামী অন্যায়-অত্যাচারের। অত্যাচারগুলো আসলে কি কেতাবেই আছে, না কি পুরুষ আইনগুলোকে বিকৃত করেছে?
যা দেখলাম, তাতে দম বন্ধ হয়ে গেল। অবিশ্বাস্য, এ যে অবিশ্বাস্য! এ কি চেহারা আসল ইসলামের? এ যে প্রকান্ড এক দানব ছাড়া আর কিছু নয়! আবার সব কিছু দেখলাম খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে। না, কোন ভুল নেই, মানুষকে হাজার বছর ধরে নির্লজ্জ মিথ্যে কথায় কঠিন প্রতারণা করেছেন মওলানারা। আমি উঁচু বিদ্যায়তনে ছাত্র পড়াই, জীবনে অনেক পরীক্ষাই দিয়েছি এবং পাশ করেছি। এবার যেন জীবনের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে, এ কথা মনে রেখে আবার পড়া শুরু করলাম ইসলামের মূল বইগুলো, যেখান থেকে উঠে এসেছে ইসলামের আইন কানুন। খাটাতে শুরু করলাম নিজের বিবেক-বুদ্ধি আর কল্যাণ-বোধ। তখন ধীরে ধীরে ইসলামের এই লুকিয়ে রাখা না-বলা দানবীয় দিকটা স্পষ্ট হয়ে এল চোখের সামনে। না, কোন ভুল নেই। নারীর প্রতি ইসলামের আদর সম্মান শুধু লোক দেখানো, মন-ভোলানো। ওগুলো শুধু গজদন্তের মত হাতীর বাইরের সুন্দর দাঁতটা। আসলে ইসলামের মুখের ভেতরে লুকোন আছে মেয়েদের চিবিয়ে খাওয়ার জন্য আরও একপাটি শক্তিশালী বিষাক্ত দাঁত। তারই নাম শারিয়া।
কিন্তু এটা আমি একা দেখলে তো চলবে না। অবশ্যই এ লুকোন দলিল দেখতে হবে পৃথিবীর সব মানুষকে। যত অবিশ্বাস্যই হোক, যত বেদনাদায়ক-ই হোক, সবাইকে জানতেই হবে ইসলামী শারিয়ার আইন কি শকুনের চোখে তাদের দেখে। খাল কেটে এ রক্ত-পিপাষু কুমীরকে ডেকে আনবার আগে অবশ্যই সমস্ত শান্তিপ্রিয় মুসলমানকে দেখতে হবে ইসলামের এই ভয়াবহ লুকোন চেহারা।
তাই হাতে তুলে নিয়েছি কলম, খুব আস্তে ধীরে ইসলামের আসল চেহারাটা ফুটিয়ে তুলব আপনাদের সামনে। আপনারা পড়ুন, খুঁটিয়ে দেখুন, এবং চিন্তা করুন। এবং দেখান মওলানাদের। তাঁদের কি বলার আছে জানান আমাকে। যদিও জানি তাঁরা টুঁ শব্দটি করবেন না। কারণ তাঁদের ভালোই জানা আছে যে লড়াইটা তাঁদের করতে হবে আমার বিরুদ্ধে নয়, বরং তাঁদের নিজেদের কেতাবের বিরুদ্ধেই। এটাও তাঁরা ভালোই জানেন যে এ ব্যাপারে বেশী নড়াচড়া করলে তাঁরা মধ্যপ্রাচ্যের চোরাবালুর গর্তে ঢুকে মারা পড়বেন
ধন্যবাদ।
আবুল কাশেম।
প্রথম পাঠ
প্রথমে কোরান দিয়েই শুরু করা যাক, সৌদী আরব থেকে প্রকাশিত মওলানা মুহিউদ্দিন খানের অনুবাদ। কোরাণের যে কথাগুলো পুরুষের মন মানসিকতায় ব্রক্ষ্মাস্ত্র হিসেবে গেঁথে রয়েছে, সেগুলো একটু দেখে নেয়া যাক, তারপরে বিস্তারিত তথ্যে যাব আমরা।
আল্লাহ্র পছন্দ হচ্ছে পুরুষ—তা কী বলার দরকার রাখে?
কি আছে সুরা নাহল- আয়াত ৪৩ (১৬:৪৩), সুরা হজ্ব আয়াত ৭৫ (২২:৭৫) এ?
নারীকে কোনদিন নবী-রসুল করা হবে না।
সুরা ইউসুফ, আয়াত ১০৯-(১২:১০৯) তেও একই কথা:
আপনার পূর্বে আমি যতজনকে রসুল করে পাঠিয়েছি, তারা সবাই পুরুষই ছিল জনপদবাসীদের মধ্য থেকে, আমি তাঁদের কাছে ওহী প্রেরণ করতাম।
এবং সিদ্ধান্ত দিয়েছে সুরা আল্ আনাম আয়াত ৯ (৬:৯):
যদি আমি কোন ফেরেশতাকে রসুল করে পাঠাতাম, তবে সে মানুষের আকারেই হত। এতেও ঐ সন্দেহই করত, যা এখন করছে।
কোন কোন অনুবাদে দেখবেন আরবীর ‘পুরুষের আকারে’ শব্দটাকে অনুবাদে ‘মানুষের আকারে’ বলে সমস্যাটাকে ধামাচাপা দেবার চেষ্টা করেছেন চালাক মওলানারা।
আরবীতে মানুষ হল ইনসান আর পুরুষ হল রাজাল। মওলানাদের জিজ্ঞাসা করুন তো, কোরানে কোন শব্দটা আছে?
এবারে একটু হাদিস ঘেঁটে দেখা যাক। হাদিস হল নবী (সঃ) এর কথা-বার্তা, আচার-বিচার, ধ্যান-ধারণা, ব্যবহার-ব্যক্তিত্ব, মতামত-সিদ্ধান্ত, এ সবের বিস্তারিত রিপোর্ট, তাঁর সহচরেরা দিয়ে গেছেন। হাদিস ইসলামের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, কোরানের পরেই এর স্থান। হাদিস বাদ দিলে ইসলামের সাংঘাতিক অঙ্গহানী হয়ে যায়। বিখ্যাত মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম তাঁর বিখ্যাত ‘‘হাদিস সংকলনের ইতিহাস’’ বইয়ের ৯৪ পৃষ্ঠায় বিভিন্ন বুলন্দ ইমামের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘‘‘হাদিস অমান্যকারী কাফির’।
ছয়টি হাদিসের বই সর্বকালে সর্ব দেশে সুন্নী মুসলমানেরা ‘‘সহিহ্’’ বা ‘‘সত্য’’ বলে গণনা করেন, সেগুলো হল সহিহ্ বোখারি, সহিহ্ মুসলিম, সহিহ্ নাসায়ী, সহিহ্ তিরমিজি, সহিহ্ আবু দাউদ এবং সহিহ্ ইবনে মাজাহ। আমরা মোটামুটি সেগুলো থকেই উদ্ধৃতি দেব।
দুনিয়ার এক হাজার দুশো মিলিয়ন মুসলমানের মধ্যে সুন্নীরা-ই এক হাজার কোটি। হাদিসে মেয়েদের সম্মন্ধে অনেক ভালো কথাও আছে। কিন্তু তার পাশাপাশি যা আছে, তাতে লজ্জায় মুসলমান পুরুষদের স্রেফ আত্মহত্যা করা ছাড়া অথবা ওই শত শত দলিল গুলোকে খুন করা ছাড়া উপায় নেই। বাড়িয়ে বলছি না একটুও, সবই দেখাব একটা একটা করে।
সহিহ্ মুসলিম, বই ৩১ হাদিস ৫৯৬৬:
আবু মূসার বর্ণনা মতে নবী (দঃ) বলেছেন: “পুরুষদের মধ্যে অনেকেই ত্রুটিমুক্ত কিন্তু নারীদের মধ্যে কেউ-ই ত্রুটিমুক্ত নয়, কেবল ইমরানের কন্যা মেরী এবং ফারাওয়ের স্ত্রী আয়েশা ছাড়া”।
হল? একেবারে সাফ কথা। এ কথার পর কি আর কিছু বলার থাকতে পারে, না বলা উচিত? এর পরেও আবার যদি গোদের ওপর বিষফোঁড়া গজায়, ইসলাম যদি পতিদেবতাকে ওপরে তুলতে তুলতে একেবারে আশমানী পাতি-দেবতা করে তোলে, তবে নারী তো পুরুষের পায়ের তলায় পিষে যাবেই, তার জন্মগত মানবাধিকার তো লেজ তুলে পালাবেই।
প্রমাণ দেখাচ্ছি সুনান আবু দাউদ হাদিস থেকে; বই ১১ হাদিস নম্বর ২১৩৫:
কায়েস ইবনে সা’দ বলছেন, ‘‘নবী (দঃ) বললেন: “আমি যদি কাউকে কারো সামনে সেজদা করতে বলতাম, তবে মেয়েদের বলতাম তাদের স্বামীদের সেজদা করতে। কারণ আল্লাহ স্বামীদের বিশেষ অধিকার দিয়েছেন তাদের স্ত্রীদের ওপরে”।
গ্রাম-গঞ্জের কোটি কোটি অশিক্ষিত মুসলিম পুরুষ আর কিছু না বুঝুক, আল্লার দেয়া এই ‘‘বিশেষ অধিকার’’ ঠিকই বুঝেছে, আর তার ঠ্যালায় মেয়েদের যে কি অপমান আর নৃশংস অত্যাচার সইতে হয়েছে শতাব্দী ধরে, তা ঠিকমত উপলব্ধি করলে অশ্রু সামলানো যায় না।
এ ঘটনাটা ঘটেছিল হিন্দু ধর্মের বইতেও। হিন্দুরা তো তাদের মহাপুরুষদের অক্লান্ত চেষ্টায় সে নরক থেকে বেরিয়ে এসেছে, শুধু আমরা মুসলমানরাই এখনো চোখে সর্ষে ফুল দেখে দেখে ভির্মি আর খাবি খেয়ে চলেছি এ অন্ধকুপের ভেতর। মেয়েদের আর্তনাদ শুনছি আর সাম্যের বক্তৃতা শুনছি। অবশ্যই, অবশ্যই!
সে কথাগুলো হল: পুরুষ নারীর ওপরে কর্তা, উত্তরাধিকারে পুরুষ নারীর দ্বিগুন পাবে, আর্থিক লেনদেনে নারীর সাক্ষ্য পুরুষের অর্ধেক, ইত্যাদি ইত্যাদি।
নারীরা হল ভূমি এবং ক্রীতদাসী সদৃশ্য—এও কি বলে দিতে হবে?দেখুন কোরান শরীফ
সুরা বাকারা, আয়াত ২২৩ (২:২২৩):
তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শষ্যক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার কর।
এ কথার মানে কি? ‘শষ্যক্ষেত্র’ কথাটার মানেই হল, মেয়েদের বিছানায় টেনে নিয়ে যাও, আর ‘চাষ কর’, ‘শষ্য’, অর্থাৎ বাচ্চা পয়দা করার জন্য। ছিঃ! কোন ধর্মগ্রন্থ যে নারীদের নিয়ে এমন অবমাননাকর শব্দ উচ্চারণ করতে পারে তা কল্পনা-ই করা যায় না। আর ‘ব্যবহার কর’ কথাটার মানেই বা কি? মেয়েরা কাপড়, না জুতো যে ব্যবহার করতে হবে? এর পরেও কোরানে পুরুষের জন্য মেয়েদের ‘উপভোগ কর’, ‘সম্ভোগ কর’ এ ধরণের কামুক কথা বার্তা প্রচুর আছে। আর বেহেশতের তো কথাই নেই।
সুরা আল-ওয়াক্বিয়াতে (সূরা ৫৬: ৩৫-৩৭) মেয়েদের নানারকম উত্তেজক বর্ণনার পর বলা হল:
আমি জান্নাতী রমণীগণকে বিশেষরূপে সৃষ্টি করেছি। অতঃপর তাদেরকে করেছি চিরকুমারী, কামিণী, সমবয়স্কা।
এদিকে বেচারা অনুবাদকের হয়ে গেল মহা মুশকিল। রমণীর সাথে রমণের লোভটাই সবচেয়ে আকর্ষনীয়, কিন্তু একবার রমণ হয়ে গেলে রমণীর পক্ষে চির কুমারী থাকাটাও অসম্ভব। কি করা যায়! অনেক ভেবে চিন্তে মাথা চুলকে তিনি ব্যাখ্যার অংশে লিখলেন: জান্নাতের নারীদের এমনভাবে সৃষ্টি করা হবে যে, প্রত্যেক সঙ্গম-সহবাসের পর তারা আবার কুমারী হয়ে যাবে (পৃ-১৩২৭, কোরাণের বাংলা অনুবাদ মওলানা মুহিউদ্দীইন খান)।শুধু তাই নয় ঐ একই পৃষ্ঠায় লিখা হয়েছে: এছাড়া শয্যা, বিছানা ইত্যাদি ভোগবিলাসের বস্তু উল্লেখ করায় নারীও তার অন্তর্ভুক্ত আছে বলা যায়। অর্থাৎ নারী শুধু শয্যা ও লাঙ্গল করার ভূমি মাত্র।
শাব্বাশ!
এইসব কথা বলার পরে প্রচুর মিষ্টি মিষ্টি কথা কিংবা ‘আর নিজেদের জন্য আগামী দিনের ব্যবস্থা কর এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাক’’’ এসব বলে কোনই লাভ হয় নি, মুসলমান মেয়েরা চিরকাল পিষে গেছে পুরুষের পায়ের নীচে।
এগুলোই হল প্রথম পাঠ। এবার আসা যাক দীর্ঘ আলোচনায়।
চলবে (২য় পর্বে)।
@rubel,
আপনার খুব বেশী জ্ঞান হলে বিভ্রান্তি দূর করেন। জনাব আবুল কাশেমের ইসলামিক জ্ঞান নেই এরকম এক কথায় হাইকোর্ট না দেখিয়ে যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করুন। আপনি কি কোরান হাদিসের চাইতেও বড় ইসলামিক জ্ঞান ভান্ডার আবিষ্কার করেছেন নাকি?
।আপনি বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছেন। আপনারই সঠিক জ্ঞান নেই ইসলামের । পরে মানুষকে জ্ঞান দিন।
মুসলমানরা ত প্যাগান দের ঘৃণা করে তা এখন দেখছি যে লাঙ্গল আর জমি চাষের ব্যাপারটা একটা প্যাগান দের লেখা এরোটিক কবিতার মত।
http://www.goddess.org/religious_sex.html
My vulva, the horn,
The boat of Heaven,
Is full of eagerness like the young moon.
My untilled land lies fallow.
As for me, Inanna,
Who will plow my vulva?
Who will plow my high field?
Who will plow my wet ground?
As for me, the young woman,
Who will plow my vulva?
Who will station the ox there?
Who will plow my vulva?
পড়ুন এখানে ইনান্না কিভাবে ডুমুযি কে তার জমি তে লাঙ্গল চালাতে বলছে।প্রথম টুকু আমি নিজেই পোস্ট করে দিলাম আর আছে পড়েন মজা পাবেন।শুধু পার্থক্য হল প্যগান দেবি এখানে কাজ তা করছেন স্বেচ্ছায়, আর মুসলিম মেয়েদের বাধ্য করা হচ্ছে।
যে ধর্ম বলে নারীরা তোমাদের শস্যহ্মেত্র
যে ধর্ম নারীকে কোনদিন নবী করা হবেনা বলে ঘোষনা দেয়,
যে ধর্ম স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর জান্নাত নির্ধারন করে
যে ধর্ম এক পুরুষকে দু’জন নারীর সমান বলে তুলনা করে
যে ধর্ম ধর্ষনের অপরাধে নারীকে পাথর নিহ্মেপ করে মৃত্যুদন্ড দেয়
যে ধর্ম জঘন্যতম “হিল্লা বিয়ের” প্রচলন করে
সেই ধর্মই কি নারীদের সমঅধিকার দেয়?এটা কি এসব কি নারীদের উপর বর্বরতা নয়?এটা কি নারীদের ছোট করে দেখা নয়?এটা মানবিকতার কোন পর্যায়ে পড়ে তা আমার বোধগম্য নয়।
@বালির বাধ,
আপনার সব প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে হাঁ।
প্রচুর ধন্যবাদ এই সুন্দর মন্তব্যের জন্যে।
:guru:
বইটার বাংলা অনুবাদ করা নিশ্চয়ই জরুরী। আমি ‘ওমেন ইন ইসলাম’ সহ অনেক লেখা প্রথম পড়ি ‘ইসলাম ওয়াচ’ নামক সাইটে। তখনও মুক্তমনার সাথে আমার পরিচয় নেই। কোন একটা সাইটে পড়লাম আবুল কাশেম মুক্তমনা নামক বাংলা সাইটে লেখালেখি করেন। সেই সুত্র ধরে মুক্তমনায় আমার আসা। তার পর আপনারকে একটা মেইল করেছিলাম এবং সেই মেইলের উত্তরও আপনি দিয়েছিলেন। আমি আবারও পর্বগুলি পড়ে নেব এখানে। ধন্যবাদ এইরকম একটা প্রয়াস নেয়ার জন্য।
@সুমিত দেবনাথ,
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ–সেই সব দিনের কথা মনে রেখেছেন।
আজ থেকে দশ বছর আগে পরিস্থিতি অনেক ভিন্ন ছিল। তখন আমরা মাত্র তিন চার জন ইসলামকে সমালোচনা করে লিখালেখি শুরু করেছিলেন। লিখায় আমাদের হাত ছিল নিতান্তই কাঁচা। সব লেখাই ছিল ইংরাজিতে। সেই সব অতীতের লেখা পড়লে নিজেই লজ্জা পাই—এত নিম্নমানের ্লেখা ছিল সেগুলো।
আজকে পরিস্থিতির কিছু পরিবর্তন হয়েছে। বেশ কিছু বাঙালি ইসলাম নিয়ে নাড়াচাড়া করছেন। এটা আমাদের জন্যে খুব আনন্দের বিষয়।
@আবুল কাশেম,
কৃতিত্ব আপনাদের, মুক্তমনাদের। আপনারা পথের অলিগলি চিনিয়েছেন। গবেষণার সারমর্ম এবং বিভিন্ন তথ্যসুত্র দিয়ে আমাদের মত আলসে অনুসন্ধানিদের প্রকৃত জ্ঞানানুসন্ধানে উৎসাহ দিয়েছেন। আমরা আপনাদের লেখার জন্য চাতক পাখির মত বসে থাকি।
আপনাদের ভালো হোক। :guru:
ইসলামিক ভাষ্য অনুযায়ী ফেরেস্তাগণ আলক রশ্মি দ্বারা নির্মিত। আর এ কথা তো সবার জানা যে আলক রশ্মি কম্বল ভেদ করতে পারে। তাহলে কি এটাই দাঁড়ায় না যে জিব্রাইল অহি নিয়ে এসে লাইভ সেক্স শো দেখত। অতএব আজকাল পশ্চিমা দেশে যে সেক্স ইন্ডাস্ট্রী গড়ে উঠেছে তার পথিকৃত তাহলে ইসলামিক ফেরেস্তা জিব্রাইল :))।
@swapnil,
আরে সাহেব, একজন ফেরেস্তা দিয়ে এতবড় ইন্ডাস্ট্রি চলে কেমনে? একজন মুমিন যখন তার বউয়ের সাথে যে কোন কারণেই হউক সঙ্গম করতে না পেরে বেজার হয়ে ঘুমায়, আসমানে ৭০জন যুবতীর হৃদয়ে তখন আগুন জ্বলে উঠে। ঐ মুমিন বান্দার জন্যে সংরক্ষিত যুবতীগণ সারা রাতের মধ্যে আর একবারও দু-চোখের পাতা এক করেন না। তারা সারা নিশী জেগেজেগে দুনিয়ার নারীকে (মুমিনের পাপী বউ) এই বলে অভিশাপ দিতে থাকেন- কমবখত নারী তুমি আল্লাহর বন্দাকে আজ রাতে সেক্স করতে দিলেনা, আর কিছুটা দিন পরেই সে আমাদের কাছে চলে আসবে, আমরা তার জন্যে অধীর অপেক্ষায় আছি, আর সেদিন তোমাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে।
@আকাশ মালিক,
একথাটা কার? হাদিসের না কোরানের? কত নং সুরা বা আয়াত? যানাবেন কি?
ভাল থাকবেন।
@আকাশ মালিক, ভাইয়া ঐ ৭০ তা ত বউ না রক্ষিতা; যারা মুহাম্মাদের উপহার। কাজেই এই সঙ্কট ।
নতুন এটম বোমার ফর্মূলা হতে যাচ্ছে! (Y)
ইসলাম শান্তির ধর্ম আর ইসলামই নারীকে দিয়েছে সর্বোচ্চ সম্মান- বিভিন্ন ব্লগ-ফোরামে দেখতে দেখতে চোখ পচে গেল! এবার তাদেরকে কিছু যুতসই উত্তর দিয়ে তক্তা বানানোর ফর্মূলা হাতের কাছে পাওয়া যাবে।
কত পর্ব হতে পারে- ধারনা দেয়া যাবে?
মনে হয় আপনার ইংরেজী মিলিয়নের বাংলা কোটি করাতে একটু গোলমাল বেঁধে গেছে।
@শ্রাবণ আকাশ,
হাঁ, xxxx ভুল করেছেন নম্বরে।
এটা হবে ১২০ কোটি–অর্থাত ১২০০ মিলিয়ন বা ১.২ বিলিঅন।
দূঃখিত এই ভুল আমার চক্ষু এড়িয়ে গেছে।
@শ্রাবণ আকাশ,
ঠিক করে দিলাম।
ওটা হবে এক হাজার দুশো মিলিয়ন।
আপনাকে প্রচুর ধন্যবাদ এই ভুল দেখানোর জন্যে।
@আবুল কাশেম,
তীর্থ কাকের মত বসে থাকার অবসান হল। আমাদের মত যারা ইংরাজীতে গন্ড মুর্খ তাদের বাংলা ছাড়া গতি নেই। তবু আপনার ইংরাজী লেখাও পড়েছি সাথে অভিধান নিয়ে। পরের অংশ কবে পাব সেই আশায় আছি।
অঃট- আমার “একটা দিনের শুরু” একটা আবদার রেখেছি আপনাকে আর আকাশ মালিক’কে নিরাশ করবেন না।
@আফরোজা আলম,
২য় পর্ব প্রায় সম্পূর্ণ। মুক্তমনার নীতিমালার প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। তাই প্রথম পর্বটা প্রথম পাতা থেকে চলে গেলেই ২য় পর্ব তুলে দিব। মনে হয় এই সপ্তাহের শেষে হতে পারে।
আপনার মত আমিও আকাশ মালিকের লেখার ভীষণ ভক্ত।
আকাশ ্মালিকের কোন লেখাই আমি ছেড়ে দেই না। এত্ ভালো লেখকের লেখা ‘যে সত্য বলা হয়নি’ যে আজ পর্যন্ত বই মেলায় ঠাঁই পেলনা সেটা দুঃখের বিষয়—তবে আমি এতে আশ্চর্য্য হচ্ছিনা। আলী দস্তির ‘২৩ বছর’ প্রকাশিত হয়েছিল উনার মৃত্যুর পরে। আর উনি ছিলান ইরানের এক বিশাল মোল্লা। তবে পরে চক্ষু, কান, মাথা খুলে যাওয়ায় ইসলামকে চ্যালেঞ্জ করে এই বই লিখেছিলেন—যার জন্য উনাকে কারাবাস করতে হয় এবং প্রচুর শারিরীক নির্যাতন সহ্য করতে হয়। এই নির্যাতনের ফল স্বরূপ আলী দস্তি কারাবাসের অল্পদিনেই মারা যান।
আকাশ মালিক সহ আমাদের ভাগ্যে কি তাই থাকবে? বাংলাদেশের মত ইসলামী স্বর্গ থেকে বহু দূরে থাক`লে কি হবে। ইসলামী তরবারি যে কত লম্বা তা আম`রা সবাই জানি।
আলী দস্তির ‘২৩ বছর বইটির ফ্রি On line লিঙ্কঃ
http://ali-dashti-23-years.tripod.com/
এই পর্বটা খুব ছোট ছিল। পরের পর্বের জন্য অধীর হয়ে রইলাম
@লীনা রহমান,
্ধন্যবাদ।
আমি চেষ্টা করব ২য় পর্ব যত শীঘ্র সম্ভব প্রকাশ করতে।
আমরা হাদিসটি পড়ি-
আনাছ ইবনে মালিক ও কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত: তারা বলেন, নবি (সাঃ) দিনে বা রাতে পর্যায়ক্রমে (মধ্যবর্তি ফরজ গোসল ছাড়া) ১১ জন বিবির সঙ্গে সঙ্গম করতেন। (৯ জন বিবাহ সুত্রে ও ২ জন শররিয়তী স্বত্বাধিকার সুত্রের)
কাতাদা বলেন, আমি আনাছকে (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলাম, হযরতের কি এতই শক্তি ছিল? তিনি বললেন,আমাদের মধ্যে এই কথা প্রসিদ্ধ ছিল যে, রাছুলাল্লাহর ৩০ জন পুরুষের শক্তি আল্লাহর তরফ থেকে প্রাপ্ত ছিলেন।
[দ্র: বোখারী, ১ম খণ্ড, আজিজুল হক, হাদিছ নং-১৯০, হামিদিয়া লাইব্রেরী]
বইটি কিনতে পাবেন , শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক অনূদিত, হাদিস নং ১৯০ স্মরণ রাইখেন, পিডিএফ ফাইলের সাথে পৃষ্টা নম্বর মিলবে না। আর ইংরেজি অনূবাদে হাদিসটি পাবেন -Volume 1, Book 5, Number 268 তে।
এই হাদিসটি পাবেন বুখারি শরিফের বাংলা অনুবাদের এই অংশ থেকে- (পৃষ্টা ১৯৪, হাদিস নম্বর ১৯০)
http://www.banglakitab.com/BukhariShareef/BukhariShareef-ImamBukhariRA-Vol-1-Page-167-219.pdf
আর সম্পূর্ণ বুখারির অনুবাদ ডাউনলোড করতে হলে
http://www.banglakitab.com/BukhariShareef.htm
হজরত মুহাম্মদ নাকি সর্ব-কালের জন্য অনুসরণীয় আদর্শ, তিনি সিরাজাম মুনিরা বা জ্বলন্ত প্রদীপ (মুহাম্মদ কে সিরাজাম মুনিরা বলা হয়েছে আল-কোরানে, কি সুন্দর উপাধি উপর থেকে নামিয়ে নিয়েছেন)। কিন্তু সমস্যা হইল রে ভাই, সহিহ হাদিস মতে উনি তো ৬ বছরের আয়েশাকে বিয়ে করেছেন আর ৯ বছর বয়সেই ঘর-সংসার শুরু করে দিয়েছে ( বর্তমানে কোনো সভ্য সমাজেই এটা গ্রহণ করার প্রশ্নই উঠে না )। এটাও কি আধুনিক কালে মুমিন মুসলমানের জন্য অনুসরণযোগ্য?
দেখেন-
Muslim (8:3309) –
http://www.usc.edu/schools/college/crcc/engagement/resources/texts/muslim/hadith/muslim/008.smt.html#008.3309
Book 008, Number 3309:
‘A’isha (Allah be pleased with her) reported: Allah’s Messenger (may peace be upon him) married me when I was six years old, and I was admitted to his house at the age of nine. She further said: We went to Medina and I had an attack of fever for a month, and my hair had come down to the earlobes. Umm Ruman (my mother) came to me and I was at that time on a swing along with my playmates. She called me loudly and I went to her and I did not know what she had wanted of me. She took hold of my hand and took me to the door, and I was saying: Ha, ha (as if I was gasping), until the agitation of my heart was over. She took me to a house, where had gathered the women of the Ansar. They all blessed me and wished me good luck and said: May you have share in good. She (my mother) entrusted me to them. They washed my head and embellished me and nothing frightened me. Allah’s Messenger (, may peace be upon him) came there in the morning, and I was entrusted to him.
আরো দেখেন-
http://www.usc.edu/schools/college/crcc/engagement/resources/texts/muslim/hadith/bukhari/058.sbt.html#005.058.234
Volume 5, Book 58, Number 234:
Narrated Aisha:
The Prophet engaged me when I was a girl of six (years). We went to Medina and stayed at the home of Bani-al-Harith bin Khazraj. Then I got ill and my hair fell down. Later on my hair grew (again) and my mother, Um Ruman, came to me while I was playing in a swing with some of my girl friends. She called me, and I went to her, not knowing what she wanted to do to me. She caught me by the hand and made me stand at the door of the house. I was breathless then, and when my breathing became Allright, she took some water and rubbed my face and head with it. Then she took me into the house. There in the house I saw some Ansari women who said, “Best wishes and Allah’s Blessing and a good luck.” Then she entrusted me to them and they prepared me (for the marriage). Unexpectedly Allah’s Apostle came to me in the forenoon and my mother handed me over to him, and at that time I was a girl of nine years of age.
এখন ইসলামকে বলা হয় complete code of life, পরিপূর্ণ জীবন বিধান। আচ্ছা, তাহলে এবার বলেন, ইচলাম অনুসারে মেয়েকে সর্বনিম্ন কত বৎসর বয়সে বিয়ে দেয়ার অনুমোদন আছে? আর, মেয়ের অনুমতি এক্ষেত্রে নেয়া হয় কিনা? আর মেয়ের বয়স যদি ৬ বছর হয় তবে অনুমতি নিবেন কেম্নে? আর এটা কিসের অনুমতি? এটা কোন ধরণের নারী অধিকার? নারী অধিকার কি এভাবেই ইচলামে স্বীকৃত?
আরেকটি প্রশ্ন, মুহাম্মদের আদর্শ যদি সর্বোত্তম আদর্শ তবে তিনি এতগুলো বিয়ে করলেন কেন? অনেকে নবীজিকে বাচানোর জন্য আজগুবী যুক্তি হাজির করেন- মেয়েগুলো নাকি অসহায় ছিল!! আচ্ছা বাবা, মেয়েগুলো অসহায় হলে তো মুহাম্মদ তার সাহাবীদের কাছে তাদের বিয়ে দিলে পারতেন ।যখন মুহাম্মদ হবেন সবার জন্য আদর্শ তখন তাকে তো এ কাজটা ইন্দ্রিয় ভোগ-বিলাসী বলে প্রমাণ করে দিল না?(আর কিছু বললাম না)।
দেখেন-
http://en.wikipedia.org/wiki/Muhammad%27s_wives
আমরা জানি, মুহাম্মদ এর একটি পালক পূত্র ছিল যার নাম জায়েদ। তাকে ডাকা হত জায়েদ বিন মুহাম্মদ। তখনকার যুগে পালক পূত্রকে নিজ পূত্রের মর্যাদা দেয়া হত। সমস্যার বিষয় হল, জায়েদ বিয়ে করেছিলেন জয়নব নামক এক রুপসীকে। তিনি বুদ্ধি করিয়া তাহাদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটানোর ব্যবস্থা করেন। পরে মুহাম্মদ জয়নবকে বিয়ে করলে ছি ছি রব পড়িয়া যায়। নিজেকে রক্ষা করার জন্য এবার মহা-উন্মাদ আয়াত নাজিল করাইলেন-
“অতঃপর জায়েদ যখন জয়নবের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল, তখন আমি তাকে আপনার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করলাম যাতে মুমিনদের পুষ্যপুত্ররা তাদের স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলে সেসব স্ত্রীকে বিবাহ করার ব্যাপারে মুমিনদের কোন অসুবিধা না থাকে। আল্লাহর নির্দেশ কার্যে পরিণত হয়েই থাকে”। (সূরা আহযাব, ৩৩:৩৭)
এ আয়াত থেকে জানতে পারলাম, মুমিন-মুসলমানরা তদের পালক পুত্রের স্ত্রী বিয়ে করতে পারছে না তা আল্লার নিকট অনেক বড় সমস্যা!!
আরেকটা বিষয় বুঝলাম না। কোরান ও হাদিস অনুসারে জয়নব নিজেই মুহাম্মদকে বিয়ে করার জন্য উত্তাল হয়ে উঠলে জায়েদ তাকে তালাক দিয়ে দেন। জয়নব যদি ঠিকই মুহাম্মদকে বিয়ে করার জন্য উতাল হইয়া উঠিলেন তবে মুহাম্মদ কেন জয়নবকে স্বামীর প্রতি সৎ থাকার নির্দেশ দিলেন না বা দোজখের ভয় দেখালেন না বা বা এরকম অনাচার বন্ধ করার জন্য আয়াত নাজিল করাইলেন না বরং জয়নবকে বিয়ে করে নিজেকে বাচানোর জন্য মহান একটা আয়াত নাজিল করাইলেন?? বলাবাহুল্য, এই সময় মুহাম্মদের একাধিক স্ত্রী থাকলেও জায়েদের আর কোনো স্ত্রী ছিল না। ঘটনাটির রসাল বিবরণ পাবেন খোঁজলে।
মুহাম্মদের এ অপকর্মের ফলে মুসলমান সমাজে অসহায় শিশুদের দায়িত্ব্ব নেয়া বা লালন পালন করার মহৎ কর্মকে বিশেষভাবে নিরুৎসাহিত করা হল। কারণ মুসলমান সমাজে একজন মহিলা তার পালক পুত্রের সাথে পর্দা রক্ষা করিতে হইবে সে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর আর একজন পুরুষও তার পালিত মেয়ের কাছে পর্দা রক্ষা করিতে হইবে সে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর- কারণ পালক পুত্র ও মাতা এবং পালিত কন্যা ও পিতার মধ্যে বিয়ে মুহাম্মদের ঐ কর্মের দ্বারা বৈধ হয়ে গেল। সূতরাং মুসলিম সমাজে পালক পুত্র বা কন্যার সাথে স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখা খুবই কষ্টকর একটা ব্যাপার।
আরেকটি আয়াত দেখলে আমাদের এক প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির কথা স্মরণ হয়-
“হে নবী! আপনার জন্য আপনার স্ত্রীগণকে হালাল করেছি, যাদেরকে আপনি মোহরানা প্রদান করেন। আর দাসীদেরকে হালাল করেছি, যাদেরকে আল্লাহ্ আপনার করায়ত্ব করে দেন এবং বিবাহের জন্য বৈধ করেছি আপনার চাচাতো ভগ্নি, ফুফাতো ভগ্নি, মামাতো ভগ্নি, খালাতো ভগ্নিকে যারা আপনার সাথে হিজরত করেছে। কোন মুমিন নারী যদি নিজেকে নবীর কাছে সমর্পন করে,নবী তাকে বিবাহ করতে চাইলে সেও হালাল। এটা বিশেষ করে আপনারই জন্য-অন্য মুমিনদের জন্য নয়। আপনার অসুবিধা দূরীকরণের উদ্দেশ্যে। মুমিনগণের স্ত্রী ও দাসীদের ব্যাপারে যা নির্ধারিত করেছি আমার জানা আছে। আল্লাহ্ ক্ষমাশীল,দয়ালু”।(৩৩:৫০)
– হাঃ হাঃ আল্লাহ্ ক্ষমাশীল,দয়ালু!!
@সৈকত চৌধুরী,
আচ্ছা তাহলে তো উনি কামেই মহা ব্যাস্ত থাকতেন। অহি নাজেলের কাজ মানে আল্লা হ’র কাজ করার সময় কখন পাইতেন? হাদিস পয়দার কথা নাহয় বাদই দিলাম।
@কাজী রহমান,
নবীজি অহী পেতেন একমাত্র তখন, যখন উনি শিশু আয়েশার বিছানায় তাকে জড়িয়ে শুয়ে থাক`তেন। অন্য কোন বিবির সাথে উনি যখন ঘুমাতেন অথবা সহবাস করতেন তখন আল্লাহ পাক নবীজিকে কোন অহী পাঠাতেন না। এ ব্যাপারে হাদিস দেখতে পারেন—হাতে হাদিসের বই নাই, তাই হাদিস নম্বর দিতে পারলাম না।
@আবুল কাশেম,
এই নিন, কিছু তথ্য-
Volume 5, Book 57, Number 119: Narrated Hisham’s father:
The people used to send presents to the Prophet on the day of ‘Aisha’s turn. ‘Aisha said, “My companions (i.e. the other wives of the Prophet) gathered in the house of Um Salama and said, “0 Um Salama! By Allah, the people choose to send presents on the day of ‘Aisha’s turn and we too, love the good (i.e. presents etc.) as ‘Aisha does. You should tell Allah’s Apostle to tell the people to send their presents to him wherever he may be, or wherever his turn may be.” Um Salama said that to the Prophet and he turned away from her, and when the Prophet returned to her (i.e. Um Salama), she repeated the same, and the Prophet again turned away, and when she told him the same for the third time, the Prophet said, “O Um Salama! Don’t trouble me by harming ‘Aisha, for by Allah, the Divine Inspiration never came to me while I was under the blanket of any woman amongst you except her.”
Aisha did not see Gabriel while Muhammad introduced Gabriel to her…4.54.440
Volume 4, Book 54, Number 440: Narrated Abu Salama:
‘Aisha said that the Prophet said to her “O ‘Aisha’ This is Gabriel and he sends his (greetings) salutations to you.” ‘Aisha said, “Salutations (Greetings) to him, and Allah’s Mercy and Blessings be on him,” and addressing the Prophet she said, “You see what I don’t see.”
@আকাশ মালিক,
তাহলে নবীজি বিবি আয়শার সাথে যখন পবিত্র কামে (দুষ্ট লোকে বলে আকামে) ব্যাস্ত থাকতেন তখনও আল্লা হ পবিত্র অহি পাঠাইতেন। মনে হয় তা কম্বলের উপরে অবস্থান করত, পবিত্রতা বজায় থাকার জন্য। বিবি আয়েশার কি চোখ খারাপ ছিল, গিব্রিয়াল ফ্রেস্থাকে দেখল না কেন?
@কাজী রহমান,
নীচে কাশেম ভাই বলে দিয়েছেন। আমি কিছু যোগ করি- ৮/৯ বছরের শিশুরা মিথ্যা কথা বলেনা। এই অল্প বয়সের একটি শিশুর সাথে অনবরত মুহাম্মদ ধোঁকা প্রতারণা করতেন তার নবুওতির পক্ষে সাক্ষী রেখে যাওয়ার জন্যে। মুহাম্মদের কঠোর চেহারার সামনেও আয়েশা অত্যন্ত সাহসী সত্যবাদীর পরিচয় দিয়েছেন। আয়েশা মুহাম্মদ সম্পর্কে অনেক সত্যকথা বলেছেন আর এর জন্যে তাকে মারধোরও করা হয়েছে। ইসলামের অন্যান্য খারাপ দিকগুলো যেমন বলপূর্বক শতশত বছর যাবত গোপন রাখা হয়েছে, আয়েশার অনেক কথাও মানুষকে জানতে দেয়া হয় নাই। আয়েশার মনের সন্দেহ এতই তীব্র হয়েছিল যে, একদিন সরাসরি মুহাম্মদকে বলেছিলেন- ‘আপনি সত্যিই কি নবি’?
@আকাশ মালিক,
বিবি আয়েশার এই কথা অতীব মূল্যবান।
বিবি আয়েশা প্রমাণ দিয়ে গেলেন নবীজি কেমন ধাপ্পাবাজ ও মিথ্যাবাদী ছিলেন। আমার মনে হ্য় এই ‘অহী’ মিথ্যার সাথে দুনিয়ার আর কোন মিথ্যার তুলনা হয় না। এমন`কি গোয়েবলসীয় মিথ্যার`ও না।
যেই ইসলাম মিথ্যার এমন মিথ্যার উপর দাঁড়িয়ে আছে–তার ভিত্তি খুবই নড়বড়ে।
@আবুল কাশেম,
এরকম একটা নড়বড়ে ভিত্তির উপর এতকাল ধরে, এত মানুষের বিশ্বাস কিভাবে দাঁড়িয়ে থাকে- এটা কিন্তু গবেষণার ব্যাপার।
দেখবেন আলোচনার এক পর্যায়ে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে মুমিনরা খুব গর্বিত ভঙ্গিতেই উলটা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়- ইসলাম মিথ্যা হলে এত মানুষ এত দিন ধরে এটা বুঝতে পারছে না কেন?
@শ্রাবণ আকাশ,
ততদিন এখনও হয়নি, যতদিন লেগেছিল মানুষকে বুঝতে পৃথিবী যে গোল।
@আকাশ মালিক, (Y)
অবশ্য উত্তর আরো কিছু পেয়েছি। টিকে থাকাই যদি ভালোর লক্ষণ হয় তাহলে বলতে হয় অশিক্ষা, কুশিক্ষাসহ সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকে টিকে থাকা আবর্জনাগুলোকেও “ভালো” বলতে হয়! :-Y
@সৈকত চৌধুরী,
৬ বা ৯ বৎসরের আয়েশাকে বিবাহ করার জন্যে মুহম্মদ তো উন্মুখ ছিলেন না। তাকে বিবাহ করার জন্যে উম্মে রুমান ও আবু বকরই মুহম্মদকে পীড়াপীড়ি করেছিলেন।
আয়েশা: আবু বকরের সাধ ছিল তিনি আল্লাহর রসূলের সাথে রক্তের সম্পর্ক স্থাপন করেন। তাই তিনি বিবাহের বয়স না হলেও তার কন্যা আয়েশাকে পত্নীরূপে গ্রহণ করতে মুহম্মদকে অনুরোধ করেন। মুহম্মদ আবু বকরের এ বাসনা পূর্ণ করেন। এসময় আয়েশার বয়স ছিল ৯ বৎসর।
বিবাহের তিন বৎসর পর আয়েশা স্বামীর ঘর করতে আসেন। মুহম্মদ এ সময় মদিনাতে হিজরত করেছিলেন। বিবাহের বাসর মদিনাতে উৎযাপিত হয়। বয়োবৃদ্ধ বিবি সওদা ঐ সময় নিজের দাম্পত্যাধিকার আয়েশাকে দান করেছিলেন।
জয়নব: হিজরী ৫ম সনের শেষভাগে মুহম্মদ জয়নব বিনতে জহসকে বিবাহ করেন। মুহম্মদ তার এই ফুফাত বোন জয়নবের সাথে মুক্তদাস জায়েদের বিবাহ দিয়েছিলেন। তিনি যখন জায়েদের সঙ্গে জয়নবের এই বিবাহের প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন তখন জয়নব ও তার ভ্রাতা আব্দুল্লাহ ইবনে জহস এই সম্বন্ধ স্থাপনে ‘আমরা বংশ-মর্যাদায় তার চাইতে শ্রেষ্ঠ ও উন্নত।’ -এই বলে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেছিলেন। তখন মুহম্মদ তাদেরকে বিবাহে রাজী হতে নির্দেশ দিলেন। কিন্তু তারা এই নির্দেশও উপেক্ষা করলেন।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই আয়াত নাযিল হল-আল্লাহ ও তাঁর রসূল কোন কাজের আদেশ করলে কোন ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীর সে বিষয়ে ভিন্ন ক্ষমতা নেই যে, আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আদেশ অমান্য করে-সে প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় পতিত হয়।(৩৩:৩৬) জয়নব ও তার ভ্রাতা এ আয়াত শুনে তাদের অসম্মতি প্রত্যাহার করে নিয়ে বিবাহে রাজী হয়েছিলেন।
বিবাহ হলেও অত্যন্ত সুন্দরী, সম্ভ্রান্ত ও সম্পদশালী পরিবারে জন্মগ্রহণ করা জয়নব মুক্ত ক্রীতদাস স্বামী জায়েদকে মনেপ্রাণে মেনে নিতে পারেননি। তাছাড়া মুহম্মদের সহধর্মিনী হবার সাধ তার পূর্ব হতেই ছিল। তিনি প্রায়শঃ জ্ঞাত বা অজ্ঞাতসারে জয়েদকে তুচ্ছ প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে বলতেন যে, এমনকি হযরতও তার সৌন্দর্যের প্রশংসা করেছেন। (মুহম্মদ জায়েদের বাড়ীতে কোন একবার জয়নবের অনাবৃত মুখ দর্শণ করে স্বাভাবিক প্রশংসায় বলেছিলেন, ‘হৃদয়ের অধিপতি আল্লাহর জন্যে সর্ববিধ প্রশংসা।’) তিনি এটা করতেন এমনভাবে, যা শুধুমাত্র নারীরাই জানে কিভাবে তা করতে হয় এবং স্বাভাবিকভাবে তা জায়েদের মনঃস্তাপ বৃদ্ধি করেছিল এবং এই বিতৃষ্ণা একসময় তাকে কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্ররোচিত করল।
জায়েদ তাকে পরিত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলেন এবং মুহম্মদের কাছে তা প্রকাশ করলেন। এতে মুহম্মদ তাকে বললেন, ‘তোমার স্ত্রীকে তোমার কাছে থাকতে দাও এবং আল্লাহকে ভয় কর।’
জায়েদ জয়নবের বিরুদ্ধে ভাষাগত শ্রেষ্ঠত্ব, গোত্রগত কৌলিন্যাভিমান এবং আনুগত্য ও শৈথিল্য প্রদর্শণের অভিযোগ উত্থাপন করলেন এবং মুহম্মদের নিষেধ সত্ত্বেও তিনি তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলেন না। মুহম্মদ এতে দুঃখিত হয়েছিলেন কারণ তিনিই এই বিবাহ-বন্ধনের আয়োজন করেছিলেন।
এদিকে তালাক সংগ্রহের পর জয়নব মুহম্মদকে তাকে বিবাহ করার জন্যে সানুনয় অনুরোধ চালিয়ে যেতে থাকলেন। তখন তাকে বিবাহ করার বাসনা মনে জাগলেও মুহম্মদ দ্বিধা-দ্বন্ধে ছিলেন লোকনিন্দার ভয়ে, এই ভেবে- এ বিয়ে বৈধ না অবৈধ হবে। অতঃপর নিম্নোক্ত আয়াত নাযিল হবার পর তিনি জয়নবকে বিবাহ করেন।
আল্লাহ যাকে অনুগ্রহ করেছেন; তুমিও যাকে অনুগ্রহ করেছ; তাকে যখন তুমি বলেছিলে, ‘তোমার স্ত্রীকে তোমার কাছে থাকতে দাও এবং আল্লাহকে ভয় কর।’
তুমি অন্তরে এমন বিষয় গোপন করছিলে, যা আল্লাহ প্রকাশ করে দেবেন। তুমি লোকনিন্দার ভয় করছিলে, অথচ আল্লাহকে ভয় করা উচিৎ।(৩৩:৩৭)
‘তুমি যে স্ত্রীকে মায়ের মত বলে বর্জন কর আল্লাহ তাকে সত্যিই তোমার মা করেননি, অথবা যাকে তুমি আপন পুত্র বলে ঘোষণা কর, তাকে তোমার প্রকৃত পুত্র করেননি, এ সমস্ত তোমার মুখের কথা মাত্র। আল্লাহ ন্যায় কথা বলেন এবং পথ প্রদর্শণ করেন। পালিত পুত্ররা তাদের আপন পিতার নামে পরিচিত হোক এ-ই আল্লাহর কাছে অধিকতর ন্যায়সঙ্গত। যদি তোমরা তাদের পিতৃ পরিচয় না জান তবে তারা তোমাদের ধর্মীয় ভাই ও বন্ধুরূপে গণ্য হবে। এ ব্যাপারে তোদের কোন বিচ্যূতি হলে গোনাহ নেই তবে ইচ্ছেকৃত হলে ভিন্ন কথা। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।’(৩৩:৪-৫)
তোমার পালনকর্তার পক্ষ থেকে যা অবতীর্ণ হয়, তুমি তার অনুসরণ কর। নিশ্চয় তোমরা যা কর, আল্লাহ সে বিষয়ে খবর রাখেন।(৩৩:২) আল্লাহ নবীর জন্যে যা নির্ধারণ করেন তাতে তার কোন বাঁধা নেই। পূর্ববর্তী নবীদের ক্ষেত্রে এটাই ছিল আল্লাহর চিরাচরিত বিধান। আল্লাহর আদেশ নির্ধারিত, অবধারিত।(৩৩:৩৮)
এই বিবাহের পরও জায়েদ এবং মুহম্মদের মধ্যে শুরু-শিষ্য সম্পর্কের সামান্যতম অবনতি ঘটেনি। কেন?
এখন আপনারা এতটা বুঝছেন, তবে কি জায়েদের মাথায় কোন ঘিলু ছিল না।?
@আবুল কাশেম,
আইয়ামে জাহেলিয়ায় নবী মোহাম্মদের জন্ম।তিনি তৎকালীন সমাজের বর্বরতার অবসান ঘটিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন ,তাই ইসলামের আবির্ভাব।কিন্তু জাহেলিয়া যুগের চেয়ে ইসলাম কোন অংশে কম বর্বর তা বুঝতে পারছিনা।
@তামান্না ঝুমু,
আসলে এই জাহেলিয়াত নিয়ে প্রশ্ন তোলা সম্ভব। তখন যদি জাহেলিয়াত চলছিল তবে কবিতা প্রতিযোগিতা চলত কিভাবে? আরবের শেক্সপিওর খ্যাত ইমরুল কায়েসের জন্ম ঐ সময়। তখনকার সময় নারীরা ইচ্ছেমত বিয়ে করা, ব্যবসা করা(উদাহরণ- খাদিজা) চালিয়ে যেতে পারত। আর মেয়ে শিশু জন্মের পর হত্যার কথা মানা সম্ভব না, কারণ মেয়ে শিশু জন্ম নিলেই যদি হত্যা করা হত তবে মানুষের বিলুপ্তি ঘটে যেত।
@সৈকত চৌধুরী এবং আবুল কাশেম,
ইসলাম আখ্যায়িত অন্ধকার যুগেই বোধ হয় নারীরা,বর্তমান যুগের মুসলিম নারীদের চেয়ে বেশি স্বাধীন ছিল।কারন তখনকার নারীরা ব্যবসা বানিজ্য করত,বাইরে যাতায়াত করত।তাদের স্বাধীনতা হরনের জন্য খুবই সুচতুর ভাবে ঐশীবাণীর মাধমে তাদেরকে চিরস্থায়ী কারাবন্দী করা হলো।তাদের হাতে পায়ে শেকল পরাতে মহান আল্লাতালা সাত আসমানের উপর থেকে শান্তি শৃংখলার মহান বাণী বর্ষন করলেন,
“নিজেদের গৃহকোণে থাক এবং পূর্বেকার অন্ধকার যুগের নারীদের ন্যায় সাজ-সজ্জা করে বেড়াইওনা—।”৩৩ঃ৩৩
চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত আইন প্রতিষ্ঠিত করেছেন আল্লা ও রাসুল দুজনে মিলে,নারীকে আমরণ অসূর্যস্পর্শা,কুনোব্যাঙ বানিয়ে রাখার জন্য। কিন্তু শুধু নারীকে কেন গৃহবন্দী করা হলো, পুরুষকে কেন নয়?
@তামান্না ঝুমু,
এই প্রশ্নের উত্তর পাবেন সামনের পর্ব গুলিতে। একটু ধৈর্য্য ধরতে হবে।
@তামান্না ঝুমু,
আপনি কষ্ট করে লেখাটি পড়েছেন সেজন্যে প্রচুর ধন্যবাদ।
ইবনে ইশাকের ‘সিরাহ’, ইবনে সা’দের ‘তাবাকাত আল-কাবির’ ও তাবারির ইতিহাস পড়ে জেনে নিন–আইয়ামে জাহিল্যতে আরবের নারীদের অবস্থা কেমন ছিল। বলতে হয় তখন আরব নারীদের স্বাধীনতা অনেক`টা পশ্চিমা নারীদের মতই ছিল। সেই জন্য ইসলাম তাদের গৃহবন্দি করে দিল। ইসলামী বিধান অনুযায়ী আজকের দিনে পশ্চিমা নারীরা আইয়ামে জাহেলিতে বাস করে—তাই না?
আপনার মতো আমিও ইসলামিস্টদের ঐ ধরণের প্রবল মিথ্যা প্রচারে বিস্বাস করতাম। পরে ঐ সব বইগুলো পড়ার পর চক্ষু, কান, নাক, সব খুলে গেল। তাই তো এই প্রবন্ধ লিখেছি।
ঠিক মনে করতে পারছি না। সম্ভবত বিশ্বভারতীর এক উপাচার্য বলেছিলেন ( প্রায় এরকম) — কোন অপূর্ব রমণী যদি মধ্যরাতে সালংকরা হয়ে নির্ভয়ে রাজপথ দিয়ে একাকী হেঁটে যেতে পারে তবে সে সমাজ সভ্য। কাজেই সভ্য সমাজ খুঁজে পেতে …………….
যাহোক, লেখাটি বইমেলার আমেজে যেন হারিয়ে না যায়। লেখা অব্যাহত থাকুক। আমি অপেক্ষায় থাকব।
@গীতা দাস,
খুব ভাল লাগল আপনার মন্তব্য পড়ে। আপনি আমাদের দেশের নারীদের করুণ অবস্থা নিয়ে প্রায়ই লিখেন। তাই আপনি অবশ্যই আমার লেখার মর্ম বুঝবেন।
সময়ের জন্যে সবার উত্তর দিতে পারছিনা। তবে সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
আর, হাঁ, বেল্লেলেপনা পশ্চিমা দেশে এসেই জানলাম যে নারীদের স্বাধীন ভাবে বেঁচে থাকার অধিকার আছে। সিডনিতে দেখবেন রাত্রে ২ -৩ সময় ও নারীরা পদচারণা করছে, জগিং করছে, ডগ ওয়াকিং করছে–একা একাই। এরা কি সভ্য না অসভ্য। ইসলামী বিধান অনূযায়ী এরা যে একেবারেই অসভ্য, কাফের, এবং নরকের বাসিন্দা।
চমৎকার হয়েছে কাশেম ভাই। চলতে থাকুক, পরে বিস্তারিত আলোচনায় আসা যাবে।
ফেরাউনের স্ত্রী আয়েশাকে খুব নির্মমভাবে খুন করা হয়েছিল। আয়েশা ও মরিয়মের কথা কোরানের সুরা আত-তাহরিমে উল্লেখ আছে-
وَضَرَبَ اللَّهُ مَثَلًا لِّلَّذِينَ آمَنُوا اِمْرَأَةَ فِرْعَوْنَ إِذْ قَالَتْ رَبِّ ابْنِ لِي عِندَكَ بَيْتًا فِي
الْجَنَّةِ وَنَجِّنِي مِن فِرْعَوْنَ وَعَمَلِهِ وَنَجِّنِي مِنَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ
আল্লাহ মুমিনদের জন্যে ফেরাউন-পত্নীর দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন। সে বললঃ হে আমার পালনকর্তা! আপনার সন্নিকটে জান্নাতে আমার জন্যে একটি গৃহ নির্মাণ করুন, আমাকে ফেরাউন ও তার দুস্কর্ম থেকে উদ্ধার করুন এবং আমাকে যালেম সম্প্রদায় থেকে মুক্তি দিন। (সুরা ৬৬,আয়াত ১১)
وَمَرْيَمَ ابْنَتَ عِمْرَانَ الَّتِي أَحْصَنَتْ فَرْجَهَا فَنَفَخْنَا فِيهِ مِن رُّوحِنَا وَصَدَّقَتْ بِكَلِمَاتِ رَبِّهَا وَكُتُبِهِ وَكَانَتْ مِنَالْقَانِتِينَ
আর দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন এমরান-তনয়া মরিয়মের, যে তার সতীত্ব বজায় রেখেছিল। অতঃপর আমি তার মধ্যে আমার পক্ষ থেকে জীবন ফুঁকে দিয়েছিলাম এবং সে তার পালনকর্তার বানী ও কিতাবকে সত্যে পরিণত করেছিল। সে ছিল বিনয় প্রকাশকারীনীদের একজন। (সুরা ৬৬,আয়াত ১২)
আমাদের মত যারা অনুবাদকদের মনজ্বালা বুঝতে পেরেছে তারাই তো মরেছে, কাফির হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নাই। এখানে দেখুন ‘রিজালু’ শব্দের দুর্গতি।
৬নং সুরা আনামের ৯নং আয়াত ‘কোরান শরিফ’ এ দেখুন, বাংলা ও ইংরেজি অনুবাদ দুইভাবে লেখা হয়েছে।
وَلَوْ جَعَلْنَاهُ مَلَكًا لَّجَعَلْنَاهُ
رَجُلاً
وَلَلَبَسْنَا عَلَيْهِم مَّا يَلْبِسُونَ
যদি আমি কোন ফেরেশতাকে রসুল করে পাঠাতাম, তবে সে মানুষের আকারেই হত।
And had We appointed him an angel, We indeed would have made him a man–
এবার এখানে দেখুন-
لرِّجَالُ
قَوَّامُونَ عَلَى النِّسَاء
(সুরা নিসা ৪, আয়াত ৩৪)
পুরুষেরা নারীদের উপর কর্তৃত্বশীল-
সামান্য কিছু বানান টাইপো আছে, আর কিছু বাক্যের পর স্পেইস দেয়া হয় নাই। আমি একবার সময় করে আপনাকে ই-মেইল করবো।
@আকাশ মালিক,
ভাই আকাশ মালিক
প্রচুর ধন্যবাদ লেখা পড়ার জন্যে, এবং সেই সাথে এত সঠিক তথ্য জানাবার জন্যে।
আচ্ছা, ফেরাউনের স্ত্রঈর নাম কি আসিয়া না আয়েশা? হাঁ, তাকে নির্মম ভাবে খুন করা হয়েছিল—কোরানের মতে। তবে ফেরাউনের অনেক বউ ছিল। কোরান কিন্তু এ ব্যাপারে একেবারে চুপ—্লিখা হয়েছে শুধু আয়েশা (বা আসিয়া)র কথা। ইতিহাস কিন্তু কোরানের এই সুরার কোন সত্যতা সমর্থন করে না।
@আবুল কাশেম,
স্যরি, আয়েশা নয়, আছিয়া Assiyya হবে।
(Pharaoh) said: “Believe ye in Him before I give you permission? Surely this must be your leader, who has taught you magic! be sure I will cut off your hands and feet on opposite sides, and I will have you crucified on trunks of palm-trees: so shall ye know for certain, which of us can give the more severe and the more lasting punishment!”
(Al Quran Surah 20: Ayat 71)
@আকাশ মালিক,
অনেক দিন ধরেই মুক্তমনায় আপনার কোন লেখা পাচ্ছিনা,শুধু মন্তব্য পড়ছি মাঝে মাঝে।আপনার ক্ষুরধার লেখা হতে আমরা বঞ্চিত হয়ে আছি অনেক দিন।আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি আমাদের জন্যে লিখবেন।
বইমেলার ভিড়ে ভিন্নস্বাদের লেখা। ভালো লাগলো বেশ।
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
@অনন্ত বিজয় দাশ,
ঠিক বলেছেন। আমাদের লেখা কোন`দিন বইমেলায় ঠাঁই পাবেনা–তা আমি সম্পূর্ণ নিশ্চিত। তাই ্মুক্তমনা ছাড়া আমাদের গতি নাই।
আপনাকে ্ধন্যবাদ, কষ্ট করে লেখাটা পড়েছেন।
@আবুল কাশেম,
অচলায়তনের ধীর লয়ে পরিবর্তন ঘটছে কাশেম ভাই। আমরা সেটা ভালোভাবেই উপলব্ধি করতে পারছি। মুক্তমনার পুরানো লেখকদের মধ্যে অভিজিৎ দা বা আলমগীর ভাইয়ের যে বইগুলো প্রকাশিত হল এবার, দশককাল আগেও এমন বই প্রকাশ করা সম্ভব, তা ভাবা যেত না।
ইরানি লেখক আলি দস্তি’র (Ali Dashti) সেই বিখ্যাত বই ‘Bisl O Seh Sal’ (Twenty Three Years: A Study of the Prophetic Career of Mohammad ) সম্পর্কে আপনার মত কি? বইটির কি বঙ্গানুবাদ করা যায়?
@অনন্ত বিজয় দাশ,
এই বইটি বিশ্বের সমস্ত মুসল`মানদের চক্ষু, কান, নাক, মাথা খুলে দিতে পারে।
হাঁ, এই বইটি অবশ্যয় বাংলায় অনুবাদ করা দরকার। প্রয়োজন পড়লে আমি সাহায্য দিতে পারি।
হাঁ, আমি জানি আলগীর, আসগার ভাইয়ের, ও আরো কয়েকজনের বাংলা রচনা সংকলিত করে একটা বই প্রকাশ হয়েছে—খুব সম্ভবতঃ ব-দ্বীপ প্রকাশনা থেকে। এ ছাড়াও এম. এ. খানের ‘ইস`লামী জিহাদ’ বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছে ….এবং বাজারে বোধ করি এখন বিক্রি হচ্ছে।
কিন্তু দুঃখের বিষয় এই সব কোন বই`ই বইমেলায় স্থান পায়নি।
@আবুল কাশেম,
বইমেলায় স্টল পাবার জন্য একটা নীতিমালা আছে জানি। (সরকার সংশ্লিষ্টদের জন্য অবশ্য এই নীতিমালা কতখানি কার্যকর তা নিয়ে আমারও সন্দেহ আছে)। যেসব প্রকাশনী প্রতি বছর ১৫-২০টি’র উপর নতুন বই প্রকাশ করে তাদেরকে স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়। আর টেক্সটবুক, নোটবইওয়ালাদেরও স্টল বরাদ্দ দেবার নিয়ম নেই বলে আমার জানা। এজন্য বাংলাবাজারের অনেক প্রকাশনী বাদ পড়ে যায়।
অনেক ধন্যবাদ।
@অনন্ত বিজয় দাশ,
এই সংবাদের জন্য ধন্যবাদ।
আমি যতটুকু জেনেছি—ব-দ্বীপ প্রকাশনী স্টল চেয়ে দরখাস্ত করেছিল। কিন্তু তাদের দরখাস্ত বাতিল করা হয়েছে। হয়ত আপনি যে নীতিমালা জানিয়েছেন তার ভিত্তিতেই।
@অনন্ত বিজয় দাশ,
অভিজিৎ দা’র ‘সমকামিতা’ আর এবার ‘অবিশ্বাসের দর্শন’ প্রকাশ হওয়ার পর মনে হল, সুদীর্ঘ গহীন অন্ধকার সুড়ঙ্গের প্রান্থে আমি যেন আলোর ক্ষীণ আভা দেখতে পাচ্ছি। যদিও পুরোপুরি সন্দেহমুক্ত হতে পারছিনা, কারণ তসলিমারা এখনও ঘরে ফিরতে পারেন নি। নিঃসন্দেহে বইদুটো আমাদের চলার পথ অনেকটা নিরাপদ ও সহজ করে দিয়েছে।
আলমগীর ভাইয়ের বই কোনটা, কী ভাবে কোথায় পাওয়া যাবে?
@আকাশ মালিক,
আমি যতটুকু জানি এই সব বই প্রকাশ হচ্ছে ব-দ্বীপ প্রকাশনা থেকে।
1. আস্তিকতা-নাস্তিকতার দ্বন্দ্ব — আলমগীর হুসেন
2. জিহাদঃ জবরদস্তিমূলক ধর্মান্তরকরণ, সাম্রাজ্যবাদ ও দাসত্বের উত্তরাধিকার — এম, এ, খান
3. ইসলামে নারীর অবস্থান (copilation of Alamgir, Mohammad Asghar & Chanchal)
4. ইসলাম বিতর্ক (copilation of M. A. Khan, Mumin Salih & Ayesha Ahmed et al.)
ব-দ্বীপ প্রকাশনা একুশে বই মেলায় স্থান পায় নি। এব্যাপারে গুগুল করেন। এক`টা ওয়েব সাইট–খুব সম্ভবতঃ বঙরাষ্ট্র নামে ব-দ্বীপ প্রকাশনা ব্যাপারে কিছু সংবাদ থাক`তে পারে। আমি ঠিক জানিনা। তবে ঐ চারটি বই এই প্রকাশনী প্রকাশ করেছে শুনেছি। বাকি সব আল্লাহ, পাক জানেন।
আল্লাহ্`র নাম নিয়ে খোঁজ নিতে থাকেন—পেয়ে যেতে পারেন। নবীজি তাই বলেছেন—–হারানো উটের সন্ধান এই ভাবেই করতে হয়। তাই বইয়ের ব্যাপারে—-এই পদ্ধতি চলতে পারে।
@আকাশ মালিক,
ঠিকই বলেছেন মালিক ভাই। বিশেষ করে অবিশ্বাসের দর্শন বইটি এক কথায় অসাধারণ।
ভাই আবুল কাশেম,
তথ্য নিরভর এবং চমৎকার লেখার জন্য আপনাকে (F) . শুভেচ্ছা।
এ ধরনের আরো লেখা চাই, যাতে করে আমাদের নারীদেরকে এধরনের লেখা উপহার দিতে পাড়ী । ভালো থাকবেন
@এমরান,
@এমরান,
দুঃখিত, ভুল বোতাম তিপে দিলাম–তাই শুন্য পাতা থাক`ল।
অনেক ধন্যবাদ, কষ্ট করে প্রবন্ধটা পড়েছেন। আপনিও কলম ধরু্ন–মজার মজার বিষয় জানবেন ইসলাম সম্বন্ধে।
@আবুল কাশেম অথবা XXXX
সহিহ্ মুসলিম, বই ৩১ হাদিস ৫৯৬৬:
আবু মূসার বর্ণনা মতে নবী (দঃ) বলেছেন: “পুরুষদের মধ্যে অনেকেই ত্রুটিমুক্ত কিন্তু নারীদের মধ্যে কেউ-ই ত্রুটিমুক্ত নয়, কেবল ইমরানের কন্যা মেরী এবং ফারাওয়ের স্ত্রী আয়েশা ছাড়া”।
এবং
সুরা বাকারা, আয়াত ২২৩ (২:২২৩):
তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শষ্যক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার কর।
১@ মন্তব্য করতে গেলে, বলতে হয়, যিনি এই কথা বলেছিলেন তিনি কি ডাক্তার ছিলেন এবং সারা পৃথিবীর পুরুষদের এবং মহিলাদের চেক আপ করেছিলেন?
২@এটা এই রকম হতে পারে, কোন এক বড় লুইচ্চ্যা তার সহযোগী লুইচ্চ্যাদের ঐ ভাবে উপদেশ দিয়েছিল। আমার মনে হয় এক দেড় হাজার বছর আগেও মানুষেরা এটা করতে পারেনি, মহা লুইচ্চ্যা না হলে।
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ।
নেটে দীর্ঘ কয়েকবছর বিচরণ করলেও মুক্তমনা সাইটটির খোঁজ আমি অনেক দেরিতে পেলাম। সাইটটি সাহসী ও অতি প্রয়োজনীয় উপাদানে ভরপুর। এই সাইট পরিচালনাকারী সকলকে আমার ধন্যবাদ জানাচ্ছি।