অহল্যা দ্রৌপদী কুন্তি তারা মন্দাদরী
পঞ্চকন্যা স্মরে নিত্যং
মহাপাতক নাশনমঃ।
ছোটবেলায় এ লাইন কয়টি মুখস্ত করানো হয়েছিল সকালে পৌরাণিক সাহিত্যের এ পাঁচ চরিত্রের নাম নিয়ে পাপ তাপ বিনাশ করার জন্য।
কিছু চরিত্রের নাম নিলেও যে মহাপাপ স্খলন হয় তা আমাকে যে বয়োজ্যেষ্ঠরা শিখিয়েছেন তাদের কাছে উপরোক্ত চরিত্রগুলো দেবী, তবে তাদের নামে কোন লৌকিক পূজারও প্রচলন নেই। ধর্ম নিয়ে এত বিশ্লেষণী প্রয়োগ তাদের ছিল না। তারা উপরোক্ত চরিত্রদের শ্রদ্ধার সাথেই স্মরণ করতেন। পূণ্যজ্ঞান করেই আমাদের তা শিখিয়েছেন আর সংস্কৃত শ্লোক মানেই তারা ভগবানের আরাধনা বুঝতেন।
আমি তখনও কোন এক কবির মত মাতৃভাষা ছাড়া অন্য ভাষায় লেখা ধর্ম গ্রন্থের সুরা বা মন্ত্র সম্বন্ধে ‘যা বুঝি না তা নিয়ে আমি স্বর্গেও যাব না” বলার মত অভিজ্ঞতা অর্জন করিনি।
কয়েকটি মন্ত্র বা সংস্কৃত শ্লোক প্রাত্যহিক কাজকর্মের বিভিন্ন সময়ে আওড়ে পূণ্য অর্জন হয়েছে ভেবে বড়রা মানসিক শান্তিতে সুস্থির থাকত। আমরা ছোটরা বিশেষ করে আমি অং তং বলে ভাবতাম ভগবান আমার বাংলা ভাষা না বুঝলেও আমি ভগবানের ভাষার কিছু তো জানি। তার ভাষা বুঝি। তাছাড়া মনে মনে খটকাও লাগত না যে এসব নারীদের স্মরণ করলে পাপমোচন হবে কি হবে না।
বড়বেলায় বুঝি চরিত্রগুলোকে শ্রদ্ধা করব কি না তা নির্ভর করে কীভাবে তাদের চরিত্র বিশ্লেষণ করছি। তবে তাদের নাম স্মরণে পূণ্য যে হবে না তা অনেক আগেই নিশ্চিত হয়েছি। যেমনঃ দ্রোপদীর ছিল পাঁচ স্বামী। এক দৃষ্টিতে দ্রৌপদী বহুগামী,অন্য দৃষ্টিতে ক্ষমতাময়ী নারী, অহংকার করার মত তার অবস্থান। অতি আধুনিক নারীও এমন যৌন স্বাধীনতা ভোগ করতে পারে না। মাতৃসুত্রীয় সমাজের ধারক নারী এবং বিপ্লবাত্মক উদাহরণ। কাজেই একজন নারীকে কে কীভাবে দেখছে এর উপর নির্ভর করছে নারীর অবস্থান।
এখনকার সমাজও নিজের স্বার্থে নারীর চরিত্রকে চিত্রণ করে ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুইভাবেই। কখনও হনন করে, আবার কখনও তাকে দেবীর আসনে বসায়।
তবে এখন আমি এ পাঁচ নারীকে স্মরণ করি পাপমোচনের জন্য নয়, তাদের মত শক্তি ও সাহস সঞ্চয় করার জন্য, শক্ত হওয়ার জন্য,পুরুষতান্ত্রিক সমাজের পাপকে প্রতিরোধ করার জন্য, নারী হিসেবে নিজের অহংবোধকে ধারাল করার জন্য আর নারীগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এ যাবৎ সংঘটিত অন্যায় ও অপরাধের প্রতিশোধ স্পৃহা অন্যের মধ্যে জাগিয়ে তোলার জন্য। তবে এ প্রতিশোধ ব্যক্তি পুরুষের বিরুদ্ধে নয়, পুরুষতান্ত্রিক সমাজ কাঠামোকে ভেঙ্গে প্রতিশোধ নেওয়ার স্পৃহা।
আমি রামায়ণ বা মহাভারতের নামী দামী বা উপাস্য নারী চরিত নয়, সংবাদ পত্রের পাতায় খবরে পরিণত হওয়া বাংলাদেশের আনাচে কানাচের নারীদের কথা বলব। তাদের জীবন ও মরণের চিত্র আঁকব। তাদের শিকারে পরিণত হওয়ার গাঁথা লিখব — যাতে পাঠকরা নারীর অবস্থানকে সঠিকভাবে ও সম্মানের সাথে বিশ্লেষণ করতে পারে।
এমনি একটি ঘটনার কথা গত ১ জুলাই, ২০১০ তারিখে দৈনিক ‘প্রথম আলো’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক খবর থেকে জানা যায়—ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার কলেজ পড়ুয়া এক তরুণী গতকাল বুধবার কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবে অভিযোগ করেছেন, কুষ্টিয়ার উত্তর মির্জাপুর গ্রামের বাবলু জোয়ার্দার নামে প্রভাবশালী এক ব্যক্তি কয়েক মাস আগে তাকে অপহরণের পর ধর্ষন করে। পরে তাকে বিয়ে করে। কিন্তু ঘরে নিচ্ছে না। এ নিয়ে মামলা করায় তাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে।
অভিযোগ আছে, ঐ তরুণী শৈলকুপা থানায় মামলা করতে গেলে প্রথমে পুলিশ গড়িমসি করে। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্যের নির্দেশে গত ২৪ জুন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা নেয় শৈলকুপা থানা।
ছোট্ট এ খবরটি পত্রিকার পাতার এক কোণে ঠাঁই পেয়েছে। এতে অনেকের চোখও পড়বে না। চোখে পড়লেও হয়ত গুরুত্ব পাবে না। তবে আদালতে এ মামলা নিয়ে দিনের পর দিন চলবে বাদী বিবাদীর আনাগোনা ও টাকা-পয়সা খরচ।
নারীকে নিয়ে, নারীঘটিত এ ধরনের খবর পত্র-পত্রিকায় অহরহ প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়।
বাবলু জোয়ার্দার একজন অভিযুক্ত ব্যক্তি। মেয়েটি নিজেই জানে সে কার দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়েছিল। জেনে শুনে তবে বোধের সাথে না বুঝেই একজন ধর্ষককে বিয়ে করেছে। অথবা বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছে।
আমাদের দেশে এমন ডজন ডজন উদাহরণ আছে, ধর্ষক ধর্ষণের শিকার নারীটিকে বিয়ে করে ফেলে আইনের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে। ধর্ষক আইনের চোখে অপরাধী হলেও, নারীর উপলব্ধিতে ঘৃণিত হলেও, সমাজের কাছে লম্পট হলেও এ দেশের অগণিত নারীরা অপরাধীকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়।
এখানেও এর ব্যাতিক্রম হয়নি।ধর্ষক বাবলু জোয়ার্দার স্ব্বামী হয়। যার পায়ের নীচে আবার তরুণীটির বেহেস্তও লুকিয়ে আছে বলে ধারণা রয়েছে। সেই অপরাধী পরিস্থিতি সামাল দিতে ধর্ষণের শিকার নারীটিকে বিয়ে করে ফেলে। উভয়েই সাময়িকভাবে স্বস্তি পায়। কিন্তু ধর্ষক যে ঘর করার জন্য বিয়ে করেনি তা শীঘ্রই প্রকাশ পায়। তখন নারীটি ধর্ষণের শিকার নারী হিসেবে ধর্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করার পরিবর্তে তথাকথিত স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী হিসেবে মামলা করে। নারী নিজে,পরিবার,সমাজ,এমনকি রাষ্ট পর্যন্ত নারীটিকে ধর্ষণের শিকার নারী পরিচয় থেকে একজন স্ত্রী পরিচয়ে নারীকে দেখতে চায়, যদিও এ ক্ষেত্রে নারীটির স্ত্রী পরিচয় মামলাটিকে দুর্বল করে রাখে।
এটি আসলে ধর্ষণের শিকার এক নারীর তথাকথিত সামাজিক অনুশাসনের চাকার নীচে পিষ্ট হওয়া থেকে বাঁচতে ধর্ষককে স্বামীর মর্যাদা দেওয়া। পুরুষটির সামাজিক অবস্থান ধর্ষক হিসেবে নড়বড়ে না হয়ে স্বামী হিসেবে সম্মানের হয়; তবে এতে কিন্তু নারীটির ভোগান্তি কমে না।
গত তিনদিন বিভিন্ন কারণে internet এ বেশিক্ষণ বসতে পারিনি। এরই মধ্যে দেখি লংকাকান্ড ঘটে গেছে। আমি খুবই দুঃখিত আমার লেখা নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ার জন্য।
আমি আগেও বলেছি লেখার বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে, প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুন নৈর্ব্যক্তিকভাবে।
ফরিদের এমন আগ বাড়িয়ে ঝগড়া করার মনোবৃত্তি প্রকাশকে আমি কিন্তু নেতিবাচকভাবে দেখিনি। ফরিদ যে কি তা তার এক নেমেসিস লেখাটি পড়লেই বুঝা যায়। সে কথা মাহফুজ উল্লেখও করেছেন তার মন্তব্যে। আর মাহফুজ ও মনে হয় রস করেই ফরিদের উপরে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন যা প্রমাণ তার পরবর্তী মন্তব্যগুলো। তবে প্রতিক্রিয়ার রসটা একটু বেশি গাঢ়/ঘন হয়ে গিয়েছিল।
ফরিদও সে রসের উত্তর বেশ কষযুক্ত করেই দিয়েছেন।
যাহোক,ফরিদের মন্তব্য ছাড়াও লেখায় দ্বিমত না থাকলে নিজের মতকে , যুক্তিকে শাণিত করব কীভাবে? নিজের মতামত মুক্ত-মনার পাতায় ই তো শুধু নয়, লেখার মাধ্যমেই শুধু নয় — নারীকে সংগ্রাম করতে হয় সবখানে। নারীপক্ষ’র একটি শ্লোগানই আছে —-
আমি নারী, সারা পৃথিবী আমার যুদ্ধক্ষেত্র।
তাছাড়া ভিন্ন মততে মেনে না নিলেও বলতে দিতে হবে।আর আমি যা বলি তা ই সঠিক না হতেই পারে। সর্বোপরি, আমি আবার বিতর্ক সৃষ্টি করতে চাই না। আমার মন্তব্যের উপরে কারও প্রতিক্রিয়া হলেও আমি আর উত্তর দিয়ে এ বিতর্ককে দীর্ঘ করব না।
@গীতা দাস,
আমি আসলে কাল পর্যন্ত ধরে নিয়েছিলাম যে ব্যাপারটা নিছকই ঠাট্টা তামাশা। আজও নিশ্চিত ছিলাম না। নৃপেনদাও মনে হয় একই ভুলই করেছিলেন। ওনাকে দেখেই আমি সতর্ক হই, নয়ত আমিও আরেকটু হলেই যোগ দিচ্ছিলাম।
ফরিদ ভাই হালকা মেজাজে শুরু করেছিলেন যে কেউই বুঝবে। মাহফুজ সাহেবও মনে হয় ঠাট্টাই করছিলেন, তবে প্রকাশ ভঙ্গীর কারনে বা কোন ইমোর ব্যাবহার না করার ফলে ব্যাপারটা এদিকে মোড় নেয়।
আশা করি এই ভ্রান্তির নিরসন হবে। হাসি ঠাট্টা করতে গেলে ইমো বা ভাষার ব্যাবহারের দিকে একটু সতর্ক হওয়া দরকার।
মূল লেখার আলোচনা করতে গেলে বলতে হয়- সংবাদপত্রের পাতায় এধরনের ঘটনা ঘটা করে উল্লেখ করা হয়। পাঠকরাও খুব মজা করে ঘটনাগুলো পাঠ করে। ধর্ষক যখন ধর্ষিতাকে বিয়ে করে কিম্বা সমাজ বিয়ের ব্যবস্থা করে দেয়, সেটাকে আপাত সমাধান বলেই মনে করে। কিন্তু বিয়ের পরবর্তী জীবন কেমন কাটে তাদের? সংসারে এসেও মেয়েটি কি ধর্ষিত হচ্ছে না? অত্যাচারিত হচ্ছে না? মানসিক নির্যাতনের স্বীকার কি হচ্ছে না? এধরনের নানা প্রশ্নই দেখা দিতে পারে। আমার তো মনে হয় প্রথম ফল অপেক্ষা শেষ ফল আরও ভয়াবহ হয়। দুএকজন মন পরিবর্তন হয়তো করে, কিন্তু সেগুলো ব্যতিক্রম বিরলতায় দূর্লক্ষ্য।
যারা ধর্ষক তারা কি নিজেদেরকে বাঁচানোর জন্য নানা ধরনের প্রতারণার আশ্রয় নেয়। অধিকাংশ সময় ধর্ষিতাকেই দোষী করে।
তবুও আশার কথা হচ্ছে- দেশে ধর্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর আইনও রয়েছে।
নতুন এই সিরিজের জন্য গীতাদাসকে ধন্যবাদ। ধর্ষকের বিরুদ্ধে নারীপুরুষ নির্বিশেষে সকলেরই ঘৃণা এবং কঠোর অবস্থান নেয়া উচিত। ইদানিং যে হারে ইভ টিজিং বেড়ে গেছে, রাস্তাঘাটে মেয়েদের চলাই কঠিন হয়ে পড়ছে। কেন এমন হচ্ছে? গণচেতনা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শুধু মিটিং মিছিল করেই কী এর সমাধান পাওয়া সম্ভব?
যেকোন বাদি দেখলেই আমি আজকাল উলটো দিকে হাঁটা শুরু করি -কেন না আমি নির্বিবাদি।
গীতা দি,
বিষয়টি নিয়ে লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ। :rose:
কিন্তু এই লেখাটি ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ থেকে হঠাৎ করে সংবাদ ও সমাজ বিশ্লেষণে মোড় নেওয়ায় বেশ খানিকটা খাপছাড়া মনে হয়েছে। :deadrose:
পরের পর্বের অপেক্ষায়। …
@বিপ্লব রহমান,
স্মৃতিচারণ নয়, গৌরচন্দ্রিকা করেছিলাম মাত্র।তাছাড়া ভূমিকা ছাড়া শুরু করি কীভাবে?
নারী বিষয়ক বিভিন্ন সংবাদ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে এমন ভূমিকা দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেছি। এই আর কি।
যাহোক, ফিডব্যাকের জন্য ধন্যবাদ।
@গীতা দি,
এইবার বুঝেছি। চলুক। :yes:
@গীতা দাস,
নারী বিষয়ে কোন লিখা আসলেই আমার অবস্থা হয় টেনিস বলের মতন। একবার এই কোর্ট আরেকবার ঐ কোর্ট! মানুষ হিসেবে যোগ্যতার বিচারে সবার প্রাপ্য পাওয়া উচিত। অবশ্যই জন্মগত যোগ্যতা বাদে। আর দুর্ঘটনা সবার জীবনেই ঘটে। মাত্রাভেদে এর প্রভাব একেজনের উপর একেকভাবে রয়ে যায়। এ থেকে নারীর কম অধীকার পাওয়ার ব্যপারটি সুস্পষ্ট নয়।
@আনাস,
এঅস্পষ্ট বিষয়টি নিয়েই তো আন্দোলন।
আমাদের সমাজব্যবস্থা এমন যেখানে ধর্ষকের দোষটা দেখা হয়না। অনিচ্ছায় ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনায় একটি মেয়ে বেঁচে থাকে মৃতের কাফনে জড়িয়ে। তার মানসিক অবস্থাটা এতই নাজুক থাকে যে-ধর্ষকের সাথে বিয়ে দিলে পরে কি হবে না হবে, সংসার আদৌ তার সাজানো হবে কিনা-ভাবার মত, স্বপ্ন দেখার মত শক্তি সে হারিয়ে ফেলে। অভিভাবকরা সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হওয়ার হাত থেকে আপাত রেহাই পাওয়ার আশায় এ পথ মাড়ায়। আর যত শিক্ষিতই হোকনা কেন- পরিস্থিতি মেনে নিতে হয় নিরপরাধ ধর্ষিতাকে।
আইনের স্মরণাপন্ন হওয়ার আগেই আমাদের সমাজ যদি ধর্ষকের বিচার করতে পারত, সমাজ যদি ধর্ষককে বয়কট করত, জীবনযাপনের সকল সুবিধাগুলি যদি তার জন্য চিরতরে বাতিল করা হত, তার গলায় যদি শিকল পড়ানো যেত, তাকে যদি সমাজে বের হবার পথ বন্ধ করে দেয়া হত -তাতো হয়না। তাই, আজীবন গুমরে মরতে হয় অথবা আত্মহননের মধ্য দিয়ে অপাংক্তেয় জীবনের ইতি টেনে দেয় এইসব হতভাগ্য নিস্পাপ মেয়েরা।
কষ্ট হয়!ভীষন!
@মাহমুদা নাসরিণ কাজল,
ঠিক বলেছ। এমনই সমাজ। একটা লোচ্চা ছেলে বিয়ের করার জন্য হাজারটা মেয়ে পাবে। একটা বিধবা মেয়েকে বিয়ের জন্য সাধারনতঃ কেউ এগিয়ে আসবে না। ধর্ষিতা হলে তো তার বিয়ের মূল্য কিছুই অবশিষ্ট থাকে না।
মেয়েকে তো বিয়ে দিতে হবে। সেজন্য সমাজ জোড় করে ধর্ষকের সাথেই বিয়ে দেয়। মন্দের ভাল। কখনও শান্তি হয়, কখনও হয় না। স্বাভাবিক বিয়েতেই যে শান্তি হবেই তারও তো নিশ্চয়তা নেই।
রাষ্ট্রীয়ভাবে ধর্ষকের শাস্তির বিধান থাকা উচিত। কিন্তু ব্যাপারটা যা হয়। ধর্ষকের নিকট জনেরাই বিচারকের চেয়ারে থাকে। আর ধর্ষিতাটি হয় সহায় সম্বলহীন অক্ষম। সমাজ চাইলেও বিত্তবান আর পেশীবাজ ধর্ষকের সাথে বিয়ে দিয়ে একটা সন্মান জনক সমাধান করতে পারে না।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
মাহমুদা নাসরিণ কাজলের মন্তব্যের যুক্তিসঙ্গত সাড়া দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
শুনেছি কোন দেশে নাকি রাসায়নিকভাবে শাস্তি দেবার ব্যাবস্থা করা হয়েছে। সেরকম কোন শাস্তির প্রচলন করা দরকার। তবে তারচেয়ে বেশী দরকার নারীর প্রতি এ বিষয়ে মানসিক অবস্থার পরিবর্তন।
গীতা দাস,
ধন্যবাদ আপনার প্রতি মন্তব্যের জন্যে। আমি মন্তব্যে আপনার কথিত সংবাদটির বিষয়বস্তু খানিকটা ইচ্ছাকৃতভাবেই এড়িয়ে যেতে চেয়েছিলাম। এর একটা কারন ছিলো। কারণটা হলো সংবাদটি আমার কাছে স্পষ্ট নয়। যেখানে সে ধর্ষিতা, বাবলু জোয়ার্দারকে সে বিয়ে করতে গিয়েছিলো কিসের আশায়? বাবলু জোয়ার্দার যদি তাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে ঘরে তুলে নিতো তাহলেও কি কলেজ পড়ুয়া মেয়েটি নিঃশংক চিত্তে প্রেমময় সুখী সংসার গড়ে তুলতে পারতো? যদি উত্তর “না” হয়, তাহলে মেয়েটির বিকল্প অনুসন্ধানই হয়তো শ্রেয় ছিলো। আমি আরো বিস্তারিত জানার পড়েই কিছু বলা হয়তো ভালো হতো। তবুও আপনার কথার পরিপ্রেক্ষিতে বলছি, বাংলাদেশে এই ধরনের ঘটনা গুলোর কতোগুলো এরকমও ঘটে: একটি মেয়ে বা ছেলে কোন একটি পরিবারের কারো সাথে প্রথমে পরিচয়, তারপর বন্ধুত্ত্ব, তার পরে ঘনিষ্টতায় এলে। অতঃপর সম্পর্কের এক পর্যায়ে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে পরিস্থিতি নির্ভর করে মূলতঃ দুইটি বিষয়ের উপরে।
১। দুটি পরিবারের আপেক্ষিক সামাজিক প্রভাব
২। দুটি পরিবারের আপেক্ষিক অর্থনৈতিক শক্তি
কোন কারণে মেয়েটির পরিবার প্রভাবান্বিত হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ছেলেটিকে মেয়েটির পরিবার কর্তৃক দেয় সিদ্ধান্ত মাথা নীচু করেই মেনে নিতে হয়। কখনো মর্মান্তিক পরিসমাপ্তিও দেখাযায়। কিছুদিন আগে কোলকাতায় এক বাংলাদেশী তরুনের মর্মান্তিক ঘটনা সংবাদ শিরঃনাম হযেছিলো। কিন্তু যদি ব্যপারটা উল্টো হয় তখন তিনটি সম্ভাব্য বিষয় লক্ষ্যনীয়:
১। দুই পক্ষের মধ্যে একটি সামাজিক সমঝোতা অর্থাৎ বিয়ে।
২। ছেলেটির পরিবার বা সংশ্লিষ্ট সামাজিক সংঘ কর্তৃক মেয়েটির পরিবারকে হুমকি প্রদানের মাধ্যমে অবদমিত করে রাখা।
৩। কিংবা অতীব নির্মম এক বিয়োগান্তক নাটকের মধ্যদিয়ে ঘটনার পরিসমাপ্তি ঘটানো।
এগুলোর কোনটাই সভ্যতার বিচারে গ্রহন যোগ্য নয়। সেই জন্যেই আমি আমার মন্তব্যে উল্লেখ করেছিলাম যে, নারী, পুরুষ এবং নির্লিঙ্গ নির্বিশেষে প্রত্যেকেই যখন নিজেদের মানুষ হিসেবে দেখার মানসিকতা অর্জন করবে তখনই কেবল সম্ভব এইসব দুর্বিসহ সামাজিক বিশৃঙ্খলা এড়িয়ে চলা। সেই জন্যে সুশিক্ষা, আধুনিক চিন্তা এবং প্রগতিকে নিজের মধ্যে ধারন করতে হবে। আজ যদি বাবলু জোয়ার্দার কিংবা দুঘর্টনার শিকার মেয়েটি সুশিক্ষিত কিংবা আধুনিক চিন্তাশীল হতো, তাহলে হয়তো এই ঘটনাটির জন্ম হতো না। কারণ বিয়ে নামের এই ব্যপারটিও সম্ভবতঃ একটি গৌনব্যপারে পরিনত হতো। আমারতো মনে হয় বিয়ে ব্যপারটিই পুরুষতান্ত্রিকতার একটি মোক্ষম অস্ত্র! আর এই অস্ত্র প্রয়োগে নারী কে ঘায়েল করা যায় অতি সহজে! কারন এই সামাজিক বিয়ের সাথে তথাকথিত ধর্ম এবং নানান ঐতিয্যগত কুসংস্কারের যোগসূত্র রয়েছে।
জনাব আদিল মাহমুদ উপরে ঠিকই বলেছেন,
আমি যেটা বাড়তি বলি সেটা হলো পাশ্চাত্যের মেয়েরা শিক্ষিত, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ভাবে কিছুটা স্বাধীন হলেও ঐযে ধর্মীয় এবং জাতিগত কুসংস্কার থেকে এখনো মুক্ত নয় এবং আপামর জনসাধারনও বটে। যেখানে আধুনিক চিন্তা এবং প্রগতিশীল মননের ঘাটতি রয়েছে। আমাদের দেশের কথাতো বাদই দিলাম।
ছোটবেলা থেকেই অবিভাবক, শিক্ষকবৃন্দ হামেশাই বলতেন ‘বাবা’ বড় হয়ে মানুষ হও, আমি ভাবতাম, লেখাপড়া করছি, অংক কিছু শিখেছি, বিজ্ঞানও কিছু জানি, ইতিহাসের ধারনা আছে, নজরুল, রবীন্দ্র, বঙ্কীম সহ বেশ কিছু সাহিত্য ঘেটেছি, তবুও মানুষ হতে আর বাকি কোথায় থাকলো? এখন ঠিকই বুঝি গলদটা কোথায়। কুসংস্কার, অন্ধ বিশ্বাস আর মূল্যহীন তথাকথিত ধর্মীয় আচার গুলোকে পায়ে দলে যদি এগুবারই শক্তি না থাকে তো মানুষ হলাম কিকরে? এইটেই দরকার।
@কেশব অধিকারী,
ভাবছি :coffee:
এ জাতীয় উদাহরন এত বেশী যে শুরু করলে ২০টা মহাভারত লিখতে হবে।
আমার মনে হয় নারী বিষয়ক সমস্যাগুলির মূল হল আর্থিক স্বাধীনতা। তাতেও যে পুরো সমাধান হবে এমন নয়। পশ্চীমের দেশগুলি মহিলাদের আর্থিক স্বাধীনতা প্রায় পুরুষের মত হলেও সেখানে যে তাদের কোন সমস্যা নেই তা নয়। আইন কানুন তাদের পক্ষে করা হলেও পুরুষের আধিপত্য থেকেই যায়।
আমাদের দেশে এ সমস্যা লাখো গুনে বেড়েছে ধর্মের নামে সমাজপতিদের চোখ রাংগানী, সনাতন প্রাচীন মূল্যবোধ থেকে বের হতে না পারা এসব কারনে।
সম্পূর্ণ ব্যাপারটাই যেন অবিশ্বাস্য মনে হয়। এখানে ‘আইনের হাত’ আইনের চোখ’টাই বা কোথায়, আর এমন পঙ্গু হাত, অন্ধ চোখ থাকায় আর না থাকায় কার কী আসে বা যায়? এ বিয়ে মেনে নিতে ধর্ষিতা ও তার অভিভাবকই বা কেন বাধ্য হয়? কারণ তো অবশ্যই আছে, সে গুলোও পর্যায়ক্রমে আলোচনায় আসবে। সবেমাত্র শুরু হলো, লেখা চলতে থাকুক, পাঠক সময় নিয়ে নিজনিজ মতামত প্রকাশ করবেন।
মনে হয়না ব্যাপারটা সকলের চোখ এড়িয়ে গেছে, সময়াভাবে জিজ্ঞেস করা হয়নি। যেহেতু বলেছেন ‘সংবাদ পর্যালোচনা’ আশা করি প্রত্যেকটা ঘটনার আপডেইট ক্ষণে ক্ষণে লেখায় আসবে।
@আকাশ মালিক,
যেদেশে অধিকাংশ নারীরা স্বাবলম্বী নয়, স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগও নিতান্ত সীমিত আর মানুষগুলোও অধিকাংশ দারিদ্র সীমার নীচে বাস করে, সেখানে অধিকাংশ বিবাহযোগ্যা মেয়ে সন্তান তার অভিভাবকের কাছে একটা বিরাট বোঝা ছাড়া আর কিছুই নয়। বিষয়টি শুনতে কর্কশ মনে হলেও তা বাস্তব। আর ঠিক একারনে , একটি নারী ধর্ষিতা হবার পরেও যদি ধর্ষনকারীর সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়া যায়, তা নারীটির অভিভাবকের কাছে অনেক সময় অপরাধ বলে গন্য না হয়ে আশীর্বাদ হিসেবে গন্য হয়, এমনকি খোদ ধর্ষিতা নারীটির ক্ষেত্রেও তা সত্য। আর এ কারনেই সমাজে অনেক সময় এটিকে আর অপরাধ হিসেবে গন্য করা হয় না। আমাদের আর্থ সামাজিক পশ্চাদ্পদতা এর মূল কারন।
@আকাশ মালিক,
সম্পূর্ণ একমত।
আমি কিন্তু আমার লেখায় মন্তব্য করতেই হবে এমন মনোভাব নিয়ে আমার মন্তব্য করিনি। আমরা কয়েকজন লেখার মূল বিষয়কে উপেক্ষা করে বিভিন্ন বাদ নিয়ে বাদানুবাদে ব্যস্ত ছিলাম। যাহোক, কেশব অধিকারী, আপনি, ভবঘুরে ও আদিল মাহমুদ লেখার বিষয় নিয়ে মন্তব্য করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
সম্পাদনা করতে গিয়ে লেখাটার অর্ধেক মুছে ফেলেছিলাম আপনি ও ফরিদ বিষয়টি যথাক্রমে গোচরিভূত ও ঠিক করে দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
গীতা দাস,
চমৎকার সিরিজটা শুরু করার জন্যে ধন্যবাদ। অনেক আলোচনা পর্যালোচনার সুযোগ থাকবে।
তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় এটুকুই বলবো নারী এবং নির্লিঙ্গদের যতক্ষন না মানুষ হিসেবে দেখার দৃষ্টিভঙ্গী পুরুষদের মাঝে না আসছে, এ বিতর্কের শেষ বোধহয় ততদিন হবেনা। এর জন্যে আধুনিক শিক্ষা, মানসিক গঠন আর প্রগতি দরকার। তবু সমসাময়িকের প্রেক্ষাপটে আধুনিক মনষ্কদের চিন্তা গুলোই আগামী চিন্তার ক্ষেত্র বিস্তার করবে।
আমার তো মনে হয় কোটারী সুবিধা বাড়িয়ে নারীর মানুষ হয়ে উঠার পথ কন্টকমুক্ত হবেনা। যেটা দরকার নারীর নিজস্ব সংগ্রাম আর পুরুষের যে অংশ মানুষ, তাদের সম্মিলিত প্রয়াস। দরকার ধর্মবাদীদের আধিপত্যবাদের পতন আর সাথে সাথে রাষ্ট্রের আইনী সংস্কার, অন্ততঃ যেগুলো নারীকে নারী হিসেবে ভাবতে শেখায়।
যেকোন লিঙ্গের বহুগামীতাই কিন্তু তার ক্ষমতার প্রকাশ নাও হতে পারে। আবার মাতৃতান্ত্রিকতা বা পুরুষতান্ত্রিকতাও কিন্তু মানুষের প্রতি মানুষের বিদ্বেষ। যেমন আমাদের ময়মনসিংহের উত্তরে যে বিচ্ছিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর বাস, সেখানেও মাতৃতান্ত্রিক জাতির অস্তিত্ব বিদ্যমান। সেখানেও নারী কর্তৃক পুরুষের নিগৃহীত হয়ে আসার ভূঁড়ি ভূঁড়ি উদাহরণ বিদ্যমান। উদ্ধৃতির শেষ বাক্যটিই হলো আসল। সেটা হলো দেখার দৃষ্টিভঙ্গী। আর সেই জন্যেই দরকার আধুনিক চিন্তা এবং শিক্ষা আর সাথে সাথে সনাতনী জগদ্দলের উপরে কুঠারাঘাত করা। আজকের প্রথম আলোতেও দেখেছি আমনীর হুঙ্কার! ফতোয়া নিষিদ্ধের কারণে তারা আগে দুই বিচারককে মুরতাদ ঘোষনা করেছিলো, এবার সংবিধান সংশোধন কল্পে ইসলামী রাজনীতি নাকি এই সরকার (!) নিষিদ্ধ ঘোষনা করে পক্ষান্তরে ফতোয়া নিষিদ্ধের পাঁয়তারা করছে। পড়েই আমার এতো হাসি পেয়েছে যে, তলপেট ভারী হয়ে …….
যাইহোক, এই গুরুত্ত্বপূর্ণ বিষয়টিকে নিয়ে আলোচনার শুভ সূচনার জন্যে আপনাকে আবারো ধন্যবাদ।
@কেশব অধিকারী,
সেখানে কিন্তু পুরুষ কর্তৃক নারী নির্যাতনের ঘটনাও ঘটে।কাজেই আপনার কথাতেই আমার উত্তর—-
সর্বোপরি, ধন্যবাদ লেখাটির প্রথম অংশ নিয়ে মন্তব্য করার জন্য।
দ্বিতীয় অংশটি নিয়ে ( শৈলকূপার তরুণীটির অবস্থা ও অবস্থান নিয়ে) কোন প্রতিক্রিয়া কারও কাছ থেকেই পেলাম না।
নতুন ধারাবাহিক শুরু করায় অভিনন্দন দিদি। :rose2:
আশা করছি তখন ও এখন এর মতই জনপ্রিয়তা পাবে এটিও।
তবে, এই ধারাবাহিকে আপনার এবং আরো অনেকেরই সাথে আমার অনেক ঝগড়া হবে বুঝতে পারছি এখনই। কারণ, মুক্তমনায় আমিই একমাত্র আত্মস্বীকৃত এবং আত্মঘোষিত পুরুষবাদী। বাকিরা সবাইতো নারীবাদী। নারী-পুরুষ সব নির্বিশেষেই। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
সবই নির্বিশেষে ? তাহলে যারা নারী পুরুষ উভয়ের সমানাধিকারে বিশ্বাসী, এবং শুধু লিঙ্গের কারণে এক লিঙ্গের দ্বারা অন্য লিঙ্গের প্রতি অন্যায় করার বিরুদ্ধে তাদেরকে ( অন্তত আমি এর একজন এর উদাহরণ) কোন বাদী বলবেন? (নির্লিংগবাদী ছাড়া আর কোন শব্দ আসছে না আমার চিন্তায়) 🙂
@অপার্থিব,
তাইতো। এটাতো মাথায় আসে নি আমার। তাহলে তিন ধরনের বাদী দাঁড়ালো আপাতত। নারীবাদী, পুরুষবাদী আর নির্লিঙ্গবাদী। দেখা যাক কে কোনটায় পড়তে চায়। 🙂
@অপার্থিব,
নারীবাদীরাও কিন্তু নারী পুরুষ উভয়ের সমানাধিকারে বিশ্বাসী, শুধু নারীদেরঅ পেছনে রাখা হয়েছে বলে ন্যায্যতা চায়। আর এ ন্যায্যতা মানে যার ভাগে কম আছে তাকে সমান করতে গেলে তো একটু বেশি দিতেই হবে। সেভাবেই এতদিন কম পাওয়াকে পুরুষের সমান করতে নারীর এখন বেশি প্রাপ্য।
@গীতা দাস,
“নারীবাদীরাও কিন্তু নারী পুরুষ উভয়ের সমানাধিকারে বিশ্বাসী, শুধু নারীদেরঅ পেছনে রাখা হয়েছে বলে ন্যায্যতা চায়” এটাত নির্লিংগবাদীদেরও বিশ্বাস। হয়ত পুরুষবাদীদেরও (ফরিদ সেটা কনফার্ম করুক)। তাহলে তফাৎটা হলো নারীবাদ “একটু বেশি” দেয়ার দাবী করে। আমার জানা কোন নারীবাদী মানিফেস্টোতে এটা বলে না। এটা কি আপনার ব্যক্তিগত বিশ্বাস? যাইহোক “বেশী দিতে হবে” কথাটারও পরিস্কার ব্যাখ্যা দেয়া দরকার। বেশী কি পুরুষের তুলনায়? কিসের রিলেটিভ এ? ইত্যাদি। যেমন একই চাকুরীর পদের জন্য নারীদের বেশি বেতন দেয়া উচিত পুরুষের চেয়ে? নাকি অন্য কোন অর্থে? আপনিই এটা বুঝিয়ে দিন, উদাহরণ দিয়ে। যে অর্থেই বলা হোক আরেকটা প্রশ্ন উঠবে যে অতীতে অনেক নারী কম পেয়েছিল বলে কি বর্তমানে সব নারীকেই বেশি দিতে হবে, যারা কখনো কম পায় নি? তাহলে তো একজনের পাওনা আরেকজন পেল। আর Reverse discrimination এর কথা বাদই দিলাম। এই প্রশ্নগুলির ব্যাখ্যা দরকার। আপনার এই উক্তিটা “সমানাধিকারে বিশ্বাসী, কিন্তু একটু বেশি দেয়া উচিত” অর্সন ওয়েলস্এর বিখ্যাত উক্তি “All animals are equal, but some are more equal than others” মনে করিয়ে দিল। 🙂
উদ্ধৃতিটি অর্সন ওয়েলস্এর নয়, জর্জ অরওয়েলের। মন্তব্য এডিট করা যাচ্ছে না তাই একটা বাড়তি মন্তব্য দিতে হল ভুল সংশোধনের জন্য।
@অপার্থিব,
মূল লেখা রেখে আমরা মন্তব্যের উপর মন্তব্য করছি। বিতর্ক করছি। আমার মূল লেখাটির উপরে সমালোচনা করলে লাভবান হতাম যা পরবর্তী লেখায় এর ইতিবাচক প্রতিফলন হতো।
পাঠকদের কাছে বিনীত অনুরোধ আমার মূল লেখাটি নিয়ে সমালোচনা করার জন্য।
@অপার্থিব,
আমি বেশি বেতন দেওয়াকে বুঝাইনি, বুঝিয়েছি নারীর জন্য কোটা সুবিধাকে। নারীকে অগ্রাধিকার দিতে। অর্থাৎ positive discrimination করতে। একটা পশ্চাৎপদ গোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতে যা অতীব প্রয়োজন।
@গীতা দাস,
নারীকেই তার ক্ষমতা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। তখন কে তাকে ঠেকায়। যেমন আপনি এসেছেন। আপনার ড্রাইভার পুরুষ হয়েও আপনার আজ্ঞাবহ।
নারীর জন্য কোটা সুবিধা চেয়ে আপনি নিজেই নারীকে দুর্বল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
হু, অফিসে মানে কর্মক্ষেত্রে সে আমার আজ্ঞাবহ। তবে পরিবারে তার স্ত্রীর অবস্থান ও আমার পরিবারে আমার অবস্থানগত কোন পার্থক্য নেই, অবস্থা আলাদা হলেও।দুজনের কেউই বাবার সম্পত্তিতে ভাইয়ের সমান অধিকার নেই। সন্তানের অভিভাকত্ব নেই। কোন মুসলমান বিয়েতে সাক্ষী দিতে গেলে অপার্থিব বা ফরিদ কিংবা আমার ড্রাইভার অথবা আপনি নিজে একজন আর শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া দুজনে মিলে একজন। বা আমি ও ড্রাইভার সাহেবের স্ত্রী মিলে একজন। অর্থাৎ একজন পুরুষ সমান দুইজন নারী।
ঐতিহাসিক কারণে নারী তো বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্বল তথা পিছিয়েই ।
যাহোক, আর মন্তব্য নিয়ে বিতর্কে জড়াব না। আমার মূল লেখার উপরে মন্তব্য, আলোচনা ও সমালোচনা আশা করছি।
@গীতা দাস,
তথাস্তু।
@গীতা দাস,
আপনার লেখা আসলেই অভাবণীয় লাগলো। নারী বিষয়ক এমন রচনা নারীদের হাতেই রচিত হোক।
আপনার পরবর্তি লেখার অপেক্ষায় থাকলাম।
@ফরিদ আহমেদ,
কিন্তু শুরু তো করলে না।
মোজাফফর হোসেন আমার পরবর্তী অংশ পড়ার অপেক্ষায় আর আমি ফরিদের ঝগড়া শুরু করার অপেক্ষায় রইলাম।
@গীতা দাস,
ঝগড়া শুরু করলাম না দেখে আশাহত হবার কিছু নেই দিদি। এই ধারাবাহিকতো অনেকদিন ধরেই চলবে, কাজেই ঝগড়াঝাটি করার প্রচুর সময়ই পাবো। শ্যেন দৃষ্টি থাকবে এখানে। নারীবাদীদের নাকি সুরের নর-অবন্দনা শুরু হবার সাথে সাথেই পুরুষবাদী পেশি শক্তির আস্ফালনও প্রদর্শন করা হবে। 😉
সম্পাদনা করতে গিয়ে মনে হয় লেখাটার অর্ধেক মুছে গিয়েছে কোনভাবে। ঠিক করে দিয়েন দিদি। কমেন্ট করার অপশনও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ওটা ঠিক করে দিয়েছি আমি।
@ফরিদ আহমেদ,
এটা যদি ঠাট্টা না হয়ে সত্যি কথা হয়। তাহলে বলব- এই জাতীয় লোক আত্মস্বীকৃত খুনির মতো। এরাই ধর্ষক। এরা ভোগবাদী। এরা মুক্তমনা নয়, এরা মৌলবাদী। এরা অহংবোধে ভোগে। এক কথায় এরা সাইকিক। অতিদ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন। তানাহলে সমাজে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দেবে। এজাতীয় লোকদের জন্য প্রয়োজন তসলিমা নাসরিন, যিনি এই ধরনের পুরুষবাদী লোকদের বিরুদ্ধে কলম হাতে তুলে নিয়ে বলেছেন- আজ হতে নারীও ধর্ষণ করতে শিখুক।
@মাহফুজ,
ঠাট্টা নয়, সত্যি।
এবার বলুন কী কারণে আপনার মনে হলো যে আমি ধর্ষক? কাকে কাকে ধর্ষণ করেছি আমি?
কেন আত্মস্বীকৃত খুনি আমি? কোথায় স্বীকার করেছি যে আমি খুনি?
ভোগবাদী কেন মনে হলো আমাকে? মৌলবাদীইবা কোন যুক্তিতে?
কোন তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আমাকে সাইকিক বানালেন আপনি? আপনি কী সাইকিয়াট্রিক? আমার চিকিৎসা করেছেন আপনি? কেন আপনার ধারণা হলো যে আমার চিকিৎসা প্রয়োজন?
সমাজে কোন মহা বিপর্যয় ঘটিয়েছি আমি বা ঘটাতে যাচ্ছি? উদাহরণ দিয়ে দেখাতে হবে।
কেন মনে হলো যে তসলিমাকে দিয়ে আমাকে ঠ্যাঙানি খাওয়াতে হবে?
সবগুলোর যুক্তিসঙ্গত জবাব চাই আমি।
@মডারেটরবৃন্দ,
মাহফুজ সাহেবের আমাকে খুনি, ধর্ষক, সাইকিক, ভোগবাদী, মৌলবাদী, সমাজের জন্য মহাবিপর্যয়কারী হিসাবে চিহ্নিত করে আমার চিকিৎসার প্রয়োজন বলে যে কুৎসিত ব্যক্তি আক্রমণ করেছেন তার বিহিত করার জন্য অনুরোধ করছি।
এ ধরনের কদর্য ব্যক্তি আক্রমণের পর কারো সদস্যপদ বহাল থাকা উচিত কি না সে বিষয়েও একটা ব্যাখ্যা আশা করছি আমি।
@ফরিদ আহমেদ,
ঝগড়ার ক্ষেত্র এবার তাহলে প্রস্তুত হলো। বুঝে শুনে আইল ঠেলা, পাকা ধানে মই দেয়া। এই ধরনের লোকের অভাব নেই দেশে। যারা পাকা ধানে মই দেয়, কিম্বা আইল ঠেলে তাদের থেকে দশ হাত দূরে থাকে এমন মানুষও রয়েছে। যেমন বিপ্লব পাল পালিয়ে গিয়ে বলছেন- যেকোন বাদি দেখলেই আমি আজকাল উলটো দিকে হাঁটা শুরু করি -কেন না আমি নির্বিবাদি।
আমাদের এই দুইজনের ঝগড়ার মাঝে এসে কেউ পক্ষ বিপক্ষ হবেন কিনা এখনও বুঝতে পারছি না। মডারেটরবৃন্দের সাড়া পাওয়া যদি যায় তাহলে ঝগড়াটা আরো মধুর হয়ে উঠতো।
আপনি কী কারণে নিজেকে একজন আত্মস্বীকৃত, স্বঘোষিত পুরুষবাদী হিসেবে চিহ্নিত করেছেন সেটার জবাব আগে দেয়া প্রয়োজন। আপনার কোনো লেখার মধ্যে এধরনের কিছু পেয়েছি বলে মনে পড়ে না। ‘প্রিয়দর্শিনী পেলিনের জন্য প্রেমগাঁথা’ লিখেছেন। সেখানেও আপনাকে পুরুষবাদী হিসেবে দেখবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি।
নাচনেওয়ালী লেখাটি কি পুরুষবাদী নাকি নারীবাদী?
বড়মনিদের জন্য লিখলেন নিমেসিস। বলুন সেটা কি পুরুষবাদী লেখা? এখানে কিছু ব্যক্তিদের উল্লেখ করেছেন- এই সমস্ত পুরুষেরা কোন বাদী?
যার হৃদয় নারী প্রশংসায় পঞ্চমুখ, রুনা লায়লার গানের জন্য গর্বে বুক ফুলে ওঠে, তিনি কী করে নিজেকে পুরুষবাদী বলে ঘোষণা দেয়?
মুখে মুখে পুরুষবাদী বললে তো হবে না, কাজে প্রমাণ দেখাতে হবে।
@মাহফুজ,
আপনি কিন্তু সিরিয়াসলি ফরিদ ভাইকে উপরের কথাগুলো বলেছেন, তাই নয় কি? যদি সিরিয়াসলি বলেন তবে তিনি যেহেতু এর ব্যাখ্যা চেয়েছেন তাই এর উপযুক্ত ব্যাখ্যা দেন। আর সিরিয়াসলি না বললে এভাবে বলার উপযুক্ত ব্যাখ্যা দেন। যদি ভুল হয় তবে তাও সুন্দর ভাবে স্বীকার করে নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করলে এখানেই বিষয়টা খতম। প্রকৃত মুক্ত-মনা সেই যে প্রয়োজনে দুঃখ প্রকাশ করতে পারে।
আপনার এহেন মন্তব্যে ফরিদ ভাইয়ের রাগ করাটা খুবই স্বাভাবিক। আপনি যেহেতু একজন সমঝদার মানুষ তাই বিষয়টাকে নিজ দায়িত্বে মীমাংসা করতে পারবেন আশা করি।
আপনার পক্ষ নেয়ার কোনো সুযোগ না পাওয়ায় আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।
@সৈকত চৌধুরী,
ফরিদ ভাই কি সত্যিই রাগ করেছেন? মনে আঘাত পেয়েছেন? আমার উপর ক্ষেপে গেছেন? যদি তা-ই হয়, তাহলে তো আমাকে ক্ষমা চাইতে হয়।
শুনুন, ফরিদ ভাইকে আমি সব সময় একজন চমৎকার ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ হিসেবেই উল্লেখ করি। আমি তার এত বেশি প্রশংসা করেছি যে সেই প্রশংসা তিনি সহ্য করতে পারেন না। তার লেখাগুলো আমার কাছে প্রিয়। অনেকের লেখার মধ্যে আমি কখনও কখনও তার লেখা থেকে উদ্ধৃতি দেই কিম্বা লিংক দিয়ে দেই।
আজ যখন গীতা দাসের লেখাটি পড়লাম, সেখানে ফরিদ ভাইয়ের একটি মন্তব্য দেখলাম। তিনি নিজেও ইচ্ছে করে ঝগড়া করতে চেয়েছেন। কিন্তু পুরো মন্তব্য পড়ে ঝগড়ার কোন আভাস পেলাম না। কারো সাথে ঝগড়া করতে হলে প্রথমেই তার ব্যক্তি চরিত্র নিয়ে আঘাত করতে হয়। আর সেই সূত্রও পেয়ে গেলাম। ফরিদ ভাই নিজেকে যখন স্বঘোষিত আর আত্মস্বীকৃত পুরুষবাদী বলে উল্লেখ করছেন তখন এটাকেই সম্বল করে ঝগড়ার সূত্রপাত তৈরির বাক্য গঠন করলাম। তিনি আমার কাছে সেগুলোর ব্যাখ্যা দাবী করলেন। আমিও ব্যাখ্যা দাবী করছি তিনি কিভাবে পুরুষবাদী বলেন। তার কোনো লেখার মধ্যে সেরুপ পাই নি। সেজন্য তিনি পুরুষবাদীও নন। আসলে পুরুষবাদীর একটা ব্যাখ্যা বা সংজ্ঞা দাঁড় করানো দরকার।
আমি জানি ভালো করেই জানি আমাদের ফরিদ ভাই উপরোক্ত দোষাবলী থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। আমার বলাতে যদি তিনি দু:খ পেয়ে থাকেন, তাহলে ক্ষমা তো অবশ্যই চাইবো। এই দেখুন চাচ্ছি-
প্রিয় ফরিদ ভাই,
আমি আন্তরিকভাবে দু:খিত, এভাবে বলার জন্য। আমাকে ক্ষমা করে দেন। আর আমার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার মানহানি কেচ না করার জন্য সবিনয় অনুরোধ জানাচ্ছি। সেই সাথে প্রতিজ্ঞা করছি- যতদিন বা যতক্ষণ মুক্তমনায় থাকবো ততক্ষণ আপনার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার চারিত্রিক আক্রমণ করে আপনার বিরাগভাজন হবো না। এর পরিবর্তে যতদূর সম্ভব প্রশংসায় রত থাকবো।
ক্ষমাপ্রার্থী,
মাহফুজ।
@মাহফুজ,
ঝগড়াটা ভাল জমে উঠেছে। সাইডে আছি। উপভোগ্য হচ্ছে। থেমো না। উস্কিয়ে দেওয়ার জন্য মাল-মশলা কারও কাছে জানা থাকলে ছাড়ুন।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
তাই না? কাউকে ধর্ষক, খুনি, মৌলবাদীবাদী, সাইকিক বললে ঝগড়া বেশ ভাল জমে উঠে বলেই আপনার মনে হয়। বেশ উপভোগ্য লাগে। দাঁত কেলিয়ে সাইডে দাঁড়িয়ে যান আরো মজা লুটবার জন্য। মাহফুজ সাহেবকে আরো উস্কে দিচ্ছেন, না থামার জন্য উৎসাহ দিচ্ছেন।চমৎকার!!
আপনার বুদ্ধিশুদ্ধির পরিমাণ এবং রুচির মাত্রা নিয়ে সত্যিই আমি হতাশ। বয়স হলেওতো মানুষের জ্ঞান-বুদ্ধি কিছু বাড়ে। আপনিতো দেখছি চেংড়া পোলাপানের মত আচরণ করছেন।
@ফরিদ আহমেদ,
ফরিদ, সত্যি বলছি। আমি ভেবেছি সবাই ঠাট্টা করে বেড়াচ্ছে। মাহফুজ এই রকম প্রায়ই করে। মাহফুজ :guli:
এটা সিরিয়াস আমি একটুও বুঝতে পারিনি। আমি এখন কী করতে পারি। একটা সিরিয়াস ঘটনার মধ্যে ঢুকে গেছি ভেবে আমি লজ্জিত বোধ করছি। এখন হালকা জিনিষ হয়ে থাকলেও আমি এখন লজ্জিত।
আমার এখনও মনে হচ্ছে সিরিয়াস কিছু নয়। ফরিদ, you are pulling my leg.
ষাট বছরের পরে মানুষ চ্যাংড়া হতে ভাল বাসে। আমার সে সার্টিফিকেট হয়ে গেছে।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
– দিনের সেরা কমেন্ট 🙂 ।
আমিও আরেকটু হলে আপনার মতই ধরা খাচ্ছিলাম 😀 ।
@আদিল মাহমুদ,
কী যে ধরা খেয়েছি, কী আর বলব। আমার সারাটা দিন মাটি। ফরিদ আমাকে কেন বুঝতে পারলনা!
@আদিল মাহমুদ,
বড় বাঁচা বেঁচে গেছেন। সেই আনন্দে আল্লার হাজার শুকরিয়া আদায় করুন।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
মাহফুজ, আমি যখন উপরের কমেন্টটি করি, তখনও মনে করেছি বিষয়টি নিছক রসিকতা। পানি যে এতদুর গড়িয়ে গেছে বুঝতে গেছে বুঝতে পারিনি।
গুলি চিহ্নটাও বসিয়েছি। কাজটি আহাম্মকি হয়ে গেছে। আমি ভুলের জন্য অনুতপ্ত। দুঃখিত।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
দাদা,
পানি গড়িয়ে এখনও বেশিদূর যায় নি। দেশে বন্যা চলছে ঠিকই, তবে ৮৮, ৯৮ এর মত ভয়াবহ নয়।
এরকম হাজারটা গুলির চিহ্ন বসান, আমার কিছুই হবে না। বুলেট প্রুফ জ্যাকেট গায়ে চাপিয়েছি। নিজেকে আহাম্মক, ভুল, অনুতপ্ত এসমস্ত মনোভাব ঝেড়ে ফেলে দিতে পারেন। আপনার সাথে আমার যে সম্পর্ক, ফরিদ ভাইয়ের সাথে সেরকম নয়। যে ইয়ার্কি বোঝে না- তার সাথে ইয়ার্কি করা চলে না।
@মাহফুজ,
আপনার বক্তব্য থেকে পরিষ্কার যে জেনে শুনেই শুধুমাত্র ঝগড়া বাধাবার অছিলায় আপনি আমাকে খুনি, ধর্ষক, মৌলবাদী, সাইকিক ইত্যাদি বলে আমার ব্যক্তি চরিত্রের উপর আঘাত হানার চেষ্টা করেছেন।
এই সমস্ত কদর্য কথা না বলেও আপনাকে কঠিন আঘাত করার মত ক্ষমতা আমার আছে। কিন্তু সেই রাস্তায় আমি যাচ্ছি না। (এতে করে অবশ্য কারো কারো সাইডে দাঁড়িয়ে দাঁত কেলিয়ে মজা লুটতে একটু কষ্টই হবে।) বিষয়টা আমি মডারেটরদের উপরে ছেড়ে দিয়েছি। তাদের সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত বলে মেনে নেবো আমি।
সৈকত চৌধুরীর কারণে আমার কাছে মাফ চাইতে গিয়ে যে স্থূল ধরনের ফিচলেমি করলেন সেটা না করলেও পারতেন। সব জায়গায় সব স্থুলতা মানায় না। ক্ষমা চাইতে হলে আন্তরিকভাবেই সেটা চাইতে হয়, ভান-ভনিতা করে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপাত্মক ফাজলেমি মার্কা বাক্যবন্ধের আড়াল নিয়ে নয়।
@ফরিদ আহমেদ,
আপনার সেই ক্ষমতার প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে। এই কাজটাই করুন প্লিজ। আমার আরো কিছু শিক্ষা হোক। আচ্ছা ফরিদ ভাই, কেন যে মাথার মধ্যে এসমস্ত পোকা ঢুকলো বুঝতে পারছি না। আজ নিজেকে বড্ড অচেনা লাগছে। আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাইলেও ক্ষমা করবেন না। শাপ শাপান্ত যা দেবার দরকার দিয়ে যান। এর আগেও সম্ভবত আপনি আমার উপর ক্ষেপেছেন। তখন কানও ধরেছি। এবারও ভুল করলাম। কেন বার বার এত ভুল করি, তাও আবার আপনার কাছেই বেশি।
প্রশংসা করলেও দোষ, বদনাম করলেও দোষ। কোনদিকে যে চলবো তা-ই ভাবছি। তবে সরল স্বীকারোক্তিতে বলছি- আপনাকে আমি ভীষণ পছন্দ করি। তবে আপনার মত করে লিখবার ক্ষমতা কোন কালেই আমার পয়দা হবে না।
@ফরিদ আহমেদ,
এখন দেখছি এটা সত্যি সিরিয়াস ব্যাপার। নিজেকে খুবই বোকা বোকা লাগছে, ফরিদ। এটা আমি কী করলাম? I really did not understand. And I sincerely apologize for that.
@নৃপেন্দ্র সরকার,
দাদা,
ভেবে দেখুন! ফরিদ ভাইয়ের আঁতে এমনই ঘা লাগলো যে- মডারেটরদের আহ্বান করেছেন। দু:খ লাগছে আমারই জন্য আপনাকে দু:খিত এবং ক্ষমা চাইতে হচ্ছে বলে। আরো খারাপ লাগছে বাংলায় ক্ষমা চাওয়া যথেষ্ট নয় মনে করে ইংরেজীতে চাচ্ছেন?
মা, মাগো, এই দু:খ কই রাখি?
@মাহফুজ,
আপনার কি এখনও ধারণা নেই যে আপনি কি লিখেছেন? একবার মাফ চাচ্ছেনতো আবার পরক্ষণেই ভাঁড়ামো করছেন। আবারও বলছি, আপনার বিষয়টা আমি সিরিয়াসলি নিয়েছি। এখানে রসিকতার কিছু নেই। ইয়ার্কি ফাজলেমি যা করতে চান তা আপনার দাদার সাথে করুন গিয়ে, আমার সাথে নয়।
এখন আপনাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি আন্তরিক ক্ষমাপ্রার্থনার দিকে থাকবেন, নাকি স্থূল ভাঁড়ামোর দিকে থাকবেন।
যারা ভাবছেন যে এটা শুরুতে রসিকতা ছিল, পরে অন্যদিকে গিয়েছে তাঁরা পুরোপুরি ভুল। এটা কখনোই রসিকতার পর্যায়ে ছিল না।
@ফরিদ আহমেদ,
আমি তো আর আপনার সাথে ফাজলামি বা ইয়ার্কি করছি না। দাদার সাথেই তো করছি।
সিদ্ধান্ত তো নিয়েই ফেলেছি আন্তরিক ক্ষমার দিকে। আপনার সাথে স্থূল ভাড়ামো করতে চাই না। তারপরও যদি আপনার মনে হয় স্থূল ভাড়ামো করছি- প্লিজ ধরিয়ে দিবেন।
@মাহফুজ,
ইদানিং অবান্তর ঝগড়াঝাটি সংক্রান্ত পোস্ট এবং মন্তব্য এড়িতে চলার চেষ্টা করি। আপনার মন্তব্যের পরে আর থাকা গেল না। আপনি যেভাবে খুনি, ধর্ষক প্রভৃতি বিশেষণ ব্যবহার করেছেন তা সত্যিই স্থুল। আপনি ফরিদ সাহেবের বলা পুরুষবাদী শব্দটি নিয়ে অযথাই নরকগুলজার করেছেন। আমি যতদূর জানি গীতা দাসের আগের একটি ‘নারীবাদী’ লেখায় ভিন্নমত পোষণ করেছিলান। তার সূত্র ধরেই নিজেকে ‘পুরুষবাদী’ বলেছেন (জিনিসটা যে স্রেফ রসিকতা ছিল সেটা আপনিও জানেন, আমিও)। আর উনি তো ব্লগের কাউকে বলেননি, নিজেকেই নিজে বিশেষিত করেছেন, এতে আপনার পাকা ধানে মই পড়লো কেন, বলুন তো?
আপনার মনে হয় অফুরন্ত সময়। মন্তব্য যেখানে আপনার অস্তিত্ব দাবী করে না, সেখানেও অবলীলায় সেঁদিয়ে যান আর নানা কিসিমের প্রলাপরে ঝাঁপি খুলে বসেন। আমি আপনার আচরণে সত্যই হতাশ। এর আগে আমাকে আর ফরিদ আহমেদকে নিয়েও মোকসেদ সাহেবের নাম দিয়ে পোস্ট দিয়েছেন বিমান দিয়ে আকাশে উড়িয়েছেন, যার মাথামুন্ডু কিছু আমি খুঁজে পাইনি। এমনকি ফরিদ আহমেদের কাছে ক্ষমা চাইতে গিয়েও ‘মানহানি কেচ না করার জন্য সবিনয় অনুরোধ’ জানানো, ‘যতদূর সম্ভব প্রশংসায় রত থাকা’র ইঙ্গিত করে অনুতাপের বদলে মূলতঃ ব্যঙ্গই করেছেন।
আপনি অনেকদিন ধরেই লিখছেন, মন্তব্য করেছেন। আপনার কাছ থেকে মানসিক স্থিরতা আশা করি। যদি না পারেন, মডারেটরদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে বৈকি। মডারেটর হিসেবে আমিও আপত্তি জানালাম। দেখি অন্যরা কি বলে। সৈকত ইতিমধ্যেই আপত্তি জানিয়েছে অবশ্য। রামগড়ুড়ের ছানা কি বলে শুনি।
@ফরিদ ভাই,
আপনি নিজেই একজন মডারেটর। মডারেটর হিসেবে আপনিও যে কোন একশন নেবার অধিকার রাখেন। আমার পক্ষে সব সময় সব থ্রেড অনুসরণ করা সম্ভব হয় না। এটা বললাম কারণ এর আগেও রাসেল না কার মন্তব্যে আপনি মডারেটরের কাছে আপত্তি জানিয়েছেন। আপত্তি না জানিয়ে সরাসরি ব্যবস্থা নিয়া নেন। আপনের মডারেটরের কাছে আপত্তি জানানো অনেক সময় আয়নার সামনে দাঁড়ায় কথা কওনের মত শোনায় । 🙂
(অবশ্য মাহফুজ সাহেবের এই ব্যাপারটার ক্ষেত্রে যখন নিজেই জড়িত, তখন অন্য মডারেটরদের অভিমত চাওয়াটা ঠিক আছে, এটার ক্ষেত্রে আপনেরে মাফ কইরা দেয়া হইল)।
@অভিজিৎ,
আমি মডারেটর নাকি!! ঝানতাম নাতো!!! আগে কইবা না। 😀
নাহ! রাসেলের সময় মডারেটরদের কাছে কোনো নালিশ করি নাই মনে হয়। ভবঘুরের প্রতি তাঁর অযাচিত আক্রমণে আমার ব্যক্তিগত আপত্তি উত্থাপন করেছিলাম শুধু।
মাহফুজ সাহেবের ক্ষেত্রে তোমার অনুমানই সঠিক। নিজে সম্পৃক্ত বলে আমি কোনো সিদ্ধান্ত নিতে গেলে পক্ষপাতমূলক হতে পারে ভেবেই অন্য মডারেটরদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।
@অভিজিৎ দাদা,
আমি তো আমার মন্তব্যে বলেছি – এটা যদি ঠাট্টা না হয়ে যদি সত্যি হয় তাহলে।
এখন তো স্পষ্টই হয়ে উঠলো ফরিদ ভাই পুরুষবাদী নন। তাহলে আমার দোষটা কোথায়? আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি দেখানোর বিষয়? এগুলো তো অন্তর দিয়েই অনুভব করতে হয়। ক্ষমা চাইবার আগেই যদি ক্ষমা করে দেয়া যায়, তাহলে সেটাই তো মহত গুণ।
দীর্ঘ ১২/১৩ দিন পর মুক্তমনায় ঢুকেছি। অফুরন্ত সময় পেলে তো ভালোই হতো। তাহলে মুক্তমনার সমস্ত লেখাগুলো পড়তে পারতাম। তার উপর কারেন্ট থাকে না, নেটের গতি দূর্বল। তারপরও মন্তব্য পড়তে ভালো লাগে। ফরিদ ভাইয়ের লেখা পড়তে পড়তে এত বেশি আপন মনে হয় যে দু একটি মন্তব্যর উপর ফোড়ন কাটলে মন্দ হবে না বলেই মনে করি। কিন্তু সেগুলো যে এত সিরিয়াসলি কিছু হয়ে যাবে ভাবিনি। আসলে সবার সাথে ইয়ার্কি চলে না। এই বিষয়টি আমার বুঝা উচিত। আসলে বেশি আনন্দ ফূর্তি করতে গেলে আঘাত সহ্য করার ক্ষমতাও থাকতে হয়।
আপনি ভালো করে সমস্ত মন্তব্য পড়ে দেখুন তো আমি কি সত্যিই ফরিদ ভাইকে ঐভাবে আঘাত করতে চেয়েছি কিনা। হ্যাঁ ফরিদ ভাই যদি কখনও বলেন- আমার সাথে ইয়ার্কি করার তুমি কে?
ঠিক আছে আর কোনদিন ফরিদ ভাইয়ের কোনো মন্তব্যের মধ্যে অযাচিতভাবে ঢুকে কোনো প্রকার মন্তব্য করবো না। আপনি বলছেন- আপনার কাছ থেকে মানসিক স্থিরতা আশা করি। আমি ঠিক জানি না মানসিক স্থিরতার ব্যাখ্যাটা কি? তবে আমি ভীষণ ফুর্তিবাজ। অতি কষ্টের মধ্যেও নিজেকে ফূর্তির মধ্যে রাখবার চেষ্টা করি। আর এগুলো আরও রপ্ত করতে পেরেছি, মুক্তমনা থেকেই। আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে- ফরিদ ভাইয়ের সাথে আফরোজা আলমের, কুলদা রায়ের সাথে বাকবিনিময়। সেগুলো কি দারুন উপভোগ্য ছিল না? ছিল। আজ আমারটাও ঐভাবে নেন না কেন? তাহলে তো সব ল্যাঠা চুকে গেলো।
এরপরও যদি মনে করেন মাহফুজ মুক্তমনার পরিবেশ নষ্ট করছে কিম্বা একে দিয়ে মুক্তমনার কোনো কাজ হবে না। একটা আগাছাস্বরূপ, তাহলে একশন নিতেই পারেন। আমি ঠিক জানি না এই একশনটা কি? আমি কি মুক্তমনায় আর কোনো মন্তব্য করতে পারবো না। নাকি লেখা পোষ্ট করার যোগ্যতা হারিয়ে যাবে। নাকি মুক্তমনার কোন লেখাও পড়তে পারবো না। আমার প্রতি সব ধরনের একশন নিতে পারেন, আমার কোন আপত্তি থাকবে না। শুধু একটাই অনুরোধ, দোহাই মুক্তমনার লেখা পড়া থেকে বঞ্চিত করবেন না।
এক সময় ছিল যখন মুক্তনায় ঢোকার জন্য দূরের সাইবার ক্যাফে পর্যন্ত গিয়েছি। ঢুকতে না পারলে কষ্টে বুক ফেটে যাবার মত ভাব হতো। এখনও হয়। সেটা যাতে না হয় সেজন্য একটা মডেমও কিনে ফেললাম, যাতে মুক্তমনার পাতা থেকে বঞ্চিত না হই। কিন্তু ভাগ্য এমনই খারাপ যে গ্রামের মধ্যে এই মডেম কাজ করে না। টাউনেই মধ্যে থেকেই পাতা ঠিক মত আসে না, গ্রাম তো অনেক দূর।
যাহোক আপনাদের সুন্দর সুন্দর পরামর্শ মোতাবেক নিজেকে গঠন করার চেষ্টা করবো।
আর এভাবে ভুলগুলো ধরিয়ে দিলে সংশোধিত হবার চেষ্টাও করতে পারবো। যেখানে আমার মন্তব্য করার কোনই প্রয়োজন নেই। সেটাও আমার ভালোমত উপলব্ধি করার বোধশক্তি অর্জন করতে হবে।
ধন্যবাদ অভিজিৎ দাদা, আমাকে উপদেশ দেবার জন্য।
@মাহফুজ,
এটা আপনার রক্ষাকবচ নয়। আপনি মনে হয় ধরতে পারেন নি যে আসলে সমস্ত সমস্যার মূলটা এখানেই নিহিত রয়েছে।
একজন লোক পুরুষবাদী হলেই যে সে ধর্ষক হবে, খুনি হবে, ভোগবাদী হবে, মৌলবাদী হবে, সাইকিক হবে এই ভ্রান্ত ধারণা থেকে বের হয়ে আসতে হবে আপনাকে। একজন পুরুষবাদী লোককে আপনি বড়জোর সমাজ প্রগতির পথে অন্তরায় বলতে পারেন, এর বেশি কিছু নয়। যতক্ষণ পর্যন্ত না সেই লোক স্পেসিফিক কোন অন্যায় করেছে ততক্ষণ পর্যন্ত তাকে এ ধরণের সুস্পষ্ট কদর্য বিশেষণে ভূষিত করা যায় না। আমার দাদা, বাবা এরা সবাই পুরুষতান্ত্রিক সমাজের চরম পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার মানুষ ছিলেন, কিন্তু তাঁরা কেউ-ই কাউকে ধর্ষণ করেন নি বা কাউকে খুন করেন নি।
এই আমি-ই শুধু পুরুষবাদী হলেই খুনি, ধর্ষক, মৌলবাদী, সাইকিক আর পুরুষবাদী না হলেই ভালমানুষ এটাতো একটা হাস্যকর যুক্তি।
@ফরিদ আহমেদ,
পুরুষবাদীর সংজ্ঞা আপনার কাছ থেকে যা জানলাম তা মেনে নিয়ে আপনার সাথে তর্ক করা থেকে বিরত থাকছি।
তবে প্রত্যেক পুরুষবাদীই মানসিকভাবে একজন ধর্ষকামী, খুনি, ভোগবাদী। এ ধরনের ধারণাই আমার কাছে বদ্ধমূল ছিল। যারা হুমায়ুন আজাদের নারী, দ্বিতীয় লিংগ পড়েছেন তারা পুরুষ সম্পর্কে এমন ভাবনাটাই হয়তো ভাববেন। আপনার কৈশর বয়সে সিনেমা হলে যখন কোন পুরুষ উরুর উপর হাত দিল, আপনি বার বার হাতকে দূরে ঠেলে দিলেন। এই ধরনের পুরুষ কোন ধরনের মানসিক সম্পন্ন? এর চেয়েও চরম অভিজ্ঞতা আমার আছে। আর সে কারণেই আমি মাঝে মাঝে পুরুষের বিরুদ্ধে দাঁড়াই।
আপনার অভিজ্ঞতা জ্ঞান প্রজ্ঞায় যেভাবে পুরুষবাদীকে সংজ্ঞায়িত করছেন, আমি হয়তো সেভাবে নাও করতে পারি। আর এখানেই আমার এবং আপনার মধ্যে দ্বিমত ঘটছে। সেজন্য বলি- আপনার সংজ্ঞা আপনার কাছে থাকুক, আমার সংজ্ঞা আমার কাছে থাকুক।
অযাচিতভাবে আপনার মন্তব্যে ঢুকে মন্তব্য করার জন্য দু:খিত। আর আপনাকে ধর্ষক, খুনি কিম্বা অন্যান্য দোষে দোষী করার খায়েশও আমার নেই। আপনি যদি মনে করেন সত্যি সত্যি আমি সেগুলো আপনাকেই বুঝাতে চেয়েছি। তার পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষমা চাই আন্তরিকভাবেই।
আমি জানি না রক্ষাকবচ আর কিভাবে সম্ভব? তাগা, কবচ, মাদুলীতে আমার কোন আস্থাও নেই।
এখানে মন্তব্য করতে গেলে পুরো পেজ ওপেন হতে চাচ্ছে না। বেশ কয়েকবার রিফ্রেশ করার পর আসে। এই কারণেও মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকবো।
@মাহফুজ,
মাহফুজ, ভাই, তুমি আমার হৃদয় ভিজিয়ে দিয়েছ। মুক্তমনার প্রতি প্রকৃত ভালবাসা না থাকলে এত সুন্দর করে প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
আগেও জিজ্ঞেস করেছি। আবার করছি – বাংলাদেশের কোন জায়গাটায় থাক তুমি। আমি ডিসেম্বরে আসার কথা ভাবছি। দেখা হতে পারে কি? সৌজন্য সাক্ষাত আর কি!
@নৃপেন্দ্র সরকার,
ই-বার্তাই কি আমার অবস্থানের জবাব পাননি?
আপনার মত এত দামী ব্যক্তির সাথে দেখা হওয়া তো আমার জন্য সৌভাগ্যের ব্যাপার। সেই কপাল কি আমার আছে? আপনি বাংলাদেশে এলে আমিই চেষ্টা করবো দেখা করতে। আমার মনে আছে একবার বইমেলায় আগামী প্রকাশনীতে হুমায়ুন আজাদ স্যারের সাথে দেখা করতে গেলাম। প্রচণ্ড ভীড় ঠৈলে তার কাছে পৌছলাম। তারই লেখা ‘আমার অবিশ্বাস’ বইটি তার দিকে এগিয়ে দিলাম। তিনি কভার উল্টিয়ে লিখলেন- মাহফুজের জন্য শুভেচ্ছা। নিচে তার অটোগ্রাফ।
আপনি যখন দেশে আসবেন তখন হয়তো একটি খাতা নিয়ে বলব- অটোগ্রাফ প্লিজ।
@মাহফুজ,
তুমি আস্ত একটা পাগল। তুমি একটা বেহায়াও বটে। কার সাথে কার তুলনা করো। তোমার এই ফান আমার ভাল লাগল না।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
দাদা
পাগল, বেহায়া বিশেষণে আমার মায়েও আমাকে ভূষিত করে থাকেন। ভূসি তো আমি অনেক আগেই হয়ে আছি। নতুন করে দিয়ে লাভ নেই।
যখন আপনার আকা ছবিকে পাবলো পিকাসো কিম্বা লিউনার্দো দ্যা ভিঞ্চিও ফেইল বললাম তখন তো সেটাকে গদ গদ চিত্তে গ্রহণ করলেন।
আর এখন আজাদ স্যারের সাথে তুলনা করাটাকে ভালো বোধ করতে পারছেন না কেন? আজাদ স্যার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক, আপনিও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। তিনি ভাষা গবেষক, আপনিও কৃষি গবেষক, (অবশ্য এখন কৃষি যন্ত্রপাতি বাদ দিয়ে কম্পিউটার প্রকৌশলে অধ্যাপনা ও গবেষণায় নিয়োজিত।) তাহলে পার্থক্যটা কোথায়?
আপনার প্রতিও আমার প্রচুর শ্রদ্ধা থাকা উচিত।
অবশ্য ড. হুমায়ুন আজাদ বলেন- কারো প্রতি শ্রদ্ধা অটুট রাখার সর্বোত্তম পন্থা হচ্ছে- তার সাথে কখনো সাক্ষাত না করা।
@অভিজিৎ,
এই স্রেফ রসিকতা কখন যে জটিলতায় রূপান্তরিত হয়ে গেছে খবরই রাখিনি। তার ভালই দন্ড দিলাম।
স্রেফ রসিকতাও বোধ করি থাকা উচিত নয়।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
দাদা,
কৃষ্ণ করলে লীলা খেলা, আমি করলেই দোষ!
@মাহফুজ,
তোমার রস কমেনি।
@মাহফুজ,
আপনার এক লাইনের এই বাক্যটাই সকল ভুল বুঝাবুঝি নিরসনে যথেষ্ট ছিল বলে আমার মনে হয়।
অনুমান করি মডারেটর বৌর্ডে একাধিক সদস্য জড়িত আছেন, তাই পাঠক ও লেখকবৃন্দের ব্যাপারে এককভাবে কোন সিদ্ধান্ত না নেয়ার পক্ষেই আমার অভিমত থাকবে।
ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতির অবতারণা যেন না ঘটে, সে লক্ষ্য মাথায় রেখে, চলুন আমরা সবাই সামনে অগ্রসর হই।
@আকাশ মালিক,
ঠিক তাই। ধন্যবাদ।
চলুন, কারও নতুন লেখা থাকলে সেই দিকেই মনোযোগ দিই।
পরবর্তী অংশ পড়ার অপেক্ষায় রইলাম…