রৌমারী মুক্তাঞ্চল আজ একটি বিস্মৃতপ্রায় নাম। অথচ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে রৌমারী রণাঙ্গন ছিল একটি অনন্য নাম, ছিল আমাদের কাছে প্রেরণার উৎস, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এবং আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম তাদের কাছে একটি অবিস্মরণীয নাম। ৭১’ এর সেই রক্তঝরা দিনগুলিতে রৌমারী মূল চড়, রাজীবপুর চড় এবং ব্রহ্মপুত্রের বুকে ছোট বড় অসংখ্য চড় ও দ্বীপমালা নিয়ে গড়ে উঠেছিল সেদিন যুদ্ধাবস্থা বাংলাদেশের সবচাইতে বড় ও বিশাল মুক্তাঞ্চল। শুধু পুরাতন রৌমারী থানার অন্তর্ভুক্ত মূল রৌমারীর মুক্ত্ঞ্চলের আয়তন ছিল ১২০ বর্গমাইলেরও বেশী। এই এলাকা আক্রমণকারী পাক বাহিনী দ্বারা অধিকৃত হয়নি কোনদিন- গাঢ় সবুজের জমিনে আঁকা বাংলাদেশের সোনালী মানচিত্র ও রক্তলাল সূর্যখচিত বাংলাদেশের পতাকা সব সময় গর্বভরে আকাশে উড্ডীন ছিল মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময় জুড়ে। এর কৃতিত্ব রৌমারীর সাধারণ মানুষের, আর অদম্য সাহসী মুক্তিসেনাদের, যারা রৌমরীর প্রতিরক্ষায় নিয়োজিত ছিল – জীবনকে বাজী রেখে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতীক রৌমারীর স্বাধীনতা ভুলুণ্ঠিত হতে দেন নি … (এরপরে পড়ুন এখানে) :pdf:
মুক্তিযুদ্ধে রৌমারী
By অজয় রায়|2009-12-17T12:07:49+06:00ডিসেম্বর 17, 2009|Categories: বাংলাদেশ, মুক্তমনা, মুক্তিযুদ্ধ, স্মৃতিচারণ|Tags: মুক্তিযুদ্ধে রৌমারী|4 Comments
About the Author: অজয় রায়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও লেখক।
অসাধারন একটি লেখা। রৌমারি যে মুক্তিযুদ্ধকালীন পুরো নটি মাসই স্বাধীন ছিল এটা জানা ছিল না।
ক্যাপ্টেন নওয়াজেশের কথা পড়ে খারাপ লাগল। এ মহান যোদ্ধাকে জিয়া হত্যার ষড়যন্ত্র মামলায় ফাসী দেওয়া হয়।
কামালপুরের যুদ্ধকে অনেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ সম্মুখযুদ্ধ হিসেবে ধরেন।
স্রদ্ধেয় স্যার,
আমি আপনার এক অতি পুরনো ছাত্র, তবে সাবসিডিয়ারির ছাত্র ছিলাম বলে আমাকে মনে থাকার কোনই কারণ নেই। আপনার লেখাটি পড়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন আমাদের তখনকার হৃদয় স্পন্দনের শব্দ গুলো যেন আবার কানে বেজে উঠলোঃ ভুরুঙ্গামারী, চিলমারী, ছাগলনাইয়া, কসবা, এলেঙ্গা, হালুয়াঘাট, বক্সীগঞ্জ, কামালপুর, তেলিয়াপাড়া, হিলি, রামপুরা পাওয়ার ষ্টেশন। সেইসব দিনগুলোতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে শোনা এই শব্দগুলোই আমাদের বেঁচে থাকতে সাহস যোগাতো। এতো দরদে লেখা বাংলাদেশের কোন রণাঙ্গনের পূর্ণাংগ কোন বর্ণনা এর আগে পড়েছি বলে মনে হয় না। চল্লিশ বছর আগে ক্লাশে আপনার চেহারায় ছাত্র বাৎসল্য ও সমমর্মিতা যেমন দেখেছি, আজকের লেখাতেও তাই দেখতে পারলাম। এই বয়সেও আপনি এত পরিশ্রম করে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্যে আমাদের ইতিহাস লিখে যাচ্ছেন, তার জন্যে আপনাকে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই। আশাকরি এই লেখাটি পড়ে আমাদের অন্যান্য সেক্টরের হৃদয়াগ্রহী ও নির্ভরযোগ্য দলিল লিখতে অন্যেরা উৎসাহিত হবেন।
আপনি ভাল থাকবেন।
শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক অজয় রায়,
আপনার মুক্তিযুদ্ধ এবং তৎকালীন প্রত্যক্ষ অভিঞ্জতা সমৃদ্ধ আরোও লেখা আমি বিভিন্ন সময় পত্র-পতিকায় দেখেছি এবং পড়েছি। আপনার এই সব লেখাগুলো বই আকারে পেতে চাই। এ তথ্য গুলো হাড়িয়ে গেলে আপনারা আপনাদের কালে যে শিখা জ্বেলেছিলেন আমাদের বা আমাদের উত্তর কালের প্রজন্ম সেই প্রদীপ বহনের মানসিক সক্ষমতা হয়তো হাড়িয়ে ফেলবে। আপনার আরোও আরো লিখা পড়তে চাই। কারন, আপনারাই আজ এই দুর্ভাগা জাতির জীবন্ত ইতিহাস।
ইতিহাসের এই গৌরবোজ্জ্বল কাহিনীগুলো দলিলবদ্ধ থাকা প্রয়োজন।