(প্রথমেই সরল স্বীকারোক্তি: বেশীরভাগই কমন পড়ে যাবে- হাসি আসবে না: দয়া করে দোষ দিয়েন না)
আমার প্রথম কৌতুকটি সামহোয়াইনব্লগে কয়েকজনের পোস্টে দেখেছি। নিজের ভাষায় পুনর্লিখন করছি:
কৌতুক এক:
এক ধার্মিক ব্যক্তি আর এক নাস্তিক পাশাপাশি হাটছিল। ধার্মিক ব্যক্তি স্বভাবসুলভ পাশের ব্যক্তিটিকে নামাজ-রোজা এসবের ফজিলত বর্ননা শুরু করতেই নাস্তিক ব্যক্তির প্রশ্ন: আপনি আল্লাহরে বিশ্বাস করেন?
ধার্মিক ব্যক্তি একটু থতমত খেয়ে জবাব দেয়: হ্যা।
নাস্তিক: কেন?
ধার্মিক: বাহ, আমাদের সৃষ্টিকর্তা, আমাদের পালনকর্তাকে বিশ্বাস করবো না?
নাস্তিক মহাশয় এবার একটা ব্যঙ্গ হাসি হেসে বললো: আপনি দেখেছেন কখনো আল্লাহকে? আর, আল্লাহকে মানতে গেলে তো ভাগ্যকেও মানতে হয়- ভালো আর মন্দ তাহলে তো সবই আল্লাহরই কাজ- তাতে আমাদের কি কোন হাত আছে?
নাস্তিকের প্রশ্ন দুটি শুনে ধার্মিক ব্যক্তি কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলো। তারপর, হঠাৎ করেই একটা ইট তুলে- নাস্তিকের মাথায় মেরে বসলো।

থানা-পুলিশ হয়ে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ালো। বিচারক ধার্মিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করলেন: আপনাকে ঐ ব্যক্তি দুটো প্রশ্ন করলো- আর আপনি তাকে এভাবে আঘাত করলেন? বেচারি কত ব্যথা পেলো!
ধার্মিক ব্যক্তি: আমি তার দুটি প্রশ্নের জবাব এক ইট দিয়ে দিয়েছি।
বিচারক: সেটা কিভাবে?
ধার্মিক ব্যক্তি: সে বলেছে যা দেখা যায় না,তা বিশ্বাস করা যায় না। তাহলে সে যে ব্যথা পাচ্ছে তা তো আপনি আমি কেউ দেখছিনা। সে শুধু অনুভব করছে।
বিচারক: আর, দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর?
ধার্মিক ব্যক্তি: ওটা তার কপালে লেখা ছিল।
*****************
মনে হয়- ১ম কৌতুকটি ফ্লপ, একটুও হাসি আসেনি- তাই না? আমারো আসতো না- কিন্তু এটাকে কৌতুক হিসাবে চালানোর প্রচেস্টায় খুব হাসি পেয়েছিল। প্রচেস্টাটা বেশ অভিনব- গল্প বা কৌতুকের ছলে- নাস্তিকদের দুটো প্রশ্নের জবাব কি সুন্দর দেয়া হলো! আমি অবশ্য ভাবছি- তার পরের ঘটনা। বিচারক কি করবেন? ইট মারার অভিযোগে নিশ্চয়ই ধার্মিক ব্যাটার শাস্তি হবে। এবং এই রায়টাকেই বলা হয় ইহজাগতিক। ইহজাগতিক এই কারণে যে- বিচারক তার রায় দিবেন নাস্তিকের ব্যথার কথা শুনে নয়- দিবেন ঘটনার কারণে- ঘটনাটি হচ্ছে, ইট দিয়ে নাস্তিকের মাথায় আঘাত করা হয়েছে এবং এটি ধার্মিক ব্যক্তির হাতে ছিল, নাস্তিক ব্যক্তি ঘটনাটি দেখেছে- ধার্মিক ব্যক্তিও স্বীকার করছে এবং আশে পাশের দু একজন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য এর প্রমান- যার ভিত্তিতে বিচারক রায় দিতে পারেন। (কৌতুকটি থেকে শিক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে: যুক্তিতে না পারলে বা জবাব দিতে না পারলে- ইট-ই ভরসা!!)

এবারে দ্বিতীয় কৌতুকে যাওয়া যাক। এটি বাচ্চাকালে শোনা এবং তখনও আমি মোটেই নাস্তিক নই।
কৌতুক দুই:
এক মুসলমান অন্ধ ব্যক্তি ধর্ম-কর্মের ব্যাপারে খুবই উদাসীন। এমনকি জুম্মার নামাজটাও সে পড়তে যায় না। সুরা-দোয়া-দরুদ কিছু তার মুখস্ত নেই। পাড়ায় সবাই খুব নিন্দে করে। নিন্দে শুনে তার বউ এর খুব মন খারাপ হয় এবং এসে স্বামির সাথে খুব হাম্বিতাম্বি করে। কিন্তু অন্ধ লোকটি যেমন তেমনই থাকে; খালি হাই তুলে বলে: অন্ধ মানুষ- আল্লাহ নিশ্চয়ই সব ভুল-চুক মাফ করে দিবেন।

পাড়ার মসজিদের ইমামের কাছে অনেকেই নালিশ তুলেন। ইমাম নিজে খোড়া, তাই অন্ধলোকটির প্রতি কিছুটা সহানুভূতি ছিল। কিন্তু তিনিও শেষ পর্যন্ত আর ধৈর্য রাখতে পারলেন না- অন্ধলোকের বাড়িতে গিয়ে ফতোয়া দিয়ে আসলনে- পরের জুম্মায় তাকে যদি মসজিদে না দেখা যায়- তবে তাদেরকে একঘরে করা হবে। শুনে অন্ধলোকের বউ তো কেদেকেটে একাকার, সেও জানিয়ে দিলো- এবারের জুম্মায় তার স্বামি না গেলে- সে আত্মহত্যা করবে। উপায়ন্তর না দেখে জুম্মাবারে নামাজ পড়তে অন্ধলোকটি মসজিদে গিয়ে হাজির।

জামাতে অনেকের সাথে দাড়িয়েছে নামাজ পড়ার জন্য। ইমাম আল্লাহু আকবর বলে নামাজ শুরু করেছে। সুরা পাঠ শুরু হয়েছে- আলহামদুলিল্লাহ…। অন্ধলোকটি শুনছে আর ভাবছে- এগুলো কি বলছে, এসবের মানে কি? কিছুই বুঝতে পারছে না – বুঝার চেস্টা করছে- বুঝা যাচ্ছে না: এমন সময় দেখে ইমামের একটি বাক্যের আংশিক সে বুঝতে পারছে: ইয়া কানা বুদুয়া ইয়া কানাস্তাইন…। কিন্তু শুনেই তো অন্ধলোকের পুরা মাথা গরম। সে কানা বলে তাকে নিয়ে মশকরা! ল্যাংড়া ইমামের মনে তাহলে এটাই ছিল! তাকে ডেকে সকলের মধ্যে এমন অপমান!

অন্ধলোকটি দমার পাত্র না, সে কোনমতেই ছাড় দিতে রাজী হলো না। সেও চিৎকার করে উঠলো: ইয়া ল্যাংড়া বুদুয়া ইয়া ল্যাংড়াস্তাইন….
***************
বাচ্চাকালের কৌতুকে যতখানি উইট থাকে আর কি! যাহোক, পরে আরেকটি ঘটনার সময়ে এই কৌতুকের কথা আবার মনে পড়ে। বেশ কয়েক বছর আগের ঘটনা। জনকন্ঠে ফতোয়া বিরোধী একটা লেখা নিয়ে মোল্লারা বিশাল চিল্লাফাল্লা করেছিল, কোরআন বিকৃতির অভিযোগে ঐ প্রবন্ধের লেখক, সম্পাদক-উপসম্পাদক অনেকের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছিল। ঐ লেখাটিতে কি ছিল? ফতোয়াবাজরা কি করে কোরআনকে ব্যবহার করে ফতোয়া দেয় তার একটা উদাহরণ ছিল গল্প আকারে। এক বিধবার একমাত্র সম্বল তার বলদটির দিকে দেবরের লোভাতুর দৃষ্টি পড়ে (ভাবীর দিকেও- কেননা একদম নিঃস্ব হয়ে পড়লে ভাবী বাধ্য হয়ে..)। দেবর টাকা পয়সা দিয়ে গ্রামের মাতুব্বর ও ইমামকে হাত করে। দেবরের নাম ছিল আমিন। সালিশ অনুষ্ঠিত হয়: বিধবা তার দুগ্ধপোষ্য শিশুটিকে নিয়ে হাজির হয়। সালিশের বিষয়- বিধবা মহিলার স্বামির মৃত্যুর পরে বলদের প্রকৃত মালিক কে? বিধবা? তার দুগ্ধপোষ্য শিশুটি? নাকি শিশুটির চাচা আমিন? ইমাম সাহেব কোরআন থেকে ফতোয়া দেন: “আত ত্বীন”- মানে তোমরা তিনজন। …. “বালাদাল আমিন”- মানে বলদ আমিনের। সুতরাং বলদটি আমিনের। ইত্যাদি।

এই ঘটনার পরে মনে হয়েছিল- বাচ্চাকালের “কানা বুদুয়া”কে “ল্যাংড়া বুদুয়া” যারা বানিয়েছিল- তাদেরো নিশ্চিত কাফের ঘোষণা করা উচিত ছিল। তবে মনে আছে- ঐ সময়ে এই গল্পটি যে বলেছিল- বা যারা শুনেছিলাম- সবাই আস্তিক ছিল। কারো কোরআন বিকৃতির কথা মাথায়ও আসেনি। ভাবি- আহা আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম।

তিন নম্বরটা বেগম রোকেয়ার রচনা সমগ্র থেকে নেয়া। এবং মূল ভাবটি ঠিক রেখে এটি নিজের মত করে আমার তৈরি:
কৌতুক তিন:
মসজিদের ইমাম মসজিদেই এলাকার বাচ্চা – কাচ্চাদের কায়দা-আমপাড়া শেখান। তো, একদিন শহর থেকে মাদ্রাসার বড় হুজুর আসাতে ইমাম সাহেব ভাবলেন, বাচ্চাদের সাথে বড় হুজুরের সাক্ষাৎ হলে মন্দ হয় না। যেমন ভাবা তেমন কাজ।

বড় হুজুর এসে বাচ্চাদের উদ্দেশ্যে ধর্ম-কর্ম নিয়ে কিছুক্ষণ ওয়াজ নসিহত করলেন। তারপরে চলে যাওয়ার আগে কি মনে করে যেন- বাচ্চাদের কাছে এক এক করে জিজ্ঞেস করতে লাগলেন- বড় হয়ে কে কি হতে চায়।
: বল তো বাবা, বড় হয়ে তুমি কি হতে চাও?
: আমি বাবার মতো কৃষক হবো।
: বাহ বেশ ভালো, বেশ ভালো। মানুষের ক্ষুদা নিবারনে কাজ করা খুবই সোয়াবের কাজ।
আরেকজনের দিকে তাকিয়ে: তো তুমি বলতো বাবা- কি হতে চাও?
: আমি বড় হয়ে শিক্ষক হবো।
: মা’শাল্লাহ। এটা আরো ভালো। মানুষের আত্মার ক্ষুদা নিবারণ হবে তাতে। এটাতে অনেক সোয়াব হবে।
আরেকজনকে: তুমি কি হতে চাও?
: আমি হুজুর হবো।
: মা’শাল্লাহ! আলহামদুলিল্লাহ! এটা তো সবচেয়ে ভালো কাজ। মানুষের ইহজগত-পরলোক সমস্ত ক্ষুদা নিবারণে তুমি কাজ করবে। আল্লাহ অনেক খুশি হবেন- অনেক সোয়াব দিবেন। …
উচ্ছাস একটু কমলে বাচ্চাটিকে আবার প্রশ্ন করেন: আচ্ছা বাবা, তোমার কেন এমন হুজুর হতে ইচ্ছা?
: আমরা খুব গরীব, ঠিক মত খাবার পাই না। তারপরেও যখন বাসায় হুজুর আসেন- মা বাসার মুরগী জবাই করে ওনাকে খুব যত্ন করে খাওয়ান।
***********

কৌতুকটি পড়ে ঠিক হাসি না, একটু মন খারাপ হয়ে যায়। এবার তাহলে আর মন খারাপের দরকার নেই। যে কৌতুকটি খুব হাসিয়েছিল, এবার সেটিই হোক:
কৌতুক: চার
দুই বন্ধু, একজন আস্তিক আরেকজন নাস্তিক।

একদিন দুই বন্ধু মিলে পাখি শিকারে গেল। তো, প্রতিবার গুলি করে পাখি মরছিল না- আর নাস্তিক বন্ধু বিরক্তির স্বরে বলে উঠে: ধুর! বালটা মিস হয়া গেল!!
শুনে আস্তিক বন্ধু কানে হাত দিয়ে সংশোধন করে দেয়: আমরা আমাদের মুখ সামলে রাখি, নচেত আল্লাহ রাগ করিবেন…
নাস্তিক বন্ধু সরি-টরি করে আবার পাখি শিকারে ব্যস্ত হলো।

আবার কিছুক্ষণ পরে টার্গেট করে গুলি ছুড়লো- কিন্তু পাখি মরলো না। বিরক্ত হয়ে বলে উঠলো: ধুর! বালটা আবার মিস হয়া গেল!!
: আমরা আমাদের মুখ সামলে রাখি, নচেত আল্লাহ রাগ করিবেন… (একটু রাগত স্বরে ও উচ্চস্বরে)
: সরি সরি…

আবার একই ঘটনা….
: ধুর! বালটা মিস হয়া গেল!!
: আমরা আমাদের মুখ সামলে রাখি, নচেত আল্লাহ রাগ করিবেন… (আরো রেগে আরো চিৎকার করে)
: সরি সরি সরি…. (প্রায় হাত-পা ধরা অবস্থা)

কিছুক্ষণ পর। একটা পাখির দিকে টার্গেট করেছে নাস্তিক বন্ধু, গুলি ছুড়লো- কিন্তু আবারো মিস…
: ধুর! বালটা মিস হয়া গেল!!
: আমরা আমাদের মুখ সামলে রাখি, নচেত আল্লাহ রাগ করিবেন… (এবারে চরম ক্ষেপে গিয়ে সহ্যের শেষ সীমায় পৌঁছে চিৎকার করে)
: স……..

নাস্তিক বন্ধুটি কথা শেষ করতে পারলো না…….
তার আগেই প্রচণ্ড আওয়াজ হয়ে একটি বাজ নেমে আসলো….
দেখা গেল- সেই বাজে আস্তিক বন্ধুটি মরে পড়ে আছে…..

এবং….

আকাশ থেকে একটি গায়েবী আওয়াজ শোনা গেল
: ধুর! বালটা মিস হয়া গেল!!
**********************************
এটি শুনে এক আস্তিক বন্ধু “কি হলো” “কি ঘটলো” জিজ্ঞেস করতে করতে শেষে মন্তব্য করল: “যাক! অন্তত- এটাতো স্বীকার করা হয়েছে যে ঈশ্বর আছে!” এই মন্তব্যটা কৌতুকের চেয়ে সামান্য কম হাসায়নি আমদের।

আসলে কৌতুকে আদিরস যুক্ত হওয়াটাই যেহেতু রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে- সেহেতু এসব রস ছাড়া কৌতুকে হাসানোটা কঠিন। এটা জেনেও- সে পথে যাচ্ছি না। মোল্লা-হুজুরদের নিয়েও কিছু কৌতুক প্রচলিত আছে, কিন্তু ঐ ব্যক্তিদের নিয়ে খালি খালি হাসি তামাশা করতেও মন চাচ্ছে না। এবারে আমার পরবর্তী কৌতুক…
কৌতুক: পাঁচ
মধ্যযুগের কাহিনী। এক অত্যাচারী রাজা তার বিপরীত মত পথের লোকদের নির্বিচারে ধর-পাকড়, এমনকি হত্যা পর্যন্ত করছিল- এমন সময়কার ঘটনা। ঘটনাচক্রে এক খৃস্টান, এক মুসলমান আর এক নাস্তিক ধরা পড়লো- রাজার বিরোধিতা করার অপরাধে তাদের মৃত্যুদন্ডের রায়ও হলো।

নির্ধারিত দিনে এক এক করে তাদেরকে গিলোটিনে চড়ানোর জন্য নেয়া হলো। প্রথমে খৃস্টান ব্যক্তির পালা। তাকে বলা হলো: মরার আগে শেষবারের মতো প্রার্থনা করতে চাইলে সে করতে পারে। খৃস্টান ব্যক্তিটি আকাশের দিকে তাকিয়ে প্রার্থণা করলো: “আমাকে আমার পিতা যেশাসই রক্ষা করবে”। এরপরে সে গিলোটিনে তার মাথা গিলোটিনে রাখলো। কিন্তু অবাক ব্যাপার! দেখা গেলো- ধারালো ব্লেডটি সাই সাই করে নামতে নামতে হঠাতই তার মাথার ইঞ্চিখানেক উপরে এসে থেমে গেলো।
জনতা গুঞ্জন করে উঠলো: কি অলৌকিক! কি অলৌকিক!

এবারে, মুসলমানের পালা। তাকেও শেষবারের মত প্রার্থনা করার সুযোগ দেয়া হলো। সে দু হাত উপরে তুলে আর্জি জানালো: ” আমাকে আল্লাহ পাক-ই রক্ষা করবেন”। প্রার্থনা শেষে মাথা গিলোটিনে রাখলো। এবং এবারেও অবাক করে- ব্লেডটি ঠিক মাথার কাছে এসে আটকে গেলো।
জনতার মাঝে আবার গুঞ্জন উঠলো: কি অলৌকিক! কি অলৈকিক!

সব শেষে নাস্তিকটির পালা। তাকে প্রার্থণা করতে বলা হলো। সে চুপচাপ দাড়িয়ে থেকে- গিলোটিনটির দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়েই থাকলো। কয়েকবার বলার পরেও যখন সে একইরকম চুপ থাকলো- তখন তার মাথাটি ধরে গিলোটিনের নীচে রাখা হলো। ব্লেডটি নামানো হবে হবে- এমনই সময়ে সে কথা বলে উঠলো: “বোধ হয় আমি কারণটি ধরতে পেরেছি। বোকা, নীচ থেকে একফুট উপরে একটা আংটায় আটকে যাচ্ছে এটা বারেবারে- ওটা সরাও”।
******************
এক আস্তিকের কাছ থেকে শুনেছিলাম- ব্যাপক হাসছিলো নাস্তিকদের বেকুবগিরি দেখে। কিন্তু- আমার কাছে এই বেকুব নাস্তিক ক্যারেকটারটা অসাধারণ লেগেছিল। হয়তো বা- নিজেও অমন বেকুব হতে চাই বলেই।

এবারে, আজকের মতো শেষ কৌতুকটি বলি। (আদিরসের হালকা ছোয়া আছে)
কৌতুক:ছয়
বিশ্ববিদ্যালয়ের মিড-টার্ম পরীক্ষার একটি প্রশ্ন:
দোযখ কি তাপোৎপাদী (exothermic) না কি তাপহারী (endothermic)? ব্যাখ্যা সহ লিখো।
বেশীরভাগই বয়েলের সূত্র থেকে ও আরো কিছু ভেরিয়েবল দিয়ে নিজেদের জবাবের পক্ষে যুক্তি হাজির করলো। (গ্যাস প্রসারিত হলে তা তাপমাত্রা হারায় বা সংকোচিত হলে তাপমাত্রা বাড়ে… ইত্যাদি)

যাহোক এক ছাত্রের খাতায় একটু ভিন্ন আঙ্গিকের আলোচনা পাওয়া গেলো:

“প্রথমত আমাদের দেখতে হবে- দোযখে মানুষের সংখ্যা বাড়ছে, না কি কমছে, না কি অপরিবর্তিত থাকছে। এটা বের করার জন্য আমদের দেখতে হবে- দোযখে প্রবেশ করা আত্মার সংখ্যা এবং দোযখ থেকে চলে যাওয়া আত্মার সংখ্যা কেমন।

আমার মনে হয়- কোন আত্মা একবার দোযখে ঢুকলে সে আর বেরুবে না। এমনটি ঘটলে ধরেই নেয়া যায় দোযখ থেকে কেউ বের হচ্ছে না। ফলে যা ঘটতে পারে তা হচ্ছে কেবল আত্মার দোযখে অনুপ্রবেশ। সুতরাং কিরকম সংখ্যায় আত্মা দোযখে ঢুকছে।

আমরা দুনিয়ায় নানা ধর্ম আছে, এবং প্রতি ধর্মই বলছে নিজ ধর্ম ব্যতিত অপর ধর্মের প্রতিটি মানুষই দোযখে যাবে। সে হিসাবে যেকোন মানুষই তার নিজ ধর্মের বাইরে অন্য যেকোন ধর্মের চোখে দোযখগামী। অর্থাৎ- যেহেতু কোন একজন মানুষের পক্ষে একই সাথে দুনিয়ার সকল ধর্মের অনুসারী হওয়া সম্ভব নয়- সুতরাং, বুঝাই যাচ্ছে- দুনিয়ার সর্ব যুগের সব মানুষই দোযখে যাচ্ছে।

যুগে যুগে মানুষের জন্মহার ও মৃত্যুহার দেখে আমরা বুঝতে পারি যে, দোযখে প্রবেশকারী আত্মার সংখ্যা এক্সপোনেনশিয়ালি বাড়ছে। দোযখে আত্মা প্রবেশের হার ও দোযখের প্রসারণের হার তুলনা করেই আমরা বুঝতে পারবো- এটা এক্সোথার্মিক- নাকি এন্ডোথার্মিক।

কেননা বয়েলের সূত্র থেকে আমরা জানি যে, দোযখের তাপমাত্রা ও চাপ একই রাখতে হলে- দোযখে আত্মার অনুপ্রবেশের হার অনুপাতে দোযখকেও প্রসারিত হতে হবে। এখান থেকে আমরা দু ধরণের অনুসিদ্ধান্ত টানতে পারি:
১। যদি আত্মা প্রবেশের হার দোযখ প্রসারণের হার অপেক্ষা অধিক হয়- তবে চাপ বাড়বে এবং তাপমাত্রাও বাড়িতে থাকিবে যতক্ষণ না পর্যন্ত দোযখ তার সম্প্রসারণের শেষ সীমায় পৌছাইয়া বিস্ফোরিত হইতেছে। অথবা,
২। যদি আত্মা প্রবেশের হারের তুলনায় দোযখ প্রসারণের হার অধিক হয়- তবে তাপমাত্রা কমিতেই থাকিবে যতক্ষণ না দোযখ একেবারে জমিয়া যাইয়া প্রসারণ বন্ধ করিয়া দিতেছে।

এ প্রসঙ্গে চুড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য- গত গ্রীষ্মে আমার বান্ধবীর কথাটি উল্লেখ করা আবশ্যক, সে বলেছিল: “আমার সাথে শু’লে দোযখেও তুমি শীত অনুভব করবে”। যেহেতু, আমার বান্ধবীর কিছুদিন হলো অন্যত্র বিবাহ হয়েছে- সেহেতু, ধরে নেয়া যায়- ২ নং অনুসিদ্ধান্তটি ঘটিবার সম্ভাবনা নাই বললেই চলে।

অতএব, বুঝাই যাচ্ছে- দোযখ অবশ্যই এক্সোথার্মিক”।

এই ছাত্রটি এ+ পেয়েছিল।
*******************
আজ এ পর্যন্তই।
আশা করবো- আপনারাও আপনাদের কালেকশন দিয়ে এই পোস্টকে আরো সমৃদ্ধ করবেন। সবাইকে ধন্যবাদ।