রাষ্ট্র মানেই একটা নাম থাকে, একটা পতাকা থাকে,একটা মানচিত্র থাকে, লিখিত হোক বা অলিখিত হোক একটা সংবিধান থাকে, জাতীয় সংগীত থাকে ।
বিশ্বকাপ ফুটবলে দেখেছি খেলার আগে অংশগ্রহণকারী দেশের জাতীয় সংগীত গায় সে দেশের পাতাকা নিয়ে। অলিম্পিক প্রতিযোগিতায় দেখেছি কোন দেশের প্রতিযোগী জয়ী হলে সে দেশের পতাকা উড়িয়ে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়। নিজের দেশের প্রতিযোগীর জয়ী হবার তেমন সাক্ষী হতে না পারলেও অন্য দেশের খেলোয়ারদের আবেগে আপ্লুত মুখমন্ডল দেখে ঐ সব দৃশ্য অনেকের মতো আমাকেও আলোড়িত করে। অনেক সময় চোখের কোণায় জলও অনুভব করি।
সেখানে ভূখন্ড না গেলেও রাষ্ট্র যায়,দেশ যায়। সরকারও যায়। কারণ সেখানে নিয়ম কানুন আছে। খেলোয়াররা সুশৃঙ্খল থাকে। নিজের আইন ও আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি অনুগত থাকে। খেলোয়ারের নিজের থেকে নিজের রাষ্ট্রকে – নিজের দেশকেই সমুন্নত করা হয়।অলিম্পিকে কে শব্দটির চেয়ে কোন দেশ কয়টি সোনা জিতল — এ খবরই প্রাধান্য পায়। কাজেই এ বিষয়ে দেশের মুখকে উজ্জ্বল — সমুজ্জ্বল করা হয়েছে বলে খবর প্রকাশিত হয়।
ছোটবেলায় পৌরনীতিতে পড়েছি চারটি উপাদান নিয়ে রাষ্ট্র গঠিত। সেগুলো হলোঃ নির্দিষ্ট ভূখন্ড(যা মানচিত্রে প্রতিফলিত),সরকার, জনগোষ্ঠি ও সার্বভৌমত্ব।যে কোন রাষ্ট্রের এ চারটি উপাদান থাকতেই হবে। কিন্তু রাষ্ট্রের কি নেই বা থাকা উচিত নয় তা বলা হয়নি।
কোন এক রাষ্ট্র বিজ্ঞানীর মতে রাষ্ট্র একটি বিমূর্ত ধারণা। আমি সে সব তাত্ত্বিক আলোচনায় যাবার মতো যোগ্যতা রাখি না। আমার মতে, রাষ্ট্রের নেই এবং থাকাও উচিত নয় নির্দিষ্ট—ধর্ম,ভাষা, লিঙ্গ, বর্ণ, নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠি, রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক দল।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আমার রাষ্ট্রের ধর্ম আছে। জন্মের সময় ছিল না। আমার রাষ্ট্রকে ১৯৮৮ সালে ৮ম সংশোধনীর মাধ্যমে খৎনা করিয়ে ধর্ম নিরপেক্ষতা থেকে ধর্মামান্তরিত করা হয়েছে। ধারাঃ ‘২।ক । প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে অন্যান্য ধর্মও প্রজাতন্ত্রে শান্তিতে পালন করা যাইবে।’
যে নীতিতে, যে আদর্শে, যে শর্তে, যে অনুপ্রেরণায় এবং যার জন্যে এ দেশের সব ধর্ম ও নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠি যুদ্ধ করেছিল — প্রাণ দিয়েছিল তা থেকে সরে এসে আরোপিত হলো নতুন লেবাস। অবশ্য ১৯৭৭ সালেই বাংলাদেশের সংবিধানের প্রস্তাবনায় জন্মের পরিচয়কে মুছে ফেলা হলো।
প্রস্তাবনা শুরু হলো ‘ বিসমিল্লাহির- রহমানিও রহিম ( দয়াময়, পরম দয়ালু, আল্লাহর নামে)’
এবং প্রস্তাবনায় সংযোজিত হলোঃ “আমরা অঙ্গীকার করিতেছি যে,যে সকল মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদদিগকে প্রাণোৎসর্গ করিতে উদ্ধুদ্ধ করিয়াছিল সর্বশক্তিম্মান আল্লাহের উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস, জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র এবং সমাজতন্ত্র অর্থাৎ অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুবিচারের সেই সকল আদর্শ এই সংবিধানের মূলনীতি হইবে;”
১৯৭২ সালের সংবিধানে ছিল” ১৯৭২ সালের প্রস্তাবনায় ছিলঃ“আমরা অঙ্গীকার করিতেছি যে,যে সকল মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদদিগকে প্রাণোৎসর্গ করিতে উদ্ধুদ্ধ করিয়াছিল – জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র সমাজতন্ত্র ও ধর্ম নিরপেক্ষতা সেই সকল আদর্শ এই সংবিধানের মূলনীতি হইবে;”
তবে একটু গভীরভাবে বিশ্লেষণ করলে ১৯৭২ সালেও রাষ্ট্র ধর্ম থেকে দূরে থাকেনি। তখনও রাষ্ট্র ধর্মনিরপেক্ষতার মূল অর্থ থেকে দূরে ছিল। উপরন্তু তখনকার সরকার প্রধান ইসলামী সম্মেললে যোগ দিয়েছিল। শুধু ১৯৭৮ সালে ‘আন্তর্জাতিক শান্তি, নিরাপত্তা ও সংহতির উন্নয়ন’ অনুচ্ছেদে আনুষ্ঠানিকভাবে সংবিধানে সংযোজিত হয়েছিল ধারা ২৫।(২) “রাষ্ট্র ইসলামী সংহতির ভিত্তিতে মুসলিম দেশসমূহের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব সম্পর্ক সংহত,সংরক্ষণ ও জোরদার করিতে সচেষ্ট হইবেন।
১৯৭৮ সালের আগেই অর্থাৎ ১৯৭৫ এর আগের সরকার সংবিধানের সংশোধন না করেও মুসলিম দেশসমূহের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব সম্পর্ক সংহত,সংরক্ষণ ও জোরদার করিতে সচেষ্ট ছিল।
রাষ্ট্রকে যখন ধর্মামান্তরিত করা হয় তখন অন্য ধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠি ছিল প্রায় ১৩%। আর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ১৩% খুবই নগণ্য হলেও মানবাধিকারের প্রশ্নে অগ্রগন্য হওয়া উচিত।
অনেকেই বলেন রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম হওয়াতে সংখ্যালঘুদের কী সমস্যা হয়েছে ? ইসলামী প্রজাতন্ত্র তো আর করা হয়নি?
শুধু কী নয় — কী কী সমস্যা হচ্ছে এর সুদীর্ঘ তালিকা তৈরি করা যায়।
আমার পালটা প্রশ্ন — রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম না হলে সংখ্যাগুরু মুসলমানদের কী কী সমস্যা হতো ?
আমার এ প্রশ্নের কী কোন প্রগতিশীল ও ইতিবাচক উত্তর আছে!
জন্ম থেকেই আমার রাষ্ট্র যে অপবাদ নিয়ে শুরু করে তা হলো ভাষা। বাঙালী ছাড়া অন্য প্রায় ৪৪ টি নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠির বাংলা ছাড়া ৩৯টি ভাষার (মতান্তরে) অস্তিত্বকে অস্বীকার করা হয়েছে। রাষ্ট্রের ভাষা হলো বাংলা। বাঙালী ছাড়া অন্য জনগোষ্ঠির শিশুর মাতৃভাষায় শিক্ষা শুরুর কোন সুযোগ রাষ্ট্র দেয়নি। ধারাঃ “৩। প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্র ভাষা বাংলা।”
আমাদের সংবিধানে জাতীয় সংস্কৃতি বলতে বুঝায় বাঙালী সংস্কৃতি। আমার দেশের সংবিধানের ‘জাতীয় সংস্কৃতি’ অনুচ্ছেদের ধারাঃ ২৩। রাষ্ট্র জনগণের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার রক্ষণের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন এবং জাতীয় ভাষা, সাহিত্য ও শিল্পকলাসমূহের এমন পরিপোষণ ও উন্নয়নের ব্যবস্থা করিবেন, যাহাতে সর্বস্তরের জনগণ জাতীয় সংস্কৃতির সমৃদ্ধিতে অবদান রাখিবার ও অংশগ্রহণ করিবার সু্যোগ লাভ করিতে পারেন।
বলার অপেক্ষা রাখে না যে জাতীয় ভাষা ও সাহিত্য বলতে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকেই এবং জাতীয় সংস্কৃতি বলতে বাঙালী সংস্কৃতিকেই বুঝানো হয়েছে। যদিও ১৯৭৮ সালে ‘নাগরিকত্ব’ অনুচ্ছেদের ধারা ৬কে ভাগ করে ১ও ২ উপধারা বানিয়ে ২ এ বাঙালীর পরিবর্তে নাগরিকদের বাংলাদেশী পরিচয়কে স্বীকৃতি দিয়েছেন। জাতিগত সংখ্যালঘুদের বাংলাদেশী বানানো যে ছিল এক রাজনৈতিক চালবাজি ;পার্বত্য চট্টগ্রামে অশান্তি সৃষ্টিই তা প্রমাণ করে।
বর্তমান ট্যাকনোক্র্যাট আইনমন্ত্রী সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল প্রসঙ্গে সচতুরতার সাথে বলেছেন সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল হলেও বিসমিল্লাহির- রহমানিও রহিম পরিবর্তন হবে না।
১৯৭২ সালের পর থেকে ধীরে ধীরে সংবিধান স্ফীত হয়েছে। সব সরকারেরই সংবিধান মোটাতাজাকরণ নীতি ছিল। ধর্ম, ভাষা ও জাতীয়তার এ বৈষম্য দূর করার মতো কোন রাষ্ট্র নায়কের আবির্ভাব বাংলাদেশে এখনো হয়নি। এ জন্মে সে নেতার দেখা পাবার সম্ভাবনা নেই। আমার পরবর্তী প্রজন্মও পাবে না বলেই আমার হতাশা।
-চলবে-
আদিল মাহমুদ,
আমার হতাশার এটাও একটা কারণ। কারণ এ ভয়াবহতা সামাল দেয়ার মতো কেউই নেই। ।
@গীতা দাস,
আমিও সেখানেই হতাশ, আশার তেমন কিছু দেখি না, যা দেখি তা আরো উলটা। অহল্যার ঘুম ভাঙ্গানোর মত কোন পরিবেশ দেখি না।
আদিল মাহমুদ,
রাজনৈতিক দলকে মানুষের মন বুঝে চলতে হয়। আর “মানুষের মন”বলতে কিন্তু সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের মোষ্টিমেয়ের (সংখ্যালঘুর) মন। এ মোষ্টিমেয়ের স্বার্থের উর্ধ্বে উঠার মতো রাজনোইতিক নেতার প্রয়োজন।
আজকের জনগনের চেতনাকে ৭২ এর চেতনায় ফিরিয়ে নিতেও যে সুযোগ্য নেতৃত্ত্বের প্রয়োজন!
@গীতা দাস,
ঠিক, তাজউদ্দিনের মত নেতার প্রয়োযন। তেমন নেতা এ দেশ আর কখনো জন্ম দিতে পারবে কিনা তাতে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
তবে সাথে সাথে বাস্তবতাও মাথায় রাখতে হবে, ৭৫ এর পর থেকে সামরিক শাসকরা যেভাবে ধর্মের ভিত্তিতে জাতিকে সফল ভাবে ভাগ করতে পেরেছে তাতে রাতারাতি কিছু আশা করা ঠিক না। এগুতে হবে কিছুটা ধীরে। এই ২০০৯ সালেই যদি সংবিধান থেকে বিসমিল্লাহ তুলে দেওয়া হয় তাহলে কি তার প্রতিক্রিয়া সেক্যুলার রাজনীতির জন্যও ভাল কিছু হবে? হবে ভয়াবহ।
এই সংখ্যালঘু নিয়ে যতই ভাবি ততই মনে হয় আসলেই হয়ত বিপ্লব বা আগন্তুক যা বলে তাই পুরোপুরি ঠিক। ধর্মীয় পরিচয়ের গন্ডি থেকে পুরো বের না হতে পারলে কি ধর্মের ভিত্তিতে মানুষে মানুষে বিভাজন থেকেই যাবে? তবে কি ধর্ম বাতিল করা ছাড়া উপায় নেই?
আমাদের অঞ্চলে তাই, ধার্মিক হলে জ্ঞাতানুসারে বা নিজের অজ্ঞাতেই অন্য ধর্মের মানষের প্রতি তাচ্ছিল্য এসেই যায়, আমাদের গোটা সামাজিক পরিবেশটাই মানুষকে ওভাবেই শেপ করে
অন্যদিকে আবার দেখি পাশ্চাত্যের লোকেরা প্রথাগত ধর্ম পালন করেও অন্য ধর্মালম্বীদের প্রতি কি অনুকরনীয়ভাবে শ্রদ্ধাশীল হতে পারে। তাই পাশ্চাত্যের দেশগুলিতে মনে হয় বর্ণের ভিত্তিতে যতটা রেসিজম হয় ধর্মের ভিত্তিতে তার ধারে কাছেও না।
দুই সমাজের এই পার্থক্যের পেছনে বিপ্লবের তত্ত্বের বেশ শক্ত ভীত আছে। বিপ্লবের মতে আমাদের অঞ্চলে সম্পদের সীমাবদ্ধতাই মানুষে বেশী সাম্প্রদায়িক হতে মোটিভেট করে।
এ সরকার মনে হয় ৭২ এর সংবিধানে ফেরার কথা চিন্তা ভাবনা করছে, যদিও বিসমিল্লাহ মুছে ফেলা হবে না বলে ঘোষনা দিয়েছে। উপায়ও নেই আসলে। এমনিই তাদের বদনাম আছে হিন্দুদের দল ইসলাম বিদ্বেষী বলে, এরপর বিসমিল্লাহ বাদ দিলে আর পিঠের চামড়া থাকবে?
গীতা দাসের মত আমিও ভাবি, সংবিধানের বিসমিল্লাহ যুক্ত করায় বা রাষ্ট্রকে ঢাকঢোল পিটিয়ে ইসলামী ঘোষনা দেওয়ায় সংখ্যাগুরু মোসলমানদের ধর্ম পালনে কি কি উপকার হয়েছে যা তারা আগে পারছিল না? এরশাদ অবশ্য দাবী করেছিল এতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলি বেজায় খুশী হয়ে আমাদের সাহায্য বাড়িয়ে দিয়েছিল।
@আদিল মাহমুদ,
ভাল লেগেছে আপনার চমৎকার বিশ্লেষন। আজিকার আওয়ামী লীগ শেখ মুজিবের আওয়ামী লীগ নয়। যে আওয়ামী লীগ নিজের নাম থেকে একদিন মুসলিম শব্দটি মুছে ফেলেছিল সে আজ বিসমিল্লাহ মুছতে ভয় পায়। আওয়ামী লীগ ভুত ছাড়াতে পারবেনা কারণ সে নিজেই ভুতগ্রস্থ।
@আকাশ মালিক,
একমত। ৭২ এর আওয়ামী লীগ আর এই আওয়ামী লীগ চিন্তা চেতনে এক নয়।
তবে এর কারন কি তাও আমাদের এড়ানো চলবে না। একতরফা আওয়ামীদের উপর দোষ চাপানো উচিত নয়। রাজনৈতিক দলকে মানুষের মন বুঝে চলতে হয়।
৭২ এর বাংলাদেশের জণগণ আর আজকের বাংলাদেশের জনগন কি এক?
বিপ্লব বাবু ও সৈকত চৌধুরী,
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্যে। তবে শুধু ধর্মীয় নয়, জাতিগত, ভাষাগত, মতাদর্শগত ও লিঙ্গগত সংখ্যালঘুদের সমস্যাও বিবেচনায় আনতে হবে। আমার এ নিয়ে সংখ্যালঘুর মানচিত্র শিরোনামের পর্বেই লেখার পরিকল্পনা রয়েছে।
সংখ্যালঘু শুনতে শুনতে দুই দেশেই কান পচে গেল। গুলি মারা হৌক সংখ্যালঘু কথাটায়। হিন্দু মুসলমান পরিচয়ে। এই সামাজিক পরিচিতির যায়গাটাতে কেও আঘাত করতে চাইছে না। সেটা করতে গেলে ধর্মকে আঘাত না করে উপায় নেই। এবং সেক্ষেত্রে আমাকে ধার্মিকদের ( যারা ধর্মীয় পরিচিতিটা নিজের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে) মানসিক ভারসাম্যহীন বা অজ্ঞ খুব পরিস্কার করেই বলতে হবে। ধর্ম ব্যাপারটাকে অল আউট এটাক করতেই হবে-এবং ধার্মিক এবং ধর্ম যেহেতু আলাদা করা যায় না-ধার্মিকদের নির্বুদ্ধিতা আরো বেশী করে চোখ দিয়ে দেখাতে হবে। আশা করা যায় মড়ারেটররা ধার্মিকদের নির্বোধ বললে আপত্তি তুলবেন না।
ধার্মিক বলতে আমি আস্তিক বোঝাচ্ছি না। একেবারেই না। যারা রিচুয়ালিস্টিক, বা প্রতিশ্ঠানিক ধর্মে বিশ্বাস করে, তারা যে আসলেই মাদকের নেশায় পড়েছে সেটা পরিস্কার করে বলতে হবে।
@বিপ্লব দা,
আপনার সাথে একমত পোষণ করলাম। কিন্তু সমস্যার বিষয় হল আমাদেরকে এমন ভাবে কথা বলতে হবে যাতে ধার্মিক বা ধর্মবিশ্বাসী বা ইশ্বরবিশ্বাসীরা আমাদের কথাকে নিছক তাদের প্রতি আক্রমণ না ভাবে এবং আমাদের কথাগুলোকে বুঝতে পারে। আমি টিক বললাম বা করলাম কিনা তার চেয়েও এ বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। আপনি তো ধার্মিকদের মানসিক ভারসাম্যহীন মনে করেন। তাহলে আপনি কিছু বলার সময় এ বিষয়টি মনে রাখলে কি সুবিধা হয় না? ধার্মিকদের রাগিয়ে মজা দেখতে হয়ত আপনার ভাল লাগে। কিন্তু এরা তো আমাদের সমাজের অংশ । এদের প্রতি আমাদের অবশ্যই দায়বদ্ধতা রয়েছে। যখন এদের দেখি সীমাহীন নির্বুদ্ধিতায় লিপ্ত তখন আমার তাদের প্রতি খুব মায়া হয়। আমি দেখেছি মানুষ শুধু ধর্মের কারণে কিভাবে জীবনটাকেই নষ্ট করে ফেলছে।
প্রায়ই ফুয়াদের প্রসঙ্গ অনেকে তোলেন। উনি কিছু ব্লগে লেখালেখি করেন ও প্রায়ই এখানে লিংক দিয়ে তা পড়তে বলেন। সেদিন উনার লিংক অনুসরণ করে একটা লেখা পড়লাম। তাতে তিনি যা লিখেছেন তা পড়লে হয়ত এ বছর আর আপনাকে কমিক না পড়লেও চলত। তবে লেখাটি পড়ে আমার মনটা ভার হয়ে গেল। আমি খুজে পেলাম না তাকে কি বলি। সে ওতো আমার মত একজন মানুষ। কিন্তু তার একি হল। আমি পারতাম জঘন্য ভাষায় তাকে নিয়ে বিদ্রুপ করতে। কিন্তু এটাকে আমার কাছে নির্মমতা বলে মনে হল। আফটার অল, সে তো একজন ভিক্টিম।
ধর্মের প্রতি আমার সীমাহীন রাগ রয়েছে। ওটা আমার শৈশব ও কৈশরকে বিপন্ন করে তুলেছিল।আজো আমি ধর্মের দ্বারা প্রতি-নিয়তই নিপীড়িত হচ্ছি।
আমি মনে করি আমরা যেহেতু নিজেদেরকে বাস্তববাদি বলি তাই আমাদেরকে ধর্ম ও ইশ্বর সমস্যার বাস্তবমুখি সমাধানের দিকে এগিয়ে যাওয়া উচিত।
ভালো থাকবেন।
@বিপ্লব পাল,
মুক্তমনাদের তো উদার হওয়াই উচিত তাইনা?
মুক্তমনা মানে আপনি কি বোঝাতে চাইছেন?
আমি এখানে নূতন, তবে ব্যাক্তিসাতন্ত্র্য কে আমি শ্রদ্ধা করি,
আমার মনে হয় পুরব ও পশ্চিমের বাণীও তাই।
থাকনা যে যার মতো।
সবার কাছেই শেখার কিছু না কিছু আছে।
আপনি জোর করে কাউকে পরিবরতন করতে পারবেন?
মনোবিজ্ঞানীরা বলেন সম্ভব নয়।
যতক্ষন সে নিজে বদলাবেনা। অপেক্ষা করুন।
পৃথিবীটা বিচিএ বলেই এত সুন্দর! না হলে সবকিছু পানসে মনে হত।
এটা মনে হয় অনেকেই মনে করেন।
মুক্তমনা অনেক উচ্চাঙ্গের!
এর সৌন্দরয দিনে দিনে আকাশ ছোঁয়া হোক কামনা করছি।
আমাদের প্রবাসীদের জন্য মুক্তমনা অক্সিজেনের কাজ করছে।
তাই এর পরিকল্পনাকারীদের আন্তরিক অভি্নন্দন!
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ!
ব্লগে প্রকাশিত পুরোনো সবগুলো লেখা লেখকের নির্দিষ্ট ব্লগে দেখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ব্যাপারটা কাজ করছে কিনা সবাইকে দেখবার অনুরোধ করা হচ্ছে।
স্বাধীনের পরামর্শের বাকি ফীচারগুলো ধীরে ধীরে যোগ করা হবে।
এডমিন
ধন্যবাদ ফরিদকে অতি দ্রুততার সাথে আমার আগের লেখার লিংকটি দিয়ে দেয়ার জন্যে।
অভিজিৎ , প্রযুক্তিতে আমার অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কাজেই ধারাবাহিক পর্ব লেখার উপরে পূর্ববর্তী পর্ব(গুলো)র লিঙ্ক দিয়ে দেয়া আমার পক্ষে কঠিন। তবে শিখতে চেষ্টা করব।
লাইজু নাহার, সংখ্যালঘুরা সব দেশেই বৈষম্যের শিকার।
গীতা দাস,
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপরিচালনায় যারা ছিলেন বা আছেন তাদের
দূরদৃষ্টির অভাবের জন্যই এসব!
এটাই বাস্তবতা!
ইউরোপে বিপুল সংখ্যক মুসলিম বাস করলেও ঈদে সরকারী কোন ছুটি নেই,
চেয়ে নিতে হয়।
পৃথিবীতে সভ্যতার জনক বলে যারা দাবী করে তাদেরই এ অবস্থা!
আর কোথায় বাংলাদেশ!
বাংলাদেশের অন্তত ৮০%লোক শিক্ষিত হলে এ অবস্থাটা থাকবেনা বলে
আমার মনে হয়।
আপনি যে কথাগুলো আজকে বলছেন, ২০ বছর আগে এধরনের লেখা কোথাও
পড়িনি।
আমাদের সবারই উচিত সবধরনের বৈষম্যের প্রতিবাদ করা.
ধন্যবাদ!
স্নিগ্ধা,
পিলখানায় বাংলাদেশ রাইফেলস এর ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারির ঘটনা নিয়ে গত মার্চে সংখ্যালঘুর মানচিত্র ( ১) লিখেছিলাম। তবে আমার ধারণা প্রত্যেকটি পর্বের নিজস্ব একটা সমাপ্তি আছে।
@গীতা দাস, যখন ধারাবাহিক পর্ব লেখেন, তখন লেখার উপরে পূর্ববর্তী পর্ব(গুলো)র লিঙ্ক দিয়ে দিলে ভাল হয়। অনেকসময় নতুন পাঠকেরা সাইটে আসেন, তারা হয়তো আপনার সিরিজটির আগের পর্বের সাথে পরিচিত নাও থাকতে পারেন, তাদের জন্য এই কষ্টটুকু করলে সবার জন্যই উপকার হয়।
তবে, আমারও একটা ভুল হয়েছে। আমি দেখিনি যে, লেখকের ব্লগে প্রকাশিত লেখাগুলোর মধ্যে কেবল শেষ দশটা লেখা দেখা যাচ্ছে। পুরোনোগুলো লেখকের নিজস্ব ব্লগে নেই। দেখি রাতে বাসায় গিয়ে ঠিক করে দেবো। আসলে লেখা পোস্টের পাশাপাশি যদি ব্লগাররা ব্লগের ছোটখাট সমস্যাগুলিও জানাতেন, তবে আমার উপকার হতো। আমার পক্ষে আসলে সবকিছু খেয়াল করা, কিংবা ট্র্যাক রাখা সত্যই অসম্ভব হয়ে উঠেছে।
সবাইকে ধন্যবাদ।
@অভিজিৎ,
সহমত। সবাই ব্লগের ছোটখাট সমস্যাগুলো চোখে পড়লেই জানাতে পারি, সেই সাথে যদি কোন প্রস্তাব থাকে ব্লগকে আরো ব্যবহার বান্ধব করার জন্য সেগুলোও জানাতে পারি।
আমার একটি প্রস্তাব ছিল যদি সম্ভব হয় তবে খারাপ হয় না। প্রথমটি হলে কোন ব্লগে আমি ভিজিট করার পর যদি কোন নুতন মন্তব্য আসে সেটা জানা যেত। বা আমি যে সব ব্লগে মন্তব্য করেছি সেগুলোতে কোন নুতন মন্তব্য এসেছে কিনা সেটা যদি বুঝা যেত তাহলে ভাল হত। যদিও বামের সাম্প্রতিক মন্তব্য দেখে একটি ধারণা পাওয়া যায়।
আরেকটি হল, আমার নিজের মন্তব্যের জবাবে যদি কেউ প্রতিমন্তব্য করেন সেটার একটি notification (অনেকটা ফেইসবুকের মত) যদি আমার ইমেইলে আসতো খুব সুবিধে হত। কেউ মন্তব্য করলে তার জবাব না দিতে পারলে খুব কেন যেন অপরাধবোধ হয়। কিন্তু সব সময় সব মন্তব্যের ট্র্যাক রাখা সম্ভব হয় না।
এই দু’টো জিনিস যদি বেশি ঝামেলার না হয় চেষ্টা করে দেখতে পারেন। মুক্তমনার সদস্যদের ইমেইল করার ব্যবস্থা করা যায় কিনা (without disclosing the email address) সেটও দেখতে পারেন। এইতো। আর কিছু মনে আসল জানাবো।
@স্বাধীন,
বেশ কিছু ভাল সাজেশন দিয়েছেন। অনেক ধন্যবাদ। দেখি কতদূর কি করা যায়। আসলে অনেক কিছু করারই স্কোপ আছে, কিন্তু মুশকিল হল, আমার হাতে সময় থাকে কম। মূল সমস্যা হল- আমাদের ব্লগে ডেভেলপমেন্ট করার মতো লোক (প্রোগ্রামার) কম, সেই তুলনায় লিখিয়ে বেশী :). কেউ যদি ব্লগ ডেভেলপমেন্টে এগিয়ে আসতেন তবে ভাল হতো। আপনার পরিচিত কি কেউ আছেন, যিনি এ ধরণের ডেভেলপমেন্টে ইচ্ছুক, এবং কিছুটা হলেও অভিজ্ঞতা আছে?
অভিজিৎ’দা
ধ্রুবকে বলে দেখতে পারেন, ওর কোন অভিজ্ঞতা আছে কিনা এই বিষয়ে।
@স্বাধীন,
আপনার একাউন্ট এর ব্লগ খতিয়ান দেখুন তাহলে নতুন মন্তব্যগুলো দেখতে পারবেন। আর আপ্নার একাউন্ট এ আপ্নার মন্তব্যের কোন জবাব আসলে তা দেখানো হয়।
ধন্যবাদ।
@ মুহাইমীন
সেখানে সব সাম্প্রতিক মন্তব্য দেখাচ্ছে। আমি সেটা বুঝাইনি। আমি বুঝিয়েছিলাম শুধু আমার মন্তব্যের প্রতিমন্তব্য কেউ করলে সেটার notification এর কথা। অভিজিৎ’দা বুঝেছেন আমি কি বুঝিয়েছি 🙂 । ধন্যবাদ।
@অভিজিৎ,
মুক্তমনার বুকমার্কে ক্লিক করলে প্রথমেই বাংলা ব্লগের নীড়পাতায় না এসে, Enter লেখা একটা পেইজ আসে – ওপরে বাংলা/ইংলিশ ব্লগের অপশন শুদ্ধ। এটা কি খুব জরুরী? (অলস আমার) দু’বার ক্লিক করতে বেশি ভালো লাগে না 🙂 তার চাইতে একবারে বাংলা ব্লগের নীড়পাতা খুলে গেলে, এবং ওপরে যেখানে মুক্তমনা কী/ সাহায্য এসব অপশন আছে তার পাশে ইংরেজীতে English blog অপশনটা দিলে অ-বাংলাভাষীদের জন্যেও সুবিধা হতো না?
আরও দু’একটা কথা আছে – এখানে বলবো, না ফোনে?
@স্নিগ্ধা,
ফোনে জানাতে পার, কিংবা এখানেও। আর ভাল হয় মুক্তমনার জন্য লেখা টেখা দিলে 🙂
@স্নিগ্ধা,
গতকাল সারা রাত জেগে আপনার সব ক’টি লেখা পড়লাম। মুক্তমনার অগণিত পাঠককে কেন বঞ্ছিত করছেন? আপনার লেখার উপর আমাদের মন্তব্য করার কি অধিকার নেই?
গীতা দাস, শিরোনামে (২) দেখে প্রথম পর্ব খুঁজতে আপনার ব্লগে গেলাম, কিন্তু পেলাম না তো!
ধারাবাহিক লেখা বলেই বোধহয় আপনার বক্তব্য এখনও সম্পূর্ণ প্রকাশিত নয়। আপনি রাষ্ট্রের হেজেমনি বা সংখ্যাগুরুর চাপিয়ে দেয়া/রাজনীতিকরণ নিয়ে কথা বলছেন এটুকু বুঝেছি, তবে শেষটায় কী বলতে যাচ্ছেন সেটার অপেক্ষায় আছি, তাই মন্তব্য করলাম না এখনই 🙂
@স্নিগ্ধা,
এখানে পাবেন।
@ফরিদ আহমেদ,
ধন্যবাদ!