ইসলামে নারীদের অবিস্মরনীয় ভুমিকা
না , ইসলাম নারীদের কতটুকু অধিকার দিয়েছে বা দেয়নি এবং নারীবাদি অবস্থান থেকে তার বিচার করতে এই লেখা নয় । এমনকি আমাদের হুজুরদের মত নারীদের পর্দা পুষিদা আর হায়েজ নেফাস কালীন পরিচ্ছন্নতা বিষয়ক মাসআলা বয়ানও বক্ষমান রচনার লক্ষ নয় । বরং খোদ ইসলামে ( র্যাডিকেল হিউম্যানিষ্ট এম এন রায় যার প্রসার কে বলেছেন এক ঐন্দ্রজালিক কান্ড ) নারীদের ভুমিকার দিকে নজর ফেরাতে চাই । বলতে চাই সেই সব মহীয়ষীদের কথা ইসলামে যাদের ভুমিকা অবিস্মরনীয় কিন্তু যাদের কথা আজ আর কেউ মনে করে না ।
আমরা অনেকেই জানি , প্রথম ইসলাম গ্রহন কারী একজন নারী উম্মুল মুমেনিন বিবি খাদেজা (রাঃ) কিন্তু আমরা সবাই কি এও জানি যে , ইসলামের জন্য নিজের জীবন উত্ সর্গ করে প্রথম শহীদানও হয়েছিলেন একজন নারী যার নাম হযরত সুমাইয়া (রাঃ ) ?
ইসলামের বীরযোদ্ধা হিসেবে আমরা শেরে খোদা হযরত আলী (রাঃ) , হযরত আমির হামযা (রাঃ ) হযরত উমর (রাঃ) প্রমুখের নাম প্রায়শঃ স্মরণ করি কিন্তু ভুলেই কি বীর যোদ্ধা উম্মে আম্মারাহ (রা এর নাম নেই যিনি ওহুদের যুদ্ধে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওইয়া সাল্লাম এর জীবন রক্ষায় তার চতুর্দিকে প্রতিরক্ষা ব্যুহ তৈরী করেছিলেন এবং যাকে নবীজি উপাধী দিয়েছিলেন খাতুনে ওহুদ বলে । নারী বলেই কি চেপে রাখতে হবে ?
এই দুই মহিয়ষী মহিলা সাহাবীর জীবনী নিয়ে এই অধমেরই দু‘টা লেখার লিন্ক দিলাম এখানে –
1. ইসলামের প্রথম শহীদ হজরত সুমাইয়া (রাঃ), ডিসেম্বর ১০, ২০০৪,দৈনিক ইত্তেফাক View this link
2. খাতুনে ওহোদ হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ),আগস্ট ১৯, ২০০৫,দৈনিক ইত্তেফাক View this link
নবীজির মেরাজের ঘটনাও আমরা প্রথম জানতে পারি , একজন নারীরই মাধ্যমে নাম তার উম্মে হানী( রাঃ) ।
তালিকা আরো দীর্ঘ করা যায় এবং তাতে জ্ঞান হয়ত বাড়বে কিন্তু আমাদের মানসিকতার কি পরিবর্তন হবে ???????
আপনার লিখার জন্য ধন্যবাদ।এই লিখাটি এখানে প্রকাশ করা নিয়ে আমার সন্দেহ ছিল।কিছু মানুষের জ্ঞান প্রকাশের ভাব দেখলে মনে হয় ওনার চেয়ে বেশী জানা মানুষ পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই।এবং হষরত ডারউইন আলাহিওআসাল্লাম এর জন্মের পর যীশু মোহাম্মদ গৌতম বুদ্ব এদের সব বানী সব কথা নিরেট ভন্ডামি হয়ে গেল।পৃথিবীর ৯৯ ভাগ মানুষ বিশ্বাস করে এই মহা বিশ্বের সৃষ্টির পেছনে একজন শ্রষ্টার অস্তিত্ত আছে। এক ভাগ মানুষ মনে করে শ্রষ্টা বলে কিছুর অস্তিত্ত এই মহা বিশ্বে নেই। বিশাল সৌরজগতের যা কিছু দৃশ্যমান এর সবই আপনা আপনি হয়ে গিয়েছে। সূর্য্য বাধ্যছেলের মত তার ঠিক জায়গায় বসে গিয়েছে চন্দ্র তার জায়গায় অনড় থাকবে কোটি কোটি বছর ধরে তারা এভাবেই থে কে যাবার সিধ্বান্ত নিয়ে ফেলেছে।আমার শুধু একটাই প্রশ্ন পৃথিবীতে আপনা আপনি কি কোন কিছু হয়।
আনেক ধন্যবাদ। আনেক কিছু জানতে পারলাম।
Dear Mr. Manik,
Thanks for the articles. Did not know these stories in such details. They certainly defy common perceptions of women in Islam. Would like to get more along this line from your pen in the future.
Glad that you referenced your articles throughly.
খাতুনে ওহোদ হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ)
ইসলামের ইতিহাসে ‘খাতুনে ওহোদ’ বলে খ্যাত রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলইহি
ওয়া সাল্লামের মহান মহিলা সাহাবী ছিলেন হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ)। তাঁর
নাম ‘নুসাইবাহ’ কিš’ ইতিহাসে তিনি নিজের কুনিয়াতেই খ্যাত হয়ে আছেন। তিনি
আনসারের খাজরাজ গোত্রের নাজ্জার বংশোদ্ভূত। নসবনামা হল-নুসাইবাহ বিনতে
কা’ব বিন আমর বিন আওফ বিন আবজুল বিন আমর বিন গানাম বিন মাযন বিন
নাজ্জার।
হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ)-এর প্রথম বিয়ে হয়েছিল চাচাতো ভাই যায়েদ বিন
কাসেমের সঙ্গে। যায়েদের ঔরসে তাঁর দুটি সন্তান হয়েছিল। তাঁদের নাম
হল-আব্দুল্লহ্ (রাঃ) এবং হাব্বি (রাঃ)। এই দুই ভাই সাহাবী ছিলেন এবং
ইতিহাসখ্যাত হয়েছিলেন। যায়েদের ওফাতের পর হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ)-এর
বিয়ে হয়েছিল আরবাহ (রাঃ) বিন আমরের সঙ্গে। তাঁর ঔরসে তামিম ও খাওলাহ
জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ) আনসারের সাবিকিনা আওয়ালিনার মধ্যে পরিগণিত।
প্রথম বাইয়াতে উকবার পর যখন হযরত মানয়াব (রাঃ) বিন উমাইর মদিনায়
ইসলামের তাবলীগ করছিলেন তখন তিনি খান্দান সমেত ইসলাম গ্রহণ করেন।
ইসলাম গ্রহণের পর নবুয়তের ১৩তম বছরে তিনি সেই ৭৫ জনের অন্তর্ভুক্ত হবার
সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন যারা বড় উচেবাতে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামের হাতে বাইয়াত করেছিলেন এবং হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম মদীনার তাশরীফ নিলে জান, মাল এবং সন্তানসহ তাঁকে সমর্থন করবেন
বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হিজরতের তৃতীয় বছরে ওহোদের যুদ্ধ
সংঘটিত হয়। হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ) যুদ্ধে অংশ নেন এবং এমন বীরত্ব,
দৃঢ়তা ও অটলতা প্রদর্শন করেন যে, ইতিহাসে তিনি ‘খাতুনে ওহোদ’ উপাধিতে খ্যাত
হন। তাবাকাতে ইবনে সাদের রাওয়াতে অনুযায়ী তাঁর স্বামী আবরাহ (রাঃ) কিন
আমর, দুই পুত্র আব্দুল্লাহ (রাঃ) এবং হাব্বিও (রাঃ) ওহোদের যুদ্ধে তাঁর সঙ্গে অংশ
নিয়েছিলেন।
যুদ্ধে যখন মুসলমানরা অগ্রগামী ছিলেন তখন উম্মে আম্মারাহ (রাঃ) অন্য মহিলাদের
সাথে মশকে পানি ভরে ভরে মুজাহিদদেরকে পান এবং আহতদেরকে সেবা
করতেন। যখন একটি ভুলের কারণে যুদ্ধের দৃশ্য বদলে গেল এবং মুজাহিদরা
বিশৃংখলার শিকার হলেন তখন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট
হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন জীবন উৎসর্গকারী রয়ে গেলেন। হযরত উম্মে আম্মারাহ
(রাঃ) এই অবস্থা প্রত্যক্ষ করে মশক ফেলে দিয়ে তরবারী এবং ঢাল হাতে তুলেনিলেন ও হুজুর সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট পৌঁছে কাফেরদের
সামনে বুক পেতে দাঁড়িয়ে গেলেন। কাফেররা বার বার হামলা করে রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দিকে অগ্রসর হতো এবং উম্মে আম্মারাহ
(রাঃ) তাদেরকে অন্যান্য অটল সাহাবীর (রাঃ) সঙ্গে একত্রিত হয়ে তীর ও তরবারী
দিয়ে বাধা দিতেন। এটা বড় ভয়ানক সমর ছিল। ইত্যবসরে এক মুশরিক তাঁর
মাথার ওপর পৌঁছে তরবারী চালিয়ে দিল। উম্মে আম্মারাহ (রাঃ) তাকে নিজের ঢাল
দিয়ে প্রতিরোধ করলেন এবং তার ঘোড়ার পায়ের ওপর তরবারীর এমন আঘাত
হানলেন যে, ঘোড়া এবং সওয়ার উভয়েই মাটিতে পতিত হলো। সারওয়ারে আলম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম এই চিত্র দেখছিলেন। তিনি উম্মে আম্মারাহর
(রাঃ) পুত্র আব্দুল্লাহকে (সাঃ) ডেকে বললেন, ‘আব্দুল্লাহ! তোমার মাকে সাহায্য
কর।’ তিনি তৎক্ষণাৎ সেদিকে এগিয়ে গেলেন এবং তরবারীর এক আঘাতেই সেই
মুশরিককে জাহানড়বামে পাঠিয়ে দিলেন। ঠিক সেই সময় অন্য একজন মুশরিক দ্রুত
সেদিকে এলো এবং হযরত আব্দুল্লাহর (রাঃ) বাম বাহুতে আঘাত করে চলে গেল।
হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ) স্বহস্তে আব্দুল্লাহর (রাঃ) ক্ষতস্থান বাঁধলেন এবং
বললেন-পুত্র! যাও এবং যতক্ষণ দম আছে ততক্ষণ লড়াই কর। হজুর সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর জীবন উৎসর্গের আবেগ দেখে বললেন-হে উম্মে
আম্মারাহ্! তোমার মধ্যে যে শক্তি রয়েছে আর কার মধ্যে থাকবে? ঠিক এই সময়
আব্দুল্লাহকে (রাঃ) আঘাতকারী মুশরিক ফিরে আবার হামলা করে বসলো। হুজুর
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মে আম্মারাহকে (রাঃ) বললেন-উম্মে
আম্মারাহ। ঠেকানো চাই। এ সেই হতভাগা যে আব্দুল্লাহকে আহত করেছিলো।
হযরত উম্মে আশারাহ (রাঃ) ে
াধান্বিত হয়ে তার দিকে অগ্রসর হলেন এবং
তরবারীর এমন আঘাত হানলেন যে, সে দুই টুকরো হয়ে নিচে পড়ে গেল। প্রিয় নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই দৃশ্য দেখে মুচকি হাসি দিলেন এবং
বললেন-উম্মে আম্মারাহ! তুমি পুত্রের খুব প্রতিশোধ নিয়েছ। (দ্রঃ মজিলা সাহাবী;
তালিবুল হাশেমী, পৃঃ ৩১৫-৩১৬)।
এই সময় ইবনে কামিয়া যখন সকল বাধাবিপত্তি ডিঙিয়ে হযরত নবী করীম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দিকে এগিয়ে আসছিলো, তখন তার
অগ্রগামিতাকে রুখে দাঁড়ান হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ)। তাতে তিনি কাঁধে
আঘাত পান। হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ)ও তার প্রতি তলোয়ারের শক্তিশালী
আঘাত হেনেছিলেন, কিš’ তার পায়ে দ্বিগুণ কর্ম থাকায় তলোয়ারের কোপ কার্যকরী
হয়নি। (ইবনে হিশাম, পৃঃ ৮৪)।
ইবনে কামিয়ার আঘাতের কারণে হযরত উম্মে আম্মারাহ্ (রাঃ)-এর কাঁধে গর্ত হয়ে
গিয়েছিলো। সেই ক্ষতস্থান থেকে দরদর করে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছিল। হুজুর
সাল্লাল্লাহ লাইহি ওয়া সাল্লাম স্বয়ং তাঁর ক্ষতস্থানে পট্টি বাঁধলেন এবং কয়েকজন
বাহাদুর সাহাবীর (রাঃ) নাম উচ্চারণ করে বললেনঃ ‘আল্লাহর কসম! আজ উম্মে
আম্মারাহ (রাঃ) তাদের সবার চেয়ে বাহাদুরী প্রদর্শন করেছেন।’ হযরত উম্মে
আম্মারাহ (রাঃ) আরজ করলেনঃ ‘ হে আল্লাহর রাসুল! আমার মাতা-পিতা আপনার
ওপর কুরবান হোক। আমার জন্য দোয়া করুন যাতে জানড়বাতেও আপনার সঙ্গে
থাকার সৌভাগ্য হয়।’ হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অত্যন্ত
একাগ্রতার সাথে তার জন্য দোয়া করলেন এবং উচ্চৈস্বরে বললেনঃ ‘আল্লাহুম্মা
আজরালহুম রিফকায়ি ফিল জানড়বাতি।’ হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ) খুব খুশী হলেন
এবং তাঁর মুখ দিয়ে অযাচিতভাবে এই বাক্য উচ্চারিত হল-’ এখন আর আমার এই
দুনিয়ায় মুসিবতের কোনও পরওয়া নেই।’ যুদ্ধ শেষ হলে হুজুর সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত উম্মে আম্মারাহর (রাঃ) অবস্থা না জানা পর্যন্ত বাড়ী
ফিরে যাননি। হযরত আব্দুল্লাহ (রাঃ) বিন কা’ব মাযনীকে পাঠিয়ে তার খবর নেন।
তারপর বাড়ী যান।
হজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতেন-, ওহোদের দিন ডাইনে-বামে
যেদিকেই নজর দিতাম, শুধু উম্মে আম্মারাহ (রাঃ)কে লড়াই করতে দেখতাম’
(তালিবুল হাশেমী পৃঃ ৩১৭)।
আল্লামা ইবনে সাদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন, ওহোদের যুদ্ধের পর তিনি বাইয়াতে
রেদওয়ান, খায়বারের যুদ্ধ, ওমরাতুল কাজা এবং হুনাইনের যুদ্ধেও অংশ
নিয়েছিলেন। অন্য আরেক রাওয়াত অনুযায়ী তিনি মক্কা বিজয়ের সময়ও প্রিয় নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গী ছিলেন। হযরত আবু বকর (রাঃ)-এর
খিলাফতকালে সংঘটিত ভণ্ড নবী মুসায়লামাহ কাজাবের বিরুদ্ধে ইয়ামামার যুদ্ধে
তিনি অত্যন্ত বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সেই যুদ্ধে মুসায়লামাহ ধ্বংস হয়।
হযরত উম্মে আম্মারাহর (রাঃ) ইন্তেকাল সাল সম্পর্কে জানা যায়নি। অবশ্য
কতিপয় রাওয়াত অনুযায়ী তিনি হযরত ওমর ফারুকের (রাঃ) খিলাফতকালে জীবিত
ছিলেন এবং সেই আমলেই এন্তেকাল যান।
হযরত উম্মে আম্মারাহ নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালামকে যে
অপরিসীম মহব্বত করতেন, ওহোদের ময়দানে তার বাস্তবচিত্র পাওয়া যায়। আরো
অনেক ঘটনা আছে। একবার আল্লাহর পিয়ারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তাঁর গৃহে তাশরীফ নিলেন। তাঁকে কিছু খেতে দিলেন। তিনি ফরমালেন,
‘আপনি কিছু খান।’ তিনি জবাবে বললেন, ‘আমি রোযাদার’। হুজুর সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম খেয়ে নিলেন এবং ইরশাদ করলেন, ‘রোযাদারের সামনে
কিছু খাওয়া হলে ফিরিশতাগণ তার প্রতি দরূদ পাঠান। (মুসনদে আহমদ, ৬ষ্ঠ খন্ড,
পৃঃ ৩৬৫) উম্মে আম্মারাহ (রাঃ) কতিপয় হাদীস বর্ননা করেছেন।
খাতুনে ওহোদ হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ)
ইসলামের ইতিহাসে ‘খাতুনে ওহোদ’ বলে খ্যাত রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলইহি
ওয়া সাল্লামের মহান মহিলা সাহাবী ছিলেন হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ)। তাঁর
নাম ‘নুসাইবাহ’ কিš’ ইতিহাসে তিনি নিজের কুনিয়াতেই খ্যাত হয়ে আছেন। তিনি
আনসারের খাজরাজ গোত্রের নাজ্জার বংশোদ্ভূত। নসবনামা হল-নুসাইবাহ বিনতে
কা’ব বিন আমর বিন আওফ বিন আবজুল বিন আমর বিন গানাম বিন মাযন বিন
নাজ্জার।
হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ)-এর প্রথম বিয়ে হয়েছিল চাচাতো ভাই যায়েদ বিন
কাসেমের সঙ্গে। যায়েদের ঔরসে তাঁর দুটি সন্তান হয়েছিল। তাঁদের নাম
হল-আব্দুল্লহ্ (রাঃ) এবং হাব্বি (রাঃ)। এই দুই ভাই সাহাবী ছিলেন এবং
ইতিহাসখ্যাত হয়েছিলেন। যায়েদের ওফাতের পর হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ)-এর
বিয়ে হয়েছিল আরবাহ (রাঃ) বিন আমরের সঙ্গে। তাঁর ঔরসে তামিম ও খাওলাহ
জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ) আনসারের সাবিকিনা আওয়ালিনার মধ্যে পরিগণিত।
প্রথম বাইয়াতে উকবার পর যখন হযরত মানয়াব (রাঃ) বিন উমাইর মদিনায়
ইসলামের তাবলীগ করছিলেন তখন তিনি খান্দান সমেত ইসলাম গ্রহণ করেন।
ইসলাম গ্রহণের পর নবুয়তের ১৩তম বছরে তিনি সেই ৭৫ জনের অন্তর্ভুক্ত হবার
সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন যারা বড় উচেবাতে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামের হাতে বাইয়াত করেছিলেন এবং হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম মদীনার তাশরীফ নিলে জান, মাল এবং সন্তানসহ তাঁকে সমর্থন করবেন
বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হিজরতের তৃতীয় বছরে ওহোদের যুদ্ধ
সংঘটিত হয়। হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ) যুদ্ধে অংশ নেন এবং এমন বীরত্ব,
দৃঢ়তা ও অটলতা প্রদর্শন করেন যে, ইতিহাসে তিনি ‘খাতুনে ওহোদ’ উপাধিতে খ্যাত
হন। তাবাকাতে ইবনে সাদের রাওয়াতে অনুযায়ী তাঁর স্বামী আবরাহ (রাঃ) কিন
আমর, দুই পুত্র আব্দুল্লাহ (রাঃ) এবং হাব্বিও (রাঃ) ওহোদের যুদ্ধে তাঁর সঙ্গে অংশ
নিয়েছিলেন।
যুদ্ধে যখন মুসলমানরা অগ্রগামী ছিলেন তখন উম্মে আম্মারাহ (রাঃ) অন্য মহিলাদের
সাথে মশকে পানি ভরে ভরে মুজাহিদদেরকে পান এবং আহতদেরকে সেবা
করতেন। যখন একটি ভুলের কারণে যুদ্ধের দৃশ্য বদলে গেল এবং মুজাহিদরা
বিশৃংখলার শিকার হলেন তখন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট
হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন জীবন উৎসর্গকারী রয়ে গেলেন। হযরত উম্মে আম্মারাহ
(রাঃ) এই অবস্থা প্রত্যক্ষ করে মশক ফেলে দিয়ে তরবারী এবং ঢাল হাতে তুলেনিলেন ও হুজুর সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট পৌঁছে কাফেরদের
সামনে বুক পেতে দাঁড়িয়ে গেলেন। কাফেররা বার বার হামলা করে রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দিকে অগ্রসর হতো এবং উম্মে আম্মারাহ
(রাঃ) তাদেরকে অন্যান্য অটল সাহাবীর (রাঃ) সঙ্গে একত্রিত হয়ে তীর ও তরবারী
দিয়ে বাধা দিতেন। এটা বড় ভয়ানক সমর ছিল। ইত্যবসরে এক মুশরিক তাঁর
মাথার ওপর পৌঁছে তরবারী চালিয়ে দিল। উম্মে আম্মারাহ (রাঃ) তাকে নিজের ঢাল
দিয়ে প্রতিরোধ করলেন এবং তার ঘোড়ার পায়ের ওপর তরবারীর এমন আঘাত
হানলেন যে, ঘোড়া এবং সওয়ার উভয়েই মাটিতে পতিত হলো। সারওয়ারে আলম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম এই চিত্র দেখছিলেন। তিনি উম্মে আম্মারাহর
(রাঃ) পুত্র আব্দুল্লাহকে (সাঃ) ডেকে বললেন, ‘আব্দুল্লাহ! তোমার মাকে সাহায্য
কর।’ তিনি তৎক্ষণাৎ সেদিকে এগিয়ে গেলেন এবং তরবারীর এক আঘাতেই সেই
মুশরিককে জাহানড়বামে পাঠিয়ে দিলেন। ঠিক সেই সময় অন্য একজন মুশরিক দ্রুত
সেদিকে এলো এবং হযরত আব্দুল্লাহর (রাঃ) বাম বাহুতে আঘাত করে চলে গেল।
হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ) স্বহস্তে আব্দুল্লাহর (রাঃ) ক্ষতস্থান বাঁধলেন এবং
বললেন-পুত্র! যাও এবং যতক্ষণ দম আছে ততক্ষণ লড়াই কর। হজুর সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর জীবন উৎসর্গের আবেগ দেখে বললেন-হে উম্মে
আম্মারাহ্! তোমার মধ্যে যে শক্তি রয়েছে আর কার মধ্যে থাকবে? ঠিক এই সময়
আব্দুল্লাহকে (রাঃ) আঘাতকারী মুশরিক ফিরে আবার হামলা করে বসলো। হুজুর
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মে আম্মারাহকে (রাঃ) বললেন-উম্মে
আম্মারাহ। ঠেকানো চাই। এ সেই হতভাগা যে আব্দুল্লাহকে আহত করেছিলো।
হযরত উম্মে আশারাহ (রাঃ) ে
াধান্বিত হয়ে তার দিকে অগ্রসর হলেন এবং
তরবারীর এমন আঘাত হানলেন যে, সে দুই টুকরো হয়ে নিচে পড়ে গেল। প্রিয় নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই দৃশ্য দেখে মুচকি হাসি দিলেন এবং
বললেন-উম্মে আম্মারাহ! তুমি পুত্রের খুব প্রতিশোধ নিয়েছ। (দ্রঃ মজিলা সাহাবী;
তালিবুল হাশেমী, পৃঃ ৩১৫-৩১৬)।
এই সময় ইবনে কামিয়া যখন সকল বাধাবিপত্তি ডিঙিয়ে হযরত নবী করীম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দিকে এগিয়ে আসছিলো, তখন তার
অগ্রগামিতাকে রুখে দাঁড়ান হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ)। তাতে তিনি কাঁধে
আঘাত পান। হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ)ও তার প্রতি তলোয়ারের শক্তিশালী
আঘাত হেনেছিলেন, কিš’ তার পায়ে দ্বিগুণ কর্ম থাকায় তলোয়ারের কোপ কার্যকরী
হয়নি। (ইবনে হিশাম, পৃঃ ৮৪)।
ইবনে কামিয়ার আঘাতের কারণে হযরত উম্মে আম্মারাহ্ (রাঃ)-এর কাঁধে গর্ত হয়ে
গিয়েছিলো। সেই ক্ষতস্থান থেকে দরদর করে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছিল। হুজুর
সাল্লাল্লাহ লাইহি ওয়া সাল্লাম স্বয়ং তাঁর ক্ষতস্থানে পট্টি বাঁধলেন এবং কয়েকজন
বাহাদুর সাহাবীর (রাঃ) নাম উচ্চারণ করে বললেনঃ ‘আল্লাহর কসম! আজ উম্মে
আম্মারাহ (রাঃ) তাদের সবার চেয়ে বাহাদুরী প্রদর্শন করেছেন।’ হযরত উম্মে
আম্মারাহ (রাঃ) আরজ করলেনঃ ‘ হে আল্লাহর রাসুল! আমার মাতা-পিতা আপনার
ওপর কুরবান হোক। আমার জন্য দোয়া করুন যাতে জানড়বাতেও আপনার সঙ্গে
থাকার সৌভাগ্য হয়।’ হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অত্যন্ত
একাগ্রতার সাথে তার জন্য দোয়া করলেন এবং উচ্চৈস্বরে বললেনঃ ‘আল্লাহুম্মা
আজরালহুম রিফকায়ি ফিল জানড়বাতি।’ হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ) খুব খুশী হলেন
এবং তাঁর মুখ দিয়ে অযাচিতভাবে এই বাক্য উচ্চারিত হল-’ এখন আর আমার এই
দুনিয়ায় মুসিবতের কোনও পরওয়া নেই।’ যুদ্ধ শেষ হলে হুজুর সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত উম্মে আম্মারাহর (রাঃ) অবস্থা না জানা পর্যন্ত বাড়ী
ফিরে যাননি। হযরত আব্দুল্লাহ (রাঃ) বিন কা’ব মাযনীকে পাঠিয়ে তার খবর নেন।
তারপর বাড়ী যান।
হজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতেন-, ওহোদের দিন ডাইনে-বামে
যেদিকেই নজর দিতাম, শুধু উম্মে আম্মারাহ (রাঃ)কে লড়াই করতে দেখতাম’
(তালিবুল হাশেমী পৃঃ ৩১৭)।
আল্লামা ইবনে সাদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন, ওহোদের যুদ্ধের পর তিনি বাইয়াতে
রেদওয়ান, খায়বারের যুদ্ধ, ওমরাতুল কাজা এবং হুনাইনের যুদ্ধেও অংশ
নিয়েছিলেন। অন্য আরেক রাওয়াত অনুযায়ী তিনি মক্কা বিজয়ের সময়ও প্রিয় নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গী ছিলেন। হযরত আবু বকর (রাঃ)-এর
খিলাফতকালে সংঘটিত ভণ্ড নবী মুসায়লামাহ কাজাবের বিরুদ্ধে ইয়ামামার যুদ্ধে
তিনি অত্যন্ত বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সেই যুদ্ধে মুসায়লামাহ ধ্বংস হয়।
হযরত উম্মে আম্মারাহর (রাঃ) ইন্তেকাল সাল সম্পর্কে জানা যায়নি। অবশ্য
কতিপয় রাওয়াত অনুযায়ী তিনি হযরত ওমর ফারুকের (রাঃ) খিলাফতকালে জীবিত
ছিলেন এবং সেই আমলেই এন্তেকাল যান।
হযরত উম্মে আম্মারাহ নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালামকে যে
অপরিসীম মহব্বত করতেন, ওহোদের ময়দানে তার বাস্তবচিত্র পাওয়া যায়। আরো
অনেক ঘটনা আছে। একবার আল্লাহর পিয়ারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তাঁর গৃহে তাশরীফ নিলেন। তাঁকে কিছু খেতে দিলেন। তিনি ফরমালেন,
‘আপনি কিছু খান।’ তিনি জবাবে বললেন, ‘আমি রোযাদার’। হুজুর সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম খেয়ে নিলেন এবং ইরশাদ করলেন, ‘রোযাদারের সামনে
কিছু খাওয়া হলে ফিরিশতাগণ তার প্রতি দরূদ পাঠান। (মুসনদে আহমদ, ৬ষ্ঠ খন্ড,
পৃঃ ৩৬৫) উম্মে আম্মারাহ (রাঃ) কতিপয় হাদীস বর্ননা করেছেন।
খাতুনে ওহোদ হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ)
ইসলামের ইতিহাসে ‘খাতুনে ওহোদ’ বলে খ্যাত রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলইহি
ওয়া সাল্লামের মহান মহিলা সাহাবী ছিলেন হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ)। তাঁর
নাম ‘নুসাইবাহ’ কিš’ ইতিহাসে তিনি নিজের কুনিয়াতেই খ্যাত হয়ে আছেন। তিনি
আনসারের খাজরাজ গোত্রের নাজ্জার বংশোদ্ভূত। নসবনামা হল-নুসাইবাহ বিনতে
কা’ব বিন আমর বিন আওফ বিন আবজুল বিন আমর বিন গানাম বিন মাযন বিন
নাজ্জার।
হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ)-এর প্রথম বিয়ে হয়েছিল চাচাতো ভাই যায়েদ বিন
কাসেমের সঙ্গে। যায়েদের ঔরসে তাঁর দুটি সন্তান হয়েছিল। তাঁদের নাম
হল-আব্দুল্লহ্ (রাঃ) এবং হাব্বি (রাঃ)। এই দুই ভাই সাহাবী ছিলেন এবং
ইতিহাসখ্যাত হয়েছিলেন। যায়েদের ওফাতের পর হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ)-এর
বিয়ে হয়েছিল আরবাহ (রাঃ) বিন আমরের সঙ্গে। তাঁর ঔরসে তামিম ও খাওলাহ
জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ) আনসারের সাবিকিনা আওয়ালিনার মধ্যে পরিগণিত।
প্রথম বাইয়াতে উকবার পর যখন হযরত মানয়াব (রাঃ) বিন উমাইর মদিনায়
ইসলামের তাবলীগ করছিলেন তখন তিনি খান্দান সমেত ইসলাম গ্রহণ করেন।
ইসলাম গ্রহণের পর নবুয়তের ১৩তম বছরে তিনি সেই ৭৫ জনের অন্তর্ভুক্ত হবার
সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন যারা বড় উচেবাতে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামের হাতে বাইয়াত করেছিলেন এবং হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম মদীনার তাশরীফ নিলে জান, মাল এবং সন্তানসহ তাঁকে সমর্থন করবেন
বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হিজরতের তৃতীয় বছরে ওহোদের যুদ্ধ
সংঘটিত হয়। হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ) যুদ্ধে অংশ নেন এবং এমন বীরত্ব,
দৃঢ়তা ও অটলতা প্রদর্শন করেন যে, ইতিহাসে তিনি ‘খাতুনে ওহোদ’ উপাধিতে খ্যাত
হন। তাবাকাতে ইবনে সাদের রাওয়াতে অনুযায়ী তাঁর স্বামী আবরাহ (রাঃ) কিন
আমর, দুই পুত্র আব্দুল্লাহ (রাঃ) এবং হাব্বিও (রাঃ) ওহোদের যুদ্ধে তাঁর সঙ্গে অংশ
নিয়েছিলেন।
যুদ্ধে যখন মুসলমানরা অগ্রগামী ছিলেন তখন উম্মে আম্মারাহ (রাঃ) অন্য মহিলাদের
সাথে মশকে পানি ভরে ভরে মুজাহিদদেরকে পান এবং আহতদেরকে সেবা
করতেন। যখন একটি ভুলের কারণে যুদ্ধের দৃশ্য বদলে গেল এবং মুজাহিদরা
বিশৃংখলার শিকার হলেন তখন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট
হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন জীবন উৎসর্গকারী রয়ে গেলেন। হযরত উম্মে আম্মারাহ
(রাঃ) এই অবস্থা প্রত্যক্ষ করে মশক ফেলে দিয়ে তরবারী এবং ঢাল হাতে তুলেনিলেন ও হুজুর সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট পৌঁছে কাফেরদের
সামনে বুক পেতে দাঁড়িয়ে গেলেন। কাফেররা বার বার হামলা করে রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দিকে অগ্রসর হতো এবং উম্মে আম্মারাহ
(রাঃ) তাদেরকে অন্যান্য অটল সাহাবীর (রাঃ) সঙ্গে একত্রিত হয়ে তীর ও তরবারী
দিয়ে বাধা দিতেন। এটা বড় ভয়ানক সমর ছিল। ইত্যবসরে এক মুশরিক তাঁর
মাথার ওপর পৌঁছে তরবারী চালিয়ে দিল। উম্মে আম্মারাহ (রাঃ) তাকে নিজের ঢাল
দিয়ে প্রতিরোধ করলেন এবং তার ঘোড়ার পায়ের ওপর তরবারীর এমন আঘাত
হানলেন যে, ঘোড়া এবং সওয়ার উভয়েই মাটিতে পতিত হলো। সারওয়ারে আলম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম এই চিত্র দেখছিলেন। তিনি উম্মে আম্মারাহর
(রাঃ) পুত্র আব্দুল্লাহকে (সাঃ) ডেকে বললেন, ‘আব্দুল্লাহ! তোমার মাকে সাহায্য
কর।’ তিনি তৎক্ষণাৎ সেদিকে এগিয়ে গেলেন এবং তরবারীর এক আঘাতেই সেই
মুশরিককে জাহানড়বামে পাঠিয়ে দিলেন। ঠিক সেই সময় অন্য একজন মুশরিক দ্রুত
সেদিকে এলো এবং হযরত আব্দুল্লাহর (রাঃ) বাম বাহুতে আঘাত করে চলে গেল।
হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ) স্বহস্তে আব্দুল্লাহর (রাঃ) ক্ষতস্থান বাঁধলেন এবং
বললেন-পুত্র! যাও এবং যতক্ষণ দম আছে ততক্ষণ লড়াই কর। হজুর সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর জীবন উৎসর্গের আবেগ দেখে বললেন-হে উম্মে
আম্মারাহ্! তোমার মধ্যে যে শক্তি রয়েছে আর কার মধ্যে থাকবে? ঠিক এই সময়
আব্দুল্লাহকে (রাঃ) আঘাতকারী মুশরিক ফিরে আবার হামলা করে বসলো। হুজুর
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মে আম্মারাহকে (রাঃ) বললেন-উম্মে
আম্মারাহ। ঠেকানো চাই। এ সেই হতভাগা যে আব্দুল্লাহকে আহত করেছিলো।
হযরত উম্মে আশারাহ (রাঃ) ে
াধান্বিত হয়ে তার দিকে অগ্রসর হলেন এবং
তরবারীর এমন আঘাত হানলেন যে, সে দুই টুকরো হয়ে নিচে পড়ে গেল। প্রিয় নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই দৃশ্য দেখে মুচকি হাসি দিলেন এবং
বললেন-উম্মে আম্মারাহ! তুমি পুত্রের খুব প্রতিশোধ নিয়েছ। (দ্রঃ মজিলা সাহাবী;
তালিবুল হাশেমী, পৃঃ ৩১৫-৩১৬)।
এই সময় ইবনে কামিয়া যখন সকল বাধাবিপত্তি ডিঙিয়ে হযরত নবী করীম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দিকে এগিয়ে আসছিলো, তখন তার
অগ্রগামিতাকে রুখে দাঁড়ান হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ)। তাতে তিনি কাঁধে
আঘাত পান। হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ)ও তার প্রতি তলোয়ারের শক্তিশালী
আঘাত হেনেছিলেন, কিš’ তার পায়ে দ্বিগুণ কর্ম থাকায় তলোয়ারের কোপ কার্যকরী
হয়নি। (ইবনে হিশাম, পৃঃ ৮৪)।
ইবনে কামিয়ার আঘাতের কারণে হযরত উম্মে আম্মারাহ্ (রাঃ)-এর কাঁধে গর্ত হয়ে
গিয়েছিলো। সেই ক্ষতস্থান থেকে দরদর করে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছিল। হুজুর
সাল্লাল্লাহ লাইহি ওয়া সাল্লাম স্বয়ং তাঁর ক্ষতস্থানে পট্টি বাঁধলেন এবং কয়েকজন
বাহাদুর সাহাবীর (রাঃ) নাম উচ্চারণ করে বললেনঃ ‘আল্লাহর কসম! আজ উম্মে
আম্মারাহ (রাঃ) তাদের সবার চেয়ে বাহাদুরী প্রদর্শন করেছেন।’ হযরত উম্মে
আম্মারাহ (রাঃ) আরজ করলেনঃ ‘ হে আল্লাহর রাসুল! আমার মাতা-পিতা আপনার
ওপর কুরবান হোক। আমার জন্য দোয়া করুন যাতে জানড়বাতেও আপনার সঙ্গে
থাকার সৌভাগ্য হয়।’ হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অত্যন্ত
একাগ্রতার সাথে তার জন্য দোয়া করলেন এবং উচ্চৈস্বরে বললেনঃ ‘আল্লাহুম্মা
আজরালহুম রিফকায়ি ফিল জানড়বাতি।’ হযরত উম্মে আম্মারাহ (রাঃ) খুব খুশী হলেন
এবং তাঁর মুখ দিয়ে অযাচিতভাবে এই বাক্য উচ্চারিত হল-’ এখন আর আমার এই
দুনিয়ায় মুসিবতের কোনও পরওয়া নেই।’ যুদ্ধ শেষ হলে হুজুর সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত উম্মে আম্মারাহর (রাঃ) অবস্থা না জানা পর্যন্ত বাড়ী
ফিরে যাননি। হযরত আব্দুল্লাহ (রাঃ) বিন কা’ব মাযনীকে পাঠিয়ে তার খবর নেন।
তারপর বাড়ী যান।
হজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতেন-, ওহোদের দিন ডাইনে-বামে
যেদিকেই নজর দিতাম, শুধু উম্মে আম্মারাহ (রাঃ)কে লড়াই করতে দেখতাম’
(তালিবুল হাশেমী পৃঃ ৩১৭)।
আল্লামা ইবনে সাদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন, ওহোদের যুদ্ধের পর তিনি বাইয়াতে
রেদওয়ান, খায়বারের যুদ্ধ, ওমরাতুল কাজা এবং হুনাইনের যুদ্ধেও অংশ
নিয়েছিলেন। অন্য আরেক রাওয়াত অনুযায়ী তিনি মক্কা বিজয়ের সময়ও প্রিয় নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গী ছিলেন। হযরত আবু বকর (রাঃ)-এর
খিলাফতকালে সংঘটিত ভণ্ড নবী মুসায়লামাহ কাজাবের বিরুদ্ধে ইয়ামামার যুদ্ধে
তিনি অত্যন্ত বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সেই যুদ্ধে মুসায়লামাহ ধ্বংস হয়।
হযরত উম্মে আম্মারাহর (রাঃ) ইন্তেকাল সাল সম্পর্কে জানা যায়নি। অবশ্য
কতিপয় রাওয়াত অনুযায়ী তিনি হযরত ওমর ফারুকের (রাঃ) খিলাফতকালে জীবিত
ছিলেন এবং সেই আমলেই এন্তেকাল যান।
হযরত উম্মে আম্মারাহ নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালামকে যে
অপরিসীম মহব্বত করতেন, ওহোদের ময়দানে তার বাস্তবচিত্র পাওয়া যায়। আরো
অনেক ঘটনা আছে। একবার আল্লাহর পিয়ারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তাঁর গৃহে তাশরীফ নিলেন। তাঁকে কিছু খেতে দিলেন। তিনি ফরমালেন,
‘আপনি কিছু খান।’ তিনি জবাবে বললেন, ‘আমি রোযাদার’। হুজুর সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম খেয়ে নিলেন এবং ইরশাদ করলেন, ‘রোযাদারের সামনে
কিছু খাওয়া হলে ফিরিশতাগণ তার প্রতি দরূদ পাঠান। (মুসনদে আহমদ, ৬ষ্ঠ খন্ড,
পৃঃ ৩৬৫) উম্মে আম্মারাহ (রাঃ) কতিপয় হাদীস বর্ননা করেছেন।
http://www.ittefaq.com/content/2005/08/19/news0713.htm
ইসলামের প্রথম শহীদ হজরত সুমাইয়া (রাঃ)
ইসলামের জন্য আত্ম উৎসর্গকৃত প্রথম শহীদ ছিলেন একজন মহান মহিলা সাহাবী।
নাম তাঁর হযরত সুমাইয়াহ (রাঃ) বিনতে খাবাত। তিনি ছিলেন খাবাতের কন্যা এবং
হযরত আম্মার বিন ইয়াসার (রাঃ) এর মাতা। তাঁর বৃদ্ধ বয়সে মক্কা থেকে ইসলামের
আহ্বান আসে। তখন সুমাইয়াহ (রাঃ) ইযাসার (রাঃ) এবং আম্মার (রাঃ) একসঙ্গে
ইসলাম গ্রহণ করেন। ঐতিহাসিক বিবরণ অনুযায়ী হযরত সুমাইয়াহ (রাঃ) ইসলাম
গ্রহণকারীদের মধ্যে ৭ম।
হযরত সুমাইয়াহ্র (রাঃ) পিতৃ পুরুষের মধ্য থেকে শুধুমাত্র তাঁর পিতা ‘খাবাতের
নাম জানা যায়। তাঁর দেশ এবং বংশ সম্বন্ধে বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে, এতটুকু
জানা যায় যে, জাহেলী যুগে তিনি মক্কার এক সরদার আবু জোইফাহ বিন মুগীরা’র
দাসী ছিলেন। এটা নবুয়তপ্রাপ্তির প্রায় ৪৫ বছর আগের কথা। সেই যুগে ইয়েমেনের
কাহতানী বংশোদ্ভূত এক ব্যক্তি ইয়াসির বিন আমর নিখোঁজ ভাইয়ের সন্ধানে মক্কা
এসে উপস্থিত হয় এবং এখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে আবু হুজাইফাহ বিন
মুগীরার মিত্র হয়ে যায়। আবু হুজাইফা হযরত সুমাইয়াহ’র (রাঃ) বিয়ে দেন ইয়াসির
বিন আমরের সঙ্গে। তাঁর ঔরসেই হযরত সুমাইয়াহ’র (রাঃ) উভয়েই দুইপুত্র
জন্মগ্রহণ করেন। তাঁদের নাম হল আব্দুল্লাহ (রাঃ) এবং আম্মার (রাঃ)।
হযরত সুমাইয়াহ্’র (রাঃ) বৃদ্ধ বয়সে মক্কা থেকে ইসলামের আহ্বান আসে। তখন
হযরত সুমাইয়াহ (রাঃ) হযরত ইয়াসার (রাঃ) এবং আম্মার (রাঃ) একসঙ্গে ইসলাম
গ্রহণ করেন। সে সময় আবু হোজাইফা বিন মুগীরা পরলোকগত হয়েছেন। হযরত
সুমাইয়াহ্ (রাঃ) তাঁর উত্তরাধিকার সূত্রের গেলামীতে ছিলেন। হকপন্থীদের জন্য
সময়টা ছিল খুবই নাজুক। তখন মক্কার যে ব্যক্তিই ইসলাম গ্রহণ করতেন তিনিই
কোরেশ মুশরিকদের োধও লোমহর্ষক জুলুম-নির্যাতনের নিশানা হয়ে যেতেন।
তারা নির্যাতনের ক্ষেত্রে তাদের আত্মীয়-স্বজনাদেরও রেহাই দিতেন না।
হযরত সুমাইয়াহ্ (রাঃ) কে তখনো বনু মখজুমের লোকেরা স্বাধীন করে দেয়নি এবং
হযরত ইয়াসার (রাঃ) বিদেশী ছিলেন তাই তাঁদের উপর জুলুম-নির্যাতনের পাহাড়
চাপিয়ে দিলেও বাঁধা দেবার কেউ ছিল না। তারা এই অসহায় পরিবারের উপর-
অবর্ণনীয় নির্যাতন চালালো। হযরত ইয়াসার (রাঃ) এবং হযরত সুমাইয়াহ (রাঃ)
উভয়েই ছিলেন বৃদ্ধ। কিš’ তাঁরা ছিলেন ইমানী শক্তিতে বলীয়ান। মুশরিক হবার
জন্য নানাভাবে তাঁদের নির্যাতন করা হলেও তাঁরা হক পথ থেকে বিচ্যুৎ হননি। এই
অবস্থা তাঁদের পুত্রদেরও ছিল। লোহার যিরাহ বা বর্ম পরিয়ে মক্কার উত্তপ্ত প্রজ্বলিত
বালির উপর শুইয়ে দেয়া, তাঁদের পিঠে আগুন দিয়ে দাগ দেয়া এবং পানিতে ডুবিয়ে
দেয়া কাফির মুশরিকদের নিত্যদিনকার মশকরা ছিল।
একদিন মহানবী সালাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বনু মখজুমের মহল্লা দিয়ে
অতিম করছিলেন। এমন সময় দেখতে পেলেন, কোরেশ কাফির-মুশরিকগণহযরত সুমাইয়াহকে (রাঃ) লোহার যিরাহ পরিধান করিয়ে রৌদ্রে মাটিতে শুইয়ে
পাশে দাঁড়িয়ে অট্টহাসিতে কেটে পড়ে তাঁকে সম্বোধন করে বলছেঃ “মুহম্মদের দ্বীন
কবুল করার স্বাদ কি তা বুঝেন।”
মজলুম মহিলা সাহাবী হযরত সুমাইয়াহ্’র (রাঃ) অসহায়ত্ব দেখে হুজুর সাল্লাল্লাহ
আলাইহি ওয়া সাল্লামের গন্ড বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়লো এবং তিনি তাঁকে সম্বোধন
করে বললেনঃ ধৈর্য ধর। তোমার ঠিকানা জানড়বাত।”
অন্য এক রেওয়াতে আছে, হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার হযরত
ইয়ামার (রাঃ), হযরত সুমাইয়াহ (রাঃ) এবং তদীয় পুত্রদেরকে নির্যাতিত হতে দেখে
ব্যথিত হয়ে বললেনঃ ধৈর্য ধারণ করা ইলাহী আমার! ইয়াসির (রাঃ) পরিবারকে
ক্ষমা করে দাও এবং তুমি তাঁদের ক্ষমা করে দিয়েছই।’ বৃদ্ধ ইয়াসির (রাঃ) এই
নির্যাতন সইতে সইতে একদিন পরপরে যাত্রা করলেন। কিš’ নির্যাতন বন্ধ হল না।
হযরত সুমাইয়াহ (রাঃ) এবং তাঁর পুত্রদের উপর নির্যাতন অব্যাহত থাকলো।
একদিন হযরত সুমাইয়াহ্ (রাঃ) দিনভর নির্যাতন সহ্য করে সন্ধ্যায় বাড়ী ফিরেছেন
আর এমনি আবু জেহেল তাঁকে গালি দেয়া শুরু করলো এবং োধে উত্তেজিত হয়ে
সুমাইয়াহ্’র (রাঃ) প্রতি বর্শা নিক্ষেপ করলো। তিনি তৎক্ষণাৎ মাটিতে লুটিয়ে
পড়লেন এবং শাহাদতপ্রাপ্ত হন। এক রেওয়াতে আছে, আবু জেহেল তীর মেরে
হযরত সুমাইয়াহ্’র (রাঃ) পুত্র আব্দুল্লাহ্কেও (রাঃ) শহীদ করে ফেলে। এখন শুধু
আম্মার (রাঃ) জীবিত ছিলেন। তিনি মায়ের অসহায় মৃত্যুতে খুবই দুঃখিত হলেন।
ন্দন করতে করতে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে হাজির
হয়ে ঘটনা বর্ণনা করে আরজ করলেন “ইয়া রাসুলুল্লাহ! জুলুমতা এখন শেষ পর্যায়ে
পৌঁছে গেছে।” হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে ধৈর্য ধারণের নির্দেশ
দিয়ে বললেনঃ “হে আল্লাহ! ইয়াসির পরিবারকে দোজখ থেকে রেহাই দাও।”
হযরত সুমাইয়ার (রাঃ) শাহাদতের ঘটনা হিজরতের কয়েক বছর আগে সংঘটিত
হয়েছিল। এজন্য সকল ঐতিহাসিক এবং চরিতকার তাঁকে ইসলামের প্রথম শহীদ
হিসাবে আখ্যায়িত করেন।
হযরত আম্মার (রাঃ) মজলুম অবস্থায় তাঁর মায়ের হত্যার কথা ভুলতে পারেননি।
বছরের যুদ্ধে (দ্বিতীয় হিজরীর রমজানে) আবু জেহেল নিহত হলে হযরত মুহম্মদ
মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আম্মার (রাঃ) কে ডেকে বললেনঃ
“কাদ ফাতালাল্লাহু কাতিলা উম্মিকা” অর্থাৎ আল্লাহ্ তোমার মায়ের হত্যাকারীর
প্রতিশোধ নিয়েছেন। (ইসাবা, ৮ম খন্ড, পৃষ্ঠা ১/৪)।
http://www.ittefaq.com/content/2004/12/10/news0094.htm
ধন্যবাদ ফায়সাল সাহেব।
কিছু কিছু মানুষ আছে, এদের কাজ হচছে যে কোন কিছুতে বাম হাত ঠুকান। নুরুজ্জামান মানিক সাহেবের লিখাটা ছিল ইসলামে নারীদের অবিস্মরনীয় ভুমিকা বিষয়ে। উনি এখানে কার ও বা প্রিয় নবী মুহম্মদ(স) অথবা প্রিয় সাহাবাদের নারী কেলেংকারী নিয়ে বিশেষগগ মতামত দিতে আসেন নি বলেই আমার মনে হয় । আপনার কারও নারী কেলেংকারী নিয়ে জানতে চাইলে বাজারে আশা করি আনেক গসিপ এর ম্যাগাজিন পাবেন।
নুরুজ্জামান মানিক সাহেব লিখার কলেবরটা বাড়ালে ভাল লাগত।
ধন্যবাদ।
প্রিয় নবী মুহম্মদ(স) অথবা প্রিয় সাহাবাদের নারী কেলেংকারীতো কম না। কিছু ছারেন। ইমানডা শক্ত করি।
আচ্ছা, কেউ কি বলবেন বুশ বেশী মানুষ মারছে না মুহাম্মদ(স) না হিটলার? এরা তিন কালের তিন বন্ধুর মধ্যে সেরা কে?
@হেলাল, মনে হচ্ছে হজরত মুহম্মদ(সঃ) এবং সাহাবীদের নারী কেলেংকারি(?)র বিষয়ে আপনি-ই বিশদ ওয়াকিবহাল, আপনি -ই ছাড়ুন না?হজরত মুহম্মদ(সঃ),হিটলার,বুশ এর নাম নিলেন আর অর্জুন,রাম-লক্ষণ, আলেকজান্ডার,চেংগিস খান,অশোক,স্ট্যালিন,লেনিন আর মাও সে তুং কে বাদ দিলেন কেন?আপনি-ই বলুন তো কে বেশি মানুষ হত্যা করেছে এবং কে কিভাবে,কী কারণে করেছে?
এইরকম চুটকি চুটকি কি লিখেন। সাইজ টাইজ একটু না বাড়লে হইবো?