ব্লগিং আন্তর্জাল প্রকাশনার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠছে ক্রমশঃ। তারপরেও, হাজারো ব্লগ সাইটের ভিড়ে মুক্তমনা ব্লগ স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্যে ভাস্বর, এটি হয়ে উঠেছে বৈজ্ঞানিক এবং যুক্তিবাদী আলোচনা এবং মতবিনিময়ের কেন্দ্র। আমরা আশা করছি আপনার সক্রিয় অংশগ্রহণ মুক্তমনার উদ্দেশ্য পূরণে সহায়ক হবে।
সদস্যপদ প্রসঙ্গে
১.১। মুক্তমনা বাংলা ব্লগের উদ্দেশ্য যে কোনো ধরনের প্রগতিশীল, বৈজ্ঞানিক ও যুক্তিবাদী চিন্তাধারার সাথে সম্পর্কযুক্ত রচনাকে প্রাধান্য দেয়া। কাজেই এই ব্লগের সদস্য হতে হলে এবং এখানে লেখা প্রকাশ করতে হলে আপনাকে অবশ্যই মুক্তমনার উদ্দেশ্যের ব্যাপারটি মাথায় রাখতে হবে ।
১.২। মুক্তমনা কো্নো চ্যাটরুম, ফোরাম, বন্ধুসভা কিংবা সোশ্যাল কমিউনিটি ব্লগের মত গল্পগুজবের স্থান নয়। এখানে মুক্তমনার উদ্দেশ্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ (১.১ দ্রঃ) লেখা এবং তা নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী আলোচনাকে উৎসাহিত করা হয়।
১.৩। কোনো লেখা বা মন্তব্যের মধ্যে মুক্তমনার উদ্দেশ্যের পরিপন্থী কো্নো কিছুর আলামত পাওয়া গেলে, মুক্তমনা কর্তৃপক্ষ আপনার সদস্যপদ পুনর্বিবেচনা কিংবা বাতিল করার অধিকার রাখে; এ ব্যাপারে মুক্তমনার নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
১.৪। মুক্তমনায় সরাসরি সদস্যপদ দেয়া হয় না। কেউ সদস্য হতে চাইলে তাকে মুক্তমনা ব্লগে ক্রমাগত মন্তব্য করে যেতে হবে। মন্তব্যের গুণাগুণ সদস্যপদ পাওয়ার ক্ষেত্রে নিয়ামক হিসেবে বিবেচিত হবে। মন্তব্যের গুণাগুণ বিবেচনায় পূর্নাঙ্গ লেখক হিসেবে সদস্যপদ দেয়া হলেই তিনি কারো হস্তক্ষেপ ছাড়া মুক্তমনা ব্লগে লেখা প্রকাশ করতে পারবেন।
১.৫। তবে, সদস্য হলেও কারো লেখা সরাসরি প্রকাশিত নাও হতে পারে। কেবল পূর্নাঙ্গ লেখকেরাই মুক্তমনা ব্লগে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ ছাড়া লেখা প্রকাশ করতে পারবেন। পূর্নাঙ্গ লেখক ছাড়া অন্য সদস্যদের (যেমন, প্রদায়ক,গ্রাহক কিংবা সাধারণ পাঠক) ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ যতদিন প্রয়োজন মনে করবেন ততদিন তাদের সকল লেখা এবং মন্তব্য মডারেটর প্যানেল এর রিভিউ এর মধ্য দিয়ে নিয়ে যাবেন। পূর্ণাঙ্গ লেখক ছাড়া অন্যদের কাছ থেকে আসা লেখা মুক্তমনা সম্পাদকমন্ডলীদের কাছে প্রকাশযোগ্য বিবেচিত হলেই শুধু ব্লগে প্রকাশিত হতে পারবে। কো্নো লেখা যদি মুক্তমনার উদ্দেশ্য ও নীতিমালার সাথে সাংঘর্ষিক বিবেচিত হয় তাহলে সেটা প্রকাশ না করার সম্পূর্ণ অধিকার কর্তৃপক্ষের রয়েছে। আপনার সদস্যপদ যে কোন সময়ে পূর্ণাঙ্গ লেখক থেকে নামিয়ে প্রদায়ক কিংবা গ্রাহকে অবনমিত করার অধিকারও মুক্তমনা সংরক্ষণ করে।
স্বচ্ছতা এবং সুবিধার প্রয়োজনে নীচে সদস্যদের বিভিন্ন স্তরের ব্যাখ্যা দেয়া হল –
পূর্নাঙ্গ লেখক: ব্লগে স্বাধীনভাবে নিজের লেখা প্রকাশ এবং সম্পাদনার অধিকার রাখেন। লেখকের মন্তব্য লগ ইন অবস্থায় করা হলে সরাসরি ব্লগে প্রকাশিত হয়।
প্রদায়ক: ব্লগে লেখা পোস্ট করতে পারবেন কিন্তু তা ব্লগের পাতায় প্রকাশের জন্য মডারেটরের অনুমোদন লাগবে। প্রদায়কের মন্তব্য লগ ইন অবস্থায় করা হলে সরাসরি ব্লগে প্রকাশিত হয়।
গ্রাহক: শুধুমাত্র লেখা পড়তে পারবেন, লেখা পাঠানোর জন্য তাকে মডারটরকে ই-মেইল করতে হবে (১.৭ দ্রঃ)। তবে তিনি ব্লগে নিজের প্রোফাইল আপডেট এবং সম্পাদনা করতে পারবেন। গ্রাহকের মন্তব্য লগ ইন অবস্থায় করা হলেও সরাসরি ব্লগে প্রকাশিত হয়না, এডমিনের অনুমোদন লাগে।
১.৬। বারবার নীতিমালা লংঘন, ভ্যান্ডালিজম, ফ্লাডিং প্রভৃতির কারণে আপনার সদস্যপদ চিরতরে বাতিলের সম্পূর্ণ অধিকার মুক্তমনা কর্তৃপক্ষের রয়েছে।
১.৭। সদস্য না হয়েও যে কেউ ই-মেইলের মাধ্যমে লেখা পাঠাতে পারেন। লেখা পাঠনোর নিয়মাবলী জানার জন্য মুক্তমনায় প্রবন্ধ পাঠানোর নিয়ম দেখুন।
১.৮। ব্লগের সদস্য হবার জন্য কিংবা আলোচনা করার জন্য নাস্তিকতা, ধার্মিকতা কিংবা ধর্মবিমুখতা কোন অত্যাবশকীয় নিয়ামক কিংবা প্রভাবক হিসেবে বিবেচিত হবে না। বরং মুক্তমনার সামগ্রিক উদ্দেশ্যের পাশাপাশি ব্লগারদের লেখার ভাষা, ব্যবহার, বাচন শৈলী, রুচিশীলতা, মুক্তমনার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধতা এবং অন্য সদস্যদের সাথে আন্তঃসংযোগের ধাঁচ প্রভৃতি সদস্য হবার ক্ষেত্রে প্রধানতম মাপকাঠি হিসেবে বিবেচিত হবে।
১.৯। মুক্তমনা ব্লগারদের বাক স্বাধীনতার পক্ষে এবং ‘ইউনিভার্সাল ডিক্লারেশন অব হিউম্যান রাইটস’-এর আর্টিকেল-১৯ সহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রাসঙ্গিক নিয়ম ও নীতিমালার উপর শ্রদ্ধাশীল থেকে ব্লগ পরিচালনা করে। মুক্তমনা মোটা দাগে ব্লগ-জগতের উপর যে কোন রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের বিরোধী।
লেখা প্রসঙ্গে
২.১। লেখক স্বচ্ছতা, সরলতা ও সাবলীলতা বজায় রেখে তাঁর লেখা লিখবেন। আশা করা হচ্ছে যে, একজন লেখক একটি বাগাড়ম্বরপূর্ণ রচনা তৈরীর চেয়ে পাঠকপ্রিয়তা এবং বোধগম্যতার দিকে অধিকতর গুরুত্ব দিবেন। লেখক তাঁর লেখা লিখবেন মূলতঃ প্রগতিশীল সাধারণ পাঠকের কথা মাথায় রেখে। তিনি তাঁর আগ্রহ ও অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে মুক্তমনার উদ্দেশ্য ও ভাবধারার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ যে কো্নো বিষয় নির্ধারণ করতে পারেন।
২.২। লেখার আকারের বিষয়ে নির্দিষ্ট কো্নো সীমা নেই। তবে খুব ছোট লেখা কিংবা দু-চার লাইনের খবর মুক্তমনায় প্রকাশ করাকে কখনোই উৎসাহিত করা হয় না। এ ধরনের খুব সংক্ষিপ্ত কোনো লেখা প্রকাশিত হলে ব্লগ কর্তৃপক্ষ তা মুছে দিতে পারেন।
২.৩। লেখার বিষয়বস্তুর ব্যাপারে কোন বাধ্যবাধকতা নেই। তবে হালকা চালের বিষয়গুলো (যেমন কেবল দুই/তিন লাইনের ছড়া কিংবা খুব ছোট কবিতা বা এলেবেলে গল্প হিসেবে লেখা পোস্ট) ছাপানোর জন্য মুক্তমনা খুব বেশি উপযুক্ত স্থান নয়। সাধারণ সোশ্যাল কম্যুনিটি ব্লগে যে বিষয়গুলোর উপর বেশি লেখা আসে মুক্তমনায়ও সেগুলো নিয়ে পড়ে না থেকে লেখায় বৈচিত্র্য আসুক – এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
২.৪। পোস্ট এবং মন্তব্যের ভাষা হওয়া উচিত (মূলত) বাংলা — অবশ্যই বাংলা হরফে; আর ভাষারীতি লেখ্যভাষা হিসেবে প্রচলিত প্রমিত বাংলা হওয়াই শ্রেয়। মডারেটরের কাছে লেখা পাঠাতে হলে, বাংলা ইউনিকোডে লেখা জমা দিতে হবে। যে কোন সময় বাংলায় লেখার জন্য অভ্র বাংলা কিবোর্ড টুল ব্যবহার করতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। অভ্র বাংলা কিবোর্ড টুল ডাউনলোড করুন এখান থেকে। এছাড়া বিজয়, বর্ণসফট কিংবা অন্য পুরোনো বাংলা থেকে আপনার লেখা ইউনিকোডে কনভার্টের জন্য অনলাইন লেখনী ও কনভার্টার পাবেন এখান থেকে।
২.৫। বাংলা ব্লগে ইংরেজীতে লেখা মন্তব্য কিংবা রোমান হরফে বাংলায় লেখা মন্তব্য কর্তৃপক্ষ প্রকাশ নাও করতে পারে। এমনকি এ ধরণের মন্তব্য মুছে দেওয়ার অধিকারও মুক্তমনা সংরক্ষণ করে।
২.৬। মানবতাবিরোধী, বর্ণবাদী, লিঙ্গবৈষম্যবাদী, প্রোপাগান্ডামূলক, স্বাধীনতাবিরোধী কিংবা মৌলবাদী কোন লেখা মুক্তমনায় প্রকাশিত হবে না। প্রকাশের পর এসবের প্রমাণ পাওয়া গেলে তখনই লেখাটি মুছে দেয়া হবে। এ ব্যাপারটি মন্তব্যের জন্যও প্রযোজ্য। বর্ণবাদী, লিঙ্গবৈষম্যবাদী কিংবা জাতিবিদ্বেষী মন্তব্য মুক্তমনা নীতিমালার লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হবে। এ ধরণের মন্তব্যকারীকে মডারেটরের পক্ষ থেকে সতর্ক করা কিংবা ব্লগ থেকে বহিষ্কারের উদ্যোগ নেয়া হতে পারে।
২.৭। কোন লেখা কুম্ভিলতা বা প্লেইজারিজম (সাহিত্যচুরি) দোষে দুষ্ট হলে লেখককে সতর্ক করা হবে। তিনি উল্লেখ্য অংশটুকু অপসারণ বা উপযুক্ত তথ্যসূত্র নির্দেশ না করলে লেখাটি মুছে দেয়া হবে। ব্যাপারটি আরো বিস্তৃত করা হয়েছে স্বত্তাধিকার প্রসঙ্গে অংশে (৬.১- ৬.৪ দ্রঃ)
২.৮। সংবাদপত্র থেকে গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ প্রকাশ করা যাবে, তবে তার সাথে আনুষঙ্গিকভাবে অবশ্যই লেখকের নিজস্ব বিশ্লেষণ বা মতামত থাকতে হবে।
২.৯। লেখার মাধ্যমে ব্লগের কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা কিংবা কারো সম্বন্ধে কুৎসা রটানো গ্রহণযোগ্য হবে না। অন্যের বক্তব্যকে যুক্তি দিয়ে খণ্ডন করতে হবে, যুক্তি হওয়া উচিৎ যতদূর সম্ভব হেত্বাভাসমুক্ত। লেখা যদি উত্তেজনাপূর্ণ, ব্যক্তি-আক্রমণপ্রসূত কিংবা গোঁড়ামিপূর্ণ হয় তাহলে লেখা সরিয়ে নেয়ার কিংবা লেখকের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়ার অধিকার মুক্তমনা সংরক্ষণ করে। ব্যক্তিগত আক্রমণের প্রসঙ্গে ব্লগের বাইরের সদস্যদের চেয়ে ব্লগ সদস্যদের প্রতি সহনশীলতার ব্যাপারটিই মুক্তমনা কর্তৃপক্ষের কাছে অধিকতর প্রাধান্য পাবে।
২.১০। সঙ্কীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন, উত্তেজক ভাষায় পরিপূর্ণ কিংবা বিদ্বেষমূলক ভঙ্গিতে লিখিত প্রবন্ধসমূহ কোনভাবেই মুক্তমনায় প্রকাশের জন্য বিবেচিত হবে না। কোন ব্লগার এ ধরণের লেখা প্রকাশ করলে তা তৎক্ষণাৎ সরিয়ে নেয়ার অধিকার মুক্তমনা কর্তৃপক্ষ সংরক্ষণ করে। মনে রাখতে হবে যে, লেখকের গ্রহণযোগ্যতা বহুলাংশেই নির্ভর করবে সুষম প্রকাশভঙ্গির উপর। তার মানে অবশ্য এই নয় যে, আমরা লেখককে তার দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপারে আবেগময় হতে নিরুৎসাহিত করছি, বরং সাধারণ কান্ডজ্ঞান এবং ভদ্রজনোচিত আচরণ এক্ষেত্রে অগ্রগণ্য হিসেবে বিবেচিত হবে।
২.১১। ব্যক্তিগত আক্রমণমূলক, মানহানিকর, কলহমূলক বা বিদ্বেষমূলক যে-কোনো উপাদান বিনা নোটিশে সম্পাদনা করা যেতে পারে, কলহ নিরসনের জন্য এ ধরণের লেখায় কিংবা বিতর্কে মন্তব্য করারসুযোগ কর্তৃপক্ষ যে কোন সময় বন্ধ করে দিতে পারে। এ ধরণের কোন নোটিশ মুক্তমনার পক্ষ থেকে দেয়া হলে, সেটার প্রতি সদস্যদের অঙ্গীকার প্রত্যাশা করা হবে। কোন লেখক তা থেকে বিচ্যুত হয়ে সেটা নিয়ে আরেকটি লেখা প্রকাশ করে কলহ পুনরায় উজ্জীবিত করতে পারবেন না। একাধিকবার এই অপরাধ করা হলে সেটাকে ভ্যান্ডালিজমের পর্যায়ভুক্ত করা হবে, এবং এ সংক্রান্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে (১.৬ দ্রঃ)
২.১২। লেখার মধ্যে অশ্লীলতা পরিহার করতে হবে। কোন ধরণের লেখা অশ্লীল বলে বিবেচিত হবে সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
২.১৩। ধর্মীয় কিংবা রাজনৈতিক আদর্শ নিয়ে আলোচনা হতে পারে তবে এগুলোর একপাক্ষিক প্রচারণা উৎসাহিত করা হবে না।
২.১৪। লেখায় বানান ভুলের প্রতি সদস্যরা সচেতনতা দেখাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। অতিরিক্ত বানান ভুল থাকলে লেখা প্রকাশ করা হবে না কিংবা লেখা সরিয়ে ফেলা হবে।
২.১৫। প্রথম পাতায় একই লেখকের একটির বেশি লেখা সমীচীন নয়। একটি লেখা প্রকাশিত হয়ে গেলে লেখককে অপেক্ষা করতে হবে, একটি লেখা যখন প্রথম পাতা থেকে চলে যাবে তখনই কেবল আরেকটি লেখা লেখক পোস্ট করতে পারবেন।
২.১৬। অন্য ব্লগে ছাপানো পোস্ট মুক্তমনায় ছাপানো, অথবা মুক্তমনায় ছাপানো পোস্ট অন্যত্র ছাপানোকে আমরা নিরুৎসাহিত করি। সেক্ষেত্রে ব্লগ কর্তৃপক্ষ চাইলে পোস্টটি ব্লগ থেকে মুছে দিতে পারেন কিংবা প্রথম পাতা থেকে লেখকের নিজস্ব পাতায় সরিয়ে দিতে পারেন। তবে কিছু ক্ষেত্রে (যেমন, কোন জাতীয় জনগুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে পোস্ট, মানবতার পক্ষে প্রচারণা পোস্ট কিংবা জরুরী আহ্বানমূলক পোস্টের ক্ষেত্রে) বিশেষ বিবেচনায় ব্লগ কর্তৃপক্ষ নিয়মটি প্রয়োগ না করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। প্রিন্টেড মিডিয়া কিংবা কোনো অনলাইন ফোরামে যেখানে পাঠকদের মন্তব্য করার বা আলোচনায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ নেই, সেগুলো এই নিয়মের ব্যতিক্রম হিসেবে পরিগণিত হতে পারে। এ ব্যাপারে মুক্তমনা কর্তৃপক্ষের বিবেচনাই চূড়ান্ত।
২.১৭। মুক্তমনার মুখপত্র হিসেবে ঢাকা থেকে প্রাকশিত মুক্তান্বেষা এবং মুক্তমনা সদস্যদের দ্বারা পরিচালিত সমরূপ পত্র-পত্রিকা ছাড়া মুক্তমনায় অন্য কোন বাণিজ্যিক পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হবে না। এ ধরণের বিজ্ঞাপনমূলক পোস্ট অনতিবিলম্বে সরিয়ে ফেলা হবে, এবং প্রয়োজনবোধে লেখককে সতর্ক করা হতে পারে। মুক্তমনায় অন্য সাইট বা ব্লগের ঢালাও প্রচারণা কিংবা বিজ্ঞাপনও গ্রহণযোগ্য হবে না।
২.১৮। মুক্তমনায় কোন লেখকের লেখা নিয়ে সন্দেহ কিংবা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হলে, কিংবা লেখা বিষয়ে প্রয়োজনীয় রেফারেন্স চাওয়া হলে লেখক সেই বিভ্রান্তি দূর করতে আন্তরিক হবেন এবং প্রয়োজনীয় রেফারেন্স দিতে সচেষ্ট হবেন। তার পরিবর্তে লেখক নিজ প্রোপাগান্ডাকেই বিনা রেফারেন্সে সত্য হিসেবে জাহির করতে থাকলে মুক্তমনা কর্তৃপক্ষ লেখাটি মুছে ফেলতে পারেন এবং সেই সাথে লেখককে সতর্ক করতে পারেন। একাধিকবার এই অপরাধ করা হলে সেটাকে ভ্যান্ডালিজমের পর্যায়ভুক্ত করা হবে, এবং এ সংক্রান্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে (১.৬ দ্রঃ)।
২.১৮। মুক্তমনায় পারতপক্ষে কোন বিজ্ঞানবিরোধী লেখা প্রকাশিত হবে না। কোন ব্লগার প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানের বিপরীত কোন লেখা লিখলে তাকে বৈজ্ঞানিক জার্নাল কিংবা বিজ্ঞানের অথেন্টিক গ্রন্থ থেকে পর্যাপ্ত রেফারেন্স দিতে হবে। কেবল ইন্টারনেটের তথ্য ব্যবহার করে কিংবা প্রচলিত গুজবের উপর ভর করে প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানকে খন্ডন করার উদ্যোগ নিলে, সেই লেখা প্রকাশ না করারা কিংবা প্রকাশিত লেখা সরিয়ে ফেলার অধিকার মুক্তমনা সংরক্ষণ করে।
মন্তব্য প্রদান প্রসঙ্গে
৩.১। ‘লেখা প্রসঙ্গ’ তে যে বিষয়গুলো বলা হয়েছে তার সবই মন্তব্য করার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
৩.২। মন্তব্য বস্তুনিষ্ঠ তথা লেখার বিষয়বস্তুর সাথে সংশ্লিষ্ট হতে হবে। মনে রাখতে হবে, মন্তব্যের মাধ্যমে লেখক তার পাঠকদের প্রতিক্রিয়া জানতে চান এবং তা থেকে ফিডব্যাক নেন।
৩.৩। মুক্তমনা কোন আড্ডার স্থান নয়। মন্তব্যের মাধ্যমে আড্ডাবাজি করা যাবে না।
৩.৪। মন্তব্যের মাধ্যমে দল বেঁধে কাউকে আক্রমণ করা যাবে না। অর্থাৎ বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে যোগসাজসে পক্ষপাতিত্বমূলক বিতর্ক করা যাবে না। যে কোন লেখক তার নিজের দৃষ্টিভঙ্গিটি বিনা বাধায় প্রকাশ করতে পারেন, এবং সেটা অন্যের সাথে ভিন্নমত কিংবা সহমত তৈরি করতে পারে, কিন্তু তাই বলে কারো সাথে মিলে বিরুদ্ধ পক্ষকে হেনস্থা করার অভিসন্ধি করা যাবে না।
৩.৫। মন্তব্যের মাধ্যমে বিতর্ক করার সময় একজন ব্লগার বিপক্ষ যুক্তি খন্ডনেই মনোযোগী হবেন, বিশেষণ প্রয়োগে (যেমন, ছাগু, ছাগল, পাগল, নির্বোধ, গাধা, শুয়োর, ইডিয়ট, রামছাগল প্রভৃতি) নয়। বিষয়বহির্ভুত বিশেষণ প্রয়োগ করা হলে মন্তব্য মুছে ফেলার অধিকার মুক্তমনা সংরক্ষণ করে। মন্তব্যকারীকেও সতর্ক করা হতে পারে।
৩.৬। কোন লেখার মন্তব্যগুলো যদি বিষয়বস্তু বাদে অন্য দিকে চলে যায়, কিংবা বস্তুনিষ্ঠতা হারায় এবং গঠনমূলক না হয় তাহলে উক্ত লেখার মন্তব্য বন্ধ করে দেয়ার অধিকার কর্তৃপক্ষের রয়েছে। বস্তুনিষ্ঠতা রক্ষার্থে মডারেটর চাইলে কারো মন্তব্য মুছে দিতে পারেন।
৩.৭। মুক্তমনা কর্তৃপক্ষ ছাড়াও পোস্ট-লেখকেরও নিজেদের অধিকার রয়েছে তাঁর পোস্ট-কেন্দ্রিক আলোচনাকে নিয়ন্ত্রণ করার এবং প্রয়োজনে মডারেট করার। আশা করা হচ্ছে লেখকেরা সেটা দায়িত্বের সাথে পালন করবেন।
৩.৮। সদস্য ছাড়া অন্যদের (অতিথি এবং পাঠকদের) মন্তব্য প্রকাশিত হবার জন্য কর্তৃপক্ষের অনুমোদন লাগবে। বিষয়বহির্ভুত কিংবা আপত্তিকর মনে হলে কিংবা ব্লগের পরিবেশের জন্য যথোপযুক্ত না মনে করলে মডারেটর কোন মন্তব্য প্রকাশ নাও করতে পারেন। এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ কারো কাছে কোনো জবাবদিহি করতে বাধ্য নয়।
৩.৯। ব্লগ সদস্যরা কেবল নিজের প্রবন্ধে নয়, অন্যদের প্রবন্ধেও মন্তব্য করে আলোচনাকে প্রাণবন্ত করে তুলবেন বলে আশা করা হচ্ছে। কোন ব্লগার আর কোথাও মন্তব্য না করে কেবল নিজের প্রবন্ধেই মন্তব্য করতে থাকলে মডারেটরের পক্ষ থেকে হস্তক্ষেপ করা হতে পারে, প্রয়োজনে প্রবন্ধে মন্তব্য করার অপশন বন্ধ করে দিতে পারে।
মুক্তমনা কর্তৃপক্ষ প্রসঙ্গে
৪.১। মডারেশন প্রসঙ্গে অন্যান্য অনুচ্ছেদে যা বলা হয়েছে তার সবই এখানে প্রযোজ্য।
৪.২। মুক্তমনায় প্রকাশিত সকল লেখা এবং মন্তব্যের দায় একান্তই লেখকের। কারো লেখা বা মন্তব্যের জন্য কোনোভাবেই মুক্তমনা কর্তৃপক্ষকে দায়ী করা যাবে না।
৪.৩। লেখকদের কোন লেখাই মুক্তমনা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিনিধিত্ব করে না। লেখা মূলতঃ লেখক বা মন্তব্যকারীর দৃষ্টিভঙ্গিরই প্রতিফলন। মুক্তমনায় প্রকাশিত হয়েছে বলেই সেটা মুক্তমনা কর্তৃপক্ষের চিন্তাধারার প্রতিফলন ভেবে নেওয়াটা ভুল হবে। মুক্তমনা মুক্তচিন্তা প্রকাশের একটি প্লাটফর্ম; আর চিন্তা যত মুক্ত হবে, তার মধ্যে বৈচিত্র্যও তত বেশি থাকবে। নানা ধরণের বৈচিত্র্যকে ধারণ করেই মুক্তমনা বিকশিত হতে চায়।
৪.৪। মুক্তমনা সম্পাদনামন্ডলীর সাথের জড়িত ব্যক্তিরা নিজ নামে কোন লেখা প্রকাশ কিংবা মন্তব্য প্রদান করলে তা কর্তৃপক্ষের নয়, বরং লেখকের ব্যক্তিগত অভিমত হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।
৪.৫। মুক্তমনা কর্তৃপক্ষের সাথে লেখক সদস্যের সম্পর্ক কো্নোভাবেই মালিক-শ্রমিক, কিংবা দাতা-গ্রহিতার সম্পর্ক নয়। মুক্তমনা কোন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নয়। মুক্তমনার এডমিন এবং মডারেটরেরা তাদের জীবনের শত ব্যস্ততার মধ্যেও স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে মুক্তমনার জন্য সময় ব্যয় করেন।কাজেই তাদের কোন ভুলভ্রান্তিকে বন্ধুসুলভভাবেই গ্রহণ করতে হবে। কোন ধরনের হুমকি, ধামকি, ক্ষতিপূরণ, আন্দোলনের প্রেক্ষাপট ব্লগের জন্য প্রযোজ্য হবে না।
গোপনীয়তা প্রসঙ্গে
৫.১। মুক্তমনা লেখকেরা মূল নামে কিংবা যে কোন লেখক-নাম (pen name) গ্রহণ করে লেখার অধিকার রাখেন। লেখকের মূল নাম মুক্তমনা কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। নিজের সম্পর্কে একজন সদস্য যা যা গোপন রাখতে চান তার সবই গোপন রাখার অধিকার সদস্যকে দেয়া হবে। আশা করা হচ্ছে, বিভ্রান্তি এড়ানোর জন্য কেউ মুক্তমনায় অন্য কারো নেয়া মূল নাম (নাম একই হলে কোন পার্থক্যসুচক শব্দ বা প্রতীক জুড়ে দিন) বা একই লেখক-নামে লিখবেন না, কিংবা মন্তব্য করবেন না।
৫.২। ব্লগার তার ব্লগের প্রোফাইল থেকে ই-মেইল সর্বসমক্ষে দেখাবেন কি দেখাবেন না তার সিদ্ধান্ত নেবেন, এবং সেই অনুযায়ী অপশন নির্বাচন করবেন। মুক্তমনা কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।
৫.৩। লেখক বা মন্তব্যকারীর প্রাইভেসি বা গোপনীয়তা সম্পর্কে অন্যদেরকেও সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। লেখক তার যে বিষয়টি সবাইকে জানাতে চান না সেটা তার নিজ দায়িত্বেই লেখায় বা মন্তব্যে প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকবেন।
স্বত্বাধিকার প্রসঙ্গে
৬.১। মুক্তমনায় প্রকাশিত সকল লেখার স্বত্ব লেখকের।
৬.২। লেখা বা মন্তব্যে অন্য কোন লেখকের রচনা (তা সে যেখান থেকেই হোক না কেন) ব্যবহার করলে অবশ্যই তথ্যসূত্র উল্লেখ করতে হবে। অন্যথায় সেটা কুম্ভিলতা বা প্লেইজারিজম তথা সাহিত্যচুরি বলে বিবেচিত হবে। সেক্ষেত্রে লেখককে বিষয়টি জানানো হবে। তিনি যদি সূত্র যোগ করার মাধ্যমে তার লেখা সংশোধন না করেন তাহলে লেখা বা মন্তব্যটি মুছে দেয়া হবে। শুধু তথ্য সূত্র নয়, অন্য কারো লেখা পুরোটা কিংবা আংশিকভাবে কপি করে নিজের নামে চালানোকে অপরাধ হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়। এ ধরনের কাজকে ব্লগে কঠোরভাবে নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি লেখককের সদস্যপদ বাতিল সহ যে কোন পদক্ষেপ নেওয়ার অধিকার মুক্তমনা সংরক্ষণ করে।
৬.৩। যেসব লেখার এখনও কপিরাইট আছে সেগুলো স্বত্বাধিকারীর অনুমতি সাপেক্ষেই কেবল মুক্তমনায় প্রকাশ করা যাবে।
৬.৪। বাংলা ব্যতীত অন্য ভাষা থেকে অনুবাদের ক্ষেত্রে মূল লেখকের অনুমতি নিতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। কিন্তু অনেক সময় এসব অনুমতি নেয়ার ক্ষেত্রে মোটা অংকের অর্থের বিষয় থাকে। তাই ক্ষেত্র বিশেষে এ ধরণের আংশিক অনুবাদের উপর কপিরাইট এর নিয়ম শিথিল করা হতে পারে। এ ধরণের লেখাগুলো Fair use এর অধীনে মুক্তমনায় প্রকাশিত হতে পারে। তবে সেগুলোকে কো্নোভাবেই কোনো বাণিজ্যিক মাধ্যমে প্রকাশ করা যাবে না। মুক্তমনা বাংলা ব্লগ অবাণিজ্যিক এবং অলাভজনক বলেই এখানে ফেয়ার ইউজ এর বিষয়টি খাটতে পারে।