ভাই আপনি নাকি বেশি হাসেন?
জ্বী ভাই হাসি, আমরা হাসি দেশের মানুষ তো তাই হাসি। আমাদের দেশে কেউ কাঁদে না সবাই হাসে। কিন্তু আমাদের তবু একটা দুঃখ আছে। কেউ যে কাঁদে না এইটা আমরা মেনে নিতে পারি না। কাঁদাও একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যপার। সকল দেশের মানুষ কাঁদে আর আমরা কাঁদতে পারি না। আমাদের চোখে কান্না নাই। এইটাই আমাদের একমাত্র দুঃখ।
সেজন্য আপনারা কি করেছেন?
তেমন কিছু করতে পারি নাই। কেবল আমাদের প্রধান মন্ত্রীকে হাসি না বলে ডাকি। তাতেই আমাদের দুঃখ কিছুটা লাঘব হয়।
এবার রাজা আর বীরবলের গল্প কথা শুনে নেই।
ঐ যে রাজার বেগুন খাওয়ার গল্পটা? তাহলে আবার বলি। রাজা বীরবলকে সঙ্গে নিয়ে বাজার গেলেন। রাজা হাঁটছে, বীরবল হাঁটছে, হঠাৎ রাজা দেখতে পেল এককৃষক বেগুন বিক্রি করছে। কি চমৎকার দেখতে,এত সুন্দর জিনিস আমি আগে কখনো দেখিনি। এটা কি আমার রাজ্যে জন্মে? এই ফলটির নাম কি বীরবল? রাজা জানতে চাইল ।
বীরবল জানাল এর নাম রাজামশায় বেগুন। আপনি ঠিকই বলেছেন, এত সুন্দর ফল আগে আমিও দেখিনি।এটা আমাদের রাজ্যেই হয় রাজামাশায়।সত্যিই তো, এটা দেখতে চমৎকার।এটা রান্না করে খেতে হয়।
রাজা বলল, এটা খেতে কেমন বীরবল?
দারুন খেতে, অতি সুস্বাদু খাবার,একবার খেলে সারাজীবন মনে থাকবে। মানুষতো এই বেগুন আছে বলেই আপনার রাজ্যে বাস করছে।
প্রাসাদে ফিরে রাজা বেগুন দিয়ে খেতে বসেছে। কিন্তু কোনো ভাবেই খেতে পারছেনা। ডেকে পাঠাল বীরবলকে। এসব কি? এসব কি এনেছ?আমি তো খেতে পারছিনা।
রাজা মাশায়, বেগুন আবার মানুষ খায় নাকি। এর নামই হলো বে গুন, যার কোন গুন নেই। এটা আপনার কোনো ক্রমেই খাওয়া সম্ভব নয়। এসব রাজপ্রাসাদের খাবার তো নয়ই। খুবই জঘন্য।বাজারে এটা কেউ কিনে না। এসব ঘোড়ার খাবার রাজামশায়।
রাজা তো অবাক। প্রশ্ন করলো, কিন্তু তুমিই তো বাজারে বলেছ, এটা সুন্দর, খেতে চমৎকার।
জ্বি রাজা মশায় আমিতো আপনার চাকরি করি, বেগুনের নয়।
আমরাও তো রাজার দেশে বাস করি। রাজার ভালই আমাদের ভাল, রাজার মন্দই আমাদের মন্দ।আমরা সবসময় রাজার কথা বিশ্বাস করি। অতীতে সকল রাজারাই বলেছে তাদের সময়ে উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে। রাস্তাঘাট যা দেখা যাচ্ছে সবই উন্নয়ন। অর্থনীতি সমাজ নীতি সবই হচ্ছে তার সরকারের আমলে। তার পরে রাজা পরিবর্তন হয়ে এল। এবারও শুনতে পেলাম দেশের সব উন্নয়ন তারাই করছে। এই রাজন্য সৃষ্টির পর থেকে এমন একজনও রাজা পাওয়া যায়নি যারা একটু কম উন্নয়ন করেছেন। এমন একজনও রাজা আসেনি যারা দেশের জন্য সবচেয়ে বেশি ত্যাগ করেনি। অন্তত এমন কথাও আমরা শুনতে পাই নাই।
জনসাধারণ কিছু কিছু অন্য ধরনের কথা বলে বটে। কিন্তু আমরা রাজার মতো এত প্রভাবশালীর কথা কে অগ্রাহ্য করে কি করে অন্যের কথা বিশ্বাস করবো? করাটা কি আমাদের উচিত? না আমরা করবো না। আমরা বরাবরই রাজার দলের লোক। আমরাই তো পায়ে লুটিয়ে পরে তাদের ক্ষমতা দেই তবে তাদের কথা বিশ্বাস করতে কষ্ট হবে কেন?
আমরা বিশ্বাস করি। আমাদের দেশ প্রতিবছর অনেক উন্নতি করছে। শিক্ষা,স্বাস্থ,বাসস্থান,চিকিৎসা সব দিক দিয়ে আমরা মহা উন্নতি করেছি। কেউ যদি উন্নতি দেখতে ব্যর্থ হয় সেটা তার চোখের সমস্যা উন্নয়নের সমস্যা নয়।
আমি নিজের কানে শুনেছি রাজা কত উন্নয়ন করছে। আমি কি আমার কানকে অবিশ্বাস করবো? আপনি কি বলতে চান আমার কানকে অবিশ্বাস করা উচিত?
আমি বিশ্বাস করি আমাদের রাজা আমাদের জন্য কাজ করছে। আমাদের ভালর জন্য তাদের রাতের ঘুম হয়না(দিনের বেলায় বেশি ঘুমায় কিনা)। তাই রাতের বেলায় দেখার জন্য হিন্দি সিনেমা আমাদানী করতে হচ্ছে।
আমাদের অনন্দ অনেক গুন বাড়িয়ে দিতে এই মহতি উদ্যোগকে অনেকেই বিরোধীতা করতে শুনেছি। কিন্তু তাতে কি আমাদের রাজা মশায় কখনোই জনগনের এই সব কথায় কর্নপাত করেনি। ভবিষ্যতেও করবেনা। আমাদেরওতো একটা ইজ্জত আছে। তিনি আমাদের রাজা। রাজা হয়ে তিনি কোন ক্রমেই সাধারনের ইচ্ছার উপর ভিত্তি করে কাজ করতে পারে না।
আমাদের মহান রাজামাশায় সিংহাসন দখল করেই একবার হজ্জ্ব করতে সৌদিতে যান।তার পর প্রতিবছরই। যাবেনই তো শুরোতে যদি ডলার খরচের হাত ভাল না থাকে তবে পাঁচটি বছর এত ডলার কি করে খরচ করবে? মন্ত্রীরা এই দেশের কাজে এতই মনোযোগি হয় যে সবার কথা শোনার সময় পান না। বিদেশ সফর, আর টিভির ক্যামেরার সামনে হাজির থাকতে থাকতেই তো তাদের সময় যায়।
দিন দিন টিভি চ্যানেল যেভাবে বাড়ছে তাতে করে মন্ত্রীদের কাজ আরো বেড়ে গেল। কত সাক্ষাতকার কতো,প্রেস কফারেন্স কত মাইকে বক্তৃতা দিতে হয়। তার হিসাব কি কেউ রাখে? কেবল টাকা নিয়ে কিছু করলেই সবাই তেরে আসে। এত কষ্ট করে যদি কিছু টাকা জমানো না যায় তবে মন্ত্রী হয়ে কি লাভ? পরের পাঁচটি বছর কি জনগন খাওয়াবে? আর রাজার প্রাসাধ ছাড়ার পরে কি জনগনের বাসায় থাকা যাবে? তাই একটি প্রাসাধ তুল্য বাড়িও করতে হয়। প্রাসাধের গাড়ি ফিরিয়ে দেবার পরে কি হেঁটে চলাচল করবেন? তাই দুই চারটা গাড়িও আনতে হয়। এসব তো জনগনের জন্যই তাই না? জনগনের জন্য আনা গাড়িতে খরচ যাতে কম হয় তাই আমাদের রাজার মন্ত্রীরা আমদানী করা গাড়িতে টেক্স ফ্রি করে দেন।
আমাদের জন্য তারা এত যে করেন তার প্রতিদান স্বরুপ কি নেন? কিছুই না । আমাদের এত শুভাকঙ্খি রাজা মাঝে মাঝে প্রতিবেশিদের সাথে সম্পর্ক ঠিক রাখতে বুকের উপর দিয়ে তাদের রাস্তা করে দেন। রাজা বলে কি তার প্রতিবেশিদের সাথে একটু খাতির করতে ইচ্ছে করেনা। মাঝে মাঝে আমাদের গ্যাস ক্ষেত্রে কিছুটা সুবিধা নিয়ে তাদের কাজ পাইয়ে দেন। দিতেই পারেন। দেশের জন্য যে রাজা চিন্তা ভাবনা করেন তিনিই ভাল জানেন কোনটা তার জন্য ভাল। কোনটা দেশের জন্য ভাল।
সাধারণ কিছু কিছু মানুষ নিজের খেয়ে বুনের মোষ তাড়ান। তারা এই সব দেয়া নেয়ার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন। কি দরকার তাদের অন্দোলন করে? কাজ করবি খাবি। তোদের রাজার ব্যপারে নাক গলানোর কি দরকার? এর পরিনাম কত খারাপ হতে পারে তারা কি খেয়াল করেছে? তারা কি ক্রস ফায়ারের নাম শুনে নাই!!
একটি (মতান্তরে একাধিক) স্বার্থান্বেষী মহল প্রতিবেশিদের সাথে সব সময় আমাদের বিবাদ লাগতে চায়। আমাদের মহামান্য রাজার মন্ত্রীরা এই ব্যপারে খুবই সচেতন। তারা ঘোষনা দিয়েছে এসব কাঁটা তারের মৃত্যু নিয়ে রাজা চিন্তিত নন। খারাপ কি বলল রাষ্ট্রের জনসংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি। এত লোককে কি রাজামশায় সবসময় দেখে দেখে রাখতে পারবেন? রাজার কাজ রাজ্য চালানো ,লোকজন পাহাড়া দেয়া তো রাজার কাজ নয়। প্রতিবছর হানাহানিতেই তো অনেক লোক মরে। তবে সীমান্তের গুলিতে মরলে এত হৈচৈ কেন?
ভারতীয় পণ্য বর্জন সুর তুলেছে কিছু ছোকরা। তারা এসব করে আমাদের রাজার ভাবমূর্তি খারাপ করার চেষ্টা করছে। রাজা ধৈর্যযশীল তাই এই ব্যপারে এখনো কিছু বলছেন না। তবে তাদের মন্ত্রীদের মুখের তো আর এত ধৈর্য্ নাই। এই সব ছোকরারা যদি সাবধান না হয় তবে হয়তো আমাদের মাননীয় মন্ত্রীরা কিছু একটা করে বসতে পারেন। আর না হোক ক্যামেরার সামনে কিছু একটা বলে বসতে পারেন।জানেনইতো আমাদের মন্ত্রীরা ক্যামেরা দেখতে আর মাথা ঠিক থাকেনা।
সব রাজারই দু একটা সাকা আর বাবর থাকে। রাজার মান–ইজ্জতের কথা চিন্তা করে তাই এসব হাবিজাবি আন্দোলন বাতিল করা দরকার।
পরিশেষে আমাদের মহামান্য রাজার দীর্ঘায়ু কামনা করে ( অল্পায়ু কামনা করার পরিণাম নিশ্চয় জানে? ছয় মাসের জেল) আজকের মতো এখানেই শেষ করলাম।
জানতে চাওয়ার চে’ জানান দে’য়াটাই যে অধিক, তাই জানতে চাওয়ারা সংখ্যালঘু হ’তে হ’তে, হয়তো একদিন মাছ আর পাখিদের মত বিলুপ্ত হয়ে যাবে। মাটি আর নদীর মত নিজেদেরকে একদিন আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত ঘোষণা করবে।
মোষ তাড়ানোদের জানতে হ’লে, জানার চার দেয়াল থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, পথে নেমে না এলে, পথ দেয়ালে টাঙানো ছবিই হয়ে থাকবে।
এই যে লেখাটায় অনেককিছু ছু’য়ে গেলেন, দেখুন কতজন জানতে চায়?
@স্বপন মাঝি,
খাঁচার পাখির মতো অনেকেই খাঁচা ভালবেশে ফেলেছে। তার বাইরের পরিবেশ তাদের ভাল লাগেনা। তাই চেনা জানার গন্ডির বাইরে তাদের এত অনিহা।
কর্পোরেট সময়ে হাতের আঙ্গুলে গুনে দেখে লাভ কত? যদি কম হয় তবে চোখ ঘুড়িয়ে নেয়।
আপনার চমৎকার মন্তব্য পড়ে ভাল লাগলো।
আসুন এই মোষ তাড়ানোদের নিয়ে, প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে একটা গান শুনি।
httpv://www.youtube.com/watch?v=Tz5rG6kzB4M
@স্বপন মাঝি,
জানি মোষ তাড়ানো মোটেও সহজ কাজ নয়। কিন্তু যারা করেনি তারা কি করে জানবে?
রাজার দায়িত্বটা কি বলুনতো? প্রজাকুলের মন রক্ষা করা! যে প্রজাকুল তাকে এত সোহাগ করে ভোট দিয়েছে, তাকে সে ভুলে যায় কি করে? তাই প্রজার হিন্দি ছবি দেখার বায়না, সন্ত্রাস-দুর্নীতি করে অর্থ উপার্জন করার আব্দার রাজাকে মেটাতেই হয়!
চ্যানেলের সিদ্ধান্ত রাজার নাকি বাজারের? ভোক্তাকুলের চাহিদা মোতাবেকই চ্যানেলগুলো চলে; হিন্দি সিনেমার জোয়ার যেমন রয়েছে, তেমনি অধুনা জাকির নায়েককেও ভোক্তারাই বুকে তুলে রেখেছে; হিন্দি চ্যানেল বা জাকির নায়েককে সরায়, এত বড় সাধ্যি আজ রাজারও নেই, বিশ্বাস করুন!
বাজার অর্থনীতির এই যুগে, এসব ভাই, প্রজাকুলই ঠিক করে। তাদের বিদেশী পণ্য প্রীতি সরকারের সব বাঁধাকে ডিঙ্গিয়ে বিদেশী পণ্য এদেশের মাটিতে আনবেই! এইসব ভক্ত প্রজাবৃন্দ এমনকি সরকারকে শতভাগ শুল্ক দিতেও রাজী আছে, তবু বিদেশী পণ্যের সুমধুর সুবাস তারা উপভোগ করবেই।
পরিশেষে, এমন একটি দেশ দেখান যেখানে শুধু রাজাই উন্নতি করে দিয়েছে? রাজা-প্রজার যৌথ প্রচেষ্টা ছাড়া প্রকৃত উন্নয়ন কখনই সম্ভব না! এবং এখানে প্রজার ভূমিকাই বেশী মনে হয় আমার; কারণ ভাল রাজাকে নির্বাচন করার বা স্বৈরাচারী রাজাকে নামানোর চাবিকাঠি তো প্রজারই হাতে!
@কাজি মামুন,
“[[মন্তব্যটির জবাব দিন]]” বাটনটি ব্যবহার করে একই থ্রেডে আলোচনা চালালে ভালো হয়না? সবাই সহজে ফলো করতে পারে,যাকে জবাব দিচ্ছেন সেই ইমেইলে নোটিফিকেশন পেয়ে যায়।
@রামগড়ুড়ের ছানা ভাই,
অনেক ধন্যবাদ ভুলটি ধরিয়ে দেয়ার জন্য! অসাবধানতাবশত ঘটে গেছে। তবে ”দেই ও নেই এর উপকথায়” মাঝে মাঝেই ”মন্তব্যটির জবাব দিন” বাটনটি পাইনি! এই কারণে রুপম ভাইয়ের একটি মন্তব্যের প্রতিউত্তরে করা আমার কিছু প্রশ্ন অন্য থ্রেডে করতে হয়, যা হয়ত রুপম ভাই এখনও জানতে পারেন নি! তাছাড়া, আমার একটি প্রশ্ন রয়েছে। সম্প্রতি অনেকের সাথেই আমার দ্বিমত হচ্ছে; আর মুক্তমনায় সাহস করে সেগুলো লিখেও ফেলছি; কিন্তু এভাবে অব্যাহত বিতর্কে জড়ানো মুক্তমনার নীতিমালা লঙ্ঘন করে কি? আমি মন্তব্যের সময় খুব দ্বিধাগ্রস্ত থাকি; একবার মনে হয়, মনের প্রশ্নটা করেই ফেলি; আবার মনে হয়, না, ঠিক হবে না, যেহেতু অন্যরা অপছন্দ করছে, হয়ত প্রবেশ বন্ধ করে দেয়া হবে!
@কাজি মামুন,
এটার কারণ হলো থ্রেড খুব বেশি লম্বা হয়ে যাচ্ছিলো। নিশ্চয়ই লক্ষ করেছেন থ্রেড বড় হলে আড়াআড়ি ভাবে মন্তব্যের জায়গা কমতে থাকে,একটা নির্দিষ্ট লেভেলের পর থ্রেডিং বন্ধ হয়ে যায়।
আপনার দ্বিধাগ্রস্থ হবার কারণ নেই,মুক্তমনার এ ধরণের কোনো নীতিমালা নেই যে বিতর্কে জড়ানো যাবেনা বা দ্বিমত পোষণ করা যাবেনা,বরং মুক্তমনা সবসময়ই বলছে প্রশ্ন করতে,আর বিতর্কেতো মডারেটররাও নিয়মিত জড়ায়। তাই নিতান্তই কুরুচিপূর্ণ,মানবতাবিরোধী,জাতিবিদ্বেষপুর্ণ ইত্যাদি না হলে বিতর্কে জড়ানোর অজুহাতে মডারেটররা কখনোই মন্তব্য আটকাবননা।
@কাজি মামুন,
প্রজাকুলের একটি বড় অংশ হিন্দি ছবির প্রেমে হাবুডুবু খায়।
প্রজাকুল ঠিক করে বাজার অর্থনীতি।
প্রজাকুল বিদেশী চ্যানেল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়।
প্রজাকুল সরকারের সব বাঁধাকে ডিঙ্গিয়ে বিদেশী পণ্যদেশে আনে।
আর রাজা?
প্রজার হিন্দি ছবি দেখার বায়না, সন্ত্রাস-দুর্নীতি করে অর্থ উপার্জন করার আব্দার মেটায়।
এটা সরকার না নাপিত? চুল ফালায় না —– ফালায়?
এতো যুক্তি তর্ক, মন্তব্য উপমা উদাহরণ দেয়ার পরেও আপনি অনর্গল জনগনকে, প্রজাকে দোষারোপ করেই যাচ্ছেন। আমি বলি উপরের সব কিছুর জন্যে রাজা দায়ী। এমন কি হিন্দী সিনেমা দেশে আমদানী করা যদি দেশের জন্যে ক্ষতিকর হয় আর কিছু পাবলিক তা করে, সে জন্যেও সরকার দায়ী, জনগন নয়। কিছু মানুষের আবদার মেটাতে গিয়ে সরকারের কি দেশে শরিয়া আইন চালু করা উচিৎ? জনগনকে আপনি কী ভাবে কেন দোষবেন তা আমি বুঝতে পারিনি।
@আকাশ মালিক,
ধন্যবাদ আপনার চমৎকর মন্তব্যের জন্য।
এই ফাঁকাটা দেখে হাসতেই আছি। :guli:
ফেসবুকে আজ সাজ্জাদ কাদীর এর একটা স্টেটাস দেখে ভাল লাগলো।
আমিও মনে করি ভেতরে কোন “কিন্তু” রেখে দেশকে ভালবাসা যায়না।
আমি জানতে চেয়েছিলাম, এমন লোকের সংখ্যা কত শতাংশ হবে বলে আপনার মনে হয়? আমার অনুমান তাদের শতকরা হার খুব কস্ট করেও খুব বাড়ানো সম্ভব নয়! অবশ্য একটি বড় সংখ্যা আছে, যারা কোন ছবিই দেখে না; কিন্তু ছবি নিয়ে যেহেতু আলোচনা হচ্ছে, তাই তাদের কথা এখানে আসে না।
ছবিপ্রেমী প্রজাকুলের একটি বড় অংশই যখন হিন্দি ছবির প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে, তাই হাসিহীন রাজার দেশের উন্নয়নে তাদেরও অংশীদার করা উচিত নয় কি? আমার মতে, হাসিহীন রাজার দেশের সব উন্নয়নে রাজা-প্রজার সমান কৃতিত্ব রয়েছে!
@কাজি মামুন,
অবশ্যই রয়েছে। এর থেকে পরিত্রানের উপায় বের করার দ্বায়িত্ব রাজার বেশি। ক্রিটিকেল ব্যপার গুলোতে সাধারনের উপর ছাড়ার কোন সুযোগ নাই। আমাদের দেশে কি পরিমান বিদেশি পণ্য আসবে এসব তো আর সাধারন মানুষ ঠিক করেনা। আজকে যদি রাজারা চিনা সিনেমা আমাদনী করতো মাসে চারটি। এমন ভাবেই যদি চলতে থাকে কয়েক বছর। এবং টিভিতে কেবল চায়না চ্যানেল গুলো থাকতো তবে তার পরিনতি কি হতো? এমনই হতো। তাই এসব সিদ্ধান্ত প্রজারা নেয় নি। নিয়েছে রাজারাই।
নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর উলঙ্গ রাজা কবিতাটির কথা মনে পরে গেল।
এ দেশের উন্নয়নের জোয়ার এত যে আমরা ভেসে থাকতে না পেরে ডুবে মরছি।
প্রশ্নঃ ভাই আপনি কি আওয়ামী লীগ করেন?
উত্তরঃ না
প্রশ্নঃ আপনি কি বিএনপি করেন?
উত্তরঃ না
প্রশ্নঃ তাহলে…?
উত্তরঃ আমি বাংলাদেশ করি; যোগ দেবেন আমার দলে?
@মনজুর মুরশেদ,
জ্বী আমিও বাংলাদেশ করি।
@আসরাফ,
অবশ্যই! এই কাল্পনিক কথপোকথনের উত্তরদানকারী আসলে আপনি বা আপনার মতো নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশীরা যাদের কাছে নেতা, দল বা ধর্ম পরিচয়ের চেয়ে দেশ আগে। শুভেচ্ছা।
শুধু রাজারাই হিন্দি সিনেমা আমদানী করে না; প্রজাদেরও এখানে কিছু অবদান না দিলে তাদের উপর অবিচার করা হয়; কারণ
(১)প্রজাদের একাংশ প্রটেকশানের নিরাপদ ছাতার তলায় থেকে বছরের পর বছরের পর হিন্দি ছবির নকল ছবি বানিয়ে থাকে; অবশ্য দেশীয় সংস্কৃতির বিকাশের লক্ষ্যে চার-পাঁচটি হিন্দির ছবির অংশবিশেষ জোড়া লাগিয়ে একটি বিসদৃশ বঙ্গীয় সংস্কৃতির ছবি উদ্ভাবন করা হয়;
(২)প্রজাদের আরেক অংশ উপরে বর্নিত ছবিগুলো পরম সুখে উপভোগ করে দেশীয় শিল্প-সংস্কৃতি চরম পৃষ্ঠপোষকতা করে থাকে;
(৩)প্রজাদের ভিতর তুলনামূলক শিক্ষিত ও উন্নত সমাজে পদার্পনকারী একটি অংশ অবশ্য উপরে বর্ণিত নোংরা ছবিগুলোকে ভয়াবহ ঘেন্না করে; হলের জঘন্য ও বস্তি টাইপের পরিবেশ তারা সবসময় এড়িয়ে চলে। কিন্তু তাই বলে হিন্দি ছবি দেখার উত্তেজনা ও ইন্দ্রিয়সুখ থেকে যে এরা বঞ্চিত হয় তা না। ঘরে বসে ডিভিডিতে মহা আনন্দে হিন্দি ছবির নাচা-গানা-তামাশা তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করে এরা!
এখন আশরাফ ভাই, আপনার কাছে আমার বিনীত জিজ্ঞাসা, প্রজাকূলের কয় শতাংশকে আপনি উপরের তিন শ্রেণীর বাইরে রাখতে পারবেন?
@কাজি মামুন,
কেবল তিনটি প্রকার কেন? যারা সিনেমাহলের বাইরেও হিন্দি সিনেমা দেখেনা। এমনকি হিন্দি গানও পছন্দ করেনা এমন লোকের সংখ্যা কম নয়।
পথে দশটাকার একটা নোট ফেলে আসলে । কিছুক্ষন পরে ফিরে গিয়ে আর পাবেন না। তাই বলে সবারে চোর বলতে পারেন?