শাশতিকী
shashwatiki
সাহিত্য-সংস্কৃতির অর্ধবার্ষিক
ভাদ্র ১৪১৭, আগস্ট ২০১০
সংখ্যা ৬, বর্ষ ৩

২৫ শে আগস্ট প্রকাশিত হচ্ছে শাশ্বতিকীর অনুবাদ সংখ্যা

এ সংখ্যায় যা যা থাকছে

অনুবাদ বিষয়ক মুক্তগদ্য

আব্দুল্লাহ আল মামুন
বাংলাদেশের অনুবাদ সাহিত্য : মৌলিকত্ব ও সৃজনশীলতা/০৭
খোন্দকার আশরাফ হোসেন
তরজমার জমাখরচ /২৩
কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর
অনুবাদ : সৃজনের নবনির্মাণ!/২৮

অনুবাদ প্রবন্ধ

ল্যারি শুভার্জ
টনি মরিসন ও উইলিয়াম ফকনার : আমেরিকার ঔপন্যাসিকের প্রয়োজনীয়তা/৩৩
অনুবাদ : দুলাল আল মনসুর
হেনরি মিলার
ভাবনাগুচ্ছ/৪০
অনুবাদ : আলম খোরশেদ
ড্যান বার্কার
ঈশ্বরবাদ খন্ডন/৪৮
অনুবাদ : সৈকত চৌধুরী
অসীম দত্তরায়
আধ্যাত্মিকতা ও মানব-মস্তিষ্ক/৪৩
অনুবাদ : রাতুল পাল
জিদ্দু কৃষ্ণমূর্তি
ব্যক্তি ও সমাজ/৫৮
অনুবাদ : এ.এম. রেজাউর রহমান রিয়েল

অনুবাদ গল্প
আর্নেস্ট হেমিংওয়ে
আ ক্লীন, ওয়েল লাইটেড প্লেইস/৭১
অনুবাদ : মীর ওয়ালীউজ্জামান
অ্যামোস ওজ
বেদুঈন ও ভাইপার/৭৬
অনুবাদ : জাকির তালুকদার
আমোস তুতুওলা
লেডি গোবরেপোকার বায়োডাটা/৮৯
অনুবাদ : মোয়াজ্জেম আজিম
আন্তন চেখভ
বাজি/৯৩
অনুবাদ : মাসউদ আখতার
আর কে নারায়ণ
সান্ধ্য উপহার/১০০
অনুবাদ : তাওহীদ পাভেল

নোবেল ভাষণ/৬২
মিগুয়েল অ্যান্জেল অস্ত্তরিয়াস
অনুবাদ : শরীফ আতিক-উজ-জামান

অনুবাদ নাটক
আন্তন পাভলোভিচ চেখভ
তিন বোন/১৪৫
অনুবাদ : জি এইচ হাবীব

নিয়মিত বিভাগ

বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ
মোহাম্মদ আব্দুর রশীদ
মুক্তির অন্বেষণে/১৬১

চলচ্চিত্র
রেজাউল করিম সিদ্দিকী
কালকূটের অমৃত কুম্ভের সন্ধানে-র চিত্ররূপ/১৬৮

সাহিত্যকাগজ পাঠ
সদ্যসমুজ্জ্বল
প্রাঙ্গণ : একটি পর্যালোচনা/১৮০
মর্মরিত ঊষাপুরুষ
শাশ্বতিকী : পাঠ ও পাঠান্তরে/১৮৩

গ্রন্থালোচনা
তৌহিদ ইমাম
কৈরবীলগ্নে : জোছনার দহলিজ অথবা গল্পের কুহক/১৭৭

অনুবাদ কবিতা

সমকালীন ভারতীয় কবিতা/১০৫
ভাষান্তর : রায়হান রাইন
শার্ল বোদলেয়ারের কয়েকটি কবিতা/১২৫
অনুবাদ : হাসানআল আব্দুল্লাহ
কিছু আধুনিক জার্মান কবিতা/১১২
অনুবাদ : হিন্দোল ভট্টাচার্য
স্যাফো’র কবিতা/১১৯
অনুবাদ : অর্জুন চৌধুরী
এপিগ্রাম/১২৮
অনুবাদ : মলয় রায়চৌধুরী
মুস্তফা মাহমুদ
রুমাল/১৩৬
অনুবাদ : হোসেনউদ্দীন হোসেন
রবিনসন জেফার্স
ডায়মন্ড হারবারের দৃশ্য/১৩৭
অনুবাদ : হোসেনউদ্দীন হোসেন
ওসিপ ম্যানডেলস্টাম অ্যাডোনিস
আগুনের গাছ-এক গুচ্ছ আধুনিক আরবি কবিতা/১২১
অনুবাদ : আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ
আধুনিক বাংলা পদ্য-রূপান্তরে চর্যাপদ/১৪৩
সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ
ভস্নাদিমির মায়াকোভস্কি’র দুটি কবিতা/১৩১
অনুবাদ : সৌমিত্র দেব
ভিসওয়াভা সিমবর্স্কা
বিজ্ঞাপন/১৩৯
অনুবাদ : পৃথ্বীরাজ চৌধুরী
কয়েকটি ভারতীয় কবিতার অনুবাদ/১২৯
অনুবাদ : অরুন চক্রবতী
মাহমুদ দারবিশ
রিতা ও রাইফেল/১৩৪
অনুবাদ : শেখ নজরুল
উইশলাবা জবরস্কার
দমন-পীড়ন/১৪০
অনুবাদ : অ্যালবার্ট অশোক
ম্যানুয়েল আলেগ্রের একটি লিরিক অবলম্বনে
যে গান জীবনের/১৩৩
ভাবানুবাদ : ম হাসান
একটি জাপানি গানের অনুবাদ/১৩৮
অনুবাদক : মোঃ ফয়সাল জামান
আলেক্সজান্ডার পোপ
সুখী লোক/১৪২
অনুবাদ : গৌতম বসু

লেখক পরিচিতি/১৮৭
পৃষ্ঠা – ১৯২
মূল্য – ৫০/=

কুরিয়ার যোগে কপি পেতে চাইলে যোগাযোগ করুন :
০১৭১৭-৫১৩০২৩, ০১৭১৭-১২৫২৮৩, ০১৭২৩-২১০৩৭৩ (৬০ টাকা ফ্লেক্সি করলে কুরিয়ার যোগে আপনার সংখ্যা পেয়ে যাবেন)
সম্পাদক, শাশ্বতিকী
মোল্লা ভবন, রুম নং- ৫২২/১৩২
সাহেব বাজার, রাজশাহী

মুখ্য পরিবেশক
: লিট্ল ম্যাগ প্রাঙ্গণ
৭৯-আজিজ সুপার মার্কেট (২য় তলা), শাহবাগ, ঢাকা।
টুকিটাকি স্নাকস, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
বুক পয়েন্ট, সোনাদিঘীর মোড়, রাজশাহী।
বই মেলা, কুষ্টিয়া।
টাউন লাইব্রেরি, ব্রিজের মোড়, নওগাঁ।
পড়ুয়া, থানা রোড, বগুড়া।
একুশে নিউজ কর্নার, খুলনা।
দোয়েল বুক হাউজ, মেহেরপুর।
কারেন্ট বুক সেন্টার, জলসাঘর, চট্টগ্রাম।
বইপত্র, ৯০ রাজা ম্যানশন (দোতলা), জিন্দাবাজার, সিলেট।
জেনারেল বুক ডিপো, সদর হাসপাতাল রোড, যশোর।

সম্পাদকীয়

নাটকের পর শাশ্বকিতীর এবারের আয়োজনে থাকছে অনুবাদ। অনুবাদ সাহিত্যের সৃজনশীলতা নিয়ে বিশদ তর্ক আছে। অনুবাদ সাহিত্যে মূলের স্বাদ অটুট থাকে না। অনুবাদ করাটাও বেশ মুশকিলেরবোদ্ধা পাঠকরা কখনই সন্তুষ্ট হন না। মূলের বেশি কাছে গেলে বলেন, খুবই আক্ষরিক; আবার মূল থেকে ছুটে গিয়ে আপন ঢং মেশালে বিশ্বস্ততা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন; তবে অনুবাদের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কোন দ্বিমত নেই। একটি দেশের সাহিত্যের ধারা ও বিষয়বস্ত্ততে পরিবর্তন আনতে অনুবাদের ভূমিকা অপরিসীম। আর তাছাড়া, পৃথিবীর যে কোন প্রান্তের পাঠক যদি গ্যেটে, মিল্টন, রবীন্দ্রনাথ, হোমার, হেমিংওয়ে, তলস্তয় না পড়েন তাহলে কোনটা ভালো পদ্য এবং কোনটা ভালো গদ্য তা নির্ণয় করবেন কোন সূত্রমতে?
বাংলা সাহিত্য ৩০-এর দশকে পঞ্চপান্ডবের হাত ধরে রবীন্দ্রবলয় থেকে বের হতে শুরু করে। এই দশকের কবিদের ‘বাংলা ভাষার ইউরোপিয়ান কবি’ (আল মাহমুদ প্রায়ই বলেন) বলে কটাক্ষ করা হলেও এঁদের ভয়াবহ রকমের প্রয়োজন ছিল আমাদেরঅন্তত আমি তাই মনে করি। সাহিত্য একেক সময় একেক অভিজ্ঞতার পথ ধরে যেতেই পারে এবং এই যাওয়াটা মঙ্গলের। অনুবাদ সাহিত্য এই পথগুলোর সৃষ্টি করে।

বর্তমানে প্রায়শই শাশ্বতিকীর অবস্থানগত দিক নিয়ে নানাবিধ প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। শাশ্বতিকী ছোটকাগজ কিনা এই নিয়ে বেশ ভাবনায় পড়ে যান অনেকেই। বিষয়টি আলোতে আনার দরকার : শাশ্বতিকীর যাত্রা শুরু হয় ২০০৮ সালের এপ্রিল মাসে‘ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকা’ এই সাবটাইটেলে। ঐ সময় ছোটকাগজ সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণাই ছিল না আমাদের। বুঝতাম, ছোটকাগজ এবং বড়কাগজ নিতান্তই আকারগত বিষয়! জানতাম, কাগজ দুই ধরনের : একটি সাহিত্যের অন্যটি খবরের। পরে চিহ্ন পরিবার ও বাংলা বিভাগের ছাত্রদের বদৌলতে ছোটকাগজ সম্পর্কে অনেক কিছুই জানলাম, বুঝলাম কি-না জানি না। ছোটকাগজ সম্পর্কে যত জানলাম তত কনফিইজড্ হয়ে পড়লাম; দেখলাম, বিষয়টি খুবই ঘোলাটেএকজনের মতের সাথে অন্যজনের মেলে না। নিসর্গর, শিল্প সাহিত্য বিষয়ক খুদে পত্রিকা, লিট্ল ম্যাগাজিন সংখ্যাটি পড়লাম। এই বিষয়ের উপর, যতদূর মনে আসে, ২৭ জন নামজাদা লেখক লিখেছেন (সাক্ষাৎকারসহ); এখানেও যে যাঁর মত করে ভেবেছেন ছোটকাগজ বিষয়টি। আরো দ্বিধায় পড়ে গেলাম; তবে একটি বিষয় পরিষ্কার হল : সবার শর্ত মেনে চলে এমন ছোটকাগজ বাংলাদেশে কোনদিনও ছিল না। থাকাটা সম্ভব হয়নি আর কি! নিসর্গ লিট্ল ম্যাগ নিয়ে বিশেষ সংখ্যা করেছে, কিন্তু এই সংখ্যার ভেতরে পড়েই উদ্ধার করলাম : নিসর্গ নিজেও ছোটকাগজ নয় (যদিও ওঁরা লিখেছে, ‘শিল্প সাহিত্য বিষয়ক খুদে কাগজ’। ২৩২-পৃষ্ঠার একটি পত্রিকা, যেখানে লিখেছেন এই সময়ের সব পরিচিত লেখক, যাঁদের অনেকের লেখা শুক্রবারের দৈনিক খুললেই দেখা যায়, সেই পত্রিকা খুদেকাগজ হয় কি করে মাথায় আসে না! )

মাঝে মধ্যে অন্যান্য পত্রিকার সম্পাদকেরা আমাকে বলেন, ‘ভাই, আমরা হচ্ছি কমরেড; ছোটকাগজ মানেই হচ্ছে একটি সংগ্রামী সত্তা।…’ এই সব পত্রিকায় আপনি ক্ষমতাসীন দলের সমালোচনামূলক লেখা পাঠান, ছাপবে না। পত্রিকা খুললেই দেখা যায়, গৎবাঁধা গল্প ও কবিতায় ভরা। এই সম্পাদকেরা, আমি যতদূর জানি, কোন লেখককে ফোন করে বলেন না, ভাই অমুক বিষয়ে একটা প্রতিবাদী কবিতা কিম্বা গল্প লিখে দেন তো! তারা প্রতিষ্ঠিত কিম্বা মোটামুটি জানাশুনা লেখকদের কাছে ফোন করে লেখা চান এবং ওনারা যা দেন তাই বগল বাজাতে বাজাতে ছেপে দেন। অনেক সম্পাদক আবার শ্লোগান না জেনেই মিছিলে যোগ দেন। সম্পাদকীয়তে বড় বড় বুলি ছাড়েন।বিষয়গুলো একবার খতিয়ে দেখা দরকার।
আবার আসছি শাশ্বতিকী বিষয়ে, শাশ্বতিকী কোন দিনই ছোটকাগজ ছিল না (ছোটকাগজের প্রচলিত ধারণামতে)এটা বরাবরই সাহিত্যকাগজ। প্রথমদিকে পোশাকগত জীর্ণতা ও কাঁচা হাতের লেখা দেখে হয়ত অনেকেই ভাববেন, শুরুটা আমাদের হয়েছে ছোটকাগজের কথা মাথায় রেখে; কিন্তু সত্যি হল, তখন আমরা ছোটকাগজ কি বুঝতাম না। আর বড় লেখকদের লেখা ছাপা হয়নি কারণ তাঁরা আমাদের লেখা দিতেন না। যাঁরা ছোট কাগজ নিয়ে মোটা মোটা বুলি ছাড়েন তাঁরাও না। আর প্রেসে যেতে পারিনি টাকার অভাবে।

বলে রাখা ভালো, ছোটকাগজ নিয়ে কোন মাতামাতিই আমাদের ভেতরে নেই (বিষয়টি হয়ত বুঝিনা বলেই)। আমরা পিটিয়ে লেখক তৈরীর নীতিতে বিশ্বাসী নই। এবং আমরা মনে করি, লেখালেখিটা সম্মানজনক পেশা হওয়া বর্তমান সময়ে খুবই প্রাসঙ্গিক। চলতি সময়ে শিল্প সাহিত্যের চর্চাটা যেন খুবই লজ্জার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমাজে বুক ফুলিয়ে কেউ বলতে পারে না, ‘আমি কবিতা লিখি’। কবি কিম্বা অভিনেতা যদি কারো প্রশ্নের (কি করেন) উত্তরে বলেন, আমি কবিতা লিখি কিম্বা মঞ্চে অভিনয় করি; তিনি আবারো প্রশ্ন করেন, ‘বুঝলাম, কিন্তু আপনি কি করেন (জীবিকার জন্য)?’ এই পরিস্থিতিতে আমরা সামগ্রিকভাবে আমাদের নিজস্ব সাহিত্য ও সংস্কৃতির কদর বাড়ানোর জন্য কাজ করে যেতে চাই। আমাদের সাহিত্য ও সংস্কৃতির মর্জাদা ও এর প্রয়োজনীয়তার দিকটা তুলে ধরা সম্ভব হলে এর চর্চাও বেড়ে যাবে বহুগুনে। আর সেটা হলে, কে/কোন পত্রিকা কয়টা লেখক তৈরী করেছে/করল এই তর্কে উপবিষ্ট হওয়ার প্রয়োজন হবে না। (আর যদি ‘কে লেখক আর কে লেখক না’ এবং ‘কোনটা ছোটকাগজ কোনটা বড়কাগজ’ শুধুমাত্র এই বিষয় নিয়ে সভা-সেমিনারে মেতে ওঠে বুদ্ধিদীপ্ত সমাজ, তাহলে, সেমিনার শেষ করে তাঁরা বাইরে এসে সাধারণ মানুষকে বলতে শুনবে, সাহিত্য ও সংস্কৃতিসেটা আবার কি জিনিস!? একটা দেশের সাহিত্য ও সংস্কৃতি সেই দেশের কুলি-মুটে-মজুর ও কৃষক থেকে শুরু করে সকলের। সাহিত্য ‘আলু-পটল’ নয় ঠিকই তবে, আশা করি কারো দ্বিমত হবে না, আলু পটলের থেকেও সর্বজনীন ও দরকারি; সুতরাং চেষ্টা করতে হবে, সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সাহিত্য ও সস্কৃতিগতভাবে যে অধিকার ও দায়বদ্ধতা, তা প্রতিষ্ঠা করতে। এতে শ্রেণীবৈষম্যও অনেকাংশে লোপ পাবে।

একুশ শতকের সাহিত্য ত্রমেই যেন জীবন থেকে ছিটকে পড়ছে, সাহিত্যের বেহাল দশার অন্যতম কারণ এটাই। এখন সাহিত্যের প্রয়োজনীয়তার দিকটাকে আলোচনায় আনতে হবে। আরো জীবন ঘনিষ্ঠ করতে সাহিত্যকে। ভোগের নেশা যাকে দগ্ধ করে প্রতিনিয়ত, ক্ষুধায় যার পেট চোঁ-চোঁ করে, সে কবিতা পড়বে কেনযদি না কবিতা তাকে মাতাল করে, খোঁচাতে থাকে মগজের ক্ষতে?) এই প্রচেষ্টাকে সামনে রেখে শাশ্বতিকীর নাটক সংখ্যা ও অনুবাদ সংখ্যা প্রকাশিত হল এবং লোকসাহিত্য সংখ্যার কাজ চলছে।

মুক্ত আলোচনার প্রত্যাশায়…
সম্পাদক