ঈশ্বর কী আছে? ক্রেইগ-ফ্লু বিতর্ক
পর্ব – ৩
প্রফেসর ফ্লুর সূচনা বক্তব্য
সক্রেটিস যেভাবে ক্ষমা চেয়ে শেষ করেছিলেন আমাকেও সেভাবেই শুরু করতে হচ্ছে। ঈশ্বর যে নেই সেটা আমি কোনভাবেই প্রমাণ করতে যাচ্ছি না। বরং আমি দেখাতে চাচ্ছি যে, ঈশ্বর যে আছে সেই বিশ্বাসের স্বপক্ষে পর্যাপ্ত যুক্তিপ্রমাণ উপস্থিত নেই। ডক্টর ক্রেইগ এর অবস্থান অবশ্য এর সম্পূর্ণ বিপরীত। আমার পক্ষে কোনভাবেই প্রমাণ করা সম্ভব হবে না যে ঈশ্বর নেই। কিন্তু, তিনি মনে করেন যে ঈশ্বর থাকার স্বপক্ষের পর্যাপ্ত পরিমাণ যুক্তি প্রমাণ তার কাছে রয়েছে।
এন্টনি ফ্লু
তিনি তার বিশ্বাসের স্বপক্ষে এতো বেশি যুক্তিতর্ক প্রদর্শন করেছেন যে আমার পক্ষে, আমার বরাদ্দকৃত সময়ের মধ্যে সেগুলোর সব উত্তর দেওয়া সম্ভবপর নয়। উনি যে পরিমাণ যুক্তিতর্ক নিয়ে হাজির হয়েছেন তাতে বলতেই হবে যে, তিনি এবং তার সঙ্গী-সাথীরা সম্মিলিতভাবেই চিন্তার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সাহসী এবং অগ্রসর। কেননা, কী কারণে বিশ্বজগত সৃষ্টি হয়েছে তা তারা জানেন বা জানতে পেরেছেন । আমার মূল যুক্তি হচ্ছে যে, আমাদের সবার সম্পূর্ণ জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতাটাই এসেছে বিশ্বজগত থেকে। এই বিশ্বজগত একটাই আছে এবং নিশ্চিতভাবে সেই একটাকেই আমরা অনুভব করছি। ফলে, কেনই বা কেউ ভাববে যে ‘বিশ্বজগত কোথা থেকে এসেছে?’ এই প্রশ্নের উত্তর কেউ দিতে পারবে।
আসুন, ঈশ্বর বিগ ব্যাং ঘটিয়েছে অথবা বিশ্বজগত আপনাআপনিই তৈরি হয়েছে এই বিষয় দু’টোকে দেখি। কেন আমরা মাত্র এই দু’টো সম্ভাবনার কথা বলি? কেন আমরা মনে করি যে এ দু’টোই হচ্ছে একমাত্র সম্ভাবনা?
আমি মনে করি এ বিষয়ে যে কারো দুটো বিষয় বলা প্রয়োজন। একটা হচ্ছে ব্যাখ্যার চুড়ান্ততা। কেন একটা জিনিষ কি রকম তার ব্যাখ্যা সবসময়ই দেওয়া হচ্ছে অন্য কিছুর প্রেক্ষিতে। কিছু সাধারণ সূত্রকে এই মুহুর্তে চরম বাস্তবতা বলে মেনে নেওয়া হচ্ছে যা অন্য বিষয়গুলোকে ব্যাখ্যা করছে। এটাই কোন কিছুর স্বভাব। চরম বাস্তবতা (brute fact) ছাড়া আর কোন ব্যাখ্যার শেষ আপনি খুঁজে পাবেন না। অবশ্য, কিছু কিছু লোক কোন কোন চরম বাস্তবতাকে সন্তোষজনক মনে করে এবং ভাবে যে, ‘ওই পর্যায়েই থেমে যাওয়াটা মঙ্গল’। কেউ বলতে পারছে না যে এখানে থেমে যাওয়াটা একেবারেই ভুল। কাজেই আমার কাছে মনে হচ্ছে যে, এই সম্ভাবনাকে বাতিল করে দেয়া যাচ্ছে না যে, বিশ্বজগত সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান বা সকল জ্ঞানই বিং ব্যাং এর কাছে এসে থেমে যাচ্ছে।
অবশ্য সমগ্র বিশ্বজগত আগামি বছরে ভিন্ন ধরনের হয়ে যেতে পারে। কিন্তু আজ রাতে আমরা উইনকনসিনে বিতর্ক করছি। কাজেই এই সম্ভাবনাকে মেনে নিতেই হবে যে শূন্য থেকে বিশ্বজগত সৃষ্টি হওয়াটা আদৌ অসম্ভব কিছু নয়। সৃষ্টির শুরুতে কেউ ওখানে আগেই উপস্থিত থেকে পর্যবেক্ষণ করলে হয়তো অবাক হয়ে বলতো, কি সর্বনাশ!, এটা দেখি শূন্য থেকে সৃষ্টি হয়েছে’। কিন্তু আমরা সেই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মত অবস্থায় নেই। যেহেতু কি কারণে বিগ ব্যাং হয়েছিল তা বলা যাচ্ছে না, কাজেই শুধুমাত্র পদার্থবিজ্ঞানী ছাড়া অন্য কেউ বিগ ব্যাংকে ব্যাখ্যা করতে যাবে কেন? আবার পদার্থবিজ্ঞানও যদি সেখানে থেমে যায়, তবে কি সেটাই মানুষের জ্ঞানের সীমানা নয়?
আসুন, আমরা এখন বিকল্পটা বিবেচনায় আনি। চলুন, শুরুতেই আমরা ঈশ্বরের একটা সংজ্ঞা দেই। এই সংজ্ঞা দিয়েছিলেন রিচার্ড সোয়াইনবার্ন। তার এই সংজ্ঞাটি ইংরেজী ভাষা-ভাষী দেশগুলোতে ঈশ্বরের প্রমিত সংজ্ঞা হিসাবে মেনে নেওয়া হয়েছেঃ
শরীরবিহীন অস্তিত্ব (যেমন, আত্মা), সর্বত্র বিদ্যমান, বিশ্ব-ব্রক্ষ্মাণ্ডের স্রষ্টা এবং রক্ষাকর্তা, মুক্ত সঞ্চালক, সবকিছু করতে সক্ষম (অর্থাৎ সর্বশক্তিমান), সবকিছু জানেন, নিখুঁতভাবে শুভ, নৈতিকতার উৎস, অপরিবর্তনীয়, চিরন্তন, প্রয়োজনীয় ও পবিত্র সত্ত্বা এবং উপাসনার জন্য যোগ্য।
ঈশ্বর নামক সত্ত্বার জন্য অনেক বেশি বৈশিষ্ট্য। এখানে বসে থাকা কেউ একজন হয়তো ভাবতে পারেন যে, ‘ইউরেকা! পেয়ে গেছি! এটাই নিশ্চয় সমস্ত মহাবিশ্ব তৈরির পিছনের কারণ’। খুবই সম্ভব যে সর্বশক্তিমান এবং সর্বজ্ঞ কোন সত্ত্বা বিশ্বজগত তৈরি করতে পারে। কিন্তু সেই সত্ত্বা মানব আচরণ নিয়ে আগ্রহী নাও হতে পারে। অবশ্য আমাদের প্রত্যেকের সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা মূলত জেনেসিসের প্রথম দুই চ্যাপ্টারের চিন্তারই ফসল। ঈশ্বর এই বিশ্ব-ব্রিক্ষ্মাণ্ড তৈরি করেছেন শুধুমাত্র তার নিজের আদলে মানুষ সৃষ্টি করার জন্য। কিন্তু কথা হচ্ছে, কেন আমরা ভেবে নিচ্ছি যে, এই ঈশ্বরের মানুষের আচরণ, নৈতিকতা এবং অন্যান্য বিষয়ে আগ্রহ রয়েছে? ঈশ্বর যদি সর্বশক্তিমান এবং সর্বজ্ঞই হয়ে থাকেন এবং তিনি যদি চান যে মানুষ তার অভীষ্ট পথে থাকু্ক তাহলে সেটা কেন তিনি নিজেই করতে পারেন না? আপনি যদি সর্বশক্তিমানই হয়ে থাকেন তাহলে কী আপনি ফলাফল প্রত্যাশা করবেন না, আশা করবেন না যে লোকজন আপনি যেভাবে চান ঠিক সেভাবেই চলুক? ঈশ্বরের সর্বজ্ঞতা বিবেচনায় নিলে মানুষের আচরণ দেখে কী পরিষ্কার বোঝা যায় না যে তিনি মানুষের আচরণের প্রতি বিন্দুমাত্র আগ্রহী নন? আপনি হয়তো যুক্তি দেখাতে পারেন যে, ঈশ্বরের সমস্ত বৈশিষ্ট্যের কিছু কিছুর অধিকারী কেউ কেউ থাকতে পারে, কিন্তু ঈশ্বরের সকল বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন কেউ আছে তার স্বপক্ষে কোন যুক্তি কিন্তু আপনি দিতে পারবেন না।
দ্বিতীয় যে জিনিষটা আমি বলতে চাই তা হচ্ছে এই বৈশিষ্ট্যগুলো অন্তত কিছুটা হলেও সুসংগত (Compatible)। কিন্তু ডক্টর ক্রেইগ আমার বোঝামতে যে ঈশ্বরে বিশ্বাস করতে চান তাকে বর্ণনা করা হচ্ছে শুভ এবং উপকারী হিসাবে কিন্তু একই সাথে সেই ঈশ্বরকে বর্ণনা করা হচ্ছে এমনভাবে যিনি তার নিজের সৃষ্ট বেশিরভাগ জীবকেই অনন্তকাল শাস্তি দেবেন। যদি ভেবে থাকেন যে, এই বৈশিষ্ট্যসমূহ হিতসাধনের সাথে সুসংগত, অনন্তকাল অত্যাচারের কথা না হয় বাদই দিলাম, কাউকে সামান্যতম অত্যাচার করাটাই যদি আপনার মূল্যবোধ মেনে নেয়, তাহলে বলতেই হবে আমাদের হিতসাধনের ধারণা খুবই ভিন্ন ধরনের।
আমি বলছি না যে এটাই বিশ্বজগত একজন অত্যাচারী ঈশ্বর পরিচালনা করছেন তা বিশ্বাস না করার কারণ। আমি বলতে চাচ্ছি যে এই দুইটা বৈশিষ্ট্য সুসংগত নয়। আমার মনে হয় এ বিষয়গুলো নিয়ে ডক্টর ক্রেইগও কিছুটা উদ্বিগ্ন। কারণ তিনি নিজেই বলেছেনঃ
আমরা যদি ধর্মীয় গ্রন্থকে আন্তরিকতার সাথে নেই, তাহলে আমাদেরকে স্বীকার করতেই হবে যে পৃথিবীর বেশিরভাগ লোকই দোষী এবং চিরদিনের জন্য শাস্তি ভোগ করবে, এমনকি কদাচিত কোন বিরল ঘটনায় কোন ব্যক্তি হয়তো
তিনি আরো একধাপ এগিয়ে গিয়ে বলেছেন যে, ‘কোন গোঁড়া খ্রীষ্টান নরকের ধারণা পছন্দ করে না বা কারো শাস্তিতে আনন্দ উপভোগ করে না। আমি অন্তর থেকে চাই যে সর্বজনীনতায় সত্যি হোক কিন্ত তা সত্যি নয়’। আমি এটাকে শোভন আচরণ হিসাবে মেনে নিচ্ছি, কিন্তু তারপরেও আমাকে বলতে হবে যে, এই দুটো জিনিষ পুরোপুরিই অসুসংগত – ভয়ংকর রকমের দুঃস্বপ্ন। ওই ধরনের শাস্তি যে ন্যায়বিচার এমন ধারণার ক্ষেত্রে বলবো আপনারা কি ন্যায় বিচার কি তা জানেন না? ঠিক আছে যে সঠিক ব্যক্তিই শাস্তি পাচ্ছে। কিন্তু ন্যায়বিচার শুধুমাত্র অপরাধের জন্য সঠিক ব্যক্তির শাস্তি পাওয়াটাই নয়। অপরাধারের গুরুত্ব বা মাত্রার উপর শাস্তির পরিমাণ আনুপাতিক হতে হবে। আমার কাছে কোনভাবেই বোধগম্য নয় যে, কিভাবে মানুষ তার স্বল্প আয়ুষ্কালে এমন কোন অপরাধ করতে পারে যে, তার জন্য তাকে আক্ষরিক অর্থেই অনন্তকাল শাস্তি ভোগ করতে হবে?
কাজেই আমি যা দেখানোর চেষ্টা করছি তা হচ্ছ্ ঈশ্বরে বিশ্বাস করার জন্য খুব শক্তিশালী কোন যুক্তি নেই। আমার মূল বক্তব্য হচ্ছে কারো পক্ষেই বিশ্বজগতের বাইরের জিনিষ সম্পর্কে জেনে ফেলার প্রত্যাশা করা উচিত না। আর আপনি যদি তাই চানই, তবে সেক্ষেত্রে যে বলছে যে সে ওই জিনিষগুলো জানে তার ঘাড়েই প্রমাণের দায়িত্ব পড়ে। কাজেই, আমি ডক্টর ক্রেইগের যুক্তির উত্তর দেইনি এমন কোন যুক্তিরই পর্যাপ্ত মালমশল্লা নেই যার ভিত্তিতে তিনি বলতে পারেন যে, ‘ওগুলো কোন কাজে আসবে না। আমি এই সমস্ত যুক্তিতর্ক তুলে ধরেছি কিন্তু উনি সেগুলোর কোন উত্তর দেননি’। তিনি যুক্তিতর্কের যে বিশাল তালিকা তুলে ধরেছেন তার উত্তর দেওয়ার মত সময় কারোরই নেই। আর বিশ্ব জগতের বাইরে কী ঘটছে (যদি কিছু আদৌ ঘটে থাকে) সে বিষয়ে উত্তর দেবার মত অবস্থায় আমরা এখনো এসে পৌঁছোইনি।
আসুন আমরা ডক্টর ক্রেইগের পছন্দের কালাম আর্গুমেন্টকে যাচাই করে দেখিঃ ‘মহাবিশ্বের অবশ্যই সূত্রপাত রয়েছে, কেননা শুরু এবং শেষ ছাড়া কোন কিছুর অস্তিত্ব সম্ভব নয়’। খুব ভাল কথা। আমি মনে করি এটা খুবই ভাল একটা যুক্তি। কিন্তু এটা কায়াহীন এক অস্তিত্ব ( এই কায়াহীন অস্তিত্ব বুঝতে আমার খুবই কষ্ট হয়। কেননা আমি যে সমস্ত লোককে চিনি তারা সবাই রক্তমাংসের তৈরি।) দ্বারা সৃষ্ট সৃষ্টির জন্য প্রযোজ্য যিনি নিজেই অসৃষ্ট এবং চিরন্তন। আমার এখন কোন সন্দেহই নেই যে বিশ্বজগতের সূচনা রয়েছে কেননা বর্তমানে প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের দৃষ্টিভঙ্গি এটাই। যা মনে হচ্ছে বিগ ব্যাং তত্ত্বের এই অংশটা আমাদের সাথে স্থায়ীভাবেই থেকে যাবে (কিছু কিছু অন্য বিষয় হয়তো আগামিতে যুক্ত হবে।)। কিন্তু সময়ের যদি শুরু থাকতেই হবে, তাহলে আমরা কিভাবে সেই শুরুকে ব্যাখ্যা করতে পারি এই কথা বলেঃ ‘সময়ের সূচনা শুরু হয়েছে, সমগ্র বিশ্বজগত তৈরি হয়েছিল চিরন্তন কোন আস্তিত্বের দ্বারা?’ এই আর্গুমেন্ট যদি ধরেই নেয় যে, সময়ের অবশ্যই সুত্রপাত থাকতে হবে, তাহলে সেই একই জিনিষ ঈশ্বরের ক্ষেত্রে সত্যি নয় কেন? অবশ্য কেউ এর পালটা যুক্তি দিতে পারে এই বলে যে, ঈশ্বরের কোন আদি নেই এবং কোন অন্তও নেই। কিন্তু এই যুক্তি একেবাই কাজ করবে নাঃ সৃষ্টির পিছনে যে যুক্তিকে দাঁড় করানো হয় তার কাম্য ব্যাখ্যা একেবারেই সামঞ্জস্যহীন।
কাজেই, আমরা আবারো শোভন অজ্ঞতায় ফিরে এসেছি। আমাকে প্রায়শই উদ্ধত ধরনের মানুষ বলে অনেকেই ভেবে থাকে ( মানুষ কত ভুল করতে পারে!), কিন্তু আমি কখনোই বিশ্বাস করি নাই যে, আমি আপনাদেরকে বিশ্বব্রক্ষ্মাণ্ডের বাইরের কোন গাইডবুক দিতে পারতাম। আমি বিশ্বজগতের ভিতরের খুব ছোট্ট এলাকার গাইডবুক দিতেই হিমশিম খাচ্ছি। এই ভাবনাটা চরম অবাস্তব যে, আমরা কিছু যৌক্তিক মানুষজনকে জড়ো করতে পারি এবং আশা করতে পারি যে তারা বিশ্বজগত কীভাবে শুরু হয়েছে বা বিশ্বজগতের ভিতরে কী রয়েছে সেই বিষয়কে চিহ্নিত করতে পারবে। আমি মনে করি না এই যুক্তি আদৌ কোন কাজে আসবে।
আমার যেটা দ্বিমত তা হচ্ছে একজন সর্বশক্তিমান সত্ত্বা যদি চান যে লোকজন একটি নির্দিষ্টভাবেই আচরণ করবে (অনুরক্ত এবং অনুগত ছেলেমেয়েদের মত) তবে সেটা কী তিনি নিখুঁতভাবে করতে পারেন। সাধারণ লোকজনেরা দারুণভাবে খুশি হবে যদি তাদের ছেলেমেয়েরা অনুগত, শুদ্ধ এবং এইরকম আরো গুণের অধিকারী হয়। বাবা মা হিসাবে আমরা কি সবাই খুশি হব না? তবে আমার মনে হয় আমরা সকলেই এ বিষয়ে অসফল। কিন্তু আমার সর্বময় ক্ষমতা থাকলে আমার মনে হয় আমি সম্পূর্ণ অনুগত সন্তানাদি তৈরি করে ফেলতে পারতাম।
কিন্তু ডক্টর ক্রেইগ আমাদেরকে যে স্রষ্টায় বিশ্বাস করতে বলছেন, যিনি খুব করে চান যে লোকজন একটি নির্দিষ্ট ধারায় বিশ্বাস করুক এবং তিনি এটা এতই বেশি করে চান যে, তার প্রতি অনুগত না হওয়ার কারণে তাদেরকে চিরদিনের জন্য শাস্তি দিতেও প্রস্তুত। আমার কাছে মনে হচ্ছে যদি কেউ এই মহাজাগতিক ‘সাদ্দাম হোসেন’ কি চান জেনে থাকেন তবে অবশ্য সাদ্দাম হোসেনের অনুগত প্রজার মত আচরণ করবে। তারা তার গুণাবলী এবং ভালত্ব নিয়ে সবকিছুই বলবে। এই অত্যাচারীর হাতে পড়লে আপনিও কি তা করবেন না? কিন্তু সর্বশক্তিমাণ এই বিষয়টা খুব সহজেই এড়িয়ে যেতে পারতেন যদি তিনি তাদেরকে এমনভাবে তৈরি করতেন যাতে তারা নিজেরাই অনুগত হওয়াটাকেই বেছে নিত। আমি আশা করি এই যুক্তি কিছুটা হলেও ডক্টর ক্রেইগকে স্তিমিত করবে।
প্রত্যেকেই ডিজাইনের স্বপক্ষের আর্গুমেন্টটা শুনেছেন। জঙ্গলের মধ্যে একটা ঘড়ি খুঁজে পেলে আমরা ধরে নেব যে এটা নিশ্চয় ডিজাইন করা হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু কোন জিনিষ বুদ্ধিমান কেউ ডিজাইন করেছে সেটা যখন আমরা ধরে নেই, সেটা আসলে তার জটিল ডিজাইনের কারণে নয়। আমরা ঘড়ির ডিজাইনার আছে ধরে নেই শুধুমাত্র এই কারণে যে, ঘড়ি কোন প্রাকৃতিক প্রপঞ্চ নয় বরং মানুষের তৈরি জিনিষ বলে। পুরো মহাবিশ্বের সবচেয়ে জটিল এবং সফিস্টিকেটেড সত্ত্বা বলতে যা বুঝায় সেরকম প্রায় তিন হাজার সত্ত্বা আমি দেখি চারপাশে। এগুলো অন্তত এই মহাবিশ্বের মধ্যে কারো দ্বারা তৈরি হয়নি। এই মহাবিশ্বের অভ্যন্তরে তারা তৈরি হয়েছে অচেতন প্রাকৃতিক এবং যান্ত্রিক শক্তির কারণে।
এই রকম বিরল পরিস্থিতি মনে হয় অতীতে আর কোন বাংলা ব্লগের বিতর্কে হয়নি। আমরা জাতি হিসেবেই কেউ সহজে বিতর্কে পরাজয় স্বীকার করি না। অধিকাংশ বিতর্কই শেষ হয় গালিগালাজ, ব্যক্তিগত আক্রমন দিয়ে। এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে তাতো হয়ইনি, উলটা ফুয়াদ ভাই এর প্রতিপক্ষরা একের পর এক হাসিমুখে পরাজয় স্বীকার করে নিচ্ছেন, শুধু তাই না সেই পরাজয়ের সুরভি নিজ দায়িত্বে ছড়িয়ে দিচ্ছেন দিক দিগন্তে। এই পরাজয়ের মহিমাই আলাদা।
অভিজিত কেন যে এই আনন্দে সামিল হচ্ছে না কে জানে, হয়ত যুক্তিবোধ খুব দূর্বল বলেই সে বুঝতে পারছে না।
ফুয়াদ ভাইকে আবারো সংগ্রামী অভিনন্দন!!!
@আদিল মাহমুদ,
আমি দেখতে পারছি ফুয়াদ ভাইয়ের পরবর্তী টার্গেট কোন সে জন। এ ক্ষেত্রে সাহসী আকাশ মালিক ভাই এগিয়ে এসেছেন। হ্যাঁ আমরা দেখতে পেরেছি তিনি তার বল ঠেলে দিয়েছেন ফুয়াদ ভাইয়ের কোর্টে। দেখা যাক ফুয়াদ ভাই এই বলটি কিভাবে খেলেন। ছক্কা নাকি অক্কা? তবে অতীত রেকর্ড বলেন ছক্কাই হবার সম্ভাবনা বেশী। মাঠের বাহিরে দু’ একজন আগ্রহী দর্শককেও দেখা যাচ্ছে। এখন খেলায় মধ্যাহ্ন বিরতি। আমরা এখন আপনাদের মুক্তমনার নীড়পাতায় নিয়ে যাচ্ছি। খেলা শুরু হলে আমরা আবার আপনাদের মাঠে নিয়ে আসবো। ততক্ষন আমাদের সাথেই থাকুন।
@স্বাধীন,
ওয়াচিং ফুয়াদ ইজ এ্যা গ্রেট ফান। :laugh:
@স্বাধীন,
সে আর বলতে, কাল ফরিদ ভাই এর নাকাল হওয়া স্বচক্ষে দেখার পরেও আকাশ মালিকের বিরাট জ্ঞানগর্ভ চ্যালেঞ্জ মার্কা পোষ্ট দেখেই বুঝতে পেরেছি এবার আরেক নক্ষত্রের পতন সহসাই ঘটতে যাচ্ছে। কয় রাউন্ডে ঘটে সেটাই এখন দেখার বিষয়।
মালিক ভাই এর প্রশান্তিময় হাসি মুখ দিব্য চোখে দেখতে পাচ্ছি।
ফুয়াদ,
এখানে কিছু সুক্ষ পয়েন্ট আছে ধরার চেষ্টা করুন । আশা করি তাহলে আপনিও বুঝতে পারবেন
আপনার পয়েন্ট এতই সুক্ষ, এন্টেনা লাগিয়েও ধরতে পারলাম না । 🙁
@ফরিদ আহমেদ,
ও তাই বুঝাইতেছেন তাহলে দেখুন
হ্যা আপনার মুক্ত চিন্তার উপর তিনি নিয়ন্ত্রন করতে পারেন, কিন্তু তিনি তাহা করেন না, কারন তিনিই আপনাকে এই ক্ষমতা দিয়েছেন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য । আপনার মুক্তচিন্তা, মুক্ত কিন্তু আপনার সময় মুক্ত নয় ।
@ফুয়াদ,
হাঃ হাঃ হাঃ একি চক্রে পড়লেন আবার আপনি। আমার মুক্ত চিন্তার ক্ষমতা যদি তিনি-ই দিয়ে থাকেন তবে তাকে অস্বীকার করার কারণে আমাকে কেন দোজখবাসী হতে হবে? আসল ক্রিমিনালতো তিনিই।
@ফরিদ আহমেদ,
চক্রে আমি না ফরিদ ভাই, আপনি পড়েছেন । কারন ভাল-মন্দ(মুক্ত) চিন্তাটাই আসল পরিক্ষা । তবে আমার মনে হয় আল্লাহ পাকের কোন কাজ মানেহীন হতে পারে না । তারমানে, দুজখ বা বেহেস্তের ও ভিন্ন কোন অজানা মানে আছে । যেমন, মানে আছে আমি বাংলাদেশী, কেউবা ইন্ডিয়ান কেউবা পাকিস্তানী ।
@ফুয়াদ,
দুজখ-বেহেস্তেরও অজানা মানে আছে? কত অজানারে!!
তাতো পড়েছি-ই। হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি এখন। কোন দুঃখে যে আপনার মন্তব্যের উত্তর দিয়েছিলাম। আদিল মনে হয় এতক্ষণে আনন্দে বগল বাজাচ্ছে। চক্রমুক্তির আনন্দ কি আর যা তা কথা।
ভাই আমিও চক্র থেকে বিদায় নিলাম।
আপনার অসীম ধৈর্য্যের জন্য আপনাকে লাল গোলাপ। :rose2:
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আপনাকে সহি সালামতে রাখুক। ফি আমীন।
@ফুয়াদ,
ধন্যবাদ । আপনাকে লাল গোলাপ তো আগেই দিয়ে, দিয়ে ছিলাম । :coffee: :coffee: :coffee: :coffee: :coffee:
তাই, চলুন কফি খেয়ে মাথা ঠান্ডা করি ।
আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ ।
@ আদিল ও ফরিদ ভাই
দু’দুজন হেভিওয়েট সরাসরি নক-আউট। এবার কার পালা? মোহাম্মাদ আলীর 😀 । অভিনন্দন ফুয়াদ ভাই :rotfl:। নিন লাল গোলাপ। :rose2: । মুক্তমনায় এখন গোলাপ আর চায়ের সমারোহ। আমি আর বাদ যাই কেন? 🙂
@ফুয়াদ,
চা, কফি গোলাপ অনেক তো হলো, এবার আদিল মাহমুদের প্রশ্নের জবাব দিয়ে দিন। সুরা ফাতিহা আল্লাহর বাণী না মুহাম্মদের প্রার্থনা? আপনি হেরে যাবেন তা বিশ্বাস করতে আমার কষ্ট হয়, তাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে আপনার জন্যে নিয়ে এলাম। আপনি ইকরা বিসমি বলে আল্লাহর নামে পড়ুন-
কোরান সুরা ‘ফাতিহা’ প্রথম কিন্তু প্রথম ওহি বা প্রত্যাদেশ নয়। অবতীর্ণের সময়ানুসারে সুরা ‘ফাতিহা’ ৫ বা ৬ নম্বর সুরা। মুহাম্মদের (দঃ) দাবি অনুসারে ‘আল্লাহর কাছ থেকে জিব্রাইল মারফত আসা’ প্রথম দিনের ‘প্রত্যাদেশ’ স্থান পেয়েছে ৯৬ নম্বর সুরা আলাকের ১-৫নং আয়াতে (বাকি ৬-১৯নং আয়াতগুলো অনেক পরে এসেছে)। দ্বিতীয় প্রত্যাদেশ স্থান পেয়েছে ৭৪ নম্বর সুরা মুদ্দাসসির’র ১-৫নং আয়াতে! সুরা নজমের বর্তমান অবস্থান ৫৩ নম্বরে; এবং আরো প্রায় চার-পাঁচ বছর পরে বর্ণীত সুরা ‘ইসরা’ বা ‘বনি-ইজরাইল’-এর বর্তমান অবস্থান ১৭ নম্বরে। খলিফা উসমানের ‘সংকলিত-সম্পাদিত কোরান’ নিয়ে হজরত আলির প্রচণ্ড মতদ্বৈততা ছিল। তিনি কোরানের আয়াতসমূহের সময়-কাল-প্রেক্ষিতের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে মক্কি সুরাগুলো প্রথম দিকে এবং মাদানি সুরাগুলোকে কোরানের শেষের দিকে রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু কোরান সেভাবে সাজানো হয়নি। আগেরটা পরে, পরেরটা আগে সাজানো হয়েছে; যার বিরোধিতা করেছিলেন হজরত আলি। অনেক সময় দেখা যায় কোনো সুরার কোনো আয়াত হয়তো মদিনায় অবতীর্ণ হয়েছিল কিন্তু ঠিক আগের বা তার পরের আয়াতটি বহু বছর আগে মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছিল; যেমন সুরা বাকারা মুহাম্মদের (দঃ) মদিনাতে অবস্থানকালে বদর যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে প্রত্যাদেশকৃত। কিন্তু সুরা বাকারার ২৮৪ থেকে ২৮৬ নং আয়াতগুলো মুহাম্মদ (দঃ) হিজরতের আগে মক্কায় থাকতে বলেছিলেন অথচ বসানো হয়েছে সুরা বাকারার সবশেষে। একই ঘটনা ঘটেছে পরের সুরা আল-ইমরানসহ আরো অনেক সুরাতে। মূলত মুহাম্মদের (দঃ) কোরানের বাণী সংরক্ষণের ভালো ব্যবস্থা ছিল না; যেমন তিনি ‘কোরানের বাণীরূপে’ কিছু বললেন কিন্তু তা যথাসময়ে লিখে রাখা হল না, কালক্রমে মুহাম্মদ (দঃ) তা ভুলে গেলেন। এভাবে সে বাণী লুপ্ত হয়ে গেল। আবার অনেক সময় তিনি কিছু বললেন, কিন্তু উপস্থিত শ্রোতারা তা ‘আল্লাহর বাণী’ মনে করে লিখে রাখলেন বা মুখস্ত করলেন। কালক্রমে তা কোরানের অংশ হয়ে গেলো। সুরা ফাতিহা এরকমই একটি ঘটনার সাক্ষী বহন করে। কোরানের প্রথম আয়াত হচ্ছে, “পাঠ করো তোমার প্রতিপালকের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন” (সুরা আলাক, আয়াত ১), আর শেষ আয়াত হচ্ছে ৫নং সুরা মায়িদা’র ৩ নং আয়াত “আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের ধর্মকে পূর্ণ করলাম ও তোমাদের ওপর আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের ধর্ম মনোনীত করলাম।”
অনেকের মতে কোরানের ১নং সুরা ফাতিহা ৯১নং সুরা ‘শামস’, ১০০নং সুরা ‘আদিয়াত’, ১০২নং সুরা ‘তাকাসুর’, ১০৩নং সুরা ‘আসর’ আদৌ আল্লাহর বাণী নয়। তাহলে এগুলো কি মুহাম্মদ (দঃ) ও তাঁর সাহাবিদের রচিত ‘কাব্য’ কিংবা উপরিউক্ত উপায়ে (ভুল বোঝাবুঝির মাধ্যমে) সুরাগুলো কোরানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে? ১২নং সুরা ‘ইউসুফ’-কে আল্লাহ প্রদত্ত ‘ওহি’ বলে মানতে নারাজ আজারিদা ও মায়মুনিয়া মুসলমানেরা। তাদের বক্তব্য হচ্ছে: “এটি ইউসুফ-জুলেখার প্রেমকাহিনী মাত্র, যেখানে এক বিবাহিত মহিলা স্বামীর অবর্তমানে বাড়ির চাকরের (নবী ইউসুফ) সাথে পরকীয়া প্রেমের জন্য প্রলুব্ধ করছে, যা একটি পবিত্র ধর্মগ্রন্থের অংশ হতে পারেনা।” কোরানের ১০৫ নম্বর সুরা ‘ফিল’ এবং ১০৬ নম্বর সুরা ‘কোরাইশ’ একই সুরার অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং পূর্বে উভয় সুরার মাঝে ‘বিসমিল্লাহ’ লিখিত ছিলনা। কিন্তু খলিফা উসমানের কোরান সম্পাদনা কমিটি এ দুটি সুরাকে স্বতন্ত্র দুটি সুরারূপে সন্নিবেশিত করেণ এবং উভয়ের মাঝে ‘বিসমিল্লাহ’ লিপিবদ্ধ করেণ। সুরা ফাতিহা যদি আল্লাহর শেখানো দোয়া হয়, সুরা বাকারার ২৮৬ নং আয়াতটি কি? এটাও কি আল্লাহর বাণী, না মুহাম্মদের প্রার্থনা?
Our Lord! Condemn us not if we forget or fall into error; our Lord! Lay not on us a burden Like that which Thou didst lay on those before us; Our Lord! Lay not on us a burden greater than we have strength to bear. Blot out our sins, and grant us forgiveness. Have mercy on us. Thou art our Protector; Help us against those who stand against faith.
@ফরিদ আহমেদ,
আজ দিনের শুরুটাই বেশ জম্পেশ হল :laugh:
ভুক্তভোগীর পরামর্শ না শুননে এমনই হয়।
ভাল লাগছে দেখে ফুয়াদ ভাই এর কনফিডেন্স এখন আরো অনেক বেড়েছে, উনি নিজেও তার ঘোষনা দিচ্ছেন। এভাবে একের পর এক প্রতিপক্ষ পরাজয় মেনে বিদায় নিলে বাড়ারই কথা 🙂
আসুন আমরা ওনার এই বিজয় ওনারই আমন্ত্রিত চা চক্রে উদযাপন করি। সাথে আরেকটা সেলিব্রেশন ও হতে পারে, আমার ডানা গজানোর অথেন্টিসিটি, মা কালী, দূর্গা, বক রাক্ষস, মামদো ভুত এদের সবার স্বীকৃতি।
:cake: :coffee:
@আদিল মাহমুদ,
আমি দিলাম কফি, আপনি বললেন চা 🙁 😥 😥 😥 😥 😥
তবে আমি চা খেতে পছন্দ করি ।
@স্বাধীন,
আদিল তার পরাজয়ের সদ্য অভিজ্ঞতায় আমাকে নিষেধ করেছিল। কথা শুনিনি আমি। তার জের দিতে হয়েছে আমাকে কড়ায় গন্ডায়। তিন রাউন্ডের বেশি টিকতে পারলাম না। একেবারে কুপোকাত। 🙁
@ফুয়াদ
যখন খারাপ কিছু ঘটে তখন সেই খারাপ কিছু তিনি চান কেনো? সেটাইতো বুঝিনা।
@ব্রাইট স্মাইল,
যখন খারাপ কিছু হয়, মানে যখন কেউ খারাপ কিছু করতে চায়, মানে কেউ যখন তার সাধ্যের ভিতর কিছু করতে চায় তখন আল্লাহ পাক এর অনুমতি দিয়ে দেন । অর্থ্যাত, খারাপ কাজের দায় দায়িত্ব আপনার, আল্লাহ সুবাহানাতালার না ।
ধন্যবাদ ।
@ফুয়াদ,
যখন কেউ খারাপ কিছু করতে চায় তখন সেটা কি সে চায় নাকি আল্লাহই তাকে দিয়ে চাওয়ায়? যদি সে চায় তবে বলতে হবে আমরাও আল্লাহ-র চাওয়ার বাইরে যেতে পারি। অর্থাৎ তিনি সর্ব-শক্তিমান না। আর যদি আল্লাহ-র ইচ্ছাতে তার খারাপ করার ইচ্ছা জাগ্রত হয়, এবং আল্লাহ যদি তার অনুমতি দেন, তবে দায়ী কে এখানে? দোজখের আগুনে কাকে পাঠানো উচিত বলে মনে করেন?
@ফরিদ আহমেদ,
আমাদের সাধ্যের মধ্যে যা কিছু আছে সবই আমাদের স্বাধিন ইচ্ছার অধীন । মানে এই স্বাধিন চিন্তার অনুমতি আল্লাহ সুবাহানাতালা দিয়ে দিয়েছেন । তাই, আমরা খারাপ আর ভাল দুই চিন্তাই করতে পারি । যদি আল্লাহ পাক, নাই বা না থাকতেন, তাহলে দুনিয়াতে ভাল বা খারাপ বলে কিছু একটা কেন থাকবে মানুষের মনের গভীরে ?
ফরিদ ভাই, ঊত্তরের প্রয়োজন নেই ।
@ ফুয়াদ,
যে স্বাধীন চিন্তার জন্য অন্যের অনুমতি লাগে বা সীমানা টানা থাকে সেই স্বাধীন চিন্তা কি আসলেই স্বাধীন চিন্তা?
@ফরিদ আহমেদ,
সীমানা টানা বলতে আপনি কি বুঝাইতেছেন ? দেখুন, আপনার স্বাধীন চিন্তা দিয়ে আপনি আল্লাহ পাক কে অবিশ্বাস করতে পারেন । বিভিন্ন কাজে আল্লাহ সুবাহানাতালা কে দায়ী করতে পারেন । তাহলে সীমানা থাকল কই । আপনি মুক্ত , যা খুশি তাই ভাবতে পারেন । তাই নয় কি ?
@ ফুয়াদ,
বুঝে বলছেনতো কি বলছেন? আমি মুক্ত হলে, স্বাধীন চিন্তা থাকলে, যা খুশি তাই ভাবতে পারলে, সীমানা না থাকলে, আপনার আল্লাহ-তালা বলে আর কিছু থাকে না কিন্তু।
আমার উপরই যার নিয়ন্ত্রণ নেই, তার বিশ্বজগতের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকবে কীভাবে?
ফুয়াদ ভাই,
আপনার যুক্তিগুলি নিয়ে আলোচনায় যাচ্ছি না কারন সে আলোচনা হবে অর্থহীন।
তবে এই সুরা ফাতেহার বিষয়ে দুটো কথাঃ
“শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু”
“আমাদেরকে সরল পথ দেখাও, সে সমস্ত লোকের পথ”
শুরু করছেন বা পথ দেখাতে প্রার্থনা করছেন কে? আল্লাহ, নাকি নবী মোহাম্মদ, জীব্রাইল বা অন্য কোন মানুষ বা ফেরেশতা?
কোরান তো আল্লাহর নিজের লেখা বানী। তিনি নিজে নিজেকে উদ্দেশ্য করে কেন লিখলেন বলতে পারেন? কেনই বা তিনি নিজেই নিজেকে পথ দেখাতে প্রার্থনা জানাবেন?
@আদিল মাহমুদ,
এখানে দেখেন।
@অভিজিৎ,
ধণ্যবাদ, পরে দেখব। তবে মনে হচ্ছে এখানে অভিযোগ আনা হচ্ছে, যা আমার মনেও প্রশ্ন।
আমি জানতে চাচ্ছিলাম ধার্মিক দৃষ্টিভংগীতে এর কি ব্যাখা হতে পারে সেটা, তাই ফুয়াদ ভাইকে জিজ্ঞাসা করলাম, উনি তো মনে হয় প্রশ্ন শুনেই রাগ করলেন।
মুক্তমণায় এই একটি বড় সমস্যা, অন্য পক্ষের কথা তেমনবাহবে শোনার সূযোগ পাওয়া যায় না।
কিছুদিন আগে মনে হয় আমার ব্লগ নাকি সদালাপে এই নিয়ে একজনের কিছু লেখা দেখেছিলাম। ওনার মতে কোরানের ভাষা বৈচিত্র্য আনার জন্যই আল্লাহ ইচ্ছে করেই এমন কিছু আয়াত লিখেছেন যাতে করে কোরান পড়তে একঘেয়ে না হয়। এই যুক্তি আমার কাছে মোটেও ভাল ঠেকেনি।
@আদিল মাহমুদ,
আপনি তো অনেক কিছু নিয়েই লেখান বা মন্তব্য করেন । তাই নিজেই চিন্তা করেন না, বিষয়টি আসলে কি ?
যাইহোক, আল কুরান আল্লাহ পাক নিজেকে উদ্দেশ্যে করে লিখা না । এটা ভিন্ন স্টাইলে ভিন্ন ভাবে লিখা । এখানে, আরো অনেক অনেক বিষয় আছে । আপনি নিজেই চিন্তা করুন না, দয়াকরে ।
@ফুয়াদ,
কি মুশকিল। প্রশ্নের জবাব কি প্রশ্ন দিয়ে হয়? সেটা অনেক সময় কটাক্ষ হিসেবে ধরা হয়।
আমি নিজে চিন্তা করে কোন সন্তোষজনক ব্যাখ্যা পাই না বলেই তো আপনাকে জিজ্ঞাসা করা। আপনি নিজেই এটা কোট করেছিলেন দেখে ভাবলাম হয়ত এই অতি মূলের ব্যাপারটা সম্পর্কে আপনার কাছে পরিষ্কার ব্যাখ্যা আছে।
@ফুয়াদ,
আল্লাহ পাকের সাথে কি আপনার যোগাযোগ হয় যে এ কথা আপনি জানলেন।
হ্যা চিন্তা করতে করতে জীবনটাই পার করে দিন্ না।
@ফুয়াদ,
কোন সমস্যা নাই বরং আমার কিছু লাভ হয়। আপনাকে বুঝাতে গিয়ে অভিজিৎ দা ও অন্যান্যরা মাঝে মাঝে কিছু তথ্য-লিংক উল্লেখ করেণ, তাতে আপনার কোন লাভ না হলেও আমার হয়। তবে আপনার রিবিঊটালের উপর রিবিঊটাল তো অনেক দেখলাম কিন্তু প্রমানের উপর প্রমন তো একটাও দেখলাম না। আমি পাগল নঈ- আমি এখানে প্রতিন্দিতা করতে আসি না – হেরে গেলে আবার শিখে নুতুন করে লিখব, নুতুন রিবিঊটাল, নুতুন প্রমান হবে।
আপনি যে পাগল নন সে কথা কি আর বলতে হয়?
@ফুয়াদ,
যেহাতু আপনি দাবি করছেন আপনি পাগল নন তাই ওটা আপনি প্রমাণ করুন :lotpot: :lotpot: :lotpot:
@সৈকত চৌধুরী,
:lotpot: :lotpot: :lotpot: :lotpot: :lotpot: :lotpot: :lotpot: :lotpot: :lotpot:
এটা আদিল মাহমুদ ভাইয়ের মত বিশ্বাস, তাই ডাক্তারের সারটিফিকেইট নাই ।
:lotpot: :lotpot: :lotpot: :lotpot:
আভিজত দা একটি কথা বলবেন আর আমি পাগলের মত মেনে প্রশ্ন বন্দ করে দেব, তা ত হয় না ।
যদিও ব্যাপারটা এখানে আলোচনা করা ঠিক ত্যানা প্যাঁচানো মনে হবে বা আবার সেই শব্দের খেলা হিসেবে বিবেচিত হবে, তারপরেও উল্লেখ করছি। বেশ কিছুদিন আগে এ বিষয়ে লেখাটি পড়েছিলাম। তাই একটু তুলে ধরার চেষ্টা।
ধন্যবাদ।
@আইভি,
হায়রে ত্যানা তোমারে যতই খোলতে চাই তুমি ততই প্যাচাও, হ্যা এই না হলে আর ত্যানা………
এগিয়ে যান আইভি। আপনার শুভ কামনায়।
কোরান কিন্তু মানুষের মধ্যেই ঈশ্বর অবস্থান করে আর মানুষের সমস্ত ভাল গুনগুলো ঈশ্বরের গুনাবলী– এই দর্শনের ঘোষনা করে। কোরানের দর্শন বলে যে, মানুষের ভেতর ভাল খারাপ দুটো প্রবনতাই দিয়ে দেওয়া হয়েছে; মানুষকে বুঝার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে যে সমস্ত সৎগুনের চর্চা মানুষের ভেতর পরম শান্তির অনুভুতি তৈরী করে, আর সকল অসৎ গুনাবলীর চর্চা মানুষের মধ্যে চরম অশান্তির আগুন জালিয়ে দেয়। কোরানের দর্শন এই অশান্তিকে জাহান্নাম বলে চিন্থিত করে; আর ঈশ্বরে বিশ্বাস করা বলতে নিজের ভেতর ঈশ্বরের সমস্ত গুনাবলীকে লালন করাকে অর্থাৎ ঈশ্বরকে নিজের ভেতর লালন করাকে বুঝায়। আর এই ঈশ্বরকে লালন করলেই পরম শান্তির স্তরে পৌছান যায়- আর এই পরম শান্তিকেই বলা হয়েছে ইসলাম– শান্তি।
@মুহাইমীন,
কারো ভিতরে যখন কোন চরম অশান্তি বিরাজ করে তখন সে পরম শান্তির স্তরে পৌছাতে চায়।
@ব্রাইট স্মাইল,
কথাটা ঠিক।
@মুহাইমীন,
কোরান কিন্তু মানুষের মধ্যেই ঈশ্বর অবস্থান করে আর মানুষের সমস্ত ভাল গুনগুলো ঈশ্বরের গুনাবলী- এই দর্শনের ঘোষনা করে।
আচ্ছা ভাই, আপনার লেখার সপক্ষের রেফারেন্স কি ? আল কোরানের কোন আয়াত এ রকম বিষয় প্রকাশ করে ? একটি হাদিসের কথা শুনেছিলাম তাও ঐ খানে মুমিন বলা হয়েছে, আরো বিষয় হাদিসটি মুখে শুনা রেফারেন্স আছে কি না জানি না । আপনার মতামতের সপক্ষের রেফারেন্স কি ? আল কোরান থেকে যেহেতু আপনি বলেছেন আল কোরান এই দর্শনের ঘোষণা করে ।
@ফুয়াদ,
আচ্ছা ভাই, আল কোরান যে সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক প্রেরিত, মুসলমানদের এই দাবীর রেফারেন্স কি??
@মিঠুন,
মূল রেফারেন্স বিশ্বাস।
সাথে সাথে অলৌকিকতার নিদর্শন হিসেবে আরো কিছু দাবী; যেমন নবী মোহাম্মদ নিরক্ষর মানুষ হয়ে কিভাবে কোরান লিখলেন, সংখ্যাতত্ত্ব এরকম বেশ কিছু নিদর্শন, সনাতন ধর্মগ্রন্থগুলির মাঝে অন্যগুলির অথেনটিসিটি বহু আগেই বাতিল হওয়া এরকম বেশ কিছু বিষয়।
আমার কথা বললাম (আমাকে কোন ব্যাখ্যা দেবার প্রয়োযন নেই), দেখি ফূয়াদ সাহেব কিছু বলেন কিনা।
@মিঠুন,
রেফারেন্স আছে তো। কোরাণ। নাস্তিকের ধর্মকথা এটা নিয়ে আগে একটা লেখা লিখেছিলেন – আল্লাহ’র অস্তিত্বের স্বপক্ষে কিছু যুক্তি
প্রবন্ধটার নীচে ফরিদ ভাইয়ের কমেন্টটাই মজার —
আচ্ছা, কোরান যে খাঁটি তা কিভাবে জানি আমরা?
সোজা। কারণ মহান আল্লাহ তালা বলেছেন যে।
আল্লাহ বাবাজী যে মিথ্যে বলছেন না বুঝবো কি করে?
খুব সহজেই। হযরত মোহাম্মদ (সঃ) বলেছেন যে।
মোহাম্মদ ব্যাটাই যে সত্যি বলছে তারই বা নিশ্চয়তা কি?
কেন? কোরান সাক্ষী দিয়েছে না।
বাহ! কোরানই যে সত্যি কথা বলছে সেটাই বা কে বললো?
কেন? জান না বুঝি? আল্লাহইতো বলেছেন যে কোরান সত্যি।
এতো ত্যানা প্যাচাও ক্যান শুনি?
@মিঠুন,
আমি এখানে কিছু একটি বলব আর আপনাদের হাসি ঠাট্টার পাত্র হব, এমন বোকা আমি এখন নঈ । আপনাদের সাথে থেকে অনেক কিছুই বুঝে ফেলেছি ।
আমার প্রতি টি বিষয়ের ক্লিয়ার জবাব আমার কাছে আছে তবে ফিলসফি আর বাক পটুতায় আমি উস্তাদ না বলে আমার কথা গুলি ক্লিয়ার প্রকাশ করতে পারবো না ।
১ কেন আমি আল্লাহ পাক কে বিশ্বাস করি ?
২ কেন আমি নাস্তিকথা রিজেক্ট করি ?
৩ কেন আল কোরান এবং নবী সঃ কে বিশ্বাস করি ?
৪ কেন আমি অন্য ধর্মকে অনুসরন করি না?
৫ কেন কিছু একটা আছে, কিছু না থাকার পরিবর্তে ?
৬ আমরা এখানে কি করছি ?
৭ ধংশ আসলে কি ?
৮ শুরু আসলে কি ?
৯ বাস্তবতা আসলে কি ?
১০ কার ধংশ আছে এবং কেন ?
ইত্যাদি প্রশ্ন ।
এখন আসুন
অভিজিত দার প্রশ্ন ‘ঈশ্বর কি এমন কোন ভারী পাথরখন্ড তৈরি করতে পারবেন, যা তিনি নিজেই ঊঠাতে পারবেন না?
হ্যা আল্লাহ পাক পারেন যতক্ষন পর্যন্ত তিনি চান ততক্ষন পর্যন্ত তিনি পারেন পাথরকে না তুলতে, আবার যখন চাইবেন তখন ঈ আবার তুলতে পারবেন। কিন্তু তিনি এসব করেন না, কারন তাকে দিয়ে এসব মানায় না, এখন যদি বলেন পাথরকে চিরন্তন তুলতে পারবেন না এমন পাথর হতে হবে, তাহলে আপনাকে জানতে হবে আল্লাহ পাকের কাছে সময় বলে কিছু নেই তিনি চাইলেই সময়কেও উল্টাতে পারেন, আগাইতে পারেন আবার কমাই তে পারেন চিরন্তন । যেমন মনে করুন আল্লাহ পাক মিথ্যা বলতে পারেন কি না ? হ্যা পারেন যদি তিনি চান কিন্তু তিনি তা করেন না কারন তাকে দিয়ে এসব মানায় না ।বড় বিষয় হইতেছে, আমাদের ক্ষুদ্র মাথায় আল্লাহ পাক কে বুঝার মত ক্ষমতা নেই । কিন্তু উনাকে মেনে নেবার ক্ষমতা আছে । তাই, আপনারা ইচ্ছা করলেই প্রশ্ন আর বের করতে পারবেন আমার উত্তর থেকেই । কারন ফিলসফি আর যুক্তি বিদ্যায় দক্ষ নই ।
যাইহোক, মূল বিষয়ে আসি ,
বিশ্বাস তিন ভাবে হতে পারে
১ অন্ধ বিশ্বাস ( যা কমেও না বাড়েও না)
২ যুক্তিগত বিশ্বাস (যা যুক্তির উপর নির্ভর করে , তা বাড়েও কমেও আবার শেষ হয়ে যায়, কিংবা আবার ফিরে নুতুন করে আসে)
৩ উপলব্দি এবং নিশ্চিত বাস্তবে জেনে বিশ্বাস করা । (এটি সবচেয়ে স্ত্রংগ, বিশ্বাস হারানোর প্রশ্নই উঠবে না )
এই তিন পথের মধ্যে আপনি কোন পথে হাঠবেন তা আপনার বিষয় ।ইচ্ছে হলে তিনটি পথেই হাঠতে পারেন । তিন নম্বর বিষয়ের দিকে এগুলে ভাল মনে হয় । এ ক্ষত্রে আপনার আল্লাহ পাকের দিকে এগুতে হবে আমল আর দোয়া করে । তবে ২ নম্বর বিষয় ও গুরুত্ব পূর্ণ, আর বলার দরকার নাই । এমনিতেই মনে হইতেছে আপনারা আমার এই কথা নিয়েও হাসি ঠাট্টা শুরু করেন ।
বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম
আমিন ।
এখানে কিছু সুক্ষ পয়েন্ট আছে ধরার চেষ্টা করুন । আশা করি তাহলে আপনিও বুঝতে পারবেন ।
@ফুয়াদ,
আপনি নিজেই বলেছিলেন, নাস্তিকেরা যেন ঈশ্বর নেই প্রমাণ করে দেখান। তার পরিপ্রেক্ষিতেই আমি ঈশ্বরকে সংজ্ঞায়িত করার জন্য যে সমস্ত গুণ উল্লেখ করা হয়, সেগুলো যে পরষ্পরবিরোধী তা দেখিয়েছি। পাথরের উদারণটাকে আক্ষরিক হিসেবে নেবার কারণ নেই। এটা শুধু বলা হয়েছে এটা বোঝাতেই যে, অসীম ক্ষমতাবান বা সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী বলতে কিছু নেই। দেখা গেছে, মানুষের কাছে যা যৌক্তিকভাবে অসম্ভব, তা ঈশ্বরও তৈরি করতে পারছেন না। এটা দেখানোই ছিলো মূল উদ্দেশ্য। আমি Theodore M. Drange এর প্রবন্ধ Incompatible-Properties Arguments এবং ভিক্টর স্টঙ্গরের বইয়ের উদাহরণও দিয়েছি। আমি ধারনা করেছিলাম যে ঈশ্বরের ধারণা আসলে সঠিক ভাবে সংগায়িত নয়, এবং বহু ক্ষেত্রেই পরস্পরবিরোধী, তা আপনি বঝার চেষ্টা করবেন। কিন্ত এর প্রেক্ষিতে যদি আপনি লেখেন ‘বড় বিষয় হইতেছে, আমাদের ক্ষুদ্র মাথায় আল্লাহ পাক কে বুঝার মত ক্ষমতা নেই । কিন্তু উনাকে মেনে নেবার ক্ষমতা আছে ।’ তখন আমার জন্য আর বিতর্ক করা কঠিনই হয়ে যায়। আপনার উক্তি থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে, আপনার আল্লাহকে বুঝার মত ক্ষমতা না থাকলেও, আপনি তাকে অবলীলায় মেনে নিচ্ছেন। এটা আসলে প্রমাণবিহীন বিশ্বাস। অন্ধবিশ্বাস শব্দটি আমি বলতে চাই না, কিন্তু আপনি নিজেই সেটা প্রকান্তরে স্বীকার করে নিচ্ছেন আপনার উক্তির মাধ্যমে। ঠিক আছে, আপনার বিশ্বাসের উপর পূর্ণ শ্রদ্ধা পোষণ করেই তাহলে শেষ কথা বলি – ভবিষ্যতে তাহলে নিশ্চয় আমরা আশা করতে পারি যে, আপনি আর ঈশ্বরে অবিশাসীদের কাছে ‘ঈশ্বর না থাকার’ প্রমাণ দাবী করে বসবেন না। কারণ যৌক্তিক প্রমাণ আমাদের তরফ থেকে পেশ করা হয়েছে, কিন্তু আপনি তার প্রেক্ষিতে পালটা কোন জোরালো যুক্তি হাজির করতে পারেন নি। কেবল বিস্তৃত করেছেন আপনার বিশ্বাসের ব্যাপারটা।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
@অভিজিৎ দা,
অভিজিত দা, কৌশলে আমার মুখ বন্দ করতে চান, মনে হইতে ছে । কারো যুক্তি থেমে থাকে না , উন্নত হয় । আমার যুক্তি গুলিও উন্নত হবে ইনশি-আল্লাহ ।
কেন করব না , আমার প্রশ্ন কি স্থির ? আমার জ্ঞান বাড়ার সাথে প্রশ্ন পরিবর্তিত হইতেছে ।তারপর, আমার কথা বুঝানোর পক্রিয়া ও উন্নত হইতেছে । এখন যদি বলেন দশ বছর আগে তোমার প্রশ্নের জবাব দেওয়া হয়েছে, তাহলে তো হয় না । দুঃখিত, আপনার অনুরোধ রাখতে পারব না । কারন আমি হিংস্র পাগল নঈ । আমি আমার জ্ঞান চর্চা কন্টিনিয়াসলি করব থেমে যাবো না, প্রমানের উপর প্রমন রিবিঊটালের উপর রিবিঊটাল হবে । হেরে গেলে আবার শিখে নুতুন করে লিখব, নুতুন রিবিঊটাল, নুতুন প্রমান হবে । সমস্যা কোথায় ?
তাছাড়া , আমি আমার জবাব দিয়েছি আপনার পছন্দ না হলেও। আর আমি এখানে প্রতিন্দিতা করতে আসি না , আলোচনা করতে আসি । কিছু ভুল বা মিথ্যা অথবা অন্যায় মূলক মনে হলে, আমি তো ধরবই ।
(আজকে ফেইসবুকে আপনাদের এখানকার একজন ব্যক্তি আমাকে বিনা কারনে হঠাত করেই স্টুপিড বলল এরপর ক্লেভার । বুঝলাম, নাস্তিকথা নাস্তিকথা করে ব্রেইন ওয়াশ হয়েগেছে । কারন স্টুপিড আর ক্লেভার, কেঊ এক সাথে হতে পারে না ।)
@মুহাইমীন,
কোন আয়াতে? ফুয়াদ সাহেবের উত্তরে কোরানিক প্রমাণ কই?
আর খারাপগুলো কার?
মানুষের ভেতর খারাপ প্রবনতা ঢুকিয়ে দিয়ে আল্লাহ মানুষ সৃস্টি করলেন? তাহলে আল্লাহ নিজেই মন্দ, তার সৃস্টির উদ্দেশ্যও খারাপ, আর মানুষের সমস্ত খারাপ গুণগুলোও আল্লাহর। এমন আজব, বোকা, আহাম্মক কারিগর আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে মানায় না। এই ঈশ্বর ও তার বইখানি বুকে লালন না করে দূরে রাখাই পরম শান্তি। পৃথিবীর বাস্তবতা সেটাই প্রমাণ করে।
@আকাশ মালিক,
মানুষের ভেতর ঈশ্বর বাস করে এই দর্শনের প্রমানটা আপনি কোরান পড়লে পেয়ে যাবেন।তারপরও কিছু বলি,আয়াতের রেফারেন্সটা এই মুহুর্তে দিতে পারব না কারন দীর্ঘদিন কোরান না পড়ার কারনে তা আর মনে নেই।আপনি দয়া করে খুজে নেবেন-আমি ক্ষমাপ্রার্থী।
১.আমি মানুষের ভেতর আমার রূহ কে ফুকে দিয়েছি।
২.আমি মানুষকে আমার প্রতিনিধি হিসেবে সৃষ্টি করেছি।
৩.তোমরা দৃঢ়ভাবে আল্লাহর রজ্জু ধরে রাখ।
৪.তোমরা আল্লার রংকে ধারন কর।
৫. আমি মানুষ ও জীনকে আমার আনুগত্যের জন্য সৃষ্টি করেছি।
আরো অনেক আয়াত আছে।
হ্যা, আল্লাহ ভাল খারাপ দুটিই সৃষ্টি করেছেন; তবে বলি-
মানুষ্কে খারাপের চরম পরিনতি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আর ভালোর সুফলগুলো জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তাই কোন দিকে সে যাবে সেটা তারই দায়িত্ব।তবে কোরান বলে যারা তাদের ভেতরে বাস করা ইশ্বরের আদেশকে প্রত্যাখ্যান করে তাদের ভেতরের ঐ শুভ শক্তির উপর আবরণ তৈরী করে; ঈশ্বরের নির্দেশ আর ঐ পর্দা ভেদ করে আর তার কাছে আসে না। কোরানে একেই বলা হয়েছে কুফর। কুফর শব্দের অর্থ আবরণ তৈরী করা; ঢেকে রাখা; গোপন করা। আশা করি বুঝতে পেরেছেন। কোরান বলেছে- ঈশ্বরই সর্ব দ্র্রষ্টা তাই যারা নিজের ভেতরের শুভ স্বত্তাকে ঢেকে রাখে তারা সকল সত্যকে দেখতে পারে না – কোরানে তাই তাদেরকে অন্ধ- কানা- খোড়া বলেছে। মানুষের ভেতর সকল গুন ঈশ্বরের বলেই কোরান ঘোষনা করে যে, সমস্ত প্রশংসা জগত সমুহের প্রতিপালকের।
তাই কোরানের উপক্রমনিকায় ঈশ্বর নিজেই বলেন যে, আমরা তোমারই আনুগত্য করি ( কারণ মানুষের ভেতরের ইশ্বরই ঐ কথা বলছেন)
আজ এটুকুই । পরে অন্য প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেব। ধন্যবাদ।
@মুহাইমীন,
আপনি সুফীতত্বের ব্যাখ্যাগুলো দিচ্ছেন,প্রচণ্ড মাত্রায় বাউল চিন্তাধারার প্রভাবও দেখছি।সুফী বা বাউল সাধকরা সাধারণত উদার হন।তবে আজকাল কিছু বাউল লালনকে মুসলমান প্রমাণের জন্য যে “অ-লালনসুলভ” অপপ্রয়াসে লিপ্ত তাতে ভয় হয়,কখন না আবার এপোলজিস্টরা বিজ্ঞান বাদ দিয়ে লালন নিয়ে মেতে ওঠে।
ভাইরে, কুরানের কন্টেক্সচুয়াল অর্থ খুবই সাধারণ এবং আল্লা নিজেই বলে দিয়েছেন যে ,তা সাধারণের বোধগম্য।সামান্য কয়েকটা আয়াতের অর্থ গোপন।ইসলামের ইতিহাস নিরপেক্ষভাবে বিচার করে দেখুন।মোতাজিলা,শিয়া এবং সুফীরা কুরানের অতীন্দ্রিয় ব্যাখ্যা দিতে শুরু করে যা আসলে আউট অফ কনটেক্সট।কুরানের সেই অর্থগুলোই গ্রহণযোগ্য যেগুলো তৎকালীন আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।আপনার ব্যাখ্যাগুলো সুন্দর,কিন্তু গ্রহণযোগ্য নয়।
@আগন্তুক,
মনটাই দিলেন খারাপ করে।
তবে এসব বিশ্বাসভিত্তিক ব্যাপারে ধরাবাধা বা সর্বজন স্বীকৃত কোন ব্যাখা যে নেই তা এতদিনের বিতর্কের অভিজ্ঞতায় বুঝতে পেরেছি। অনেকটা আর্টের মত, একেকজনার কাছে এক একরকম।
@আদিল মাহমুদ,
অনেকে বিশ্বাস বিষয়টি পছন্দ করেন না। তাই বিশ্বাসসের লজিক টি খুলা খুলি করা উচিত । মনে করুন , আপনার কাছে জবের জন্য একই বিষয়ের তিন জন ব্যক্তি এল , একজন সাধারন কলেজ থেকে পাশ, আরেক জন ঢাকা ইউনিভারসিটি থেকে পাশ , আরেকজন অক্সফোরড ইউনিথেকে পাশ । সাব্জেক্ট একই । তাহলে কিন্তু আপনি অক্সফোরড কে বেশী দাম দিবেন, তার পর ঢাকা ইউনিভারসিটি তার পর কলেজ । কারন বিশ্বাস । আর এই বিশ্বাস দিয়েই পৃথিবী চলতেছে । এই বিষয়টি অত্যান্ত গভীর । বুঝা যতেষ্ট কষ্ট কর । Allah is the Light of the heavens and the earth সূরা নূর আয়াত ৩৫
আমার মনে হয়, ফুয়াদের মত সাথে তর্ক করাটা সময়ের অপচয়। একই প্যাচাল আর কত করা বা পড়া যায় 🙂
@রাহাত খান
সহমত। 😀 ।
মানুষ সাধারণত ঈশ্বরে বিশ্বাস করে অজ্ঞতার জন্য। রাহুল সাংকৃত্যায়ন যেমনটি বলেছেন- অজ্ঞতার অপর নাম ঈশ্বর। বিশ্বাসীদের যুক্তি -আমি জানি না তাই ঈশ্বর আছেন। অজ্ঞতা না থাকলে ঈশ্বরের জন্ম অসম্ভব ছিল।
আমরা যদি প্রকৃতির কোনো ঘটনাকে ব্যাখ্যা করতে না পারি তবে আমাদের উচিত এ বিষয়ে নিরন্তর গবেষণা চালিয়ে যাওয়া অথবা এর প্রকৃত কারণ জানার জন্য অপেক্ষা করা।কিন্তু তা না করে এক লাফে আমরা ঈশ্বরে চলে যাই। এতে গিয়ে এক সমস্যার সমাধানের জন্য অহেতুক আরেক উটকো সমস্যার আমদানি করা হয় যাতে করে কোনোটিরই সমাধান হয় না।
আর হ্যা, ফ্লু সাহেব দুর্বলভাবে তাঁর যুক্তি উপস্থাপন করেছেন। তাঁর দেয়া যুক্তিগুলো আস্তিকরা বোঝবে বলে মনে হচ্ছে না।
@সৈকত চৌধুরী,
দুঃখিত সৈকত ভাই, আমার মতে , অহংকারের অপর নাম নাস্তিকতা ।
@ফুয়াদ,
আচ্ছা ফুয়াদ ভাই, আপনি একটা বিষয় ভালোভাবে ভাবেন যে আপনি কিভাবে ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী হয়ে উটেছেন? সেটা কি শুধু childhood indoctrination এর ফল নাকি অন্য কিছু?
উপরের আলোচনা হতে আপনি এটা বোঝতে পারার কথা যে – আল্লার অস্তিত্ব প্রমাণের দায়িত্ব কাদের।আপনি একটা কাজ করেন – আল্লার অস্তিত্বের স্বপক্ষে আপনার যুক্তিগুলো কি তা একটু জানান। কোরানকে আল্লার কিতাব বলে কিভাবে প্রমাণ করলেন তাও যদি একটু বলতেন।
অহংকারের সাথে নাস্তিকতার কি সম্পর্ক বুঝি নাই। আপনি তো জানেন যে আমরা প্রায় সবাই ছোটবেলায় কোনো না কোনো ধর্মে বিশ্বাস করতাম। হটাৎ কি এমন অহংকার আমাদের পেয়ে বসল যে আমরা নাস্তিক হয়ে গেলাম?
নাস্তিকরা সাধারণত নিরহংকার,অমায়িক, সৎ ও জ্ঞানী হয়ে থাকেন আর তারো কারণ আছে। একজন নাস্তিক মনে করেন আমরা মানুষই পৃথিবীর মালিক, কোন ঈশ্বর নয়। তাই একে সাজানোর দায়িত্ব আমাদেরই। নাস্তিকরা বর্ণবাদ, নারীর প্রতি বৈষম্য, জাত্যভিমান এগুলো থেকে মুক্ত।
@সৈকত চৌধুরী,
একমত।
এগুলো আমারো প্রশ্ন।
@ফুয়াদ,
আপনিতো অনেকদিন ধরেই মুক্তমনায় আছেন। এতো নাস্তিকের সমাহার মনে হয় না আর কোন বাংলা প্লাটফর্মে আছে। কি কি অহংকারের কাজ এই নাস্তিকেরা করেছে তার একটা বিবরণ যদি দিতেন তবে খুব খুশি হতাম। সেই সাথে হয়তো বুঝতে পারতাম যে অহংকারের অপর নাম কী করে নাস্তিকতা হয়। :-/
@ফরিদ আহমেদ/সৈকত,
আমি যতটুকূ বুঝি ইসলাম মতে (হতে পারে অন্য আব্রাহামীয় ধর্মমতেও) নাস্তিকতা বা আল্লাহকে বিশ্বাস না করাই অনেক বড় অহংকারের পরিচয়। ইসলামী মতে জীবনের প্রতি পদে আল্লাহর নিয়ামত দেখতে হয় ও তাকে ধণ্যবাদ জানাতে হয় সবকিছুর কারনে।
সেখানে যারা তাকে বিশ্বাসই করছেন না তাকে কি চোখে দেখা যাবে তার কি আর কোন যুক্তিগ্রাহ্য ব্যাখ্যা লাগে? নাস্তিকতা মানেই অনেক বড় অপরাধ (ক্ষমার অযোগ্য), সে আপনি যত ভাল মানুষই হন না কেন, যতই জনহিতকর কাজ করে বেড়ান না কেন।
@ফুয়াদ, কথাটি বোধ হয় পুরো সত্যি নয়।আদি অহংকারী ছিলো ইবলিস শয়তান,নিজে আলোর তৈরি এ জন্যে অহংকার করে মাটির তৈরি আদমের মধ্যে আল্লাহর রুহ ফুঁকে দেয়া হয়েছে জেনেও সে তাকে সিজদা করতে অবাধ্য হয়।কিন্তু শয়তান ইবলিস ও কিন্তু নাস্তিক নয়,কারণ সে স্রষ্টার অস্তিত্বে বিশ্বাস করে।আর অনেক আস্তিককেও দেখেছি অহংকারী হতে,-বেশি ধার্মিক হবার অহংকার,বেশি ঈমানদার হবার অহংকার ইত্যাদি।তবে এবিষয়ে আমি আপনার সাথে অনেকটাই একমত যে নাস্তিকদের মধ্যে অহংকারের প্রাবল্য রয়েছে।
@al murshed,
ইবলিসের পয়েন্ট তুলে ভাল উদাহরন দিয়েছেন।
তবে সব নাস্তিক দোযখে যাবে, বা নাস্তিক হল আল্লাহর শত্রু এই জাতীয় চিন্তাভাবনা কি খুব বড় ধরনের অহংকারবোধ জন্ম দেয় না?
ধর্মগ্রন্থের বানীরর কথা বাদ দিলে এই জাতীয় দর্শন কি অহংকার জন্ম দেয় নাকি অন্যের প্রতি বীনীত বা শ্রদ্ধাভাব জন্ম দেয়?
@ফুয়াদ,
আপনি উপরে একটি প্রশ্নে বলেছিলেন-
কারণ তিনি পৃথিবী গোল বলে দাবি করেছেন তাই তাকেই প্রমাণ করতে হয়েছিলো। অন্যরা পৃথিবী সমতল বলেছে তাই পৃথিবী সমতল তা প্রমাণ করার দায়িত্ব ‘অন্যদের’ ছিলো যা করতে তারা সক্ষম হয়নি।
‘কোপার্নিকাস’ যা দাবি করেছেন তা তিনিই প্রমাণ করবেন এই তো কথা, তাইনা?
@সৈকত চৌধুরী,
অনেকটা ইথারের মত , সবাই মনে করে ইথার আছে , মাইকেলসন আর মার্সি বলেন ইথার নাই, তাই তাদের ঈ প্রমান করে দেখাতে হয়েছে ঈথার বলে আসলে কিছু নাই
ঠিক তেমনি, আপনারা মনে করেন আল্লাহ পাক নেই , তাই প্রমান টা ও আপনাদের ই দেওয়া উচিত । আমি এটাই বলতে চেয়েছি ।
ফ্লু সাহেবের যুক্তিগুলি দুর্বল।
(১) ঈশ্বরের প্রতিটা ধার্মিক সংজ্ঞাই একটি টেস্টেবল হাইপোথিসিস।
(২) কিছু কিছু ক্ষেত্রে পরীক্ষা এখনই করা যায়০কিছু কিছু প্রযুক্তি উন্নত হলে করা যাবে। যেমন স্বপ্নে যারা ঈশ্বরের দেখাপান, তাদের ওপর পরীক্ষা আর ৩০ বছরের মধ্যেই করা যাবে।
(৩) যেসব ক্ষেত্রে করা যায়-যেমন ঈশ্বর শাস্তিদেন ইত্যাদি–সেগুলোর ক্ষেত্রে সর্বত্র ঈশ্বর হাইপোথিসিস প্রমানিত ভাবে ব্যার্থ। যা করা যায় না, সেখানে
আমরা ওগুলোকে আনটেস্টেড হাইপোথিসিস হিসাবেই রেখে দেব। ঈশ্বরকে কেও আনটেস্টেড হাইপোথিসিসে বিশ্বাস বলে রেখে দিলে ক্ষতি নেই-ক্ষতি হচ্ছে টেস্টেড হিসাবে মেনে নিলে। কারন সেটা ডাঁহা মিথ্যে।
বিতর্কের মান দার্শনিক দৃষ্টিতে বেশ নীচু। এর থেকে আস্তিকতা-নাস্তিকতা নিয়ে অনেক গভীর ঐতিহাসিক বিতর্ক প্রাচীন ভারতেই হয়েছে।
@বিপ্লব পাল,
আমার দর্শনের উপর পড়াশোনা শূন্যের কোঠায়। কাজেই, দার্শনিক দৃষ্টিতে বিতর্কটির অবস্থান উঁচুতে না নিচুতে সে সম্পর্কে কোন ধারনাই নেই। আমি বিতর্কটি বেছে নিয়েছি মূলত এর একাডেমিক কাঠামোর কারণে। দুজন বক্তাই সূচনা বক্তব্য রেখেছেন, দু’বার করে পরস্পরের বক্তব্য খন্ডন করেছেন, শেষে গিয়ে সমাপনী বক্তব্য রেখেছেন। এর পরে আবার প্রশ্নোত্তর পর্বেও অংশ নিয়েছেন দু’জনেই।
বিবিসির করা কপলস্টোন-রাসেলের বিতর্কটি এরকম ফর্মেটে হয়নি। যদিও সে বিতর্কের মানও অনেক উন্নত ছিল। এটাকেও অনুবাদ করা প্রয়োজন। কেউ আগ্রহী হলে করতে পারেন। সেক্ষেত্রে ঈশ্বরের অস্তিত্ব-অনস্তিত্ব নিয়ে বিতর্কের একটা ই-বুক আমরা মুক্তমনায় করতে পারি। বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী দু’পক্ষই ঢুকে দেখতে পেতো তাদের অবস্থানের পক্ষের বা বিপক্ষের যুক্তিগুলো আসলে কি।
প্রাচীন ভারতের এই ধরনের বিতর্কের কিছু মণি মাণিক্য তোমার কাছে থাকলে ছেড়ে দাওনা মুক্তমনায়।
@ফরিদ আহমেদ,
এই পোস্টে কিছু চেস্টা করেছিলাম …..
http://blog.mukto-mona.com/?p=295
@নাস্তিকের ধর্মকথা,
ধন্যবাদ আপনাকে লিংকটা দেবার জন্য। মুক্তমনার কোন লেখাই সাধারণত আমার চোখ এড়ায় না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে কোন কারণে এটি এড়িয়ে গিয়েছিল। খুব সুন্দর একটা প্রবন্ধ। আপনি আর বিপ্লব যৌথভাবে কিন্তু প্রাচীন ভারতের এই দর্শনকে তুলে ধরতে পারেন।
@বিপ্লব পাল,
সংজ্ঞা কিভাবে হাইপোথিসিস হয় একটু বুঝিয়ে বলবেন কি?
@মোঃ হারুন উজ জামান,
(১) সংজ্ঞা শব্দটা আমরা একাডেমিকস থেকে পেয়ে থাকি যেখানে সব ইহজাগতিক বিষয়ের সংজ্ঞা ” এম্পিরিক্যাল সত্যর’ ওপর নির্মিত। অর্থাৎ পরীক্ষ লদ্ধ সত্যের ওপর ভিত্তি করে যেকোন এম্পিরিক্যাল ডেফিনেশন চলে। যেহেতউ সংজ্ঞাটা তৈরীই হচ্ছে প্রমানিত সত্যের ওপর ভিত্তি করে-সেখানে টেস্টেবিলিটির চলে না। তাই এখানে সংজ্ঞা হাইপোথিসিস না।
(২) কিন্ত থিওলজিতে সংজ্ঞা গুলির ভিত্তি পরীক্ষলদ্ধ সত্য না।
যেমন ঈশ্বরের সংজ্ঞায় আসতে পারে তিনি পরম করুণাময়–
এ গুলোত টেস্টেবল। কারন সংজ্ঞাতেই কিছু গুণকে এটিবিঊট করা হচ্ছে, যা রীতিমত পরীক্ষা করা যায় সমাজ নৃতত্ত্ব বিজ্ঞান বা পদার্থ বিজ্ঞানে।
@বিপ্লব পাল,
আমার মনে হয় এম্পিরিক্যাল শব্দের বাংলা হবে পর্যবেক্ষনলদ্ধ বা অভিজ্ঞতালদ্ধ। পরিক্ষাও একধরনের পর্যবেক্ষন, যেটা নিয়ণ্ত্রিত পরিবেশে করা হয়। তাহলে আপনি বলতে চাইছেন যেসব সংজ্ঞা পর্যবেক্ষনলদ্ধ সত্যের উপর ভিত্তি করে তৈরী, সেগুলো টেস্টেবল নয় এবং হাইপোথিসিসও না। আর যে সংজ্ঞাগুলোর পর্যবেক্ষনলদ্ধ ভিত্তি নেই সেগুলো টেস্টেবল হাইপোথিসিস হতে পারে।
এখানে তিনটা ব্যাপার আছেঃ (১) সংজ্ঞা বলতে কি বুঝায়, (২) সংজ্ঞা কি হাইপোথিসিস হতে পারে কিনা এবং (৩) কোন হাইপোথিসিস টেস্টেবল।
সংজ্ঞা শব্দের সরল অর্থ নামকরন (নেমিং) বা চিহ্নিতকরন (আইডেন্টিফিকেশন)। ধরুন আমি “রামগরুড়ের ছানা”র সংজ্ঞা দিলাম “একধরনের গর্ধভসদৃশ প্রানী যার হাসতে মানা।” অর্থাত বর্নিত কাল্পনিক উদ্ভট প্রানিটার গায়ে “রামগরুড়ের ছানা” এই নামটা বা লেবেলটা এঁটে দিলাম। এখানে নামটা হল একটা শব্দ এবং এই বিশেষ বর্ননাটা হল ঐ শব্দটার সংজ্ঞা। আর হাইপোথিসিস হল কোন আগে থেকেই *চিহ্নিত* বা *সংজ্ঞায়িত* জিনিষ *সম্পর্কে* কোন প্রপজিশন বা স্টেটমেন্ট। সংজ্ঞা নিজে কোন হাইপোথিসিস নয়, সেটা পর্যবেক্ষনলদ্ধ জিনিষ সম্পকেই হোক আর কাল্পনিক কিম্বা ধর্মশাস্ত্রপ্রসুতই হোক। আর সংজ্ঞা টেস্টেবল কিনা এই প্রশ্নটা ভাষাগতভাবে অর্থহীন। আর যেকোন হাইপোথিসিস টেস্টেবল হতেও পারে নাও হতে পারে।
এতক্ষন সেমান্টিকসগুলো পরিস্কার করার চেষ্টা করলাম, এখন আপনার মূল বক্তব্যে আসা যাক। আপনার ১ম প্রস্তাবনা দিয়ে সুরু করি।
এটাকে একটু পরিবর্তন করে বলি, “ঈশ্বরের প্রতিটা কথিত এট্রিবিউটই একটি টেস্টেবল হাইপোথিসিস।” এখন আপনি একটু আলোচনা করুন কেন এই কথাটা সত্যি। “ঈশ্বর পরম করুনাময়” এটা দিয়ে শুরু করতে পারেন।
ফুয়াদ, আপনি কি ভুল জায়গায়ই না ঢুকে পড়েছেন। তবুও আপনার পদচারণা ভালই লাগে। ভিন্ন মতের যুক্তি কি হতে পারে এ সম্বন্ধে জানা যায়। এবং উপভোগ্যও হয়। মন্দ কি?
আমাদের মোল্লা স্যার ছিলেন। আমাদের ইন্টারমিডিয়েটে যুক্তি বিদ্যা পড়াতেন। উনি ঈশ্ব্রর আছেন এবং নাই— দুটো মতের কথাই দুটো ছড়ায় বলতেন।
একটি হলো — নগদ যা পাও হাত পেতে নাও
বাকীর খাতা শুন্য থাক
দূরের বাদ্য লাভ কি শুনে
মাঝখানে যে বেজায় ফাঁক
অন্যটি– মন বলে আছো চোখ বলে নাই
আমি বলি থাক থাক
না থাকলে নাই।
ফুয়াদ , যদি উনি না-ই থাকেন তবে নাই। আপনি এ নিয়ে এতো উদগ্রীব কেন?
@গীতা দাস,
বাকিরা কি ভাবল বা না-ভাবল তা নিয়ে যে আমার কখন ঈ উচ্চ চিন্তা নাই । ভুল বা সুদ্ধ যা ইচ্ছা বলেন , আচ্ছা আপনি কি আমাকে বলতে পারেন ভুলের সংজ্ঞা কি ? এই গোল পৃথিবীতে বিভিন্ন কিছু পাবেন যার সব কিছুই আপেক্ষিক আবার বাস্তব । সময় সব কিছুই পরিবর্তন করে দেয় । কিন্তু সময় বলেও কিছু নাই ।
@ফুয়াদ,
আমি আবারো আপনার কাছে হার মানছি।
তবে, আমার ডানা গজানোর ব্যাপারে আপনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিলেন না দেখে দূঃখ পেলাম।
আর এখন থেকে আমি আল্লাহর সাথে সাথে বক রাক্ষস, মা কালী, পান্থ ভূতের জ্যান্ত ছানা এসব কিছুতেই বিশ্বাস করব কারন এগুলি যে নেই তা কেউ প্রমান করতে পারবে না। আর অনেক মানুষে কিন্তু বিশ্বাসও করে।
ভারতে বেশীরভাগ লোকে মা কালী বিশ্বাস করে বলে সেখানে আপনাকেই প্রমান দিতে হবে যে মা কালী নেই এটা নিশ্চয়ই নিজের যুক্তিতেই মেনে নেবেন। এখন থেকে আপনাকে মা কালির অস্তিত্ত্বে বিশ্বাসী তো নিশ্চইয়ই বলা যায়। তাই না? কারন আপনি তো কোনদিন মাইকেলসন মোর্লীর কায়দায় প্রমান করতে পারবেন না যা মা কালী নেই।
কাজেই……..ভাল থাকেন।
যুক্তিবাদীরা জানেন যে যুক্তি কাকে বলে বা তিনি নিজে যা বলছেন তাতে কতটুকূ যুক্তি আছে, বা সেই যুক্তির ফাক কতটুকূ আছে। অন্ধবিশ্বাসী এটা কোনদিন বুঝবেন না।
সেজন্যই ফ্লু বলতে পারেন, “আমার পক্ষে কোনভাবেই প্রমাণ করা সম্ভব হবে না যে ঈশ্বর নেই”।
এর মাঝে কোন বিশাল প্রাপ্তি নেই, অতীতেও বহুবার বলা হয়েচে; এই যুক্তির ভিত্তীতে মা কালী, দেবী স্বরসতি, দূর্গা, বক রাক্ষস, মামদো ভুত, রাবন রাজ, হনুমানের হিমালয় বহন সবই সত্য।
কেউ হয়ত জানেন না, তবে মাঝে মাঝে রাত বারোটার পরে আমার পিঠ থেকে এক জোড়া ডানা গজায়। তখন আমি খুশীমত কিছুক্ষন আকাশে উড়ে বেড়াতে পারি। তবে সবসময় বা প্রতিদিন হয় না, কোনদিন হয় আমিও জানি না, কখনো ৭ দিন পর, কখনো ৩ বছর পর। তবে হয়।
কেউ প্রমান করতে পারবেন আমি চাপা পিটাচ্ছি??? আমার কথায় যুক্তি নেই বললে কিন্তু খুব রাগ করব আগেই বলে দিচ্ছি হ্যা!
[গল্পটা প্রবীর ঘোষের থেকে ধার করা]।
@আদিল মাহমুদ,
ঠিক, এই কথাগুলোই বলেছিলাম আমি মেসবাহউদ্দিন জওহের নামে এক সুলেখকের সাথে বিতর্ক করতে গিয়ে। ঈশ্বর নিয়ে আমি যত জায়গায় বিতর্ক করেছি, তার মধ্যে জওহের সাহেবকেই অত্যন্ত শালীন এবং যুক্তিনিষ্ঠ মনে হয়েছে। আমি এখনো মনে করি ঈশ্বর বিষয়ে বাংলায় এ পর্যন্ত যত বিতর্ক হয়েছে আমাদের মধ্যকার বিতর্কটিই ছিলো সবচেয়ে প্রাণবন্ত। আমার সাথে তার বিতর্কটি রাখা আছে আমাদের ইসংকলন ‘বিজ্ঞান ও ধর্ম – সংঘাত নাকি সমন্বয়’ বইটিতে। তার লেখার অভাব বোধ করছি অনেকদিন ধরেই। যাহোক তাকে জবাব দিতে গিয়ে ‘আস্তিকতা বনাম নাস্তিকতা’র প্রত্যুত্তরে’ তে আমি লিখেছিলাম –
দর্শন শাস্ত্রে ‘Burden of Proof’ বলে একটি টার্ম প্রচলিত আছে যার মর্মার্থটি হল, যে কোন উটকো দাবীর যথার্থতা প্রমাণ করার দায়িত্ব দাবীদারের। আপনি যদি ঈশ্বরে বিশ্বাসী হন, পরীতে বিশ্বাসী হন, জ্বীনে বিশ্বাসী হন, পূর্ব জন্মে বিশ্বাসী হন, অ্যালিয়নে বিশ্বাসী হন – আপনাকেই এই সমস্ত বিষয়ের অস্তিত্বের যথার্তা প্রমাণ করতে হবে; যারা এগুলোতে বিশ্বাস করে না, তাদের দায়িত্ব নয় ‘অঙ্ক কষে’ আপনার দাবীকে ভুল প্রমাণ করা কিংবা নস্যাৎ করা। যিনি ভুতে বিশ্বাস করেন অথচ ভুতের অস্তিত্বের প্রমাণ চাইলেই উলটে প্রতিপক্ষের কাঁধে দায়ভার চাপিয়ে দিয়ে বলেন, ‘প্রমাণ করুন তো, ভুত বলে কিছু নেই’ – তিনি আসলে নিজের অজান্তেই একটি যৌক্তিক ভ্রান্তিতে (logical fallacy) আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন, দর্শনে যার একটি সম্ভ্রান্ত নাম আছে – ‘Shifting the Burden of Proof’; সহজ বাংলায় যাকে বলে ‘উদোর পিন্ডি বুধোর ঘারে’ চাপানো। এই ভ্রান্তিটিকে দর্শন শাস্ত্রে এভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে-
The burden of proof is always on the person asserting something. Shifting the burden of proof is the fallacy of putting the burden of proof on the person who denies or questions the assertion. The source of the fallacy is the assumption that something is true unless proven otherwise. (Ref: The Atheism Web, Logic & Fallacies)
বার্ট্রান্ড রাসেলকে একবার জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল উনি ঈশ্বরের অনস্তিত্ব প্রমাণ করতে পারবেন কিনা। তার জবাবে উনি বলেছিলেন:
যে যুক্তিতে নাস্তিকদের উপর ‘উদোর পিন্ডি’ চাপিয়ে দিয়ে ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে বলা হয় সে একই যুক্তিতে তাহলে জিউস, হেরা, ব্রক্ষ্মা, কালী, থর, পশুপতি, অশ্বত্থামা, ট্যাশ গরু, রামগরুরের ছানা সবকিছুকেই ‘বিনা প্রমাণে’ মেনে নিতে হয়, কারণ কেউ এখন পর্যন্ত ‘অঙ্ক কষে’ এগুলো যে আদপেই নেই – তা প্রমাণ করতে পারে নি। অবশ্যই না করতে পারার সঙ্গত একটি কারণও আছে। কারণ, দর্শন শাস্ত্র আমাদের শিখিয়েছে যে, নেতিবাচক আস্তিত্বের প্রস্তাবনা (negative existential proposition) কখনই প্রমাণযোগ্য নয়। ব্যাপারটি ঈশ্বরের ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য।
@অভিজিৎ,
এ নিয়ে এখানেও বহুবার বোঝানো হয়েছে। আগেই বলেছি, এহেন যুক্তির অসারতা যিনি না বোঝার তাকে বোঝানোর সাধ্য কারো নেই।
জিউস, হেরা, ব্রক্ষ্মা, কালী, থর, পশুপতি, অশ্বত্থামা, ট্যাশ গরু, রামগরুরের ছানা এগুলির অস্তিত্ত্ব বিশ্বাস করলে তখন কিন্তু “ঈশ্বরের অস্তিত্ব নেই প্রমানিত নয়” ওয়ালারা মানতে চান না, ফলসিফিক্যাশেন টেষ্ট চ্যালেনজ় করে বসেন। এর চেয়ে হাস্যকর কি হতে পারে?
@অভিজিৎ,
মেজবাহউদ্দিন জওহ সাহেবের লেখাটা পড়লাম। প্রথম অর্ধেক পড়ে মনে হচ্ছিল কেউ যেন আমার নিজের কথাগুলিই সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে বলে যাচ্ছে।
তবে উনিও দেখা যাচ্ছে একই ভুলই করেছেন, নাস্তিকদের ঘাড়ে অপ্রমানের দায়িত্ব চাপাচ্ছেন, কারন প্রচলিত ধারনা হল ঈশ্বর আছেন। তার মতে প্রচলিত ধারনা ভাঙ্গার দায়িত্ব যারা সেই ধারনা বিশ্বাস করে না তাদের। খুবই দূর্বল যুক্তি।
@অভিজিৎ,
আমি আরেকটু বলছি। যেমন ‘ক’ দাবি করলেন ‘প’ এর অস্তিত্ব আছে। এখন ‘প’-এর অস্তিত্ব আছে তা প্রমানের দায়িত্ব (burden of proof) ‘ক’ এর উপরে। যদি ‘ক’ তা প্রমাণ করতে না পারেন তবে ‘প-এর অস্তিত্ব আছে’ এ কথাটার কোনো গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না কেননা ‘ক’ এই দাবি করেছেন এবং প্রমাণ করতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। এখন ‘ক’ এর দাবি যদি ‘খ’ মানতে নারাজ হোন তবে ‘ক’ এরূপ বলতে পারবেন না যে – তাহলে আপনি প্রমাণ করুন ‘প’ এর অস্তিত্ব নেই। ‘ক’ যদি তার দাবির স্বপক্ষে কোন প্রমাণ দেখাতে না পারেন তবে তা এখানেই গ্রহণযোগ্যতা হারায়। অবশ্য, ‘ক’ কিছু প্রমাণ উপস্থাপন করে ‘খ’ কে তা খণ্ডণ করতে আমন্ত্রণ জানাতে পারেন। এক্ষেত্রে ‘খ’ যদি শুধু ‘ক’ এর উপস্থাপিত প্রমাণগুলোকে খণ্ডণ করতে পারেন তবেই ‘ক’ এর দাবি গ্রহণযোগ্যতা হারাবে। আর ‘ক’ যেহেতু ‘প’-এর অস্তিত্ব দাবি করেছেন তাই তাকে ‘প’ বস্তুটা কি তা এতটা ব্যাখ্যা করতে হবে যতটা ব্যাখ্যা করলে ওই বস্তু সম্পর্কে একটা সম্পূর্ণ এবং ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য ধারণা পাওয়া যায়।
উদাহরণস্বরূপ, করিম সাহেব ‘বক রাক্ষস’ এর অস্তিত্ব দাবি করলেন। এবার তা প্রমাণের দায়িত্ব তারই। রহিম সাহেব করিম সাহেবের দাবি মেনে নিতে না চাইলে করিম সাহেব যদি বলেন ‘তাহলে দেখিতো আপনি প্রমাণ করুন ‘বক রাক্ষস’-এর অস্তিত্ব নেই’ – তাহলে আপনি করিম সাহেবকে কি বলবেন?
আর করিম সাহেব যেহেতু ‘বক রাক্ষস’ এর অস্তিত্ব দাবি করেছেন তাই তাকে ওই বস্তু সম্পর্কে একটা সম্পূর্ণ এবং ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য ধারণা দিতেই হবে নইলে তা বোধগম্য হয়ে উটবে না।
ঈশ্বরের অস্তিত্ব যেহেতু আস্তিকেরা দাবি করেন তাই তা প্রমাণের ও বোধগম্য করার দায়িত্ব তাদেরই। আর……………………
@সৈকত চৌধুরী,
ঠিক। সেজন্যই কার্ল স্যাগান বলতেন –
Extraordinary claims require extraordinary evidence.
extraordinary evidence না পাওয়া গেলে যে কারোরই অধিকার আছে সেটা অস্বীকার করার। 🙂
@সৈকত চৌধুরী,
আরে ভাই করিম সাহেবের বক রাক্ষস।
আমি তো নিজেই দাবী করছি রাত ১২ টার পরে আমার মাঝে মাঝে পাখা গজায়, তখন আমি উড়ে বেড়াতে পারি। তবে কখন বা কবে গজায় আমি জানি না, বলতে পারি না।
এখন যারা বিশ্বাস করেন না তাদের দায়িত্ব পাখা যে গজায় না সেটা প্রমান করা।
@সৈকত চৌধুরী, আদিল মাহমুদ, অভিজত
বুঝলাম, কিন্তু আরেকটি বিষয় দেখেন , মনে করুন হিন্দুরা মা কালি কে বিশ্বাস করে । এলাকার সব মানুষ হিন্দু । এখন হঠাৎ করে এক মুসলিম সেখানে আসল এবং দাবি করল মা কালি বলে কিছু নেই ?
এখন,
মুসলিম লোক টিকে প্রমাণ করতে হবে মা কালি বলে কিছু নেই ? কারণ দাবি সে করেছে । এখন, যদি মুসলিম লোক টি বলে , তোমরা মা কালি আছে বলে মানতেছে , অতএব তোমাদের প্রমাণ করতে হবে মা-কালি আছে ? তাহলে মুসলিম লোকটির কথার কোন মূল্য থাকবে না । কারণ এখানে আগুন্তক মুসলিম লোক টি, যে তার দাবি নিয়ে এসেছে । তাই, দাবিটি মুসলিম লোকের । একই ভাবে প্রমাণ করা যায় , ঈশ্বর নাই দাবিটি নাস্তিকের । অতএব, প্রমানের দায় ভার নাস্তিকের ।
আদিল ভাই, আপনার পাখার কাহিনি ভুল প্রমান করা যায় সহজে, ধরুন এক বছর আপনাকে পর্যবেক্ষনে রাখা হল । তাহলেই তো ধরা পরবে । আর পাখার দাবি যদি আপনার একার হয় , তাহলে ভুল প্রমান করার জন্য কারো দায় পরে না ।
@সৈকতদা,
আহাম্মকের সদ্দার!!! :laugh: :laugh: :laugh:
এই উজবুকদের বোঝানো পণ্ডশ্রম। কারণ এরা বুঝবে না বলে পণ করেছে!
@আদিল মাহমুদ,
সহমত।
অন্ধ বিশ্বাসীরা আসলে কোনদিন উপলব্ধিই করতে পারেনা যে কতটা তাদের দূরবস্থা।
যুক্তবাদীরা এদিক থেকে অনেক বেশী এগিয়ে। তারা যেমন জানেন তাদের সীমাবদ্ধতা তেমনি তা নির্দিধায় স্বীকার করে নিতেও নেই কোন ছলচাতুরী। আর অভাগা বিশ্বাসীরা নিজেদের সীমাবদ্ধতা না জেনেই অন্যের সীমাবদ্ধতায় উল্লসিত হয়। যেমনটা আমাদের ফুয়াদ সাহেব ক্লু সাহেবের সীমাবদ্ধতায় খুশী হয় তাকে লাল গোলাপ গিফট দেন।
@মিঠুন,
এই মানসিকতার (আসলে মানসিক দৈন্যতার) পরিচয় শুধু ঈশ্বরে বিশ্বাস অবিশ্বাসে থেমে থাকে না, কেউ ঈশ্বরে বিশ্বাস করলেন কি না এলেন তাতে ঈশ্বর বা মানুষ কারোই কিছু যায় আসে না।
তবে তারা এই বিশ্বাসের বশবর্তি হয়ে যখন নির্লজ্জভাবে অন্ধ বোবা কালার ভুমিকা নেন তখনই সমস্যা হয়। এ কারনেই আমাদের দেশের যাবতীয় কাঠমোল্লা সায়েদীদের সমালোচনা করার মানুষ প্রকাশ্যে বেশী পাওয়া যায় না। জাকির নায়েকরা নির্লজ্জ মিথ্যাচার করলেও তা ক্ষমাসুন্দর চোখে দেখা হয়।
নাস্তিকদের এই সমস্যা নেই, যেহেতু তারা কোন বিশ্বাসের কাছে দায়বদ্ধ নন তাই তারা যে কারোই সমালোচনা করতে পারেন। অন্য নাস্তিকের যুক্তির ভুল ধরতেও তাদের তেমন বাধে না। এক ধার্মিক অন্য ধার্মিকের যুক্তির ভুল ধরছেন এমন নজির আমার চোখে বড় পড়ে না। তাদের হয়ত নানান রকম ঐতিহাসিন বিবরন, হাদীস, কোরানের ব্যাখ্যা এসব নিয়ে তর্ক হয় তবে যুক্তিগত কোন বিতর্ক দেখা যায় না।
ফ্লু সাহেব কে লাল গোলাপ :rose2: :rose2: :rose2: :rose2: :rose2: :rose2: :rose2:
ঠিক! কিন্তু ফ্লু এর লেখার পরের লাইনটার জন্য আবার আপনার গোলাপ কেড়ে নিতে হবে 🙂
… বরং আমি দেখাতে চাচ্ছি যে, ঈশ্বর যে আছে সেই বিশ্বাসের স্বপক্ষে পর্যাপ্ত যুক্তিপ্রমাণ উপস্থিত নেই।…
@ফুয়াদ,
এক কাজ করুন, গোলাপ গুলো কেড়ে নিয়ে ক্রেইগকে কিছুক্ষন গালমন্দ করুন।
উপযুক্ত তথ্যপ্রমান হাজির করতে না পারার জন্য।
@ফুয়াদ,
সব লাল গোলাপ ফ্লু সাহেবকে দিয়ে দিয়েন না। আমার জন্যও কিছু রেখে দিয়েন। ফ্লু সাহেবের মত আমিও বিশ্বাস করি যে ঈশ্বর নেই তা প্রমাণ করা যাবে না কিছুতেই। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
:rose2: :rose2: :rose2: :rose2: :rose2: :rose2: :rose2: :rose2: :rose2: :rose2: :rose2: :rose2: :rose2: :rose2: :rose2: :rose2: :rose2: :rose2:
আমি ও আপনাদের কাছ হতে এই বক্তব্য ঈ আশা করতেছিলাম । তাই, এই গোলাপ গুলি আপনার জন্য ।
এখন, আসুন
১ ঈশ্বর নেই তা প্রমাণ করা যাবে না কিছুতেই
২ ঈশ্বর আছেন তা প্রমাণ করা যাবে না কিছুতেই
এই দুই বক্তব্যের মধ্যে বড় ধরনের ফাঁক আছে , ফাঁকটি হইতেছে , যেহেতু ঈশ্বর নেই তার প্রমাণ নেই , আবার ঈশ্বর আছেন তার প্রমাণ নেই তার মানে কিন্তু ঈশ্বর থাকলেও থাকতে পারেন । যেহেতু, গড নেই প্রমাণ করতে পারবেন না , সেহেতু গড আছেন কথার মধ্যে সম্ভবনা থেকে যাবে ।
(জানি না যুক্তি গুলি কেমন হল, যুক্তি বিদ্যা সম্পর্কে আমার জ্ঞান শূন্যের কোঠায় । তাই মাফ করবেন । যুক্তি বিদ্যার কোন বইয়ের লিংক থাকলে দিতে পারেন)
ধন্যবাদ ।
@ফুয়াদ,
খুব ভাল যুক্তি।
সে হিসেবে আমার মাঝে মাঝে রাত ১২ টার পরে পাখা গজালেও কিন্তু গজাতে পারে, তাই না?
আপনি এখন বাকি জীবন আমার সাথে ছায়ার মতন থাকতে পারেন গজায় না সেটা প্রমান করতে। তাতেও কিন্তু প্রমান করা যাবে না যে গজায় না, কারন সবসময় গজায় আমি দাবী করিনি। করেছি মাঝে মাঝে গজায়, কখন গজায় আমি নিজেও জানি না। হয়ত আগে ১ মাস বা ২ বছর পর গজাতো, আপনি অনুসরন করার পর ৫০ বছর পর গজাবে।
ভুল প্রমানের দায়িত্ব তো আপনার।
@ফুয়াদ,
আপনাকে যুক্তিবিদ্যার অতি সাধারন কিছু বিষয় আহে চিন্তা করতে হবে।
পৃথিবী যে গোল তা আপনি কেন মানেন? পৃথিবীর ৫০০ কোটি লোকে বিশ্বাস করে তাই মানেন, নাকি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা দিয়ে এটা প্রমান করা যায় বলেই মানেন? কোপার্নিকাসের মত লোকেরা যখন বুঝতে পেরেছিলেন যে পৃথিবী আসলে গোল, সমত্ন নয় তখনো তো বেশীরভাগ লোকেই বিশ্বাস করত পৃথিবী সমতল। তাতে কি কিছু এসে গেছে? যুক্তি প্রমানের সাথে গনতন্ত্রের কোন স্থান আছে?
যুক্তিগ্রাহ্য প্রমানে গনতন্ত্র বা বেশীরভাগ লোকে কি বিশ্বাস করল তার কোন মূল্য নেই তা কি বোঝেন? বেশীরভাগ লোকের বিশ্বাস হিসেব করলে তো খ্রীষ্টান ধর্ম ইসলাম ধর্মের থেকে খাটি কারন সেটা সংঘ্যাগরিষ্ঠ লোকের বিশ্বাস। এটা মানবেন?
কাজেই, নাস্তিকরা সংখ্যায় অল্প বলেই অপ্রমানের দায় তাদের না, প্রমানের দায় যারা দাবী করেন তাদের।
আপনার সেই মোসলমান লোক একা হলে কিছুই যায় আসে না। দায় অবশ্যই অন্য লোকদের যারা মা কালীকে সত্য বলে দাবী করেন। মোসলমানের কোন দায় নেই মা কালী নেই এটা প্রমানের। মা কালী নেই এটা তার দাবী নয়, মা কালী আছে এটাই দাবী।
“আদিল ভাই, আপনার পাখার কাহিনি ভুল প্রমান করা যায় সহজে, ধরুন এক বছর আপনাকে পর্যবেক্ষনে রাখা হল । তাহলেই তো ধরা পরবে । আর পাখার দাবি যদি আপনার একার হয় , তাহলে ভুল প্রমান করার জন্য কারো দায় পরে না ।”
আবারো আপনি একই ভুল করলেন। গনতন্ত্রের স্থান যুক্তিতে নেই। আমার পাখার কাহিনী এতই অবিশ্বাস্য কেন ঠেকছে? জন্মগতভাবে সব মানুষ একইরকম বা নিখুত এটা কি বলা যায়? ধরেই নিন না এটাও লেজওয়ালা, ৫ হাতওয়ালা মানুষ, বা জোড়া বাচ্চা জাতীয় কোন একটা অস্বাভাবিকতা। অস্বাভাবিকতা কতরকমের হতে পারে তার কি কোন বাধাধরা নিয়ম আছে নাকি? এসব অস্বাভাবিকতা সাধারন ঘটনা নয়। কোটি কোটি মানুষের মাঝে হয়ত একটা পাওয়া গেলেও যেতে পারে। আমার পাখার ব্যাপারটাও তো তেমনি। আমার একার হলেই মেনে নেবেন না কেন? এরকম দাবী ইতিহাসে ঘাটলে অনেক পাওয়া যায়। কোণ কোন যোগী দাবী করেন তারা শূন্যে ভেসে বেড়াতে পারেন। করেন না? তাদের দাবীর সমর্থক ও অনেক পাওয়া যায়। তাহলে আমি আদিল আর কি দোষ করলাম? একাই বা হলাম কি করে?
এবার আসল কথায় আসি। আপনি এক বছর কেন, আমার সাথে বাকী জীবন ঘুরে বেড়ালেও আমার পাখার দাবী মিথ্যা প্রমান করতে পারবেন না। এখানেই এহেন দাবীর মজা। ইচ্ছে করেই ফাকটা রেখে দিয়েছি। আমি কিন্তু দাবী করিনি আমার প্রতি রাতে ডানা গজায়, ফাকটা রেখেই দিয়েছি। বলেছি যে কোন রাতে বা কতদিন পর পর এমন হয় আমি নিজেও জানি না। তাই না? তাহলে আপনি ১ বছর পর্যবেক্ষনে রেখেই কিভাবে মিথ্যা রায় দিয়ে দেবেন? হয়ত আপনার পর্যবেক্ষন শুরুর পর ব্যাপারটা ৫০ বছর পরে আবার ঘটবে? সম্ভাবনা আছে না? কাজেই আপনি বাকি জীবন আমার সাথে ছায়ার মত ঘুরে বেড়ালেও মিথ্যা প্রমান করতে পারবেন না। আপনার যুক্তিতে নিজের যুক্তি অনুযায়ীই অন্তত মেনে নিতেই হবে যে আমার পাখা গজালেও গজাতে পারে। একদমই গজায় না এটা আপনার যুক্তিতে প্রমানের কোনই উপায় নেই।
সেটা প্রমান করতে আপনার আমাকেই চ্যালেঞ্জ জানাতে হবে যে আপনি পাখা গজায় এটা প্রমান করে দেখান।
@ আদিল মাহমুদ,
এখানে, কিন্তু আগুন্তক আপনি, কারন দাবিটি আপনার । যদি এখানের সবাই আপনার কথা মানত, আমি না মানতাম তাহলে “আমার ভুল প্রমানের দায়িত্ব হইত” । কিন্তু আন্যদের মত আমি নিজেও আপনার ঐ দাবি মানতেছি না । তাহলে সঠিক প্রমানের দায় আপনার কারন কেউ আপনার কথা মানতেছে না ।
মনে করুন মেঘনা নামের একটি নদী আছে , ঢাকার সবাই বিশ্বাস করে । এখন গ্রাম থেকে এক ব্যক্তি এল , এবং বলল মেঘনা নামে কোন নদী নাই । এই ক্ষেত্রে প্রমানের দ্বয়িত্ব ঐ গ্রম্য ব্যক্তির ।
বাংলাদেশে গডকে আমরা সবাই মানতেছি , এখন মুক্তমনারা মানতেছে না । অতএব মুক্তমনাদের দায়ি্ত্ব প্রমান করা “গড নাই” ।
@আদিল মাহমুদ ,
এই তো লাইনে আইছেন । দাবি কোপার্নিকাস করছেন, পৃথিবী গোল , কারন অন্যরা মনে পৃথিবী সমতল । তাই তাকেই প্রমান দিতে হয়েছে । কিন্তু গডের ব্যপারটা হয়েছে সবাই মনে করে গড আছেন, এখন যারা এখন বলেন গড নাই , তাকেই প্রমান করতে হবে গড না। অনেকটা ইথারের মত , সবাই মনে করে ইথার আছে , মাইকেলসন আর মার্সি বলেন ইথার নাই, তাই তাদের ঈ প্রমান করে দেখাতে হয়েছে ঈথার বলে আসলে কিছু নাই ।
@ফুয়াদ,
সবাই নয় বলুন অধিকাংশ কিংবা সংখ্যাগরিষ্ট। অধিকাংশ মানুষ কোন কিছু মানলেই সেটা বৈজ্ঞানিকভাবে সত্য হয়ে যায় না। বাংলাদেশে যেমন অধিকাংশ মানুষ ‘ইসলামিক আল্লাহ্য’ বিশ্বাস করে, আবার আপনি আমেরিকা গেলে দেখবেন অধিকাংশ মানুষই যীশুর ভার্জিন বার্থ, হলি ট্রিনিটি এ ধরণের কল্প কাহিনীতে বিশ্বাস করে। আপনি আমেরিকায় আসলে নিশ্চয় সেজন্য মুস্লিম থেকে খ্রিস্টান হয়ে যাবেন না, তাই না? একটা সময় পৃথিবীর অধিকাংশ লোকই বিশ্বাস করত পৃথিবীটা সমতল, কিংবা সূর্যই পৃথিবীর চারিদিকে ঘোরে ইত্যাদি। গ্যালিলিও কিংবা ব্রুনোর মত দু’একটা তার ছেড়া পাব্লিক বিপরীতটা বিশ্বাস করতো। কিন্তু সেজন্য ‘অধিকাংশ মানুষের বিশ্বাস’ই সত্য হয়ে যায় নি। সারা দুনিয়া জুড়ে এখনো অধিকাংশ মানুষই বৈজ্ঞানিক চিন্তায় যত না বিশ্বাস করে তার চেয়ে বেশি করে জ্বিন, ভুত, পরী, প্ল্যানচেট, আল্লাহ, ভার্জিন বার্থ, শয়তান, এলিয়েন প্রভৃতিতে। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ বিশ্বাস করে বলেই সেগুলো বৈজ্ঞানিকভাবে সত্য হয়ে যায় না। বরং বোঝা যায়, পৃথিবী জুড়ে অধিকাংশ মানুষই এখনো যুক্তি দিয়ে চিন্তা করতে অক্ষম।
আর একাডেমিকলি বললে বলব, সংখ্যাগরিষ্টের দোহাই দিয়ে আর্গুমেন্টে জিতার চেষ্টা একটি ফ্যালাসি। এর নাম Argumentum ad populum। আরো দেখুন – Argumentum ad numerum।
গুড। মাইকেলসন মর্লি পরীক্ষা করে দেখিয়েছেন যে ইথার নেই। কিন্তু সেরকম পরীক্ষা কি গড নিয়ে করা সম্ভব? করা সম্ভব সান্তাক্লস, ট্যাশ গরু, ইউনিকর্ণ, তর জিউস কিংবা সৈকতের বক রাক্ষস নিয়ে? কেউ পরীক্ষা করে ওগুলোর অস্তিত্ব বাতিল করতে পারেনি বলেই সেগুলোর অস্তিত্ব প্রমাণিত হয়ে যায় না।
তবে যেটি করা যেতে পারে, তা হল ঈশ্বরকে সংজ্ঞায়িত করতে যে ধরণের গুনাবলী আরোপ করা হয় পরীক্ষা করে দেখা সেগুলো পরষ্পর বিরোধী কিনা। যেমন, কেউ যদি চারকোনা বৃত্তের অস্তিত্ব দাবী করে, সেটা যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করা যাবে এই ধারনাটি পরষ্পর বিরোধী। ধর্ম-দর্শন নির্বিশেষে যে বেশিষ্ট্যগুলো দিয়ে ঈশ্বরকে সচরাচর মহিমান্নিত করা হয় সেগুলো সবই দেখা গেছে যুক্তির কষ্ঠিপাথরে খুবই ভঙ্গুর। যেমন, ঈশ্বরকে বলা হয় ‘পরম দয়াময়’ (all-loving) এবং সর্ব শক্তিমান (all-powerful or omnipotent), নিখুঁত (perfect), সর্বজ্ঞ (omniscient) ইত্যাদি। কিন্তু সর্বশক্তিমত্তা (omnipotence) এবং সর্বজ্ঞতা (omniscience) যে একসাথে প্রযোজ্য হতে পারে না তা যুক্তিবাদীদের দৃষ্টি এড়ায়নি। ঈশ্বর যে সর্বশক্তিমান নন, তা নিচের প্রশ্নটির সাহায্যে সহজেই দেখানো যেতে পারে। যদি প্রশ্ন করা হয় –
‘ঈশ্বর কি এমন কোন ভারী পাথরখন্ড তৈরি করতে পারবেন, যা তিনি নিজেই ঊঠাতে পারবেন না?’
এ প্রশ্নটির উত্তর যদি হ্যা হয় – তার মানে হচ্ছে ঈশ্বরের নিজের তৈরি পাথর নিজেই তুলতে পারবেন না, এর মানে তিনি সর্বশক্তিমান নন। আবার প্রশ্নটির উত্তর যদি না হয়, তার মানে হল, সেরকম কোন পাথর তিনি বানাতে পারবেন না, এটাও প্রকারান্তরে তার অক্ষমতাই প্রকাশ করছে। এ থেকে বোঝা যায়, অসীম ক্ষমতাবান বা সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী বলতে কিছু নেই। দেখা গেছে, মানুষের কাছে যা যৌক্তিকভাবে অসম্ভব, তা ঈশ্বরও তৈরি করতে পারছেন না। ঈশ্বর পারবেন না চারকোনা বৃত্ত আঁকতে, ঈশ্বর পারবেন না কোন ‘বিবাহিত ব্যাচেলর’ দেখাতে কারণ এগুলো যৌক্তিকভাবে অসম্ভব। আবার, ঈশ্বর যে পরম করুণাময় বা ‘অল লাভিং’ কিছু নন, তা বুঝতে রকেট সায়ন্টিস্ট হতে হয় না। দর্শনে ‘আর্গুমেন্ট অব এভিলের’ উপস্থিতিই এর প্রামাণ। বস্তুত ‘The Oxford Companion to Philosophy’ স্বীকার করেছে যে, সনাতন আস্তিকতার বিরুদ্ধে আর্গুমেন্ট অব এভিল বা ‘মন্দের যুক্তি’ সবচেয়ে শক্তিশালী মরণাস্ত্র, যা কেউই এখন পর্যন্ত ঠিকমত খন্ডন করতে পারেনি। মানুষের স্বাধীন ইচ্ছা এবং ঈশ্বরের সর্বজ্ঞতা কিংবা সর্বশক্তিমত্তা যে পরষ্পরবিরোধী তা দেখিয়েছেন কৃষক দার্শনিক আরজ আলী মাতুব্বরও, তার সত্যের সন্ধানে বইয়ে ।আপনি এ ধরণের বহু অসঙ্গতির কথা জানতে চাইলে আমার এই প্রবন্ধটি পড়তে পারেন।
আমার মত ছা-পোষা লেখকের কথা যদি বিশ্বাস না করেন, তবে একাডেমিক লোকদের লেখাও দেখে নিতে পারেন, যারা যুক্তি দিয়ে বহু ভাবেই প্রমাণ করেছেন ঈশ্বরকে সংজ্ঞায়িত করার জন্য যে সমস্ত গুনাব্লী আরোপ করা হয়, সেগুলো পরষ্পরবিরোধী। উদাহরণ –
Incompatible-Properties Arguments Theodore M. Drange
এ সমস্ত যুক্তি যদি বিবেচনা করেন, তাহলে বলতেই হয় মাইকেলসন মর্লির ইথারের মত ঈশ্বর যে একটি ‘ফেইল্ড হাপোথিসিস’ সেটা বহুভাবেই প্রমাণ করা যায়, এবং হয়েছে। যেমন বিখ্যাত পদার্থবিদ ভিক্টর স্টেঙ্গরের এই বইটি আপনি দেখতে পারেন –
God: The Failed Hypothesis – How Science Shows That God Does Not Exist
এবার মানা, না মানা আপনার ব্যাপার।