(১)
রীণাঃ
অপরাহ্নের ভাতঘুমে দশ বছর বাদে আবার রীণার দুচোখে আমার চোখ। চোরাবালির দশবছরে ডিগ্রী-চাকরী-বিবাহ-সন্তানের মধ্যগ্রীষ্মে দক্ষিনা বাতাস।
-তোমাকে দেখতে চাই
ছুঁতে চাইনা-শুতে চাইনা-তোমার নিঃশ্বাসে অনুভব করতে চাই আমার কৈশোরের ধুকপুকানির ধারাপাত!
সহসা মাঘ মাসের কুয়াশায় দীঘল দীঘির তালগাছে খসে খসে আওয়াজে ধ্বনিত হল
-তুমি আমাকে সত্যিই চেয়েছিলে? না নিজেকেই খুঁজেছ সারাজীবন?
(২)
বাবলুঃ
সবে তখন একটা ঘর উঠেছে-চারিদিকে অনেক খোলা জমি। ক্লাশ ওয়ানে পড়ি-গ্রীষ্ণের দুপুরে খেলা ভেঙে যখন ফিরলাম -বেলা একটা।
ঢুকতেই লাঠি নিয়ে বাবার তাড়া-আমি ছুটছি-বৃত্তাকারে। চারিদিকে জমি। সেখান থেকে মাঠ, নদী। সাত সমুদ্দর।
“শাট-আপ, টাইম আউট”
বাবলুর মায়ের চিৎকারে শনিবারের বাঙালী ভাতঘুম ভাঙল বিকেল পাঁচটা। বানলুটা ঘরের কর্নারে দাঁড়িয়ে কাঁপছে।
“তোমার ছেলে এবারও বি-ছেলেকে এসাইনমেন্ট না করিয়ে আরো লেখালেখি কর—”
বাবলুর মাথার ওপর জানালা-পাশেই দরজা খোলা–তুই ছোট বাবলু-রান-দরজা ডিঙিয়ে, মাঠ পেরিয়ে—
বাবলু জানালার বাইরে স্কাই স্ক্রাপারগুলোর দিকে ফেল ফেল করে তাকিয়ে রইল।
(৩)
অপর্ণা
চোখ তুলতেই দেখলাম অপর্ণা আমার দিকে শ্যেন দৃষ্টিতে তাকিয়ে-
ছিপ ফেলে মাছের প্রতীক্ষায় বসে থাকা দুচোখ।
লজ্জায় মুখ ঘুরিয়ে দিলাম নীলের দিকে। এখন ওর স্বামী। অথবা আমার পুরাতন বন্ধু।
তিমির মতন মাথা ডুবিয়ে মাওয়িস্ট থেকে ওয়ালস্ট্রীট-বাঙালীর আড্ডা। অথবা একই সাথে রবীন্দ্রনাথ, নারায়ন মুর্তি
এবং আল্লারাখা না হতে পারার মিডলাইফ ক্রাইসিস। বাঙালী পুরুষ নিজের কাছে সিঙ্কিং টাইটানিক-আনসলড প্রবলেমস।
আড্ডার মাঝে অপর্ণা ওর বরের গাল জড়িয়ে চুমু খেল। আর আমার দিকে বঙ্কিমী হাঁসি। একমনী থাপ্পর। তোমার মতন অপদার্থর চেয়ে আমার বরই ভাল!
রাত তিনটে। ক পেগ হুইস্কি পেটে গেছে ঠিক নেই-হিমশৈলের মতন ভেসে আছে শেষ চেতনাটুকু। আর্টিকের বরফে শুয়ে আছি-আশেপাশের সুন্দরী পেঙ্গুইনরা বলছে-তুমি অপদার্থ। -৫০ ডিগ্রী আর্টিক ঠান্ডায় হিমায়িত হচ্ছে এই দেহ।
অপর্ণা বরের কোলে ঘুমিয়ে-শেষ ঘুম না-তবুও ঘুম। আমি সুন্দরী পেঙ্গুইনগুলোকে বল্লাম
-তোমরাও একদিন আমার মতন হিমায়িত ফসিল হবে! তাই পদার্থ হয়ে করবো টাই বা কি?
-না আমরা সুন্দরী।
-সে ত যৌবনের কদিন-তারপরেই তোমরা জৈষ্ঠ মাসের মাটিতে পরে থাকা পাকা শুঁটকি আম। আঁটি হয়ে যাওয়ার অপেক্ষা। ফসিলিকরন।
– তো? আমের অস্তিত্ত্ব গাছে, না স্বাদে না আঁটিতে?
-স্বাদে!
ভাসিতে থাকা হিমশৈল চেতনার মৃত্যু হইল।
@বিপ্লবদা,
অস্তিত্ব বোধহয় স্বাদেই।আর স্বাদটা ব্যক্তিনির্ভর।আমিত্ববিহীন বাস্তবতা বাস্তব ,কিন্তু বোধ হয় তা অর্থহীন। :-))
@বিপ্লবদা,
ধন্যবাদ ছো্ট গল্পগুলোর লিংক দেবার জন্য।গল্পগুলো আসলেই আপনার অন্যান্য লেখার মতই সরস।
@ বন্যা,
বাহ! বানান নিয়ে বকবকানিতে বহু বছর পরে বন্যার দেখা মিললো। 😀
তুমি লিখতে চাচ্ছো, আর আমার ভয়ে লিখছো না, এটা জানলে মুক্তমনার পাঠকেরা আমাকেই জরিমানাসহ জেলখানায় পুরে দেবে। 🙁
চাবুকের মত ধারালো সেই সব লেখা দারুণভাবে মিস করি আমি।
@ফরিদ আহমেদ,
আপনি মিস করেন, আর আমি তো ওনার লাইভ কোন লেখাই দেখলাম না।
@ফরিদ আহমেদ,
১০০% সহমত। আবার কবে যে আমরা বন্যার সহজ সরল বাংলা ভাষায় কঠিন জটিল বিষয়গুলো পড়তে পারব কে জানে?
আর আমাদের জনাব ফরিদ আহমেদ কম যান কি-সে? সম্প্রতি ছোট গল্প থেকে শুরু করে ” প্রান ও বুদ্ধি মত্তার খোঁজে “বইটি পড়লে বুঝা যায় ওনি বাংলা ভাষায় কি পরিমান ভাষা দখল করে আছেন।যেমন অভিজিত বলেন,ফরিদিয় লেখা ।
ভালো থা কুন।
মামুন।
“মহাবিশ্বে” শব্দটি বাদ গেছে।
ফরিদ ভাই, ডরাইলাম। কয়দিন ধইরা ভাবতেসিলাম আবার লিখাটিখা শুরু করুম কিনা। কিন্তু বানান নিয়া আপনের বকাবকি দেইখা রীতিমত ভয় পেয়ে গেলাম। আমার বানানের যা ছিরি, লিখলে না জানি আমারে জরিমানাসহ এক্সপেল করা হয় মুক্তমনা থেকে 🙂
@বন্যা আহমেদ,
বানানের একটু ভয় থাকা ভাল-না হলে লেখার হাল আরো খারাপ হবে। কেও বকাঝকা না করলে আরো ছড়াবে। ফরিদকে সেই জন্যে ধন্যবাদই দেওয়া উচিত।
গল্প তিনটা যাউও বুঝার চেষ্টা নিচ্ছিলাম কিন্ত বিপ্লবদার শানে-নুযুল পেয়ে মনে হল কিছুই বুঝিনাই।হুম…..গুরু-বিদ্যা বুঝা এত সহজ না।
তবে
‘আড্ডার মাঝে অপর্ণা ওর বরের গাল জড়িয়ে চুমু খেল। আর আমার দিকে বঙ্কিমী হাঁসি। একমনী থাপ্পর। তোমার মতন অপদার্থর চেয়ে আমার বরই ভাল!’
এই লাইনগুলো জাক্কাস(জাক্কাস মানে জিগায়েন না,আমি নিজেও জানিনা।) হইছে।
গুরুর গল্প মনে হয় এই প্রথম পড়লাম।আরো থাকলে ছাড়ুন অথবা লিংক দিন।
@হেলাল,
“গল্প তিনটা যাউও বুঝার চেষ্টা নিচ্ছিলাম কিন্ত বিপ্লবদার শানে-নুযুল পেয়ে মনে হল কিছুই বুঝিনাই।হুম…..গুরু-বিদ্যা বুঝা এত সহজ না”
🙂 :-)) 😀 :laugh: :pissedoff:
ভাইরে হার্ট ব্লক খায়া যাবার দশা!! :laugh:
@হেলাল,
আমি অনুগল্প কিছু লিখি নি। ছোট গল্প ৭-৮ টা লিখেছি। এই লিংকে দেখতে পার। এগুলো কোন এক্সপেরিমেন্টাল লেখা না।
[১]http://biplabpal2000.googlepages.com/Cleo_Anand.pdf
[২]http://biplabpal2000.googlepages.com/customer.pdf
[৩]http://biplabpal2000.googlepages.com/Mahanayak.pdf
[৪]http://biplabpal2000.googlepages.com/Divorcee.pdf
তিনটি মাত্র ‘অণু’ গল্পে মাত্রাতিরিক্ত বানান ভুলের ভারে ভারাক্রান্ত বাংলা ভাষার ভবলীলাও সেই সঙ্গে সাঙ্গ হইল। :-))
@ফরিদ, ভাইয়া
বাম্বুটা বেশি বড় হয়া গেল না? 😀
এমনিতেও কিছুই বুঝি নাই। আমার মনে হয় এইগুলান বুঝবার মতন বয়স হয় নাই। :-))
@তানভী,
মেরেছে। এই হাল হবে ভাবি নাই।
প্রথম গল্পটা একটি মৌলিক প্রশ্ন নিয়ে-মানুষের নিজের জীবনে প্রেম নিয়ে যে হতাশা আছে, তার মূল কারণ কি?
দ্বিতীয়টা-পরিবর্তিত সময় নিয়ে। বাল্যকাল থেকে হারিয়ে যাচ্ছে মাঠ-নদী-প্রকৃতি। পালানোর স্পেসটুকু মানুষের জীবনে ভীষন ভাবে দরকার-সেটাই উবে যাচ্ছে কোথায়
তৃতীয়টা একটা দার্শনিক প্রশ্ন নিয়ে। মানব অস্তিত্বের সংজ্ঞা কি? তা কি শুধু চেতনায়?
@বিপ্লব পাল,
ভাইয়া
২- আমি নিজেও ছোট বেলায় নদী পাইনি ,ঘুড়ি ওড়াই নি। কিন্তু তবুও আমি অনেক পেয়েছি। খোলা মাঠ পেয়েছি,ইচ্ছামত ছুটেছি,রেল লাইন ধরে হেটেছি।
আমার প্রজন্মেরও অনেকে এসব পায়নি। ভবিষ্যত প্রজন্মতো কিছুই পাবেনা। এ দায় আমরা কি ভাবে নেব? তারা কি আমাদের চরমভাবে দায়ি করবেনা,যেখানে আমরা আমাদের পিতা মাতাকেই এখন দায়ি করি? তাদের আমরা কি দেব?
৩- এই প্রশ্ন আমি নিজেও করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু গুছিয়ে লিখতে পারছিলাম না।
মানব অস্তিত্বের সংজ্ঞা কি? এর প্রয়োজনই বা কি? মানবের উদ্দেশ্যই বা কি? আমরা কি করছি? আমাদের আসলে কি করা উচিৎ?
প্রায়ই আমার এ জীবনকে অর্থহীন মনে হয়।আসলে জীবনের অর্থ কি? অথবা জীবনের কি অর্থ করা উচিৎ?
আমরা কি চরম ভাবে অস্তিত্বহীন নই? আমাদের অনর্থক অস্তিত্বই কি আমদেরকে নিজের কাছে অস্তিত্বহীন করে তুলছেনা?
বেশি জটিল করে ফেললাম নাতো? 🙂
@ফরিদ,
হ্যা, অনেক বানান ভুল ছিল। এবার ঠিক করলাম, তাও কিছু ভুল থাকতে পারে।
কবিতা আর গল্পের মধ্যে ফর্মের চেষ্ঠা করছি। তাই গদ্যের ভাষাশৈলী ব্যাবহার করি নি। ফর্ম বিহীন সাহিত্যের চেষ্ঠা। সব চেষ্ঠাই সফল হবে, তা আশা করা ঠিক না। তবুও চেষ্ঠা করা উচিত।
@বিপ্লব পাল,
খোঁচাটা শুধু বানান নিয়ে ছিল, ভাষাশৈলী নিয়ে নয়। ভাষাশৈলী নিয়ে যে কোন ধরনের নীরিক্ষাতেই আমার কোন আপত্তি নেই, ফর্ম বিহীন সাহিত্যেও নয়। এতে ভাষার ক্ষতিতো হয়ই না বরং লাভ। কিন্তু, বেশি পরিমাণে বানান ভুল চোখকে পীড়িত করে।
তুমি কীভাবে ঝড়ের মত লেখো সেটা জানি বলেই খোঁচাটা দিয়েছি। পোস্ট করার আগে অন্তত একবার দেখে নিও। সেক্ষেত্রে বানান ভুল বা টাইপোগুলোকে অনেকখানিই কমিয়ে আনতে পারবে।
হুঁ, সব বানান এখনো ঠিক হয়নি। তারপরও চেষ্টা করার জন্য ধন্যবাদ। 🙂