তুমি এসেছিলে আগুনের লেলিহান হয়ে
সে-ই আগুনের লেলিহান ছড়িয়ে গেছে
গ্রাম থেকে গ্রামে
শহর থেকে শহরে।

তোমার হত্যার রক্ত দাবালনের মতো ছড়িয়ে গেছে সবখানে
যেখানে সদা বিরাজমান
তোমার চিন্তার দর্শন, ইতিহাসের দর্শন
বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানের দর্শন।
সবার জীবন এবং সবকিছুই ক্ষণশ্বর
এই আছি তো একটু পর নাই
সে-টা মহাবিশ্বের যা-কিছুই হোক না কেন…?

তুমি কিন্তু তা অল্প বয়সেই রপ্ত করেছিলে
তাই-তো মৃত্যু নিয়ে তোমার কোন ভয় ছিল না…
সে-ই খুব অল্প বয়স থেকেই পড়া শুরু করেছিলে
জ্ঞানের,আলোকিত মানুষ হওয়ার জীবনের বই
এবং পড়েছিলে বিজ্ঞানের ও দর্শনের ইতিহাস
সাহিত্য ও ধর্মের ইতিহাস তথা মানুষের সভ্যতার ইতিহাস,
সক্রেটিস থেকে এলান টুরিং,
হাইপেশিয়া থেকে চার্লস ডারউইন,
নিকোলাস কোপার্নিকাস, গ্যালোলিও গ্যালিলি,কার্ল সেগান থেকে স্টিফেন হকিং,
আরজ আলী মাতুব্বর থেকে আহমেদ শরীফ, হুমায়ুন আজাদ,
অজয় রায় থেকে অগ্রজব্রতী অভিজিৎ রায়…
এবং আরো কত অ-জানা জ্ঞানী-মহিয়সীদের নাম না জানা লেখা ও কাব্য…

জ্ঞানের ও বিজ্ঞানের ইতিহাসে
কত শত-কোটি জ্ঞানের আলোর সহযাত্রীদের
আঁধারের হিংস্র মানুষের হাতে
নির্মম অন্যায়,অত্যাচারিত,নির্যাতিত হতে হয়েছে
সে-ই সভ্যতার আদিকাল থেকে-ই
এবং আলোর যাত্রীদের-কে
আগুনে পুড়ে হত্যা থেকে শুরু করে চুরি -চাপাতি দিয়ে হত্যা করেছে…
তুমি জেনে-শুনেই জ্ঞানের বিষ পান করেছিলে
তাই-তো তা নিয়ে ছিলে তুমি নির্লিপ্ত, নির্লোভ
নিরহংকার…

জীবন বিলিয়ে দিয়ে গেছো অনাগত ভবিষ্যতের তরে।
যারা একদিন তোমাকে নিয়ে অন্য সুন্দর জীবনের গান রচনা করবে
সে-ই গানের ভেলায় তুমি চিরদিন সুর হয়ে বাজবে
তোমারই চিন্তার ও দর্শনের প্রতিধ্বণি হয়ে।
তুমি বিজ্ঞানের ইতিহাসের সকল
ঐতিহাসিক মানুষের ক্ষণজন্মা উত্তরসূরী।

১২-ই মে তাই বার বার ফিরে আসে ও আসবে
এবং
অনাগত ভবিষ্যৎ তোমাকে স্মরণ করে যাবে।

তুমি মৃত হয়েও তাই অ-মৃত
আমি,আমরা ও আমাদের সকলের কাছে
তথা তাবৎ মানবাধিকার ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের মানব ইতিহাসে।

লিখেছেন: বকশালিক