শনিবার (১৯ শে জুন, ২০১৬) রাত দুইটায় ঢাকার খিলগাও এ মেড়াদিয়া বাশপট্টি এলাকায় কিছুদিন আগে ডিএমপির ধরিয়ে দেবার জন্য পুরষ্কার ঘোষিত ছয় জঙ্গির মধ্যে একজন শরীফুল ওরফে সাকিব গোয়েন্দা পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছে। অভিজিৎ রায়ের মামলার আসামি থাকার বিষয়টি সহ আনসার বাংলা সদস্য শরীফের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) দক্ষিণ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাশরুকুর রহমান খালেদ। খিলগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আল মামুন একই তথ্য নিশ্চিত করার পাশাপাশি জানিয়েছেন- “শনিবার রাত ২টার দিকে খিলগাঁও মেড়াদিয়া বাঁশপট্টি এলাকায় গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে ‘সন্ত্রাসীদের’ গোলাগুলি হলে ওই যুবক গুলিবিদ্ধ হন। পরে রাত ৩টার দিকে পুলিশ ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”।
ডিএমপি থেকে আনসার বাংলার ছয় জঙ্গির যে তালিকা দেওয়া হয়েছিলো তার মধ্যে শরিফুল ওরফে সাকিব ওরফে শরিফ ওরফে সালেহ ওরফে আরিফ ওরফে হাদী-১ এবং সেলিম ওরফে ইকবাল ওরফে মামুন ওরফে হাদী-২ এর জন্য পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিলো।
এরাই যে আসল হত্যাকারী, কোন ‘জজমিয়া’ নয় তা আমরা কিভাবে জানব? পুলিশ যে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য কিছু ছিঁচকে অপরাধীকে ক্রসফায়ারে দিচ্ছে না তার নিশ্চয়তা কি? যদি এরাই আসল অপরাধী হয়, তাহলে এদেরকে কোর্টে তুলে জেরা করলে এর পেছনে আর কারা আছে, গুপ্তহত্যার পরিকল্পনাকারী কারা, কারা এদের অর্থের যোগান দেয় ইত্যাদি প্রশ্নের সঠিক উত্তর পাওয়া যেত। তাছাড়া ক্রসফায়ার কোনমতেই সমর্থনযোগ্য নয়। এই বেআইনী কাজের মাধ্যমে অনেক নিরাপরাধ লোককে মেরে ফেললেও তা প্রতিরোধ করা যাবে না। কোন ক্ষমতাশালীর ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার হয়ে আপনি বা আমিও ক্রসফায়ারে প্রাণ হারাতে পারি।
এরকম ভয়াবহ খুনিকে বিচার না করেই পুলিশের হাতে গুলি করিয়ে মেরে ফেলার উদ্দেশ্য কী? এদের গ্রেপ্তার করে আইনি প্রক্রিয়ায় জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে তথ্য বের না করে, আইনের শাসনের আওতায় বিচার না করে সরকারী বাহিনির হাতে গুলি করিয়ে মেরে ফেলে দেওয়া কোনো সুসংবাদ নয়। সরকার কী লুকাতে চাইছে এরকম মারাত্মক খুনিকে মেরে ফেলে দিয়ে?
বাংলাদেশের সবচেয়ে সরল সহজ নিরীহ নাগরিকও আপনার মত একই প্রশ্ন তুলবে। কি লুকাচ্ছে সরকার? নিজেদের অপকর্ম নাকি? কিসের ধাপ্পা দেওয়া হচ্ছে? ঘন ঘন ক্রস ফায়ারে মেরে অভিযুক্ত ওইসব সন্ত্রাসী জল্লাদদের মুখ চিরতরে লাগাতার বন্ধ করেই যাচ্ছে বাংলাদেশের বিভিন্ন বাহিনী। দুর্বল সব গল্প ফেঁদেই যাচ্ছে তারা। কবে হবে ন্যায় বিচার? কবে হবে নাগরিকের অধিকার রক্ষা? বাংলাদেশের নাগরিকরাই যে দেশের মালিক আর সরকার এবং সরকারের বেতন নেওয়া সবাই যে নাগরিকের অনুগত সেবক এটা যেন কেউ জানেই না।