লেখক: জুয়েল রানা

Avijit

বাংলাদেশে কবি-লেখকগণ কে উফশী জাতের বলা যতে পারে। তাদের উৎপাদন এতোই ভাল যে,এই উৎপাদন প্রদর্শন করার জন্য একটি মেলার আয়োজন করতে হয় ! সেই মেলা আবার একদিন দুই দিন নয়,ম্যারাথন সময়ের জন্য, পুরা এক মাসের। এই একমাস তারা বই লেখা ও বিপণনের জন্য এতোই ব্যস্ত থাকেন যে অন্য দিকে তাকানোর সময় পান না। শুধু চারিদিকে তাদের কাতর আকুতি ভাসতে থাকে, প্লীইইজ, একটি হলেও বই কিনুন ! আমাদের করে খাওয়ার সুযোগ দিন !

কাক মারা গেলে সব কাক এক জায়গায় জড়ো হয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে দেয়, মটর শ্রমিকের কোন শ্রমিক মারা গেলে তারা যানবাহন বন্ধ করে দেন,ডাক্তারদের হেনস্তা করলে তারা রোগী দেখা বন্ধ করে দেন ! কিন্ত একজন লেখক কে খোলা আম রাস্তায় কুপিয়ে মেরে ফেলা হল ! একজন মানুষকে শুধুমাত্র লেখার জন্য হত্যা করা হল এইদিনে কিন্ত আমাদের উচ্চ ফলনশীল লেখকদের মুখ থেকে টুঁ শদটি বেরুলো না ! একবছর পেরিয়ে গেল কোন বিচার হল না,তবুও কোন প্রতিবাদ দেখালেন না ! পুরো বইমেলা জুড়ে অভিজিৎ রায়কে ভুলে যাবার কী প্রাণপণ চেষ্টা ! বাংলা একাডেমির কী শান্তিপ্রিয়তার উৎকট নাটক !

সরকারের না হয় হাওয়া বুঝে রাজনীতি করতে হয়, তাই তারা বিচার করেন না, মোল্লারা না হয় রুটি-রুজির সমস্যা হতে পারে বলে বিজ্ঞানমনস্কতাকে ঠেকিয়ে দিতে চান, পুলিশের না হয় চাপ আছে তাই খুনী ধরতে পারেন না, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের না হয় টাইম নাই, তাই অভিজিৎ দা’র খুন হওয়া জায়গাটি ময়লার ভাগাড় হয়ে পড়ে থাকে ! কিন্ত হে লেখককূল ! আপনাদের কী সমস্যা? আপনারা কেন আপনাদেরই ভাই,আপনাদেরই একজন স্বগোত্রীয়,আপনাদের মত কলম যোদ্ধা কে ভুলে থাকতে চান? কেন একজন দীপন কে আপনার লেখায়, আপনার স্টলে স্মরণ করেন না ? প্রকাশক যদি এভাবে নিহত হতে থাকে তবে আপনার বই ছাপাবে কে? প্রকাশকদের কে আপনাদের লাগবে না ? কেন কথা বলেন না? বোধের অভাব না কলমের ? কলমের অভাব হলে বলুন কিনে দিই কিন্ত বোধের অভাব হলে আপনি একটা ডানাবিহীন পাখি ! আপনাকেও শ্বাপদ খেয়ে ফেলবে একদিন ! উড়তে পারবেন না ! বাঁচতে পারবেন না !

২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬