কলকাতায় সাদা পোষাকে এক নারী এসেছিলেন অসহায়দের উদ্ধার করে স্বর্গে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি নিয়ে। সেবার নাম করে বিশ্ব মাতিয়ে নোবেল পুরস্কার পেয়ে গিয়েছিলেন, এমনই এক মহামানব তিনি।
তার নাম ´মাদার তেরেসা´।
গোঁড়া খ্রিস্টধর্মবলাম্বীরা যিশুর অনেক অলৌকিক ক্ষমতায় বিশ্বাস করে। এমনই ক্ষমতা ছিল যিশুর তিনি পানির উপর হাটতে পারতেন, জন্মান্ধকে সুস্থ করে দিতেন, তার দেয়া সামান্য খাবার অসংখ্য মানুষের উদর পূর্তি করতে পারত, প্রচুর পরিমাণে মাছ ধরে ফেলতে পারতেন, তার ছোয়ায় মৃত মানুষ জীবিত হয়ে যেত ইত্যাদি। তা পারবেন-ই না কেন, তিনি যে ঈশ্বর পুত্র! গাঁজাখুরি বিশ্বাসের মহাপ্রতিযোগিতা আপনাকে বিভ্রান্ত করে ফেলবে যদি আপনি ধর্ম নিয়ে বসেন, সেটা যেকোনো ধর্মই হোক না কেন।
যাই হোক, এখন ব্যাপার হল মাদার তেরেসা! উনিও নাকি মিরাকল ঘটিয়ে দিয়েছিলেন। প্রথম মিরাকল – তিনি স্থানীয় এক লোককে নাকি সুস্থ করে দিয়েছিলেন অলৌকিক প্রক্রিয়ায়। এ দাবির হালে পানি পায় নি, তাই এখন আরেক দাবি- কোথাকার টিউমার রোগগ্রস্থ ব্রাজিলের এক লোককে অলৌকিকভাবে সুস্থ করে দিয়েছিলেন। দীর্ঘদিন থেকে জল্পনা-কল্পনার পর পোপ এবার তাকে সেইন্টহুড দিবেন। ভ্যাটিকান জানিয়েছে সেইন্টহুড পাওয়ার জন্য যে দ্বিতীয় অলৌকিক ঘটনাটির দরকার ছিল, তেরেসার ক্ষেত্রে তা এখন সত্য বলে তারা প্রমাণ পেয়েছে। পোপ ফ্রান্সিসকে অনেকে বেশ প্রগতিশীল বলে প্রচার করেছিলেন। এবার তারা কী বলবেন জানিনা।
আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের বদৌলতে কোটি-কোটি মানুষ সুস্থ হয়ে উঠছে। কোথায়, চিকিৎসাবিজ্ঞানিদের কেউ তো এ ধরণের সেইন্টহুড চেয়ে বসেননি। আমি যখন খুব ছোট, তখন কিছু এলাকায় ঘুরেছি, পুরনো বাড়ি-ঘরের লক্ষণ আছে কিন্তু মানুষ নাই। পরে জেনেছি, এরা কলেরার মহামারিতে মারা গিয়েছিল। মাত্র দুই কি তিন দশক আগেও বিভিন্ন মহামারীর ভয় মানুষকে আতঙ্কিত করত। আমরা শুনতাম, যার হয় যক্ষা, তার নেই রক্ষা। অথচ যক্ষায় এখন কেউ মারা যায় এমন খবর বিরল। শিশুমৃত্যু, মাতৃমৃত্যুর হার ছিল ভয়ানক। আজ এ অবস্থা থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি যা শুধুমাত্র আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের অবদান। কেউ আকাশ থেকে কোনো জ্ঞান আমাদের দিয়ে যায়নি। অসুস্থ মানুষের দরকার সুস্থতা, আর এক্ষেত্রে মিরাকল-পানিপড়া এগুলো কোনোদিনই কার্যকর বলে প্রমাণিত হয় নি।
মাদার তেরেসা জন্মনিয়ন্ত্রণের ঘোর বিরোধী ছিলেন। আর এই ´মহিয়সী´ নারী গর্ভপাতেরও বিরোধী ছিলেন। তার মতে জন্মনিরোধ ও গর্ভপাত নাকি নাকি “the greatest destroyer of peace”। নারীর মুক্তি নয়, তাকে এক নিকষ অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। তার সকল সেবামূলক কার্যকলাপের মান ও উদ্দেশ্য নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে। নিচে খ্রিস্টফার হিচেন্সের করা একটি ছোট ডকুমেন্টারি দেয়া হল
আমরা বড্ড আবেগপ্রবণ জাতি এবং একই সাথে বিকারগ্রস্থ। কেউ মানবতার জন্য কোনো উপকার করেছিলেন বলে শুনলেই নির্বিচারে তাকে আমরা পূজা দেয়া শুরু করি। আবার অসংখ্য মানুষ আমাদের চোখের সামনে মরে যেতে দেখলেও আমাদের বিবেকে এতটুকু নাড়া দেয় না, খুনি আর বর্বরদের দেখেশোনে সমর্থন দেই। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় এজন্যই আমাদের সাধারণ মানুষকে এত বেশি ধোঁকা দেয়া সম্ভব হয়েছে। আমাদের সকল বিকারগ্রস্থতার অবসান ঘটুক।
ঝাড়ফুঁক জাদুটোনা অথবা অলৌকিকত্বের প্রতিষ্ঠাকল্পে মহা ক্ষমতাধরদের এই খেল নতুন নয় মোটেও। এই গ্রহের বেশিরভাগ মানুষই তো সহজ সরল শান্তিপ্রিয় আবেগী মানুষ। সারল্যকে পুঁজি করে চতুর ভন্ড ক্ষমতালোভীরা আর তাদের সহযোগী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো নিরন্তর ধাপ্পা দিয়ে যাচ্ছে এদের। সাধারণের কাছে সেই সবই যেন খুব স্বাভাবিক জীবনের অংশ। অন্য কিছু ভাবতে বেজায় আলস্য তাদের। এ যেন শীতে অনেকটা লেপের তলা থেকে গলা বের না করে শুধু শুনবার মত ব্যপার। মুক্তচিন্তক আপনার মত মানুষেরা যেই বলবেন দেখেশুনেএকটু অন্যকিছু আবিস্কার করবার কথা ভাবতে, তক্ষুনি এদের বিরক্তি উঠে যাবে চরমে। নানান অজুহাত দেখিয়ে লেপের তলাতেই থেকে যেতে চাইবে তারা। ভাবনার সময় কই?
দৃষ্টি আকর্ষণমূলক প্রতিবাদী লেখাটির জন্য ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ কাজীদা
@ সৈকত চৌধুরী ,
মাদার তেরেসা গর্ভপাতের বিপক্ষে ছিলেন । তার যুক্তি ছিল , – ’যে মা নিজের সন্তানকে হত্যা করে সে কি ভাবে বিশ্ব শান্তির পক্ষে সহায়ক হবে ? ‘ । কথাটা খুব ভুল কি ? কেউ কেউ শুধুমাত্র জন্মনিয়ন্ত্রনের উপায় হিসাবে গর্ভপাতকে ব্যবহার করে । সেটা কি সমর্থন যোগ্য ? অবশ্য অবাঞ্ছিত মাতৃত্ব এর কথা আলাদা ।
মাদার যদি সেবার সুযোগে তার ধর্ম প্রচার করেও তাহলেও সেটা খুব নিন্দনীয় কি ? সেবার প্রয়োজন হবে না এখনো তেমন রাষ্ট্র আমরা তৈরি করতে পারি নি । যে আর্ত রাস্থায় পড়েছিল সে চায় বেঁচে থাকতে তা সে যে কোনও শর্তে হোক । আমি যদি তার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে না দিতে পারি তা হলে আমার কি অধিকার আছে অন্য কি শর্তে তাকে সাহায্য করছে তার হিসাব চাওয়া ?
সেন্ট হুড এর বিষয়টা বুজরুকি মাত্র ।
হ্যা, কথাটি মারাত্মক ভুল। কেউ স্বেচ্ছায় গর্ভপাত ঘটাতে চায় না। এটা কোনো বিনোদন মূলক কাজ নয়। গর্ভপাতে সব সময় ঝুঁকি থাকে। একজন মাকে অনাকাঙ্খিত সন্তান বহন করতে বাধ্য করা, চাপ দেয়া অত্যন্ত অমানবিক। মায়ের জীবন সবার আগে, তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে যদি সন্তান নিতে হয় তবে সেটা উভয়ের জন্যই বিপদের কারণ। তাই অন্তত একটা পর্যায় পর্যন্ত গর্ভপাতকে এলাও করা উচিত। গর্ভপাতকে সন্তান হত্যার সাথে তুলনা করে একে এক্কেরে বিশ্বশান্তির সহায়ক কিনা সে প্রশ্ন তোলা হাস্যকর রকমের বাতুলতা। নিজ বিশ্বাসের সমর্থনে তিনি নিজেই যেখানে বিয়ে করেন নি, সন্তান নেন নি তখন এ ধরণের কথা বার্তা আজগুবিও বঠে।
আমি কিন্তু লিখেছি যে অবাঞ্চিত মাতৃত্বের কথা আলাদা। আমি সুধু তাদের কথা বলেছি যারা এই পদ্ধতিকে জন্ম নিয়ন্ত্রনের উপায় হিসাবে ব্যবহার করে। অনেকে করে, কারণ তা না হলে একাধিক বার এইটা করতে হয় কেন ? যারা এটা বার বার করে তাদের মানসিকতা কেমন ? তাদের অনুভূতিগুলো কি ভোতা হয়ে যায় না ?
বিশ্বশান্তির কথাটা অবস্য বাড়াবাড়ি।
দারুন লিখেছেন দাদা, কি বলে যে ধন্যবাদ দেব আপনাকে , এই গোঁড়া খ্রিষ্টান রাই জোয়ান অফ আর্ক এর
মত বীরাঙ্গনা দের জ্যান্ত পুড়িয়ে মেরেছিল, গ্যালিলিও র মত বিজ্ঞানী দের বন্দি করেছিল যাবজ্জীবন।
এই গোঁড়ামির অস্তিত্ব আজকের যুগ বিশ্বাস করে না , আসুন সবাই মিলে ধবংস করে ফেলি এই সব কীটদের ।
১৯৩৯ সালে হিটলারও নমিনেশন পেয়েছিল নোবেল পুরস্কারে|
তার মত চ্যারিটি কাজ বহু মানুষ করছে যাদেরকে মানুষ চিনে না| ধর্মের ঝান্ডাটা তার হাতে না থাকলে তিনিও হাই লাইটে আসতেন না|
একমত। তাকে ঘিরে যে নোংরা রাজনীতি হয়েছে সেটা খুবই ভয়াবহ ছিল। ধন্যবাদ।
মাদার তেরেসা যে সেবার আড়ালে খ্রিস্টধর্ম প্রচার করতেন এবিষয়ে কোনো অকাট্য প্রমান আছে কি ? থাকলে দয়া করে দেবেন | প্রমান বলতে আমি মিসনারিজ অফ চ্যারিটির দলিল দস্তাবেজের কথা বলছি | সেখানে কি লেখা আছে যে মাদার তেরেসা খ্রিস্টধর্ম প্রচারের জন্য মানব সেবা করত ?
আর যদি ধরে নেই খ্রিস্টধর্ম প্রচারের জন্যই সে মানবসেবা করত তো তাতে খারাপটা কি হয়েছে ? পৃথিবীর আর কোনো ধর্ম তো কখনো মানবসেবা ভুলেও করে না | মুক্তমনারাও করে না | তারা শুধু যারা মানবসেবা করে তাদের দোষ ধরে |
আমার মতে তেরেসাকে নোবেল দেয়া হয়েছে তার সেবার জন্য , খ্রিস্টধর্ম প্রচারের জন্য নয় | আর সেন্ট হুড দেয়া হচ্ছে তার অলৌকিক কাজের, জন্য খ্রিস্টধর্ম প্রচারের জন্য নয় |
আপনি হিচেন্সের ডকুমেন্টারিটা দেখেন।
ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে কেউ যদি মানব সেবা করে তবে সেটা প্রতারণা। মানুষের সেবা করার পেছনে ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য থাকতে হবে কেন? খ্রিস্ট ধর্ম প্রচারকরা মানুষের অসহায়ত্বকে সম্বল করে বিশ্বের হেন কোনো জায়গা নেই যেখানে গিয়ে ঢুকে নি। কোনো দুর্যোগ হলেই উনারা বাইবেল নিয়ে হাজির।আদিবাসীদের নিজস্ব সংস্কৃতি এদের জন্যই হুমকির মুখে পড়ে গেছে।
মুক্তমনারা নির্দিষ্ট কোনো গোষ্ঠী না, বিচ্ছিন্ন ভাবে এমনকি দলগতভাবেও তাদের মানব সেবার উদাহরণ রয়েছে। মানুষকে কুসংস্কার মুক্ত করার চেষ্টা, সংকীর্ণ মন-মানসিকতা দূর করা, প্রগতিশীল করার চেষ্টা অনেক বড় ধরণের মানব সেবা। জীবনই দিয়ে দিচ্ছে মুক্তমনারা, আর আপনার চোখে তারা কেবল দোষ ধরে।
লেখায় উল্লেখ করেছি, তেরেসা জন্মনিয়ন্ত্রণ, গর্ভপাতের বিরোধী ছিলেন। যাই হোক, তেরেসা কোন উদ্দেশ্যে মানব সেবা করতেন, আসলেই মানব সেবা করতেন নাকি তাদের আজাব দিতেন, তিনি কি অসংখ্য দরিদ্র মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, মানুষের অসহায়ত্বকে তিনি কি ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেছিলেন ইত্যাদি অনেক প্রশ্ন আছে তাকে ঘিরে। এগুলোর মীমাংসা করা এই লেখার উদ্দেশ্য নয়। আপনি ব্যক্তিগতভাবে সেসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে পারেন। এ লেখা তার উপর অলৌকিকতা আরোপ করা ও তাকে সেইন্ট হুড দেয়া হচ্ছে এরকম ঘোষণার প্রতিক্রিয়া।
হিচেন্সের ডকুমেন্টারী দেখতে হবে কেন যখন আমার কাছে চারিটির নিজস্ব বয়ান আছে ? চ্যারিটি স্পষ্ট জানিয়ে দিচ্ছে যে সেবার আড়ালে ধর্মান্তর মোটেই হয় না | লিঙ্কটা দয়া করে দেখেন :
মাদার তেরেসা কখনই ধর্মান্তর করেননি
এইবার তো বলবেন যে চ্যারিটি যেখানে নিজেই জানাচ্ছে যে সেবার আড়ালে ধর্মান্তর হয় না সেখানে আর কোনো কথা থাকতে পারে না | ভালো কথা আপনাদের অভিযোগটা অনেকটা মোহন ভাগবতের মত শোনাচ্ছে |
চ্যারিটির নিজস্ব বয়ান আছে যে তিনি ধর্মান্তর করেন নি তাই সেটা আমাকে গ্রহণ করতে হবে আর আপনি ডকুমেন্টারি দেখবেন না কিছুই খুঁজবেন না। আপনি বেশ যুক্তিবাদী, আপনাকে ধন্যবাদ।
দাদা ডকুমেন্টারী দেখলাম | গোটা ফিল্মটার একটাই কথা মাদার টেরিজা গরিবদের যথেষ্ট সেবা করে না | তাদেরকে প্রপার কেয়ার দেয় না | তাদের তিলে তিলে মরতে দেয় | এখানে একটা কথা আছে যা হিচেন্স বলে নি | টেরিজা হসপিস চালায় , হাসপাতাল নয় | হাসপাতাল আর হসপিসের পার্থক্য হলো প্রথমটা চিকিত্সা করে আর দ্বিতীয়টা শুধু রুগীদের শেল্টার দেয় | মাদার টেরেজার অর্ডার হসপিস চালাতে দেয় | হাসপাতাল নয় | হিচেন্স এই দুটোর পার্থক্য করতে পারেননি |
দ্বিতীয়ত হাসপাতালের খরচা | দাদা এটা নিশ্চই বলতে হবে না যে সরকারী হাসপাতালেও বিরাট খরচা পরে | ফিল্ম্তায় একটা ১৫ বছরের বাচ্চাকে দেখানো হয়েছে যার কিডনির সমস্যা আছে | সে নাকি অপারেশন করলে ভালো হয়ে যাবে কিন্তু মাদার তাকে অপারেশন করাচ্ছেন না | দাদা কিডনি অপারেশন-এর খরচা কত ? সরকারী হাসপাতালেই কত ? নিশ্চয় বলতে হবে না | ওই টাকা কে দেবে ? টেরেজার অর্ডার দেবে না | তেরেজা তার অর্ডারের মালকিন নন | তিনি শুধু নম্রভাবে অর্ডারের নিয়ম মেনে চলেন | আর এইসব শিশুদের এই দুনিয়ায় কেউ নেই যে তাদের কিডনির অপারেশন-এর খরচা দেবে | খুবই আশ্চর্যের ব্যাপার মুক্তমনারা এইসব ব্যাপার বুঝতে পারে না |
আরো অভিযোগ লাগানো হয়েছে যে মাটিতে শোয়ানো হয়, স্টেরাইল ছুঁচ ব্যবহার হয় না ইত্যাদি |এইসব ব্যবহার করতে টাকা লাগে | কে দেবে টাকা ? কিন্তু কাদের দেবে ? যাদের এই দুনিয়ায় কেউ নেই তাদের ? দাদা আজকের দিনে মানুষ নিজের বাপ মা কে দেখে না , যে তাদের কেউ নয় তাদেরকে দেখবে ? এটা কি বিশ্বাসযোগ্য ?
আর দেখতে আর বলতে ভালো লাগছে না | মুক্তমনারা আসলে বিশ্বাস করতে চায় না যে দুনিয়াটা কি রকম কুটিল আর হিংস্র | এই হিংস্র দুনিয়াতে তবু টেরিজা এইসব অসহায় মুমূর্ষু রুগীদের কিছু সময় হলেও আরাম দেন | সেই জন্যই শুধু তাকে সন্ত আখ্যা দেয়া যেতে পারে | টেরিজা চাইলে ইউরোপ থাকতে পারতেন, আয়ার্লান্ডে নিজের দেশে থাকতে পারতেন কিন্তু তিনি আমাদের কলকাতা নামক নরকে এসে যেটুকু কাজই করেছেন, তার জন্যই তাকে ধন্যবাদ দেয়া উচিত |
তেরেসার প্রতি অতি ভক্তির কারণ কী সেটা অবোধগম্য। গরিব আর অসহায় মানুষদের নিয়ে পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি নোংরা রাজনীতি হয়েছে। এদের সর্বনাশ করতে চাইলে আর একই সাথে নাম কুড়াতে চাইলে সেবা করা শুরু করে দেন, আর কিছুই লাগবে না। আমাদের ইউনুচ্চাও কিন্তু গরিবদের শান্তি দিয়ে নোবেল প্রাইজ পেয়ে গেছেন।
তেরেসা ধর্মান্তর করেছেন কীনা এসব নিয়ে আলোচনা করার জন্য এ পোস্ট দেই নাই, এগুলো নিয়ে লেখলে এক মহাভারত হয়ে যাবে। তার উপর অভিযোগ আছে তিনি মৃত্যুপথযাত্রীদের মাথায় ভেজা কাপড় দিয়ে ব্যাপটাইজ করে স্বর্গযাত্রার পথ উন্মুক্ত করে দিতেন। রোগীদের সেবা করা একটি স্পর্শকাতর বিষয়। আপনি যথেষ্ট দক্ষ না হলে রোগীদের মৃত্যুর কারণ হতে পারেন। আপনার কাছে জীবাণুমুক্ত সূচ ব্যবহার না করাও আপত্তিকর মনে হচ্ছে না, সূচ জীবণুমুক্ত করতে ফুটানো পানি লাগে, এখানে বিশাল অংকের টাকা পয়সা লাগে না। রোগজীবাণু সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে আবার কিসের সেবা?
তাকে সেইন্ট ঘোষণা দেয়ার জন্য অলৌকিকতার ছুতো খোঁজা হচ্ছে।
এ ধরণের কথার কোনো মানে হয় না। মুক্তমনার মধ্যে আপনার মত তেরেসা ভক্ত যে নেই সেটা নিশ্চিত হলেন কিভাবে? আপনি মুক্তমনায় মন্তব্য করছেন, কেউ কেউ হয়ত আপনাকেও মুক্তমনা বলবে।
হুঁ, যেমন হেনরি কিসিঞ্জার। আবার কোনো কাজ না করেও নোবেল পেয়েছেন অনেকে যেমন, বারাক ওবামা।
আরেকটা দারুন কথা বললেন কিন্তু। উনি কাজ করলে যদি অশান্তি সৃষ্টি হত, সেটা কিন্তু ভাল হতোনা। উনি ‘কাজ’ করেননি, অতএব অশান্তি সৃষ্টি হয়নি। তার মানে, উনি কিন্তু শান্তি-ই স্থাপন করেছেন। He deserved noble prize … indeed 🙂
নোবেল প্রাইজ নিয়ে এমন বলতে নেই। বিশ্বশান্তিতে অসামান্য অবদান রাখার জন্য শুধু কিসিঞ্জারই নয় আমাদের ড: ইউনুসকেউ নোবেল দেয়া হয়েছে। যার কারণে বাংলাদেশে দারিদ্র্য এখন জাদুঘর ছাড়া আর কোথাও দেখা যায়না। :yes:
কিন্তু মহাত্না গান্ধী কিন্ত এক্ষেত্রে বিবেচনায় পড়েননি। আসলে শান্তির জন্য তার তেমন অবদান নেইত তাই। :negative:
তিনি আসলে মানুষের সেবার নামে খ্রিস্টান ধর্ম প্রচার করতেন। তবুও কেন তাঁকে নোবেল প্রাইজ দেওয়া হয়েছিল?
১৯৭৯ সালে তেরেসা শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রথম থেকেই বিতর্কিত একটা বিষয়। চরম অশান্তির সৃষ্টি করেছেন এমন অনেকেই শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন।
ভাল লাগলো
ধন্যবাদ