প্রশ্নবিদ্ধ মেধাতালিকাঃ ৩৪ তম বিসিএস পরীক্ষা , পর্ব ১
প্রশ্নবিদ্ধ মেধাতালিকাঃ ২০১৪ সালের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা, পর্ব ২
এ বছর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার পরও কতৃপক্ষ প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ অস্বীকার করে যথারীতি ভর্তির সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। কিছুদিনের মধ্যে হয়ত নতুন ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে ক্লাসও শুরু হয়ে যাবে।কিন্তু সেই ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার ফলাফলেও প্রচুর অসংগতি বিরাজমান। আসুন দেখি অসংগতিগুলো কী কী।
অসংগতি ১।মেধাক্রমে এগিয়ে থেকেও অপেক্ষামান তালিকায়, আবার পিছিয়ে থাকেও মেধাতালিকায়
অসংগতি ২। প্রাপ্ত নম্বর সমান কিন্তু মেধাক্রম ভিন্ন
অসংগতি ৩। সরকারী মেডিকেলে চান্সপ্রাপ্ত কয়েকজনের বেসরকারী মেডিকেলে আবেদন
বোঝা যাচ্ছে,মেডিকেলে ভর্তির মেধাতালিকা প্রনয়নে প্রাপ্ত নম্বরের চেয়েও কয়েকটি বিষয় সরাসরি প্রভাব ফেলে। সেগুলো হলো নগদ অর্থ ও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা। যেকারনে এই ফলাফলের কোন কিছুই বোধগম্য নয়।
ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র নিয়ে গঠিত গনতদন্ত কমিশন মনে করে প্রার্থীদের অভিভাবকদের উচ্চাকাংক্ষা, চিকিতসাপেশার বাইরে প্রশাসনিক লোকজনের ভর্তি পরীক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট হওয়া, কোচিং সেন্টারের দৌরাত্ন, সরকারে সদিচ্ছার অভাব প্রশ্ন ফাঁসের কারন। এই একটিমাত্র ব্যবসা বাংলাদেশে যে কাউকে আলাদীনের চেরাগের মত একরাতেই কোটিপতি বানিয়ে দেবে। এবার মেডিকেলে ভর্তিপ্রাপ্তরা বলে প্রশ্নের দাম ছিল ১৫ লাখ টাকা।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী-মন্ত্রী-আমলা-চেলা-চামচা কেউই দেশে চিকিতসা সেবা নেন না।তারা কিছু হলেই সিংগাপুর, ব্যংকক, লন্ডন, ভারতে দৌড়ান। নিজের দেশের চিকিতসা ব্যবস্থা ঐসব দেশের মত করতে তো পারেই না, বরং আরো কলুষিত করছে। এবার ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত একটি দেশের প্রেসিডেন্টের স্বাস্থ্যসেবা নেয়ার ছবি দেখি।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঠিক একই অভিযোগে ভারতে এবারে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ভর্তি পরীক্ষার ফল বাতিল করা হয়েছে।[১]
আর বাংলাদেশে বাতিলের আবেদন করা রিট খারিজ করা হয়েছে। [২]
ব্যাপারটা কাকতালীয় কি না জানি না। ২০০৬ সালেও এরকমভাবে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে অনেক চিৎকার চেচামেচি হয়েছিল। সেই ব্যাচের ছাত্ররা ডাক্তার হয়ে বের হয় ২০১১/২০১২ এর মধ্যে। ৩৩ তম বিসিএসের মাধ্যমে সরকার ঢালাওভাবে ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে তাদের জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে। সেই হিসেবে আজ থেকে ৫/৬ বছর পর অনুষ্টিতব্য বিসিএসের দিকে খেয়াল রাখুন। এই দেশে যখন কিছু রাঘববোয়ালের আন্ডাবাচ্চা একই ব্যাচের শিক্ষার্থী হবে তখন এসএসসি, এইচ এসসি , মেডিকেলের ভর্তির প্রশ্ন ফাঁস হবে, চাকুরীর জন্য বিশেষ কারসাজির ব্যবস্থা থাকবে। মেধাতালিকায় হবে কারচুপি।
বৃটিশ পাকিস্থানীদের তাড়িয়ে আমরা এক নব্য প্লুটোক্রেসি রাস্ট্র পেয়েছি যেখানে সবকিছু থাকবে অভিজাতদের জন্য বরাদ্দ, আর নামকাওয়াস্তে গনপ্রজাতন্ত্র।
এ থেকে মুক্তির উপায় কি?
সুত্র ১।http://time.com/3922392/aipmt-india-medical-entrance-test-canceled/
সুত্র ২।http://bangla.samakal.net/2015/09/21/163599
সুত্র ৩।মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস বিষয়ক গনতদন্ত কমিটির রিপোর্ট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ ব্যরিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
–চোখের চিকিতসার জন্য দেশে চক্ষু বিশেষজ্ঞ নাই। স্বাস্থ্য পরিক্ষার জন্য এম বি বি এস ডাক্তার নাই।
May our president live long . প্রার্থনাসুচক এই বাক্য আর উদাহরন হিসেবে লেখা ঠিক হবে না।
জনগনের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা না করে নিজের স্বাস্থ্য ঠিক রাখার একটি নির্লজ্জ উদাহরন।