এক নদী রক্ত পেরিয়ে
বাংলার আকাশে রক্তিম সূর্য আনলে যারা
তোমাদের এই ঋণ কোন দিন শোধ হবে না।

Jatiyo_Smriti_Soudho

ছবি: ইন্টারনেটের সৌজন্যে

মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয় ঠেকাতে না পেরে বিজয়ের মাত্র দু তিন দিন আগেই আমাদের দেশের শিক্ষক, গুনি মানুষ আর নামকরা বিদ্যানদের হত্যাকান্ড পরিকল্পনা ও সংঘটনের অন্যতম বদমাশ সংগঠক সে সময়কার আলবদর বাহিনীর নেতা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদকে অবশেষে ফাঁসির দড়ি পরানোর নির্দেশ দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। প্রাণ ভিক্ষা চাইবার অবকাশ থাকলেও আসলে শুধু ঝুলিয়ে দেওয়াটাই বাকি এই শয়তানটাকে।

saka-mujahid

ছবি: ইন্টারনেটের সৌজন্যে

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় আজকের বি.এন.পি নেতা সাকা চৌধুরী পৈশাচিক উন্ন্মত্ত্তায়, সীমাহীন নিষ্ঠুরতায়, নৃশংসতায় নিরীহ সংখ্যালঘুদের ওপর চালায় গণহত্যা, লুটপাট ও মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধ। এসবের দায়ে সাকা চৌধুরীর ফাঁসিও নিশ্চিত করে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। প্রাণ ভিক্ষা চাইতে পারলেও এই ইতরটাকেও আসলে শুধু ঝুলিয়ে দেওয়াটাই বাকি।

মুজাহিদ ও সাকা চৌধুরীকে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পরিপূর্ণ সুযোগ দিয়ে বিচার করেছে। বিচারে অপরাধী সাব্যস্ত করেছে আদালত মুজাহিদ ও সাকা চৌধুরীকে। আপিল ও রিভিউ শেষে মৃত্যুদন্ড বহাল রয়েছে। কেউ বলতে পারবে না ন্যায় বিচারের সুযোগ দেয়া হয়নি। আসামীদের প্রধান উকিলও হার স্বীকার করে নিয়েছে। ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত ওরা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণ ভিক্ষা চাইতে পারে কিন্তু এই রকম অপরাধীদের প্রাণ ভিক্ষা দেবেন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট এমন ভাবনার কোন কারণ নেই।

নতুন প্রজন্মের মানুষ যারা, যারা দেখেন নি এইসব অনর্থক গণহত্যা ও সীমাহীন কষ্টের দিনরাত্রি তারা একটু সময় করে জেনে নেবেন এইসন মামলার বিস্তারিত রায়। ওখানে লেখা আছে আংশিক কিছু কষ্টের দিনপঞ্জি। দেশব্যাপী যেসব অত্যাচার হত্যা, ধর্ষণ, গনহত্যা ও জ্বালাও পোড়াও হয়েছিলো, তার খন্ডিত বিবরণ পাওয়া যাবে এইসব ঐতিহাসিক মামলায়। মাত্র একটি ঘৃণ্য মুজাহিদ বা সাকা একাই অপরাধ করেনি, করেছিলো হাজার হাজার বিশ্বাসঘাতক রাজাকার, পিস কমিটি, আল বদর, আল শামস ও লোভী শয়তানের দল। ওরা সেই একই রকম পৈশাচিক উন্ন্মত্ত্তায়, সীমাহীন নিষ্ঠুরতায়, নৃশংসতায় নিরীহ মানুষদের ওপর চালায় গণহত্যা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, শিশুহত্যাসহ মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধ। ওরাই ভোল পাল্টে কেউ বা মন্ত্রী, কেউ বা রাজনীতিবিদ কেউ বা ভন্ড নেতা আজ বা বিগত দিনের। ৭১’এ পুরো বছর জুড়ে দেশে জ্বলেছে আগুন, নদী, খাল, বিল, ডোবা আর যেখানে সেখানে পড়ে থেকেছে পচাগলা লাশ। কাক, শকুন কিংবা কুকুর ছিঁড়ে টেনে খ্য়েছে বাংলার অসহায় মানুষদের। এইসব শয়তান বিশ্বাস ঘাতকদের আনুষ্ঠানিক বিচার হোক বা না হোক, এরা কখনো যেন ক্ষমা না পায় সে কথা অবিরাম শেখাতে হবে নতুন মানুষদের।