জাতিসংঘের ওয়েবসাইটের মূল ইংরেজি সংবাদের বাংলা অনুবাদ।
জেনেভা (৫ নভেম্বর, ২০১৫)- জাতিসংঘের মানবাধিকার দূত জেয়িদ রাদ আল হুসেইন বাংলাদেশে ব্লগার, লেখক, প্রকাশকদের উপর চলমান হামলার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করে বাংলাদেশ সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মৌলবাদীদের হুমকিতে থাকা মানুষদের নিরাপত্তার জন্য সরকারকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
এ বছর বাংলাদেশে পাঁচজন লেখক এবং দুই জন বিদেশি নাগরিককে নির্মমভাবে আক্রমণ করে হত্যা করা হয়েছে এবং একই পরিণতির হুমকি দেওয়া হয়েছে আরও অনেককে। যারা এমন কাজ করছে তারা মনে করে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি সবার উপর চাপিয়ে দেবার জন্য সহিংসতাই উত্তম পন্থা। মানবাধিকার দূত বলেন।
এমন ঘটার পুনরাবৃত্তি যেনো না ঘটে তার জন্য এখন সম্মিলিতভাবে দ্রুত পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে, একই সাথে লেখক প্রকাশক যাদের মৌলবাদী গোষ্ঠীরা ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছে তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। একটা রাষ্ট্র কখনই মৌলবাদী গোষ্ঠীকে তাদের যা ইচ্ছা তা করতে দিতে পারে না।
সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনকে ঢাকায় তার প্রকাশনা অফিসে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। একইদিনে আরেক প্রকাশনা সংস্থার অফিসে একই কায়দায় আক্রমণ করে আহত তিনজন লেখক, প্রকাশককে। দীপন প্রকাশ করেছিলো অভিজিৎ রায়ের লেখা, যিনি নিজেও এই ফেব্রুয়ারিতে মৌলবাদীদের হামলায় নিহত হন ঢাকায়। আরও তিনজন ব্লগারকে এরপর হত্যা করা হয়েছে, যাদের প্রত্যেকেই লেখালেখির মাধ্যমে সোচ্চার ছিলেন বিভিন্ন স্পর্শকাতর সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় বিষয়ে। আরও অনেক ব্লগারকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হুমকি দেওয়া হয়েছে, তাদের নাম দিয়ে হত্যার তালিকা করা হয়েছে। নিরাপত্তার অভাবে অনেক লেখক এখন আত্মগোপনে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন কিংবা বাধ্য হচ্ছে দেশ ত্যাগে।
আমি সকল রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় নেতাদের অনুরোধ করতে চাই লেখক, প্রকাশকদের উপর “তাকফিরি” গোষ্ঠীদের এমন হামলা, হত্যাকাণ্ডের সংস্কৃতিকে রুখে দাঁড়ান।
জেয়িদ তার বক্তব্যে সাংবাদিক, নাগরিক সমাজ, মানবাধিকার কর্মীরা যেনো তাদের মতামত প্রকাশে অনিরাপদ বোধ না করেন তা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রকে অনুরোধ জানান।
যখন কোনো ব্যক্তিকে সহিংসতা বা হত্যা করার হুমকি দেওয়া হয়, তখন রাষ্ট্রের দায়িত্ব তাদের নিরাপত্তার জন্য কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
প্রধানমন্ত্রীর নেদারল্যান্ড সফর, রক্ত মাড়িয়ে লাল গালিচায়
আমাদের সমাজে একটা কথা প্রচলিত আছে, যারা জেগে জেগে ঘুমায়, তাদের কখনো জাগানো যায় না। আমাদের মন্ত্রী, এমপি, রাজনৈতিক নেতারা সত্যিই জেগে জেগে ঘুমাচ্ছেন। দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা কিংবা সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে তাদের ডোন্ট কেয়ার ভাব। যেন এটিই স্বাভাবিক। একসময় একটা খুন হলে, সেই খুন নিয়ে বছরের পর বছর লেখা লেখি হতো। আইন আদালতের আঙ্গিনায় জবাবদিহিতা হত। এখন খুন নিত্য নৈমত্তিক ব্যাপার। মনে হচ্ছে প্রতিদিন একটা খুন দিয়ে বাংলাদেশ তাঁর প্রাতরাশ শুরু করে। শুধু খুন করে ক্ষ্যান্ত নয়, সাথে সাথে খুনের দায়িত্ব নেওয়া একটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঘোষণা দিয়ে খুন করার প্রবণতাও ইদানিং লক্ষ্য করা যায়। তা ক্রমে ক্রমে বাড়ছেই বাড়ছে। এই দুঃসময়ে আমাদের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী নেদারল্যান্ড সফর করেছেন, লাল গালিচা সংবর্ধনা পেয়েছেন। দেশের মানুষের রক্ত মাড়িয়ে লাল গালিচায়, সত্যিকারের দেশপ্রেমিকের অনুভূতি কি পেয়েছেন?
এমন এক সময় আসবে শুধু মুক্তমনা নয়,,
দেশের প্রধানমন্তী সহ চাপতির কোপ থেকে বাচতে পারবেন না
হুমায়ুন আজাদকে কুপিয়েছিল ইসলামিস্টরা আরো এক যুগ আগে। তার বিচার আজ পর্যন্ত হয়নি। কত সরকার এলো গেল। একজন লেখককে বইমেলার সামনে কোপানো হলো এই বিষয়টা নিয়ে কেউ কোনো বাক্যব্যায়ও করলো না। এর বিচার হলে এর পরের একটা হত্যাকাণ্ডও ঘটতো না।
রাষ্ট্র যদি উচিৎ কাজ আগে থেকেই করতো, তাহলে এ অবস্থা সৃষ্টির অবকাশই থাকতো না।
ভবিষ্যতেও যে উচিতকাজ করবে, তারও কোন আশা দেখছি ন্স।