লেখক: ফিনিক্স পাখি

আমি জানি এই দেশে আমার জীবন অন্য যেকোন কারও জীবনের থেকে বেশি ঝুকিপূর্ণ। আমি হিন্দু হলেও ঝুকি তে থাকতাম, যেকোন মুহুর্তে আমার ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হতে পারে-আমার উপসনালয়, মন্দির ভেঙে গুড়িয়ে দেয়া হতে পারে। আমি বৌদ্ধ হলেও ঝুকি থাকত, রামুর কথা তো ভুলে যাইনি। খ্রিস্টান হলে কিছুটা নিরাপত্তা হয়তো পাওয়া যেত-সাহেবি ধর্ম যে! তারপরও গীর্জার নান দের উপর হামলার কথা তো ভুলে যাইনি। কিন্তু আমি হিন্দু-বৌদ্ধ বা খ্রিস্টান যাই হই না কেন জীবনের ঝুকি ছিলনা, সম্পদহানীর ঝুকি ছিল-বাস্তুহারা হবার ঝুকি ছিল কিন্তু জীবন টা হয়তো বেঁচে যেত। কিন্তু আমি একজন নাস্তিক। আমি প্রচলিত ধর্মের অন্ধ অনুসারি নই- অতএব আমার জীবন এদেশে তুচ্ছ। আমাকে মেরে ফেলাটা ‘পূণ্য’ হিসেবে বিবেচিত। আমাকে মেরে ফেললে অনেকেই উল্লাস করবে, কেউ বলবে – “মেরে ফেলাটা ঠিক হয়নি, তবে ওরও উচিত হয়নি ওভাবে লেখা। “মানে যা হয়েছে ভাল না হলেও খারাপ হয়নি! আমি নাস্তিক, সত্যের অনুসন্ধান করি, মানুষ কে জানাতে চাই, জানতে চাই, অন্ধ বিশ্বাস ভাংতে চাই, যুক্তি আর জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হতে চাই- এগুলো এই জানোয়ারের দেশে মহাঅপরাধ। এর শাস্তি মৃত্যুদন্ড। এর থেকে আমি যদি খুন করতাম, শ খানেক ধর্ষন করতাম, কারো বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দিতাম – আমার কিছু হতনা। আমি একটু কৌশল খাটিয়ে, ক্ষমতাবান দের ধরে, টাকা পয়সার ব্যবস্থা করে আরামসে বহাল তবিয়তে থাকতে পারতাম। ধর্ষন করে এসে আমি মসজিদে যেতাম, জবাই করে এসে ওযু করে নামায পড়তাম- সবাই বলত ‘আহা কি ভাল লোক। ‘ কিন্তু এই অসভ্যের দেশে আমি নাস্তিক। আমি লাল দাগ চিহ্নিত অপরাধী, আমার পাশে কেউ নেই, আমি রাস্তায় মরে পড়ে থাকলেও কেউ কাছে আসবে না।

অভিজিৎ রায় কেবল মাত্র একজন ‘নাস্তিক’ ছিলেন না। শুদ্ধ বিজ্ঞানের একজন অসাধারণ লেখক ছিলেন তিনি। তার যে মগজ টিএসসির রাস্তায় পড়ে ছিল সেই মগজ সাধারণ মগজ ছিলনা। সেই মগজের গুরুত্ব বোঝের ক্ষমতা বাংলাদেশের অধিকাংশ মূর্খ দের নেই। তার ‘বিশ্বাসের ভাইরাস’, ‘অবিশ্বাসের দর্শন’, ‘বিশ্বাস ও বিজ্ঞান’ (সম্পাদিত) যে পড়েছে সে জানে এখানে তথাকথিত ‘ধর্মানুভূতিতে আঘাত’ এর কোন ব্যাপার ছিলনা। ছিল যুক্তি প্রমাণ তথ্য সহ তিক্ষ্ণ ও সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ। যেমনটা লেখার ক্ষমতা খুব কম মানুষেরই আছে এদেশে। তার মত জ্ঞানি লেখক এদেশে হাতে গোণা যায়। মানুষটা আমেরিকা তে থাকত, দেশ কে ভালবাসা এতই কি দরকার ছিল? বই মেলার টান এতই বেশি ছিল? কেন আসলেন আপনারা? এদেশ খুনী ধর্ষক দের, এদেশ কোন জ্ঞান সন্ধানী যুক্তিবাদীর না।

অনেকে লুতুপুতু স্বরে বলছে ‘দেখুন এর মধ্যে ইসলাম কে টেনে আনবেন না। ‘ কেন আনবনা? অভিজিৎ রায় সহ অন্যান্যরা যেসব ধর্মের স্বরূপ উন্মোচন করেছেন তার মধ্যে ইসলাম প্রধান, অন্যান্য ধর্মও আছে। যারা হত্যা করেছে তারা ইসলাম রক্ষার জন্যই করেছে, আর এই হত্যার নির্দেশ তারা সরাসরি ইসলাম থেকেই সংগ্রহ করেছে। অতএব আমরা এই কাজ করব, অবশ্যই আগের থেকে অনেক বেশি করে। আমি অভিজিৎ রায় এর মত রাস্তায় মরে পড়ে থাকতে পারি জেনেও করব। যেমন করেছিলেন বাবু, অনন্ত কিংবা নীলেরা। নিলয় নীল যুক্তির বাণে জর্জরিত করেছেন হিন্দু আর বৌদ্ধ ধর্মের অনেক রীতিনীতি কে, কিন্তু তাকে হত্যা করেছে ঐ মুসলিম মৌলবাদীরাই। রাষ্ট্র আমাদের নিয়ে বিব্রত হবে, আমাদের হত্যাকারীদের ধরে নিজেদের ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ করতে চাইবে না! কয়েকজন মুক্তমনা মানুষের থেকে অসংখ্য নির্বোধ মোল্লা সরকারের কাছে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ভোট-স্বর্বস্ব তথাকথিত গণতন্ত্রে।

ব্যাপার গুলো এত সহজ নয়। শিকড় অনেক গভীরে। আফসোস আমরা চাপাতি রামদা নিয়ে মাঠে নামতে পারবনা। আমরা যুক্তি বিজ্ঞান কে সম্বল করে আমাদের একমাত্র কাজ ‘লেখা’ চালিয়ে যাই, যখন আমাদের ভাই, আমাদের বাবা, আমাদের বোন আক্রান্ত হয় তখন ক্রোধান্বিত হয়ে বড়জোড় গালিগালাজ করি। সেই গালিগালাজ দেখে আবার সবার ধর্মানুভূতি আঘাত প্রাপ্ত হয়। আমরা অসহায় অভিভাবকহীন হয়ে কাদি, কিন্তু পাশে কাউকে পাইনা। নাস্তিক/সংশয়বাদী/অবিশ্বাসি দের নিয়ে ধর্মগুরুরা যে মিথ্যা ভ্রান্ত ট্যাবু তৈরি করে দিয়েছে সেই ভ্রান্ত বিশ্বাসের জন্য ‘নাস্তিক’ মাত্রই ভয়াবহ কোন বস্তু- এমনটাই ধারণা সাধারণ মুসলমানদের। নাস্তিক মানেই অনৈতিক, খারাপ, দুশ্চরিত্র- এমন ধারণা গড়ে ওঠার পিছনের মূল কারণ হল ধর্মকে নৈতিকতার উৎস বলে মনে করা। যেহেতু ধর্ম কে নৈতিকতার উৎস বলে মনে করা হয় সেহেতু যে ধর্ম মানেনা সে অনৈতিক কার্যকলাপে লিপ্ত- এমনটাই হল সরলীকৃত বিশ্বাস। এই ভ্রান্ত বিশ্বাস কে ভেঙে দেয়ার একমাত্র উপায় হল ‘ধর্মই যে নৈতিকতার উৎস নয়’ এটা বুঝানো। সত্যি কথা বলতে ধর্ম নৈতিকতার উৎস তো নয়ই, বরং উলটো। এনিয়ে লেখালেখি কম হয়নি। অভিজিৎ রায় তার ‘বিশ্বাসের ভাইরাস’ বই-এ অসাধারণ ভাবে সেটা প্রমাণ করেছিলেন। সেদিকে আর নাই গেলাম।

তো এখন আমরা কি করব? ভয় পেয়ে চুপ করে যাব না ‘লিখে’ যাব? যদি লিখে যাই, শুধু লিখে যাওয়াটাই কি এখন সব থেকে ভাল সমাধান? শুধু লিখে গেলে চাপাতির কোপ আমাদের উপর পড়বে, সেটাকে প্রতিরোধের জন্য আমরা কিছু করবনা? আর সাধারণ মানুষের ভুল ধারণা না ভাঙ্গা পর্যন্ত লিখে যাওয়াটা কি একমাত্র সমাধান? এখন শুধু লিখে যাওয়াটাই যথেষ্ট নয়। আমরা যখন পৃথিবীতে ভূমিষ্ট হয়েছিলাম তখন আমরা ছিলাম সত্যিকার অর্থে ‘নাস্তিক’। আমাদের কোন ধর্ম ছিলনা। ঘটনাক্রমে আমার জন্ম মুসলমান পরিবারে হওয়াতে আমি বড় হয়েছি কুরান-হাদীস-আল্লাহ-রাসূল এসব শুনে, নিজেকে ‘মুসলমান’ হিসেবে ভাবতে শিখেছিলাম। আবার এই আমাকেই যদি জন্মের পরপর কোন হিন্দু পরিবার কে দিয়ে দেয়া হত তাহলে আমি বড় হতাম ভগবান-দুর্গা-শিব-রামায়ন-গীতা এসব শুনে এবং নিজেকে ভাবতাম একজন হিন্দু। জন্মের পর আমার স্থান হত যদি কোন খ্রিস্টান পরিবারে তাহলে বড় হতাম যিশু-মেরি-বাইবেল শুনে এবং নিজেকে ভাবতাম খ্রিস্টান। অর্থাৎ ধর্ম পুরোপুরি একটা মানব সৃষ্ট কৃত্রিম ব্যাপার মাত্র। একই ভাবে একটা শিশু জন্মের পর যদি মানবতা-ভালবাসা-সমঅধিকার-চিন্তা-যুক্তির কথা শুনতে শুনতে বড় হয়, যদি তাকে বলা হয় যে সে একজন মানুষ, এই মানুষ হওয়াটাই একটা অসাধারণ ব্যাপার- আর কিছু হওয়াটা তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয় তাহলে সে বড় হবে একজন যুক্তিবাদী মানুষ হিসেবে। সব শিশুই জন্ম হয় নাস্তিক হয়ে, আমরা তাদের গালগল্প শুনিয়ে ধর্মের ছাপ্পড় মেরে দেই। একটা কাজ করা যাক, নিজ নিজ পরিবারের শিশু গুলোর গায়ে যেন এই কৃত্রিম ছাপ্পড় না পড়ে যায়, যেন ‘মানুষ’ হয়ে, মানুষের প্রতি ভালবাসা নিয়েই তারা বড় হয়- এটা নিশ্চিত করি।

আমরা যারা নিজেদের কে নাস্তিক, সংশয়বাদী, অজ্ঞেয়বাদী, যুক্তিবাদী ইত্যাদি বলে পরিচয় দেই তারা সবাই নিজ নিজ পরিবার দ্বারা ছাপ্পড় যুক্ত হয়েছিলাম, পরবর্তীতে সেই ছাপ্পড় দূর করতে পেরেছি আমরা। একটু মনে করে বলুন তো কিভাবে কোন অস্ত্রের সাহায্যে এই ছাপ্পড় দূর করলেন? আমি নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি, অধিকাংশই যে অস্ত্রটির নাম বলবেন সেটি হল ‘বই’। অজ্ঞানতার অন্ধকার দূর করে আলোক রশ্মি দেখার এক এবং একমাত্র উপায় হল বই। চলুন এই অস্ত্রটি ছড়িয়ে দেয়া যাক, এই অস্ত্রটি পরবর্তি প্রজন্মের মধ্যে জনপ্রিয় করে দেয়া যাক। গ্রামে গ্রামে, পাড়ার মহল্লায়, নিজ নিজ এলাকায় কয়েকজন মিলে ছোট ছোট করে কিছু লাইব্রেরি গড়ে তোলা যাক, যেখানে সত্যিকারের বই থাকবে যা অন্ধকার দূর করবে, চিন্তা করতে বাধ্য করবে। করা যায় কি? অভিজিৎ দা’র ‘বিশ্বাসের ভাইরাস’ বইটি পড়েছেন সবাই? এই বইটি পড়লে আপনার চিন্তার জগতে ব্যাপক একটা ধাক্কা খেতে আপনি বাধ্য, দৃষ্টিভঙ্গি বদলাবেই, আর কিছু না হোক অন্তত চিন্তার জগতে একটা পরিবর্তন হয়ে যাবে। এই বইটা সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করলে কেমন হয়? এমন কিছু কি করা যায় না?

আমাদের প্রায় সকলেই এখন দিশেহারা অবস্থায় দিন পাড় করছে। যাদের সুযোগ আছে তারা দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে, অনেকে লেখা বন্ধ করে দিয়েছে, অনেকে চলে গেছেন আড়ালে। একটা অদ্ভূত নিরাপত্তাহীনতার মধ্য দিয়ে, অজানা আতংকে কাটছে প্রতিটা দিন। প্রতিটা মাসের শুরুতে মনে হয় ‘এই মাসে কে? ‘হয়তো আমি নাহয় আমারই কোন পরিচিত মুখ। সবাই থমথমে মুখে শুধু এটাই জানতে চায় আমরা কী করব? আমাদের কী করণীয়? এভাবে মার খাব, মরে যাব? কিছুই কি করার নেই? সমস্যা হচ্ছে আমরা নিজেরা সংঘবদ্ধ নই কিন্তু খুবই সংঘবদ্ধ একটি গোষ্ঠির টার্গেট। আমাদের তেমন কোন সংগঠিত শক্তি নেই। সংগঠিত হলে ধর্মান্ধ মোল্লাদের হয়তো থামানো যাবেনা, কিন্তু মানসিক একটা শক্তি পাওয়া যাবে। লড়াই করার একটা মানসিকতা গড়ে উঠবে। এই মুহুর্তে যেটার প্রয়োজনীয়তা অনেক। আর কোন অবস্থাতেই লেখা থামানো যাবেনা, নিজেকে আড়াল করে হলেও, কৌশলের আশ্রয় নিয়ে হলেও লিখে যেতে হবে। কারণ ওটাই ধর্মান্ধদের ভয়ের কারণ, ওটাই আমাদের মূল হাতিয়ার, ওটাই অন্ধকারের বিরূদ্ধে আলোক রশ্মি।

অনেকেই নাস্তিক দের ধর্মের স্বরূপ উন্মোচন আর ধর্মান্ধ দের কল্লা ফেলে দেয়া- দুটি কাজ কে এক করে দেখছেন। কি বিচিত্র! তারা ‘নিরপক্ষে’ থেকে ‘ব্যালেন্স’ করার জন্য বলছেন “উগ্র নাস্তিক আর উগ্র ধর্মান্ধ দুটোই খারাপ, এই দু দল কেই প্রতিহত করতে হবে! ” অবশ্যই উগ্রতা পরিহার্য। কিন্তু প্রশ্ন হল ‘উগ্র নাস্তিক’ জিনিসটা কী? যারা গালাগালি করে তারা? তবে গালাগালি করা ইজ ইকুয়েলটু কল্লা ফেলে দেয়া? এরা আমাদের বলেন, “তুমি নাস্তিক ভাল কথা, তুমি তোমার ‘বিশ্বাস’ নিয়ে থাক। এগুলো নিয়ে লেখালেখির কি দরকার? ” নাস্তিকতা কোন ‘বিশ্বাস’ নয়। নাস্তিকতা যদি বিশ্বাস হয় তাহলে গাঁজা না খাওয়াও একটা ‘নেশা’! নাস্তিকতা একটা ‘অবস্থান’ মাত্র। এই অবস্থানে যারা থাকেন তারা এগুলো নিয়ে কথা বলবেই, যুক্তি দেখাবেই। এই যুক্তি আপনার পছন্দ না আপনি সেটাকে খন্ডন করবেন, পাল্টা প্রমাণ উপস্থাপন করবেন। কিন্তু ধার্মিক, ধর্মান্ধরা এটা করবেনা, কারণ ‘এক বই এর পাঠক’রা সেটা করতে পারবেনা। এই ব্যালেন্স রক্ষাকারী গোষ্ঠিটা হল সুবিধাবাদী গোষ্ঠি। দরকার হলে এরাও চাপাতি নিয়ে ঝাপিয়ে পড়তে পারে, বিচিত্র কিছু না।

আমাদের আশেপাশের আলামত গুলো ভাল নয়। এই দেশটিকে কোন ভাবেই ‘স্বাধিন’ বলা চলেনা এখন। অসীম অন্ধকার। এই অন্ধকার দূর করতে হবে আলো দিয়েই। আর আলোর বাহন হল বই। নিজেদের রক্ষা নিজেদের কেই করতে হবে, এরজন্য দরকার ঐক্যবদ্ধ হওয়া। সরকার বিরোধীদল এ নিয়ে নিজেদের মত করে রাজনীতি করবে- তাদের থেকে কিছু আশা করা যায়না, তারা কেউ আমাদের নিরাপত্তা দিতে পারবেনা। আমরা নাস্তিকতা নামক অবস্থানে না গেলেও কোন ক্ষতি ছিলনা, বরং লাভ ছিল ষোল আনা। যেহেতু জেনেশুনেই এই পথে আমরা পা বাড়িয়েছি, যেহেতু আমরা জানি আমাদের পাশে কেউ নেই-যারা এখন হাত তালি দেয় তারাও দরকারের সময় থাকবেনা, যেহেতু আমরা জানি দূরের মানুষ তো বটেই নিজের আত্মীয় কাছের বন্ধুরা পর্যন্ত দূরে সড়ে যাবে সেহেতু নিজেদের কে সেভাবেই গড়ে তোলা ছাড়া আমাদের সামনে কোন রাস্তা নেই।

আমি নাস্তিক, আমি জ্ঞান অন্বেষন করি, আমি যুক্তিবাদী। আমি সত্যের সন্ধানী। এ জন্য আমি গর্বিত। আমি অভিজিৎ রায় এর জন্য গর্বিত। আমি ওয়াশিকুর বাবুর জন্য গর্বিত, আমি গর্বিত অনন্ত বিজয়ের জন্য, গর্বিত নিলয় নীলের জন্য। মরতে তো সবাইকেই হবে, তবে যেহেতু জীবন একটাই এবং আমরা মৃত্যু পরবর্তী হুর-সুরাময় জীবনের জন্য লালায়িত নই তাই পৃথিবীর এই একটি জীবনই আমাদের কাছে অনেক মূল্যবান। সেটাকে অর্থবহ করে তোলা, পৃথিবীকে আর একটু সুন্দর করে যাওয়াটা তাই অনেক বেশি দরকারি। আমাদেরকে বেঘোরে মরে পড়ে থাকলে চলবেনা। কৌশলের আশ্রয় নিয়ে হলেও বেঁচে থাকতে হবে, বেচে থেকে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।

হুমায়ুন আজাদ স্যারের রক্তের ভিতর দিয়ে ফিনিক্স পাখির মত আমাদের অনেকের জন্ম। অভিজিৎ রায় এবং নিহত হয়ে যাওয়া সহযোদ্ধাদের রক্ত থেকেও জন্মাবে আরও হাজারও আলোর ফিনিক্স। হয়তো আমাদের রক্ত ঝড়বে, সেই রক্ত থেকে জন্মাবে আরও লাখো আলোর পাখি। এভাবে একটা সময় অন্ধকার কেটে যাবে, কাটবেই। সেই সক্রেটিস থেকে আজকের রাজিব, অভিজিৎ, অনন্ত, বাবু, নীল- ইতিহাস তাই বলে…