লেখক: ঈশিকা

কয়েক মাস আগের কথা। আমি ফেইসবুকে ঢুকে আবিষ্কার করি, জাফর স্যারকে নিয়ে কিছু পেইজে ট্রল করা হচ্ছে। জাফর স্যার কিভাবে বিজ্ঞানের রূপকথা লিখে বিজ্ঞান লেখক হিসেবে জনপ্রিয়তা কিনেছে , সেই বিষয়টি নিয়ে ট্রল চলতেছে।
তো, বলে রাখি জাফর স্যার আমার খুব প্রিয় একজন মানুষ। বিজ্ঞান ও আমার কাছে খুব প্রিয় একটি বিষয়।
খুব প্রিয় কিছুকে নিয়ে ট্রল করতে দেখে আমার ছোট্ট মাথায় প্রথমে যেই প্রশ্ন এসেছে তা হল, রূপকথা আর বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর মধ্যে পার্থক্য কি?
ঐ ট্রল নিয়ে সমালোচনা করার জন্যই আমি রূপকথা আর বিজ্ঞানের কল্পকাহিনী নিয়ে একটু খুঁচিয়ে পড়াশোনা দিলাম।
তো সেখান থেকে জানতে পারলাম তা হল, বিজ্ঞানের কল্পকাহিনী এমন কিছু কথা সাহিত্য যা বর্তমান কিংবা ভবিষ্যতের বিজ্ঞানকে কল্পনা করে লেখা হয় এবং যার টেকনোজিগুলোকে বিজ্ঞানের সূত্র দিয়ে ভুল প্রমানিত করা যায় না। কিন্তু ভুল নয় দেখে, তা যে ঠিক হতে হবে তা কিন্তু না।
সায়েন্স ফিকশান মূলত দুই ধরনের।
১) সফট্ সায়েন্স ফিকশান: যেখানে এলিয়েন, এলিয়েন টেকনোলোজি কিংবা ভিন্ন ইউনিভার্সের ভিন্ন পদার্থ বিদ্যার ফ্যান্টাসি থাকতে পারে । যেমন: Star Wars, Star Trek , ইরন ( মুহম্মদ জাফর ইকবাল) ইত্যাদি যেখানে স্পেইস ফ্যান্টাসী বলে একটা ব্যাপার থেকে যায়।
২) হার্ড সায়েন্স ফিকশান: যেখানে বাস্তব, বর্তমান সায়েন্সকে ভিত্তি করে সাহিত্য রচনা করা হয়। যেমন: 2001 – A Space Odyssey, Jurassic Park, The Bicentennial Man, Contact, Gravity, Solaris, Primer ইত্যাদি।
আর, রূপকথা হল অতীতের কল্পকাহিনী যেখানে বিজ্ঞানের কোন বিন্দু আলামত ও পাওয়া যায় না, টেকনোলজি কিংবা বিজ্ঞানের সূত্র ব্যাপারগুলো খাটানো যায় না, যেখানে মূলত “ নীতিকথা”( জীবনবোধের দর্শন কিংবা চরিত্র গঠন) সম্পর্কে গল্প তৈরি করা হয় । যেমন: Cinderella, Red Riding Hood, Snow White , Frozen ইত্যাদি।
তো সারমর্ম হল, বর্তমান কিংবা ভবিষ্যতের প্রযুক্তির অনুমানে রচিত বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীতে ‘ম্যাজিক’ কিংবা যাদুকে ব্যাখ্যা দেওয়ার একটা ছোট্ট প্রয়াস কিংবা মুক্ত ইচ্ছা থাকলে ও অতীত অবস্থার সাপেক্ষে রচিত রূপকথাতে সেই ‘ম্যাজিক’ কে ব্যাখ্যা দেওয়ার কোন গৌন/ পরোক্ষ ইচ্ছা ও নাই। রূপকথাতে ‘ম্যাজিক’ শব্দটি কেবল ম্যাজিকই থেকে যায়।
সুতরাং, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীকে কোনভাবেই রূপকথার সাথে তুলনা করা যায় না। রূপকথা অতীতের বিষয়, বিজ্ঞান কল্পকাহিনী ভবিষ্যতের প্রযুক্তির বিভিন্ন ধরনের মুক্ত সম্ভাবনার মধ্যে যে কোন একটি।
সুতরাং, গন মাধ্যমে বিজ্ঞানের রূপকথা কে বিজ্ঞান কল্পকাহিনী বলা মানে বিজ্ঞানের অবমাননা।
তো, আমার প্রিয় জিনিস “বিজ্ঞানের” অবমাননায় আমি কি প্রতিক্রিয়া দেখালাম?
আমি পড়াশুনা করলাম, কিছু শিখলাম, নিজের কিছু ভুল খুঁজে বের করলাম, নতুন কিছু পেলাম, সেটা নিয়ে বড়জোর একটা পোস্ট লিখলাম।
আমার প্রিয় মানুষকে নিয়ে ট্রল করা হচ্ছে দেখে আমি নিশ্চয়ই আইনে বিচার চাইতে যায় নাই।
যারা আমার প্রিয় বিষয় আর প্রিয় মানুষের ট্রল করেছে তাদের মত প্রকাশ করার স্বাধীনতা আছে, গন মাধ্যমে তাদের ট্রল করার অধিকার আছে, ট্রলের লজিকটা ভুল হলে ও।
তো ব্লগার নিলয় নীল হত্যার কয়েকদিন চুপ থেকে কিছু বিষয় খেয়াল করলাম এবং কিছু ধরনের গোঁড়া গোছের জনপ্রিয় মানুষ খুঁজে পেলাম। তদেরকে নিম্নের শ্রেনীতে ভাগ করা যায়:
১) অর্ধেক মুসলমান অর্ধেক ফ্যাশান স্টার: “ সব ধর্মের কথা এক ঠিক আছে? তার মানে যে ধর্মে জন্ম, সে ধর্মে বিশ্বাস করতে খুতখুত লাগবে কেন “ – ( সবাই যদি ঘাস খায়, উনারা ও মনে হয় ঘাস খাবে এমন )
২) অর্ধেক মুসলমান অর্ধেক সানি লিওনের সমর্থক : “ নাস্তিক হত্যা ইসলামে জায়েজ নয় কিন্তু তাই বলে ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করতে হবে কেন। “ – ( ধর্মকে পর্দা বানায়ে রাখতে হবে কিন্তু পর্দার অন্তরালে অন্ডকোষ উঠে গেলে কোন সমস্যা নাই এমন )
৩) পূর্ণ নাস্তিক কিন্তু নিজেকে জনসম্মুখে ‘নাস্তিক’ বলে পরিচয় দিতে চায় না এমন ছেলিব্রেটি: “ ধর্ম পুরাতন নিয়ম কানুন এর উপর ভিত্তি করে রচিত কিন্তু দেশে দুনিয়াতে কি আর কোন লেখার বিষয় নাই। ডিয়ার ব্লগারস্, তোমরা ধর্মে হাত না দিয়ে, বাকি জায়গাগুলো কচলে কচলে দেখতে পারো “ – ( নিজেকে নাস্তিক বলে পরিচয় দেওয়ার পর জ্ঞানগম্ভীর বিজ্ঞান, রাজনীতির বিষয় নিয়ে পোস্ট লিখলে যে জনপ্রিয়তা পাওয়া যাবে না। জনপ্রিয়তা অর্জনের জন্য ওদের মত থেকে অন্য সব বিষয়ে পাণ্ডিত্য দেখাতে হবে কিন্তু “ ধর্ম” এর ব্যাপারে চুপ থাকতে হবে । ছি: ধর্ম নিয়ে লিখলে আমার ফলোয়ার কমে যাবে, জনপ্রিয়তা শিকেয় উঠবে, দরকার নাই। আসো আমরা আমেরিকা কত খারাপ সেইটা নিয়ে ৪০টা পোস্ট লিখি। তাহলে ৪০,০০০ ফলোয়ার পাওয়াটা অনেক সোজা হয়ে যাবে এমন )
৪) অর্ধেক আস্তিক অর্ধেক বিজ্ঞানচেতা সমাজ সেবক: “ যার যার ধর্ম তার, কিন্তু তাই বলে আরেক ধর্মকে কটুক্তি করতে হবে কেন, আসো আমরা সবাই মিলেমিশে সুইট হার্ট, কিউটি পাই বলে একজন আরেকজনের সাথে সুন্দর করে কথা অলি। “ – ( সুন্দর সুন্দর আদর্শ কথাবার্তা বললে কেউ তাকে মন্দ বলবেনা, কিন্তু প্রতিবাদ করতে গেলে মানুষে যদি তারে একপাক্ষিক ভেবে ফেলে! -কাল্পনিক স্বপ্নপুরীর দেশে চলা মানুষ )
৫) অর্ধেক মুসলমান অর্ধেক সংস্কৃতমনা: “ ইসলামে হত্যা জায়েজ আছে সেইটা তো পুরানো আমলের কাফিরদের কথা চিন্তা করে আল্লাহ, রসূল ( স: ) কে দৈববানীর মাধ্যমে পরামর্শ দিয়েছিলেন। উনাদের দুইজনের ব্যাপার নিয়ে আমাদের ক্ষুদ্র মস্তিষ্ক দিয়ে নাক গলানো অনুচিত। পাপ। কিন্তু বর্তমানে শান্তিপ্রিয় নাস্তিক কাফিরদের জন্য এই হত্যা জায়েজ না কোন ভাবেই ।“ – ( তারা কুরআন নিয়ে ব্যাপক বিচার বিশ্লেষন করছে, কুরআনের কোন বানীর কোথায় কোন ব্যাখ্যা দেওয়া হইলো তার নিয়মিত খোঁজ তারা রাখে। সেইখান থেকে অর্ধেক মানবতা অর্ধেক ধর্ম বাছাই এর মধ্যম যুক্তি পন্থা অবল্বন করতে চায় )
১ নং মানুষদের উদ্দেশ্যে, ব্রো আন্ড সিসি গন আপনারা মনে হয় সারা জীবন কোন কিছুর কারন কখনো জানতে চান নাই, জীবন আছে, চলতেছে, সবাই যা করে তাই সঠিক ভুল হলে ও; এই গন্ডীর বাইরে যান না, আপনাদের সাথে তর্কে যাওয়া এক্কেবারে অনুচিত। কারন জানেন? যারা যুক্তি ছাড়া সব কিছু ছাগলের পালের মত অনুসরণ করে তাদেরকে যুক্তি দেখায়ে ও বুঝানো যাবে না যে তারা ছাগল; ছাগলের দলকে মানুষ বলে একজন রাখাল তাদের চালায়ে নিয়ে বেরাচ্ছে তা ও বুঝানো যাবে না। কারন ছাগল যুক্তিই বুঝে না, সবাই যেই পালে ঘুরে বেড়ায়, সেই পাল এর নীতি অনুসরন করে।
২ নং মানুষদের উদ্দেশ্যে , আব্বাজান আপনারা সানি লিওনের ছবি নিয়ে কিসব লেইখ্যা পোস্ট দ্যান। এইটাতে যে কারো কারো ধর্ম প্রান ইসলামী চেতনায় বড্ড বেশি আঘাত লাগে। এই আঘাতের কি কোন বিচার হবে না? দুনিয়ার সব মাইয়্যাগো ছবির নিচে চাটাচাটি কমেন্ট লেখার পর ও আপনার ক্ষেত্রে সব দোষ মাফ হয়ে যাচ্ছে কারন আপনি নিজেরে শুধুমাত্র “আস্তিক” সম্বোধন করতেছেন এই জন্য?
৩ নং মানুষদের উদ্দেশ্যে, কারো ভেতরে কোন চেতনা জন্মাতে চাইলে, প্রথমে তার ভেতরে তার মত করে ঢুকতে হবে, এই যুক্তিতে আপনি ধর্ম নিয়ে কিছু বলতে চান না। কিন্তু সায়েন্স নিয়ে ঠিকই লিখেন। আপনার যেটা নিয়ে ইচ্ছা লিখেন, ঠিক আছে। কিন্তু আপনার মত সস্তা পপুলারিটি কিংবা ফলোয়ার বানানোর জন্য অনেকে লিখে না, অনেক লিখে শুধুমাত্র তার ভেতরের চেতনা প্রকাশ করা জন্য, লাইক কেনার জন্য না।
যেমন ধরেন, কেউ যদি আপনার মা কে গালি দেয় বা মন্দ কথা বলে আপনি তাকে গালির জবাবে বিশ্লেষনধর্মী বিশাল পোস্ট ও দিতে পারেন, গালি ও দিতে পারেন, চুপ ও থাকতে পারেন। আপনি হলে নিশ্চয়ই চুপ থাকতেন। কারন, আপনার নীতি বলে, ,গালি দিলে লোকে যদি আমাকে মন্দ ভাবে। ও আমার মা’কে গালি দিছে তো আমার মাথাব্যাথা দেখানোর দরকার কি। লেবু না কচলানোই ভাল।
… কিন্তু আমার সন্দেহ হয়, আপনি কতদিন এভাবে চুপ থাকবেন।
তেমনি দিনের পর দিন সংখ্যাগরিষ্ঠ বিশাল এক গোষ্ঠীর অলৌকিকভাবে পাওয়া কিছু বানীর আলোকে জগতের সব কিছু নিয়ন্ত্রন করতে গিয়ে বুদ্ধির উন্মুক্ত বিকাশকে শিকেয় তুলে দেওয়া হচ্ছে, ইহা দেখে কি একজন বিজ্ঞানমনস্ক যুক্তিবাদী মানুষের প্রতিক্রিয়া দেখানো উচিত না?
আপনি যেইরকম আপনার মা কে গালি দেওয়ার পর ও চুপচাপ ভদ্র ছেলে হিসেবে বসে থাকছেন। বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষটি ও এইসব ভন্ডামি গোঁড়ামি দেখে চুপচাপ বসে থাকবে, আপনি কি সেটা আশা করেন?
আপনি ডাবল স্টান্ডার্ড ধারন করতে পারেন; আপনার যা ইচ্ছা আপনি তা লিখতে পারেন। কিন্ত সে কি করতে পারবে না, সেইটা নির্ধারন করার অধিকার আপনার নাই।
৪ নং মানুষের উদ্দেশ্যে,কিউটি পাই ভাই/ বোন গন দুনিয়াটা ফ্রোজেন মুভির মত এত কিউট কিউট না, কোরিয়ান সিরিয়ালের মত এত আবেগী না। দুনিয়াতে সবাইকে সমর্থন দিয়ে খিচুড়ি নীতি অবলম্বন করে গা বাঁচানো যায় না। নিরপেক্ষ হয়ে গা বাঁচাতে হলে ও সেই একক চেতনার কোন কিছুর সাহায্য নিতেই হয়। যেমন: মুক্তিযুদ্ধের চেতনা
মুক্তিযুদ্ধের সময় আপনি আপনার “ আসো,সবাই সবাইকে আদর করে কথা বলি “ এই নীতি অবলম্বন করে কিভাবে পাক সেনাদের হাত থেকে গা বাঁচাতেন সে ব্যাপারে আমার ব্যাপক সংশয়।
৫ নং মানুষদের উদ্দেশ্যে, এইবার আপনারা লাইনে আসছেন, এতদিনে এইটুকু বুঝছেন যে, কুরআন আগের আমলের প্রেক্ষিতে রচিত মানুষ নিয়ন্ত্রনের কিছু নিয়মকানুন মাত্র।
আপনারা যদি বুঝেনই কুরআন লেখা হইছে আগের আমলের সমাজব্যবস্থা, পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে তাহলে এখনো কিভাবে বলেন যে, এইটা সর্বকালের সর্বোচ্চ জীবনবিধান। আপনারা নিজেরাই তো ঐ জীবন বিধানের কিছু জিনিস বর্তমানে খাটে না বলে ব্যাখা দিতেছেন, পরিস্থিতি অন্যরকম বলে অন্য কিছু করনীয় বলে ফতোয়া দিচ্ছেন। এই ক্ষেত্রে, কুরআনের বানী পরিস্থিতি ভিন্ন হওয়াতে ব্যতিক্রম হতে পারলে, কুরআনের অন্য বানীগুলো ও যে বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী অন্য নীতি অবলম্বন করতে পারে সেইটা কেন মেনে নিতে পারছেন না? ডাবল স্টান্ডার্ড ধারন করেন দেখে? নাকি অন্যকিছুতে এখন ও হত্যার মত কোন কিছু হয় নাই দেখে সহজে কুরআনের বানীর অন্যরকম ব্যাখ্যা দিয়ে মানবতার পথ ধরতে পারছেন না? নাকি ভয় এই রকম কাল বিশেষে কুরআনের বানী ভিন্ন হলে আপনার খোদা আর রাসূল ( সা: ) এর আনা সর্বকালের পরিপূর্ণ ধর্মের অলৌকিকতা ভুল প্রমানিত হবে? সেই ভয় বুঝি? হা হা হা
আপনাদের জন্য Friedrich Nietzsche সাহে বলে গেছেন,

neitsche

স্টিফেইন হকিং ও আপনাদের উদ্দেশে বলে গেছেন একই কথা,

hawking

তো, “কোন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে কিছু লেখা যাবে না ” এই গোঁড়া কথাটার বিপক্ষে যুক্তি দেখানোর জন্যই আমি মূলত লিখতে চেষ্টা করেছি।
যতক্ষন না পর্যন্ত কোন কিছু আপনাকে ফিজিক্যালি স্পর্শ করছে, ততক্ষন পর্যন্ত সেই কথা নিয়ে আপনার চুল্কানির মনোভাব দেখানোটাই গোঁড়ামি। আর মুক্ত চিন্তাবিদরা সব সময় আপনার গোড়ামির বিরুদ্ধেই লিখে গেছেন। লেখাটা পছন্দ হচ্ছে না? ব্লগ পইড়েন না…
আপনাকে কে বাধ্য করেছে ব্লগ পড়তে? …
যেই একই নিয়মে আপনি চটি পেইজ এড়িয়ে যেতে পারছেন সেই একই নিয়মে আপনি কি লেখাটা এড়িয়ে যেতে পারেন না?
নাকি লেখকের ধর্মের বুজরুকিতে বিশ্বাস নাই দেখে তার লেখা এড়ানো যাবে না, তাকে আইন করে শাস্তি দিতে হবে , কারন ধর্ম অবমাননা করলে ধর্মে শাস্তি পাবার বিধান আছে !!
কিন্তু, আমাদের দেশ নাকি আবার ধর্ম নিরপেক্ষ?
আরে ভাই, আপনাদের কারোরই দোষ নাই। নিজের দেশের গায়ে ধর্ম নিরপেক্ষ ট্যাগ থাকার মাধ্যমে মুক্তবুদ্ধি চর্চা চালানোর নিয়ম থাকার পর ও, দেশের গায়ে যখন আবার আঘাত নিবারনের জন্য ধর্মের নিয়মে একটা বোরখা টেনে দেওয়া হয়, তখন সেই দেশটা কতখানি ধর্ম নিরপেক্ষ থাকে। সেইটা আমার প্রশ্ন …
দেশই যখন ডাবল স্টান্ডার্ড নীতি অনুসরন করে, সেইখানে নীরিহ গোবেচেরা মানুষগুলো কি ই বা করবে, তারা তো দিশেহারা …
কিছু মানুষ আজ লিখে, কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে যেন আঘাত না লাগে এই জিনিস মাথায় রেখে সবাইকে লিখতে হবে। যেন এই অস্পর্শীয় আঘাত লাগা টাইপের অনুভূতি তাকে অন্যের লেখায় হস্তক্ষেপের জন্য বিশেষ কোন অধিকার দিচ্ছে। কিন্তু মাধ্যম যখন লেখা, তখন এই অনুভূতিতে আঘাত লাগা কথাটার বাক্য হিসেবে কোন অর্থ নাই, কোন মূল্য নাই। আমার লেখা তোমার অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছে? তো কি হইছে? লেখাটা পড়তে তোমাকে কে বাধ্য করেছে?
তোমাকে কেউ যখন লেখা পড়তে বাধ্য করে নাই, তখন তুমি কেন অন্যজনের লেখার বিরুদ্ধে আইন জারি করতে বাধ্য হইতেছো?
সে নাস্তিক বলে? হা হা হা …