অভিজিতের মৃত্যুতে গর্জে উঠেছিল হাজারো কন্ঠ-প্রত্যাশা ছিল রাষ্ট্র এবং শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষেরা মিলে কোনঠাসা করে দেবে ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদিদের। ওয়াশিকার রহমান বাবুর খুনের পর বাংলাদেশের রাজপুত্র জানালেন, তিনি আসলেই ভোটপুত্র। নাস্তিকেদের খুনীরা যেহেতু গুরুত্বপূর্ন ভোটব্যাঙ্ক, রাষ্ট্র নাস্তিক খুনের ক্ষেত্রে নীরব দর্শক থাকবে। সেইদিনই উৎসাহিত সন্ত্রাসবাদিরা খুন করলো অনন্তবিজয় দাশকে।
সেই সব গর্জে ওঠা প্রতিবাদি কন্ঠে আজ সুর বদল। ভীতু ইঁদুরের মতন গর্তে ঢুকে গেছে। সবাই আমাকে বলছেন -অভিজিত বা অনন্তরা কিন্তু বড্ড র্যাডিক্যাল ছিল! কি দরকার ছিল ইসলামিক ধর্মানুভূতিতে আঘাত করার ? ধর্মানুভূতিতে আঘাত করে তোমরা ( মুক্তমনারা ) কি উপকার করছ মুসলিম সমাজের?
প্রশ্নটি যৌত্বিক । উত্তর আরো সোজা। ধর্মানুভূতি যে সমাজে প্রবল-বস্তবাদি উন্নয়নের রাজনীতি সেখানে অসম্ভব। পশ্চিম বঙ্গের রাজনীতিই ধরুন। যে পার্টি যত ইসলামিক মৌলবাদকে তেল দিতে পারবে, মুসলিম ভোটের জোরে তারাই ক্ষমতাই আসবে। চিটফান্ডের জেরে পশ্চিম বঙ্গে সংসারের পর সংসার ছারখার হয়ে গেল-অথচ যে পার্টির চৌর্য্যবৃত্তির জন্য আজ রাজ্যবাসীর এই সব্বোনাশ, তারা মুসলিম ভোট এবং গুন্ডাদের কৃপায় মসনদে বহাল তবিয়তে। হ্যা, কারন সেই ধর্মানুভূতি। বিজেপির বাড়ন্ত-কারন সেই ধর্মানুভুতি। অভিজিত বা আমি বা মুক্তমনার কোন সদস্য বস্তুবাদি প্রাপ্তির আশায় এসব লিখি নি। বরং প্রান হাতে নিয়েই সত্য কথাগুলো আমরা লিখেছি। বাংলাদেশে উন্নয়নের পথে মূল অন্তরায় এই ধর্মানুভূতি। যেটা কাজে লাগিয়ে চলে সীমাহীন দুর্নীতি আর ক্ষমতা দখল।
এই কণ্ঠ বদলে আমি বিস্মিত নই । এল্যান ব্লুম লিখছেন বুর্জোয়াদের সঠিক সংজ্ঞা জান ? বুর্জোয়া হচ্ছে সেই লোক যে মৃত্যুভয়ে সর্বদা এত ভীত সব সময় “কায়দা করে” নিজেকে বাঁচাতে ব্যস্ত [
Nietzsche, Nihilism and the Philosophy of the Future-পেজ ৬৯ ] ।
সুতরাং যখন এটা পরিস্কার রাষ্ট্রযন্ত্র এবং সাধারন মুসলিমরা নাস্তিক খুনের পক্ষে, পরিস্কার দেখতে পাচ্ছি-ফেসবুকের অধিকাংশ নাস্তিক প্যান্ট ভিজিয়ে ফেলেছে। আফটার অল এই খুনীদের নেটওয়ার্ক সর্বত্র। অসংখ্য টেটর সেল। এরা সবাই আত্মঘাতী জঙ্গী। ওপরতলার নির্দেশ এলেই কোতল করতে নেমে যাবে।
মুশকিল হচ্ছে সেই ভয়ের কথা বলতে পারছে না -এখন শুরু করেছে অভিজিত রায়, বাবু, অনন্তের চিন্তাধারা নাকি র্যাডিক্যাল ছিল!! এগুলো ডাঁহা মিথ্যে কথা। অভিজিত রায় কোন বিকল্প রাজনীতি বা সমাজের কথা লিখে যায় নি। অনন্ত বিজ্ঞান নিয়েই লেখালেখি করত। এরা বন্দুক হাতে কাউকে মারতে বলেছে? বলেছে জীবন , রাষ্ট্র বা সমাজের উদ্দেশ্য এই হওয়া উচিত? যেমনটা কমিনিউস্ট বা ধর্মীয় র্যাডিক্যালরা বলে? এরা শুধু ধর্মের নামে ধাপ্পাবাজি গুলো চোখ খুলে দেখিয়েছে।
ধর্মের ধাপ্পাবাজি, কুসংস্কার তুলে দেখানো-বিজ্ঞানের চর্চা কবে থেকে র্যাডিক্যাল চিন্তাধারা হল ??
ন্যা-এগুলো মোটেও র্যাডিক্যাল না । র্যাশানাল চিন্তাধারা। আর আসল সত্যটা হল, বুর্জোয়াদের আসল ভীত রূপটা এখন বেয়াব্রু। সরি এতগুলো মহৎ প্রানের দুবার মৃত্যু আমি হজম করতে পারবো না ।
ভয় অবশ্যই সবার আছে। কিন্ত ধার্মিক উগ্রপন্থীরা যদি মৃত্যুভয় জয় করে থাকে, আর নাস্তিকরা যদি মৃত্যুভয়ে সর্বদা ভীত থাকে, তাহলে ত বলতেই হবে, যে দর্শন মৃত্যুভয় দূর করেছে -সেই দর্শন অনেক বেশী শক্তিশালী! তা সে দর্শনে যতই জল থাকুক না কেন! আফটার অল লাইফ একটা এক্সিডেন্ট ।জীবনের কোন পরম উদ্দেশ্য নেই । একজন প্রকৃত এথিইস্ট মৃত্যুভয়ে ভীত হতে পারে না -কারন যে জীবনের কোন উদ্দেশ্য নেই -সেই জীবন থাকা বা না থাকার মধ্যে তাহলে পার্থক্যটা কি? পার্থক্য খুব সামান্য। যেটুকু সময় বাঁচছি, সেইটুকু সময় জীবনটাকে কোন মহৎ উদ্দেশ্যে কাজে লাগাতে পারছি কি না ।
ইতিহাসের শিক্ষা এটাই- যে দর্শন যুক্তিতে বা বুদ্ধিতে বা মানবতায় সেরা — সেই দর্শন সামাজিক বিবর্তনে নির্বাচিত নাও হতে পারে । যে দর্শনের মিলিটারী ক্ষমতা বেশী, রিপ্রোডাক্টিভ ফিটনেস বেশী, সেই দর্শন বিবর্তনের নিয়মে জয়ী হয়। যুক্তিবাদি বিজ্ঞানমুখী দর্শনের পেছনে কোন মিলিটান্সি বা মিলিটারী ফোর্স না থাকলে, বিজ্ঞান মুখী সমাজ আসবে না । ইউরোপ বা আমেরিকাতে বিজ্ঞানমুখী সমাজ বিবর্তিত হয়েছে এর মূল কারন এই সমাজগুলি কলোনী দখলের জন্য উন্নত মিলিটারী এবং যন্ত্রশিল্পের ওপর নির্ভর ছিল এক সময়। সুতরাং আজকের যে ধর্মীয় উগ্রবাদি তৈরী হয়েছে, তাদের ডান্ডা না মারা পর্যন্ত আটকানো যাবে না । যুক্তি, লেখা, ফেসবুক স্টাটাসে কিছু হবে না । প্রশ্ন হচ্ছে বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধবে কে ? উত্তর লুকিয়ে আছে সেই মার্কেটে। মার্কেট যদি দেখে, উগ্রপন্থার জন্য সে বাংলাদেশে বাণিজ্য করতে পারছে না -এবং শেখ হাসিনা উগ্রপন্থী দমনে ব্যর্থ, আব্দেল সিসির মতন মিলিটারী শাসক বসিয়ে, মার্কেট নিজের প্রয়োজনে উগ্রপন্থী ক্লীন করবে।
মার্কেট নিজের প্রয়োজনে এই উগ্রপন্থীদের তৈরী করেছে-নিজের প্রয়োজনেই সে তাদের ধ্বংস করবে। এটাই নির্মম বাস্তব। আমরা শুধুই কুর্ম অবতার।
@ফরিদ আহমেদ,
আপনার দুটো আলোচনা দেখে কষ্ট পেলাম …
আপনার কাছে এমনটা আশা করি নি …
দুদিকেই যুক্তি আছে। ধর্মের বিরুদ্ধে কুৎসিত কথা না বলে ভদ্রযুক্তি দিতে থাকলেই যে একসময়ে মুক্তমনারা উগ্রদের কোপের মুখে পরতো না এটা বলা যায় না। পৃথিবীজুড়ে আমরা দেখেছি যে ধর্মবিদ্বেষী বা যুক্তিবাদী, দুই দলের লোকেরাই হুমকীর মুখে পড়েছেন ধর্মীয়মৌলবাদীদের থেকে। কিন্তু একথা অনস্বীকার্য যে ধর্মবিদ্বেষীরা মুক্তচিন্তার ভয়ংকর ক্ষতি করে চলেছেন। মুক্তচিন্তার পক্ষে রয়েছে বিজ্ঞান-দর্শন-মানবিকতা এবং সর্বোপরি ইতিহাসের বিবর্তন। শুধুমাত্র যুক্তি আর মানবতার কথা বলেই লক্ষ লক্ষ মানুষের চিন্তায় আমূল পরিবর্তন সম্ভব। আর এই লক্ষ লক্ষ মানুষের সম্ভাব্য পরিবর্তন নসাৎ হয়ে যায় মাত্র কিছু অর্বাচীন কথা-বার্তার স্ক্রীনশটের কারনে।
বাংলাদেশে মুক্তচিন্তার প্রসারে অভিজিৎ-এর আরো অনেক অনেক কিছু দেবার ছিলো। তার সম্ভাব্য অবদানের দশ শতাংশও সে পূরন করে যেতে পারেনি। মৃত মানুষের মুখে কথা আরোপ করা খুবই আশোভন। তবু আমার মনে হয় আজ অভিজিৎ-ও স্বীকার করতো যে আরো বেশী বই ও প্রবন্ধ লেখার বদলে সামাজিক মাধ্যমে হাজার হাজার ঘন্টা সময় ব্যয় কেবল অর্বাচীন-অনাকাংখিত কথা-বার্তার দায় তার কাধে পড়ার পথই উন্মুক্ত করেছে, মুক্তচিন্তার প্রসারে ততটা কাজে লাগে নি।
আমাদের বুঝতে হবে যে মুক্তচিন্তা, মানবিকতা এসবও একধরনের বিশ্বাস, দর্শন। কুৎসিত, বিদ্বেষ দিয়ে সফলভাবে বিশ্বাস প্রচার করা কঠিন।
আমার মন্তব্যটা দেখতে পাচ্ছি না কেনো!
আমি ফরিদ ভাইয়েরর সাথে সম্পূর্ণ একমত। খুন হবার সপ্তাহখানেক আগে অনন্তর উপলব্ধিও এমনই ছিলো। জীবনের পরম উদ্দেশ্য নেই। শতোভাগ ঠিক। যে দর্শনে মৃত্যুভয় আছে সে দর্শন যেমনই হোক তা শক্তিশালী নয় এটাও ঠিক আছে। তাহলে এইসব সাহসী মানুষেরা ছদ্মনামে কেনো লিখেন? নিজের নাম পরিচয়, ঠিকানা দিয়ে লিখুক। কল্লা তো একটিই ঘাড়ের ওপর। বাঙলাদেশে বসে নিজ নামে লিখে দেখুক প্রতিমুহুর্তে মৃত্যু কীভাবে তাড়া করে ফেরে। অনন্ত সাহসী ছিলো। নিজের নাম, ছবি, ঠিকানা তার ফেসবুকে ব্যবহার করতো। ইচ্ছে করলে সেও ছদ্মনামে লিখতে পারতো। কিন্তু তার উদ্দেশ্য ছিলো সমাজ আলোকিত করার। লিখার জন্যে লিখা নয়। জীবন এক্সিডেন্ট হলেও, যে মরে যায় সে শেষ হয়ে গেলেও প্রকৃতপক্ষে শেষ হয়ে যায় না সবকিছু, পরের দায়টুকু বহন করে যায়, বর্তমান মানুষগুলো।
আলোচনায় ভালো মন্দ দুই দিক দেখলাম। কিছু বলার নাই। দেশ কোন পথে হাটছে কে জানে।
লেখা আর আলোচনা দুটোই ভাল লেগেছে বিপ্লব। বাংলাদেশ কখনোই গনতান্ত্রিক ছিলো না। মিলিটারী শাসন ব্যবস্থার একনায়কতন্ত্রই গনতান্ত্রিক মোড়কে পরিবেশনের চেষ্টা ছিলো। ভিন্ন মত বা পথ তা রাজনৈতিক-সামাজিক যাই হোক না কেন কঠোর হাতে দমন করা হয়েছে। অতীতের ইতিহাস পয়তাল্লিশ বছর ধরে চলে আসছে
শ্রী প্রভাত রঞ্জন সরকার তার আত্মসুখ তত্ত্ব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলছেন — আত্মসুখতত্ব জিনিসটা ভাবজড়তার (dogma)উপর দাঁড়িয়ে আছে।আমাদের সামাজিক ,অর্থনৈতিক ,ভৌগোলিক যত গুলি তত্ত্বের দ্বারা সাধারণতঃ মানুষ পরিচালিত হয় সবগুলো ভাব জড়তার দ্বারা চলে চলেছে ।আত্মসুখের লোভেই মানুষ ভাবজড়তার কাছে বস্যতা স্বীকার করে। এটা ভালো হোক আর মন্দই হোক, এতে অন্যের ভাল -মন্দ যাই হোক আমি তো কিছুটা সুখ পেলুম। অনেক মানুষ যারা লেখা পড়া শিখেছে তারা কি জানেনা যে ভাবজড়তার কাছে বস্যতা স্বীকার করছে ,বুদ্ধিকে জলঞ্জলি দিচ্ছে ,কাজটা ভাল করছে না! সব জানে ,সব বোঝে,সব জ্ঞান পাপী, বুঝেসুঝেও তারা ডগমাকে মানে।এখন প্রশ্ন তারা ডগমাকে মানে কেন ?শ্রী সরকার মহাষয় এর উত্তরে বলছেন কেবল তার মনের কোনে একটা আশা থাকে এই যে ডগমাকে মানলে লৌকিক জগতে একটা জাগতিক সুখ পাব।আর সভ্য জগতেও যেখানে জ্ঞানের বিস্তার কম হয়নি সেখানে দেখছি মানুষ অন্ধের মতো ভাবজড়তার বশীভূত হয়ে চলেছে । আমাদের ভাবজড়তার এই মায়াজাল ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে দিতে হবে । আমাদের ভেঙে খান খান করে দিতে হবে এই ভাবজড়তার লৌহকপাট।
আমি একটা জিনিষ বুঝি না, এত সহজে উগ্রপন্থী জংগীবাদিরা ব্লগারদের বাড়ীর ঠিকানা, তাদের নাড়ী নক্ষত্রসহ সব জেনে যাচ্ছে কিভাবে? অনলাইনে ছবি, নাম ঠিকানা না দেওয়া সত্বেও মৌলবাদীরা ঠিকই সব বের করে ফেলছে। তাহলে কি তারা প্রযুক্তিগত ভাবে এতটাই সমৃদ্ধ যে শুধু অনলাইনে একজন ব্লগার এর আইডি ট্রেস করে তার বাসা পর্যন্ত মৌলবাদীরা পৌছাচ্ছে! অথচ এসব হত্যাকান্ডের পর ফেসবুক, টুইটারে দেওয়া জংগীবাদিদের হত্যার দায় স্বীকার করা আই ডি ট্রেস করে পুলিশ, র্যাব তাদের ধরতে পারছে না। কিন্তু জংগীরা ঠিকই কাজটি পারছে। অর্থাৎ আমাদের পুলিশ, র্যাবও প্রযুক্তিগতভাবে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম জাতীয় জংগী সংগঠনের কাছে অসহায়! নিয়তির কি নির্মম পরিহাস! অথচ আমরা নাকি ডিজিটাল বাংলাদেশে বসবাস করছি!
পুলিশ-র্যাব, সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিটিআরসিতে কি আইটি এক্সপার্টের এতই অভাব যে এই হত্যার দায় স্বীকার করা আইডি গুলোকে ট্রেস করে এর উৎস খুজে বের করতে পারছে না?
” আসল সমস্যা বস্তুবাদি-বাংলাদেশে এত অপ্রতুল সম্পদ -এত বেশী লোক-এই ধরনের মারামারি কাটাকাটি চলবেই।”
জনসংখ্যার সমস্যা সব সমস্যার পেছনেই জ্বালানি সরবরাহ করছে. গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর কারণে প্রান্তিক মানুষদের জীবন যাত্রার ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে. আর ভারসাম্যহীন সমাজে ধর্মের আগাছা ও রাজনৈতিক আগাছা মনে হয় দ্রুত বাড়ে.
ইসলাম আসলে ধর্মীয় মতবাদের আড়ালে মুলত একটি রাজনৈতিক মতবাদ । আমরা যদি ইতিহাসের আলোকে ইসলামের নবী মুহাম্মদের জীবনী পর্যালোচনা করি তা হলে দেখতে পাবো প্রাক-ইসলামী যুগে মুহাম্মদ ছিলেন ৭ম শতাব্দীর একজন অন্যতম মুক্তচিন্তার মানুষ । তিনি সে সময়কার প্রচলিত ধর্ম বিশ্বাস এবং সামাজিক কুসংস্কার এর বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন তাই তাঁকেও সে সময়কার মৌলবাদীরা হত্যা করার চেস্টা করেছিলেন ।
তিনি সে সময়কার বাস্তবতায় ধর্মের মোড়কে আবদ্ধ করে নিজের রাজনৈতিক কর্মসূচীকেই প্রতিষ্টা করেছিলেন । এটি প্রমানিত হয় এই কারণে যেখানে অন্য নবীরা এক একজন নবী হিসাবেই জন্ম নিয়েছিলেন সেখানে মুহাম্মদই একমাত্র নবী যিনি নবী হয়ে জন্ম গ্রহণ করেননি । তিনি ৪০ বছর বয়সে এসে নিজেকে একজন নবী হিসাবে ঘোষণা দিয়েছেন এবং পরবর্তীতে অন্য কোন নবী আসার রাস্তাও বন্ধ করে দিয়েছেন ?
তিনি প্রাচীন ধর্মীয় বিশ্বাস গুলোর তেমন কোন পরিবর্তন করেননি শুধু মাত্র নামসমূহের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন আর বহুতত্ববাদ থেকে একেশ্বরবাদের ধারনা গ্রহণ করেছেন আর বাদবাকি কর্মগুলি সবই রাজনৈতিক । পৃথিবীর কোন নবীই শস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেন নাই কিন্তু তিনি সস্ত্র সংগঠন তৈরি করেছিলেন । পরবর্তীতে তাঁর অনুসারীরা সস্ত্র সংঘটনের মাধ্যমেই বিশ্বে বিশাল সাম্রাজ্য বিস্তার করেছিলেন ।
প্রিয় মডারেটর সাহেব, মনে হয় টেকনিক্যাল কারণে আমার মন্তব্যটা ডিলিট বা মুছে গেছে, একটু দেখবেন কি? যদি জানান সেটা টেকনিক্যাল সমস্যা তাহলে আবার কমেন্টটা করি।
আপনার মন্তব্য মুছে দেওয়া হয়েছে। মুক্তমনায় এখন জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। মুক্তমনার জন্য বা মুক্তমনার সদস্যদের জন্য ক্ষতিকর বিবেচিত হয়, এমন যে কোনো মন্তব্য বা লেখাকেই বিনা ব্যাখ্যায় মুছে দেওয়া হচ্ছে।
ভাল থাকবেন বন্ধুরা!
একজন হুমকি দেয় জাফর ইকবালকে বেঁধে চাবুক মারবে, আরেকজন বলে নাস্তিকের পাশে দাঁড়িয়ে নাস্তিক ট্যাগ খাইতে চাইনা, প্রধানমন্ত্রী বলেন নবি কটুক্তি বরদাশ্ত করবোনা, আরেকজন শাফির দোয়া নিতে হয়রান। পঁচার আর কিছু বাকি আছে? সব চলে গেছে নষ্টদের হাতে। এ দেশ এখন জঙ্গী মৌলবাদীদের অভয়ারণ্য।
বিচার হচ্ছে না বলেই হয়েছে এই হত্যাকাণ্ডগুলি। হুমায়ুন আজাদের খুনের বিচার যদি হতো, রাজীবের খুনের বিচার যদি হতো, তাহলে আর কোনোদিন নাস্তিক ব্লগার খুন হতো না বাংলাদেশে। মোল্লারা ধর্সমনিরপেক্ষ সরকারের হাতে নাস্তিক ব্লগারদের লিস্ট ধরিয়ে দেয় আর সেই লিস্ট অনুযায়ী সরকার ব্লগার ধরে ধরে জেলে ভরে। একের পর এক লেখক খুন হয় আর সরকার প্রধানের পুত্র বলেন,’ উনারা নাস্তিক ট্যাগ চান না। অভিজিৎ নাস্তিক ছিল।’ বিচার তো দূরের কথা বরং প্রত্যক্ষ বাহবা দিচ্ছে খুনীদেরকে।
হুমাইউন আজাদ কি বাংদেসে মরেছে? কে মেরেছে তাকে??? কে খুন ক্ রে ছে তাকে?? যতদুর ম নে পড়ে জার্মানিতে এক হোটেলে মারা যান তিনি। কাগজে এটাও দেখেছি যে অতিরিক্ত মদ খাওয়ার কারনে মারা যান তিনি।
২০০৪ খ্রিস্টাব্দের ১১ আগস্ট রাতে একটি পার্টি থেকে প্রত্যাবর্তনের পর আবাসস্থলে আকস্মিকভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন হুমায়ুন আজাদ। ১২ আগস্ট ফ্ল্যাটের নিজ কক্ষে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। হুমায়ুন আজাদের মৃত্যুর পর জার্মান সরকারের তত্ত্বাবধানে মিউনিখে তার এপার্টমেন্টে পাওয়া সব জিনিসপত্র ঢাকায় তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। ওই জিনিসপত্রের ভেতরেই পাওয়া যায় তার হাতের লেখা তিনটি চিঠি। চিঠি তিনটি আলাদা তিনটি পোস্ট কার্ডে লিখেছেন বড় মেয়ে মৌলিকে, ছোট মেয়ে স্মিতাকে এবং একমাত্র ছেলে অনন্য আজাদকে। অনুমান করা হয়, ওই লেখার অক্ষরগুলোই ছিল তার জীবনের শেষ লেখা।[২১] তাঁর মরদেহ কফিনে করে জার্মানি থেকে ঢাকায় আনা হয়। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে ইসলামি প্রথায় জানাযার নামাজ শেষে তাঁর মরদেহ জন্মস্থান রাড়িখালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানেই ইসলামি প্রথায় সমাহিত করা হয়। –উইকিপেদিয়া
তাহলে তার ম র নের জন্য দায়ি কে??? কার বিচার করতে চান আপনি??? পার্টিতে মদ খেয়ে মরলেও বিচার ক র তে হলে আজরাইলের বিচার ক রতে হবে!!!
হুমায়ুন আজাদকে ইসলামিস্টরা বইমেলার সামনে চাপাতি দিয়ে কুপিয়েছিল, এটা আপনি জানেন না বুঝি? সেই কোপানোর বিচার হয়েছে কি? অথবা সরকারের কোনো সদিচ্ছা আছে কি? পার্টিতে মদ খাওয়ার কথাটি আপনি বারবার বললেন। তাঁকে কোপানোর কথাটি একবারও বললেন না কেন? আজরাইল সাব কেডা? তারে ত চিনলাম না।
অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালকে ‘ব্লগার’ অভিহিত করে তাকে সিলেটে অবাঞ্ছিত ঘোষণার হুমকি দিয়েছেন আওয়ামীলীগ নেতারা।
জিও পাকিস্তান!
অভিজিৎ বা অনন্ত তাদের র্যাশনাল থিংকিং এর জন্য নৃশংসভাবে খুন হয় নি। খুন হয়েছে অন্যের র্যাডিক্যাল কর্মকাণ্ডের দায়ভার মাথায় নিয়ে। বাংলাদেশে যখন থেকে ফেসবুক জনপ্রিয় হয়েছে, তখন থেকেই এই সর্বনাশের সূত্রপাত। এক ধরনের উগ্র নাস্তিক এবং ছদ্ম নাস্তিক উগ্র আস্তিকদের সাথে কুতসিত লড়াইয়ে নেমে গিয়েছিলো ফেসবুকে। যার যতো ঘৃণা, সব তারা উগরে দিয়েছে ফেসবুকে, কিছু কিছু ব্লগেও। এই উগ্র নাস্তিক বা ছদ্মনাস্তিকেরা কেউই স্বনামে ওই সব কর্মকাণ্ড করে নি। উগ্র আস্তিকেরা এদের সব কাজের দায়ভার এনে চাপিয়েছে অভিজিৎ রায় বা অনন্ত বিজয়দের উপর। কারণ, এর দৃশ্যমান, আত্মঘোষিত নাস্তিক এবং অনলাইনে র্যাশনাল থিংকিং এর অগ্রপথিক। বেনামী সেইসব উগ্র নাস্তিকদের ওই সব কাজের প্রতিহিংসা মেটাচ্ছে এখন তারা এইসব সহজ টার্গেটদের উপরে।
প্রকৃত নাস্তিক যারা, তাদের আসলে বিপদ এখন সব দিক থেকেই। উগ্র আস্তিক, উগ্র নাস্তিক, ছদ্ম নাস্তিক সবাই-ই তাদের জন্য এখন ভয়ংকর বিপদ হয়ে এসেছে। একদল বদমাশ কল্লা ফেলার জন্য চাপাতি হাতে মাঠে নেমেছে, আরেকদল নিজেদের অজান্তেই আমাদেরকে এদের চাপাতির নিচে ঠেলে দেবার জন্য ওদেরকে উসকে চলেছে প্রতিনিয়ত।
ফরিদ ভাই
আপ্নের মতন সহজ সরল ভাবতে পারলে কি খুশী হতাম । আসল সমস্যা বস্তুবাদি-বাংলাদেশে এত অপ্রতুল সম্পদ -এত বেশী লোক-এই ধরনের মারামারি কাটাকাটি চলবেই। ভারতেও তাই।
নাস্তিকদের দিয়ে শুরু। নাস্তিক সাবার করে বুদ্ধিজীবি মারবে। তারপরে হিন্দুদের। তারপরে আহমেদিয়া। তারপরে মডারেট মুসলিম। নাস্তিক নিধনে এই মুহুর্তে ডবল লাভ আওয়ামি লীগের।
আমি সহজ সরলভাবেও ভাবি না, আবার তোমাদের মতো দার্শনিকভাবেও ভাবি না। আমি সাদাকে সাদা, কালোকে কালোভাবেই দেখতে অভ্যস্ত। বর্তমানে মুক্তমনা এবং মুক্তমনের মানুষেরা যে সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, সেই সংকটটা সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি জ্ঞাত আসলে আমি। সবচেয়ে বেশি জানি বলে যে সবচেয়ে বেশি বুদ্ধিমান বা জ্ঞানী, তা কিন্তু নয়। আমি যেহেতু বিষয়টার সাথে বলতে গেলে চব্বিশ ঘণ্টাই জড়িত থাকি, স্বাভাবিকভাবেই আমার কাছে সবচেয়ে বেশি তথ্য আসে। এখানকার পানিতে কতোটুকু ঢেউ তুললে বাংলাদেশের উপকূলে কতোখানি জলোচ্ছ্বাস হয়, সেটার খবর আমার কাছেই আসে, তোমাদের কাছে না। আমিই জানতে পারি এখানকার ঢাল তলোয়ার নিয়ে নেমে পড়া নিধিরাম সর্দারের হুংকারের কারণে বাংলাদেশে কতো তরুণকে আতংকিত ইঁদুরের জীবন কাটাতে হয়, প্রাণের শহর ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয় প্রাণ বাঁচাতে।
বাংলাদেশে আওয়ামি লীগের বিরুদ্ধেই কি প্রকাশ্যে মুখ খোলা যায়? নাস্তিক আস্তিক ছেড়ে দিন।
সব থেকে বড় কথা-এটাই বা কি ভাবে ব্যখ্যা করবেন-একটা দেশে যাকে খুশী খুন করা যায়। সেই দেশের প্রেসিডেন্ট পর্যন্ত। এবং তাতে লোকেদের প্রমোশন হয়। এই খুন লাভিং কালচারটা বাংলাদেশে এলো কি করে ? তাজুউদ্দিন বা জিয়া কি নাস্তিক ছিলেন। মারা হয়েছে ত তাদের ও। আমি যেটা সাদা কালো চোখে দেখছি -বাংলাদেশীরা খুনকে ঘৃনা করে না – জাস্টিস হিসাবে দেখে অনেক ক্ষেত্রেই। বা অধিকাংশ ক্ষেত্রে। এই মনোভাব এলো কি করে? এটাই বাংলাদেশে খুনীদের উৎসাহিত করছে। নাস্তিকতা আস্তিকতা কেন-রাজনৈতিক বিরোধের জেরেও ত অসংখ্য খুন হচ্ছে। সেগুলো কি বিদেশ থেকে কেও উস্কাচ্ছে বলে? আপনি বৃহত্তর ছবিটা দেখুন।
এই মুহুর্তে বৃহত্তর ছবি দেখার মতো পর্যায়ে আমরা কেউ নেই বিপ্লব। কেনো এই সংঘবদ্ধ আক্রমন, সেটাকে পুরোপুরি বুঝতে গেলে আরো সময় লাগবে আমাদের। আমরা এখনো ঘটনার সাথে এগোচ্ছি, ঘূর্ণায়মান জলস্রোতের সাথে ভেসে চলেছি অনিচ্ছুক। এই টালমাটাল সময় অতিক্রম হলেই শুধুমাত্র ঠাণ্ডা মাথায় পুরো চিত্র বোঝা যাবে। আপাতত না।
বিদেশ থেকে উস্কানি দিচ্ছে বলেই শুধুমাত্র ব্লগার হত্যা হচ্ছে, এই বক্তব্য আমার মুখে গুঁজে দিতে চাইলে তা হবে খণ্ডিত এবং বিকৃত চিত্র। আমি এই মুহুর্তে যে কোনো ধরনের উস্কানি দেবার বিপক্ষে। আমরা আক্রান্ত হচ্ছি, এবং সেই আক্রমণের মাত্র প্রাথমিক পর্যায় অতিক্রম করছি আমরা। এই মুহুর্তে প্রয়োজন সবার ধৈর্য এবং সহনশীলতা, ঠাণ্ডা মাথায় বিপদগুলোকে মোকাবেলা করা, সেগুলোকে এড়ানোর চিন্তা-ভাবনা করা। এর বদলে জঙ্গিপনা করলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে। আমাদের জঙ্গিপনা ওই অক্ষর, শব্দ আর বাক্য লেখার মধ্যেই সীমাবদ্ধ, কিন্তু এর পালটা হিসাবে ধারালো চাপাতি নেমে আসবে অসহায় কারো গর্দানে। এমনিতেও আসছে, আমাদের কাজ দিয়ে আরো বাড়ানো উচিত না। হাঙরে পরিপূর্ণ সাগরে ডুবন্তপ্রায় মানুষকে রক্ষা করার চেষ্টায় গিয়ে, সেখানে জল নিয়ে দাপাদাপি করলে, কাজের কাজ কিছু হয় না, বরং হাঙরকেই প্রলুব্ধ করা হয়।
আজকে আকাশ মালিক বা সুষুপ্ত পাঠকেরা নিজেদের অদৃশ্যতার সুযোগ নিয়ে যে সব ভয়াবহ মন্তব্য মুক্তমনায় প্রকাশ করছে, সেগুলোর ফল কিন্তু তারা ভোগ করবে না, করবে দেশে আটকে পড়া মুক্তমনা লোকেরা। ওই সব মন্তব্যের স্ক্রিনশট প্রকাশিত হলে, খুনিরা না, সাধারণ মানুষই তাদের পিটিয়ে মেরে ফেলবে। আকাশ মালিক বা সুষুপ্ত পাঠকেরা নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করে ওগুলো লিখুক, একটা মন্তব্যও আমরা মুক্তমনা থেকে মুছবো না, কথা দিচ্ছি। জানি, এটা তারা পারবে না।
যে ক্রান্তিকাল আমরা অতিক্রম করছি, সেটির ভয়াবহতা তোমরা কেউ বুঝতে পারছো না আসলে। করলে, আরো বেশি সংবেদনশীল হতে তোমরা, আরো বেশি সাবধানী হতে, আরো বেশি মায়া-মমতা নিয়ে এই স্পর্শকাতর বিষয়টাকে নাড়াচাড়া করতে। এখানে মানুষের জীবন-মরণের প্রশ্ন জড়িত। সাধারণ আদর্শিক ঝগড়া-ফ্যাসাদ এটি নয়। আমাদের একটা বেঁফাস কথা, একটা ঘৃণার শব্দ, একটা অসংবেদনশীল কাজের কারণে প্রাণ যেতে পারে একজন মানুষের, এ কথাটা মনে রাখতে হবে সবাইকে।
খুনীদের জন্যে কথাটা বেশ উৎসাহ উদ্দীপক হলো। অন্য কথায় খুনের প্রচ্ছন্ন বৈ্দতা দেয়া হলো। হুমায়ুন আজাদের পাক সার জামিন সাদ বাদ বইয়ের উপর হুমায়ুন আহমেদের মন্তব্য এ রকমই ছিল। এর পরে একই কারনে একই কায়দায় আরো অনেক খুন হয়েছেন যারা কোনদিন মুক্তমনায় লিখেন নি। রাজিব হায়দার, ওয়াশিকুর রহমান তাদের অন্যতম। যখনই যাকে খুন করা হয়েছে, সাথে সাথে তার সকল লেখা ও মন্তব্যের স্ক্রিনশট তুলে ধরে খুনের কারণ দর্শানো হয়েছে। ছাগলের চৌদ্দ পুরুষের কোনকালে কোন এক ছাগল ভাটিতে জল ঘোলা করেছিল এমন যুক্তি দেখায়ে উজানের বাঘ ছাগলকে ভক্ষন করার দাবী করবে শিক্ষিত ইসলামিষ্টরা এমন গাধা এখনও হয় নি বোধ হয়।
অনন্তের খুনীরা কী বলছে, কী দেখাচ্ছে সেটা মুক্তমনায় এনে কোনদিন দেখাবার দরকার পড়বে ভাবিনি। সারা দুনিয়া দেখছে, এখানে লুকোচুরির কিছু নেই। হয় বাকস্বাধীনতার পক্ষে, না হয় বিপক্ষে। গালি দিয়েছি না দোয়া করেছি প্রশ্ন সেটা নয়, খুন করা জায়েজ কি না সেটাই মূল কথা।
আপনার সাথে আমার বহু অতীত তর্ক হয়েছে, সেগুলো আর করার কোনো মানে দেখি না। আমাকে আপনারা জামাতি বানাবেন, খুনির সহুযোগী বানাবেন, ধার্মিক নাস্তিক বানাবেন, প্রতিক্রিয়াশীল বানাবেন, আরো বহু কিছু বানাবেন, ওগুলো নিয়ে আমার মাথাব্যথা খুব একটা নেই। এতো দিনে নিশ্চয় বুঝে গেছেন যে, আমি আমার ক্লিন ইমেজ নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাই না। আপনাকে শুধু এইটুকু বলবো যে, নিরাপত্তার খাতিরে ছদ্মনামে লেখেন, সেটাতে আমার কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু, এমন কোনো মন্তব্য করবেন না, যে মন্তুব্যের দায়ভার আপনি স্বনামে হলে নিতে পারতেন না। ছদ্মনামের আড়ালে যাওয়া মানেই দায়িত্বজ্ঞানহীন হয়ে যাওয়া নয়, কিংবা মনের সব ঘৃণা-বিদ্বেষ উগরে দেওয়া নয়।
ফরিদ ভাই
[১] ঘৃণা অবশ্যই কাম্য না । অতি বড় শত্রুর বিরুদ্ধেও ঘৃণা ছড়ানোর বিরুদ্ধে আমি। সুতরাং ওই ব্যাপারে মতভেদ নেই যে আমাদের কাজ শুধুই আলোকিত করা-যুক্তি দেওয়া। আলোকিত হওয়া। এবং সেটার জন্য পরিস্থিতির দোহাই দেওয়ার দরকার নেই । বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও কোন ধর্ম বা গোষ্ঠির বিরুদ্ধে ঘৃণা সম্বলিত লেখা পরিহার করা উচিত। এটা ইউনিভার্সাল প্রিন্সিপাল হিসাবেই থাকা উচিত, কন্ডিশনাল নয়।
[২] কিন্ত আপনার বক্তব্য তাও বেশ সরলীকরন। এইসব খুনের মূল কারন বাংলাদেশে এখন কোন আইন শৃঙ্খলাই নেই । এখন মাসে একটা লাশ পড়ছে, এরপরে দিনে একটা করে গুনবেন। কারন খুনীরা জেনে গেছে, কিস্যু হবে না তাদের। কারন তাদের খুনে আওয়ামী লীগের ডবল মুনাফা। আকাশ মালিক লিখুক বা না লিখুক-এর সাথে কোন সম্পর্ক নেই
[৩] বাঁচার একটাই পথ ব্লগারদের। তারা যদি নিজের উন্নত বুদ্ধিমান বলে মনে করে, নিজেদের বাঁচাতে উন্নত বুদ্ধির ছাপ রাখুক। খুনীরা প্রকাশ্য রাস্তায় চাপাতি দিয়ে খুন করবে। এটা সবাই জানে। সুতরাং দূর থেকে ঘায়েল করা যায় এমন অস্ত্র যেমন পেপার স্প্রে, স্টান গান রিভলবর রাখলেই সমস্যার ৯০% সমাধান এদের হাতে থাকত। আসল নিধিরাম সর্দার তারাই যারা শুধু লেখে, অথচ, আত্ম্ররক্ষার জন্য অস্ত্র চালানো শেখে না ।
যদি কেও ভেবে থাকে মুক্তমনার লেখার কারনে ব্লগারদের লাইফ ডেঞ্জারে-সেটা ভীষন হাস্যকর যুক্তি হবে। চাপাতি চালানো কোন মুমিন একটা কারুর ব্লগ পড়ে নি-শুধু অর্ডার এক্সইকিউট করেছে। ওদের লাইফ ডেঞ্জারে কারন বাংলাদেশে কোন সরকার নেই এখন। আজ নাস্তিকদের মারছে, কাল বুদ্ধিজীবিদের লাশ পড়ল বলে। পরশু সদালাপী মডারেটদের লাশ ও পড়বে। আপনি নিশ্চিত থাকত পারেন। আপনি তখন কি যুক্তি দেবেন?
প্রদীপ নিভে যাবার আগে দপ করে জ্বলে ওঠে.. আমরা পাঠকেরা চাইনা মুক্তমনার পরিণতিও তাই হোক। এই অস্থির সমাজে, এই অস্থির সময়ে মুক্তমনার অনির্বাণ শিখার মতই প্রজ্বলিত থাকা প্রয়োজন….
‘দুর্গম গিরি কান্তার মরু দুস্তর পারাবার হে!
লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি নিশীথে, যাত্রীরা হুঁশিয়ার।।
দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে জল, ভুলিতেছে মাঝি পথ-
ছিঁড়িয়াছে পাল কে ধরিবে হাল, কার আছে হিম্মত।’
বাংলাদেশে কার্যকর সরকার নেই, তোমার এই যুক্তির সাথে একমত আমি। কিন্তু, মুক্তমনায় লিখছে বলে ব্লগারদের লাইফ ডেঞ্জারে, সেটা কেনো হাস্যকর যুক্তি হবে? এটা তো আসলে যুক্তি নয়, হার্ড ফ্যাক্ট। লেখালেখির কারণে মারাটা যৌক্তিক কিনা, সেই প্রশ্ন তো ভিন্ন। কিংবা সরকার কঠোর ভুমিকা নিচ্ছে না নরম ভূমিকা নিচ্ছে, সেটাও পরের আলোচনা। আজকে যদি আমাকে হত্যা করা হয়, সেটা মুক্তমনার সাথে সংশ্লিষ্টতার কারণেই করবে, অন্য এমন কোনো কারণ নেই যে, যে কারণে আমাকে খুঁজে বের করে মারা হবে। বাংলাদেশের সরকারহীনতা হয়তো এই কাজে সহযোগিতা দেবে, মূখ্য কারণটা কিন্তু ওই মুক্তমনাই। ইসলামি মৌলবাদীরা মুক্তমনাকেই টার্গেট করেছে, টার্গেট করেছে মুক্ত-চিন্তার মানুষদেরই।
ফরিদ আহমেদঃ
আমি গত কয়েক বছর থেকে মুক্তমনার ব্লগ পরছি, আপনি আকাশ মালিক এবং সুষুপ্ত পাঠক সম্পর্কে নিচের যে মন্তব্যটি করেছেন, আপনি কি তাদের কয়েকটি লেখার উদাহারন দিতে পারবেন যা আপনার মন্তব্যকে সমর্থন করে।
“আজকে আকাশ মালিক বা সুষুপ্ত পাঠকেরা নিজেদের অদৃশ্যতার সুযোগ নিয়ে যে সব ভয়াবহ মন্তব্য মুক্তমনায় প্রকাশ করছে, সেগুলোর ফল কিন্তু তারা ভোগ করবে না, করবে দেশে আটকে পড়া মুক্তমনা লোকেরা। ওই সব মন্তব্যের স্ক্রিনশট প্রকাশিত হলে, খুনিরা না, সাধারণ মানুষই তাদের পিটিয়ে মেরে ফেলবে।”
আপনার অতিসম্প্রতি লেখাটি “হেরেটিকঃ ইসলাম ধর্ম সংস্কারের জন্য এক উৎপথগামীর প্রস্তাবনা -পর্ব-১” আকাশ মালিক এবং সুষুপ্ত পাঠক যে রকম ইসলামের সমালোচনা করে লেখেন অনেকটা একই ধরনের। অয়াশিকুর বাবু ছদ্ম নামে লিখেও রেহাই পায়নি। চাপাতি দিয়ে যারা কুপিয়ে মারে, তারা নির্দেশ পায় উপর থেকে, আমার মনে হয় উপরের এই নির্দেশ দাতারা ছদ্ম নামের লেখকদের আসল পরিচয় বের করার সামর্থ্য রাখে।
সাজ্জাদ
ফরিদ আহম্মদ , আমি আপনার সাথে সম্পূর্ণ একমত ।
ফেসবুকের মন্তব্য গুলো এত নিম্নমানের যে এরা না আস্তিক না নাস্তিক , কোন বিষয়েই ওদের সঠিক জ্ঞাণ নেই !
এদের বেশীরভাগই আসলে হুযুগে বাঙ্গালী ।
@ ফরিদ আহম্মদ,
Good Taliban বলে একটা কথা আছে না? দেশে এখন Good Taliban এর অভাব নেই।
বাংলাদেশের মৌলবাদীরা সজিব জয় অথবা মৌলানা ফরিদ আহম্মদ কে টার্গেট করে না। কেননা ওরা বিসমিল্যা বলে জনগনের মাঝে মুক্ত মনের জ্ঞান বিতরন করেন। কিন্তু যে দিন হুমাযুন আজাদ, রাজিব, অভিজিৎ, ওয়াশিকুর, অনন্ত………….. এরা কেউই থাকবে না, সব মরে ভুত হয়ে যাবে তখন কিন্তু সজিব জয়, ফরিদ মৌলানার শেষ রক্ষা হবে না। আজকের Good Taliban হটাৎ Bad Taliban হয়ে যাবে। এটা বুঝেন তো? ধন্যবাদ।
আমাকে যে যতোখানি দেয়, আমি সাধারণত তার দ্বিগুন ফেরত দিয়ে থাকি। মৌলানা ফরিদ আহম্মেদের বিপরীতে ফুল্লরানী ফুলবানু বলে শুরু করতে পারতাম। করছি না। যে ছেলেমানুষী বিদ্রুপটা করার চেষ্টা করেছেন, তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বিদ্রুপ করে রাতের ঘুম আপনার হারামও করে দিতে পারতাম। সেটাও দিচ্ছি না। সহজ সরলভাবে একটা প্রশ্ন করছি। পারলে উত্তর দিয়েন। মৌলানা ফরিদ আহম্মেদ যখন কোরান হাতে নেবার বদলে মুক্তমনা হাতে নিয়ে পথ হাটঁছে সবার সামনে, তখন এতো বুঝবান ফুলবানুরা কোন ভয়ে ফুলের আড়ালে লুকিয়ে আছে?
এ কথা কে কাকে বুঝাবে বাংলাদেশে? আর যে ধর্মান্ধ তার কাছে ধর্মের ধাপ্পাবাজি, কুসংস্কার তুলে দেখানো-বিজ্ঞানের চর্চা র্যাডিক্যাল চিন্তাধারা ই।
রাজনীতিবিদদের দীর্ঘ দিনের নষ্টামির ফসল হল আজকের এই নষ্ট বাংলাদেশ। আমাদের নেতারা ভোটের কাছে তাদের বিবেক শিক্ষা-দীক্ষা সব বিসর্জন দিয়েছে,( সব দেশের নেতারাই কম আর বেশী তাই করে)। আর নষ্ট জনগণের সাথে সাথে আওয়ামী লীগের বড় একটা স্যাকুলার অংশেও পচন ধরেছে। মুক্তমনাদের মাথায় যখন কোপ পড়ে তখন তাদের মাথায় এ কোপের আঘাত টের পান না। আসলে পচে যাওয়া জিনিসের উপর বাজার তত্ত্ব খাটেনা। তাই সিসির মত কাঠমোল্লাদের পিঠে ডাণ্ডা মারতে এখানে কেউ আসবেনা , যদি জলপাই থেকে কেউ আসেও সে ডাণ্ডা মারবে মুক্তমনাদের উপরই। যদিও ডাণ্ডা বাদে গণতন্ত্রের ইঁদুর বিড়াল খেলা দিয়ে বাংলাদেশের এই অপশক্তি রোধ করা যাবেনা।
বিপ্লবদা,
আপনার মূল্যায়নটা চমৎকার তবে একটা ছোট্ট প্রশ্ন আছে, মার্কেট হাড বাড়াবে তখনই যখন মাক্যেট সেখানে মুনাফা দেখতে পাবে। পরিতাপের বিষয হলো, আমাদের ভারত উপমহাদেশে মুনাফা আপাততঃ সস্তা শ্রম-বাজার ছাড়া আর কোথাও তেমন ভাবে দৃশ্যমান নয়। আর এই সস্তা শ্রম-বাজারের পণ্যের যে শ্রী, তাতে সহসা বিনিয়োগের সম্ভাবনা খুব কম। একদিকে টেকনোলজীর যে পাল উড়ছে আর অন্যদিকে শিক্ষার যে মান, তাতে পন্যের প্রতি সহসা আকৃষ্ট হবার কোন কারণ নেই। এমতাবস্থায় চৌকির তলায় যে আগরতলার হাল আমল পবার কোন সম্ভাবনা নেই! তাহলে কি এভাবে বেঘোরে প্রাণ হাড়াবার প্রকৃয়াটিই দীর্ঘস্থায়ী হবেনা? এ ধাপটির সংক্ষেপিত হবার কি কোন প্রকৃয়া একন বিদ্যমান? যা থেকে আমাদের আশান্বিত হবার কোন কারণ কাছে?
হাসিনার আসল শক্তি কোথায় বলুনত ? উনার পেছনে ভারত আর চীনের ব্যাকিং আছে। কি করে এল এই ব্যাকিং ? কারন উনি বাংলাদেশ উন্মুক্ত করে খুলে দিয়েছেন ভারত এবং চীনের ব্যবসায়ী শ্রেনীর কাছে। এতে আমি মনে করি বাংলাদেশের ভালোই হচ্ছে। বাংলাদেশের জিডিপি বেড়েছে রেকর্ড হারে-মাথা পিছু আয় ও বেড়েছে। কিন্ত এই ব্যবসায়ীরা যদি দেখে, উগ্রপন্থার জন্য তাদের বিজনেসের ক্ষতি হচ্ছে, তারাই হাসিনার যায়গায় এমন কাউকে বসাবে যে এই উগ্রপন্থ হঠিয়ে নিরাপত্তা দিতে পারবে। আপাতত এই ব্লগারদের মৃত্যু এই বিদেশী ব্যবসায়ীদের জন্য ভাল । কারন বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা দেখে কেও সে দেশে বিনিয়োগ করবে না -ফলে এরা হাসিনার থেকে বারগেন আরো বাড়াতে পারবে।
কিন্ত উগ্রপন্থীরা যেদিন ভারত বা চীনের বিনিয়োগের বিরুদ্ধে পথে নামবে, জানবেন সেই দিন থেকে এই উগ্রপন্থীদের জন্য দুটো দিক খোলা। হয় হাসিনা এদের মারবে। কারন এদের না মারতে পারলে, হাসিনা ভারত এবং চীনের সমর্থন হারাবে। যদি না মারতে পারে হয় হাসিনা পালাবে বা দেখবেন এই দুটি দেশের সমর্থন পেয়ে সিসির মতন একজন মিলিটারী ডিক্টেটরকে মসনদে বসানো হয়েছে।
খালেদা জিয়া এবং তার পুত্র বেশ বোকা। নির্বোধ না হলে কেও ভারত দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে পাকিস্তানের সাথে সখ্যতা করে। এর পরে তারেক জিয়া চীনা কোম্পানীর টেন্ডার বাতিল করে তাইওয়ানের কোম্পানী এনেছিলেন। সুতরাং বিএনপি চীন এবং ভারত কারোর গুড বুকে নেই ।
বর্তমান সময়ের “কুর্ম অবতার”দের কাজ কী?
কলম চলুক।
কচ্ছপদের পিঠে বসেই টুক টুক করে এগোতে থাকে এই মার্কেট সভ্যতা।।