শরৎচন্দ্র চট্রোপাধ্যায় তার “শেষ প্রশ্ন” বইটিতে “কমল” চরিত্রের যে বুদ্ধিদীপ্ত চরিত্র উপস্থাপন করে গেছেন, বর্তমানে দাঁড়িয়েও সে চরিত্র এদেশের মেয়েদের জন্য কল্পনামাত্র!!
কমল চরিত্রের স্বপ্ন শরৎ দেখে গেছেন সেই কবে, আর আজ এতোকাল পরেও সে চরিত্র বহন করতে এদেশীয় মেয়েরা ভয় পায়। তারা বই পড়ে, স্বপ্ন দেখে কিছু করার, অতঃপর সামাজিক ও পারিপার্কশ্বিক বাধা-বিপত্তির কথা ভেবে সেই লালিত স্বপ্নটাকে ধামাচাপা দিয়ে বসে থাকে। তাদের জীবনটা চলতে থাকে চার্জ দেয়া খেলনা গাড়ির মতো, যেখানে জীবনভর চার্জারটা তার পরিবার অথবা পরিবারের বাইরে কোনো না কোনো ছেলের হাতে থাকে।
এক কমল নিজেই যেমন একশটা ছেলেকে দমিয়ে রাখার সামর্থ্য রাখার মতো প্রতিভা নিয়ে জন্ম নিয়েছে তেমনি হাজারো প্রতিভাধর কমলিকারা আছে এইদেশে যারা দেশটাকেই বা বিশ্বটাকেই পাল্টে ফেলার অথবা নতুন কোনো ধারা সৃষ্টির ক্ষমতা রাখে। কিন্তু আমাদের সমাজ এই প্রতিভা লালন করে না, এর মর্যাদা বোঝে না বা বুঝতে চায় না।
আমরা জাতি হিসেবে ভিতু ধরনের। ভয় আমাদের দমিয়ে রাখে। এখানে নিরাপত্তার অভাব, প্রতিভা লালনের অভাব। ছোট থেকে ওখানে মেয়েদের শেখানো হয় আস্তে কথা বলতে, রাস্তায় পা ফেলার আগেই বলে দেয়া হয় মাথা নীচু করে চলতে, তাদের প্রশ্ন করতে দেয়া হয় না, নিজের শরীর সম্পর্কে নানা ধরণের কুরুচিকর কথা মাথায় ঢুকিয়ে দেয়া হয়। নারী শুধুমাত্র কাম বা শরীর না, নয় প্রেম পূজারী বা শুধুমাত্র বাচ্চা উৎপাদনের যন্ত্রবিশেষ। সে একক একটা মানব সত্তা। যে সত্তাটাকে মুরব্বি নামক বিশেষ গোষ্টি যেভাবে খুশি সেভাবে নাচাতে থাকে।
ভবিষ্যতে এই কমলিকারা নিজেদের দাসি বা দেবী নয়, স্বাধীন কোন সত্তাও নয় বরং পুরুষ নামক গাছের পরগাছা ভাবতে থাকে!
এদেশের মেয়েরা বড় হয় তাদের সমস্ত চিন্তাধারা বিসর্জন দিয়ে অথবা ছোটকালেই এমনভাবে তার উন্মুক্ত বুদ্ধিদীপ্ত চোখ, মনকে বন্ধ করে দেয়া হয় যে মেয়েটি নিজেও নিজেকে বোঝা বা জড় খেলনা গাড়ির মতো বা পরগাছা ভাবতে শুরু করে।
কমল চরিত্রের কথা বাদ দিয়ে বর্তমান কমলীকা চরিত্রের দিকে তাকাই। আমরা আমাদের দেশ নিয়ে গর্ববোধ কর। এটা স্বাধীন বাংলাদেশ তাই? নাকি সোনার বাংলা তাই? কোনোটাই না। স্বাধীনতা সিলগালা মারা দেশটার মধ্যে আলাদা আলাদা ভাবে আমরা প্রত্যেকে পরাধীন। নিজ দেশে নিজের চিন্তাধারারর বুদ্ধিবিকাশ কেউ করতে পরে না।
সতীদাহ প্রথারর মতো বর্বর প্রথা বহুকাল আগে বিদায় নিলেও তার বেহুদা হাড্ডি পড়ে আছে এখনো। সেই হাড্ডির খচখচানিতে এখনো দাহ হতে হচ্ছে শত সহস্র নারীদের প্রতিনিয়ত। নারী পুরুষ নাকি একে অপরের পরিপূরক অথচ পরিপূরকের সংজ্ঞাটাই বোধহয় কেউ জানে ন। এর ভিত্তিতে নিদারুণ অথচ কঠিন সত্যি একটা কথা বলা যায় “ঘরে ঘরে তসলিমা নাসরিনের মতো মেয়ে জন্ম নিক”। আমাদের সমাজ পরিবর্তন এক তসলিমা করতে পারেনি, কিন্তু হাজারো তসলিমা জন্ম নিলে সব পরিবর্তন হতে বাধ্য থাকবে।
খাই খাই স্বভাবধরী লোকদের দিকে আঙ্গুল তুললেই নারীবিদ্বেষী অথবা খারাপ চরিত্র বলে সহজেই আখ্যা দিয়ে দিব। অথচ খাই খাই যে বা যারা করছে করে যাচ্ছে, তারা দিব্যি গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরবে, সাথে শক্তি হিসেবে তো ধর্মের জ্ঞান আছেই। ধর্ম একটা দোহাই মাত্র সে যে কোন ধর্মই হোক, যেসব দোহাই দিয়ে পুং-লিঙ্গধারী ব্যক্তিবর্গ আদিকাল থেকে এইকাল পর্যন্ত নিজেদের এককভাবে প্রতিষ্ঠা করে গেছে।
মেয়েরা পারে। পুরুষদের থেকে হাজার ধাপ বেশি এগিয়ে যাবে যদি সবকিছু একদিনের জন্যও মেয়েদের উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। সেই একদিন সময় দেয়া হবে না কারণ পুরুষজাতি কখনোই চাইবে না মেয়েরা তাদের থেকে এগিয়ে যাক।
লেখাটাকে নারীবিদ্বেষী মনোভাব বলে নিজেদেরকেই লজ্জ্বা দিবেন না নিজেরা। বিশ্বাস করুন একটা মেয়ে চাইলে দুনিয়ার সব পুরুষদের স্বর রুদ্ধ করে দিতে পারে, সকল পুরুষের আনন্দ কান্না নিভিয়ে দিতে পারে জন্মের প্রথম দিনেই। কিন্তু, সে সেটা করে না কোনো দিন করবেও না। কারণ সে চায় ছেলে বা মেয়ে যেই হোক না কেন তাকে পৃথিবীর আলো দেখাতে। কিন্তু সেই আলোর মিছিলে মেয়েরাই অন্ধকারে পরে থাকে। এক পা এগিয়ে দিতে না পারলেও এক পা যদি পিছিয়ে দেয়ার জন্য লোকের অভাব হয় না।
বছরের একদিন নারী দিবস করে সারা বছর পুরুষ দিবসের গণ্ডি থেকে নিজেকে মুক্ত করে চলাটা এখানে কঠিন বটে তবে অসম্ভব না। একদিনের নারী দিবসের দরকার নাই। ৩৬৫ টা দিনই হয়ে উঠুক নারী পুরুষ সবার। আর নারী পুরুষ লিঙ্গ ভেদাভেদ না করে মনুষ্যরূপে সবার সামনে সবাই উপস্থিত হোক সকল প্রকার জড়তা সরিয়ে।
আজকের মেয়েশিশুটি যেন নিজেকে সেই খেলনা গাড়িটি না ভেবে মানুষ ভেবে সকল গুণাবলী নিয়ে বড় হতে পারে, ছেলে শিশুটিকে জ্ঞান দিন মেয়েটিকে স্বজাতীয় ভাবার, সমান ভাবার সে যেন তার শিশ্নটাকে তার শক্তি হীসেবে না ভাবে।
আর তাদের জন্য সুষ্ঠধারা আমাদেরই গড়ে দিতে হবে সবাই এক হয়ে।
একমত আপনার সাথে
শরৎচন্দ্র মোটের ওপর পুরুষতান্ত্রিকতা থেকে মুক্ত ছিলেন না সেটা তার বেশিভাগ লেখায় না্যিকাদের “চোখের জল আর লুচিভাজা”র প্রাবল্যেই পরিস্ফুট।শক্তিমান নারী চরিত্র অনেক কম তার লেখায়। এজন্যই বাংলা সিনেমায় “শরৎচন্দ্রীয় নারী” একটা বিশিষ্ট স্টেরিওটাইপও হয়ে গেছে। মেয়েরা কি পারে আর পুরুষ কি করে তাকে আটকায় – এই লেখাতে খুব বেশি জেনারাইলেশন হয়ে গেছে মনে হয়। পুরুষতান্ত্রিকতা, যেটা গোড়ার সমস্যা, সেটা নিয়ে লেখা দরকার ছিলো। নারী/পুরুষ নির্বিশেষে পুরুষতান্ত্রিকতায় আকৃষ্ট হয় বা হতে পারে।
I replied to your remarks on my comments of 26th April straight away. Your remarks were:
“কাঠমোল্লারা কী করবে সেটা রেখে আপনি কী মনে করেন সেটাই বলুন। এটা একটা গ্রেইট স্টেইটমেন্ট কেন হলো একটু ব্যাখ্যা করুন প্লিজ।”, “জঘন্য জেনেও এখানে তা প্রকাশ করলেন কেন?” and “আপনার অনুমান যে ভুল তা এখন বুঝতে পেরেছেন নিশ্চয়ই।”
But as is the case, Mukto Mona has deleted my response. They did not give me the chance to answer your impolite remarks. Well, you are a valued person for Mukto Mona; so a commoner like me stands no chance to defend himself.
@Muktar Ahmed Mukul, আমি মুক্ত-মনার একজন সাধারণ পাঠক হিসেবে বলছি, আপনাকে বার বার বলার পরও ইংরেজিতেই লিখছেন। বাংলা না পারলে মন্তব্য থেকে বিরত থাকুন। বাংলা লিখার যোগ্যতা অর্জন করে মুক্ত- মনার পাঠক হোন।
পুরুষ নন্দিত এবং নিন্দিত দুটোই হতে পারে নারীর কারণে আবার নারী গর্বিত এবং লজ্জিত দুটোই হতে পারে পুরুষের কারণে।
তাই আসো সব ভেদাভেদ ভুলে যাই, আসো তুমি আমিতে আর আমি তুমিতে সমর্পিত হই। তাহলে হৃদয় আরও প্রশস্ত হবে, আত্মা আরও শুদ্ধ হবে, বিবেক জাগ্রত হবে, দৃষ্টিভঙ্গি সঠিক
হবে, সম্পর্ক আরও মজবুত হবে, জীবন আরও উপভোগ্য হবে
এবং সর্বোপরি এই পৃথিবীটা আরও সুন্দর হবে।
“ঘরে ঘরে তসলিমা নাসরিনের মতো মেয়ে জন্ম নিক” – That is really a great statement. But in that case ‘Kath Mulla’ will drive all Taslimas out of our country.
Biplab Rahman has commented “চাই পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, নারী-পুরুষ যুগল সন্ধি, উভয়ের অংশগ্রহণে নারী মুক্তি আন্দোলন। চলুক” – His is a utopian statement.
We should look at the real situation. If a good proportion of educated Bangladeshi women feels liberated under ‘burqa’ or if most of uneducated Bangladeshi women feels use of ‘burqa’ as religious obligation; what for your article is? It would be appropriate to address the basic issues of our society first than to day dream.
Sorry Priyodarshini if you find my remark to be rude. But don’t worry; Mukto Mona may not publish my comment. They are different these days.
@ Muktar Ahmed Mukul
কাঠমোল্লারা কী করবে সেটা রেখে আপনি কী মনে করেন সেটাই বলুন। এটা একটা গ্রেইট স্টেইটমেন্ট কেন হলো একটু ব্যাখ্যা করুন প্লিজ।
মুকুল সাহেব, মুক্তমনায় ইংরেজিতে মন্তব্য নিরুৎসাহিত করা হয় জানি, তবুও আপনার মন্তব্য ছাপা হয়েছে, আপনার তো মুক্তমনাকে ধব্যবাদ দেয়া উচিৎ।
জঘন্য জেনেও এখানে তা প্রকাশ করলেন কেন?
আপনার অনুমান যে ভুল তা এখন বুঝতে পেরেছেন নিশ্চয়ই।
আশা করি অন্য একটি লেখায় যে আপনি আপনার মন্তব্য ছাপা না হওয়ার অভিযোগ মুক্তমনার উপর তুলেছেন তা এখন বুঝতে পেরেছেন। আমি মুক্তমনার মডু নই, শুধু একজন পাঠক হিসেবে আমার বক্তব্যটুকু পেশ করলাম।
চালিয়ে যান, পরিবর্তন আসবেই।
@চলে পথিক
আপনার মতামত যথেষ্ট গুরুত্ব রাখে। আমারো সেটাই মনে হয়।
আলোচনা সমালোচনার মাধ্যমেই এসব উঠে আসবে।
ধন্যবাদ আপনার গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যের জন্য।
প্রিয়দর্শিনী ,
আপনার লেখা ও অন্যদের মন্তব্যগুলো দেখে মনে হয় সবাই যার যার দৃষ্টিকোন থেকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছে । আমাদের উচিৎ নারী-পুরুষের মাঝে এই জাতীয় একটি অমানবিক ও অসম্মানজনক অবস্থা কি ভাবে তৈরি হল তা সঠিক ভাবে অনুসন্ধান করা । যদি আবিষ্কার করা যায় তাহলে হয়তো এ জাতীয় একটি পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ সম্ভব বলে আমি মনে করি । আসলে আমি বলতে চাচ্ছি সমস্যাটা অনেকটা চিহ্নিত এখন আলোচনা হওয়া উচিৎ এর সমাধান নিয়ে ।
সমাজে যে পুরুষরা নারীদের নিপীড়ন করে তারা কেউই কিন্তু পরিবার বিছিন্ন নয়, তারা প্রত্যেকে কোন না কোন নারীর পুত্র,ভাই বা পিতা তা হলে তারা নিপীড়ক কেন হয় ? যেখানে সে একজন নরীর গর্ভ থেকে জন্ম নিয়ে নারীরই পরিচর্যায় বেড়ে উঠে ?
সাধারণ ধারণা হচ্ছে নারী প্রাকৃতিক কারণেই কোমল এবং মমতাময়ী তা না হলে প্রচণ্ড প্রসবযন্ত্রণার পর সে তার সন্তানকে আর কখনও বুকে জড়িয়ে ধরতো কিনা সন্দেহ আছে । আর প্রাকৃতিক কারনেই পুরুষের মধ্যে রয়েছে পশুত্ব,পুরুষের এই পশুত্বই তাকে দিয়েছে পেশীশক্তি ও নিষ্ঠুরতা যা তাকে উৎসাহ যোগায় নারী নিপীড়নিব নারীর রয়েছে পুত্র সন্তানের প্রতি এক ধরনের পক্ষপাতিত্ব ও পুরুষ সঙ্গীর মধ্যে নিজের নিরাপত্তা খোজার এক ধরণের প্রবণতা এবং নারীর সঙ্গমের তীব্র আকাংখা এক্ষেত্রে পুরুষকে উৎসাহ যোগায় ।
আদিম সমাজ ব্যবস্তার দিকে যদি আমরা দৃষ্টি দেই তাহলে দেখতে পাই মানুষ যখন শিকারি জীবন থেকে কৃষিজীবী হয়ে উঠে তখন থেকেই নারীর গৃহিণী জীবনের শুরু । কারণ ফসল জমিয়ে রাখার জন্যই মানুষের স্থায়ী বসত নির্মাণের প্রয়োজন হয়ে পড়ে সে থেকে নারী হয়ে পড়ে গৃহবন্দী ।
বাংলাদেশে মানুষের বসতী স্থাপনের ইতিহাস কিন্তু খুব বেশী পুরানো নয়,এই ভাঁটি অঞ্চলের আদি অধিবাসীরা বসবাস করতো নৌকায় যাদের আমরা বেদে সম্প্রদায় হিসাবে জানি । এই সম্প্রদায়ে পরিবারের প্রধান ছিল নারী । এই বেদে সম্প্রদায়ের নারীদের শারিরিক গঠন ছিল অন্তান্ত আকর্ষণীয় তাই এই অঞ্চলে বিভিন্ন সময়ে আগত নানান ধর্মের,বর্ণের পর্যটকদের সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠার মধ্য দিয়ে গড়ে উঠে নানা জনপদের যেগুলো সে সময় ‘পুঞ্জি’নামে পরিচিত হতো । আর এ ভাবেই বাংলার আদি নারী নিজেই বরণ করে বন্দিত্ব ।
পৃথিবীর কোথাও আসলে নারী এখন পর্যন্ত তার পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জনে সক্ষম হয়নি কখনও হবার সম্ভবনাও আমি দেখিনা,তবে কোথাও কোথাও ক্ষমতাবান হয়ে উঠতে পারে ।
এই মুহূর্নাতে বাংলাদেশে নারীর প্রতি ভালবাসা আর সম্মান প্রদর্শনের জন্য জরুরী হছে পুরুষের জাগ্রত বিবেক এটি জাগিয়ে তোলার জন্য প্রয়োজন দরিদ্রমুক্ত,শিক্ষিত ও আইনের প্রতি অনুগত জাতি হিসাবে নিজেদের গড়ে তোলা ।
@বিপ্লব রহমান
ধন্যবাদ গ্রহণ করুন। 🙂
লেখার ফোকাস পয়েন্টটি ঠিকই আছে। চাই পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, নারী-পুরুষ যুগল সন্ধি, উভয়ের অংশগ্রহণে নারী মুক্তি আন্দোলন। চলুক।
#আকাশ মালিক
আলোচনা সমালোচনা আসবেই, যুগে যুগে চলেও এসেছে। আমার সেই তরুন টিচারের বদৌলতে আমি আপনাদের সম্মান করতে পারছি ঠিক-ই কিন্তু যে বা যারা আমার চিন্তার জগৎটা ছোট বেলাতে আটকে দিতে চেয়েছিলো তাদের উপর মন থেকে যে নিন্দাধারা ঝরছে সেটা মিশে যাইনি।
জাতিবিভাজন করার কারণ ছেলেরা যা পারে মেয়েরা তা পারে, কিন্তু মেয়েরা যা পারে ছেলেরা তা পারে না! স্বাভাবিক চিন্তা।
আপনে আপনার বৌকে একটা এড়িয়া দেখায়ে দিয়ে মুক্ত করে দিলে তো হবেনা! আর মুক্তির স্বাদ সবাই হজম করতেও পারবে না! যে কখনো আলো দেকেনি সে হুট করে আলোতে এলে চোখে আগে অন্ধকার দেখবে তারপর আস্তে আস্তে সয়ে গেলে সে বুঝবে এটা আলো!
আমি যদি এখন বিয়েটাকে বাচ্চা জন্ম দেয়াটাকে শেকল হিসেবে দেখি তাহলে বলাই যাই আপনার স্ত্রী পরাধীন।
আপনি বলেছেন “আপনার মেয়েরা আপনার চে হাজার ধাপ লক্ষ ধাপ এগিয়ে চলে”!!! এই কথা থেকেই কি প্রমাণ হয়না মেয়েরা চাইলেই পুরুষদের থেকে হাজার ধাপ এগিয়ে যেতে পারে। 🙂
মরিয়মের মতো বাচ্চা জন্ম দেয়া তো সম্ভব না, কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখেন বাংলাদেশের শতকরা কজন মেয়ে জেনে শুনে, হিসেব করে, প্রাপ্ত বয়সে, আনন্দের সহীত বাচ্চা নেয়! এদেশে মেয়েদের বিয়েই হচ্ছে কম বয়সে কিছু বোঝার আগেই হয়ত তার মধ্যে নতুন অস্তিত্ব টের পাচ্ছে!
সেখানে এমন কথা বলতে বাধ্য আমি।
আলোচনা সমালোচনা আমার জ্ঞানী করে তুলবে, নতুন কিছু শিখবো প্রতিদিন সেটাই প্রত্যাশা। হালকা ধরণের লেখা থেকেই হয়ত ভালো কিছু লিখতে পারবো।
ধন্যবাদ।
@প্রদীপ দেব
নিষিদ্ধ তো আছে বটেই। মূলত আমাদের দেশে সাধারণত মেয়েরা মুক্তভাবে চলতে গেলেই তাকে উগ্রতা হিসেবে ধরা হয়!
যেমন ধরুন ড্রেসাপের ভিত্তিতে, ছেলেদের সাথে সমতালে মেশার ভিত্তিতে।
এসব এখনো শহরাঞ্চলগুলোতেই গ্রহণযোগ্যতা রাখে না সব পরিবারে আর ব্যপক বিস্তৃর্ণ গ্রামাঞ্চরের কথা বাদই দিলাম।
এমন ছোট খাটো বহু জিনিস আছে যেসব জোড়া লাগালে বড় ধরণের সমস্যার দেখা দিবে।
হূমায়ূন আজাদ একটা কথা বলেছিলো “কেউ নারী হয়ে জন্মায় না, আমাদের সমাজ রাস্ট্র ও পরিবার আমাদের নারী হতে বাধ্য করে ফেলে”।
এটাও এক ধরণের ব্রেণ ওয়াস!
যেমন একটা মেয়েকে চোখে বুকে আঙ্গুল দিয়ে বোঝানো হয় তুমি একটা মেয়ে, তুমি একটা নারী, তোমার কাজ ঘর সামলানো, বাচ্চা পালা, পড়াশোনা ভালো করলে ভালো বর জুটবে হ্যেন ত্যেন…. তেমনি কিন্তু একটা ছেলেকে শেখাতে হয় না!
সে অটোমেটিক্যেলি বুঝে যায় তার শক্তিস্তর তার সমাজে মূল্যায়নের কারণ! পুরুষের শিশ্ন আছে নারীর নেই এটাই কি পার্থক্য?
পুরুষরা এমনি এমনি কখনোই কিছু করে দিবে না, কিছু করতে যারা সাহায্য করবে তাদের সংখ্যা অতি সামান্য। যেটা নারী অগ্রগতির জন্য সমুদ্রে খরকুটো টাইপ। যা করার নিজেরা নিজ উদ্রোগে করতে হবে নাহলে পাছে এরূপ কথাও শুনতে হবে ” উচ্চ শিখরে উঠেছো এই পুরুষেরি হাত ধরে”!
এখানে জাতিবিভাজনের কোন প্রয়োজন ছিল না। আমি তো আমার স্ত্রীকে সকল কিছু সকল দিনের জন্যে উন্মুক্ত করে দিয়েছি, কই তিনি এক পা ও তো সামনে এগুতে চান না। অবশ্য আমার মেয়েরা আমার চেয়ে হাজার ধাপ নয় লক্ষ ধাপ এগিয়ে চলে। ‘পুরুষজাতি কখনোই চাইবে না মেয়েরা তাদের থেকে এগিয়ে যাক’ কথাটা সঠিক হলোনা।
এটা আরেকটা বালখিল্যপনা কথা হয়ে গেল। বিবি মরিয়মের মত একা একা সন্তান জন্ম দিতে পারলে না হয় এমনটা বললে হয়তো মানাতো। যে প্রিয়দর্শিনী তার পূর্বের লেখায় উল্লেখ করেন-
সেই প্রিয়দর্শিনী কাছ থেকে এই হালকা ধরনের আজকের লেখাটা আশা করিনি। তবু লেখা চলুক, আলোচনা সমালোচনা অব্যাহত থাকুক।
লেখার শুরুর ‘শ’ বাদ পড়েছে।
লেখার মূলভাবটা বোঝা গেছে। কিন্তু কিছু কিছু ব্যাপারে আরেকটু বিস্তার দরকার ছিল। যেমন
এখানে লেখকের বক্তব্য পরিষ্কার নয়। এমন কিছু কি আছে যেটা মেয়েদের জন্য একেবারেই নিষিদ্ধ? আর নিষেধ যদি থাকে সেটা ভাঙার যুদ্ধ কি মেয়েদের করতে হবে না? নাকি তারা আশা করতে থাকবেন যে পুরুষরা তা এমনি এমনিই করে দেবেন মেয়েদের জন্য? যেমন বাংলাদেশে নাচের স্কুল যেমন আছে কুংফু কারাতে শেখার স্কুলও আছে। ক’জন মেয়ে কারাতে শিখে?
কলম চলুক।