তত্কালে বিজ্ঞাপন বলিতে বুঝাইতো সংবাদপত্রের শ্রেণীবদ্ধ বিজ্ঞাপন, এক কলাম এক ইঞ্চি, সাদাকালো ইত্যাদি। আমরা যাহারা কচিকাঁচার দল, ইঁচড়ে পাকা বলিয়া খ্যাত, তাহাদের তখনো অক্ষরজ্ঞান হয় নাই। তাই বইপত্র গিলিবার কাল খানিকটা বিলম্বিত হইয়াছিল। মূদ্রিত বিজ্ঞাপনের বিজ্ঞানটুকু বয়ান করিব যথাসময়ে। ভূমিকাপর্বে সংক্ষিপ্ত বাল্যকাল পরম্পরা সারিয়া লই।
সেই বেলা আমার বাবার শয়নকক্ষে কাকভোরে বাজিয়া উঠিত প্রমানাকৃতির একখানি ফিলিপস রেডিও। ঘুম ভাঙিত বিবিসি বাংলা অনুষ্ঠানের বাদ্যের শব্দে। মানসী বড়ুয়ার সুমষ্টি কণ্ঠস্বর শুনিতাম ঘুম ঘুম চোখে দাঁত মাজিতে গিয়া। কাঠকয়লাতেই পরিবারের সকলের দন্ত মাঞ্জনের কাজ চলিত।
তবে শৈশবকালেই সাতের দশকে ঢাকার বাসায় কাঠকয়লার তোলা উনোন আর কেরোসিনের কুকারের পাশাপাশি গ্যাস সংযোগ আসিয়াছিল। তখন আমাদিগকে দেওয়া হইয়াছিল টুথপষ্টে-টুথব্রাশ। এখনো মনে পড়ে, পেষ্টের নাম ছিল “পিয়া”, উহার রঙখানি ছিল সবুজাভ, টিনের টিউবের গায়ে একখানি হরিণের ছবি আঙ্কিত হইয়াছিল। টুথপেস্টের সহিত হরিণের কি সর্ম্পক, কে জানে?
শেষ বিকেলে আমাদিগের ডিউটি ছিল খেলাধূলা সাঙ্গ করিয়া আট-দশখানি হ্যারিকেনে তেল ভরিয়া চিমনি মুছিয়া বাতিগুলিকে প্রস্তুত করা। তখন বৈদু্যতিক সংযোগ আসিয়াছে মাত্র। তবে উহার নিরবিচ্ছিন্নতা ছিল দুর্লভ। তাই এই বিকল্প ব্যবস্থা।
এখনো স্পষ্ট মনে পড়ে, রেডিও অফিসের আপার ক্লার্ক কাম কেরানী মাতা সন্ধ্যা বেলা বাসায় ফিরিয়া প্রমাণাকৃতির দুই চুলায় পুরো পরিবারের রান্না বসাইয়াছেন। রান্না ঘরের মাদুরে আমরা ছোটরা সকলে স্লেট, চক, ছেড়াখোঁড়া বইখাতা গুছাইয়া এক সারিতে পড়িতে বসিয়াছি। মা’র হাতে থাকিত লম্বা একটি বাঁশের হাতা। গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ হইতে ভাত-তরকারি রান্না করিবার ওইসব হাতার যোগান হইতো, ইহাদের আঞ্চলিক নাম- নাকর। পড়াশোনার গাফিলতি বা দুষ্টুুমির শাসি্ত ছিল নাকরের একেকটি মোক্ষম বাড়ি। নাকরের অভাবে তালপাখার হাতলের বাড়িও বিস্তর খাইয়াছি।
বর্ণমালা পরিচিতি, শিশুতোষ ছড়াসমূহ মুখস্ত করিতে করিতে গলা বুজিয়া আসিলে মা’র চিল চিত্কার জুটিত, “শব্দ করিয়া পড়’ সকলে! নইলে আজ ভাত বন্ধ!”
পড়াশোনা শেষে রান্না ঘরেই পাত পড়িত সকলের। অধিকাংশ সময়ই রাতের মেনু্য ছিল লাল চালের ভাপ ওঠা ভাত ও আলু দম। কখনো বা আলু-পটলের ঝোলের সহিত এক-আধখানা ডিম বা মাছের কিয়দাংশ থাকিত। কচুঘঁেচু, ভর্তা-ভাজিও থাকিত একেক সময়। মাছ-মাংসের কথা তেমন মনে পড়ে না। সকলে সোনামুখ করিয়া তাই খাইয়া উঠিতাম। খাবার নিয়া কখনো কাহারো উচ্চবাচ্চ শুনি নাই। আর সকাল বিকাল শিশু খাদ্য হিসেবে ছিল এক গ্লাস করিয়া গ্ল্যাক্সো বেবি মিল্ক বা হলুদাভ ওভালটিন। রাতে বলদায়ক হিসেবে বরাদ্দ ছিল জনপ্রতি একখানি করিয়া কর্ড লিভার অয়েলের স্বচ্ছ হলুদ বড়ি।
বাবা কাজে বাইরে গেলে বড় ভ্রাতা-ভগ্নিগণ স্কুল-কলেজ হইতে আসিয়া রেডিও দখল করিতো। একেকদিন সকালে গান শুনিতাম আব্দুল আলীম:
চিরদিন পুষিলাম এক অচিন পাখি
ভেদ পরিচয় দেয় না আমায়
ওই খেদে ঝুরে আঁখি
চিরদিন পুষিলাম এক অচিন পাখিপোষা পাখি চিনলাম না
এই দুঃখ তো গেল না
আমি উপায় কি করি?
একবার চেনাল পেলে চিনে নিতাম
যেতো মনের ধুকধুকি
(আমার) যেতো মনের ধুকধুকি
চিরদিন পুষিলাম এক অচিন পাখি…
ইহার পর সারাদিন নানা নাটক, গান, কথিকা, কৃষিকথা, নাটক, ছায়াছবির গান, সৈনিক ভাইদের জন্য অনুষ্ঠান “দুর্বার”, পরিবার পরিকল্পনার নাটিকা ইত্যাদি তো ছিলই। রবিবার ছিল সরকারি ছুটির দিন। ছুটির দিনের অলস দুপুরে রেডিওখানি থাকিত মা-খালাদের দখলে। পান-দোক্তা মুখে লইয়া শোনা হইতো রবিবারের বিশেষ নাটক। আকাশবাণী কলিকাতাতেও দুপুর বেলা ছিল বিশেষ নাটক। ঢাকার নাটক শেষ হইতেই শুরু হইতো কলিকাতার নাটক। খানিকটা অহং করিয়া জানাই, রেডিও টিউনিং-এ আমার ছিল বিশেষ দক্ষতা। তাই নাটক-গল্পগাছার অনুষ্ঠান শুনিবার বেলা সত্ত্বর ডাক পাইতাম।
দোতলার বাসার ছাদে ঘুড়ি উড়াইবার, সাপলুডু আর লাটিম খেলাবার নানা রঙের দিনগুলিতে এই করিয়া রেডিও মিশিয়াছিল দৈনন্দিন জীবন যাপনে। তবে সেই বেলা অনুষ্ঠানাদির বদলে নানান রকম বিজ্ঞাপন আমাদের হূদয় হরণ করিয়াছিল। অতি সংক্ষপ্তি রেডিও বিজ্ঞাপন একেকখানা প্রচার হইবার পর “টুইট” করিয়া একখানি শব্দ হইতো। ইহাতে বিজ্ঞাপন বিরতি বুঝাইতো।
সেই সময় আমরা সুর করিয়া, দল বাধিয়া প্রায়শই রেডিও বিজ্ঞাপন গাহিতাম। ইহার মধ্যে কয়েকখানি এইরূপ:
রুমা ব্রেসিয়ার (২)
পড়তে আরাম
দামে কম
সব মহিলার পছন্দ তাই
রুমা ব্রেসিয়ার (২)…
আরেকখানি:
আহা মায়া, কি যে মায়া…
এই বড়ি খেলে
রবে স্বাস্থ্য ভালো সবার…
বলা বাহুল্য দুইখানি বিজ্ঞাপনই ১৮+, দ্বিতীয়খানি ছিল জন্মনিয়ন্ত্রণ বটিকার। এই বিজ্ঞাপন দুটি গাহিবামাত্র বয়স্কদের বাক্যবান যথেচ্ছ জুটিত কপালে।
আরো মধুময় রেডিও বিজ্ঞাপন ছিল এইরূপ:
গ্লোরি বেবি স্যুট!
বেবি স্যুট! বেবি স্যুট!
গ্লোরি বেবি স্যুট!
হইহই! রইরইরই!
হরেক রকম বাহারে,
গ্লোরি বেবি স্যুট!…
সুর করিয়া আরো গাহিতাম:
হাঁটি হাঁটি পা পা চলো না
ছোট্টমনি কোথায় যায় বলো না
বাটার দোকানে বুঝি যায় রে
বাংলাদেশে ছোট জুতা
বাটা বানায়…
সংবাদ শুরু হইবার ঢঙে ছিল আরেকখানি বিজ্ঞাপন:
এখন শুরু হচ্ছে সুন্দরীতে খবর। বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সুন্দরীরা এখন আমিন জুয়েলার্সে দারুণ ভীড় করেছেন। কারণ বাহারি সব গিনি সোনার গয়না তৈরি করে একমাত্র আমিন জুযেলার্স।
আরেকখানি টেইলার্সের বিজ্ঞাপনের শেষাংশটুকু মনে পড়িতেছে:
বস টেইলার্স! ১৪, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, গুলিস্তান। আমাদের কোথাও কোনো শাখা নেই। …
এই করিতে করিতে রেডিও যুগের আমলেই পাশের বাসায় আসিয়াছিল সাদাকালো টেলিভিশন। ছাদে ছিলো উহার সুইচ্চ এন্টেনা। চারখানি পায়ার উপরে কাঠের বাক্স ও সম্মুখে দুইখানি সাটার সমেত সেই টিভি দেখিতাম আমরা মেঝেতে বসিয়া। বাচ্চা ভূত ল&ইয়া তৈয়ার ক্যাসপার কাটর্ৃন শো ছিল জীবনের অধিক প্রিয়। টারজানের জঙ্গল জীবনের বীরত্ব দেখিয়া আঁ আঁ করিয়া চিত্কার করিয়া বাড়ি মাথায় তুলিতাম। লজ্জার মাথা খাইয়া বলিতেছি, সেই বেলা আরো একখানি ১৮+ টিভি বিজ্ঞাপন আমাদের কচি মাথা চিবাইয়া খাইয়াছিল। ছায়ছবির গানের দৃশ্যের ন্যায় নাচন-কুদন ও বিস্তর রং-ঢং ছিল ইহাতে।
নায়ক (সুর করিয়া): ও গো সুন্দরী কন্যা, তোমার রূপের বাহার, তোমায় বউ সাজাইয়া লাইয়া যামু আমার বাড়ি।
নায়িকা (সুর করিয়া): না না না, তোমার বাড়ি যামু না। মালা শাড়ি না দিলে বিয়া বমু না।
নায়ক: সত্যিইইই?
নায়িকা: হুমমম।
নায়ক: বাজার থিকা আনমু কন্যা প্রিয় মালা শাড়ি…
নায়িকা: সেই শাড়ি পইড়া বউ সাইজ্জা যামু তোমার বাড়ি…
আরো মনে পড়িতেছে “উল্টোরথ” পত্রিকায় সাদাকালো মূদ্রিত বিজ্ঞাপন “এবিসি” এবং “রূপা” অন্তরবাসের বিজ্ঞাপন চিত্রের কথা। প্রথমটিতে সংক্ষপ্তি বসনা নারী দেহ যেমন কেৌতুহল যোগাইয়াছিল, দ্বিতীয়খানায় জাঙ্গিয়া-স্যান্ডো গেঞ্জিতে নায়কের সুঠাম দেহ তেমনই মন কাড়িয়াছিল। লাস্যময়ী সুন্দীর গোপন রূপ রহস্য যে “লাক্স” শাবান, বিজ্ঞাপনেই এই মহাজ্ঞান আহরিত করিয়াছিলাম।
সেই বেলা ফকার প্লেন হইতে ঢাকাই ছায়ছবির হ্যান্ডবিল বিলি করা হইয়াছিল। কি তাহার নাম, কি বিষয়, বর্ণনা, এইসব কিছুই আর মনে নাই। ওই হ্যান্ডবিলের পিছন পিছন অনেক দেৌড়াইয়া একখানি সংগ্রহ করিয়া বাসায় আনিয়া বড়দের দিয়া পড়াইয়া জানিয়াছিল যে, ইহা নতুন ছায়াছবির বিজ্ঞাপন, এইটুকু মনে পড়ে মাত্র। আর সে সময় প্রেক্ষাগৃহে নতুন সিনেমার (গ্রাম বাংলায় ইহাকে Èবই’ বলা হইতো! কেন, কে জানে?) আগমন জানানো হইতো ত্রিমাত্রার বিজ্ঞাপনে।
অর্থাত্ হুড খোলা ঘোড়ার গাড়িতে দশাসই সিনেমার বিল বোর্ড লাগাইয়া মাইকে বাজানো হইতো ছবিখানার গান। কখনো কখনো টুকরো সংলাপও থাকিত। আর বিরতিতে চলিত উচ্চস্বরে ব্যান্ড পার্টির বাদ্যবাজনা। এই রূপ বিজ্ঞাপনের আওয়াজ পাইবামাত্র আমরা সব কাজ ফেলিয়া চলিয়া যাইতাম দোতালা বাসার ছাদে। রেলিং হইতো ঝুঁকিয়া দেখিতাম এক সারিতে চলমান বিজ্ঞাপনের ঘোড়ার গাড়ি।
এইসব নিরীহ বিজ্ঞাপনের সঙ্গে বাস করিতে করিতে আমা দিগের শৈশব ঘুচিতে থাকে। ক্রমেই বাতাসে মিলিয়া যায় পন্ডস ফেস পাউডার, নিভিয়া ক্লোড ক্রিম, তিব্বত স্নো, কসকো গি্লসারিন সোপ, আর গোলাপী গ্লুকোজ বিস্কুটের সুবাস। …তবু বায়স্কোপের নেশার মতোই বিজ্ঞাপনের নেশা আমায় ছাড়ে না। এখনো সময় পাইলেই রেডিও-টিভিতে হা করিয়া একের পর এক বিজ্ঞাপন গিলিতে থাকি। ভুলিতে বসি, কি যেন ছাই একখানি অনুষ্ঠান চলিতেছিল! …
_______
পূর্বকথন:http://biplobcht.blogspot.com/2013/06/blog-post_355.html
খুব উপভোগ্য পোস্ট তবে হাটি হাটি পায়ে পায়ে চলো না এই বাটা জুতোর বিজ্ঞাপনটি কিন্তু নব্বইয়ের শুরুর দিকের
তাই? ভুল হইলেও হইতে পারে। চলুক
আমারও মনে হয় এটি সত্তুরেরই, একটা সাদাকালো ভিডিও দেখতাম বলে মনে পড়ছে। তবে বয়সের সাথে সাথে স্মৃতি-বিভ্রম হওয়াও বিচিত্র নয়!
স্মৃতিকাতর করিয়া দিলেন আপনার লেখনির আঁচড়ে। আমার বেতার শ্রবণ মূলত আশির দশকে শুরু হইয়াছিল। বিজ্ঞাপন তরঙ্গে সিনেমার উপর দশ পনেরো মিনিটের যে বিশেষ বিজ্ঞাপন প্রচারিত হইত – হা করিয়া চোখ বন্ধ করিয়া গিলিতাম। শুনিতে শুনিতে মুখস্ত হইয়া যাইতো।
এই গানের চিরদিন “চীরদিন” হইয়া গেলো কি অর্থপূর্ণভাবে?
লেখনি চলিতে থাকুক।
মহাশয়ের ঝুলিতে বেশ কিছু গল্পগাছা রহিয়াছে বোধকরি। তা ক্রমেই প্রকাশ্য হইবেক, আশা করি।
চ-ব্যাটার বুক চিড়িয়া বানান শুদ্ধি দিয়াছি, টাইপো’র নিস্তার নাই। শুভেচ্ছা রহিল।
ধন্যবাদ পুরানো দিনগুলোর স্মৃতি ফিরিয়ে আনার জন্য। প্রথমটি (রুমা) ছাড়া বাকী সবগুলো বিজ্ঞাপনই স্মৃতিতে খুব পরিস্কার। দেখতে দেখতে চার দশক কিভাবে পার হয়ে গেল বুঝতেই পারলাম না; মনে হয় এই তো সেদিন।
ইচড়ে পক্ক আরো কতগুলি আছে জানিয়া যারপরনাই প্রীত হইলাম! আপনার বয়ানও শুনিতে আগ্রহ প্রকাশ করি। হা শৈশব! 🙂
ঠিক আছে, তেমন সরস না হলেও বলি!
ছেলেবেলায় শোনা রেডিও/টিভির বিজ্ঞাপনগুলোর চটকদার সুর আর কথা কেবল আমাদের মতো অল্পবয়সীদেরই না, আমাদের গুরুজনদেরও ভালভাবেই প্রভাবিত করতো। এর প্রমাণ পেলাম প্রাইভেট পড়তে গিয়ে। আমাদের আইডিয়াল স্কুলের একজন ব্যক্তিত্ববান, গুরু-গম্ভীর, আদর্শ শিক্ষকের কাছে আমরা দশম শ্রেণীর চার ছাত্র-ছাত্রী তখন অঙ্ক আর বিজ্ঞান পড়ি। যদিও আমাদের স্যার ছেলে আর মেয়েদের একসাথে পড়ানো পছন্দ করেন নি, কিন্তু ছেলে দুটি নেহায়েত গো-বেচারা (?) কিসিমের হওয়ায় এই ব্যবস্থা মেনে নিয়েছিলেন। প্রায় প্রতিদিনই আমাদের দুজন সহপাঠিনীর একজন তার ছয়-সাত বছরের ভাইকে সাথে নিয়ে আসতো। সদা-চঞ্চল এই ছেলেটির সাথে অচিরেই আমার বেশ সখ্যতা গড়ে উঠে এবং এরি ধারাবাহিকতায় একবার স্যারের উপস্থিতিতেই সে আমার সাথে খুনসুটি করতে শুরু করে। আমাদের রাশভারী স্যার বেশ বিরক্ত হয়েই তাকে জিজ্ঞেস করেন, খোকা তোমার নাম কি? সে বলে, আমার নাম জয়। স্যার অগ্রপশ্চাৎ কোন কিছু না ভেবেই বলে বসেন, কি জয় ফোম ট্যাবলেট? যেন হটাত বজ্রপাতে আমাদের সবার কলম থেমে যায়; আমরা কোনমতে হাসি চেপে, মাথা নিচু করে, কি করা উচিত বুঝতে না পেরে খাতার দিকে চেয়ে থাকি। একসময় ‘হিরণ্ময় নিস্তব্ধতা’ ভেঙ্গে স্যার আবারও বলেন, না না তুমি জয়বাংলা। আমি ভাবতে থাকি, স্যারও কি কখনো একা একা গুন গুন করেন, ‘সুখের আরেক নাম……। সেদিন আমরা কেউই চক্রবৃদ্ধি সুদের হিসাব মিলাতে পারি নি; স্যারও নির্ধারিত সময়ের খানিক আগেই বিদায় নিয়েছিলেন।
হা হা হা! কি কাণ্ড!! 🙂
রাজা’কে রসাতলে ফেলিয়া মায়ারানী প্রীতি, এইরূপ কম্মকে কি বলিয়া অভিহত করিবো ?
উহা কেবলি মায়ার খেলা! ইয়া হাবিবি! 😉
রানী’তে মায়া না থাকিলে রাজা একাই নানা প্রকারে মায়াহীন রানী সন্তষ্ট করিতেন। এই দয়াল রাজা’র উল্লেখ বিনে রচনা অসন্পুর্ন ইয়া-হাবিবি। আজিকার নগর পরিচ্ছ্নকারী মেথর/মেয়র’দের নির্বাচনী প্রচারণার মতই রাজা’র প্রচার কার্য ঝুলিত ও চলিত। মনে কি পড়ে ইয়া-হাবিবি 🙂
কস্কী মমিন? :পি
পুরোনো দিনের বিজ্ঞাপনের সাতকাহন পড়লাম। বেশ ভালো লাগ্লো বিজ্ঞাপনের অজানা অধ্যায় জেনে।নতুন দিনের বিজ্ঞাপনের ফিরিস্তি ক্যাম্নে দেন আপনি তাও দেখার আশায় রইলাম।
আপনাকেও সবিশেষ ধন্যবাদ। উহা তো বিভিন্ন খুচরো নোটে লিখিয়া চলিতেছি এখনো। আধুনা বিজ্ঞাপন কীর্তি লইয়া এই নোটখানি পড়িবেন, বিনীত অনুরোধ রহিল।
http://blog.mukto-mona.com/biplob/32057
পুনশ্চ জানাই, বায়স্কোপের নেশার মতোই বিজ্ঞাপনের নেশা আমায় ছাড়ে না। এখনো সময় পাইলেই রেডিও-টিভিতে হা করিয়া একের পর এক বিজ্ঞাপন গিলিতে থাকি। ভুলিতে বসি, কি যেন ছাই একখানি অনুষ্ঠান চলিতেছিল! … 🙂
লেখাখানি পড়িতে পড়িতে বড়ই মজা পাইলাম। মনে হইল যেন বা অদ্য হইতে বহু দিন পুর্বের কোন সময়ে অবস্থা করিতেছি।
মাননীয়া, আপনাকে ধন্যবাদ দিয়া খাটো করিবো? নাহ, থাকুক!
Hi Mukto Mona!,
Why have you deleted my comment? Did I write something wrong or used bad words? Your action is absolutely unfair.
@ Muktar Ahmed Mukul
আপনি বাংলায় মন্তব্য লিখুন। অভ্র ফন্ট ডাউনলোড করে নিন, মোবাইল থেকেও বাংলায় লিখতে পারবেন।
বাংলা ব্লগে ইংরেজিতে মন্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। দয়া করে বাংলায় লিখুন।
মডারেটরের কট্টর অবস্থানকে স্বাগত জানাই। যদি আক্ষেপ রহিল মুকুল মহোদয়ের মন্তব্যখানি মিসাইবার জন্য। হায় মুরাদ টাকলা! 🙂
ওয়ান্ডারফুল দাদা, সাহিত্য রসে ভরপুর লেখাখানি পড়িয়া বড় পুলকিত হইলাম। সময়ের প্রেক্ষিতে কিছু কিছু জিনিস বোধ হয় বাদ পড়িয়া গেল যেমন, কলের গান (wind-up gramophone)। মাটির রেকর্ডের উপর হর্ণের সামনে বসা কুকুরের ছবি। আহ হারে বাড়িসুদ্ধ মা চাচী, ছেলে মেয়েরা জড়ো হয়ে নীনা হামিদ, নিলুফার ইয়াসমিন, আব্বাস উদ্দিন, আব্দুল আলীম শুনতাম। তারপর যখন বড় ফিতার টেইপ রেকর্ডার আসলো সেই সময়ের কোন স্মৃতি আপনার নেই?
সে সময়েও তো এ দেশে মুসলমান ছিল, গান, মেলা, যাত্রা, সিনেমা, থিয়েটার, আনন্দ-উৎসব সবই ছিল। শহরের খবর জানিনা, গ্রামের অবস্থা বিশেষ করে আমাদের এলাকায় বড়ই শোচনীয় দাদা। মানুষ জীবন্ত না মৃত হাঁটে বুঝা যায় না। জীবনের সাধ বলতে যেন তাদের কিছুই বাকী নেই। এখন সেখানে গানের চেয়ে ওয়াজ বেশী, শরিষার চেয়ে টুপি বেশী, নারীর চেয়ে বোরকা বেশী। চোখের সামনে মাত্র কয় দিনে দেশটা কী হতে কী হয়ে গেল।
আপনার বিনীত পাঠ ও প্রতিক্রিয়ার জন্য সবিশেষ ধন্যবাদ জানিবেন।
কিন্তু খেয়াল করিবেন, বিজ্ঞাপন বন্দনা সমেত এই রচনায় বলা হইয়াছে সাতের দশকের শৈশব কাহিনী। সেই বেলা কলের গানের পরিবর্তে আসিয়াছে, থালার মতো বিশালাকায় প্লাস্টিকের রেকর্ড প্লেয়ার। আরো পরে কাধেঁ ঝুলাইবার ব্যবস্থা সমেত প্রমাণাকৃতির টেপ রেকর্ডার। সেই বেলা এইসব রেকর্ডারেই শুনিয়াছিলাম, আব্দুল আলীম, ফিরোজা বেগম, আজম খান, হেমাঙ্গ বিশ্বাস, এমনকি বব ডিলান! কিন্তু সে এক ভিন্ন কথন। উহা বর্ননা করিয়াছি পৃথক এক ব্লগাড্ডা বয়ানে, এ্ই নোটের সর্বনিম্নে বিবৃত লিংকে বলা হইয়াছে সেই পূর্বকথন।