জেলখানায় বসে অসমাপ্ত আত্নজীবনীতে বাঙালির চরিত্রের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছেন, ‘আমাদের ভাষাতে একটা বিশেষ শব্দ আছে, যা অন্য অনেক ভাষায় নেই। পরশ্রীকাতরতা। পরের শ্রী দেখে যে কাতর হয়, তাকে ‘পরশ্রীকাতর’ বলে। ঈর্ষা, দ্বেষ সকল ভাষাতেই পাবেন, সকল জাতির মধ্যেই কিছু কিছু আছে, কিন্তু বাঙালিদের মধ্যে আছে পরশ্রীকাতরতা। ভাই ভাইয়ের উন্নতি দেখলে খুশি হয় না’। ১৮৮৯ সালে তরুন রাসেল লিখেছিলেন, ‘একটি ভাষা কোন ধরনের ধারণাগুলোকে ভালভাবে প্রকাশ করতে পারে, তা থেকে আমরা সেই জাতির চরিত্র সম্পর্কে ধারণা পেতে পারি। উদাহরণস্বরুপ, ফরাসীতে ‘স্পিরিট’ বা ‘স্পিরিচুয়াল’ শব্দগুলো আছে, অথচ এই ধারণাগুলো ইংরেজীতে ব্যাখ্যা করতে কষ্ট হয়। যেখান থেকে আমরা উপসংহারে পৌঁছুতে পারি, এবং বাস্তবে এই দুই জাতিকে পর্যবেক্ষণের দ্বারাও নিশ্চিত হতে পারি যে, ইংরেজদের চেয়ে ফরাসীরা বেশি স্পিরিচুয়াল’।
কোন ভাষায় কোন শব্দ আছে, তা দিয়ে যেমন সেই জাতির চরিত্রের ব্যাপারে কোন স্থির সিদ্ধান্তে আসাটা দুষ্কর, তেমনি কোন ভাষায় কোন শব্দের ব্যবহার নেই, তা দিয়েও সেই জাতির চরিত্র বোঝা দায়। কৃতঘ্ন বা পরশ্রীকাতরতা শব্দটা ইংরেজীতে নেই বটে, কিন্তু ইংরেজীভাষীরা যে এসব জিনিস বোঝে না, এসবের অভিজ্ঞতা লাভ করে না বাস্তবজগতে, সেটা বলা যায় কি? উলটো উদাহরণ দিইঃ দার্শনিক সিসেরো বলেছিলেন, গ্রীকদের ভাষায় ল্যাটিন শব্দ ineptus এর কোন প্রতিশব্দ নেই (English: having no sense of what is fitting/impertinent/tactless)। সিসেরো ব্যাখ্যা দিলেন – এই শব্দের অনুপস্থিতি এটাই প্রমাণ করে যে, গ্রীকদের মধ্যে এই দোষটা এত বেশিমাত্রায় বিদ্যমান ছিল যে, তারা সেটা খেয়াল পর্যন্ত করত না।
বাংলাভাষায় সেক্সের কোন সহজলভ্য প্রতিশব্দ নেই – যা আছে তা হয় সরাসরি চ-বর্গীয়, যা শুনলে আমরা লজ্জায় লাল হই, অথবা সংস্কৃত কলেজের বারান্দা থেকে আমদানী করা কাব্যময় শব্দাবলী, যেমন রমণ/মৈথুন/রতিক্রিয়া/যৌনকর্ম ইত্যাদি। এ থেকে কি আমরা এই সিদ্ধান্তে আসব যে, সেক্স আমাদের সমাজে কোন আলোচ্য বিষয় নয়, নাকি সেক্সের সাগরেই আমরা ডুবে আছি? নাকি, আমরা আসলে সেক্সের ব্যাপারে বাস্তব জগতেও হয় চ-বর্গীয় নয় রমণ/মৈথুনের মতন অলংকারময়, এই বাইনারীতেই আবদ্ধ?
অনেকের কাছে শুনি ‘ফ্রি সেক্স’ নামক একটা ধারণার কথা। অনেকদিন বিদেশে থাকি, সেই সুবাদে দেশের অনেকেই জানতে চান, আসলে এই ফ্রি সেক্স কি বস্তু? সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে আসা কয়েকজন ক্রিকেট সাংবাদিক সম্ভবত এই ফ্রি সেক্সের চোরাবালিতেই আটকে গিয়ে এখন অস্ট্রেলিয়ার জেলখানায় কাল কাটাচ্ছেন। মেলবোর্নে এমন একজন সাংবাদিকের সাথে আমার কথা হলো পেশাগত কারণে – তিনি আইনী ঝামেলায় জড়িয়ে যাওয়াতে তার সেই ফ্রি-সেক্সের ঘোর অবশ্য ততক্ষণে কেটে গেছে। তিনি আমাকে বললেন, ভাই, এই দেশে মেয়েরা এত খোলামেলা পোশাকে ঘোরাফেরা করে, ক্লাবে/পাবে বসে ওয়াইন খায়, অথচ সামান্য এক গায়ে হাত দেওয়া নিয়ে এত রিএক্ট করবে আমি ভাবিনি। আমি তাকে কিছু বলি না। মনে মনে বলি, ব্যবহারিক শিক্ষাই আসল শিক্ষা। ফ্রি সেক্স কাকে বলে, শিখে যাও বাছা।
আশা করি বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কথা অনেকেই এখনো ভোলেন নি। এই বিশ্বকাপ ছিল বাঙালির বড় সাধের বিশ্বকাপ, যেখানে তারা অস্ট্রেলিয়ান মিডিয়াতে ব্যাপক কাভারেজ পেয়েছে। এই সব কাভারেজের প্রায় পুরোটাই পজিটিভ, শুধুমাত্র একটা যৌন অপরাধের খবর ছাড়া। সেই যে সাংবাদিক পেয়ার রহমানের সামান্য ভুলবুঝাবুঝির খবরটা…মনে পড়ছে তো? আমাদের অবশ্য এই সব ব্যাপারে স্মৃতি খুবই দুর্বল। অনেক সহজে ভুলে যাই। মনে করিয়ে দিচ্ছি –
শিরোনামঃ ‘ইভটিজিং’-এর অভিযোগে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির সাংবাদিক পেয়ার রহমান অষ্ট্রেলিয়ায় গ্রেফতার
খবরঃ বিশ্বকাপ ক্রিকেট কাভারে করতে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে ‘ইভটিজিং’-এর অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক পেয়ার রহমান। অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার পথে বিমানে এক কোরিয়ান নারীকে উত্যক্ত করেছিলেন তিনি। এরই জেরে সিডনি এয়ারপোর্টে নামার সঙ্গে সঙ্গে তাকে ধরে নিয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়া পুলিশ। **** তবে ইভটিজিংয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে সংশ্লিষ্ট টিভি চ্যানেলটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘটনাটি ইচ্ছাকৃত নয়। ঘুমের ভেতর অনিচ্ছাকৃতভাবে ওই নারীর শরীরে সাংবাদিকের হাত পড়ে। এতে ভুল বুঝাবুঝি তৈরি হয়। স্থানীয় দূতাবাস বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
আসল ঘটনা হল, এটা ইভ-টিজিং ছিল না, ছিল ধর্ষণের চেষ্টা, এবং সজ্ঞানকৃত। অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ যখন কাউকে গ্রেফতার করে, এবং বিমান থেকে সরাসরি জেলে ভরে, সেখান থেকেই অপরাধের মাত্রা আঁচ করা যায়। এখানে পেয়ার রহমানের পক্ষে সংশ্লিষ্ট টিভি চ্যানেলটির বক্তব্যটি লক্ষণীয় – তারা একটা গালগল্প বানিয়েছেন দেশী কায়দায়। বাংলাদেশের কোন বিমানে এই ঘটনা ঘটলে তারা হয়তো ওই মেয়ের পোষাক-আষাকের উপরেই দায় চাপিয়ে দিতেন। সাংবাদিক সমিতি হয়তো তাদের একজন নিরীহ সদস্যের চরিত্রে কালিমা লেপনের জন্য কোন কোন অসাধু মহলকে দায়ী করতেন। সেই মেয়েটির ছবি আসতো পত্রিকায়, সে সমাজের চোখে নিগৃহীত হতো।
এই টিভি চ্যানেলটির কর্তৃপক্ষই সমগ্র বাংলাদেশের প্রতিনিধি যেন!
অস্ট্রেলিয়ার কোন বিমানবন্দর থেকে যৌন হয়রানীর অপরাধে কোন বাংলাদেশীর গ্রেফতারের ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এই বিশ্বকাপেই আরো একাধিক সাংবাদিক যৌন হয়রানির দায়ে গ্রেফতার হয়েছেন অথচ সেগুলি পত্র-পত্রিকায় আসে নি। এর আগে ২০১৪ সালের ২ এপ্রিল একই ধরণের একটি ঘটনা ঘটেছিলো। সেদিন সিডনি বিমানবন্দর থেকে ৩২ বছর বয়স্ক এক বাংলাদেশী ট্যুরিস্টকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে ১৯ বছর বয়সী এক সুইস মেয়েকে অভিযোগ করেছিলো যে ২৯ মার্চ ২০১৪ সালে বাংলাদেশী ওই নাগরিক তাকে ডার্লিংহার্স্ট রোডের এক ব্যাকপ্যাকার্স হোস্টেলে থাকাকালীন আক্রমন করে এবং তার সাথে অশোভন ব্যাবহার করে। মেয়েটি পুলিশের কাছে অভিযোগ করার সময়ে বাংলাদেশী লোকটি ইতিমধ্যেই সেই হোস্টেল ছেড়ে পালিয়েছিল, তবে পুলিশ বিমানবন্দরগুলোতে তার নামে রেড অ্যালার্ট জারি করে। ২ এপ্রিল বিমানে চেপে বাংলাদেশে আসার সময় বিমান থেকে গ্রেফতার হন তিনি। এর আগে ২০০৬ সালে মেলবোর্নে কমনওয়েলথ গেমস কাভার করতে এসেও বাংলাদেশী সাংবাদিকেরা দেশের নাম উজ্জ্বল করেছিলেন এভাবেই।
ফ্রি সেক্স কাকে বলে, তার সংজ্ঞা দেওয়া আমার কর্ম নয়। তবে বাংলাদেশে যারা মেয়েদের অশালীন চলাফেরা দিয়ে ধর্ষণকে বা শ্লীলতাহানিকে জায়েজ করেন, অস্ট্রেলিয়াকে ইহুদী-নাসারাদের দেশ বলে বর্ণনা করেন, সেই সব মানুষেরাও এই দেশে এসে কি এক জাদুবলে সাধু হয়ে যান। রাস্তাঘাটে, বাজারে, কর্মস্থলে বা সৈকতে তারা নানারকম মানুষের সাথে মেশেন, কিন্তু কারো সাথে অশ্লীল আচরণ করেন না। কাউকে ধর্ষণে প্রবৃত্ত হন না। তারপরেও ধর্ষণ হয়তোবা ঘটছে তাদের বেডরুমে, বিবাহ নামক পর্দার আড়ালে, তবে ঘরের বাইরে তারা কি করে এমন মহাপুরুষ হয়ে যান? এই কারণটা উদ্ধার করতে পারলেই পেয়ে যাবেন অস্ট্রেলিয়ার কিম্বা যে কোন পশ্চিমা দেশের ফ্রি সেক্সের আসল রহস্য। যারা যারা সত্যি সত্যিই পশ্চিমা সমাজের ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং ফ্রিডম অফ চয়েস আত্নস্থ করতে পেরেছেন, তারা আমার নমস্য। আমাদের সিংহভাগের জন্য ব্যাপারটা সেরকম নয় বলেই জানি।
এই লেখাতে অনেকে অনেক মন্তব্য করেছেন এবং বেশিরভাগ মন্তব্যেরই সুর হলো বাংলাদেশ পশ্চিমের ব্যাপারে কিছু জানে না | আমার মনে হয় গোটাকতক বাংলাদেশীদের সাথে কয়েকজন অস্ট্রেলীয় বা কোরীয় নারী কিরূপ আচরণ করেছে সেটা দেখেই অস্ট্রেলিয়া খুব ভালো দেশ আর বাংলাদেশীরা নারীদের নিম্নচক্ষে দেখে এমন সিদ্ধান্তে আসাটা বড় হঠকারিতা হয়ে যাচ্ছে |
আমাদের আর একটু পরীক্ষা করে দেখতে হবে | যে বাংলাদেশী গায়ে হাত রাখতেই অস্ট্রেলীয় শ্বেতাঙ্গিনী ভীষনভাবে প্রতিক্রিয়া দেয় , সেই একই নারী যদি কোনো শ্বেতাঙ্গ পুরুষ গায়ে হাত রাখত তাহলে কিভাবে প্রতিক্রিয়া দিতেন সেটাও বিচার করে দেখা দরকার | তিনি একই ভাবে প্রতিক্রিয়া দিতেন ? ওই কোরীয় নারীটি কোনো কোরীয় পুরুষ-এর সাথে কি একই রকম ব্যবহার করতেন যে ব্যবহার তিনি ওই বাংলাদেশির সাথে করেছিলেন ?
এই বিদেশীরা আমাদের মত আচরণ করে না | তাদের সামান্য আচরণ দেখে তাদের বিষয়ে দুমদাম সিদ্ধান্ত নেয়াটা আমার মতে উচিত কাজ নয় |
এই ভিডিও টা দেখেন। মেয়েরা কিভাবে রিএকট করে তার একটা আইডিয়া পাবেন।
<iframe width="500" height="375" src="https://www.youtube.com/embed/watch?v=PxuUkYiaUc8
দেখে কিছুটা জ্ঞানপ্রাপ্তি হলো কাজী সাহেব | সাদা চামড়ারা যদি ফুল প্যান্ট পরে কথা বলে তাহলে মেয়েরা সিকিউরিটি ডাকে আর লেংটি পরে কথা বললে মেয়েরা তাদের কার্ড দেয় যা ছেলেরা লেংটির মধ্যে লুকিয়ে রাখে | আমাদের বাংলাদেশীদের এটাই ভুল হয়েছে | ওই বাংলাদেশী লোকটি লেংটি পরে এপ্রোচ করেনি তো তাই অস্ট্রেলিয়ান শ্বেতাঙ্গিনী ক্ষেপে গেছে |
বুঝলাম | এ থেকে শিক্ষা পাওয়া যায় যে শ্বেতাঙ্গিনী দের সামনে লেংটি পরে যেতে হবে | তবেই attractive লাগবে | আর ভিডিওর শিক্ষাটাই তো হলো attractive হও unattractive হয়ো না |
সমস্ত এশিয়ান পুরুষদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা |
কালো সিলেবাস নিয়ে পড়ালেখা করা অন্ধকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যে কালো মনের শিক্ষকরা শিক্ষা দেয়, তারা আর অপ-জ্ঞানের বাহক ছাত্ররা নাস্তেকদের বিরুদ্ধে যে অপবাদটা দেয় সেটা হলো ফ্রি সেক্সের দেশ ভর্তি নাস্তেক, অথবা নাস্তেকরা সমাজে থাকলে দেশটা ফ্রি সেক্সের দেশে পরিণত হয়ে যাবে!
** ফ্রি সেক্সের দেশ = দিবারাত্রি ২৪ ঘন্টা রাস্তা-ঘাটে-মাঠে-বাজারে সবাই সারমেয় সম্প্রদায়ের মতো ‘কানেকশন লাগিয়ে’ দন্ডায়মান থাকে যে দেশের নাগরিকরা।
আমি মনোবিজ্ঞানের ছাত্র নই, তবুও আমার ধারনা যার যে বিষয়ে ঘাটতি আছে, সেই বিষয়ে তার ফ্যান্টাসি থাকে। গলির ক্রিকেটে যে ‘০’ রানে আউট হয়, রাতে স্বপ্নে সে ব্রায়ান লারা হয়ে যায়। ক্লাস টেস্টে খারাপ করা ছাত্রটাও সবচেয়ে ভালো নাম্বার পাওয়া ছাত্রের জায়গায় নিজেকে কল্পনা করে।
যৌন অবদমনে ভুগতে থাকা ব্যক্তি, সঠিক যৌনজ্ঞানহীন ব্যক্তি, পর্যাপ্ত যৌনক্ষমতাহীন ব্যক্তি…ইত্যাদি ক্যাটাগরীর ব্যক্তিদের কল্পনায় যৌনদৃশ্য, যৌনচিন্তা, যৌনআচার, রাস্তায় বা কর্মস্থলেও বিপরীত লিঙ্গের প্রতি যৌন তাড়না অনুভূত হওয়া, যৌন শক্তিবর্ধক অষুধপাতির প্রতি গোপন আগ্রহ ইত্যাদি বিরাজ করে সব সময়। তাদের এই অবদমিত আচরণ তাদের সব রকম কর্মকান্ডের ওপর প্রভাব ফেলে। তাদের তথাকথিত পবিত্র ধর্মীয় রীতি পালন করার বিনিময় হিসেবে অবারিত যৌনকর্মের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে- এতে অবাক হওয়ার কিছুই নাই।
ক্যাবল ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারী অন্ধকার প্রজন্মের বড় অংশই যৌনতায় মগ্ন থাকে, এই সুযোগটা তাদেরকে প্রযুক্তি ব্যবহারে আগ্রহী করে তোলার পেছনে অনেকাংশে দায়ী। বিদেশি যৌনতারকা, বিদেশি নাগরিকদের দৈনন্দিন সহজ স্বাভাবিক পোষাক-পরিচ্ছদ, তাদের সর্বস্তরের মানুষের সাথে সহজ মেলামেশা স্বাভাবিকভাবেই অন্ধকারের প্রাণীদেরকে একই সাথে প্রলুব্ধ এবং হতাশও করে। ধর্মীয় বিধি নিষেধের বেড়াজালে নিজে যেহেতু কলে আটকে পড়া ইঁদুরের মতো ছটফট করছে, পরশ্রীকাতরতার কারনে তাই অন্যের সেই সুযোগটাকে সহ্য করতে কষ্ট হয় তাদের। তাই ধর্মের দোহাই চলে আসে এক্ষেত্রে সর্বাগ্রে।
যৌন চলচ্চিত্রে অপরিচিত দু’জন ব্যক্তির মাত্র দেড় মিনিটের আলাপচারিতায় সরাসরি সঙ্গমে চলে যাওয়ার দৃশ্য তাকে এই ধারনাই দেয়- ওই দেশগুলোতে এটাই ঘটে থাকে। যৌনকর্ম ছাড়া তারা আর কিছুই করে না। সভ্য দেশগুলো সম্পর্কে তাদের ধারনা এইটুকুই। এই ধারনা সাথে নিয়ে যদি কেউ দেশের বাইরে যাওয়ার সুযোগ পায়, আর সেখানে অবদমনের চোটে অসভ্যতার চূড়ান্ত করে ফেলে এবং তার প্রেক্ষিতে প্যাঁদানি খাওয়ার মতো অবস্থা তৈরী হয়- তখনই গিয়ে তাদের ঘোর কাটে। গ্রামাঞ্চলের আদি প্রবাদ- মাইররে ভূতেও ডরায়, সর্বক্ষেত্রে প্রণিধানযোগ্য।
অন্ধকার প্রজাতির কাউকে ধরে এনে যদি স্ট্রিপক্লাবে ছেড়ে দেয়া হয়, সে ঘোর কাটার পর আনন্দের আতিশয্যে পাগল হয়ে যেতে পারে অথবা সেটাকেই স্বর্গ বলে তার সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্যে প্রার্থনায় নত হবে।
চমতকার বিষয়ের ওপর আলোকপাত। বিশেষ করে ফ্রিডম অব চয়েসএর ওপর জোর দেওয়ার বিষয়টি। চলুক।
হিজাব বোঝেন? বোরকা না কিন্তু…!
আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ যৌনতার বিষয়ে পশ্চিমাদের ব্যাশ্যাই বলে থাকে। কোন যুক্তির প্রেক্ষিতে তারা এমন সিদ্ধান্তে উপনিত হলেন, তা যে কোন যুক্তিপ্রবন মানুষের কাছে বোধগম্য হয় না। সেখানে ব্যক্তি স্বাধীনতাকে যে মর্যাদায় আসিন করা হয়েছে সেটাই কিনা এদেশের মানুষের কাছে নেতিবাচক ঠেকেছে। যারা বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থের ধোহায় দিয়ে নারী নিরাপত্তার নামে নারীদের গৃহবন্ধি রাখতে চাই, তারা কখনই পশ্চিমাদের ব্যক্তি স্বাধিনতাটা বুঝতে পারবেনা। সেক্ষেত্রে আপনার দেয়া উদাহরণই যুক্তিযুক্ত। এটা বুঝতে হলে তাদের জেলে যেতে হবে, স্কুল-মাদ্রাসায় নয়। ঠেকে শেখা আর কি।
আজ বাংলাদেশে নারী নিগ্রহের অনেক লোমহর্ষক ঘটনা দেখা যায়। আবার সে দোষ চাপিয়ে দেয়া হয়, নারীদেরই উপর। এই টানাটানিতে ভোক্তভুগি দৃশ্যপট থেকে উদাও, পাশাপাশি অপরাধিরাও নিরাপদ থেকে যায়। ফেসবুকে বড় একটি অংশ রীতিমত ঝড় তোলে ফেলেছে এই বলে যে, নারীরা কেন টিএসসিতে যাবে?
খুব প্রয়োজনীয় লেখা। ভাল লাগল, ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ, বাদল ভাই।
আমি এ ধরনের আরো কিছু গল্প জানি। বাংলাদেশী স্টুডেন্টদেরও প্রথম লক্ষ্য থাকে প্রেমের অভিনয় করে বিদেশী কিংবা আরো প্রাঞ্জল বাংলায় বললে, সাদা মেয়েদের সাথে সম্পর্ক তৈরী করা এই উদ্দেশ্যে। পরে যা অনেক সময়ই অপ্রীতিকরা ঘটনায় রূপ নিয়েছে এমনকী থার্টি ফার্স্টেও
হুম, ঠিক। আমাদের মধ্যে সততার অভাব। মনে এক, মুখে আরেক। ফলে অন্যরা তা একটু দেরীতে হলেও ঠিকই ধরে ফেলে। আবার অনেক ভারতীয় ছেলেপুলেকে দেখলাম, সাদা গার্লফ্রেন্ড জুটিয়ে ক’দিন পরে ফ্যামিলি ভায়োলেন্সের খাতায় নাম উঠায়, কারণ নারীকে ডোমিনেট করতে চাওয়াটা আমাদের রক্তে মিশে আছে।
ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির সাংবাদিক একজন পেয়ার রহমান কে দোষ দিয়ে হবে? মুমিন মুসলিমের বাংলাদেশে ওয়াজ মাহফীল, জুম্মার খুতবা এবং টিভি চ্যানেলে “ইসলামের আলোকিত জীবন” টক শো’তে সবাই শুনে আসছে- পশ্চিমা দেশের মেয়েরা রাস্তাঘাটে যারতার সাথে সেক্স করে বেড়ায়। ছেলে মায়ের সাথে, বাবার সাথে মেয়ে এবং কিছু না পেলে কুত্তার সাথে। তাই ঈমানী জোশে বেচারা পেয়ার আলী একটু আধটু পেয়ার করতে চেয়েছিলেন। এই যা……..
ধন্যবাদ ফুলবানু। পেয়ার রহমান আমাদের পুরুষশাসিত যৌন-অবদমিত বিকৃতমনা পুরুষদের একজন প্রতিনিধি মাত্র। তার মতন আরো অনেকেই আছেন এখানে সেখানে। আমরা শিখেছিই এভাবে, কাজেই আমাদের আচরণেও সেটাই প্রতিফলিত হচ্ছে। এর পরিবর্তন দরকার।
আশরাফুল আলম , আপনাকে ধন্যবাদ সময় উপযোগী এই লিখাটির জন্য । আসলে ‘ফ্রি সেক্স’ বলতে আমি যা বুঝি প্রাপ্ত বয়স্ক নর-নারী একে অপরের সম্মতিক্রমে যদি যৌনকর্মে লিপ্ত হয় তাতে আইন, পুলিশ ও সমাজের কিছু বলার নেই । কিন্তু নারীর ইচ্ছের বিরুদ্ধে তার শরীর স্পর্শ করা বা তার প্রতি কোন প্রকার অশ্লীল মত্যব্য করা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
তবে বাস্তবতা হচ্ছে পুরুষগুলো যতই বীরত্ব দেখাক না কেন,নারীরা যদি বেরয়ে এসে সকাল বিকেল মীলনের আহ্বান জানাতে থাকে, আমি নিশ্চিত পুরুষরা এর থেকে বাঁচার জন্য অরণ্যে লুকিয়ে থাকবে ।
@চলেপথিক, কথায় কথায় বাংলাদেশের লোকেরা পশ্চিমের দেশকে ফ্রি-সেক্সের দেশ বলে বটে, তবে তা একেবারেই না জেনে। অনেকদিন এই দেশে থেকে যা দেখেছি ও শিখেছি, তার আলোকে বলি, এদেশে সেক্স-সংক্রান্ত অপরাধ খুবই কম হয়। বাংলাদেশের তুলনায় তো একেবারে নেই বললেই চলে। সমুদ্রসৈকতে মেয়েরা বিকিনি পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে – কেউ কারো দিকে অশ্লীল ভাবে তাকাচ্ছেও না। রাত বারোটায় ট্রেন থেকে নেমে মেয়েরা হেঁটে বাসায় ফিরছে, তাদের মধ্যে কোন ভয় নেই লাঞ্ছিত হওয়ার বা আক্রান্ত হওয়ার। তাদের পোষাক, বাংলাদেশের স্ট্যান্ডার্ডে, যথেষ্ঠ খোলামেলা। প্রাপ্ত বয়স্ক নারী-পুরুষ একে অপরের সম্মতিতে যা ইচ্ছা করুক, তা নিয়ে অন্যদের মাথা ঘামানোর কিছু নেই।
আমার মনে আছে, ঢাকায় থাকার সময়, একটু রাত হলেই আমার স্ত্রী দরকারী কিছু কেনার জন্য বিল্ডিংয়ের নীচের দোকানে যেতে চাইত না, কারণ সেখানে দোকানের সামনে জটলা করা সিগারেট টানা বখাটে ছেলেপুলের সামনে সে অস্বস্তি বোধ করত। এখানে এসে জানলাম, এটাও এক ধরণের হয়রানি, কাজেই এই দেশের আইনে এটাও অপরাধ।
একটা জাতি কোনটাকে অপরাধ মনে করে আর কোনটাকে করে না, তা দিয়েই তো তাদের মূল্যবোধের পরিচয় পাওয়া যায়, তাই নয় কি?
অস্ট্রেলিয়াসহ পৃথিবীর সব উন্নত দেশেই যৌন হয়রানির ব্যাপারে জিরো টরালেন্স নীতি মেনে চলা হয়। আইনের প্রয়োগ সবার ক্ষেত্রে সমান এবং সুনীতির ব্যাপারটি একেবারে পরিবার থেকেই শিক্ষা দেয়া হয়। বাংলাদেশ বা ইন্ডিয়ার মতো গায়ের জোর টাকার জোর ক্ষমতার জোর প্রাধান্য পেলে চিত্রটা অন্যরকম হয়ে যেতো।
অনেক ধন্যবাদ আশরাফুল আলম বাংলাদেশি সাংবাদিকের দুষ্কর্ম প্রকাশ করে দেয়ার জন্য।
কলম চলুক।
ধন্যবাদ প্রদীপ দা। ভালো থাকবেন।
সেক্স শব্দটিই আমাদের দেশে জড়তায় জড়ানো। তাই সুযোগ পেলেই পথে, ঘাটে, বাসে, ট্রেনে নারী দেখলেই একদল জড়ানো জড়তা কাটাতে চায়। আর এর দায় বর্তায় নারীর ওপর। এ দায় যে সমাজ কাঠামোর গিঁটে গিঁটে, সেক্স নিয়ে বহুল আলোচনায় যে গিঁট খোলা সম্ভব। যাহোক, ফ্রি সেক্সের দেশ পড়ে ভালো লাগলো। আরও লেখা পড়ার অপেক্ষায় থাকব।
ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলে আমাদের দেশে গত ২৫ বছর ধরে নারী প্রধানমন্ত্রীরা দেশ চালালেও, নারীর জন্য বাংলাদেশ এক ভয়ংকর স্থান। টিএসসির সিসিটিভি ফুটেজ দেখলাম। আইয়ামে জাহেলিয়াত কি এর চেয়ে খারাপ ছিলো? যেখানে প্রকাশ্যে শফি হুজুরেরা নারীশিক্ষার ব্যাপারে, নারীর স্বাধীনতার ব্যাপারে আপত্তিকর মন্তব্য করেন, মসজিদে খুতবায় নারীর ড্রেসকোড ঠিক করে দেন ইমামেরা, সেখানে মানুষের মনস্তত্বে তার প্রভাব তো পড়বেই। এই গিঁট খোলার জন্য আইনের শাসন এবং সেক্যুলার সমাজের বিকল্প নেই।
আমারতো মনে হয় মননে এখনো মধ্যযুগে আছি আমরা শিক্ষানবিস ভাই। আমাদের বাংলা ভাষাতে কি টয়লেটের বাংলা প্রতিশব্দ আছে? ফ্রি শব্দটা আমরা ফ্রিতে শিখেছিলাম, তাই কোন কিছুর সাথে প্রিফিক্স হিসেবে ফ্রি লেখা থাকলেই আমাদের পঞ্চইদ্রীয় ছোক ছোক করে! আর কিছু না বুঝলেও ‘ফি’ তো বুঝি! এই যে কালে কালে আমাদের মহান শিল্পী, কবি, লেখক-সাহিত্যিক, দার্শনীকেরা যে হিতোপোদেশ দিলেন, এমন হিতোপোদেশের বহরও অন্য কোন জাতিতে এতো ব্যাপক মাত্রায় নেই! আমাদের কোন প্রয়োজন হলো? আর সে প্রয়োজন এখনো সমান ভাবে বিদ্যমান! ন্যশনাল জিওগ্রফিতে দেখা আমাজনের গহীনের অসংস্কৃত জংলী সভ্যতাও কোন কোন ক্ষেত্রে আমাদের চেয়ে উত্তম বলে প্রতিভাত হয়! আমাদের সো-কল্ড সাংবাদিক, কর্মীরা কি তা জানে বা বুঝার চেষ্টা করে?
@কেশব দা,
আমারতো মনে হয় মননে এখনো মধ্যযুগে আছি আমরা …মানতেই হচ্ছে। টিএসসির সিসিটিভি ফুটেজ দেখলাম। মধ্যযুগ কি এর চেয়ে খারাপ ছিলো?
আসলে এইটা আরকি সামাজিক-মনস্তাত্ত্বিক ব্যপার। মানে, মেয়েদের ‘লজ্জাবতী লতা’ ভাবতেই আমারা অভ্যস্ত কিনা। এর অন্যথা কোথাও দেখলেই, আমাদের সুপ্ত পুরুষের গুপ্ত মনে একপ্রকার ‘সিগ্ন্যাল’ যায়। যে, তারা সস্তা, সহজলভ্যা; এককথায় ‘বারনারী’। যে পাও, লুটে নাও।
ভারতীয় উপমহাদেশের সবকটা জাত-ই আদতে ভিখিরি। যে সারাজীবন মদের অপকারিতা নিয়ে বকে বকে মুখে ফেনা তুলল; সেই বাবু-দের পার্টি-তে গিয়ে, মাগনায় পেলে বালতি বালতি গিলবে।
ও হ্যাঁ, আর একটা মজার ব্যপার; এইসব পুরুষ-পুঙ্গবেরা আসলে স্বাধীনচেতা মেয়েদের প্রতি দারুণ আকৃষ্ট হন; কিন্তু তাঁদের বিয়ে করতে পৌরুষে লাগে, তাঁকে ‘কন্ট্রোল’ করতে পারবেন না যে। তাই, বিয়ের জন্য ‘লজ্জাবতী লতা’; আর, ‘বাতিক’-এর জন্য ‘অন্য নারী’! যেসব মেয়েদের সঙ্গে জন্মেও সাহস হবে না কথা বলার; আড়াল পেলে তাকেই ঘেঁটে দেখার চেষ্টা!
ভারতেও দেখুন, এই যে দিল্লি’র নির্ভয়া কাণ্ড; সবকটা জাতে ‘ছোটলোক’। শিক্ষিত-মার্জিত নির্ভয়া’র সাথে হয়তো তাঁদের জীবনেও সাহস হত না কথা বলার। কিন্তু শিক্ষিত ‘স্মার্ট’ প্রেমিকার খুব শখ। তাই, বাগে পেলে ছিড়ে খায়।
আশার কথা, এদের চুপ করাতে পারে কেবল আইনের শাসন; ভারতীয়’রাও আগে এসব কেচ্ছা ঘটাত বিদেশে; এখন বহুল যাতায়াতের সুবাদে, বুঝে গ্যাছে। তাই কম শোনা যায়। এরা অবিশ্যি আজকাল ‘ব্যাংকক’ যান ‘অফিস মিটিং-এ’। বাংলাদেশী-রাও বুঝে যাবেন খুব শিগগিরি। তবে তাতে এদের ছোকছোকানি যাবে কি?
ধন্যবাদ, স্মৃতিলেখা চক্রবর্তী। ভালো থাকবেন।
দারুন , দারুন স্মৃতি লেখা, বাজে সমাজ ব্যাবস্থা এর মুখে কষিয়ে মারুন এক চড়।
আপনার বিভিন্ন ভাষার শব্দের ব্যাপারটা পড়ে আমার স্লাভোই জিজেক এর “টয়লেট” এর উদাহরণ মনে পড়ে গেল। ইংল্যান্ড, জার্মানি এবং ফ্রান্স এই তিন দেশের টয়লেটের কমোডের ডিজাইন একেবারে তিন রকমের, এবং এ থেকে উনি খানিকটা কৌতুকমিশ্রিত ভাবে এই তিন দেশের মনস্তত্ত্ব নিয়ে মন্তব্য করেন মাঝেমধ্যেই। এই ভিডিওর ১ মিনিটের পর থেকে দেখুন।
মোক্ষম কথা। যে বাংলাদেশী পুরুষেরা অনেকদিন বিদেশে আছেন তারা কোন জাদুবলে প্রদর্শনেচ্ছু নারী দেখেও ধর্ষণেচ্ছু হন না, সেটা বুঝতে পারলেই দেশবাসীরা মুক্তযৌনতা কাকে বলে বুঝতে পারতেন। কিন্তু হয়ত তারা কোনোদিনই বুঝতে পারবেন না সেটা।
@শিক্ষানবিস, আপনার দেওয়া ভিডিও দেখে খুব মজা পেলাম।
আসলে আমাদের এই মহাপুরুষ হওয়ার আসল রহস্য হলো আইনের শাসন। অপরাধ করলে তার শাস্তি পেতে হবে, কোন ব্যতিক্রম হবে না তার। ব্যাস, এইটুকুই। অপরাধ প্রমানে একটি মেয়ের অভিযোগই যথেষ্ঠ, সেখানে মেয়েটিকে পুলিশের হাতে, সাংবাদিকের হাতে কিম্বা শফি হুজুরদের হাতে অপমানিত হতে হবে না পদে পদে।