অনেক দিন আগের কথা। বিবর্তনের ধারায় বানর জাতীয় প্রাণি থেকে মানুষ হয়েছে কিছুকাল আগে! পশুপাখি শিকার আর ফলমূল আহরণ করা যাযাবর জীবন কাটিয়ে কৃষিকাজ শিখে বসত বাড়িতে থাকাও শুরু করেছে- গড়ে তুলেছে রাজ্য … এরকম সময়ের কাহিনী! সে সময়ে এক প্রচন্ড শক্তিধর এক রাজা বাস করতো হাবেন নামে এক রাজ্যে! সেই রাজা খুব শক্তিশালী ছিল, তার রাজত্বও ছিল খুব বড়! রাজার নাম গুড্ডু। সে থাকতো- বিশাল এক প্রাসাদে, সেই প্রাসাদের বাইরে ছিল বিশাল এক বাগান, সেখানে নানারকম ফল ধরতো, ফুল হত … নানারকম পাখি গান গেয়ে যেত … দারুন এক বাগান! সেই রাজার ছিল বিশাল এক বাহিনী- রাজার আদেশ পালন করাই ছিল তাদের কাজ। এই বাহিনীর নাম ছিল আঞ্জেল। এর মধ্যে কিছু আঞ্জেল খুব গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতো! জিব্রিল নামে যে, সে রাজার যত আদেশ-নিষেধ, প্রজাদের মধ্যে নিয়ে যেত। মিকিল নামের একজন- সে প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা তুলতো- আর প্রজাদের জন্যে খাবার ও পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করতো। আয্রিল নামের যে আঞ্জেল- সে ছিল একটু ভয়ঙ্কর- দেখতে তো ভয়ঙ্কর ছিলই, তার কাজও ছিল ভয়ঙ্কর ধরণের। সে ছিল ঐ রাজ্যের প্রধান জল্লাদ। আর আরেকজন আঞ্জেল ছিলো- ইস্রিল- সে একটা বড় বাদ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতো- হাতির দাঁতের তৈরি- ফু দিয়ে বাজাতে হয় ওই বাদ্যযন্ত্রটা … যখন প্রজাদের কোন অংশ রাজার অবাধ্য হতো- তখন সে ঐ বাদ্যযন্ত্র বাজাতো- আর সাথে সাথে রাজার যোদ্ধাবাহিনী গিয়ে নিমিষেই ঐ অবাধ্য প্রজাদের মেরে ফেলতো … একে বলা হতো কিম্মত।

তো ঐ রাজ্যের সবচেয়ে এগিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর নাম হচ্ছে- জিন। তারা আগুনের কাজ পারতো! তারা রাজার আদেশ নিষেধ খুব মানতো! কেউ কেউ অবাধ্য যে হতো না তা না, কিন্তু নিজেদের মধ্যেই তারা ম্যানেজ করে ফেলতে পারতো! রাজা তাই প্রজাদের মধ্যে এই জাতির উপর খুব সন্তুষ্ট ছিল। ফলে, এই জাতি গুড্ডু রাজার কাছে বিশেষ মর্যাদা পেতো- সেটা নিয়ে তাদের গর্বের শেষ ছিল না। তাদের মধ্যে একজন নাম আযিল, সে ছিল রাজার খুবই অনুগত! সে দিনরাত রাজার গুনগান গাইতো- রাজা কত মহান কত ভালো এসব সারা রাজ্যে প্রচার করে বেড়াতো! কেউ অবাধ্য হলে তাকে গিয়ে বুঝানোর চেস্টা করতো- না বুঝলে গিয়ে রাজার আঞ্জেলদের কানে তুলে দিত … বছরের পর বছর সে এভাবে রাজার কাজ করে যাওয়ায় রাজা খুশি হয়ে তাকে রাজ প্রাসাদে নিয়ে আসে। তাকে প্রজা থেকে প্রমোশন দিয়ে আঞ্জেল বানিয়ে দেয়! তাকে আলাদা কোন কাজ না দিয়ে দায়িত্ব দেয়া হয়- অন্য আঞ্জেলদের কাজ দেখভাল করার, মানে একেবারে আঞ্জেলদের সর্দার বানানো হলো তাকে। নাম রাখা হলো- ইব্বিশ। সে ছিল খুব স্মার্ট, সব আঞ্জেল তাকে সর্দার হিসেবে মেনে নিল, শুধু জিব্রিল মন থেকে মানতে পারলো না! পারবে কি- আগে তো সেই ছিল আঞ্জেলদের সর্দার। আর তাছাড়া সে ছিল- খুব জ্ঞানী, অনেক কিছু জানা শোনা ছিল তার, আর ইব্বিশকে তার মনে হতো চাটুকার টাইপের একজন! তো মন থেকে মেনে না নিলেও উপরে উপরে মেনে নিতেই হল- কেননা গুড্ডু রাজা খুব ভয়ঙ্কর- অবাধ্যতা সে একদম পছন্দ করে না।

এভাবেই অনেকদিন কেটে গেল! গুড্ডু রাজার বয়স বাড়ছে। তো, গুড্ডু রাজার কোন বাচ্চা কাচ্চা ছিল না! ফলে- একদিন গুড্ডু রাজার মনে হল- আর কিছুদিন পরে সে যখন মারা যাবে, তখন কে রাজা হবে, কে চালাবে তার সাধের এই হাবেন রাজত্ব! কয়দিন ধরে সে খুব মন খারাপ করে থাকলো! তারপরে, আরো কয়েকদিন সে ভাবতে বসলো- কিভাবে কি করা যায়! অনেক ভেবে সে ঠিক করলো- সে এক পালক পুত্র নিবে। কিন্তু তার প্রজাদের মধ্য থেকে নেয়া ঠিক হবে না বলেই তার মনে হলো- কেননা তাতে ভবিষ্যতে তার রাজত্বের সমস্যা হতে পারে। এমনকি এগিয়ে থাকা জিন জাতির থেকেও কাউকে পালক পুত্র না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিল। ঠিক হলো- পাশের রাজ্য থেকে একটা বাচ্চাকে নিয়ে আসবে। রাজা সব আঞ্জেলকে ডাকল। তার ইচ্ছার কথা জানিয়ে প্রথমে পাঠালো জিব্রিল আঞ্জেলকে। জিব্রিল পাশের রাজত্বে চলে গেল। সেই রাজত্বে মনু নামে এক জাতির বাস। তো সেখানে বাচ্চাকে খুব পছন্দ হলো- কিন্তু মায়ের কোল থেকে কেড়ে আনতে পারলো না- খুব মায়া হলো তো- সে জন্যে। এরপরে রাজা পাঠালো মিকিল আঞ্জেলকে। সে মনু জাতির একটা বাচ্চাকে ঠিকই নিয়ে আসছিল- কিন্তু মা এমন কান্না শুরু করলো যে আর পারলো না- মা’র কাছে বাচ্চাকে ফেরত দিয়ে দিল। এরপরে গেল ইস্রিল। সে মা’র চিৎকার করে কান্না অগ্রাহ্য করে বাচ্চাকে নিয়ে আসছিল- কিন্তু এবারে বাচ্চাটা বেদম কান্না শুরু করে দিল। ইস্রিল অনেক চেস্টা করেও কোনভাবেই বাচ্চার কান্না থামাতে পারলো- শেষে বাচ্চাকে মা’র কাছে ফেরত দিয়ে সেও ফিরে আসলো! এইসব দেখে গুড্ডু রাজা তার সবচেয়ে দয়ামায়াহীন আঞ্জেল আয্রিলকেই পাঠালো- শুধু বলে দিল- বাচ্চার যেন কোন ক্ষতি না করে। আয্রিল বাচ্চাটার বাপ-মাকে মেরে কেটে- বাচ্চাটাকে নিয়ে হাজির করলো! রাজা তো বেজায় খুশি- বাচ্চাকে পেয়ে! তার উত্তরাধিকার! ভবিষ্যৎ রাজা! খুশির চোটে রাজা সমস্ত আঞ্জেলকে নির্দেশ দিল- এখনই কুর্নিশ করতে হবে এই বাচ্চাকে- তাদের ভবিষ্যৎ রাজাকে! একে একে সমস্ত আঞ্জেল কুর্নিশ করল- কিন্তু করলো না কেবল আঞ্জেল সর্দার ইব্বিশ। সেও করত- কিন্তু বছর কয়েক আগে তার যখন আঞ্জেল হিসেবে শপথ গ্রহণ চলছিল সেখানে প্রতিজ্ঞা করেছিল- রাজা ভিন্ন আর কাউকে কুর্নিশ করবে না! ফলে- সে খুব দোটানায় পড়ে গেল- যখন রাজা ঐ বাচ্চাটাকে কুর্নিশ করতে বললো! একবার ভাবে- রাজা হয়তো আগের আদেশের কথা- সেই প্রতিজ্ঞার কথা ভুলে গেছেন, করি বাচ্চাকে কুর্নিশ, আরেকবার ভাবে- বলা তো যায় না, রাজা তাদেরকে পরীক্ষা করছেন না তো? কি করবে না করবে সে সিদ্ধান্তই নিতে পারছিল না! উপায় না দেখে সে রাজার কাছে গিয়ে এই দোটানার কথা বলে পরামর্শই চাইতো- কিন্তু এর মধ্যে ইব্বিশের শত্রু জিব্রিল একটা প্যাঁচ লাগিয়ে দিল!

মনু জাতি ছিল আসলে কুমার! তারা মাটির কাজ করতো! এই বাচ্চার গায়েও কাদা মাটি লাগানো ছিল। ঠিক ঠাক ধুয়ে মুছে সাফ সুতরা করার আগেই রাজা তাকে কুর্নিশ করার আদেশ দিয়ে ফেলেছেন! জিব্রিল সাথে সাথে রাজার আদেশ মেনে কুর্নিশ করে উঠে দেখে ইব্বিশ তখনো কুর্নিশ করেনি! সাথে সাথে সে গোটা রাজ্যময় প্রচার করে দিল- আত্ম অহঙ্কারে পরে ইব্বিশ আঞ্জেল রাজার আদেশ মানে নি। নিজে আগুন জাতি হয়ে কাদামাটি জাতির বাচ্চাকে কুর্নিশ করলে নাকি ইব্বিশের জাত চলে যায়- সে কারণেই সে রাজার আদেশ মানেনি! এটা রাজার কানেও চলে যায়! রাজা খুব খেপে গিয়ে সাথে সাথে ইব্বিশকে আঞ্জেলের সর্দার থেকে শুধু না একদম আঞ্জেল পদ থেকেই বরখাস্ত করে দেয়! এদিকে ইব্বিশ এসে- রাজাকে বুঝিয়ে বলে কি কারণে কুর্নিশ করতে তার দেরি হচ্ছিল! তার কোন আত্মগরিমা ছিল না! রাজা কিন্তু ইব্বিশকে খুব পছন্দ করতো- ইব্বিশের কথা শুনে সাথে সাথে ইব্বিশের অবস্থা বুঝতে পারলো- কেননা রাজা খুব ভালো করেই জানতো- এই ইব্বিশের রাজা ভক্তির কথা! রাজারো খুব কষ্ট হলো- একবার ঘোষণা দিয়ে ফেলেছে যে, ইব্বিশকে আর আঞ্জেল রাখা যাবে না- সে ঘোষণা তো আর ফিরিয়ে নেয়া যায় না! তো, এখন কি করা। রাজা ইব্বিশকে বললো- ঠিক আছে, তুমি আর আঞ্জেল নেই- কিন্তু তুমি এখানেই থাকো, তোমাকে কেউ কিছু বলবে না, তোমার খেয়াল খুশি মত ঘুরে বেড়াবে! ইব্বিশ রাজা পায়ের কাছে বসে, রাজাকে বলে- আপনার সেবা না করে কিভাবে এই রাজ প্রাসাদে থাকি! রাজা বলে- সেবা করার আঞ্জেল তো তোমাকে আর বানাতে পারবো না! কিন্তু তারপরেও তুমি চলে যেও না! তোমাকে যে আমি খুব পছন্দ করি! বলো- আঞ্জেল হওয়া ছাড়া তুমি আমার কাছে কি চাও! ইব্বিশ বলে- তাহলে এক কাজ করি, আমি আপনার বিরুদ্ধে সবাইকে খেপিয়ে তুলার চেস্টা করি, তাহলে দেখা যাবে আসলে কে আপনার অনুগত আর কে অবাধ্য! কেউ অবাধ্য হলে তো আপনি জানতেই পারবেন- দরকারে আমি নিজেই জানিয়ে যাবো! গুড্ডু রাজা ছিল কিছুটা খামখেয়ালি টাইপের। ভাবলো- বাহ ভালোই তো! অনেকটা খেলার মত! দেখি কি হয়। এই ভেবে রাজা ইব্বিশকে অনেক ক্ষমতা দিয়ে দিল। সে এখন রাজ প্রাসাদের যেখানে খুশি সেখানে যেতে পারে, যা ইচ্ছে করতে পারে, যা ইচ্ছে বলতে পারে! বেচারি জিব্রিল দেখে, আর রাগে চুল ছিড়ে! ইব্বিশের ক্ষতি করতে গিয়ে তো আরো প্রমোশন দিয়ে দিল …

এভাবে দিন যায়! বাচ্চাটা রাজপ্রাসাদে বড় হতে থাকে। তার একটা নাম দেয়া হয়- ঈডাম। সে বাগানে বাগানে ঘুরে বেড়ায়। রাজা নিজে তাকে অনেক কিছু শেখায়! রাজা কানে কানে বলে দিয়েছে- খবরদার ইব্বিশের কোন কথা কিন্তু শুনবে না! ও তোমাকে ভুল পথে নিয়ে যাবে! আরেকটা কথা! বাগানের সব গাছের কাছে যেতে পারবে, চড়তে পারবে, সব ফলই খেতে পারবে- কিন্তু খবরদার- ঐ যে গাছটা দেখছো- সেটার কাছে কিন্তু যেও না, ওটার ফল ভুলেও খাবে না! বাচ্চাটার দিন ভালোই কাটছে। ঘুরে ফিরে- খেলে দেলে … মাঝে মাঝে ইব্বিশ এসে কুমন্ত্রণা দেয়ার চেস্টা করে, ঐ নিষিদ্ধ ফল খাওয়াতে চায়- কিন্তু সে ভয়েই ইব্বিশের কোন কথা শুনে না … এভাবেই একদিন ঈডাম অনেক বড় হয়ে গেল! একদিন গুড্ডু রাজা খেয়াল করলো- ঈডাম খুব মনমরা হয়ে থাকে, আগের মত সে অত ঘুরে না, ফিরে না, খেলে না, দেলে না … রাজা ভাবলো- ঈডামের এক সাথী দরকার। আবার আঞ্জেলদের ডেকে বললো- ঈডামের এক সাথী দরকার! এবার প্রথমেই আয্রিলকে পাঠিয়ে দেয়া হলো- আয্রিল মনু জাতি থেকে সুন্দরী এক নারীকে ধরে নিয়ে আসলো! তার নাম দেয়া হলো- ঈব। ঈডাম- ঈবকে পেয়ে খুশি হলো। ঈব শুরুতে খুব কান্নাকাটি করলেও, খুব ভয় পেয়ে গেলেও- নিজ জাতির ঈডামকে পেয়ে সেও কিছুটা স্বস্তি পেল! ঈডামের সাথে ঈব বসবাস করতে থাকল- কিন্তু মাঝে মধ্যেই তার দেশের কথা মনে পড়ত, তার বাবামায়ের কথা মনে পড়তো, তার বাবামা-কে মেরে তাকে এখানে ধরে আনা হয়েছে- এটা সে ভুলতে পারতো না! ঈডামকে তার ভালোই লাগতো- কিন্তু মাঝে মধ্যে ঈডামকেও সে সহ্য করতে পারতো না! ঈডাম তার বাবামা’র খুনীদের সাথে যখন হেসে হেসে শ্রদ্ধা নিয়ে কথা বলতো- রাগে তার গা জ্বলতো! এর মধ্যে পরিচয় হলো- ইব্বিশের সাথে! ইব্বিশ ছিল খুব স্মার্ট। দেখতে যেমন- তেমনি তার চাল চলন- কথা বার্তা! সবচেয়ে বেশি টানত- ইব্বিশের সাহস, অসীম সাহসের সাথে রাজার বিরুদ্ধাচারণ করতো! ইব্বিশের পাশে ঈডামকে তার মনে হত মেরুদন্ডহীন এক কাপুরুষ!

এই ইব্বিশই একদিন ঈবকে জানালো নিষিদ্ধ ফলের কথা! সে ফল খেলে অনেক শক্তি হয়, অনেক সাহস হয় … ইত্যাদি কত প্রলোভন! ঈব গিয়ে ঈডামকে ধরলো- গেন্ডাম নামের ঐ নিষিদ্ধ ফল খাবে! ঈডাম তো ভয়ে একবার নিজের কানে হাত দেয় তো আরেকবার ঈবের মুখে হাত দেয়! ঈব- ঈডামকে দেয় এক ঝাড়ি! ভীতুর ডিম কোথাকার! দেখ গে গিয়ে- ইব্বিশ কত সাহসী! ভীতুর ডিমের সাথে আমি আর থাকবো না! এই কথায় ঈডামের খুব লাগে! সে তখন নিজেকে সাহসী প্রমাণ করার জন্যে ঐ নিষিদ্ধ গাছে গিয়ে চড়ে- দুটা ফল পাড়ে- তারপরে দুজনে নিষিদ্ধ গেন্ডাম ফলে কামড় দেয়।

এই গেন্ডাম ফল আসলে ছিল রাজার গোপন মদ বানানোর ফল! ঐ রাজ্যে মদ নিষিদ্ধ ছিল- পাছে মদ খেয়ে লোকে কাজ-কাম ঠিক ঠাক না করে! শুধু রাজপ্রাসাদে মদ চলতো- সেই মদ তৈরি হত ঐ গেন্ডাম ফল থেকে! তারপরে হলো কি? ঈডাম ঈব দুজনেই তো গেন্ডাম ফল খেয়ে ফেলেছে। ইব্বিশও গিয়ে রাজাকে কানে কানে বলে দিয়েছে। রাজা ঈডাম-ঈবের উপর খুব রাগ করেছে, তারচেয়েও পেয়েছে ভয়- পাছে ঈডামকে তার হারাতে হ্য! অন্য কেউ না জানেনি তো? জানলে মুশকিল- রাজাকে তার শাস্তি দিতেই হবে! দৌড়ে ঈডাম-ঈবের কাছে গেল! এদিকে ঐ গেন্ডাম ফল খেয়ে সাথে সাথে দুজনের এমনই পেট মোচড় দিল যে, ডাইরিয়া শুরু হয়ে গেছে! টয়লেটের দিকে দৌড়ে যেতে না যেতেই কাপড় ভাসানো সাড়া! প্রাসাদের সবাই তো জেনে গেল! গেন্ডাম ফল খেয়ে কি অবস্থা! রাজা আর কি করবেন- সিদ্ধান্ত নিলেন, এদের দূর রাজত্বে পাঠিয়ে দিবেন।

তারপরে ঈডাম-ঈবকে অনেক দূরে মধ্যপ্রাচ্যের এক জঙ্গলের দুদিকে দুজনকে নামিয়ে দেয়া হলো! কয়েক বছর একা একা ঘুরতে ঘুরতে তারা একত্রিত হলো। সেখানে অন্য কোন জনমানুষের চিহ্ন নেই। ঈডাম-ঈব দুজনে মিলে তাদের সংসার পাতলো! ধীরে ধীরে তাদের সন্তান হলো! তাদের সন্তান থেকে আরো সন্তান হলো! এভাবে ঐ অঞ্চলে অনেক মানুষ হলো! তাদের সবার কাছে- আদি পিতা ঈডাম। আদি মাতা ঈব।