ভরা জোয়ারের বিল। পানিতে টইটম্বুর। ডিঙ্গিতে বসে ছিপ হাতে মাছ মারছে দাদা। দশ বছরের পোতা তার পাশে। হঠাত ছিপে বড় এক টান- বড় কিছু বিধেছে বড়শিতে। দাদাও দেয় ‘খোট’ টান।
-দাদা, বড় মাছ বাদিছে।
-আরে রাখ। কি বাধিছে তার নেই ঠিক!
কিছু সময় পরে বড় এক মুরল মাছের চেহারা ভেসে উঠলো জলে। পোতার কন্ঠে উত্তেজনা।
-দাদা, এই মাছ তো আমরা খাই না। এইডেরে ছাইড়ে দেও।
-নারে পোতা, ছাড়া যাচ্ছে না। মুরল মাছের লেজের ছড়ির কদর জগত জোড়া।
-খালি এক ছড়ির জন্যি জীবডারে তুমি মারবা?
-শোন পোতা, আমারা সবাই ঐ মাছটার মতন কারও না কারো কাছে ধরা। দেহিস না, বিনা কারনে যেহানে সেহানে মানষির জান যায়। ঐ মুরল মাছের লেজের মতন দামী কিছু আমাগো সবার ভেতরে লুকায়ে থাহে- তাই তো আমরা সবাই কারও না কারও নিশানা।
-ওলট পালট কী যে কও তুমি দাদা! মানষির আবার লেজ থাহে নাকি?
-ওসব বুঝার বয়স হয়নি তোর। আমি কারে কি যে কই! নে মাছ উঠো।
ডিঙ্গিতে বড় এক মুরল মাছ তুলে দাদা-পোতা বৈঠায় টান দেয়। শ্রাবণ মাসের কালো থমথমে আকাশের ঈষাণ কোনের হালকা একটা বাতাসের রেশ উদাসীন বুড়ো আর অবুজ পোতার মনের জমিনকে যেন বিবর্ণ করে দিয়ে চলে যায়।
ভাল লাগলো। উপমা আর মেসেজের পরিমিত ও যথাযথ ব্যবহার। বিলের ছবি দেখা যায়, মাছের গন্ধ পাওয়া যায়, দীর্ঘনিশ্বাস আমাদেরকেও এসে ছোয়। মেসেজে জীবনানন্দের প্রভাব স্পষ্ট।
বাপরে!!!
ছোট মরিচে ঝাল বেশী সেইটার প্রমান আপনার এই গল্প 🙂
অসাধারণ ভাবে ম্যাসেজটা দিয়েছেন 🙂
ভাল্লাগসে; অভিনন্দন (Y)
@এম এস নিলয়,
ছেলেবেলায় এই ক্ষুদে মরিচকে মিস্টি ফল মনে করে খেয়ে ভীষন পস্তাইছি।
মেসেজটাই আসল। ধন্যবাদ নিলয়।
পরিপক্ক বলন ভঙ্গি!
ক্ষুদে গল্প লেখা সহজ নয়, কারণ স্বল্প পরিসরে মহাকাব্যিক দর্শন পুরে দিতে হয় বা দেয়া হয়!
নতুনত্বে ঘাটতি থাকলেও উৎরে গেছে শেষ পর্যন্ত!
লিখতে থাকুন!
@গুবরে ফড়িং,
ধন্যবাদ।
ঠিক তাই! ধন্যবাদ আপনাকেও।
ছোট মাছে বড় কাটা..
গল্পটি ছোট হলেও এর ভাবার্থ এবং মর্মার্থ অনেক ৷
@শরিফুল ইসলাম শরীফ,
আপনার অনুভুতি এবং আইডিয়া সঠিক।
এটি কি আসলে অণুগল্প? নাকি গল্প?
@তামান্না ঝুমু,
গল্প গল্পই, তার আবার অনু আর বড় কি! সংজ্ঞার ভিতরে পড়লেই হলো।
@শাখা নির্ভানা,
খুব ছোট গল্পকে অণু গল্প বলা হয়ে ব’লে জানতাম। আপনার গল্পটি ছোট দেখে জিজ্ঞেস করেছিলাম। এখন মনে হচ্ছে, জিজ্ঞেস ক’রে অপরাধ ক’রে ফেলেছি।
ঠিক বলেছেন, আমরা সবাই কারো না কারো নিশানা।
গল্পের ভাষা, উপস্থাপনা, বিষয়বস্তু দারুন লাগলো।
বাগেরহাটের মানুষরা মনে হয় “ল্যাজা” বলে, লেজ বলে না।
@সাব্বির হোসাইন,
পড়ার জন্য ধন্যবাদ। ভার্নাকুলার লেখার সময় আমি খুলনাকে প্রাধান্য দেই। কারন খুলনা আমার
জন্মস্থান। বাগেরহাটে লেজকে ল্যজা বলে, ঠিক বলেছেন।