এটি একটি হালকা ধরণের লেখা। ঠিক মুক্তমনার উপযুক্ত নয়। মূলত ফেইসবুকের জন্যে লেখা হয়েছিলো এটি। একজনের হৈ হল্লার চোটে মুক্তমনায় দিতে বাধ্য হলাম। হল্লাকারীর ব্যক্তির বক্তব্য হচ্ছে যে, আমি মুক্তমনাকে একেবারেই উপেক্ষা করছি। তাঁকে বোঝাতে আমি অক্ষম হয়েছি যে, আমার ইদানিংকালের লেখাগুলো অনেক হালকা প্রকৃতির লেখা। ভাবনা-চিন্তাবিহীন একটানের লেখা। এগুলো মূলত ফেইসবুককেন্দ্রিক। সে কারণেই এই জীর্ণ দশা। ওগুলোকে ফেইসবুকের মতো ব্যক্তিগত পাতায় শোভা পাওয়ানো সম্ভবপর, মুক্তমনার মতো মুক্ত ফোরামে তা আনা যায় না। বিশেষ করে যেখানে, সিরিয়াস লেখার ক্ষেত্রে মুক্তমনার একটা বিশেষ সুনাম রয়েছে।
——————————————–
পেটের মধ্যে গুড়গুড় শব্দ শুনতে পেলেন অখিলচন্দ্র সেন।
ভয়ে হিম হয়ে গেলেন তিনি। ভয়ের কারণেই কিনা কে জানে, পেটের মধ্যে মোচড় দিয়ে আবারও মেঘ ডাকলো। এবারে আগের চেয়েও আরো জোরে, আরো দীর্ঘ সময় ধরে। ভয়াবহ আতংকে কপালে ঘাম জমতে শুরু করেছে তাঁর। ট্রেনের মধ্যেই যদি এই দুর্ঘটনা ঘটে যায়, তাহলে কেলেংকারীর আর সীমা পরিসীমা থাকবে না।
শ্বশুরবাড়িতে বিদায়ী খাওয়াটা একটু বেশিই হয়ে গিয়েছিলো তাঁর। শাশুড়ি এমন যত্ন আর আদর করে সবকিছু পাতে তুলে দিচ্ছিলেন যে, মানা করতে পারেন নি তিনি। এমনিতেই তাঁর খাওয়া–দাওয়ার প্রতি কিঞ্চিৎ আসক্তি আছে। এরকম আদরে সেই আসক্তি আর বাধ মানে নি। জামাই আবার কতদিন পরে আসবে তার ঠিক নেই, কাজেই এই সুযোগটাকেই শাশুড়ি কাজে লাগিয়েছেন পুরোদমে।
জামাইয়ের কাঁঠাল খুব পছন্দ। লোক দিয়ে বড়সড় একটা কাঁঠাল আনিয়ে রেখেছিলেন তিনি হাট থেকে। ওটাকে ভেঙে দুধের সাথে মিশিয়ে জামাইকে দিয়েছেন সকাল বেলা। অখিলবাবুও তাঁর প্রিয় ফল পেয়ে বাহ্যজ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন। উদরপুর্তি করে একেবারে গলা পর্যন্ত আসার পরেই থেমেছেন তিনি।
এখন এই চলন্ত ট্রেনে, সকালের সেই লোভের ধকল সামলাচ্ছেন তিনি। শ্বশুরবাড়ি থেকে বের হবার সময়েই পেট ফুলে অস্বস্তিবোধ করছিলেন তিনি। ট্রেন ছাড়ার পর থেকেই পেট কামড়ানো শুরু হয়েছে। আর এখনতো রীতিমতো পেটের মধ্যে ঘূর্নিঝড় পাক খেয়ে প্রবল নিম্নচাপ হয়ে বের হয়ে আসার উপক্রম হয়েছে।
তাঁকে স্বস্তি দিতেই যেনো হঠাৎ করে ট্রেনের গতি কমে গেলো। সামনেই আহমদপুর স্টেশন। ট্রেন ওখানে থামছে। অধীর আগ্রহে অখিলবাবু ট্রেন থামার অপেক্ষায় থাকেন।
ট্রেন স্টেশনে পুরোপুরি থেমে দাঁড়ানোর আগেই তড়িঘড়ি করে অখিলবাবু নেমে এলেন প্লাটফর্মে। তাঁরপর একটা লোটায় পানি ভরেই তীরের মতো ছুটে গেলেন পাশের জঙ্গলের দিকে।
কাঁঠালের অত্যাচারে পেটে কম আবর্জনা জমে নি। সেগুলোকে বের করতে বেশ খানিকটা সময়ই লাগছিলো তাঁর। ত্যাগে সময় লাগলেও, সুখের কোনো ঘাটতি ছিলো না তাঁর। আনন্দে ঘ্যোঁত ঘ্যোঁত করে বিচিত্র এক ধরণের শব্দ করছিলেন তিনি। ঠিক এরকম আনন্দময় মুহুর্তে ট্রেন ছাড়ার বেরসিক হুইসেল শুনতে পেলেন তিনি। ঘটর ঘটর করে ধাতব একটা শব্দ ভেসে এলো সাথে সাথেই। ট্রেনটা স্টেশন ছেড়ে যাচ্ছে। ত্যাগের কাজটা তখনও সম্পূর্ণ হয় নি তাঁর। এই ত্যাগ সম্পূর্ণ করতে গেলে ট্রেনটাকে ত্যাগ করতে হবে তাঁকে। সেটা যে খুব একটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না, তিনি জানেন।
অতএব, এক হাতে লোটা আর অন্য হাতে ধুতি সামলে অখিলবাবু ছুট লাগালেন ট্রেনের দিকে। ট্রেন তখন গতি নিতে শুরু করেছে। বের হয়ে যাচ্ছে প্লাটফর্ম থেকে। জানবাজি রেখে অখিলবাবু দৌঁড়াতে লাগলেন পলাতক ট্রেনটাকে ধরার জন্য।
আজ অখিলবাবুর দিন নয়। শ্বশুরবাড়িতে সকালটা হয়তো ছিলো, এখন নয়। জোরে ছুটতে গিয়ে পা হড়কে গেলো তাঁর। ধড়াম করে প্লাটফর্মের উপরে পড়লেন তিনি। লোটা ছুটে গেলো হাত থেকে। আছাড়ের ধাক্কায় তাঁর ধুতিও বেসামাল। ট্রেন থেকে জানালা দিয়ে মাথা বের করে লোকে মজা দেখছে। প্লাটফর্মেও ভিড় জমে গিয়েছে। বত্রিশ পাটি দাঁত বের হয়ে গিয়েছে সবার। এমন মজাদার দৃশ্য সহজে মেলে না। মানুষের দুর্দশার দেখার আনন্দ অপরিসীম। সবাই সেই আনন্দই উপভোগ করছে দন্ত বিকশিত করে।
তাঁর এই চরম বিব্রতকর এবং লজ্জাজনক ঘটনাকে মেনে নিতে পারেন নি অখিলচন্দ্র সেন। প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত এবং ক্ষুব্ধ হন তিনি। এর একটা বিহিত করতেই হবে। মান–সম্মান বলে কথা। প্রতিকার চেয়ে রেল কর্তৃপক্ষের কাছে ভুলভাল ইংরেজিতে হাস্যকর একটা চিঠি লিখে অভিযোগনামা ঠুকে দিলেন তিনি। ভুলে ভরা সেই চিঠিটি এরকমঃ
“I am arrive by passenger train Ahmedpur station and my belly is too much swelling with jackfruit. I am therefore went to privy. Just I doing the nuisance that guard making whistle blow for train to go off and I am running with ‘lotaah’ in one hand and ‘dhoti’ in the next when I am fall over and expose all my shocking to man and female women on plateform. I am got leaved at Ahmedpur station.
This too much bad, if passenger goes to make dung that dam guard not wait train five minutes for him. I am therefore pray your honour to make big fine on that guard for public sake. Otherwise I am making big report to papers.”
এই ঘটনাটি ঘটেছিলো ১৯০৯ সালে। অখিলচন্দ্র সেনের সেই ভুল ইংরেজিতে লেখা কৌতুককর অভিযোগের চিঠিটা আজ ইতিহাসে পরিণত হয়ে গিয়েছে। এটি এখন স্বযত্নে রক্ষিত রয়েছে দিল্লির দ্য ন্যাশনাল রেলওয়ে মিউজিয়ামে। কী কারণে এই চিঠি ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলো, বলছি সেটা।
অখিলচন্দ্র সেনের এই চিঠি পাবার পরেই টনক নড়ে রেল কর্তৃপক্ষের। পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় ধরে রেল চালু হলেও, তৃতীয় শ্রেণীর কামরাগুলোতে কোনো টয়লেট ছিলো না। বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেন একটু বেশি সময় ধরে থামতো। এই সময়ে যাত্রীরা স্টেশনের পাশের বনে–জঙ্গলে গিয়ে প্রাকৃতিক কর্মটা সেরে নিতেন। এর পরেই রেলের সমস্ত কামরায় টয়লেট সংযোজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উপমহাদেশে রেলের প্রতিটা কামরায় আজ যে আমরা টয়লেটে দেখি, তা এই অর্ধ–শিক্ষিত বাঙালি বাবুটি আর জাতীয় ফলের যৌথ উদ্যোগের কারণেই চালু হয়েছিলো।
জয়তু বাঙালি, জয়তু কাঁঠাল বলা ছাড়া আর কোনো গতি দেখছি না আমি।
আদিল:
অখিল বাবু তো কাঁঠাল খেয়ে জনগনের একটা বিশাল উপকার করে গিয়েছেন। আসলে ফরিদ সাহেবও কাঁঠাল খেয়ে খুব সম্ভব একি সমস্যাতে পরেছিলেন, কিন্তু তাতে জনগনের কোনো উপকার হয়নি। বরং উনিই শুধু বিব্রত হয়েছিলেন। সেজন্যই কাঁঠালে উনার এত বিরাগ। 😀
@সমরেশ দাশ,
আপনাকে মুক্তমনায় দেখে ভালো লাগছে দাদা। নিয়মিত দেখতে পাবো আশা করছি।
@তামান্না ঝুমু,
Thanks দিদিভাই। লিখার টপিক থেকে দুরে চলে যাচ্ছি বোধ হয়, কিন্তু কাঠালে অভক্তি, অথচ শুটকীর ভক্তদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না জানিয়ে থাকতে পারলামনা। এই সুযোগে তোমাকেও একটু ধন্যবাদ দিয়ে নেই (অনেক আগেই দেয়া উচিত ছিল যদিও) আমাদের বর্ষবরণে দূর থেকে 🙂 তোমার সহায়তার জন্য । আর একটা কথা, শুনলাম কেউ একজন তোমার কাছে কাঠালের নিমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন? যদি সত্যি হয়, তাহলে একটা টিপস দেই। “২০ পাউন্ডের একটা শুধু উনার জন্যই কিনে রেখো”। 🙂
@সমরেশ দাশ,
সেই বিশ পাউন্ডের কাঁঠাল তো এমনি এমনি খাবে না, একেবারে ঝুমুর মাথায় ভেঙে খাবে, এই টিপসটাও দেওয়া উচিত এখানে।
@সমরেশ দাশ,
কাঁঠালের সুবাস নাসিকাঙ্গম করতে ও এর মধুর স্বাদ জিহবাঙ্গম যারা অপারক তাদের জন্য সত্যিই মায়া হয় দাদা।
আমি আসলে কিছুই করিনি। তবুও লজ্জা দিলেন?
অসুবিধে নেই। আরো বেশি ওজনের থাকবে। আপনারাও আমন্ত্রিত। অতিথি আপ্যায়নে ওজনের কোনো কমতি রাখবো না।
@তামান্না ঝুমু,
কাঁঠালেশ্বর উনাদের সুমতি দিন!!!
হ্যা, কিছূ না করলেও এই লজ্জাটা তোমার প্রাপ্য।:)
সাবধানে বোলো। ছোটবেলায় স্কুলে যাওয়ার আগে একধামা মুড়ি আর একটা কাঠাল ছিল আমার নিয়মিত ডায়েট।:) এর পরে দক্ষিনে গেলে কাঠালের সময়ই যেতে হবে। তোমাদেরও আমন্ত্রণ রইলো উত্তরের আম-কাঠাল খাওয়ার।
@সমরেশ দাশ,
দক্ষিণের তামাম মুড়ি-কাঁঠাল আমি অতিথি সেবায় জলাঞ্জলি দিয়ে দেবো। তাতে না পোশালে বাকি ৯দিক থেকেও আনিয়ে নেবো।
আমার জন্য আম, কাঁঠাল। আর ফরিদ দাদা যে কাঁঠাল খান না তার জন্য আমের সঙ্গে যেন শুঁটকি থাকে। শুধু আম-কাঁঠাল খাওয়াবেন দাদা?
@সমরেশ দাশ,
জনগণের উপকার করার ঐতিহাসিক দায়িত্ব অখিল বাবুর কাছ থেকে আদিল আর ঝুমু পেয়েছে। তাদের কাঁঠালি আঠা ঐক্য সুদৃঢ় হোক। আমিন। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
শুঁটকি খেয়ে, জনগণের উপকার সাধন করেও ইতিহাস সৃষ্টি করা যায়। 🙂
@সমরেশ দাশ,
যে কাঁঠাল পছন্দ করে না, কাঁঠালের বদনাম গায় তার দ্বারা মানুষ খুনও সম্ভব। ফরিদ ভাই এর মেজাজ মর্জি দেখে অনেক আগেই বুঝছিলাম যে এই লোকে কাঁঠাল পছন্দ করে না।
একটুও ভুল বলেননি, ফরিদ ভাই! প্রায় একশ বছর আগের এই ঘটনাটা যখন ভিজুয়ালাইজ করছিলাম, আমারও বেদম হাসি পাচ্ছিল! টের পাচ্ছিলাম ভেতরকার মনুষ্যত্ব! 🙂
স্যালুট অখিলদাদুকে! লোকটির পেটচুক্তি কাঠাল খাওয়া, তারপরের কাহিনিসমূহ হাসিয়েছে সত্যি, কিন্তু তার মত সাহসী কয়জন বাঙালি কয়টা আছে? ইচ্ছে হয়েছে, পেট ভরে কাঠাল খেয়েছি, পাকু পেয়েছে, ট্রেন থেকে নেমে গিয়েছি জঙ্গলে, ট্রেন আমায় না নিয়েই চলে গিয়েছে, দিয়েছি অভিযোগ ঠুকে! নাহ্, এ লোকটাকে আর দশটা বাঙ্গালের সাথে মেলানো যাচ্ছে না, মোটেই! জয়তু অখিলদাদু!
একজন অসাধারণ লেখক যখন তার অপূর্ব লেখার হাত ব্যবহার করেন না, তখন পাঠকদের সাথে ঘোরতর অন্যায় করেন তিনি!
ফরিদ ভাই, নিয়মিত হোন প্লিজ! প্লিজ!
@গুবরে ফড়িং,
লোকটা আসলেই ব্যতিক্রমী। যত হাস্যকর চিঠিই হোক না কেনো, চিঠির শেষে তিনি রেল কর্তৃপক্ষকে হুমকিও দিয়েছেন কিন্তু। এই সাহস কয়জনের আছে?
প্রশংসা বাক্যটা একটু কাঁঠাল হজম হয়ে গেলো আমার জন্য। :))
আমি নিয়মিতই লিখি। মুক্তমনায় হয়তো নিয়মিত না, কিন্তু ফেসবুকে নিয়মিতই লিখছি আমি। নিয়মিত লিখছি বললেও কম বলা হয়, রীতিমত লোকজনকে জ্বালিয়ে মারছি। আপনার তো সেটা অজানা থাকার কথা নয়। 🙂
ট্রেনের প্রতি কামরায় টয়লেট স্থাপন নিয়ে এই ইতিহাস জানতাম না, জেনে একটু অবাকই হলাম। আর আপনার মত আমিও কাঠাল পছন্দ করি না। 🙁
লেখাটি খুব ভালো লাগলো, ধন্যবাদ।
@তারিক,
জেনে ভালো লাগলো। কাঁঠালখোরদের বিরুদ্ধে কখনো লড়াইয়ে নামলে আমাদের ঐক্যের প্রয়োজন রয়েছে। 🙂
কয়েকজনের মধ্যে ফরিদ আহমেদ অন্যতম যাদের লেখা মুক্ত-মনার পাঠকদের আগ্রহ জাগায়। আর মুক্ত-মনার পাঠক ধরে রাখার দায়-দায়িত্ব ফরিদ আহমেদ এড়াতে পারে না। পারেনি যে এর প্রমাণ পেয়ে আমি খুশি।
@গীতা দাস,
লেখালেখির ক্ষেত্রে আগের সেই গুরুগম্ভীর ভাবটা আর নেই আমার মধ্যে। ইদানিং অনেক তরল লেখাও লিখছি। এই রূপান্তরটা ঘটেছে মূলত ফেসবুকের কল্যানে। ওই লেখাগুলো আবার মুক্তমনার পাতে দেবার যোগ্য নয়। সিরিয়াস কিছু লিখলে অবশ্যই তা মুক্তমনায় দেবো।
দারুণ গতিময় লেখা আপনার! খুবই ইন্টারেস্টিং বিষয়বস্তু… আরো চাই। 🙂
@তানভীরুল ইসলাম,
উৎসাহ বাক্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ তানভীর। এই ধরণের টিডবিডগুলো ইদানিং লিখছি। ফেসবুকের কারণে খুব সুবিধা হয়েছে। প্রায় সব ধরণের লেখাই মানিয়ে যায় ওইখানে।
কাঁঠালের হয় হোক। আমার এই অতি প্রিয় ফল কেন যেন ভদ্র সমাজে তেমন জনপ্রিয় না।
অখিল বাবুর কাঁঠাল খাজা না চিপা ছিল জানার আগ্রহ ছিল। আলামতে মনে হচ্ছে চিপাই হবে, যেটা নরম প্রকৃতির।
মুক্তমনায় মাঝে মাঝে ঢুকলে মনে হয় ভুতূড়ে কোন জনপদে ঢুকেছি, ফেসবুকের কাছে কি ব্লগ পুরোপুরিই পরাজয় বরন করে নিল?
@আদিল মাহমুদ,
আপনার অতি প্রিয় ফলটি আমারও অতি প্রিয়। বিশেষ করে চিপা কাঁঠাল।
লেখা ছাড়ুন একটা। অনেকদিন হলো আপনার লেখা পড়েছি।
@তামান্না ঝুমু,
এখন সিজন, আমি বর্তমানে কাঁঠাল সেবনে ব্যাস্ত আছি। খাজা চিপা কোনটাতেই ভেদাভেদ করছি না। লেখার টাইম নাই।
@আদিল মাহমুদ,
কথা সত্যি। সম্ভবত খুব বেশি রাজনৈতিক আলাপ এটার একটা কারণ। আগে বিজ্ঞানের লেখক আর পাঠকদের একটা বড় গ্রুপ ছিল মুক্তমনায়, তাদের এখন আর দেখা যায় না, বিজ্ঞানের লেখা আসেও কম আর আসলেও কমেন্ট না পেয়ে লেখকরা হতাশ হয়। ফরিদদা এত চমৎকার গল্প লিখেন, উনি নিজের লেখাকে হালকা ভেবে ব্লগে না দিয়ে ফেসবুকে দেন। এভাবেই বৈচিত্রহীনতায় ভুগে মুক্তমনা ঝিমিয়ে যাচ্ছে! (আমার নিজেরও দায় আছে স্বীকার করছি, কিন্তু যেখানে পাঠক নেই সেখানে লেখা কঠিন)
@রামগড়ুড়ের ছানা,
বিজ্ঞান লেখক পাঠকদের অভাব কিছুটা হলেও কাজ করতে পারে সন্দেহ নেই, কিন্তু মূল কারন সেটা নয়, ফেসবুকীয় প্রভাবই মূল কারন মনে হয়। এখন এমনকি মুক্তমনার তুমুল হিটের যায়গা ধর্ম বিষয়ক পোষ্টেও তেমন তাপ উত্তাপ দেখা যায় না। খোদ অভিজিত নিজেই জীবিত আছে কিনা সে নিয়ে কিছুদিন যাবত সংশয়ে আছি।
এর চেইন এফেক্ট হল পাঠকের অভাব থাকলে আসলেই লিখতে উতসাহ পাওয়া কঠিন। মানে হল পরিস্থিতির আরো অনিবার্য অবনতি। সিরিয়াস চিন্তা করার সময় এসেছে।
@আদিল মাহমুদ,
অভিজিৎকে অন্তত মাস খানেক ধরে এখানে অনুপস্থিত, বেশিও হতে পারে। এক মাস আগে ই মেইল করেছিলাম ব্লগের বিষয় নিয়ে; উত্তর পাইনি। ঘটনা কি? আপনাদের কারো সাথে যোগাযোগ হয়েছে নাকি? হতে পারে অভির শরীর খারাপ বা অন্য কোন ঝামেলা নিয়ে ব্যস্ত কিন্তু বেশ কদিন এখানে দেখিনি ওকে। মনে হচ্ছে অনেকটা যেন যার বিয়ে তার সাড়া নেই; পাড়া পড়শীর ঘুম নেই। অভিজিৎ আসলেই মুক্তমনার ব্যপারে চূড়ান্ত ফাঁকি মেরে যাচ্ছে। এই ব্লগের বিষয়ে ওর অংশগ্রহন কমতে কমতে প্রায় শুন্য হয়ে যাচ্ছে। এমন হলে চলে কি করে?
@কাজী রহমান,
অবশেষে কাঁঠালের বদৌলতে ওনার পাত্তা মিলেছে। উনি সপরিবারে বিশ্বকাপ দেখতে গেছেন বলে ফেসবুকীয় সূত্রে জানা গেছে।
চিপা কাঁঠালের জয় হোক।
@আদিল মাহমুদ,
আচ্ছা আচ্ছা এইডা তাইলে কাঁটালী গায়েব :)) যাগ্গা খবর পাওয়া গেলেই হৈলো, আপ্নারে থাঙ্কু (D)
@কাজী রহমান,
কাঁঠালের সিজন শেষ হলে না সে আবার গায়েব হয়ে যায় সেটা হল কথা।
@আদিল মাহমুদ,
চিন্তা করবেন না, কাঁঠাল সিজন শেষ হলে টমেটো সিজন আছে, পুরাণ টমেটো পাওয়া যাবে; চিন্তা কিসের? তবে খবর পাওয়া গেছে যে ফিরে এসে অভি হুজুর ভালো হয়ে যাবেন এবং এক্টিভ হবেন।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
মুক্তমনার মডারেশন টিমকে আরো বেশি সক্রিয় হতে হবে এই অবস্থার উন্নয়নে। লেখকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করে তাঁদের কাছ থেকে লেখা আদায় করে নিতে হবে। কবে তাঁরা লিখবে সেই আশায় বসে থাকা যাবে না। এছাড়া মুক্তমনার সাথে সক্রিয় লোকদের নিয়মিত সব লেখাতেই মন্তব্য করে আলোচনাকে জমজমাট করে রাখতে হবে। এগুলো করলেই ধীরে ধীরে জনসমাগম বাড়বে এখানে।
@আদিল মাহমুদ,
কাঁঠাল আমার সবচেয়ে অপছন্দের ফল। বিকট গন্ধের কারণে। বাসার ধারে কাছেও কাঁঠাল ঘেষতে পারে না। তবে এঁচড় আবার মহা পছন্দের জিনিস আমার। এটা সব্জি হিসাবে অসাধারণ। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
অতুলনীয় মিষ্টি গন্ধের কারণেই পাকা কাঁঠাল আমার সবচেয়ে প্রিয় ফল। এর সৌরভে বিভোর হয়ে যাই আমি।
@তামান্না ঝুমু,
ছ্যাঃ!! সেই কোন শৈশবে শেষ কাঁঠাল কোয়া খেয়েছি আমি। তারপর থেকে এই ফল নিষিদ্ধ আমার জীবনে। ও হ্যাঁ, বলতে ভুলে গেছি, কাঁঠালের বিচি আবার বেশ পছন্দের আমার। দারুণ মজাদার সবজি এটি। শুটকি দিয়ে রাঁধতে পারলে অতুলনীয়। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
পাকা কাঁঠালের সৌরভের চেয়ে শুঁটকির দুর্গন্ধ উত্তম। :-O :-O
শুঁটকিতে দুর্গন্ধ? একি কথা শুনি আজ চাটগাঁইয়ার মুখে?
@ফরিদ আহমেদ,
চাঁটগাঁইয়াদের নাকও আছে কিন্তু।
@তামান্না ঝুমু,
চাটগাঁইয়াদের যে নাকও আছে, সেতো চাক্তাই বাজারে গেলেই বোঝা যায়। 😀
@ফরিদ আহমেদ,
কোনো এক মাগুড়াইয়া কাম ঢাকাইয়া নাকি চাক্তাই বাজারের সৌরভে বিমোহিত হয়ে পড়েছিল, এমন জনশ্রুতি আছে চাটগাঁয়।
@তামান্না ঝুমু,
ক্রমতে ভুল আছে। তথ্যও অসম্পূর্ণ। আমি প্রথমত ঢাকাইয়া, দ্বিতীয়ত ময়মনসিংয়া, তৃতীয়ত মাগুরাইয়া। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
কোনো এক প্রথমত ঢাকাইয়া, দ্বিতীয়ত ময়মনসিংয়া, তৃতীয়ত মাগুরাইয়া ব্যক্তি চাক্তাই বাজারের সুগন্ধে আত্মহারা হয়ে গিয়েছিলেন। এমন কি বিদেশ বিভূঁয়ে এসেও তিনি সেই সুগন্ধ রিতিমত মিস করেন।
ঠিক ক’রে দিলাম। 🙂
মিস করবো কেনো? নিয়মিতই আস্বাদন করি। এখানে ঘরোয়া নামে একটা রেস্টুরেন্ট আছে। ওখানে প্লাস্টিকের বাটিতে ভরা শুঁটকির ভর্তা থাকে। প্রায়শই নানা জাতের কয়েকটা বগলদাবা করে নিয়ে আসি আমি। আমার ফ্রিজে সবসময়ই রিজার্ভ থাকে। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
প্রবাসে তিনি নিজের ফ্রিজটাকেই একটা খুদে চাক্তাই বানিয়ে ফেলেছেন। একেই বলে প্রবাসে চাক্তাইয়ের স্বাদ।
ঘরোয়া রেস্টুরেন্ট এখানেও আছে। নিরাপদ দুরত্বে থাকতে হবে তো!
@ফরিদ আহমেদ,
আপনি ভদ্দরলোক প্রমানিত। কিন্তু আপনাকে গালি দিবার মত উপযুক্ত ভাষা আমার জানা নাই। আমার চেনা জানা খুব কম লোকই কাঁঠাল পছন্দ করে। সম্ভবত ফলটা বেশ শস্তার বলে। দাম বাড়ানো গেলে বা থাইল্যান্ড থেকে আমদানী করা হলে জনপ্রিয়তা বেড়ে যেত এটা নিশ্চিত।
@ফরিদ আহমেদ,
ডুরিয়ানের গন্ধকে কি বলবেন তাহলে? আমি জানিনা আপনার ওখানে এই ফল আছে কিনা, এই ফল কখনো বাংলাদেশে দেখিনি, সিঙ্গাপুরে এসে চিনেছি, দেখতে পুরাই কাঠালের মতো, ১০০হাতের ভিতর যাওয়া তীব্র গন্ধে। পাবলিক ট্রান্সপোর্টে বড় করে লেখা থাকে “নো ডুরিয়ান”।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
এখানে চাইনিজ বা ভিয়েতনামিজ গ্রোসারিগুলোতে পাওয়া যায়। কাঁঠালসদৃশ যে কোনো জিনিস শুধু না, যাঁরা এই বিকট গন্ধময় কাঁঠাল খায়, তাঁদের থেকেও একশো হাত দূরে থাকা প্রয়োজন। 🙂
মুক্তমনাতে সবসময় যে গুরুগম্ভীর লেখা থাকতে হবে এমন শর্ত আছে নাকি? তাহলেতো খুবই একঘেয়ে হয়ে যাবে। মজা লাগলো লেখাটা পড়ে, লেখার শেষে আসার আগে বুঝতে পারিনি এই কাহিনী সত্যি ঘটেছিলো!
@রামগড়ুড়ের ছানা,
সাধারণ এক লোকের এই সামান্য চিঠিটা যুগান্তকারী পরিবর্তেন এনে দিয়েছিলো।
কাঁঠাল আমার অনেক প্রিয় ফল কিন্তু।
@তামান্না ঝুমু,
জয়তু কাঁঠাল।
হা হা হা বেরসিক ট্রেন রে। যাকগে ফরিদ রসিক লোহালক্কড়েও প্রাণ যুগিয়েছে। খুব মজা করে পড়লাম। অখিল বাবু প্রতিবাদ না করলে আর কদ্দিন যে বন জঙ্গলে ওদের ঘ্যোঁত ঘ্যোঁত করতে হোত কে জানে :))
@কাজী রহমান,
ঘোঁত ঘোঁত করতে করতে নিয়মিত বন থেকে ভ্রমণ করে হেগে আসতে হতো। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
এইত্তো আবার টুকলিফাই কইরা ধরা খাইলা। আনন্দবাজারের রসিক সাংবাদিকের বিখ্যাত সেই নিউজ ক্যাপশনটা ছিল ‘ইন্দিরা গান্ধী বন থেকে হেগে এসেছেন’
যাউকগা, এই যে দাম দেহাও, বহুদিন পরপর চেহারা মোবারক দেখাও, এইগুলি কি? তোমাগো হইসে কি? তোমরা হেবিওয়েট ব্লগার ব্লগাইবা এইখানে; শুনলাম ফেবু ফেবু কইরা পাগল হয়া গেলা। এই ব্লগটা তোমরা মিয়া এতিমের মত ফালায়া গেলা গা, এই সব কি? আর অভিজিৎ মিয়ার খবর কি? অরে তো দেখতাসি না বহুদিন হইলো। ঘটনা কি? অন্য সব বাঘ বাঘিনী ব্লগার গুলাও কোথায় জানি কি করতাসে। এই সব তো মিয়া ভালা না। সবতে মিল্ল্যা ভালা হওয়া যাও, হ্যানে ব্লগাও। যত্তসব যন্ত্রণা।