কনচিতা ভুর্ষ্ট ওরফে টমাস নয়েভির্থ

কনচিতা ভুর্ষ্ট ওরফে টমাস নয়েভির্থ

তার শিল্পী নাম কনচিতা ভুর্ষ্ট, আসল নাম টম নয়েভির্ত (টমাস)। তিনি অষ্ট্রিরিয়ার নাগরিক এবং অষ্ট্রিয়াকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন ইউরো ভিশন প্রতিযোগীতায়। গতকাল ১১ই মে ২০১৪ ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া ইউরো ভিশন সংগীত প্রতিযোগীতায় তিনি বিজয়ী হয়েছেন। তাও আবার মহা দাপটের সঙ্গে । এই কন্ঠশিল্পী নারী চরিত্রে অবস্থান করেন যখন তিনি ভুর্ষ্টের ভূমিকা পালন করেন। তিনি ২৯০ পয়েন্ট পেয়ে প্রতিযোগীতার বিজয়ী হয়েছেন। জানা যায়, ১৯৬৬ সালের পর থেকে ইউরো ভিশনে আর কোন শিল্পী এত বেশি পয়েন্ট পাননি। ভুর্ষ্টের প্রধান প্রতিদ্বন্দী ছিলেন নেদারল্যান্ডের শিল্পী। নেদারল্যান্ডের প্রতিযোগীর পয়েন্টও ২০০ এর উপরে থাকলেও অন্যান্য দেশের প্রতিযোগীরা ১০০ পয়েন্টও অতিক্রম করতে পারেনি।

ছোটবেলা থেকে সবাই তাকে ছেলে হিসেবে জানলেও পরবর্তীতে ভুর্ষ্ট আবিষ্কার করেন তিনি আসলে পুরুষ নন আবার নারীও নন। তিনি সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি লিঙ্গ ধারণ করেন। তারপর তিনি তার লিঙ্গের অধিকার ও ব্যাক্তি স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করার জন্য সার্জারীর সাহায্যে নিজের শরীরের পরিবর্তন করেন। শুধু তাই নয়, তার যখন যে রূপটি ধারন করতে ভাল লাগে তিনি সে রূপ ধারণ করেই নিজেকে উপস্থাপন করেন। যেমন এবার ইউরো ভিশন প্রতিযোগীতায় তিনি শারীরিক গঠন, চুলের ধরন ও পোশাক আষাকে নারী রূপ ধারণ করলেও তার মুখে দাড়ি ছিল পুরুষের মতো।

ভুর্ষ্ট অষ্ট্রিয়াকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন ইউরো ভিশন প্রতিযোগীতায়

ভুর্ষ্ট বহুদিন ধরে লিঙ্গ বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছেন। তিনি নিজে একজন সমকামী। তার মতে একজন মানুষের পরিচয় শুধু নারী ও পুরুষের মধ্যে আটকে থাকতে পারেনা। তিনি বিশ্বাস করেন, একজন মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে তার লিঙ্গ কি এবং সে আসলে নিজেকে কিভাবে প্রকাশ করতে চায়। শুধু তাই নয়, সে তার লিঙ্গ পরিবর্তন করার অধিকার রাখে। উল্লেখ্য, ইউরোপে তৃতীয় লিঙ্গ ও সমকামিতা আইনগত ও সামাজিক ভাবে অনেক আগেই গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। তারপরেও সামাজিক ভাবে লিঙ্গ বৈষম্য সম্পূর্ণ দূর হয়ে যায়নি। বেশির ভাগ মানুষ লিঙ্গ বলতে শুধু নারী বা পুরুষকে বোঝে। আর এই প্রথার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন ভুর্ষ্ট।

কনচিতা ভুর্ষ্ট অষ্ট্রিয়া এবং তার আশেপাশে দেশগুলোতে তার সৃজনশীল কর্মকান্ডের কারনে অনেক আগে থেকেই পরিচিত মুখ। এবার অসাধারণ কন্ঠে সংগীতের মাধ্যমে লিঙ্গ বৈষ্যমের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সুফলে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়লো বিশ্বব্যাপী। ভুর্ষ্ট ২০১১ সালে ফ্যাশন ডিজাইনে অষ্ট্রিয়ার গ্রাজ ইউনিভার্সিটি থেকে গ্র্যাজুয়েশন করলেও তিনি ইউরোপ জয় করলেন তার সংগীত প্রতিভায়।

ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা