যারা আমরা বাইবেল এবং খৃস্টধর্ম নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি এবং বিভিন্ন চার্চে বিতর্ক করি তাদের কাছে ক্রাইস্টবিডি নামটি নতুন নয়। বর্তমান তরুন খৃস্টান প্রজন্মের কাছে ক্রাইস্টবিডি যীশুর সৈনিকদের অগ্রদূত হিসেবে সুপরিচিত। অখৃস্টান এবং অল্প বিশ্বাসী খৃস্টান মানুষের প্রশ্নের উত্তর দিতে এবং বিশ্বাস বৃদ্ধি করতে তারা এগিয়ে এসেছে যা আসলেই প্রশংসার দাবী রাখে। আজকাল যে কোন খৃস্টান ছেলে মেয়ের সাথে বাইবেলের বিষয়ে কথা বলার সময়ে তাদের কাছে প্রশ্নের উত্তর না থাকলে তারা ক্রাইস্ট বিডির সাজেশন দিচ্ছেন। মেরুদণ্ড ভেঙ্গে যাওয়া খৃস্টান বিশ্বাসীদের কাছে ক্রাইস্ট বিডি আজ এক আশীর্বাদ।

খুব আশা নিয়ে ক্রাইস্টবিডি ডট org সাইট টি পরিদর্শন করলাম কিন্তু বরাবরের মতনই হতাশ হলাম।
সেই পুরনো মদ জাস্ট নতুন বোতলে।

যীশু ঈশ্বরের পুত্র কিনা বা বাইবেল ঈশ্বরের বাক্য কিনা বা শুধু খৃস্ট বিশ্বাস সম্পর্কীয় বিষয়ে উত্তর দিলে সেটা নিয়ে আমার বা আমাদের কারো তেমন কিছুই বলার ছিল না; কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি নতুন খৃস্টান প্রজন্মের কাছে বিজ্ঞান নিয়ে মিথ্যাচার এবং ভুল শিক্ষা দিয়ে তাদের ভুল পথে চালনা করছে। খৃস্টান যুব সমাজে এরা যীশুর বানী প্রচার করছে সেটা একটা ভালো কথা; কিন্তু বিজ্ঞানের নামে তারা যা শেখাচ্ছেন এবং প্রচার করছেন সেটা কোন ভাবেই সমর্থন দেয়া যায়না।

তাদের কিছু মিথ্যাচারের নমুনা নিচে তুলে ধরছিঃ

প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা সবুজ চৌধুরীর একটি পোস্ট দিয়ে শুরু করি।
তিনি লিখেছেনঃ

পৃথিবীর বয়স কত?

অনেকেই প্রশ্ন করেন বাইবেলে কোথায় বলা আছে যে পৃথিবীর বয়স ৬,০০০ বছর? এই প্রশ্নের উত্তর বাইবেলের কয়েকটি পদের উল্লেখের মাধ্যমে দেয়া সম্ভব।
আদিপুস্তকের বংশতালিকাঃ

প্রথম বিষয় হচ্ছে আদিপুস্তক ৫ অধ্যায় এবং আদিপুস্তক ১১ অধ্যায়ের বংশতালিকা। এই বংশতালিকার ধরন আনুযায়ী এই তালিকায় কোনো ফাঁক নেই। আদিপুস্তক ১২:৪ পদ আমাদের সাহায্য করে এই সময় বের করতে যখন অব্রাহাম হারাণকে ছেড়ে চলে আসেন। এই সময়টা ছিল অবশ্যই সৃষ্টির ২০৮৩তম বছর।
আদিপুস্তক ১২:১০ পদের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি অব্রাহামের উত্তরসূরিরা মিসরে ছিল ৪৩০ বছর। ১ম রাজাবলী ৬:১ পদের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি শলোমন রাজা মন্দির নির্মাণ করেন ইস্রায়েল জাতি মিসর দেশ থেকে বের হয়ে আসার ৪৭৯ বছর পর। দেশ ভাগ হয়ে যায় শলোমন রাজা মারা যাবার ৩৭ বছর পর। এই সময়ের ৩৯০ বছর পর যিরূশালেম ধ্বংস হয়ে যায়(যিহিষ্কেল ৪:৪-৬পদ)। এই সংখ্যাগুলো যোগ করলে আমরা পেয়ে যাব যিরূশালেমের ধ্বংসের সময়। এবং এই সময়টি হচ্ছে অবশ্যই ৩৪১৯। এই সময়কে বাইবেলে আরেকটি সাল হিসাবে বলা হয় আর তা হচ্ছে ৫৮৪বিসি। এখন ৩৪১৯ ও ৫৮৪ যোগ করা হলে আমরা পৃথিবীর বয়স পাব ৪০০৩। এরপর যীশুর জন্মের পর প্রায় ২০০০ বছর পার হয়ে গেছে। অতএব, আমরা এখন ৪০০৩ ও ২০০০ বছর যোগ করলে পাব ৬০০৩ বছর। পৃথিবীর বয়স প্রায় ৬০০০ বছর এই সত্যটি শুধুমাত্র তাদের জন্য প্রযোজ্য যারা বাইবেলের পক্ষে অবস্থান করেন।

কত দৃঢ়টার সাথে তিনি দাবী করছেন পৃথিবীর বয়স মাত্র ৬০০০ বছর!!!
কিভাবে তিনি এই হিসাব পেলেন??? জাস্ট বাইবেলে বিশ্বাস করে। এর আগেও কিছু জানার দরকার নেই পিছেও কিছু জানার দরকার নেই। তাই তিনি তার লেখার শেষে সুন্দর ভাবে উল্লেখ করেছেন “পৃথিবীর বয়স প্রায় ৬০০০ বছর এই সত্যটি শুধুমাত্র তাদের জন্য প্রযোজ্য যারা বাইবেলের পক্ষে অবস্থান করেন। প্রিয় সবুজ চৌধুরী; আপনার বলায় একটু ভুল হয়েছে। আপনার বলা উচিৎ ছিল “পৃথিবীর বয়স প্রায় ৬০০০ বছর এই মিথ্যাটি শুধুমাত্র তাদের জন্য প্রযোজ্য যারা বাইবেলের পক্ষে অবস্থান করেন বিজ্ঞানের সত্যকে অস্বীকার করে”

পৃথিবীর বয়স প্রায় ৫০০ কোটি বছর!!! না তারা আপনার মতন বাইবেলের পাতা থেকে বয়স গুনে সেটা বের করেন নি; বিষয়টি এত সহজ নয়।
আবদুল গাফফার রনি কেমন করে গোনা হলো পৃথিবীর বয়স শিরোনামে অসাধারণ একটি লেখা লিখেছিলেন জিরো টু ইনফিনিটি ম্যাগাজিনে।
তিনি লিখেছিলানঃ

সভ্যতার ঊষালগ্ন থেকেই আমাদের আবাসভূমি মানুষের মনে জন্ম দিয়ে আসছে বিচিত্রসব প্রশ্নের। তেমনি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো-‘পৃথিবীর বয়স কত?’
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে এই প্রশ্নের সমাধান দিয়েছেন। কারো মতে, পৃথিবী আদি ও অনন্ত, এর কোনো সৃষ্টি বা ধ্বংস নেই। কিন্তু বিরোধীরা বলেছেন অন্য কথা। তাঁদের মতে, পৃথিবী একটা নির্দিষ্ট সময়ে সৃষ্টি হয়েছে এবং এক সময় তা ধ্বংসও হয়ে যাবে। আধুনিক বিজ্ঞান পৃথিবীর অসীমতত্ত্বকে ভুল প্রমাণিত করেছেন। শুধু তাই নয়, আধুনিক বিজ্ঞান পৃথিবীর মোটামুটি নির্ভুল একটা বয়স নির্ণয় করতেও সক্ষম হয়েছে। তা হলো ৫০০ কোটি বছর। পৃথিবীর সময় নির্ণয়ের মতো একটা অকল্পনীয় কাজকে বাস্তবায়ন করতে মূল ভূমিকা পালন করেছে ইউরেনিয়াম। মানে ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয় ধর্ম ব্যবহার করা হয় এই পরীক্ষায়।
কেবলমাত্র পৃথিবীর বয়স নয়, লক্ষ লক্ষ বছরের পুরোনো কাঠ, হাজার হাজার বছর আগে মৃত প্রাণীর কঙ্কাল, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ইত্যাদির বয়স নির্ণয়ের ক্ষেত্রেও মৌলের তেজস্ক্রিয় ধর্ম ব্যবহৃত হয়। তাই বয়স নির্ণয় প্রক্রিয়া সম্পর্কে আলোচনার পূর্বে মৌলের তেজস্ক্রিয় ধর্ম তেজস্ক্রিয়তা সম্পর্কে খানিকটা ধারাণা রাখা দরকার।

তেজস্ক্রিয়তা
এমন একটা সময় ছিল যখন বিজ্ঞানীরা মনে করতেন, পরমাণুই একটি মৌলিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম ও অবিভাজ্য কণা, সুতরাং এক ধরনের মৌলিক পদার্থকে অন্য কোনো মৌলিক পদার্থে রূপান্তর করা সম্ভব নয়।
১৮৯৭ সালে স্যার জে জে থমসন ইলেকট্রন আবিষ্কার করলেন। তখন বিজ্ঞানীরা আগের ধারণা থেকে সরে আসতে হলো। পরবর্তীকালে আরও দুটি সূক্ষ্ম কণিকা প্রোটন ও নিউট্রন আবিষ্কৃত হয়। প্রত্যেক মৌলের প্রত্যেক পরমাণুই মূলত এই তিনটি সুক্ষ্ম কণিকা (ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন) দিয়ে গঠিত। এ সমন্বয় অনেকটা আমাদের সৌরজগতের মতো। সৌরজগতে সূর্যকে কেন্দ্র করে যেন গ্রহগুলো নিজ নিজ কক্ষপথে ঘুরছে, তেমনি পরমাণুতে ইলেকট্রনগুলো একটি নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে নিজ নিজ কক্ষপথে সর্বদা ঘুরছে। প্রোটন ও নিউট্রনের সমন্বয়ে পরমাণুর নিউক্লিয়াস গঠিত হয়। কোন মৌলের পরমাণুর নিউক্লিয়াসের ভেতরের প্রোটন ও নিউট্রনের মিলিত সংখ্যাকে ওই মৌলের ভরসংখ্যা বলে।
এক একটি নির্দিষ্ট মৌলের জন্য ভরসংখ্যা নির্দিষ্ট থাকে। অধিকাংশ মৌলের ক্ষেত্রেই পরমাণুর ভর সংখ্যা স্থিতিশীল। কিন্তু কিছু মৌল আছে, যাদের ভর সংখ্যা পরিবর্তনীয়। নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ার সাহায্যে প্রথমে এসব মৌলের পরমাণুর নিউক্লিয়াসে ভাঙন সৃষ্টি করা হয। অতঃপর ভরসংখ্যা পরিবর্তন করে (নিউক্লিয়াসের প্রোটন অথবা নিউট্রন সংখ্যা হ্রাস বা বৃদ্ধি করে) এক ধরনের মৌলকে সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী অন্য কোনো মৌলে পরিণত করা সম্ভব। আবার এমন কিছু অস্থিতিশীল মৌল আছে, যাদেরকে অন্য মৌলে পরিণত করতে নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ার প্রয়োজন হয় না। এসব মৌলের পরমাণুর নিউক্লিয়াসকে এক ধরনের রশ্মি (আলফা বা বিটা বা গামা রশ্মি) বিকিরণ করে ক্ষয়প্রাপ্ত হয। ফলে সংশ্লিষ্ট পরমাণুর ভরসংখ্যা পরিবর্তিত হয়ে অন্য মৌলের পরমাণুতে পরিণত হয়। মৌলের এই রশ্মি বিকিরণ ধর্মকে তেজস্ক্রিয়তা বলে। বিকিরিত রশ্মিকে তেজস্ক্রিয় রশ্মি এবং বিকিরক মৌলকে তেজস্ক্রিয় মৌল বা তেজস্ক্রিয় পদার্থ বলে। তেজস্ক্রিয় মৌলের রশ্মি বিকিরণ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ স্বতঃস্ফূর্ত এবং এর উপর বহিঃশক্তির কোনো প্রভাব নেই। একটি অস্থিতিশীল মৌল তেজস্ক্রিয় রশ্মি বিকিরণ করে সম্পূর্ণরূপে রূপান্তরিত হয়ে ভিন্নধর্মী একটি স্থিতিশীল মৌলে পরিণত হওয়ার আগ পর্যন্ত তার তেজস্ক্রিয়তা অব্যহত থাকে। একটি নির্দিষ্ট সময় পর একটি তেজস্ক্রিয় মৌল রশ্মি বিকিরণ করে আদি ওজনের অর্ধেকে পরিণত হয় এবং বাকি অর্ধেক অন্য মৌলে পরিণত হয়। ঐ নির্দিষ্ট সময়কে ঐ মৌলের অর্ধায়ু বলে।
যেমন–থোরিয়ামের (একটি তেজস্ক্রিয় মৌল) অর্ধায়ু ২৪ দিন। অর্থাৎ ২৪ দিনে একখণ্ড থোরিয়াম ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে মূল ওজনের অর্ধেকে পরিণত হয়। আরো ২৪ দিন পর অর্থাৎ মোট ৪৮ দিন পর প্রাথমিক ওজনের এক-চতুর্থাংশ, ৭২ দিন পর এক-অষ্টমাংশ এবং ৯৬ দিন পর এক ষোঢ়শাংশ থোরিয়াম অবশিষ্ট থাকবে এবং বাকি অংশ অন্য মৌলে রূপান্তরিত হবে। অর্থাৎ ১০০ গ্রামের একটি থোরিয়ামখণ্ড নিয়ে পরীক্ষা করলে দেখা যাবে, ২৪ দিন পর খণ্ডটিতে ৫০ গ্রাম, ৪৮ দিন পর ২৫ গ্রাম, ৭২ দিন পর ১২.৫ গ্রাম এবং ৯৬ দিনে ৬২.৫ গ্রাম থোরিয়াম অবশিষ্ট থাকবে। সুতরাং আমরা বলতে পারি ওজনের সাথে তেজস্ক্রিয় ক্ষয়ের (রশ্মি বিকিরণের) কোনও সম্পর্ক নেই। তাই একই তেজস্ক্রিয় মৌলের বিভিন্ন খণ্ডের অর্ধায়ুও এক হবে। আবার বিভিন্ন মৌলের রশ্মি বিকিরণের হার বিভিন্ন। তাই দুটি ভিন্ন প্রকার মৌলের অর্ধায়ু কখনো এক হবে না। আবার একটি মৌলের সবগুলো পরমাণুর নিউক্লিয়াস একই সাথে রশ্মি বিকিরণ শুরু করে না। এ প্রক্রিয়া সংগঠিত হয় ধাপে ধাপে। যদি তা না হত, তাহলে একই সাথে একটি মৌলের সবটুকু অংশ অন্য মৌলে পরিণত হতো। সেক্ষেত্রে অর্ধায়ু অস্তিত্বহীন (বাস্তবে যা অসম্ভব) হয়ে পড়ত।

ইউরেনিয়ামের সাহায্যে পৃথিবীর বয়স নির্ণয়

ইউরেনিয়ামের পারমাণবিক গঠন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়–এটা একটা তেজস্ক্রিয় পদার্থ। এর পরমাণুর ভেতরে থাকা নিউক্লিয়াসগুলো ক্রমাগত রশ্মি বিকিরণ করে সীসাতে রূপান্তরিত হয়। সীসা হলো অতেজস্ক্রিয় স্থিতিশীল মৌলিক পদার্থ। প্রতি সেকেন্ডে রশ্মি বিকিরণের হার ব্যবহার করে একটা গাণিতিক সমীকরণের সাহায্যে ইউরেনিয়ামের অর্ধায়ু নির্ণয় করা হয়। সকল তেজস্ক্রিয় মৌলের অর্ধায়ু এ প্রক্রিয়ায় নির্ণয় করা হয়।
পরীক্ষা করে দেখা গেছে ইউরেনিয়ামের অর্ধায়ু ৪৫০ কোটি বছর। অর্থাৎ এক খণ্ড ইউরেনিয়ামের প্রাথমিক পর্যায়ে যে পরিমাণ ইউরেনিয়াম পরমাণু থাকে ৪৫০ কোটি বছর পর ঐ খণ্ডতে তার অর্ধেক পরিমাণ ইউরেনিয়াম পরমাণু অবশিষ্ট থাকবে এবং বাকি অর্ধেক পরমাণুর নিউক্লিয়াস ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে সীসা’র পরমাণুতে রূপান্তরিত হবে।
ধারণা করা হয় মহাবিস্ফোরণ দ্বারা সৌরজগত সৃষ্টির সময় এর সকল গ্রহ নক্ষত্রের সাথে আমাদের পৃথিবী জন্ম লাভ করে। প্রথমে এটা ছিল একটা জলন্ত অগ্নিগোলক। কালের বিবর্তনে তাপ বিকিরণ করতে করতে এক সময় এটা কঠিন রূপ লাভ করে। বর্তমান পৃথিবীতে সবচেয়ে পুরোনো যেসব কঠিন শীলা খণ্ডগুলো পাওয়া গেছে, ধারণা করা হয় তা পৃথিবী সৃষ্টির শুরুর দিকের শিলাখণ্ড। সুতরাং এ সব শীলাখণ্ডগুলোর বয়স পৃথিবীর বয়সের কাছাকাছি বলে ধারণা করা হয়। সুতরাং শীলাখণ্ডগুলোর বয়স নির্ণয় করতে পারার অর্থই হলো পৃথিবীর বয়স নির্ণয় করা।
ইউরেনিয়ামযুক্ত কতগুলো প্রাচীন শীলাখণ্ড নিয়ে পরীক্ষা করলে দেখা যাবে, এগুলোতে যে পরিমাণ ইউরেনিয়াম পরমাণু আছে ঠিক সেই পরিমাণ সীসার পরমাণুরও রয়েছে। যেহেতু ইউরেনিয়াম ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে অনবরত সীসায় পরিণত হয়। সুতরাং আমরা বলতে পারি শীলাখণ্ডগুলো সৃষ্টির সময় তাতে শুধুমাত্র ইউরেনিয়াম পরমাণু ছিল, কোনো সীসার পরমাণু ছিল না। সময়ের হাত ধরে তেজস্ক্রিয় রশ্মি বিকিরণ করতে করতে ইউরেনিয়াম পরমাণুগুলোর অর্ধেক সীসায় পরিণত হয়েছে। অর্থাৎ শীলাখণ্ডগুলোতে বিদ্যমান ইউরেনিয়াম বর্তমানে তার অর্ধায়ুতে অবস্থান করছে। যেহেতু ইউরেনিয়ামের অর্ধায়ু ৪৫০ কোটি বছর। সুতরাং শীলাখণ্ডগুলোর বয়সও ৪৫০ কোটি বছর। আবার শীলাখণ্ডগুলোর বয়স পৃথিবীর বয়সের কাছাকাছি ধরলে পৃথিবীর বয়স ৪৫০ কোটি বছরের কিছু বেশি বলে ধরে নেয়া হয়। সেটা কেউ বলেছেন ৫০০ কোটি বছর কারো মতে ৬০০ কোটি। যেটাই হোক, তা ৪৫০ কোটির চেয়ে খুব বেশি ব্যবধানের তো নয়।

তেজস্ক্রিয় কার্বনের সাহায্যে বহু পুরানো বস্তুর বয়স নির্ণয়

ইউরেনিয়ামের সাহায্যে নির্ণীত পৃথিবীর বয়সটা পুরোপুরি নির্ভুল না হলেও তেজস্ক্রিয় কার্বণ পদ্ধতিতে যেসব বস্তুর বয়স নির্ণয় করা হয় তা সম্পূর্ণরূপে ভুলত্রুটির উর্ধ্বে। যেমন, বহু বছরের পুরোনো কাঠ, কয়লা, বিভিন্ন প্রাণীর কঙ্কাল, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন প্রভৃতি।
উদ্ভিদ, প্রাণীসহ সমস্ত জীবকুলের দৈহিক গঠনের অন্যতম প্রধান উপাদান কার্বন। কার্বন প্রধানত দুই প্রকার। একটা স্থিতিশীল অতেজস্ক্রিয় কার্বন। অন্যটা অস্থিতিশীল তেজস্ক্রিয় কার্বন। তেজস্ক্রিয় কার্বন ক্রমাগত রশ্মি বিকিরণ করে ক্ষয়প্রাপ্ত হয। স্থিতিশীল অতেজস্ক্রিয় কার্বণ প্রকৃতিতে মুক্ত অবস্থায় বা যৌগিক পদার্থের উপাদান হিসাবে পাওয়া যায়। আর তেজস্ক্রিয় কার্বন নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ার সাহায্যে সৃষ্টি হয়।
স্থিতিশীল কার্বন-ডাই-অক্সাইড, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, হাইড্রোজেন প্রভৃতি গ্যাসসমূহ বায়ুমণ্ডেলর প্রধান উপাদান। মহাকাশের বিভিন্ন্ গ্রহ, নক্ষত্র, মহাজাগতিক থেকে আসা এক ধরনের তেজস্ক্রিয় রশ্মি ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে আমাদের বায়মন্ডলে। এইসব রশ্মিকে মহাজাগতিক রশ্মি বলে। মহাজাগতিক রশ্মিতে যেসব নিউট্রন থাকে সেগুলো বায়ুমণ্ডলের নাইট্রোজেন পরমাণুর নিউক্লিয়াসগুলোকে আঘাত করে। ফলে নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া সংঘটিত হয়। নাইট্রোজেন নিউক্লিয়াসে ভাঙ্গনের ধরে। ফলে সম্পূর্ণ নতুন ভরসংখ্যার দুটি ভিন্ন পরমাণুর নিউক্লিয়াস সৃষ্টি হয়।
নবগঠিত দুটি পরমাণুর একটা হলো হাইড্রোজেন। অন্যটা তেজস্ক্রিয় কার্বন। উৎপন্ন হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই তেজস্ক্রিয় কার্বন পরমাণুগুলো বায়ুমণ্ডলের অক্সিজেন পরমাণুর সাথে যুক্ত হয়ে তেজস্ক্রিয় কার্বন-ডাই-অক্সাইড গঠন করে। সবুজ উদ্ভিদ খাদ্য তৈরির উদ্দেশ্যে বায়ুমণ্ডল হতে কার্বন-ডাই-অক্সাইড (স্থিতিশীল ও তেজস্ক্রিয় উভয় প্রকার) শোষণ করে। শোষণ করা এসব কার্বন-ডাই-অক্সাইড অণু উদ্ভিদের দেহাভ্যান্তরে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে কাবর্ন (তেজস্ক্রিয় ও অতেজস্ক্রিয়) ও অক্সিজেন পরমাণুতে বিভক্ত হয়ে যায়। পরবর্তীতে অক্সিজেন পরমাণুগেুলো উদ্ভিদের দেহ থেকে বেরিয়ে আসে। কিন্তু তেজস্ক্রিয় ও অতেজস্ক্রিয় উভয় প্রকার কার্বন পরমাণু দেহাভ্যান্তরে থেকে যায়। যেহেতু পশুপাখি ও মানুষ খাদ্য হিসাবে উদ্ভিদ, ফলমূল ও শস্যদানা গ্রহণ করে, ফলে উদ্ভিদের দেহে জমে থাকা কার্বণ (তেজস্ক্রিয় ও অতেজস্ক্রিয়) পশুপাশি ও মানুষের শরীরে চলে যায়। আবার মাংশাসী প্রাণী খাদ্য হিসাবে বিভিন্ন প্রাণীকে ভক্ষণ করে, সুতরাং এসব প্রাণীর মাধ্যমে মাংশাসী প্রাণীর শরীরেও কার্বন পৌঁছে যায়। জীবন্ত উদ্ভিদ ও প্রাণীদের দেহে কার্বনের এই সরবরাহ এমনভাবে ঘটে, মৃত্যুর সময় প্রতিটি জীবদেহে তেজস্ক্রিয় ও অতেজস্ক্রিয় কার্বনের অনুপাত সর্বদা সমান (১:১) থাকে। মৃত্যুর সময়ে তেজস্ক্রিয় কার্বনের পরমাগুলো তেজস্ক্রিয় রশ্মি বিকিরণ করে ধীরে ধীরে ক্ষয়প্রাপ্ত হতে থাকে। কিন্তু অতেজস্ক্রিয় কার্বন পরমাণুগুলো নিউক্লিয়াস স্থিতিশীল। তাই মৃতদেহে যুগ যুগ ধরে অতেজস্ক্রিয় কার্বনের প্রতিটি পরমাণু অক্ষুণ্ন থাকে।
গবেষণায় প্রমাণিত ও তেজস্ক্রিয় কার্বনের অর্ধায়ু ৫৭৬০ বছর। অর্থাৎ ৫৭৬০ বছর পর কোনো মৃতদেহ মিশে থাকা তেজস্ক্রিয় কার্বন পরমাণুর সংখ্যা কমে অর্ধেক চলে আসে। মানে অর্ধেক অবশিষ্ট থাকে আরকি।
যেহেতু জীবের মৃত্যুর সময় উভয় কার্বনের অনুপাত সমান (১:১) থাকে, সুতরাং অর্ধায়ুকাল পরে মৃতদেহটিতে তেজস্ক্রিয় ও অতেজস্ক্রিয় কার্বনের অনুপাত হবে ১২ : ১। অনুরূপভাবে মৃতদেহটিতে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ অর্ধায়ুকাল পরে তেজস্ক্রিয় ও অতেজস্ক্রিয় কার্বনের অনুপাত হবে ১৪ : ১, ১৮ : ১ ও ১১৬ : ১।

ধরা যাক, একটি ফসিলে ৫০০টি তেজস্ক্রিয় ও ১০০০টি অতেজস্ক্রিয় কার্বন পরমাণু রয়েছে। তাহলে ফসিলটিতে তেজস্ক্রিয় ও অতেজস্ক্রিয় কার্বনের অনুপাত ১২ : ১। সুতরাং ফসিলটি অর্ধায়ুতে অবস্থান করছে। সুতরাং এর বর্তমান বয়স ৫৭৬০ বছর। ফসিলটিতে যখন তেজস্ক্রিয় ও অতেজস্ক্রিয় কার্বনের অনুপাত ১৪ : ১, ১৫ : ১, ১৮ : ১, ১১০ : ১ ইত্যাদি হবে তখন ফসিলটির বয়স হবে যথাক্রমে ১১৫২০ বছর, ১৩৩৭৭ বছর, ১৭২৮০ বছর, ১৯১৩৮ বছর ইত্যাদি। এভাবে তেজস্ক্রিয় ও অতেজস্ক্রিয় কার্বনের অনুপাত নির্ণয় করে কার্বনের অর্ধায়ু দ্বারা একটি গাণিতিক সমীকরণের সাহায্যে যেকোনো পুরোনো বস্তুর বয়স নির্ণয় করা যায়।

আপনারা কোন প্রমান ছাড়াই বাংলার যুব সমাজের কাছে প্রচার করছেন পৃথিবীর বয়স ৬০০০ বছর!!! বিজ্ঞান যদি এভাবে বাইবেলের পাতা গুনে আবিষ্কার করা যেত তবে তো ভালোই হতো।
দশ হাজার বছরের আরও বেশী আগেও – চীন, অস্ট্রলিয়া, আফ্রিকা, ভারত, দক্ষিন আমেরিকা, পর্তুগাল, স্পেন, ফ্রান্সে মানুষ বসবাস করত তার প্রমান রয়েছে।
ফ্রান্সের গুহায় আবিস্কৃত “বাইসন” এর পাইন্টিং এর কথা আমরা জানি যা প্রায় ৩২০০০ বছর আগের মানুষের আঁকা।
বর্তমান প্রজন্মের মানুষের (Homo sapiens sapiens) দেড় লক্ষ থেকে দুই লক্ষ বছরের পুরনো ফসিল ইন্দোনেশিয়া, আফ্রিকা ও চীনে আবিস্কৃত হয়েছে।
তবে আধুনিক মানুষের উৎপত্তি বেশিদিনের না; তবে বাইবেলের সংখ্যা থেকে তা ধের বেশী। হোমো স্যাপিয়েন্সদের উদ্ভব হয়েছিল দেড় লাখ বছর আগে; এবং তারা আফ্রিকা ছেড়েছিলো ৫০-৭০ হাজার বছর আগে।

কিন্তু আপনারা আরেকটা ভুল চাল চেলে ফেলেছেন যখন বাইবেলকে ডাইনোসর দিয়ে সাজাতে গিয়েছেন।
তাদের আরেক সৈনিক সিদ্ধার্থ সরকার বাইবেলে ডাইনোসর খুজে বের করলেন। তিনি লিখেছেনঃ

ডায়নোসর সম্পর্কে বাইবেল কি বলে?

বাইবেলে ডায়নোসরের কথা উল্লেখ করার ব্যপারে খ্রীষ্টিয়ান সমাজে অনেক আগে থেকেই একটা বিতর্ক চলে আসছে। যারা বিশ্বাস করে যে পৃথিবী কোটি কোটি বছর আগে সৃষ্টি হয়েছে, তারা বিশ্বাস করে না যে বাইবেলে ডায়নোসরের কথা লেখা আছে। কারণ তাদের মতে ডায়নোসর মানুষ সৃষ্টির অনেক আগেই পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। তাই বাইবেল রচয়িতারা কখনই জীবিত ডায়নোসর দেখতে পায়নি।

যারা বিশ্বাস করে যে পৃথিবীর বয়স কোটি কোটি বছর নয়, তারা এও বিশ্বাস করে যে বাইবেলে ডায়নোসরের কথা উল্লেখ আছে। যদিও সরাসরি “ডায়নোসর” শব্দটি ব্যবহার করা হয়নি। সেখানে হিব্রু শব্দ “তানিয়েন” বলা হয়েছে যার কয়েক রকম অনুবাদ রয়েছে। ইংরেজী বাইবেলে কখনও লেখা হয়েছে সমুদ্রের দৈত্য আবার কখনও বলা হয়েছে স্বর্প। কোথাও আবার বলা হয়েছে ড্রাগন। বিবরণ দেখে বোঝা যায় এটি একটি অত্যন্ত বড় সাইজের কোন সরিসৃপ। পুরাতন নিয়মে প্রায় ত্রিশবারের মত এর উল্লেখ আছে, কখনও স্থলে আবার কখনও জলে।

বাইবেলে এই দৈত্যাকার সরিসৃপের বিবরণ ছাড়াও কয়েকটি প্রাণীর কথা উল্লেখ আছে যা অনেকেই ডায়নোসর বলেই মনে করে। বহেমোৎকে সৃষ্টির সবচাইতে শক্তিশালী প্রাণীর বলা হয়েছে, যার লেজ এরস গাছের মত (ইয়োব ৪০:১৫)। অনেকে এই বহেমোৎকে হাতি বা জলহস্তি বলে দাবি করে। আবার অনেকে বলে এদের লেজ তো অনেক ছোট তাই এরস গাছের সাথে তুলনা করা যায় না। কিন্তু ডায়নোসরের কয়েকটি প্রজাতি আছে যেমনঃ ব্র্যাকিউসরাস এবং ডিপ্লোডকাস, এদের লেজ বিশালাকার যা সহজেই এরস গাছের সাথে তুলনা করাটা স্বাভাবিক।

৬ হাজারের পুরনো পৃথিবীতে ডাইনোসর!!! ডাইনোসর কত বছর আগে বিলুপ্ত হয়েছে সে সম্পর্কে আপনার কোন ধারনা আছে???
সিদ্ধার্থ সরকার তার গ্যাপ থিউরি কি? শিরোনামের আরেকটি লেখাতে নিল্লজ্জের মতন বলেছেনঃ

বাইবেল সম্পূর্ণ সত্য, আক্ষরিক, নিখুঁত এবং নির্ভরযোগ্য (গীত ১৯:৭-৯)। বিজ্ঞান কখনও বাইবেলকে ভুল প্রমাণ করতে পারেনি। বিজ্ঞানের কিছু প্রমাণবিহীন থিওরিকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য বাইবেলের অর্থ পরিবর্তন করাটা যুক্তিপূর্ণ নয়।

বাইবেলকে ভুল প্রমান করতে বিজ্ঞানের প্রয়েজন নেই; বাইবেলকে ভুল প্রমান করতে বাইবেল নিজেই যথেষ্ট।
আমাদের প্রশ্ন হল “বিজ্ঞানের নামে এসব মিথ্যাচার আর কতদিন???

বাইবেলের জগাখিচুরিতে বিজ্ঞান খোঁজা এখানেই শেষ নয়। সবুজ চৌধুরী তার বাইবেলে বিজ্ঞানভিত্তিক সত্য প্রবন্ধে বাইবেলে বেশ কিছু বিজ্ঞান খুঁজে পেয়াছেন। তিনি লিখেছেনঃ

বিজ্ঞান সবসময় প্রমাণে বিশ্বাস করে। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এই মহাবিশ্বের সব বিস্ময়কর সত্যকে আমাদের সামনে তুলে ধরে। কিন্তু বাইবেল এমন এক বিস্ময়কর বই, যেখানে এই ধরনের অনেক সত্যই বৈজ্ঞানিকদের গবেষণার অনেক আগে থেকেই লিপিবদ্ধ আছে। আসুন এই ধরনের কিছু সত্য সম্পর্কে জানি:

১। পৃথিবী মহাকাশে শূন্যে ভাসে (ইয়োব ২৬:৭), শুধুমাত্র মাধ্যাকর্ষণ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। যেখানে অন্যরা বলে পৃথিবী একটি বিশাল হাতি বা কচ্ছপের পিঠে বসানো আছে। একমাত্র বাইবেলের লেখাই এখন বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত সত্য “শূন্যের মধ্যে পৃথিবীকে ঝুলিয়ে রেখেছেন”।

২। সমস্ত সৃষ্টিই এমন কণিকা দ্বারা গঠিত যা চোখে দেখা যায় না (ইব্রীয় ১১:৩)। ১৯ শতকের পর বিজ্ঞান আবিষ্কার করে যে, চোখে দেখা সব জিনিষই এমন ছোট কণিকা দ্বারা গঠিত, যা চোখে দেখা যায় না।

৩। বাইবেলে জলযানের জন্য একটি নিখুঁত আকৃতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে (আদি ৬:১৫)। বর্তমান সময়ের জাহাজ নির্মাতারা খুব ভালো করেই জানেন যে, প্রস্থের ছয়গুণ দৈর্ঘ্যই জাহাজের জন্য একটি আদর্শ মাপ। ঈশ্বর নোহকে প্রায় ৪,৫০০ বছর আগে এই মাপেই জাহাজ তৈরি করতে বলেছিলেন।

৪। রোগ-ব্যাধি হলে জামা কাপড় ধোয়া ও স্নানের জন্য স্রোতের পানি ব্যবহার করতে হবে (লেবীয় ১৫:১৩)। শত বছর ধরে মানুষ নির্দিষ্ট স্থানে দাড়িয়ে থাকা পানি ব্যবহার করেই অভ্যস্ত। কিন্তু বিজ্ঞান এখন আবিষ্কার করেছে যে, স্রোতের পানি তুলনামূলক পরিষ্কার এবং রোগীদের স্নান ও কাপড় ধোয়ার জন্য পরিষ্কার পানি ব্যবহার করা উচিৎ, যাতে রোগ জীবাণু ধুয়ে যায়।

বাইবেলে বিজ্ঞানের নমুনা দেখে আসলেই হাসি পাচ্ছে। বিবর্তনবাদ নিয়ে করা তাদের কিছু মিথ্যাচার পাবেন এখানে

সাইট টির এই পাতায় সুন্দর একটি কথা দেখতে পেলাম।
লেখা আছেঃ

“তোমাদের আশা-ভরসা সম্বন্ধে যদি কেউ প্রশ্ন করে তবে তাকে উত্তর দেবার জন্য সব সময় প্রস্তুত থেকো, কিন্তু এই উত্তর নম্রতা ও ভক্তির সংগে দিয়ো। ১ পিতর ৩:১৫”।

খৃস্ট ধর্ম প্রশ্ন করার স্বাধীনতার দিক থেকে অন্য আর যে কোন ধর্ম থেকে উদার; কিন্তু তাই বলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে বিজ্ঞানের নামে মিথ্যাচারের দোষ আপনারা অস্বীকার করবেন কিভাবে???
আপনারা সবার প্রশ্নের উত্তর দেয়ার ভার নিজেদের উপরে নিয়েছেন সেটা খুবই ভালো কথা; কিন্তু তাই বলে ভুল এবং মিথ্যাকে সত্য বলে চালানোর শিক্ষা আপনারা পেলেন কোন বাইবেলে ???

বাইবেলের মিথ্যাচার নিয়ে লেখার অভাব নেই; ভবিষ্যতে আরও লেখা হবে।
কিন্তু তাদের মিথ্যাচার হয়তো কখনোই বন্ধ হবে না।
প্রিয় ক্রাইস্ট বিডির সদস্যরা; আপনারা মিথ্যাচার করুন যীশুর ঈশ্বরত্ব নিয়ে বা তার বিনা পিতায় জন্মানো নিয়ে; মিথ্যাচার করুন যীশুর পুনুরুত্থান নিয়ে কিংবা অনন্ত জীবন আর ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে। সেটা একান্তই আপনাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা।
কিন্তু বিজ্ঞান নিয়ে মিথ্যাচার এবং অপপ্রচার বন্ধ করুন।
নতুন প্রজন্মের কাছে বিজ্ঞানের সঠিক বার্তা প্রচার করুন।
পৃথিবী ঘোরে সূর্য নয় সত্যটি যেমন চার্চ স্বীকার করে বাইবেলের ভুলকে স্বীকার করে নিয়েছে সেভাবে সকল সত্যকে স্বীকার করে নিন।

আপনাদের মিথ্যাচারের মুখোশ উন্মোচন এবং প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর মুক্তমনা ব্লগে এবং এখানে একটু খুজলেই পাবেন।
তাই বাইবেলে দেয়া আকৃতি অনুসারে নোহের জাহাজে কি করে এতগুলো প্রাণী প্রবেশ করল? কিংবা বাইবেল কি এই শিক্ষা দেয় যে পৃথিবী সমতল বা চেপটা? কিংবা জ্যোতিবিজ্ঞান, অভিশাপ না আর্শিবাদ?লেখাগুলোর মতন ভুং ভাং দিয়ে কোমলমতি শিশু কিশোরদের সঠিক সত্য এবং সঠিক বিজ্ঞান জানার রাস্তায় কাঁটা হবেন না।
যখন তারা সত্য জানতে এবং বুঝতে পারবে তখন তাদের তিরস্কারের বোঝা আপনারা বহন করার ক্ষমতা হারাবেন।

তাই; সাধু সাবধান!!!

### এদের যুক্তি খণ্ডন এই পোস্টের মূল বিষয় নয়; বরং তাদের মিথ্যাচারের নমুনা তুলে ধরাই এই পোস্টের লক্ষ। তাই এই লেখায় আমি তাদের ভুল ধড়িয়ে দেয়ার প্রয়াস করিনি। পাঠকেরা চাইলে কমেন্টে ক্রাইস্টবিডির মিথ্যাচারের উত্তর দিতে পারেন। আমি আপনাদের উত্তর যথাস্থানে পৌঁছে দেয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করবো।