গোল্ডেন রাইস কী?

বাংলাদেশে বহুজাতিক এগ্রো কর্পোরেশনের বীজ রাজনীতির নতুন সংযোজন জেনেটিক্যালী মডিফাইড (জিএম) ধান গোল্ডেন রাইস। গোল্ডেন রাইস প্রকল্পের সাথে জড়িত মূলত আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইন্সটিটিউ (IRRI), বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট, ব্রি (BRRI) এবং মার্কিন সংস্থা বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। ভুট্টা অথবা ড্যাফোডিল ফুল থেকে নেয়া ‘ফাইটোন সিনথেজ’ জিন এবং মাটির এক ধরণের ব্যাকটেরিয়া থেকে নেয়া ‘ক্যারোটিন ডিস্যাচুরেজ’ জিন ধানের জিনোমে প্রবেশ করিয়ে এই গোল্ডেন রাইস প্রস্তুত করা হয়। এই দুইটি জিন ধানের এন্ডোস্পার্মে বিটা ক্যারোটিন (ভিটামিন এ এর পূর্বের অবস্থা) তৈরিতে কাজ করে। বাংলাদেশে গোল্ডেন রাইস প্রবর্তনের জন্য বহুজাতিক কোম্পানি সিনজেনটা এবং বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট এর মাঝে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর ভিত্তিতেই ব্রি বাংলাদেশের ব্রি-২৯ জাতের ধান সিনজেনটা কোম্পানিকে দিয়েছে জেনেটিক্যালি মডিফাই করার জন্য। সিনজেনটা ব্রি-২৯ জাতে উক্ত দুটি জিন ট্রান্সফার করে গোল্ডেন রাইস নামে বাজারজাত করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ব্রি গত বছর এপ্রিল মাসে দেশে গোল্ডেন রাইস গবেষণার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পায় এবং এ বছর জানুয়ারি মাসে নির্দিষ্ট পরিসরে পরীক্ষামূলকভাবে গোল্ডেন রাইস চাষ করার জন্য পরিবেশ মন্ত্রণালয় ছাড়পত্র দেয়। এই ফিল্ড টেস্টিং সম্পন্ন করেই বাজারজাতকরণে যাবে কোম্পানি।

এই রাইস দিয়ে রাতকানা রোগ সারাতে চায় কোম্পানি

এই রাইস দিয়ে বাংলাদেশ, ফিলিপাইনের রাতকানা রোগ সারাতে চায় কোম্পানি। এটা নাকি তাদের মানবহিতৈষী কর্মের একটা নিদর্শন। কোম্পানির বয়ান হচ্ছে এই রাইসে বিটা ক্যারোটিন উৎপাদনকারি জিন ট্রান্সফার করা হয়েছে, ফলে এই রাইস খেলেই অপুষ্টির শিকার গরিব মানুষ ‘ভিটামিন এ’র অভাব দূর করে রাতকানা থেকে রক্ষা পাবেন।

গোল্ডেন রাইস দিয়ে যারা রাতকানা রোগ সারাতে চান তারা নিজেরাই এই রাইস বিষয়ক গবেষণায় রাতকানা হয়ে আছেন

কিন্তু কোম্পানির এই বয়ানের সাথে অনেক বিশেষজ্ঞই একমত নন, তাঁদের মতে এই রাইস দিয়ে ‘ভিটামিন এ’ এর ঘাটতি দূর করার একচেটিয়া প্রচার সঠিক নয়। ধান কেটে নেবার পর কতটা সময় এই পুষ্টি ধানে থাকে এবং রান্নার পরে কতখানি অবশিষ্ট থাকে তা নিয়ে অনেক সন্দেহ রয়েছে। রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যের কারনেই বিটা ক্যারোটিন সহজেই জারিত হয়। এই যৌগে অনেকগুলো কনজুগেটেড ডাবল বন্ডের কারনে তা আলো কিংবা অক্সিজেনের উপস্থিতিতে ভেঙ্গে যেতে পারে। ধান মাড়াইয়ের পর শুকিয়ে স্টোরেজ কন্ডিশনে রাখা হলে তা জারিত হয়ে যেতে পারে, ফলে ধানে ভিটামিন এ এর পরিমাণ অনেক লোয়ার লেভেলে চলে যাবে, অর্থাৎ তা রাতকানা রোগ সারাতে ব্যর্থ হবে। স্টোরেজ কন্ডিশনে রাখার পর গোল্ডেন রাইসে ‘ভিটামিন এ’ এর লেভেল কতটুকু থাকবে তার পরীক্ষা ছাড়া এটা তাই বাজারে ছাড়া ঠিক হবে না। বাংলাদেশে ব্রি এই পরীক্ষা করেছে বলে আমাদের জানা নাই। গোল্ডেন রাইস এর জৈবপ্রাপ্যতা (Bioavailability) নিয়ে কোম্পানি ২০১২ সালে যে পরীক্ষা করে তাতে ক্যারোটিনয়েডের সহজেই অক্সিডাইজ হওয়ার এই প্রবণতা মাথায় রেখে গোল্ডেন রাইস উৎপাদনের সাথে সাথেই তাকে মাইনাস ৭০ ডিগ্রী সেলসিয়াসে সংরক্ষিত করা হয় এবং তারপর শিশুদের খাওয়ানো হয়। ফলে এই রেজাল্ট গ্রহণযোগ্য নয় ( সূত্র ঃ Golden Rice Myths; Michael Hansen) । স্বাভাবিক তাপমাত্রায় স্টোরেজ কন্ডিশনে এই গোল্ডেন রাইসের bioavailability টেস্ট না করার মাজেজা কি? এটা একটা বায়াসড টেস্ট, এই টেস্টের উপর ভিত্তি করে যে দাবি করা হচ্ছে এই রাইস রাতকানা দূর করবে তাতে আস্থা রাখার ফুরসত কই?

আবার বিটা ক্যারোটিন হাইড্রোফোবিক বলে শরীরে তার অভিশোষণের (Absorption) জন্য ডায়েটে পর্যাপ্ত পরিমাণ ফ্যাট দরকার, ফ্যাট ছাড়া এর অভিশোষণ হবে না মানে রক্তে পৌঁছাতে পারবে না। সমস্যা হচ্ছে, এশিয়ার যেসব দেশে অপুষ্টির কারনে রাতকানা রোগ হচ্ছে সেসব দেশের গরিব লোকদের খাদ্যে ফ্যাট/ লিপিড এর পরিমাণ খুব নগণ্য, কেননা দরিদ্র জনগোষ্ঠী সুষম খাবার থেকে বঞ্ছিত। ফলে এদের গোল্ডেন রাইস খাওয়ালেও ফ্যাট এর অভাবে শরীরে ‘ভিটামিন এ’ এর জৈবপ্রাপ্যতা (Bioavailability) খুব কম হবে, ফলে রাতকানা রোগ সারার প্রকল্প ভেস্তে যেতে পারে। ‘ভিটামিন এ’ এর অভাবকে আলাদাভাবে দেখার সুযোগ নাই, এটা মূলত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ব্যাল্যান্সড খাবারের অভাবেরই প্রতিক্রিয়া। এইসব জিনিস মাথায় রেখেই জার্মানিতে ২০১২ সালে গোল্ডেন রাইস এর জৈবপ্রাপ্যতা স্টাডিতে ভলান্টিয়ারদের ৬৫-৯৮ গ্রাম রাইসের সাথে ১০ গ্রাম বাটার দেয়া হয় ( সূত্রঃ Golden Rice Myths; Michael Hansen)। এই বাটার দেয়ার কারনেই রক্তে বিটা ক্যারোটিন এর উপস্থিতি ভাল পাওয়া যায়। কিন্তু এশিয়ার অপুষ্টিতে আক্রান্ত গরিব মানুষ রাইসের সাথে ১০% বাটার পাবে কই? ফলে এই টেস্টও গ্রহণযোগ্য নয়, কোম্পানি ‘ভিটামিন এ’ এর জৈবপ্রাপ্যতা বাড়ানোর তাগিদেই খাবারের সাথে ফ্যাট দিয়ে দিয়েছে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে গোল্ডেন রাইস থেকে প্রাপ্য ‘ভিটামিন এ’ এর কতটুকু শরীরের রক্তে প্রবেশ করবে তা জানার জন্য ফ্যাট ছাড়াই বিটা ক্যারোটিন এর জৈবপ্রাপ্যতা স্টাডি করতে হবে। বীজ মালিকনার প্রশ্ন, এদেশের ধান বীজের উপর বহুজাতিক কোম্পানির প্যাটেন্ট আগ্রাসনের প্রশ্ন বাদ দিলেও প্রোটোকল অনুযায়ী গোল্ডেন রাইসের ‘ভিটামিন এ’ এর জৈবপ্রাপ্যতা টেস্ট না করে এটা বাজারজাতকরণের যে কোন চেষ্টা হবে চরম ভুল পদক্ষেপ। বাংলাদেশে এই গোল্ডেন রাইসের চাষাবাদের জন্য ব্রি তোড়জোড় করছে কিন্তু এসব পরীক্ষার ব্যাপারে তাদের কোন ভ্রূক্ষেপ নাই। গোল্ডেন রাইস দিয়ে যারা রাতকানা রোগ সারাতে চান তারা নিজেরাই এই রাইস বিষয়ক গবেষণায় রাতকানা হয়ে আছেন!

গোল্ডেন রাইস বহুজাতিক কোম্পানির এগ্রিবিজনেসের নতুন হাতিয়ার

২০০০ সালের ২৯ জুন মার্কিন কংগ্রেসে অনুষ্ঠিত এক গণশুনানিতে সিনজেনটা এবং এক ওয়ার্কশপে মনসান্তো কোম্পানি বলেছে তারা গোল্ডেন রাইসের ডেভেলপমেন্টের জন্য রয়ালিটি ফ্রি লাইসেন্স দিবে। এসব এগ্রো জায়ান্টরা কিন্তু গোল্ডেন রাইসের উপর তাদের মূল প্যাটেন্ট/ মেধাস্বত্ব দাবি পরিত্যাগ করে নাই বরং তারা শুধুমাত্র গোল্ডেন রাইসের আরও উন্নত জাত উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে পাবলিক সেক্টরের বিজ্ঞানিদের রয়ালিটি ফ্রি লাইসেন্স দিতে সম্মতি জ্ঞাপন করেছে। গোল্ডেন রাইস মূলত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বহুজাতিক কোম্পানির এগ্রিবিজনেসের নতুন হাতিয়ার হিসেবেই কাজ করবে। এই রাইস মূলত মানবতাবাদের আড়ালে বহুজাতিক এগ্রো কর্পোরেশনের পাবলিক ইমেজ বৃদ্ধির বিজ্ঞাপনী কৌশল যা বীজ রাজনীতিকে বৈধতা দেয়ার অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়। গোল্ডেন রাইস প্রবর্তনের জন্য বহুজাতিক কর্পোরেশনের আগ্রহের কারণ হচ্ছে বাংলাদেশ, ফিলিপাইনের মত দেশগুলোতে রাতকানা দূর করার মত মানবহিতৈষী প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষিতে জিএম প্রযুক্তির একটা ভাল ইমেজ সৃষ্টি করা এবং এর উপর ভিত্তি করে এসব দেশের কৃষিতে অন্যান্য জিএম শস্য বীজের বাজারজাতকরণকে তরান্বিত করা। জিএম বিটি কটন, জিএম ভুট্রা এসব শস্যের বীজ মালিকানা কোম্পানির হওয়ায় চড়া দামে কৃষকদের বীজ কিনে নিতে হয় এবং এসব খাদ্যের জন্য কোম্পানির উপর নির্ভরশীলতা তৈরি হওয়ায় দেশে দেশে সিভিল সোসাইটি এবং কৃষকদের মাঝে এই বীজ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। বহুজাতিক কোম্পানি এখন চাচ্ছে জিএম গোল্ডেন রাইসের রয়ালিটি ফ্রি লাইসেন্স দিয়ে মানবতাবাদের আড়ালে উন্নয়নশীল/ অনুন্নত দেশের কৃষক ও সুশীল সমাজের মাঝে জিএম বীজের প্রতি আস্থা সৃষ্টি করতে। ফলে কোম্পানির এই কৌশলী মানবতাবাদী প্রকল্পকে মহতী মনে করার কোন কারণ দেখি না। আমরা ঢালাওভাবে জিএম প্রযুক্তির বিরোধী নই। ইনসুলিন এর মত জীবনরক্ষাকারী ওষুধ এই প্রযুক্তির মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। অনেক জেনেটিক রোগের চিকিৎসা এই প্রযুক্তির মাধ্যমেই সম্ভব। কিন্তু চিকিৎসা ক্ষেত্রে জিএম আর কৃষিতে জিএম এক নয়। বীজ নিরাপত্তা, খাদ্য নিরাপত্তা, বীজের মালিকানা এসব প্রশ্ন বাদ দিয়ে জিএম প্রযুক্তির নির্বিচার প্রয়োগ আমাদের কৃষিতে বহুজাতিক কোম্পানির মনোপলি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করবে। এই গোল্ডেন রাইস বাজারজাত করা হলে বাংলাদেশ তার নিজস্ব ধান ব্রি-২৯ এর মালিকানা হারাবে বলে আশংকা করা হচ্ছে। এমনিতেই বহুজাতিক কোম্পানির প্যাটেন্ট আগ্রাসনে বাংলাদেশ প্রচুর ধানের জাতের মালিকানা হারিয়েছে। এখন আবার দেশের জনপ্রিয় ধান ব্রি-২৯ জাতের প্যাটেন্ট কোম্পানির করায়ত্তে চলে গেলে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা এবং খাদ্য সার্বভৌমত্ব আরও বেশি হুমকির মুখে পড়বে। আবার জিএম শস্য বলেই এই ধানের রেণু ছড়িয়ে পড়ে অন্য জাতের ধান ও গাছপালার উপর কৌলিক প্রভাব পড়বে যা অন্যপ্রজাতির ধান বা ফসলের বৈশিষ্ট্য পরিবর্তণ করে ফেলতে পারে। এই জিনগত বিশৃঙ্খলা দেশের প্রাণ ও প্রতিবেশের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। ফলে জিএম গোল্ডেন রাইসের জৈবনিরাপত্তা টেস্ট করা অপরিহার্য।

গোল্ডেন রাইস ছাড়াই ‘ভিটামিন এ’ এর ঘাটতি দূর করা সম্ভব

গোল্ডেন রাইস ছাড়াই ‘ভিটামিন এ’ এর ঘাটতি দূর করা সম্ভব বলে অনেকেই মত দিয়েছেন। পরিবেশ চিন্তাবিদ বন্দনা শিবার মতে সহজ প্রাপ্য ‘ভিটামিন এ’ এর সোর্সগুলো ( শাকসবজি ইত্যাদি) গোল্ডেন রাইসের চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। বীজ বিজ্ঞানি ড. এম এ সোবহান বলেন, “ভিটামিন এ ঘাটতি পুরণের জন্য দেশে জিএম গোল্ডেন রাইসের প্রচলন করার চেষ্টা করছে। অথচ রান্না ও গুদামজাত করলে গোল্ডেন রাইসে ভিটামিমন এ থাকে কিনা তার পর্যাপ্ত পরীক্ষা করা হয়নি। তিনি বলেন, দেশের গাজর, মিষ্টিকুমড়া, মিষ্টি আলু, সীম, ঢেঁরস, পুঁইশাক, ডাটা শাকে পর্যাপ্ত ভিটামিন এ রয়েছে। ফলের মধ্যে পেঁপে, বাংগী, কাঁঠাল, আম, কলা আনারসের মধ্যে ভিটামিন রয়েছে। এছাড়াও ঢেকিছাঁটা চালের মধ্যে ভিটামিন এ পর্যাপ্ত রয়েছে। তারপরও কৃষককে বীজ কোম্পানী নির্ভর করতে এ ধরনের গবেষণার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে”।

বৈচিত্র্যময় খাবার মানে বালান্সড ডায়েট ছাড়া অপুষ্টি দূর করা যাবে না কিন্তু শুধু মাত্র গোল্ডেন রাইসের মাধ্যমে অপুষ্টি দূর করার প্রোপাগান্ডা চালিয়ে কোম্পানি কেবল তার বীজ বাণিজ্যকেই তরান্বিত করতে চাচ্ছে। ২০০০ সালের পর থেকেই এশিয়ায় ভিটামিন এ সাপ্লিমেন্টেশন এবং ফুড ফোর্টিফিকেশন এর কারনে ফিলিপাইন ও বাংলাদেশে ভিটামিন এ এর ঘাটতি অনেক কমে এসেছে। ইউনিসেফ’র রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশ ৯০% -এর উপরে শিশুদেরকে ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কর্মসূচির আওতায় নিয়ে এসেছে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে গোল্ডেন রাইস ছাড়াই বাংলাদেশ ভিটামিন-এ ঘাটতি পূরণে যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছে এবং এই সাফল্য ধারাবাহিক। ফলে গোল্ডেন রাইসের প্রয়োজন খুব আছে কি-না তা ভেবে দেখার প্রয়োজন আছে যেখানে এই ধানের বাজারজাতকরণ দেশে বহুজাতিক কোম্পানির বীজ আগ্রাসনকে তরান্বিত করবে?

পর্যাপ্ত স্বাধীন গবেষণা না করে এই রাইস বাজারজাতকরণ করা ঠিক হবে না

ভিটামিন এ ঘাটতি দূরীকরণে প্রচলিত সহজলভ্য পদ্ধতি এবং অলটারনেটিভ পদ্ধতির প্রতি অন্ধ থেকে বহুজাতিক এগ্রো কর্পোরেশনের এগ্রিবিজনেসের স্বার্থে জিএম গোল্ডেন রাইস প্রবর্তন করার যৌক্তিকতা নাই কেননা এর মাধ্যমে আমাদের নিজস্ব জাতের ধানের মালিকানা হারানোর আশংকা যেমন আছে তেমনি এই জাতের কার্যকারিতা, জৈব প্রাপ্যতা এবং জৈব নিরাপত্তা এখনও নিশ্চিত নয়। বহুজাতিক এগ্রো কর্পোরেশনের দাবিকেই সত্য ধরে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে চরম ভুল পদক্ষেপ। আমরা মনে করি গোল্ডেন রাইসের জৈব প্রাপ্যতা,কার্যকারিতা এবং বায়োসেফটি বিষয়ে পর্যাপ্ত স্বাধীন গবেষণা না করে এই রাইস বাজারজাতকরণ করা ঠিক হবে না।

লেখকঃ যোবায়ের আল মাহমুদ।
শিক্ষক, ফার্মেসি অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।