ইসলাম সকল মুসলমানকে নবী মুহম্মদের জীবনাদর্শ অনুসরণ করতে বা মুহম্মদের আদর্শে নিজের জীবন গঠন করতে আদেশ দেয়। শুধু তাই নয়, প্রতিটা মুসলমানের দায়িত্ব সারা বিশ্বে মুহম্মদের আদর্শ ছড়িয়ে দেয়া এবং সারা বিশ্বে মুহম্মদের ধর্ম ইসলাম কায়েম করা। আর তা হতে হবে যে কোনো উপায়ে। দ্বীনের দাওয়াতের মাধ্যমে, মানুষকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে, প্রয়োজনে জিহাদ করে, তলোয়ারের মাধ্যমে অথবা বোমা মেরে। মুহম্মদই মানব সভ্যতার একমাত্র আদর্শ পুরুষ এবং অনুসরণ করার মতো মুহম্মদ ছাড়া পৃথিবীতে আর কোনো মানব আসেন নি, আসবেনও না। অথচ এই মুহম্মদের জীবনী খোলাখুলি ভাবে আলোচনা করাই যেন মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রে একজন মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় অপরাধ। মুহম্মদকে অনুরসণ করতে হবে, তার আদর্শে জীবন গঠন করতে হবে, অথচ তার আদর্শ সোজা ভাষায় মুখে বলা যাবে না। কাজগুলো করতে হবে ঠিকই, কিন্তু উচ্চারণ করতে হবে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে, যুগ যুগ ধরে মূর্খ, ভন্ড আর ধর্মব্যবসায়ী মাওলানারা আমাদেরকে যেভাবে শিখিয়েছেন, সেভাবে ময়না পাখির মতো করে। নিজের মতো করে সহজ সরল সোজা ভাষায় বললেই যতো বিপদ। তাতে মুসলমানদের ধর্মানূভূতিতে আঘাত লাগে, রাষ্ট্রের ভিত কেঁপে যায়, আইন আদালত প্রশ্নবিদ্ধ হয়, সরকারের ভোটের হিসাব অন্যরকম হয়ে যায়। তাই ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে মুহম্মদের জীবনী নিয়ে সরাসরি কিছু বলা যাবে না, বলতে হবে ইসলামী মৌলবাদী সৈনিকদের মতো করে, মাদ্রাসা ছাত্রদের ভাষায়। যেন মুহম্মদের চরিত্র কলংকিত না হয়, মুসলমানরা যেন অন্ধকারেই সুখে থাকে।

মুহম্মদের চরিত্র সম্পর্কে সত্য কথাটা সোজা করে বলাটাও বাংলাদেশে বেআইনি। দেশে গতবছর থেকে আইসিটি আইনের ৫৭ ধারার নামে মধ্যযুগীও ও বর্বর একটি আইন চালু করা হয়ছে। যে সরকার ধর্মনিরপেক্ষতা বোঝেনা, মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেনা, অথচ নিজেদেরকে গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল দল বলে দাবী করে, আসলে এই সরকার দেশের আর কোটি কোটি ধর্মান্ধ মানুষের মতোই সোজা কথা আর বাঁকা কথা বোঝে না। যে কথাগুলো আমরা সোজা ভাষায় বলে বা লিখে আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় মামলাা খাচ্ছি বা জেলে যাচ্ছি, সেই একই কথাগুলো বাঁকা করে প্রচার করে দেশের কাঠমোল্লারা ইসলাম প্রচারের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছে, আর সরকার তাদেরকে মদিনা সনদের মাধ্যমে দেশকে দেড় হাজার বছর পিছিয়ে নিয়ে যাবার স্বপ্ন দেখাচ্ছে। ধর্মব্যবসা চলছে, ইসলামের নামে মানুষকে মুসলমান বানিয়ে রাখা হচ্ছে, হাজার বছরের রাজত্ব পাকাপোক্ত করা হচ্ছে। আর এই সব কিছুই করা হচ্ছে সোজা কথাকে বাঁকা করে বলার সংস্কৃতির মাধ্যমে।

মুহম্মদ তার জীবনে ১৪ টা বিয়ে করেছিলেন।-এ সোজা কথাটা সোজা করে বলা যাবে না। বলতে হবে- নবী মুহম্মদ (সঃ) তার জীবনে ১৪ জন অসহায় নারীকে জীবনসঙ্গী করে সাহায্য করেছিলেন।

মুহম্মদ ২৫ বছর বয়সে ৪০ বছর বয়সী ধনী ব্যবসায়ী খাদিজাকে বিয়ে করেন।-এ কথাটা এভাবে বলা যাবে না। বাঁকা করে বলতে হবে,- বিবি খাদিজা তরুণ বয়সের মুহম্মদ (সঃ) এর সততায় মুগ্ধ হয়ে তার ব্যবসায়িক কাজে সহযোগিতার জন্য মুহম্মদ (সঃ) কে জীবনসঙ্গী করার সিদ্ধান্ত নেন।

মুহম্মদ ৬ বছরের শিশু আয়েশাকেও ছাড়েন নাই।- একথা মুখেই আনা যাবে না। সম্মনের সঙ্গে বলতে হবে,-৬ বছরের শিশু আয়েশাকে বিয়ে করার জন্য আল্লাহ তালা নবীজীকে স্বপ্ন দেখান।

মুহম্মদ তার পুত্রবধুকে বিয়ে করেন। সে জন্য তিনি জয়নবকে তালাক দিতে যায়দকে বাধ্য করেন।- একথা বলতে হবে এভাবে;- যায়দ মুহম্মদের নিজের পুত্র ছিল না, পালক পুত্র ছিল। আমাদের প্রিয় নবী (সঃ) যায়দের স্ত্রী জয়নবকে বিয়ে করার জন্য আল্লাহর কাছ থেকে নির্দেশ লাভ করেন।

মুহম্মদ কিভাবে সারা রাত নফল নামাজ পড়তেন? হাদিসে আছে তিনি প্রতি রাতে তার ৯ জন স্ত্রীর সঙ্গেই সহবত করতেন।
এভাবে বললেই নাস্তিকরা খারাপ। বলতে হবে,- নবীজী প্রতি রাতে তার ৯ জন স্ত্রীর সঙ্গেই সাক্ষাত করতেন। তাকে আল্লাহ ৩০ জন পুরুষের সমান শক্তি দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন।

মুহম্মদের ২ জন দাসী ছিল। তিনি দাসীদের সঙ্গেও যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতেন। যে কারনে কোরাণেও পুরুষদের জন্য দাসী ভোগ হালাল করা হয়েছে।
আপনার মুখ খারাপ। বলুন নবীজী তার দাসীদেরও খোঁজ খবর নিতেন। আর কোরাণের দাসীদের কে হালাল করার বিষয়ক আয়াতটির মর্ম বুঝার ক্ষমতা আল্লাহ পাক আমাদেরকে দেন নাই।

মুহম্মদ তার জীবনে ১০০ টির মতো যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিলেন, যার বেশীর ভাগই ছিল আক্রমণাত্মক। তিনি প্রতিপক্ষের মালামাল লুট করে তার আর তার দলের যোদ্ধাদের সংসার চালাতেন।
এভাবে বললেই শুনতে হবে;- আপনে মিয়া কাফেরগো টেকা খাইয়া ইসলামের এইসব বদনাম করেন। আমাদের নবী নিজের ইচ্ছায় কোনো যুদ্ধ করেন নাই। তিনি আল্লাহর হুকুমে আত্মরক্ষার জন্য শত্রুদের মোকাবেলা করেছেন। আল্লাহ নবী ও সাহাবাদের জন্য গণিমতের মাল হালাল করেছেন।

মুহম্মদ আর তার সঙ্গীরা যুদ্ধবন্দী নারীদের ভোগ করতেন। এ কথা কোরান হাদিসে আছে। যুদ্ধবন্দী নারীরা যেন গর্ভবতি হয়ে না পড়ে সেজন্য নবী যোদ্ধাদের আজল প্রকৃয়া অবলম্বন করতে বলতেন।
যুদ্ধবন্দী নারীদের বন্দী করে নিয়ে আসা হতো, কারন তখন আরবে দাসপ্রথা ছিল। তবে নবী আর সাহাবারা তাদেরকে ছুঁয়েও দেখতেন না। তাদের চরিত্র ছিল ফুলের মতো পবিত্র।

এখন আপনি মুহম্মদের বিয়ে-শাদী আর জীবন-জীবিকা নিয়ে সোজা করে কথা বলে জেলে যাবেন, নাকি বাঁকা করে কথা বলে আল্লাহ আর সরকারের প্রিয় পাত্র হবেন,-সেটা আপনাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।