সেই আমার প্রথম যৌবনের প্রথম প্রেমানুভূতির কথা। সেই প্রেম ও প্রণয়ীর কথা ভেবে আজও আমি শিহরিত হই। আজও আবেশে অভিভূত হই আমি সেই মুহূর্তগুলি স্মরণ করে। আমি তখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে অনার্স পড়ি। আমি গ্রামের ছেলে। গ্রামের কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে শহরে এসেছি উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য। হোস্টেলে থাকি। কয়েকদিনের ছুটি পেলেই বাড়িতে ছুটে যাই বাবা-মায়ের কাছে। বাবা-মায়ের বড় সন্তান আমি। অতি আদরের, অতি আহ্লাদের। হোস্টেলে এলে বড় বেশি মিস করি বাবা-মায়ের আদর-যত্ন ও পেট পুরে যা ইচ্ছে তা খাওয়া। তাই সুযোগ পেলেই দৌড় দেই।
আমি বাড়ি গেলেই আশেপাশের সবার বাড়িতে যাই। প্রাণ ভরে গল্প করি সবার সাথে। গ্রামের অলিগলি, মাঠ-ঘাট, বন-বাদাড় ঘুরে বেড়াই মনের আনন্দে। কাউকে পেলেই গল্প জুড়ে দেই। একদিন দেখি একটি ১৬/১৭ বছরের পরী টাইপের মেয়ে এসেছে আমদের উঠোনের চাপাকল থেকে পানি নিয়ে যেতে। মাকে জিজ্ঞেস করলাম, এই মেয়েটি কে। মা বললো, আমাদের পাশের বাড়ির করিম কাকার মেয়ে বেণু। কী আশ্চর্য! আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম। আমি যখন গ্রামে ছিলাম এই বেণূ তখন পিচ্চি ছিল একেবারে। আলুথালু চুলে নাকে সর্দি নিয়ে ছাগল-ছানা কোলে করে ঘুরে বেড়াত পাড়াময়। সেই পিচ্চি আজ এমন বনলতা সেন ব’নে গেল কীভাবে! তারপর দিন করিম কাকার সাথে দেখা পথের মধ্যে। কাকা আমাকে নিয়ে গেলেন তার বাড়িতে। কাকি ও দাদি আমাকে দেখে খুশিতে অস্থির হয়ে পড়লেন। কী খাওয়াবেন, কোথায় বসতে দেবেন, কী গল্প করবেন যেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। বেণুকে ডাক দিলেন দাদি, ওরে বেণু, তোর ভাইকে পিড়ি এনে দে বসতে। বেণু পিড়ি এনে দিল আমায়। কাকি পিঠে বানিয়ে খাওয়ালেন। গরুর দুধের চা বানিয়ে খাওয়ালেন। কত যে গল্প করলেন দুজনে। আমি সারাক্ষণ শুধু আড়চোখে বেণূকে দেখছিলাম। সে হেঁটে যাচ্ছে আমার সামনে দিয়ে, ঘরের টুক-টাক কাজ করছে। তার চলন-বলনে কী অপূর্ব স্নিগ্ধতা! কী চমৎকার ছন্দময়তা! কী তার অপরূপ রূপ মাধুরী! সে যেন এই পৃথিবীর কেউ নয়। যেন ইন্দ্রলোক থেকে বেড়াতে এসেছে ক্ষণিকের তরে।
কী যে ভালো লাগলো আমার তাদের আতিথেয়তা, কথাবার্তা। আমি বাড়ি গিয়ে মাকে বললাম, বেণু মেয়েটি তো ভারী সুন্দর মা। মা বললো, হ্যাঁ খুব লক্ষ্মীও। গেল বছর বিয়ে হয়ে গেল তার। কিন্তু অমন লক্ষ্মী মেয়ের বরটি পড়েছে একেবারে অপদার্থ। একদিন কাজ করে। তারপর জুয়া খেলে টাকা ওড়ায়। দশদিন শ্বশুরের ঘাড়ে পড়ে পড়ে ঘুমায়। আমার বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে উঠল বেণুর বিয়ে হয়ে গেছে শুনে। আমি বললাম, বেণু যে পিচ্চি মেয়ে। তাকে বিয়ে দিল কেন পড়াশোনা না করিয়ে। মা বলল, তাদের যে আর্থিক সংগতি নেই মেয়েকে পড়ানর। প্রাইমারি স্কুলে পড়েছিল শুধু। চিনচিন করে আমার বুকের ভেতরে। শুধু ভাবতে থাকি বেণুর বিয়ে হয়ে গেছে! কী সৌভাগ্যবান বেণুর বর! রূপের ও স্বভাবের এমন দুর্লভ মধুরতা যার অধিকারে তার মত ভাগ্যবান আর কে আছে। সেবার বেশ লম্বা ছুটি ছিল আমার। আমি প্রতিদিন ছুটে যাই বেণুদের বাড়ি। কথা বলি দাদি ও কাকির সাথে, আর তৃষিতের মত দেখি বেণুকে।
রূপ আর স্নিগ্ধতা তার দেহ ও চরিত্রকে বেষ্টন করে আছে। সারাদিন একটি ফুলের মতন ফুটে থাকে সে। চাঁদের মতন অমলিন হাসি লেগে থাকে তার মুখে। শরীর থেকে যেন রূপ মাধুরী নম্রতা জোছনার মতন ঝরে পড়ে। তার চলন বলন চরিত্রের মধুরতা শুধু অনুভব করার, বুঝিয়ে বলবার নয়। বেণুর রূপ, তার সরলতা, তার ডুরে শাড়ির চওড়া পাড়, তার মিষ্টি হাসি, নানা রঙের চুড়ির রিনিরিনি শব্দ আমার মনে অমূল্য মণি-মাণিক্যের পাহাড় গড়ে তুললো। সে নকশীকাঁথা সেলাই করে একমনে। আর গুনগুন করে গান গায়। সুধা ঝরে পড়ে তার গলা থেকে। কাঁথার ফোঁড়ে ফোঁড়ে লাল নীল বেগুনী সুতোতে ফুটিয়ে তোলে ফুল পাখি লতা পাতা, তার মনের আনন্দ-বেদনার ইতিহাস। আমি কাকি ও দাদির সাথে কথা বলার ছলে বেণুর দিকে তাকিয়ে থাকি কাঙালের মতন। তার অঙ্গে রূপ ধরে না, তার স্বভাবে মধুরতা ধরে না। আমি পান করি এই মধুরতা, চোখ দিয়ে, মন দিয়ে, সমস্ত সত্ত্বা দিয়ে, সমস্ত অন্তঃকরণ দিয়ে, অতি একান্তে। এই মাধুর্য শিশিরের মত চুইয়ে চুইয়ে আমার হৃদয়ে প্রবেশ করে। আমার আশ মেটে না কভু। আরও তৃষা বেড়ে যায় প্রবলভাবে। প্রতিদিন গিয়ে বসে থাকি। বেণু তার কাঁথা সেলাইয়ের ফাঁকে ফাঁকে, গৃহস্থালি কাজের ফাঁকে ফাঁকে আমার সাথে কথা কয়। এত যে ভালো বেসে ফেলেছি তাকে আমি, এত যে ভালো লাগে তাকে আমার। কী করে বলি তাকে? আমার বুক ফেটে যায়, সে কথা বলতে না পেরে। সে কথা আমার ঠোঁটে এসে আটকে থাকে। আমার অধর কাঁপে থরথর।
বেণু মাঝেমাঝে আমাকে ওর নিজের হাতে পান বানিয়ে এনে খেতে দেয়, ওর হাতে বানান পিঠে খেতে দেয়। পান আমি খাই না। তবুও ওর হাতের পান আমার কাছে অমৃতের মত লাগে। পানের খিলি বা পিঠে আমার হাতে দেবার সময় মাঝেমাঝে ওর চাঁপার কলির মত আঙুলের স্পর্শ লেগে যায় আমার আঙুলে। আমার পাঁচ আঙুল দিয়ে পাঁচ হাজার বিদ্যুৎ সঞ্চারিত হয় তখন। আমি স্বর্গে চলে যাই। আমি ওই অপার্থিব স্বর্গেই ডুবে থাকতে চাই আজীবন। ইচ্ছে করেই এটা ওটা চাই ওর কাছে। বেণু এক গেলাস জল দাও তো, আরেকটা পান দাও না! খুব সতর্কভাবে আঙুল ছুঁইয়ে দেই ওর আঙুলে। কয়েক বছর আগে আমি যখন গ্রামের কলেজে পড়তাম বেণু তখন অনেক ছোট ছিল। আমরা ফুটবল খেলতাম। ও মাঠের কোণে দাঁড়িয়ে খেলা দেখতো। কখনো দেখতাম ছাগল ছানার পেছনে ছুটছে ঊর্ধ্বশ্বাসে। কখনো দেখতাম, ওর ছোট কলসী ভরে জল নিয়ে যাচ্ছে আমাদের কল থেকে। সেই দিনকার সেই ছোট্ট চোখে না পড়া পুচকে মেয়ে আজকে যে অপূর্ব ফুলের মত ফুটে থাকবে, চাঁদের মত জোছনাময় হয়ে থাকবে তা কে জানতো। এই চাঁদ, এই ফুল, এই মধুময়তা আমার নাগালের কাছে ছিল একদিন। আমি সেদিন দেখতে পাইনি তাকে। কে জানত, সেদিনের সেই পিচ্চি নগণ্য মেয়ে আজ আমার মনের নক্ষত্র হয়ে জ্বলবে, আমায় জ্বালিয়ে মারবে! আজ আমি তার রূপ-জোছনার বন্যা দেখে পিপাসিত হই, তাকে ছুঁয়েও দেখতে পারি না। আজ আমার হাতের কাছে হয়েও, হৃদয়ের মাঝারে হয়েও বেণু শত আলোকবর্ষ দূরে। আমি কোনোদিন কি পাবো তাকে? একথা ভাবতেই আমার বুকে মোচড় দেয়। তবুও তাকে ভাবতে ভালো লাগে। আমি বিভিন্ন উসিলায় বা বিনে উসিলায়ও বেণুদের বাড়ি গিয়ে বসে থাকি। ওকে দেখি, ওর সুবাস নিই। আমার বুকে সুখের মতন ব্যথা ওঠে। একদিন ওর একটি চুলের কাঁটা আমি চুরি করে নিয়ে এসেছিলাম। ওই কাঁটাটা সারাক্ষণ আমার সাথে রাখি। ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখি। কথা বলি অর সাথে। সামান্য একটি কাঁটা আমার কাছে সাতরাজার ধনের চেয়ে মূল্যবান।
বেণুর স্বামী খেত-খামারে কাজ করে। বেণু নকশীকাঁথা সেলাই করে, হাতপাখা বানায় নকশী ক’রে, শীতল পাটি বানায়। ওর স্বামী হাটে নিয়ে বিক্রি করে। অভাবের সংসার ওদের। কখনো খেয়ে, কখনো না খেয়ে দিন যায়। বেণুর পরনে ছিন্নবস্ত্র। তবুও তাকে রানীর মত দেখায়। ওর মুখে শত দারিদ্রেও লাবণ্যময় হাসি লেগে থাকে। ওর মনে যে সৌন্দর্য আছে, যে সৌরভ আছে তা ছিন্নবস্ত্রে ঢাকা পড়বার নয়। কোনো মূল্যবান গয়না নেই তার অঙ্গে। পৃথিবীর কোনো মূল্যবান অলঙ্কার কি তার দেহের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে পারবে? বরং লজ্জা পেয়ে যাবে কোহিনূর হীরকও তার লাবণ্যের কাছে। বেণুর দুর্মূল্যতার মূল্য কোনোদিন দিতে দেখিনি তার স্বামীকে। সে বেণুর সাথে কথা বলে কর্কশকণ্ঠে, তার দোষত্রুটি অন্বেষণ করে খালি। কী চরম দুর্ভাগা সে!
আমার ছুটি ফুরিয়ে গেল। প্রবল অনিচ্ছায় আমি ফিরে গেলাম হোস্টেলে। পড়ায় আমার মন বসে না। কিছু ভালো লাগে না। অর্থনীতির মোটা মোটা বইগুলির সকল মূল্যবান কথা আমার কাছে অর্থহীন লাগে। কী হবে জীবনে শুধু আর্থিক লাভ-ক্ষতির হিসেব কষে? এই মোটা বইগুলি তো বেণুর কথা বলে না, প্রেমের কথা বলে না, মনের কথা বলে না। আমার বন্ধুরা আমাকে নিয়ে বিদ্রূপ করে। প্রতিভাময় ছাত্র আমি। লম্বাচওড়া সুপুরুষ। কত বিদুষী মেয়ে আমার প্রণয়কাঙাল!আমি কত মেয়ের আরাধ্য পুরুষ! আমি তাদের দিকে ফিরেও তাকাই না। বরং বিরক্ত হই তাদের আচরণে। আমার মন পড়ে থাকে অজপাড়াগাঁয়ের অশিক্ষিত, সরল, স্নিগ্ধ একটি মেয়ের আলতাপরা চরণে, তার চুড়ির রিনিরিনিতে, তার ছিন্ন শাড়ির আঁচলে, তার পায়ের নূপুরে, তার চোখের কাজলে, তার দীঘল চুলের খোঁপায়, তার ঠোঁটের কোণের অম্লান হাসিতে। বেণুর মনের অতুলনীয় সৌন্দর্যের কথা উপলব্ধি করবার মত মন ক’জনার আছে? আমি আমার বিদ্যান বন্ধুদের কি করে বোঝাই, মোটা মোটা বই পড়ে বিদ্যান হওয়া যায়। কিন্তু মনের প্রকৃত সৌন্দর্য কি লাভ করা যায়? এত এত বই তো বেণু পড়েনি। তবু কোথা থেকে পেলো ওর মন এমন সোভা?
আমার মন উচাটন, অস্থির। আমার পড়াশোনা মাচায় উঠেছে। আমি কয়েকদিন পরে বাড়ি চলে গেলাম ক্লাস ফেলে। বেণুর জন্য গলার মালা, কানের দুল এটা-ওটা আরও কি কি নিয়ে গেলাম। কী আনন্দ তার এই সামান্য জিনিসগুলি পেয়ে। আমাকে ওসব পরে পরে দেখায়। উচ্ছ্বাস ঝরে পড়ে তার। ইচ্ছা করে আরও কতকিছু দেই তাকে। তার বদনাম হবে, নিরপরাধ সরল মেয়েটির কলঙ্ক হবে, এই ভেবে সংযত থাকি।
একদিন মনে অনেক দুঃসাহস সঞ্চয় করে, মনকে আর বেঁধে রাখরে না পেরে বেণুর হাতদুটি আমার বুকে চেপে ধরে বলেছিলাম, বেণু, তুমি কি বোঝ না আমি তোমাকে কত ভালোবাসি? কেন আমি কাঙালের মত এসে পড়ে থাকি তোমাদের বাড়িতে? তোমার এত অভাব অনটন, তোমার স্বামীর কাছে তোমার এত অমর্যাদা, এত অবহেলা আমার সহ্য হয় না। চলো আমার সাথে। আমার রানী তুমি। তোমায় মাথার মুকুট বানিয়ে রাখবো সারা জীবন। আমার মনের সিংহাসনে বসিয়ে রাখবো। বেণু তার হাতদুটি ছাড়িয়ে নিয়ে ছলছল চোখে আমায় বলেছিল, ওকথা ভাবলেও পাপ হবে দীপু ভাই। আমি খুব সুখে আছি। আমার হৃৎপিণ্ড উপুড় হয়ে গিয়েছিল ওর কথা শুনে। এত বড় প্রত্যাখ্যানের জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না। ভেবেছিলাম, হয়ত বেণু খুশি মনে চলে আসবে আমার হাত ধরে।
সেদিন বেণুদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে নদীর ধারে বসে ছিলাম অনেক রাত অবধি। ভাবছিলাম আকাশ-পাতাল। জীবন, পৃথিবী, নদী সবকিছু অর্থহীন মনে হচ্ছিল। অমবশ্যার তিমির রাত ছিল। ওর চুলের কাঁটাটি বুকে চেপে ধরে ছিলাম। ওটা থেকে সৌরভ বেরুচ্ছিল, জোছনা ঝরছিল। ওটা বেণুর চুলের কাঁটা নয়, ওটাই আমার কাছে আমার বেণু। ও বেণু, বেণু রে, এমন নিঠুরভাবে প্রত্যাখ্যান কীকরে করলি তুই আমার প্রেমকে? মনে হচ্ছিল, এই পুচকে মেয়ে নিদারুণ অভাব-অনটন, অমর্যাদা, অনিশ্চয়তার মাঝে নিজের জীবন শেষ করে দিচ্ছে। তবুও প্রবল ভালোবাসা, মর্যাদার আহ্বানকে প্রত্যাখ্যান করছে দৃঢ়তার সাথে। এত মনের জোর, এত সততা, এত একনিষ্ঠতা, এত সাহস এই বই না পড়া মেয়েটি পেলো কোথায়? আমি আজও ভেবে বিস্মিত হই, আজও আমার মনে চিনচিনে ব্যথা ওঠে বেণুর জন্য।
লেখাটি পড়ে ভালো লাগলো 🙂 । লেখাটির মাঝে বাস্তবতার ছোয়া ছিলো। (Y)
:guli:
ব্যস্ততার জন্য প্রায় মাস খানিক পর কম্পিউটার নিয়ে আজ বসলাম। গল্পটি অনেক আগে পরার কথা থাকলেও হয়ে উঠে নাই। যাই হোক, গল্পের ভাষার ব্যবহার অসাধারণ।
@শুভ মাইকেল ডি কস্তা,
পাঠ-প্রতিক্রিয়া জানানর জন্য অসাধারণ ধন্যবাদ।
স্মৃতি গুলো তবুও মধুর আবার বেদনারও।
ভাল লাগলো। (F) (*) (Y)
@ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা,
(F) (F) 🙂
সেই গতানুগতিক লেখা। নারীকে সকল কষ্ট, দুঃখ, বঞ্চনার মধ্যে রেখে মহৎ করে তুলে ধরার চিরকালীন পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা ফুটে উঠেছে গল্পটির মধ্যে। গল্পের নায়ক পড়ছে, আর নায়িকা খুব কষ্টে আছে স্বামীর ঘরে, তার রূপ ফেটে পড়ছে – এ ধরণের গল্প আর কতকাল ছাপা হবে ; তাও আবার মুক্তমনায়। নারীকে আমরা কবে মানুষ হিসেবে দেখার গল্প লেখব? আর কতকাল এ বিভাজন?
@মোহন, নায়িকার কষ্ট আপনি এই গল্পে দেখলেন কোথায়? সে স্বামী সংসার নিয়ে অভাব অনটনেও সুখে আছে। নায়কের প্রতি তার প্রেম আছে কি নেই তা বোঝা যায় না। নায়ক তাকে ভালোবাসে, এবং তাকে পাবে না কখনো, এটা ভেবে দুঃসহ কষ্ট পায়। এটাই তো এই গল্পের থীম। এই লেখায় কোনো প্রকারের বিভাজন বা পুরুষ বা নারীতান্ত্রিকতার কোনো ব্যাপার নেই।
আসলে সবার জীবনেই কম বেশি অনুভুতির বা ভালোবাসার গল্প রয়েছে।
@শিহাব, তা তো অবশ্যই।
ভাল লাগলো। (Y)
@ক্লিওপেট্রা,
ধন্যবাদ।
@তামান্না ঝুমু,
কিন্তু অমন লক্ষ্মী মেয়ের বরটি পড়েছে একেবারে অপদার্থ। একদিন কাজ করে। তারপর জুয়া খেলে টাকা ওড়ায়। দশদিন শ্বশুরের ঘাড়ে পড়ে পড়ে ঘুমায়।
এখানে দশ দিনের কথা উল্লেখ আছে। দশ দিন বলে কি আপনি সারা জীবন বুঝিয়েছেন
○●○●○●○●○●○●○●○●○●○●○
“এখানে ছড়াতে হবে সকল অবিশ্বাস
এখানে ধ্বংস হবে সকল ভীরু হতাশ্বাস”।
@অর্ঘ্য, সে শ্বশুরবাড়িতেই থাকে। কিন্তু নিয়মিত কাজকর্ম করে না। এই হলো কথা।
গল্পে ভাল একটি ছবি ফুটিয়ে তুলেছেন। ছোট্ট পরিশরে যা বুঝাতে চেয়েছেন তা বেশ ভাল। কিন্তু আমার একটি জায়গাতে কিছুটা খটকা লেগেছে
একটু ভেবে দেখুন বেনুর বিয়ে হয়ে গেছে তার স্বামী একটি অপদার্থ শ্বশুর বাড়িতে পড়ে পড়ে শুধু ঘুমায় সব ঠিক কিন্তু দিপু যখন বিয়ের কথা শুনেছে করিম কাকার বাড়িতে গিয়েছে তখন কিন্তু বেনু করিম কাকার বাড়িতে ছিল। তারপরে আবার যখন ক্লাস ফেলে বাড়ি চলে গেল এবং গিয়ে যখন করিম চাচার বাড়িতে গেল তখন বেনু করিম কাকার বাড়িতে ছিল। বেনু কি বিয়ের পরও তার বাবার বাড়িতে থাকত। নাকি অন্য কোন কারন ছিল ব্যাপারটা অস্পষ্ট।
বাঁকি গল্পটা ভাল।
@অর্ঘ্য,
শ্বশুর বাড়িতে পড়ে পড়ে ঘুমায় মানে সে শ্বশুর বাড়িতেই থাকে।