আওয়ামী লীগের শাসন আমলে আমরা আমাদের জন্মভিটা থেকে উচ্ছেদ হই। সালটা ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বর মাস। ময়মনসিংহ শহরের প্রাণকেন্দ্র গাঙ্গিনারপাড় লালা লজ (স্থানীয়ভাবে যা লাইলি পট্টি নামে পরিচিত ছিল)। প্রায় ২০ একর জমির ওপর হিন্দু অধ্যুষিত সেই পাড়াটিতে ছিল ৩৬টি হিন্দু পরিবারের বসবাস। স্থানীয় ব্যবসায়ী (ভূমিদস্যু) সুরুজ্জামান মিয়া তার অর্থ ও গুন্ডা-বাহিনী দিয়ে সেখানে বসবাসরত নিম্নবিত্ত, নিম্ন-মধ্যবিত্ত হিন্দুদের তাদের বাপ-দাদার ভিটাবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে। সুরুজ্জামানের দাবি, সে নাকি বৈধভাবে জমিটি কিনেছে মূল মালিকের কাছ থেকে। অথচ, জমির মালিক লাইলির (লালাশঙ্কর রায়ের স্ত্রী বলে তাকে লাইলি নামে ডাকা হতো) মৃত্যুকালে সুরুজ্জামানের বয়স ছিল মাত্র দুই বছর। দুই বছরের শিশুর পক্ষে এত বড় একটি সম্পত্তির মালিক হওয়া কীভাবে সম্ভব- আমার জানা নেই।
পাড়াটির পাশেই ছিল স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যালয়। অসহায় পরিবারগুলো সাহায্য-সহযেগিতা চেয়ে বিভিন্ন সময় সেখানে ধরনা দেয়। সহায়তা চেয়ে আবেদন করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতি সংগঠনের কাছে। কিন্তু সুরুজ্জামানের পেশীশক্তির বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে রাজি হয়নি। স্থানীয় সাংবাদিকসহ সুধীসমাজের মানুষদের পাশে চায়। তাদের কেউ কেউ টাকা খেয়ে নিশ্চুপ থাকে। আর স্থানীয় প্রশাসন?- সে তো ছিল সুরুজ্জামানের পকেটে।
অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে, জোর করে সুরুজ্জামান যে পরিবারগুলোকে উচ্ছেদ করেছে তারা আজ ময়মনসিংহের বিভিন্ন জায়গায় কোনো একরকম বেঁচে আছে। সুরুজ্জামানের ভাই খালেক সরকার হলেন আরেক ভূমিদস্যু। ময়মনসিংহের অধিকাংশ হিন্দুদের জমি আজ এই দুই ভাইয়ের পেটে। সবার কাছে বিষয়টি সূর্যালোকের মতো স্পষ্ট হলেও এ ব্যাপারে কেউ কথা বলতে রাজি হয় না। ঢাকায় আসার পর এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন করতে গিয়েও স্থানীয় ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাইনি। তারা সবাই প্রাণ-ভয়ে ভীত। জানি, ঢাকা থেকে তাদেরকে নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই। কিন্তু এমন একটি বৃহত্তর অন্যায়কেও মন থেকে মেনে নিতে পারিনি না- পারবো না কোনোদিন। আমৃত্যু এ ক্ষত বুকে বয়ে বেড়াতে হবে আমায়।
আমার একটা সরল প্রশ্ন হলো, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে বসবাসরত হিন্দুদের ভোট-ব্যাংক হিসেবে গণনা করে। আর বিএনপি-জামায়াত হিন্দুদের মনে করে ভোটের যুদ্ধে বাধা। কিন্তু জমি দখলের ক্ষেত্রে সবাই এক। জমি দখলের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জামায়াত কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মাঠে নামে একসাথে। যেমনটা দেখা গেছে, লাইলি পট্টির ব্যাপারে। তবে উচ্ছেদের ক্ষত নিয়ে হিন্দু পরিবারগুলো এখনো কেন আওয়ামী লীগকেই সমর্থন করে তা আমার কাছে এখনো অজানা।
বি.দ্র. লাইলি পট্টি ওরফে লালা লজের বর্তমান নাম নাকি রাখা হয়েছে সুরুজ্জামান লজ।
আপনি এই ব্লগে গিয়ে দেখতে পারেন। এখানে জমি সঙ্ক্রান্ত যাবতীয় আইন ও তথ্য দেওয়া আছে। http://www.bdlandlaw.blogspot.com
এটা ওদের পুরানো আদাত…
এটা আওয়ামী লীগের/বিএনপি/জামায়াত কারোরই দোষ নয়। মূল কারণ হচ্ছে ধর্ম বিশ্বাস। ধর্মে আছে বিধর্মীদের ক্ষতি করলে কোন গুনাহ হয়না বরং বিধর্মীদের সাহায্য করলে গুনাহ হয়। তাই বিধর্মীদের ক্ষতি করার ব্যাপারে সবাই একমত এবং এটা ধর্মীয় বিধি সম্মত। যেকারনে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা হওয়ার অনেক পরে সেখানে প্রশাসনের লোক যায়। যেন, রুগী মরিবার পরে ডাক্তার আসিল। অথবা, মোবাইলে সংবাদ পাওয়ার পরে ডাক্তার বলিলেন রুগীকে মরিতে দাও, আমি পোষ্টমর্টেম করার যন্ত্রপাতি গুছিয়ে আসছি।
একটা কাজ করলে কেমন হয়, আইন পাশ করে এদেশ থেকে সংখ্যালঘুদেরকে তাড়িয়ে দেয়া অথবা তাদেরকে মেরে ফেলা। সংবিধানে আছে- আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রাখা। সংখ্যালঘুরা তো তা রাখেনা, তাই তাদেরকে সংবিধান অবমাননা/রাষ্ট্র অবমাননার দায়ে দোষী সাব্যস্থ করে ফাঁসী দেয়া যেতে পারে। তাহলে আর সংখ্যালঘু বিষয়ক কোন সমস্যাই আর থাকবেনা। সরকার তখন আরও বেশী করে উন্নয়ন মূলক কাজ করার সময় পাবেন।
আওয়ামী লীগের কাছ থেকে এই ধরণের কাজ মোটেই আশা করা যায় না। তারা যদি নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বলে দাবি করে, তবে তাদেরকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি বিশেষ যত্নবান হতে হবে।
আওয়ামীলীগ বিএনপি এভাবে আলাদা করে দেখার কোন মানে হয়না। করুণাপ্রার্থী সংখ্যালঘু হিন্দুরা আওয়ামীলীগকে ত্রাণকর্তা ও আশ্রয়দাতা হিসেবে দেখে ও নতশীরে হাত জোড় করে থাকে। আওয়ামলিীগ করা ও বিএনপি করা সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন সংখ্যাগুরু মুসলমানদের মাঝে কী কোন ভিন্নতা আছে? সংখ্যা যাই হোক, আত্মসম্মান নিয়ে বাঁচতে হলে কারো করুণাপ্রার্থী না হয়ে হিন্দুদের নিজের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে এসব দখলবাজদের বিরুদ্ধে সাহস নিয়ে দাড়াতে হবে। তখন আওয়ামীলীগ বিএনপি বা দখলবাজ সংখ্যাগুরু মুসলমান নয়, এদেশের মানবতাবাদী মানুষ এক হয়ে পাশে দাড়াবে; অপশক্তি পরাজিত হবে। একদিনে বা খুব কাছাকাছি সময়ে হয়তো সেই কাঙ্খিত পরিবেশ আসবেনা, কিন্তু শুরুতো করতে হবে। আসুন আমরা শুরু করি।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য আওয়ামী লীগ অথবা বি এন পি সরকার কোন তফাত করে না।
রাজনৈতিক দলগুলো ও দলের ক্যাডারেরা কেউ কারুর চেয়ে কম নয় দুর্নীতিতে।
এমন একটি ঘটনা আওয়ামিলীগের গত আমলে। গাজিপুর জেলার কালিগঞ্জেও ঘটেছে। আর স্বাধীনতার পর পরের আরেকটি ঘটনা। নরসিংদীর বিপীন সাহার দালান ছিল নাম করা। ঐটা তখনকার আওয়ামিলীগের এম পি দখল করেছিল। আজও দখল বলবৎ আছে।
ভূমি দখল নিয়ে আবুল বরকত সাহেবের গবেষণা গ্রন্থ রয়েছে। এতে দেখা গেছে শাসক গোষ্ঠি হিসেবে আওয়ামীলীগই হিন্দুর ও বিহারী সম্পত্তি /জমি বেশি দখল করেছে।
জমি দখলের ক্ষেত্রে সবাই এক। জমি দখলের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জামায়াত কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মাঠে নামে একসাথে।
একসময় ধারনা ছিল আওয়ামীলীগ একটি ধর্ম নিরপেক্ষ ও প্রগতিশীল দল। এটি মনে করার কারন ছিল কারন এই দলের অতীত ইতিহাস আমাদের দেশের অন্য সব দলের তুলনায় অনেক ভাল। কিন্তু শুধুমাত্র অতীত ইতিহাস নিয়ে পড়ে থাকলেই তো চলবে না। আমাদের দেখতে হবে বর্তমানের ক্রিয়াশীলতা। আমরা এখন যে আওয়ামীলীগকে দেখছি তা প্রগতিশীলতার কোন পর্যায়ে আছে তা নিয়ে অনেকের মধ্যই প্রশ্ন আছে। আসলে একটি দলের ভাল খারাপের মান দণ্ড নির্ভর করে সেই দলের কর্মী সমর্থক ও সর্বপরি নেতাদের উপর। এখন যারা রাজনীতিতে আছে এবং নতুন করে যারা আসছে তারা একই দুগ্ধবতী গাভির সহদর। তাই প্রতিটি দলের কাজ কার্যত এক ও অভিন্ন।
সর্বশেষ বলতে গেলে বলা লাগবে ,পেশী শক্তি যখন ক্ষমতার উৎস তখন গণতন্ত্রের মুক্তি অসম্ভব মানুষের মুক্তি অসম্ভব।
‘‘দেশে থাকলে ভুটটা আমার, চইল্যা গ্যালে ভিডাডা” – অসাম্প্রদায়িকতা আর মুক্তিযুদ্ধের এজেন্ট আওয়ামীলীগ এখন এই নীতিতেই বিশ্বাসী। আর বিএনপি’র ব্যাপারে এ বিষয়ে আলোচনার সুযোগই নাই। আসলে শোষকের চেহারা একই, শুধু মুখোশটা ভিন্ন হতে পারে।
@অর্বাচীন, ঃ আপনার সাথে সহমত পোষ্পণ করছি।
গোত্র বা দলবদ্ধ ভাবে মামলা হয়েছে কি? অনেক দেশেই এই রকম মামলাকে ক্লাস একশন ল সুট বলে। ক্ষতিগ্রস্হ যারা তাদের দল বেঁধে আদালতে মামলা করাটা সব কথার প্রথম কথা হওয়া উচিৎ; নয় কি? মামলার মেরিট থাকলে উকিল ব্যারিস্টাররা লড়বে এবং ক্ষতিপূরণ থেকে নিজেদের ফিস কেটে নেবে। এমন কি হয়েছে? এমনটা হবার সম্ভাবনা আছে কি? জনমত তৈরী করা যায় কি? ন্যায় বিচার আদায় করে নেয়া যায় না নাকি?
@কাজী রহমান, মামলা হয়েছিল। দীর্ঘদিন আইনি প্রক্রিয়াতেও ছিল বিষয়টি। তবে নিম্নবিত্ত বা নিম্ন-মধ্যবিত্তদের পক্ষে জমি-সংক্রান্ত জটিল বিষয়-আশয় নিয়ে দীর্ঘদিন মামলা চালিয়ে যাওয়া যে দুষ্কর তা তো অনুধাবন করতে পারছেন। তাছাড়া সুরুজ্জামানের অর্থ বা ক্ষমতার কাছে আমরা ছিলাম নস্যি মাত্র। ভুয়া দলিল বা সাক্ষী হাজির করতে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেছে সুরুজ্জামান মিয়া। এক পর্যায়ে ঢাকার হাইকোর্ট থেকে সে তার পক্ষে রায় নিয়ে আসে।
আর সরকারি বা বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান সেসময় আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি। তাছাড়া আইনজীবীরা অল্প পয়সায় কাজ করতে রাজি হয়নি।
জনমত তৈরি করতে ভীত ছিল অধিকাংশ অধিবাসী। এমনিতে তারা সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়, তার ওপর দরিদ্র জনগোষ্ঠী- যাকে বলে ‘সংখ্যালঘুর সংখ্যালঘু’।
@কাজী রহমান, কারণ আওয়ামী লীগ, বিএনপি আর জামাত — সবাইই বাংলাদেশের নষ্ট রাজনীতির ধারক ও বাহক!
@শেহজাদ আমান,
বাংলাদেশে সত্যিকার আদর্শিক রাজনীতি অবশিষ্ট আছে কি না সেটা ভাবা দরকার। জনবিচ্ছিন্ন রাজনীতিব্যবসা বর্জন করতেই হবে। তবে তা করতে পারে শুধুমাত্র রাজনৈতিক সচেতন জনগন, অন্য কেউ না। নাগরিক অধিকার রক্ষা এবং তা আদায় করবে নাগরিক। এটা যতক্ষণ না ঘটবে ততক্ষণ দীর্ঘস্থায়ী শান্তি আসতে পারে না। এবং আবার, এটা যতক্ষণ না ঘটবে ততক্ষণ রাজনৈতিক গুন্ডারাই দেশ চালাবে।
আপনার মন্তব্যের উত্তর দিতে দেরী হওয়ায় আন্তরিক ভাবেই দুঃক্ষিত; চোখ এড়িয়ে গিয়েছিলো। ভালো থাকুন।
@কাজী রহমান, সত্যিকারের ১০০% সৎ ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতি কোথাও সম্ভব নয়। তবে, একটা সহনীয় মাত্রার উৎকর্ষের রাজনীতি আমাদের দেশে অবশ্যই দরকার। সেজন্য আওয়ামী ও বিএনপি জোটের বাইরে নতুন শুভ রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঘটতে হবে…।
আমিও এক সময় চিন্তা করতাম আওয়ামী লীগ মানেই ধর্মনিরপেক্ষ, অসাম্প্রদায়িক চেতনার ধারক বাহক। আপেক্ষিকতার বিচারে এখনো সেটা ঠিক আছে, কিন্তু এই দলেও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন লোক একেবারেই বিরল এমন নয়।
বর্তমান সময়ে বেশ কিছু সংখ্যালঘু নির্যাতনে সরকারী দলের নিম্ন থেকে মন্ত্রী পর্যায়ের নেতাদের জড়িত থাকার সংবাদ মিডিয়ায় এসেছে। পরিষ্কার বোঝা যায় ওনারাও এখন সংখ্যালঘুদের দূর্বলতার সুযোগ ব্যাবহার করে রাজনীতির কার্ড বানিয়ে বলির পাঁঠা বানাতে তেমন দ্বিধা করেন না। এ ছাড়াও এমনকি ‘৭৫ সালের আগ পর্যন্ত শত্রু সম্পত্তি বা অর্পিত সম্পত্তি দখলের তালিকায়ও আওয়ামী লীগই শীর্ষ অবস্থানে আছে। আওয়ামী লীগ হয়ত বিএনপি জামাতের মত সাম্প্রদায়িক কথাবার্তা সরাসরি বলে না, কিন্তু দূর্বলের যায়গা সম্পত্তি ভোগ দখলের বেলায় এমন কিছু তফাত নেই।
অথচ আমরা এমনই এক দেশের নাগরিক যেখানে অসাম্প্রদায়িক চেতনার জন্য এই দলের ওপরই এখনো ভরসা করতে হয় স্রেফ আপেক্ষিক বিচারে। এটাই হয়ত “উচ্ছেদের ক্ষত নিয়ে হিন্দু পরিবারগুলো এখনো কেন আওয়ামী লীগকেই সমর্থন করে তা আমার কাছে এখনো অজানা।” সেই অজানা প্রশ্নের উত্তর।
@আদিল মাহমুদ, আপনার গঠনমূলক প্রতিক্রিয়ার জন্য ধন্যবাদ। আপনার মন্তব্যের সাথে আমি অনেকাংশে একমত। তবে এ মুহূর্তে আমার বা আমাদের সকলের (যারা মানবতার পক্ষে দাঁড়ায়) তাদের কি করা উচিত- সে বিষয়ে কিছু বললে আরো ভালো হতো।
@অঞ্জন আচার্য,
সত্য কথা বলতে দূঃখের সাথে জানাচ্ছি যে তেমন কিছু করার নেই। আবেগাক্রান্ত হয়ে বেহুদা আশাবাদী কিছু কথা বলতে পারি, জেনেশুনে মিথ্যা সান্তনা দিতে খারাপ লাগে।
অনেক রকম প্রস্তাবনা অনেকে দেবে জানি। যেটা আলোচনায় আসবে না তা হল সংখ্যাগুরু যারা তারা সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে আসলেই কতটা চিন্তিত, কিভাবে ভাবে? এ দেশের অধিকাংশ লোকের সংখ্যালঘু নির্যাতনের সাথে সম্পর্ক নেই, সমর্থনও করে না। তাই বলে তারা সংখ্যালঘু অধিকার নিয়ে খুব ভাবে এমন মনে করার কারন নেই। সংখ্যালঘুদের নির্যাতিত হওয়ার ঘটনা শুধু বাংলাদেশেই এমন নয়, বহু দেশেই আছে, এমনকি মানবাধিকারের দেশ বলে পরিচিত পশ্চীমা দেশগুলিতেও আছে। সংখ্যালঘুদের নিজেদের ভোকাল হতে হয় ঠিকই, কিন্তু সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠী যতদিন নিজেরা আন্তরিকভাবে সামাজিক আন্দোলনে এগিয়ে আসে ততদিন তেমন কিছু করা যায় না। যেমন আমেরিকায় কালোদের অধিকার প্রতিষ্ঠার ইতিহাস একটি উদাহরন হতে পারে। আমাদের দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকে সংখ্যালঘু নির্যাতন সমর্থন করবে না, কিন্তু চিন্তা করতে চাইলে ভারতে মুসলমান নির্যাতন নিয়ে যতটা মাথা ঘামাব তার কানাকাড়িও নিজ দেশের সংখ্যালঘু নিয়ে মাথা ঘামাবে না। পাকিস্তানের সংখ্যালঘুদের অবস্থা আরো খারাও, আমরা এখন ইনশাল্লাহ মোটামুটি সে পথে অনেক দূর এগিয়ে গেছি। সংখ্যালঘুদেরত শত্রু ভাবার, জাতিগতভাবে ঘৃনা করার শিক্ষা আমরা এখন শুধু চিপা চাপায় নয়, রীতিমত সরকারী পাঠ্যপুস্তকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শুরু করে দিয়েছি। জাতিগত ভাবে যারা আমাদের শত্রু তারা ঝাড়ে বংশে উজাড় হয়ে গেলে কার দায় পড়েছে সে নিয়ে চিন্তিত হতে? ফলাফল দুই দেশ থেকেই সংখ্যালঘুরা মোটামুটি উজাড় প্রায়।
@অঞ্জন আচার্য,
সমস্যা হচ্ছে আওয়ামীলীগ একটা দল এদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত থাকতে পারে এই ধরনের বিষয়ে – তারা তাঁদের দলের বিভিন্ন সদস্য দের বিরুদ্ধে এই ধরনের কোনও ব্যবস্থা নেবেন কিনা, আর এটা সুস্পষ্ট যে আওয়ামীলীগ এখন আর ধর্ম নিরপেক্ষ কোনও রাজনীতি করে না যা তার দলের লোকজন কে এ রকমের জঘন্য কাজ থেকে দূরে রাখবে ।
কিন্তু রাষ্ট্র এবং সরকার তো আওয়ামীলীগ নয়, তাই না ? রাষ্ট্রের প্রধান দায়িত্ব তো তার প্রতিটি নাগরিকের সকল অধিকার ও নিরাপত্তা সংরক্ষন করা, এই বেসিক ভূমিকা টিও রাখতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ আমাদের সরকার গুলো ।
যদিও আপ্ত বাক্য শোনাবে, তবুও বলবো জনমত গঠন ই হয়ত অন্যতম একটি পথ এই বিষয় গুলো তে সোচ্চার হওয়ার ও সচেতনতা বৃদ্ধির ! বিষয় গুলো কে সামনে নিয়ে আসা, মিডিয়াতে, ব্লগে, বিচার বিভাগের কাছে …… ! আরও বেশী বেশী করে …… নাম ধাম সহ !
একে রূঢ় জমি বাস্তবতা বলতে পারেন!
আ’লীগে সাম্প্রদায়িক লোকের অভাব নেই, আর এই লোকগুলো দল করে কোন আদর্শবোধ থেকে না, বরং হৃদয়-মন জুড়ে থাকে মাঠ দখলের লেঠো স্বপ্ন!!!
@কাজি মামুন, একমত…