রাজনৈতিক সংকট নেই, এমন গণতান্ত্রিকদেশ পৃথিবীতেই নেই। গণতন্ত্রের ইতিহাসেও নেই। আর বাংলাদেশে তদারকি সরকার নিয়ে এই প্রাণঘাতি ক্যাঁচাল, এই নিয়ে চতুর্থবার।
সমস্যা হচ্ছে, একটি সর্বজনগ্রাহ্য তদারকি সরকার প্রণয়নে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং ক্রমবর্ধমান ব্য্ররথতার জন্য, এক পক্ষ অন্যকে দোষ দিচ্ছে। কেও বাংলাদেশের রাজনীতির “স্ট্রাকচারাল” বা কাঠামোগত দুর্বলতা নিয়ে আলোচনা করছে না। গোটা বাংলাদেশ আলীগার বনাম বিএনপিতে দ্বিধাবিভক্ত। আরেকটা শ্রেনী অবশ্য দুপার্টি সিস্টেম নিয়েই বীতশ্রদ্ধ। আমি মনে করি বাংলাদেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা দোষারোপে যতটা সময় দিচ্ছেন, কাঠামোগত দুর্বলতার দিকে তারা তাকাচ্ছেন না।
আমি কোন রাষ্ট্র বিজ্ঞানী নই। সেরকম কোন দাবী আমার নেই। বাংলাদেশের ইতিহাস মোটামুটি জানা। আমি শুধু আমার সীমিত সাধ্যের মধ্যে বোঝার চেষ্টা করছি বাংলাদেশের সমস্যাটা কি।
বাংলাদেশের রাজনীতির অনেক উপদান। প্রথমে বৃটিশ উপনিবেশ, দেশ ভাগ, দাঙ্গা, সংখ্যালঘু সমস্যা,পাকিস্তানের সাথে স্বাধীনতা যুদ্ধ-ভাষা আন্দোলন সব কিছু মিলে মিশে বাংলাদেশের রাজনীতিতে অসংখ্য “কনট্রোলিং” গিয়ার। যদিও বাংলাদেশের সাধারন মানুষ এখনো ভারতচন্দ্রের ” আমার সন্তান যেন থাকে দুধেভাতের” সরলতা থেকে বিচ্ছিন্ন হয় নি। বিভিন্ন সমীক্ষার ভিত্তিতে এটাই দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবিরা যতই “তুই রাজাকার” শ্লোগান তুলুক, আর বি এন পি দেখানোর চেষ্টা করুক আলীগাররা “ভারতের দালাল”- বাংলাদেশের সাধারন মানুষ মোটেও পাকিস্তান বা ভারতের দালাল তত্ত্বে প্রভাবিত না। তারা অনেক বেশী পরিনত ভোটার। তাদের মূল ক্ষোভ বাংলাদেশের রাজনীতির দুবৃত্তায়ন নিয়ে। তাদের মূলক্ষোভের অভিমুখ কি করে ঘুঁশ নিয়ে কোটিপতি হচ্ছে রাজনীতিবিদদের ভাইরা ভাইরা, আর তাদের দুর্দিনের শেষ হবার কোন আশা নেই। পরিণত ভোটারদের মতন, তারা ভোটটা ঠিক যায়গাতেই দিয়েছেন গত ১৯৯১ সাল থেকেই । নিজেদের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন রাজনৈতিক পার্টিগুলির দুর্নীতির বিরুদ্ধে।
আমি মনে করি না আগের ইলেকশনে তারা ঢালাও ভাবে আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছিলেন কাদের মোল্লাকে ফাঁসিতে ঝোলানোর জন্য। তাদের রায় ছিল বি এন পির দুর্নীতির বিরুদ্ধে। এবং আওয়ামী লীগ এসে সেই প্রতিশ্রুতি পূরনে সম্পূর্ন ব্য্ররথ হওয়ায়, তারা নানান স্থানীয় নির্বাচনে আলীগের নৌকা উল্টেছেন।
অর্থাৎ আমি যেটা বলতে চাইছি-বাংলাদেশের ভোটাররা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রএর জন্য সম্পদ। তারা নিজের এবং বাংলাদেশের ভালো ঠিকই বুঝেছেন। কিন্ত একদল রাজনৈতিক ব্যবসায়ী, নিজেদের সম্পদ এবং ক্ষমতার লোভে, বাংলাদেশের রাজনীতিকে কিছু তাত্ত্বিক এলিমেন্ট যথা যুদ্ধপরাধ, ভারতবিরোধিতা ইত্যাদির চড়া সুরে বাঁধতে চাইছে।
এর জন্যে বাংলাদেশের আসল এবং জটিল সমস্যাগুলি রাজনীতিতে আসছে না।
বাংলাদেশের আসল সমস্যাগুলির দিকে এবার তাকানো যাক। বোঝা দরকার কেন এই ইস্যু গুলি বাংলাদেশের রাজনীতিতে না এসে, শুধু শুধু ভারত আর পাকিস্তানের দালাল ইত্যাদি পলিটিক্যাল রেটরিকের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে।
প্রথম সমস্যা অবশ্যই ঘনজনবসতি এবং সেই অনুপাতে জীবিকা নেই। যা ভারত সহ সব তৃতীয় বিশ্বের সমস্যা। বাংলাদেশে অনেক এন জি ও এই নিয়ে কাজ করে চলেছে। তাদের সাফল্যও এসেছে। তবে মূল সাফল্য এসেছে পোষাক শিল্পে। কিন্ত সমস্যা এখনেও বহুবিধ। অধিকাংশ শ্রমিক প্রায় দাসশ্রমিক। মজুরিও ভীষন কম। ভারতে এর জন্য সরকার থেকে ১০০ দিনের কাজ চালু করা হয়েছিল, যেখানে শ্রমিকরা প্রায় কিছু না করেও দৈনিক ১৫০ টাকা রোজগার করত। এতে গ্রাম এবং শহরে সস্তায় শ্রমিক পাওয়া ভারতে দুর্লভ। কারন বেশী টাকা না পেলে, তারা সরকারি কাজই করবে। কার্যত এটা একটা মূল কারন ভারতে গ্রামে শ্রমিকদের দৈনিক রোজগার বেড়েছে।
বাংলাদেশে যেভাবে জিনিসপত্রের দাম উদ্ধমুখী, সেই হারে শ্রমিকদের মজুরী বাড়ে নি।
হাসিনার রাজতত্বকালে বাংলাদেশে মুল্যবৃদ্ধি ৭-১২% এর মধ্যে থেকেছে। এটা হোলসেল ইনডেক্স। শুধু চালের দাম ধরলে, কোন কোন বছরে ( ২০১০), ৪০-৫০% বৃদ্ধি হয়েছে চালের দামে। বাংলাদেশে শ্রমিক এবং নিচের তলার মানুষদের উন্নয়ন সেই ভাবে হয় নি। আমি কয়েকটা রিপোর্টে যা দেখছি-চালের দাম বাংলাদেশে এতটাই বেড়েছে, সেটাকে যদি, মজুরী বৃদ্ধির সাথে এডজাস্ট করা যায়, তাহলে দেখা যাবে, কোন কোন বছরে বাংলাদেশের শ্রমিকদের দৈনিক মজুরী আসলে ২থেকে ৩ % কমেছে ( সূত্র ঃ ইন্টারন্যাশানাল ফুড পলিসি ইন্সটিউট রিপোর্ট )। বাংলাদেশে এই মুহুর্তে হাঙ্গার ইনডেক্সের নীচে আছে ২১% মানুষ। তবে সেটা ভাল এই জন্যে যে ১৯৯১ সালে, সেটা ছিল ৪০%।
তারপরেও বাংলাদেশ ভারতের থেকে হিউমান ডেভেলেপমেন্ট ইন্ডেক্সে ভাল করেছে, এর কারন বিদেশে শ্রমিক সাপ্লাই থেকে বাংলাদেশে ক্যাপিটাল ইনফ্লাক্স এখনো বেশ ভাল। কিন্ত পরিকাঠামোর অভাবে সেই ক্যাপিটাল থেকে ভাল কিছু হচ্ছে না, যেটা ভারতের কেরালাতে হয়েছে। স্থানীয় শিল্প বিকাশে বিরাট বাধা রাজনৈতিক দাদাগিরি। কোন প্রবাসী বাংলাদেশী যে বাংলাদেশে ফিরে সেখানে শিল্পের বিকাশ ঘটাবেন, তার জন্য কোন পরিকাঠামো নেই। ভারতের আই সিটির উন্নতিতে একটা বিরাট অংশ আছে প্রবাসীদের শিল্প স্থাপনা। এই জায়গাটা বাংলাদেশে এখনো তৈরী হয় নি। অধিকাংশ প্রবাসী বাংলাদেশীরা ঢাকাতে ফ্লাট কিনেই খালাস। রাজনৈতিক দাদাগিরির ভয়ে শিল্প স্থাপনাতে কেও এগিয়ে আসতে সাহস পান না। ফলে প্রবাসী বাঙালীদের সাহায্যে বাংলাদেশে বিপুল উন্নয়নের সুযোগ থাকলেও স্থানীয় চাকরি সেভাবে তৈরী হয় নি। পরিকাঠামোগত দুর্বলতা রয়েই গেছে। এই কারনে নানান সুযোগ থাকা সত্ত্বেও দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধির জাঁতাকলে, শ্রমিক শ্রেনীর দুরাবস্থার খুব একটা হেরফের হয় নি।
এরপর তারা যখন দেখে শুধু রাজনীতি করার কারনে কেও কেও কোটিপতি হয়, তারা ঘৃণার চোখে দেখে রাজনীতিবিদদের। তারা ভারত না পাকিস্তানের দালাল -সেটা বোঝার ক্ষমতা এই শ্রেনীর নেই। বাংলাদেশের এই বৃহত্তর শ্রেনীর উন্নতির জন্য কোন রাজনৈতিক দলের কোন এজেন্ডা নেই। মাথাব্যাথা শুধু কিছু এন জি ওর। ফলে খুব স্বাভাবিক ভাবেই, বাংলাদেশের বৃহত্তর মানুষ এখনো উত্তর খুঁজছে, কবে একটা রাজনৈতিক দল আসবে যাদের ফোকাস থাকবে তাদের রুটিরোজগারের ওপরে।
দ্বিতীয় ইস্যু-ধর্ম নিয়ে। ইসলাম বা জামাত কি সমস্যা? এই প্রশ্নের উত্তরে আমার সাথে আমার বাংলাদেশী বন্ধুরা একমত হবেন না।
জামাত কেন বিজেপির মতন যেকোন ধর্মীয় সুরসুরি মার্কা পার্টিগুলির উত্থানে দুটো এলিমেন্ট থাকে। প্রথমত এদের সব নেতাই ধর্মকে ব্যবহার করে ব্যবসা করে। জামাত এই দিক দিয়ে খুব মজার দল। এরা ভারত পাকিস্তানের বিভাজন চায় নি। পাকিস্তানের বিরোধিতাই করত এরা। তারপরে পাকিস্তানের আমলে বাংলাদেশও চায় নি। এসবের মূল কারন- আসলেই ধর্ম ভিত্তিক পার্টিগুলি চলে শাসক শ্রেনীর শোষনের স্টাকচারটাকে ভাল করে টিকিয়ে রাখার কারনে। ফলে জামাত বৃটিশ আমলে ছিল বৃটিশের সাথে, পাকিস্তানের আমলে পাকিস্তানের সাথে। আওয়ামীলীগ ওদের সাথে নিলে, ওরা আলীগের ভাষাতেই কথা বলবে। যে কাজে ব্যবসা চলে আর কি।
এখানে লক্ষ্যনীয় গুজরাটে নরেন্দ্রমোদির মতন হিন্দুত্ববাদি, হিন্দুত্বের পথ আলগা করে উন্নয়নে মন দিতে বাধ্য হয়েছিলেন গণতন্ত্রের বাধ্যবাধকতায়। অন্য বিজেপি শাসক মুখ্যমন্ত্রীরা যথা রমন সিং বা শিবরাজ চৌহান ও ধর্ম ছেরে সার্বিক উন্নয়নকে অস্ত্র করেই ভোটে লড়ে জিতছেন। গণতন্ত্রের চাপই তাদের বাধ্য করেছে উন্নয়নমুখী রাজনীতি করতে। ভারতের রাজনীতিতে ধর্ম গুরুত্বপূর্ন হলেও শুধু ধর্মকে এজেন্ডা করে কোন পার্টি টিকবে না।
মুশকিল হচ্ছে জামাতের ধর্মীয় উগ্রতার লঘুকরন হল না কেন। বরং তাদের ধর্মীয় উগ্রপন্থা বেড়েছে। গণতান্ত্রিক নিয়মে তা হওয়া উচিত না। কথাটা মিশরের ইসলামিক ব্রাদারহুডের জন্যও সত্য। কেন গণতান্ত্রিক পথে তাদের ইসলামিক উগ্রপন্থা কমছে না?
এর কারন কি ইসলাম একটি উগ্রপন্থী ধর্ম যার সাথে রাজনীতি আলাদা করা যায় না?
আমার মনে হয় সেটা না। ভারতের হিন্দুত্ববাদি দলগুলি শাসন ক্ষমতায় এসেছে এবং শাসকের গদিতে বসে বুঝেছে এবার আর হিন্দু রাজত্ব বললে কেও শুনবে না যদি খেতে না পায়। বাংলাদেশে এবং মিশরের সমস্যা হচ্ছে এখনো ইসলামিক পার্টিগুলির একটা বেস আছে, যারা বিশ্বাস করে, ইসলামের পথেই তারা ভাল থাকবে। মানে ভাল খেতে পড়তে পারবে। কারন তারা দেখেছে শাসন ক্ষমতায় আছে কিছু বাদামী সাহেব। ফলে ইসলাম তাদের ভাল কিছু করে দেবে এই মিথটা এখনো ভাঙে নি বাংলাদেশে বা মিশরে। যদ্দিন শাসন ক্ষমতায় না আসবে জামাত, ইসলামের স্বর্গীয় শাসনের মিথটা চলবে। কারন চোখের সামনে সাধারন মানুষ দেখছে বুর্জোয়া দলগুলি দুর্নীতিতে নিমজ্জ। ফলে তারাআশা করে এই সব ধর্মীয় দলগুলি সৎ রাজনীতি উপহার দেবে। এটা যে রূপকথা সেটা তারা বোঝে না। ১৯৯১ সালে সবাই মনে করত বিজেপি অন্য রকমের দল যেখানে দুর্নীতি সম্ভব না। কিন্ত তারা যেই ক্ষমতাই গেছে, সেইসব মিথ ভেঙে গেছে।
এই মিথটা ভাঙে নি বলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইসলাম এখনো বিশাল ছায়া ফেলছে।
বাংলাদেশের আরেকটা বড় দুর্বলতা সাংবিধানিক। আমেরিকাতে ক্ষমতা তিন ভাগে বিভক্ত-সেনেট, কংগ্রেস এবং প্রেসিডেন্ট। ভারতে ক্ষমতার দুটো ধাপ-লোকসভা এবং রাজ্যসভা। লোকসভার মেয়াদ শেষ হলে, রাজ্যসভার হাতে এক্সিকিউটভ ক্ষমতা থাকে। বাংলাদেশে ক্ষমতার বিভাজন নেই বা যা আছে দুর্বল। ফলে প্রধানমন্ত্রীর হাতে অত্যাধিক বেশী ক্ষমতা অর্পন করা হয়েছে। ক্ষমতার দুটী বা তিনটি স্তর থাকা উচিত-যাতে একটি ক্ষমতার কেন্দ্র বিদায় নিলে, অন্যটির হাতে ক্ষমতা থাকে। বাংলাদেশে শুধু লোয়ার হাউস আছে-আপার হাউস নেই। এটা না থাকা ক্ষতিকর। বিশেষত এই ইলেকশনের সময়ে।
এছারা রাজনৈতিক সংস্কার ও দরকার। বাংলাদেশের দুটিদলই চলে পরিবারের আইনে। ভারতে কংগ্রেস এইভাবে চলে। দলের মধ্যে কোন আভ্যন্তরীন নির্বাচন হয় না। ফলে কোন ভাল রাজনীতিবিদও ঊঠে আসে না।
তাহলে সমাধান কি?
আমি মনে করি-সমাধান নাগরিক সমাজ। সমাধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মতন আম আদমি বা সাধারন মানুষের পার্টির উত্থান হোক বাংলাদেশে যারা এই দুই পার্টির সাঁড়াশি থেকে বাংলাদেশকে উদ্ধার করবে। অধিকাংশ মানুষ যখন দুই পার্টির পারিবারিক শাসনে বীতশ্রদ্ধ, তখন দরকার তৃতীয় বিকল্প। বাংলাদেশের মাটি আম আদমি পার্টির মতন এক তৃতীয় শক্তির উত্থানের জন্য প্রস্তত। দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাদের ভোটদান এটাই প্রমান করে, তারা সুস্থ জীবন চাইছেন। তাদের ভারত, পাকিস্তান ইসলাম ইত্যাদি জুজু দেখিয়ে ভোলানো কঠিন। আম আদমি পার্টির মতন দুর্নীতি বিরোধি, সাধারন মানুষের সমস্যাগুলি নিয়ে কোন রাজনীতির উত্থান হলে উড়ে যাবে বি এন পি এবং আওয়ামী লীগ। যেভাবে দিল্লীর রাজনীতিতে সাফ হচ্ছে কংগ্রেস। সেই সাধারনের পার্টির ভিত্তি বাংলাদেশে মজবুত। সময় শুধু অপেক্ষার কিভাবে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মতন একজন উঠে আসবে নতুন রাজনীতি নিয়ে।
বিপ্লব পালঃ
আপনাকে ধন্যবাদ বাংলাদেশ নিয়ে লেখার জন্যে। বাংলাদেশে দুটি দল চলছে অনেকটা মাফিয়া স্টাইলে। কোন দলে গনতন্ত্র নেই, নেত্রির বিপরিতে গেলেই বিপদ, হয় বহিস্কার নয়ত গুরুত্ব হীন হয়ে যাওয়া। দলে যেহেতু গনতন্ত্র নেই, বাংলাদেশে তাই চলছে স্বৈরতান্ত্রিক গনতন্ত্র । তৃতীয় কোন দলের ও এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা বর্তমানে কম।
একটি দেশে সুশাসন নির্ভর করে সে দেশটিতে শক্তিশালী গনতন্ত্র আছে কিনা।আর সেই গনতন্ত্র নির্ভর করে দেশটি অসাম্প্রদায়িক এবং জঙ্গীবাদ মুক্ত কিনা। তাছাড়া যেহেতু মুক্তিযুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে তাই মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের উপর দেশটাকে দাড়াতে হবে। বতর্মান সরকার যখন দেশটাকে অসাম্প্রদায়িক,জঙ্গীবাদ মুক্ত করার চেষ্টা করছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছে এবং দেশটাকে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের উপর দাড় করানোর চেষ্টা করছে তখন সাম্প্রদায়িক অপশক্তি ও তাদের দোসররা সরকার ও মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী সমস্ত দল ও মতের মানুষ কে নাস্তিক বলে অপবাদ দিচ্ছে। এমনকি গনজাগরন মঞ্চের আন্দোলনের সময় এইসব হেফাজত,জামাত রাজাকারদের সাথে বিম্পিকেও বলতে শুনলাম গনজাগরন মঞ্চ নাস্তিক। ধর্মের নাম ভাঙিয়ে মতলব বাজী স্বার্থে এই নাস্তিক্যবাদ প্রচার করা হয়। জঙ্গীবাদ,নাস্তিকতত্ব. যুদ্ধাপরাধ সংঙ্ক্রানত বিষয় গুলি সাথে রেখে শক্তিশালী গনতন্ত্র আসবে না। আর শক্তিশালী গনতন্ত্র না আসলে সুশাসন আসবে না। এদেশে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনা বাচলে অবশ্যই গনতন্ত্র বাচবে এবং রাষ্ট্রীয় কাঠামোগুলো ঠিকমতো কাজ করবে।
ইনফাক্ট মুক্তমনাতে আমার সবচেয়ে ব্য র্থ্ লেখারগুলির মধ্যে এটি থাকবে।
আমি বোঝাতে সত্যই ব্য র্থ যে খালেদা জিয়া আর হাসিনার এই দ্বন্দ জাস্ট একটা গট আপ গেম। যেখানে দরকার ছিল বাংলাদেশের জনগনের একত্রিত হয়ে, হাসিনা এবং খালেদার বিরুদ্ধে একজোট হয়ে সংবিধানের সংস্কার করা- সেটা না করে বাংলাদেশের জনগন দুটি পার্টিতে বিভক্ত। যাতে লাভ হাসিনা এবং খালেদার।
এটা কেন কেও ভাবতে পারছে না- যদি খালেদা এবং হাসিনা এই তদাররিক সরকারের সমস্যার সমাধান করতে চাইত- তাহলে সব থেকে বেশী এফেক্টিভ হচ্ছে বাংলাদেশের সংবিধান সংস্কার। পৃথিবীর সব সফল গণতন্ত্রেই ক্ষমতার একাধিক কেন্দ্র থাকে। সেটাই গনতন্ত্রের প্রথম রক্ষাকবচ। এটাত পৃথিবীর প্রথম গণতন্ত্র এথেন্সেও লোকে জানত। খালেদা এবং হাসিনা এই সমস্যার সমাধান চাইলে, প্রথমেই বাংলাদেশের সংবিধান পরিবর্তন করে ক্ষমতার বিভাজনের দিকে হাঁটতেন। যারফল হত আরো কম ক্ষমতাশীল প্রধান মন্ত্রী-এবং আরো শক্তিশালী প্রেসিডেন্ট, প্রধান বিচারপতি এবং স্বয়ত্বশাসিত জেলা পরিশদ।
কিন্ত এই দুই নেত্রী করবেন না। তারা গটাআপ গেম খেলছেন। কারন ক্ষমতার বিভাজন হলে তৃতীয় শক্তি আসার পথ সুগম হবে। এটা তাদের জন্য লোকসান।
ক্ষমতার বিভাজন না হলে, গ্রহণযোগ্য তৃতীয় শক্তি আসবে কোথা থেকে?
@বিপ্লব পাল,
আমি প্রথম রাতেই দীর্ঘ একটি মন্তব্য লিখেছিলাম, আলসেমী করে মন্তব্য আগে ওয়ার্ডে লিখি না, তার ফল পেতে হল আবারো, আধা ঘন্টার টাইপিং এফোর্ট হঠাত নিমেষেই উধাও।
আমি আপনার এই লেখা এবং অন্যদের মন্তব্যের পরিপেক্ষিতে একটি লেখা দেব কাল পরশুর মধ্যে।
@বিপ্লব পাল,
কোন লেখা বেশী বিতর্ক সৃষ্ট করলে তা ব্যর্থ হয়ে যায়- এই ধারনা ঠিক না। আমি বলবো- এই লেখাটা বিতর্কিত এবং এর যথেষ্ঠ উপযোগীতা রয়েছে। এই লেখাটার মূল উদ্দেশ্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় সেটাকে চিহ্নিত করে একটা সঠিক রাজনৈতিক দিক নির্দেশনা দেবার চেষ্টা। বিতর্কিত লেখার ধাক্কা সবাই সহ্য করতে পারে না, যেমন আমি। অনেকদিন আগে আমার একটা লেখার বিতর্ক প্রায় ব্যক্তি আক্রমনে রুপ নেবার ফলশ্রুতিতে তা আমি তুলে নেই। তবে দেখে যা মনে হচ্ছে আপনাকে এখনও কেউ ব্যক্তি আক্রমন করে নাই। তবে রাজনিতির হাতাহাতি বঙ্গদেশে যে রূপ নিচ্ছে তাতে ভরসা করা যায় না। তবে আমার মনে হয় আমাদের গন দৃষ্টি প্রতিবন্ধিত্ব নিয়ে আর যাই হোক কেজরিওয়াল থেকে আমাদের শিক্ষা নেবার কোন সুযোগ নেই।
@শাখা নির্ভানা,
না। সে জন্যে নয়। ব্যক্তিগত আক্রমন করা মানে ত লেখাটা বিঁধেছে তাই সফল লেখা। সেসব কিছু না। বাংলাদেশের মূল সমস্যা সংবিধানে। সেখানে ক্ষমতার বিভাজন নেই। সেটা না শুধরালে, হাজার রামায়নের পরেও লোকে সীতাকে রামের মাসী বলে ডাকবে। গঠনতান্ত্রিক দুর্বলতা নিয়ে কেও মাথা ঘামাতে রাজী না। আমি এই জায়গাতে বোঝাতে ব্য্ররথ হয়েছি।
বিপ্লব’দা,
বাংলাদেশের পরিস্থিতি শুধু পাখির চোখে দেখে বোঝা যাবে না। আপনি যে সমস্ত কনস্টিটিউশনাল সিস্টেমের কথা বলছেন, তা প্রয়োগ করতে গেলে সবার আগে এদেশের রাজনৈতিক সিস্টেম পরিপর্তন করতে হবে। কিন্তু বর্তমানের শক্তিশালী দলগুলোর অন্তত বর্তমান নেতৃত্ব বর্তমান থাকা অবস্থায় তা নিতান্তই অসম্ভব।
আপনি যে “আম আদমি” টাইপ তৃতীয় শক্তির কথা বলছেন দেশের বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে তাও অসম্ভব। আওয়ামী লিগ বা বিএনপি ছাড়া এদেশে দল বলতে আছে জামাতে ইসলামী (এদের সম্পর্কে একটাই কথা বলার আছে, এরা নতুন প্রজন্মকে শেখায়, ৭১ সালের যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমীক বাঙ্গালী ও বিহারীদের পরাজয়ের ইতিহাস), জাতীয় পার্টি (এরা যত দ্রুত পক্ষ বদল করে, তত দ্রুত কোন প্লেবয় সঙ্গিনীও বদল করে না এবং মাঝখানের সময়টুকু সাপ ব্যাঙ দুইয়ের মুখেই চুমু খায়), কয়েকটি নামসর্বস্ব বামদল দেশের জাতীয় জীবনে যাদের কোন ভূমিকা কখনোই ছিলো না এবং কয়েকটি এককব্যক্তি নির্ভর দল। দেশের যারা আম আদমি, তারা রাজনীতির দায়ভার এদের হাতেই ন্যস্ত করে রেখেছে, তারা কখনোই রাজনীতিতে সক্রিয় হবে না। উপরোক্ত দলগুলোর হাতে দেশের ক্ষমতা দুঃস্বপ্নেও ভাবা যায় না।
দেশের ব্যবসায়ী সমাজ, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও সংবাদকর্মীবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসমাজ, লেখক ও প্রাবন্ধিকের সরাসরি এ দল এবং বি পার্টিতে বিভক্ত। আর আছেন ব্যানার ধারী সচেতন নাগরিক সমাজ তথা সাসপেন্ডার লাগানো প্যান্ট পরা টাকা কামাতে কামাতে হয়রান হওয়া কতিপয় ব্যক্তি যারা হয়তো রজনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারতেন। কিন্তু তারা হয় এটা চিন্তা করেন যে কোন পার্টি ক্ষমতায় আসলে ক্ষমতার রান চিবুনো যাবে, নয়তো বিদেশী কানেকশন থেকে জেনে নেন পশ্চিমারা এবার কাকে সমর্থন দিচ্ছে। তারপর সেদিকে পাল তোলেন।
তাহলে আবার এসে পড়া গেলো আওয়ামী লীগ নয়তো বিএনপি। যে যায় লংকায় সেই হয় রাবণ। সুতরাং কে কত বেশী দূর্নীতিবাজ তা নিয়ে আওয়াজ তুলে লাভ নেই। দেখা যাক চারিত্রিক বৈশিষ্টঃ
* আওয়ামী লীগ প্রোইন্ডিয়ান কিনা তা তর্কসাপেক্ষ, তবে মুক্তিযুদ্ধবাদী দল এবং বোধহয় দেশের একমাত্র মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ রাজনৈতিক ব্যানার যা প্রশ্নবিদ্ধ নয়। এই দলের বড় নেতারা পোড় খাওয়া। তাঁরা প্রায় সবাই বলিষ্ঠ ছাত্রনেতা ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের আগে এবং ৯০-এর দশকে। এনারা হাতে কলমে রাজনীতি শিখে নেতা হয়েছেন। এনারা আগে নেতা পরে পেশাজীবী।
* এই দল যে প্রোপাকিস্তানী তা তর্কাতীত ব্যাপার। দলের উপরের সারির অধিকাংশ নেতাই সাবেক আমলা, সেনা কর্মকর্তা নয়তো ডাক্তার/উকিল যারা জিয়াউর রহমানের “আই উইল মেক পলিটিক্স ডিফিকাল্ট ফর পলিটিশিয়ান” থিওরীর সুযোগে দ্রুত টাকা কামানোর ধান্দায় নেতা হয়েছেন। এদলেও কিছু সাবেক মুক্তিযোদ্ধা আছেন যাঁরা টাকার কাছে নীতি বিসর্জন দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ সব জেনে বুঝে আমাদের বিকল্পহীনতার সুযোগ নিচ্ছে। কিন্তু বিকল্প তো আমাদের সত্যিই নেই। বিএনপি রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের চরমে পৌঁছে এখন জামাতে ইসলামীর সেকেন্ড উইং। আওয়ামী লীগ বা হাসিনাকে পছন্দ করি বা না করি, সচেতন মানুষ হয়ে বিএনপি’কে এ মূহুর্তে ক্ষমাতায় আনার কথা আমরা ভাবতেও পারি না।
@এনালিস্ট,
নেতা পথে ঘাঁটে সবার সামনে পায়খানা করলে কিংবা যৌনাচার করলেও চামচারা ওটার একটা পজিটিভ ব্যাখ্যা বের করার চেষ্টা করে। গ্লাস অর্ধেক ভর্তি কিংবা ফাঁকার মত। বর্তমানে আওয়ামী লীগের পুনঃ বাকশালী রূপান্তরের ব্যাখ্যা খোঁজার চেষ্টায় রত এর অন্ধ চামচিকা, টাকা পয়সা পাওনা ওয়ালা এবং সুবিধা পাওয়া বুদ্ধি-বেশ্যারা…… এখন একজনের নাম মনে পরছে – ইকবাল সোবহান চৌধুরী।
@এনালিস্ট,
ঠিক বলেছেন। (Y)
যুদ্ধাপরাধ, নাস্তিকতা, ভারত প্রীতি, পাকিস্তান প্রীতি, জাতিয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা এগুলো একটা জাতির জন্যে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। আমার কথা হলো এই ইস্যুগুলোর প্রকৃতি, সমাধান, বিশ্লেষন বিষয়ে বাংলাদেশের জনসংখ্যার মোট কত অংশ অভিহিত এবং মিমাংশাকামী। আর কত অংশ সামাজিক নিরাপত্তা, স্থিতিশীল বাজার, কর্ম সংস্থান, নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থা, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ, কার্যকর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, সুশাসন সহ সব মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা প্রত্যাশী। গনতন্ত্র যদি সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন হয়, তবে এই হিসাবটা খুবই জরুরী। আমার মনে হয় বৃহত্তর জনগোষ্ঠি সুশাসনের প্রয়োজনকে সামনে রেখে ভোট দেয়। প্রয়োজন হচ্ছে সুশাসনের ভিতর দিয়ে বৃহত্তর জনগোষ্ঠিকে ঐসব ধ্রুপদি ইস্যুর দিকে নিয়ে যাওয়া। এই সুশসন না পেয়েই সাধারন ভোটাররা বার বার ঘুরে ফিরে দুটো দলকে ক্ষমতায় আনে। যেহেতু সার্ব্জনিন এবং সর্বজন গ্রাহ্য কোন দলের উদয় হচ্ছে না তাই পুরান চোর ডাকাত দিয়েই কাজ পাবার চেষ্টা করছে মানুষ। যারা সুশাসন দিতে পারে না তারা যখন নাস্তিকতা, যুদ্ধাপরাধ ইত্যাদি ধ্রুপদী ইস্যু নিয়ে সোচ্চার হয়, তখন বুঝতে হবে তাদের অন্য মতলব আছে। বাংলাদেশে ক্ষমতার স্বাদ পাওয়া সব রাজনৈতিক দলই চরম মতলববাজ, যারা ঘুরে ফিরে বারবার ক্ষমতায় আসে। নতুন রাজনৈতিক মতাদর্শের কোন দল বা দল সমুহ প্রতিষ্ঠিত হতে না পারলে এই মতলব বাজদের আগমন বারবার ঘটতে থাকবে। একটা মানুষের পেটের ভাত আগে নাকি নাস্তিকতা বিতর্ক আগে- এই সামান্য কমন সেন্সটুকুর প্রতিফলন যেখানে কোন রাজনৈতিক দলের কাজ কামে খুজে পাওয়া যায় না, সেখানে যুদ্ধাপরাধ সহ আরো ক্লাসিক ইস্যুগুলো তাদের দ্বারা চরিতার্থ করা অসম্ভব। যুদ্ধাপরাধের মিমাংসা অবশ্যই হওয়া দরকার, তবে তার সঙ্গে সঙ্গে সুশাসন বা সুশাসনের নিশ্চিত অঙ্গিকার থাকতে হবে। মানুষকে সাধারন বিচার দেওয়া শিখতে হবে, সাথে সাথে যুদ্ধাপরাধের মতন বড় বিচারে হাত দিতে হবে। এখানে কোন আগে পরে নেই- যুগপত করতে হয় এই দুটো কাজ।
@রোশান আরা,
যাক তোমার মতন নাগরিক বাংলাদেশে আছে দেখে আস্বস্ত হলাম।
বাংলাদেশের অনেক গুনী প্রবাসী নাগরিক এই সহজ সত্যটি বুঝতে চায় না।
প্রভাবিত। এজন্যে কালকেও খালেদা পল্টনে যেতে না পেরে সিকিমের উদাহরণ দিয়েছেন। আর কাদের মোল্লার ফাঁসির রায়ে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়ায় হাসিনা স্বস্তিতে আছেন । দুইজনই জনগনের পাকিস্তান বা ভারতের দালাল তত্ত্বকে কাজে লাগাতে চান।
একক সংখ্যাগরিষ্ঠ না হলেও জামাত গত বিএনপি সরকারে ছিল। গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রনালয়েরও দায়িত্বে ছিল জামাত নেতারা। ইসলামের পথেই ভাল থাকবে তা মাদ্রাসার এতিম ছাত্ররা ছাড়া কেউ বিশ্বাস করে না বাংলাদেশে।
দ্বিমত। এত ছোট একটা রাষ্ট্রে এত স্তরের ক্ষমতার প্রয়োজন নেই। আর আমাদের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাই তো শক্তিশালী হয় না জাতীয় সংসদের নেতাদের ক্ষমতার দাপট আর লোভের কারণে। তারা আইন পরিষদের সদস্য হয়েও স্থানীয় টিউবওয়েলএর মাতবরিও ছাড়তে চায় না। প্রয়োজন রাজনৈতিক নেতাদের, বিচারকদের ও আমলাদের চরিত্র বদলানো। ভারতে নির্বাচন কমিশন আর আমাদের নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে পাথর্ক্য দেখলেই বুঝা যায়।
প্রস্তুত শুধু সুশীল সমাজ। ১/১১ এর পর দুই নেত্রীকে জেলে ঢুকানো, মাইনাস ২ ফর্মূলা কাজে দেয়নি। বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে এত সহজ সরলীকরণ সম্ভব নয়।
যাহোক, দ্বিমত করতে করতে আরেকটা লেখা হয়ে যাবে বলে ক্ষান্ত দিচ্ছি।
@গীতা দাস,
গীতাদি, এখানে একটু দ্বিমত করতে হচ্ছে। আসলেই কি কওমি মাদ্রাসার এতিম ছাত্ররা ছাড়া কেউ বিশ্বাস করেনা যে ইসলামের পথেই ভাল থাকবে তারা? মিশরের কথা জানিনা, তবে আমাদের দেশে দেখেন, শরিয়া হচ্ছে না এ নিয়ে কিন্তু বাংলাদেশের শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সমাজেই হাহুতাশ কম নেই, যদিও তারা জানেনা যে শরিয়া হলে তারা নিজেরাই মানতে পারবে না। গনতন্ত্র ইসলামে হারাম আর তাই বিকল্প হিসাবে তথাকথিত ইসলামী গণতন্ত্রের সমর্থকও কিন্তু নেহায়েত কম নেই এই দেশে, তাই না? 🙂 ।
আপনার মন্তব্যের বাকি অংশের সাথে আমি একমত পুরোপুরি।
@গীতা দাস,
খুব ভুল ধারনা। রাষ্ট্র বা ইন্সটিউট ছোট হলেও, ক্ষমতা বিভাজনই গণতন্ত্রের একমাত্র রক্ষাকবচ।
(১) আফ্রিকার সব কটি রাষ্ট্রএ গণতন্ত্র এসেও একনায়ক তন্ত্রে হারাচ্ছে-কারন সেই এক- প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্টের হাতে থাকছে সব ক্ষমতা।
(২) আমেরিকাতে প্রতিটা রাজ্যে ক্ষমতার তিনটে স্তর-ভারতে প্রতিটা রাজ্যে দুটী স্তর-যদিও রাজ্যের দ্বিতীয় স্তরটি ব্যবহৃত হয় না এবং সেই জন্যে ভারতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা অনেকেই স্বৈরাচারী হন। বাংলাদেশ কি ভারত বা আমেরিকার রাজ্যগুলোর থেকে ছোট।
সুতরাং বাংলাদেশের সংবিধান সংশোধন করে, প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে ক্ষমতা না কাড়লে, এই ক্যাঁচাল চলতেই থাকবে।
বি এন পি বা আলীগ কি করেছে, সেটা আপনারাই ভাল বোঝেন। আমার লেখার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের রাজনীতির কাঠামো গত দুর্বলতা বোঝা। আলোচনাটা সেই দিকে না গিয়ে, আবার সেই আলীগ বনাম বি এন পিতে ঠেকছে। যাতে লাভ হবে না।
আমার কেমন যেন মনে হচ্ছে যারা আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করে লিখছেন, তারা ভয়ে ভয়ে লিখছেন। এটা ত গণতন্ত্রের লক্ষণ না।
বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন না হলে – একটা ক্ল্যাসিক সিভিলিয়ান ডিক্টেটরশিপের দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশ…… বর্তমান বেলারুশ, জিম্বাবুয়ে কিংবা এক সময়ের ফিলিপাইনের মত…
@সংবাদিকা,
এটা মনে হয় মানানসই হতে যাচ্ছে কি বলেন?প্রায় সব মুসলিম দেশেই গণতন্ত্র প্রায় অনুপস্থিত বলা চলে। সেখানে বাংলাদেশই বা বাদ থাকবে কেন 🙁
@অর্ফিউস,
মন্ত্যব্য করার আগে একটু নেট ঘাঁটাঘাঁটি কইরেন…… লাইব্রেরীতে যেয়ে তো আর কষ্ট করতে হয়না এখন…
@সংবাদিকা,
ঐ হলরে ভাই, দেশগুলিতে তো বেশিরভাগ সময় গণতন্ত্র বলে কিছু থাকে না। ইরান অবশ্য খানিকটা আলাদা, তবে ওইটা গনতন্ত্র নাকি খোমেনীতন্ত্র সন্দেহ আছে। নামে অবশ্যই গনতন্ত্র, স্বভাবে রাজতন্ত্র, যেমন বাংলাদেশে।
দাদা,
আপনার লেখার অনেক কিছুই ভালো লেগেছে তবে কিছু কিছু জায়গায় দ্বিমত পোষণ করছি-
১) বাংলাদেশি বেশিরভাগ ভোটাররা হাঁদারাম বললে ভুল হবে না। এরা মার্কা দেখে ভোট দেয়, প্রার্থী দেখে নয়। বিষয়টা এমন যে গতবার অমুক দল আমাদের রক্ত খেয়েছে এবার এই দলকে খেতে দেই। আবার কিছু আছে প্রেমিক ভোটার, যারা আওয়ামী বা বিএনপি এর কঠোর ও একনিষ্ঠ প্রেমিক। তাদের চোখে কোন মন্দ ধরা পরে না। শুধু ভালো আর ভালো। তারা সেই যে দাদার আমল থেকে একটা মার্কা ধরেছে আর কোনদিন সেই মার্কা থেকে সরবে না। এরাই ভণ্ড নেতাদের ভণ্ডামির প্রেরণার উৎস কারন নেতারা জানে আমি যাই করি না কেন ওরা আমাকেই ভোট দেবে। এবার একটা বাস্তব উদাহরণ দেইঃ বরিশালের গতবার নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী হিরণ নির্বাচিত হয়ে বরিশাল শহরের ব্যাপক উন্নয়ন করেছে কিন্তু কিছুদিন আগে সিটি নির্বাচনে হিরণ হেরেছে, জয় লাভ করেছে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী। অথচ এখনো সবাই হিরণকে প্রশংসা করে তবুও তারা তাকে ভোট দেয়নি। এই হল এই দেশের ভোটার। অথচ তারা যদি হিরণ কে ভোট দিত তাহলে নেতাদের মাঝে কাজ করার প্রবণতা বাড়ত।
২) জামাত এর যদি পাকি প্রেম নাই থাকে তাহলে পাকিস্তানের পার্লামেন্ট তাদের কেন এত ভালবাসে? কোন স্বার্থে প্রকাশ্যে গাধার মতন শোক প্রকাশ করে ও ধিক্কার জানায় আমাদের?
তবে আপনার অন্যান্য বিষয় গুলোর সাথে আমিও একমত। বাংলাদেশে কাঠামোগত দুর্বলতা আছে, দলতন্ত্র চলছে, উত্তরাধিকার সূত্রে নেতা আসে, ধর্মের মুলা এখনো অনেক দামি ও জনপ্রিয় খাবার ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে যেকোন সমস্যা মাত্রারিক্ত অবস্থায় পৌঁছালে তার একটা সমাধান চলে আসে। আমার মনে হয় বাংলাদেশ সেই পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।
সব মিলিয়ে লেখাটা ভালো লেগেছে তাই ফেবুতে শেয়ার করলাম।
আপনি কি এই দেশের নাগরিক সমাজের কথা বলছেন? যে দেশে শুধু চায়ের দোকানগুলোতে গণতত্র হুমড়ি খেয়ে পড়ে, রাস্তায় কিংবা পাশে বসা যাত্রীদের মাঝেই গণতন্ত্র সাধন চলে?
তৃতীয় শক্তির উত্থাপন অবশ্যই জরুরী। কিন্তু দাদা, বিড়ালের গলায় ঘন্টা কে বাঁধবে?
আপনি যখন নিয়ম-আর অনিয়মের যুক্তি-তর্কে কাউকে আটকে দেবেন, তখন তাদের মুখ থেকে একটি কথাই বের হবে-
অথচ, তারা এটা কিছুতেই বুঝতে চাননা, রাজনীতি আর পেটনীতি একই সুঁতায় গাঁথা মালা? আর তার থেকেও বড় সমস্যা, পরিবারতন্ত্র আমাদের এমনভাবেই গ্রাস করেছে যে, আমরা আমাদের মস্তিষ্ককে এর বাইরে চালাইতেই চাইনা। অথচ, নষ্ট এই পরিবারতন্ত্র নিয়ে রাত-দিন আমরা আমাদের মেধাগুলিকে অপচয় করে থাকি।
লেখাটা ভালো লাগলো । ধন্যবাদ।
বিপ্লব দা,
এবার সর্বদলীয় নির্বাচন হলে কি তাহলে বি এন পি কে ভোট দেয়া হত? তারপরের বার অবশ্যই আওয়ামী লীগ কে? তাহলে আর এত খরচ করে নির্বাচনের দরকার কি? একবার লীগ একবার বি এন পি এইভাবে চুক্তি ভিত্তিক ক্ষমতা দেয়া যেতে পারে ( যেহেতু সবাই প্রতিশ্রুতি দেবে এবং সেগুলো পূরনে সম্পূর্ন ব্যার্থ হবে!)।
এখানে একবার ঢুঁ মারবেন দয়া করে। ভারত ১৩৬ আর বাংলাদেশ আছে ১৪৬ নম্বরে। অবশ্য ভারতের দুই ধাপ অবনমন হয়েছে, আর বাংলাদেশের টা স্থির আছে গতবারের তুলনায়, আর আপনি যদি এর ভিত্তিতে বলে থাকেন, তবে সেটা আলাদা কথা।
বাংলাদেশের সাধারন মানুষ ভোট দেওয়ার সময় শুধু এটুকু চিন্তা করে, কোন দলকে পরপর দুইবার ক্ষমতায় বসানো যাবে না। এরা কখনোই পরিনত ভোটার না। এই টাৰ্মে আওয়ামী লীগ গত বিএনপি আমলের তুলনায় অনেক বেশী উন্নয়নমূলক কাজ করেছে(যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কথা বাদই দিলাম ! ) কিন্তু তারা ৫ সিটি কৰ্পোরেশন নিৰ্বাচনে জনগনের অপরিনত সিদ্ধান্তের কারনে পরাজিত হয়েছে। বৰ্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে বড় প্রভাবক হল ৰ্ধম। হেফাজতের সমাবেশে হাজার হাজার মৃতের ভুয়া খবর ছড়িয়ে খুব সহজেই এদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করা যায়। নীচে শেষ দুই আমলের কিছু তুলনা দিলাম :
খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতি:
বি,এন,পি ২০০৬ = ৩০ লক্ষ মেট্রিক টন খাদ্য (ঘাটতি)।
আওয়ামীলীগ ২০১৩ = ২৩ লক্ষ মেট্রিক টন খাদ্য ( উদ্বৃত)।
সাস্থ্য সেবা:
বি,এন,পি ২০০৬ = অসম্মতি।
আওয়ামীলীগ ২০১৩ = ১৫ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্টা।
সর্বোচ্চ বিদ্যুত উৎপাদন ক্ষমতা:
বি,এন,পি ২০০৬ = ৩১০০ মেগাওয়াট।
আওয়ামীলীগ ২০১৩ = ১০০০০ মেগাওয়াট।
সমুদ্র সীমা জয়:
বি,এন,পি ২০০৬ = নিস্ক্রিয়।
আওয়ামীলীগ২০১৩ = ১১১৬৩১ বর্গ কি. মি.।
হাসপাতালের সংখ্যা:
বি,এন,পি ২০০৬ = ১৬৮৩ টি।
আওয়ামীলীগ ২০১৩ = ২৫০১ টি।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ:
বি,এন,পি ২০০৬ = ৩.৮৮ বিলিয়ন র্মাকিন ডলার।
আওয়ামীলীগ২০১৩ = ১৬ বিলিয়ন র্মাকিন ডলার।
স্বাক্ষরতার হার:
বি,এন,পি২০০৬ = ৫১.৯০%
আওয়ামীলীগ ২০১৩ = ৬৫.০৪%
মাথাপিছু গড় আয়:
বি,এন,পি ২০০৬ = ৪২৭ র্মাকিন ডলার
আওয়ামীলীগ ২০১৩ = ৯১৪ র্মাকিন ডলার
রেমিটেন্স প্রবাহ:
বি,এন,পি ২০০৬ = ১৩ বিলিয়ন র্মাকিন ডলার
আওয়ামীলীগ ২০১৩ = ৪৮ বিলিয়ন র্মাকিন ডলার
দারিদ্র হার:
বি,এন,পি ২০০৬ = ৪১.৫১%
আওয়ামীলীগ ২০১৩ = ২৯.০৩%
কর্মসংস্থান:
বি,এন,পি ২০০৬ = ২৪ লক্ষ
আওয়ামীলীগ ২০১৩ = ৭৫ লক্ষ
বৈদেশিক বিনিয়োগ:
বি,এন,পি ২০০৬ = ১৮৭ কোটি র্মাকিন ডলার
আওয়ামীলীগ ২০১৩ = ৩৮২ কোটি র্মাকিন ডলার।
ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) এর ‘গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট-২০১৩’ এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৩৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৭৫তম, ভারত ১০১তম এবং পাকিস্তান ১৩৫তম অবস্থান রয়েছে। লিংক: এখানে।
আওয়ামী লীগের আরো কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়নমূলক কাজ নিন্মরূপ :
১.হাতিরঝিল প্রকল্প। ২.মিরপুর-এয়ারপোর্ট ফ্লাইওভার। ৩.বনানীর ফ্লাইওভার। ৪.কুড়িল ফ্লাইওভার।৫.যাত্রাবাড়ি-গুলিস্তান ফ্লাইওভার।
এটা ভুল ধারনা। আপনি হয়তঃ জামাতকে বাংলাদেশের অন্যান্য ইসলামী দলের মত ভাবছেন। অন্যান্য ইসলামী রাজনৈতিক দলের সাথে জামায়াতে ইসলামী প্রধান পাৰ্থক্য হল এরা সরাসরি এইদেশের স্বাধীনতার বিরোধীতাকারী । জামায়াতে ইসলামী কখনোই মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামীলীগের ভাষাতে কথা বলতে পারে না।
@তারিক,
পুরাপুরি একমত। কোনই দ্বিমত নেই। বিপ্লব দা যে কেন বাংলাদেশী ভোটার দের এত সাফাই গাইলেন বুঝিনি আমিও ।
@তারিক,ভাইয়া একটু কষ্ট করে ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের শেষ বছর আর ২০০৬ সালে বিএনপি আমলের শেষ বছরের তুলনাগুলো দেখবেন। দেখবেন একই রকম আকাশ পাতাল পার্থক্য। তাহলে উন্নয়নের জোয়ার তোলা ২০০২-০৬ সালের বিএনপি কে ২০০৮ এ ৩০ সীট দিয়ে হারানোর জন্যে জনগনের কি মতলব ছিলো?
দেশ এগিয়ে যাচ্ছে নিজে থেকেই। আমার উপরের চার্ট টা খেয়াল করবেন। আর এখন আওয়ামী সরকারের কোলে বসে সবখানে আওয়ামী প্রোপাগান্ডা দেখছেন তো, হাসিনার হাত থেকে রাজদন্ড সরে যাওয়ার পঐ দেখবেন আওয়ামী থলে থেকে কি কি বের হওয়া শুরু হয়।
@সফিক ভাই,
৭৫ এর ট্র্যাজেডির ২১বছর পরে প্রথমবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে, সেই আমলে লীগের ভুলত্রুটি থাকবেই এবং প্রচুর ছিল।
কিন্তু প্রশ্ন হল: ২০০১ সালের তুলনা করতে হলে, ১৯৯৫ সালের সাথে তুলনা করাই কি উচিৎ না?
শিক্ষা, সাস্থ্যসেবা কিংবা অবকাঠামোগত উন্নয়ন কি নিজে থেকেই হচ্ছে ??
@তারিক, Bangladesh is on track to meet the 2015 deadline for U.N. Millennium Development Goal 5 (50 percent reduction in maternal deaths). The Bangladesh Maternal Mortality and Health Service Survey [PDF] jointly funded by the Government of Bangladesh, USAID, Australian Aid (AusAID) and the United Nations Population Fund (UNFPA) found that maternal deaths in Bangladesh fell from 322 per 100,000 in 2001 to 194 in 2010, a 40 percent decline in 9 years.
http://blog.usaid.gov/2011/03/bangladesh-maternal-deaths-decline-by-40-percent-in-less-than-10-years/
২০১১ এর সংবাদ এটা। ২০০০ থেকে ২০১০ কোন সরকার ক্ষমতায় বেশীদিন ছিলো।
দেখুন তো এই HDI Chart টিতে খালেদা হাসিনাকে আলাদা করতে পারেন কি না?
[img]http://4.bp.blogspot.com/-fwkUrX2UOtY/UEK_3Sw83uI/AAAAAAAAAO0/npLyNmq3lJs/s1600/ScreenHunter_77+Sep.+01+22.08.jpg[/img]
@সফিক ভাই,
With USAID and international support, under-five mortality rates have declined by more than 50 percent in Bangladesh since 1990.
২০২১/২২ সালে “USAID” এই বিষয়ে আবার কি রিৰ্পোট প্রকাশ করবে ? করলে আগামী রিৰ্পোটটি দেখার অপেক্ষায় থাকলাম !
@তারিক,
অর্থাৎ সেই জন্যে আলীগের একনায়কতন্ত্র সঠিক? পৃথিবীতে ভোটাররা তখনই এই ভাবে ভোট দেয় যখন তারা দুই পার্টির একটিকে নিয়েও সন্তুষ্ট না। ভারতের তামিলনাডুতে এই ভাবে ভোট দেয় লোকে। এবং এটা জানা মত যে লোকেরা দুটি পার্টি-এই দি এম কে এবং ডি এম কে নিয়ে খুশী না।
বিপ্লব দা শুনেন, আপনি তারিক ভাইকে মন্তব্যটা করেছেন, তবু বাংলাদেশের একজন হতাশ নাগরিক হিসাবে আমার কিছু বলার ছিল।
আওয়ামী একনায়কতন্ত্র কিনা জানি না, কারন আওয়ামী লীগ যে সর্ব দলীয় সরকারের প্রস্তাব করেছিল সেটা এমন খারাপ কিছু ছিল না। বি এন পির প্রধান অ্যালার্জী ছিল শেখ হাসিনা কে এই সর্বদলীয় সরকারের প্রধান হিসাবে মানবে না। এটাকে কি একনায়ক তন্ত্র বলা ঠিক হবে? যেখানে আপনার দেশেও তত্বাবধায়ক সরকার বলে কিছু নেই?
বাংলাদেশ আর ভারত এক নয় মানি এটা, তবে এখানে বি এন পি ও কিন্তু তাল্গাছের দাবী ছাড়ছে না। আর তত্বাবধায়ককে যেখানে আদালত অবৈধ করেছে, সেখানে তাত্বিকভাবে কিন্তু আওয়ামী লীগ ভুল পথে নেই।
তবে গনতন্ত্রে সব দলের অংশগ্রহন কাম্য। কিন্তু তার মানে এই নয় যে ক্ষমতাসীন দল বলে এবং লীগ বলে সব ক্ষেত্রে ছাড় দিতে হবে তাদেরকেই।
যাক আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী ( লীগের পক্ষে যেসব কথা বললাম সব ভুলে যান) তবু শুধুমাত্র রাজাকার দের ঝুলানোর জন্যে হলেও চাই যে অনৈতিক ভাবে হলেও লীগ টিকে থাক, আমার মনে হয় আমার মত অনেকেই আছে। জানি এটা অগণতান্ত্রিক এবং সর্বনাশা চিন্তা, তবু এটা করতে বাধ্য হচ্ছি।
@অর্ফিউস ভাই,
একমত। একদলীয় নিৰ্বাচনের কারনে আওয়ামী লীগের মত ঐতিহ্যবাহী দলের ইমেজে অনেক দাগ পরবে, কিন্তু ৭১ এর মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারে কাজ সুষ্ঠভাবে শেষ করার স্বাৰ্থে লীগকে ক্ষমতায় থাকতেই হবে।
@বিপ্লব ভাই,
আওয়ামী লীগ সৰ্বদলীয় সরকারে বিএনপিকে আসতে অনুরোধ করে এবং শেখ হাসিনা সৰ্বোচ্চ ছাড় দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেয়, কিন্তু তারপরও বিএনপি সৰ্বদলীয় সরকারে/নিৰ্বাচনে আসতে চায় না কেন ? আপনার কি মনেহয় এখানে বিএনপির আৰ্দশগত কোন ব্যাপার আছে?
একদলীয় নিৰ্বাচনকে কেউই সৰ্মথন করে না কিন্তু ভাই এবার পরিস্থিতি ভিন্ন।
ঠিক বলেছেন।
@তারিক, “একদলীয় নিৰ্বাচনকে কেউই সৰ্মথন করে না কিন্তু ভাই এবার পরিস্থিতি ভিন্ন”.
হ্যা, তা তো ঠিকোই।
তাহলে এতো ছিচকাদুনে, সংবিধান, খালেদা কেনো এলো না, হাসিনার কথা কেনো শুনলো না এসব ঘ্যান ঘ্যানের মানেটা কি?
এই তারিক, লিংকনের মতো সহজ সরল স্বীকারক্তি হলো আওয়ামী লীগের টপ টু বটম প্রতিটি সমর্থকের মনের কথা। খালি যাদের একটু লাজলজ্জা আছে, কিছুটা সভ্যতা বোধ আছে, তারা নানা রকম ত্যানা পেচিয়ে নানান রকম গান গায়। যাদের মাথায় ব্রেক টা পুরোপুরি ফেল করেছে তারা অকপটে বলে ফেলে।
আওয়ামী লীগ নামের হিংস্র, পারিবারিক কাল্টটির মুখোশ বাকশালের পর আরেক বার উন্মোচনের জন্যে এই ইলেকশনটি সম্পন্ন হওয়া খুবই দরকার। নতুন আরেক জেনারেশন দেখুন, আওয়ামী ধর্মের মৌলবাদিতার স্বরূপ।
@সফিক ভাই,
ভাই বিএনপি’র মুখোশ অলরেডী উন্মোচিত হয়ে গেছে। জামাতকে ছাড়া বিএনপি’র নিৰ্বাচন না আসা, জামাতের নিৰ্দেশে হরতাল-অবরোধ কৰ্মসূচি পালন, যুদ্ধাপরাধীদের রাজবন্দী বলা, … এসব ঘটনার মাধ্যমে কি বুঝা যায় ??? 😕
আসেন একটু অতীত দেখি: 🙁
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা সহ অনেক শীর্ষ পৰ্যায়ের রাজনৈতিক নেতাদের হত্যাকাণ্ডের পর ঐ সময়ে যারা ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করেছিল তারা তাদের রাজনৈতিক মিত্র হিসেবে ইসলামপন্থীদের কাছে পায় এবং তারাই তখন থেকে সমাজ ও রাষ্ট্রকে ইসলামীকরন শুরু করে। এরপর ইসলামী রাজনৈতিক দল যেমন জামায়তে ইসলামী পুনরায় তাদের দলীয় কাঠামো নির্মাণ শুরু করে। সেই সময় ক্ষমতা দখল করা ঐ অপশক্তি শত শত মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা শুরু করে, যেখান থেকে হাজার হাজার তরুণকে ইসলামী দলগুলোর ফ্রন্ট লাইন কর্মী হিসেবে তৈরি করে। বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গি সংগঠনগুলোর নিয়োগকারীদের কাছেও সহজ লক্ষ্য হয়ে ওঠে ঐসব মাদ্রাসার দরিদ্র ও বেকার ছাত্ররা। ১৯৯০ সালের শেষদিকে বাংলাদেশে গোড়াপত্তন শুরু করে ইসলামী জঙ্গি সংগঠনগুলো যেমন জামিয়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ(জেএমবি) এবং হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামীর(হুজি)।
ইসলামী জঙ্গি সংগঠনগুলো ১৯৯৯ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে মন্দির, গীর্জা, রাজনৈতিক সমাবেশের, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সিনেমা হল, ইত্যাদি জায়গায় বোমা হামলা করে নিজেদের উপস্থিতি জানান দেওয়া শুরু করে। কিন্তু জঙ্গি সংগঠনগুলোর বিষয়ে অনিশ্চিত হওয়ার কারনে সরকার এবং বিরোধী রাজনৈতিক দল ঐ হামলার জন্য একে অপরকে দোষারোপ করতে থাকে। এমন কি ২০০৪ সালের ২১শে আগস্টে ঢাকায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় ২২ জনের মৃত্যু এবং শেখ হাসিনা আহত হওয়ার পরেও সরকারী দল(বিএনপি), বিরোধী দলের উপর ঐ হামলার দায় চাপানোর চেষ্ঠা করে! কিন্তু ২০০৫ সালে ১৭ই আগস্টে সারদেশে ধারাবাহিক বোমা হামলার পর সরকারের পক্ষে বাংলাদেশে জঙ্গি সংগঠনের উপস্থিতি ও তাদের জঙ্গিবাদী কৰ্মকান্ডের হুমকি অস্বীকার করার কোন উপায় থাকে না।
২০০১ সাল থেকে রাজনীতিতে অতিসক্রিয় এক নাম তারেক রহমান। সেই সময়ে ঢাকায় বিএনপি’র চেয়ারৰ্পাসনের অফিস ‘হাওয়া ভবন’-এ বসে নির্বাচন পরিচালনায় বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। পরবর্তী কালে বিএনপি-জামাত জোট সরকারের জমানায় তিনি ছিলেন ক্ষমতার দ্বিতীয় কেন্দ্র। পাঁচ বছর আগে বাংলাদেশে আওয়ামি লিগ সরকার নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসার ঠিক আগে স্ত্রী-কন্যাকে নিয়ে লন্ডনে চলে যান তারেক। এখন তারেক বাংলাদেশে ক্ষমতায় ফিরতে আইএসআই ও মৌলবাদী শক্তির সাহায্য নিচ্ছেন । লন্ডনের এডমন্টনে স্বেচ্ছানির্বাসনে থাকা তারেক ও তার দলবলকে পাকিস্তানের আইএসআই(ISI) সৰ্ম্পূনভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করছে । লন্ডন থেকে ঢাকা, সিঙ্গাপুর-সহ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় করা তারেকের যাবতীয় ফোন কলের রেকর্ডেও বাংলাদেশের গোয়েন্দারা দেখেছে উপমহাদেশের সক্রিয় মৌলবাদী ও জঙ্গি নেতাদের সঙ্গেও নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে বিএনপি-র এই নেতা। বিদেশ মন্ত্রনালয়ের এক অফিসারের কথায়,
“আগের বিএনপি-জামাত সরকারের আমলে আইএসআইয়ের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় বাংলাদেশ কার্যত মৌলবাদীদের ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছিল। জঙ্গি গোষ্ঠীকেও বাংলাদেশের মাটিতে ঘাঁটি গাড়তে দিয়েছিল বিএনপি-জামাত সরকার”।
লিংক: এখানে। (*)
@তারিক, “লন্ডন থেকে ঢাকা, সিঙ্গাপুর-সহ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় করা তারেকের যাবতীয় ফোন কলের রেকর্ডেও বাংলাদেশের গোয়েন্দারা দেখেছে”।
জি ভাই, আপনার লেভেল সম্পর্কে আমি আগেই বলে দিয়েছি। মুক্তমনাকে আমারব্লগ বানানোর বহুদিনের পুরোনো চেষ্টায় আপনার নতুন অবদানকে স্বাগতম। হয়তো আপনি সফল হতেও পারেন।
@সফিক ভাই,
বাংলাদেশের বিষয়ে কোন বাঙ্গালীই নিরপেক্ষ না। আমার শেয়াকৃত তথ্যে কোন ভুল নাই আর হ্যা আমার নিচু লেভেলটা আপনাকে জানানোর জন্যই ঐ লিংক শেয়ার করেছি। :guru:
লিংক: “ড্যান্স ফর ডেমোক্রেসী”। :lotpot: :lotpot: :lotpot:
@তারিক ভাই, আপনার কপাল ভাল যে আপনার লেভেল সফিক ভাই অনেক পরে ধরতে পেরেছেন। উনি কিন্তু আমার বাইপোলার রোগটাকে অনেক আগেই ধরতে পেরেছেন, আর ম্যানিক ফেইজ আসার আগে বুঝেন নাই, সে দিক দিয়ে আমি আনলাকি বইকি। যাই হোক দেরিতে হলেও আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি আর কনভার্ট হয়েছি পরিবার তন্ত্র থেকে গনতন্ত্রের পথে ( জাতীয়তাবাদী), আপনার প্রতিও সুশীল পথে কনভার্ট হবার দাওয়াত দিয়ে গেলাম, এছাড়া মুক্তি নাইরে ভাই :))
@অর্ফিউস ভাই, আমি জানি আমার মত ডিলিট শ্রেনীর মানুষের উনার মত এলিট শ্রেনীর মানুষের সাথে তৰ্কে যাওয়া উচিৎ হয় নাই। আপনার মত আমিও পরিবার তন্ত্র থেকে ইসলামী গনতন্ত্রের পথে অগ্রসর হওয়ার চেষ্ঠায় আছি, নিয়মিত প্রথমালু পত্রিকাও পড়ছি !! :-s
বদলে যাও, বদলে দাও। 😉
@সফিক ভাই,
সেতো বটেই। আওয়ামী লীগ নামক হিংস্র পারিবারিক কাল্টটির জন্ম হয়েছে ১৯..সালে আর মহান গণতান্ত্রিক জাতীয়তাবাদী দলের জন্ম হয়েছে সেনানিবাসে, আর এখানে পরিবার তন্ত্রের কোনরকম ছাপ নেই, থাকতে পারেই না, এইটা যে বাঙ্গালী কবে বুঝে আবার বাংলাদেশী হবে, সেই অপেক্ষাতেই আছে :-s
আওয়ামী লীগের প্রোপাগান্ডা মেশিনের একটা বড়ো শক্তি হলো যে দেশের মিডিয়া তার হাতে করায়ত্ব থাকার কারনে এবং বিএনপি’র অপেশাদার রাজনীতির কারনে, আওয়ামী লীগ মোটামুটি রাজনীতি-অর্থনীতি বিতর্কের এজেন্ডা সেট করার সুযোগ পায়। যেমন গত কয়েক বছরে আওয়ামী লীগের জোড়দার প্রোপাগান্ডা চলছে যে আওয়ামী লীগ সরকার অভূতপূর্ব উন্নতির জোয়ারে দেশ ভাসিয়ে দিচ্ছে। নীচের চার্টটি থেকে কি বলা যায় যে কোন দল দেশকে শনৈ শনৈ উন্নতির দিকে এগিয়ে নিচ্ছে আর কোন দল মধ্যযুগের অন্ধকারে দেশকে পিছিয়ে দিচ্ছে?
[img]http://jrahman.files.wordpress.com/2013/10/c2.jpg?w=720[/img]
সূত্র: http://nuraldeen.com/2013/10/30/the-real-record-real-gdp-per-capita/
সফিক ভাই, চার্ট দেয়ার কোন দরকার ছিল না। দেশে উন্নয়নের জোয়ার যে জিয়ার সৈনিকরা ছাড়া আর কেউই বইয়ে দিতে পারবে না, এটা কিন্তু আমরা অশিক্ষিত মুর্খ জনতা ভাল করেই জানি 😛
@অর্ফিউস, ডিপ্রেশন স্টেজ কাটিয়ে আবার ম্যানিয়া স্টেজে ফিরেছেন দেখে ভালো লাগলো। আবার আপনি একাই শত শত মন্তব্য করে মুক্তমনাকে মাতিয়ে দেবেন।
সফিক ভাই, 🙂
অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। সুখীবোধ করছি যে আপনার মত মহান মনো চিকিৎসক আমার মত হতভাগা বাই পোলার রোগীর দিকে মুখ তুলে তাকিয়েছেন।
দোয়া রাখবেন, আমি কনভার্ট হয়েছি জিয়ার আদর্শে। এইবার আশা করি, আপনার শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে জিয়ার সেনা হিসাবে কিছু কাজের কাজ করব।
এযাবৎ তো বাকশালী অন্ধকারের তলায় ছিলাম, এইবার ইনশাল্লাহ প্রকৃত গণতন্ত্রের ধারক বাহক জাতীয়তাবাদী সুশীলদের আলোতে নিজের জীবন গড়ে তুলব 😀
@অর্ফিউস,
:hahahee: :hahahee: :hahahee:
বাংলাদেশে এই খবরের ব্লগটা পড়ছিলাম। দেখছিলাম, এখানে বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ আম আদমি পার্টির মতন তৃতীয় শক্তির উত্থান চাইছেন/
@বিপ্লব পাল,
এদেশের মানুষ যখন ভোট দেয় তখন তারা ভাল করেই জানে, তারা যাকে ভোট দিচ্ছি সেও দুর্নিতিবাজ,যাকে ভোট দেবে না সেও দুর্নিতিবাজ।অনেকটা একবার বেজী,অন্যবার খাটাশের কাছে মুরগীর বাচ্চা পুশতে দেওয়ার মত।তারা যদি বুদ্ধিমান(সম্পদ) ভোটার হত তাহলে তাদের উচিত তৃতীয় কোন দুর্নিতির কালিমাহীন দল কে ভোট দেওয়া,অথবা একদমই ভোট না দেওয়া।
এখানে বলে রাখি বাংলাদেশে বেশ কিছু বামপন্থী(দুই জোটের বাইরে) দল আছে,যাদের নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নিতির কোন আভিযোগ নেই,তাদের অতীত অনেক পরিচ্ছন্নময়,তার সমসময় এদেশে সাধরণ মানুষের পক্ষে কথা বলে এসেছেন,তারাও এদেশে ভোটে দাঁড়ায়,কিন্তু ক্ষমতায় যাওয়া তো দূরে থাক,তাদের ফলাফল চরম হতাশাজনক।
শুধুমাত্র দুর্নিতির কারণে বিতশ্রদ্ধ হয়েই যদি এদেশে মানুষ বিরোধীদের ভোট দিতো,তাহলে তাদের জন্য আদর্শ চয়েজ হতো এই বাম দলগুলো।কিন্তু এরা ভোট পায় না।কারণ এদেশে অধিকাংশ(শিক্ষিত, জ্ঞানীক,চালাক শ্রণী বাদে) মানুষের কাছে কম্যুনিষ্ট মানেই নাস্তিক।
এদেশে কোন রাজনৈতিক নেতা সত্যিই যদি কোন দুর্নিতি নাও করে থাকে,তাও পাবলিক তাকে বিশ্বাস করবে না।রাজনৈতিক নেতা ও দুর্নিতি এখানে এতটা সমার্থক।নেতারা ক্ষমতায় গেলে দুর্নিতি করবে,তা সে যে দলেই হোক, এটা এদেশের মানুষের কাছে নতুন কিছু না,অনেকটা গা সওয়া ব্যাপার হয়ে গেছে।শুধুমাত্র দুর্নিতির এখানে মুখ্য না,অন্য কারণ আছে যা আপনি পোষ্টর নীচের দিক উল্লেক করেছেন।
কাদেরে কে ফাঁসি দেওয়ার জন্য পাবলিক লীগকে ভোট দেয়েছিল, এটা যেমন ঠিক না,তেমনি এবার যে শুধুমাত্র দুর্নিতির কারণে আ.লীগ ভোট পাবে না সেটাও ঠিক না।কারণ তুলনামূলক বিচার করলে দেখা যাবে বিম্পি জামাতের চেয়ে আম্লিগের আমলে সব খাতে উন্নয়েনের সূচক উদ্ধমুখী।বিম্প জামাতের সময় বাংলাদেশ ছিল দুর্নিতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন,এখন পরিস্থিতি কিছুটা ভাল।তারপরও নিরপেক্ষ ভোট হলে আম্লিগের হার নিশ্চত,কিন্তু শুধুমাত্র দুর্নিতি এর পছনের কারণ না।
আর স্থানীয় সিটি নির্বাচন গুলোতে শুধু দুর্নিতির কারণে যে আম্লিগ হারে নি সেকথা যারা জিতেছে তারাও স্বীকার করেছে।
আপনি শ্রমিকদের বেতনের যে পরিসংখ্যান দিয়েছেন তা বোধহয় বিশেষ এক শ্রেণীর শ্রমিকদের ক্ষেত্রে প্রয়োজ্য।
বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে শ্রমিকরা এখন এক বেলা(৮থেকে ১টা)কাজ করে ২০০ টাকা করে পায়,তারপরও শ্রমিক ঠিকমত পাওয়া যায় না।ইট ভাটার শ্রমিকরা পায় আরও বেশী।দাম বাড়ার সাথে সাথে শ্রমিক থেকে শুরু সরকারী চাকুরে সবারই বেতন বেড়েছে।
এদেশের নাগরিক সমাজরা হল তালপাতার সেপায়।তারা ব্যাকআপ(জলপাই) ছাড়া মাঠে নামেন না।কারণটা আপনি পোষ্টেই বলেছেন
হ্যা, বেশ ভাল রকমই বিভক্ত।তাই কেজরিওয়াল স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আগে,মনেহয় আরেক দলের স্বপ্নকে পূরণ করতে হবে,
@প্রাক্তন আঁধারে,
আপনার কোন যুক্তির সাথেই একমত হতে পারলাম না। বাংলাদেশের লেবার এবং তাদের ইনকাম নিয়ে যে স্টাডি আমি দিলাম-তাতে স্পস্ট ইনকাম বাড়লেও শ্রমিকদের এডজাস্টেড ইনকাম কমেছে কয়েক বছরে।
আর বাংলাদেশে দুই পার্টির বাইরে তৃতীয় পার্টির উত্থান না হওয়ার কারন, তৃতীয় শক্তির বিশ্বাসযোগ্যত্যার অভাব। তৃতীয় শক্তি বলতে আছে অসংখ্য বাম দল। ভারতে কিন্ত অধিকাংশ রাজ্যে বিজেপি বা কংগ্রেস ক্ষমতায় নেই। তৃতীয় শক্তিই ক্ষমতায় আছে।
এর কারন এই যে, নানান স্তরে নির্বাচনের সুযোগ বাংলাদেশে কম আছে। পুলিশ মিলিটারি সব কিছুই একটা পার্টির হাতে চলে আসছে। ভারতে যেমন পুলিশ রাজ্যের হাতে, আর মিলিটারি দেশের হাতে-এতে ক্ষমতার বিভাজন হয়। তাতে রাজ্য এবং দেশে দুটী আলাদা দল ক্ষমতায় থাকতে পারে।
আম আদমি পার্টির উত্থানের আগেও ভারতে অসংখ্য তৃতীয় শক্তি ছিল। কিন্ত কোন শক্তিই বিকল্প হিসাবে উঠে আসে নি। তার কারন তারা জনগণের পার্টি গড়তে পারে নি যা অরভিন্দ কেজরিওয়াল পেরেছেন-যেখানে ব্যক্তি না, দলই মুখ্য।
@বিপ্লব পাল,
আপনার দেওয়া লেবার বা হ্যাঙ্কার ইনডেক্স নিয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই।ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবকাঠামো দুর্বল,এই কারণে এখানে সরকারের হাতে সব ক্ষমতা থাকে,কিংবা বিশ্বাসহীনতার কারণে তৃতীয় শক্তি উত্থানে ব্যার্থতা এসব নিয়েও আমি দ্বিমত করিনি।
আমার মূল পয়েন্টটা ছিল শুধুমাত্র দুর্নিতির কারণে বিরক্ত হয়ে এদেশের মানুষ বিরোধীদের ভোট দেয় না,এর পেছনে অন্য কারণ থাকে।কিন্তু আপনি যেহেতু একমত না,তারমানে দুর্নিতিই একমাত্র নিয়ন্তা।
এখানে কিছু কথা বলা যেতে পারে।এখন যদি এদেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়,তাহলে তারেক জিয়ার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা ১০০ ভাগ।এই তারেক জিয়া বিম্পির আমলে পরিচিত ছিল মিস্টার টেন পারসেন্ট নামে।আম্রিকার এফবিআই পর্যন্ত এদেশে এসে তারেকের দুর্নিতির বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে।তারেকের দুর্নিতি নিয়ে সাধরণ পাবলিক থেকে দুই পার্টি কারওই কোন সংশয় নেই।ক্ষমতায় আসলে তারেক যে নিরিহ নিপাট ভাল মানুষ হয়ে যাবে তাও কেউ বিশ্বাস করবে না।তারপরও জনগণ ভোট দিয়ে তারেককে প্রধানমন্ত্রী বানাবে।কেন?দুর্নিতির প্রতি ক্ষোভ থেকেই তারা যদি ভোট দিয়ে থাকে তাহলে তারেকের মত দুর্নিতিবাজরে কেন ভোট দেবে?
আমি বলতে চাইছি না জনগণের উচিত আম্লিগরে ভোট দেওয়া,কারণ সেখানেও সেই একই সমস্যা থেকে যাচ্ছে।দুর্নিতি।এদেশেই জনগণ আম্লিগরে ভোট দিলেও শুধুমাত্র দুর্নিতির প্রতি ক্ষোভ থেকে দেয় না,তেমনি বিম্পিরে ভোট দিলেও তা শুধুমাত্র দুর্নিতির প্রতি ক্ষোভ থেকে দেয় না।এর পেছনে অন্য কারণ থাকে।