প্রতিদিন হলুদ রঙের বাড়িটাকে, দেখেছে সে,
লোভী চোখে, জুলজুল চোখে, নির্নিমেষে|
ক্ষুধার্ত হয়ে, অপাঙ্গে তাকিয়ে-
মাথা নিচু করার ভান করে পাশ দিয়ে যেতে যেতে,
প্রতিটি রোমকূপ ধরে কোনো অদৃশ্য টান অনুভূত হতে হতে-
গোপনে চেয়ে থেকেছে সে|
শিরশিরানি জাগোনা লাল আলো দিয়ে গড়া,
নগ্ন নারী মূর্তি যে গৃহের দরজায়,
তার সামনে কান লাল না হয়ে পারেনা-
আর যৌনাঙ্গে ব্যথা|
দেহ, দেহ, দেহ,
এমন প্রকট ভাবে অস্তিত্ব জানান দেয়নি কখনো আগে!
ভেবে দেখেছে সে-
এখানে আসার আগে, যখন সে ছিল তার দেশে-
টিনের চালে আর দরমার দেওয়ালে,
পঞ্চাশ টাকায় নরমাংস কেনা দেখেছে|
আশ্চর্য! তখন তো এমন হয়নি মনে|
তীব্র লিপস্টিক-এ, সস্তার সিল্কে মোড়া,
খসখসে নারী মুর্তিদের সে,
ব্রিজে দাড়ানো ল্যাম্পপোস্টদের থেকে,
আলাদা করে দেখেনি|
বা সাগর পাড়ি দিতে,
বিয়ে করেছিল যে বেনারসীর পুঁটুলিকে,
তাকে তো ঘরের আসবাবের থেকে,
আলাদা কিছু মনে হয়নি|
তাদের যে এমন গঠন তো ছিলনা!
তরল সোনা দিয়ে বানানো চুল তো ছিলনা|
এমন লাস্যময়ী অপসরাদের মতন ভ্রূভঙ্গী ছিলনা|
এই ভেবে-
অপার্থিব কামে,
চাদর বিছানা ভিজে যায় ঘামে,
উন্মাদের মতন হস্তমৈথুন, চাপা গোঙানিতে|
স্বপ্ন আর কল্পনায় সে ভেবে চলে,
একদিন তার প্রবেশের পারানি জমা হবে|
মেরুন দরজা পেরিয়ে সে ঢুকে যাবে,
মখমলি পর্দা আর পালকের বালিশে সাজানো,
নিষিদ্ধ স্বর্গে-
সে ভেবে চলে, যে তুর্কির দোকানে তার,
মাছ কাটার চাকরি, সেইখানে বসে বসে|
ধারালো ছুরিতে রূপোলি আঁশ ছাড়িয়ে ছাড়িয়ে,
দেশ আর দালালদের পাওনা চুকিয়ে,
সঙ্গোপনে টাকা লুকিয়ে রাখতে শিখে গেছে সে|
তোষকের আড়ালে|
বিলাসিতা বলতে রোজ তিনবার চান করা,
আর সস্তার সুগন্ধি|
দস্তানা পরে মেশিনে কাটলেও,
গা থেকে মাছের গন্ধ যেতে চায়না|
সে ভাবতে পারেনা, তার বহু কাঙ্খিত দিনে-
কেউ তার দিকে নাক কুঁচকে তাকাক!
(এতো রুপকথা বা গল্প নয় যে,
পুরানের রাজাদের মতন হটাত করে মাছের পেট থেকে,
হীরক অঙ্গুরীয় বের হবে|
বা ঋষিদের বরে তার দেহ থেকে মাছের গন্ধ মুছে যাবে!)
সে জানে তাকে শরীর কিনতে হলে নিজের শরীর দিয়ে,
দাম শুধতে হবে|
এমনি করে, এক একটা নোট জুড়ে,
সে সাবধানে বুকপকেটে খামে মুড়ে,
সেই বাড়ির দরজা পেরিয়ে গিয়ে,
প্রথমেই মুখোমুখী হলো-
কোনো প্রাচীন এক, লোলচর্মে ঢাকা,
পুরু রং মাখা বৃদ্ধা দেহপোজীবিনির!
যার হাতের হলদে নখে মাখানো,
লালসা, ঘৃনা এবং শতাব্দী প্রাচীন,
মাদকের ছাই ভস্ম|
যে চোখে তার কোনো বিস্মৃত কালে,
লাগানো ছিল কাজল,
তা যেন আঙ্গুল দিয়ে জোর করে ধেবড়ে দেওয়া-
অথবা অসংখ্য কাক হেঁটে বেড়িয়ে,
তার দু চোখের কোন,
কুঁচকে দিয়েছে|
ঠোঁট দিয়ে ঠুকরে ঠুকরে,
চোখের মনি ঘোলা করেছে|
শনের দড়ির মতন চুলে তার খয়েরি রং|
যেমন বিগত শতকের স্মারক থেকে,
খসে খসে পড়ে পলেস্তারা,
প্রকাশ পায় নগ্ন ইটের পাঁজর-
তেমনই তার চোখ থেকে সরে যায় অলীক মায়াজাল|
কসাইয়ের ছুরির সামনে ম্রিয়মান হতাশ,
ছাগশিশুদের মতন,
সভ্যতার কুহকিনী বিজ্ঞাপনে|
সে পালিয়ে গেল, ভয়ে এবং দুর্গন্ধে,
অজানা জগতের আলোড়ন তুচ্ছ করে,
পেছন থেকে ঘরের পর্দা ফাঁক করে,
যে স্বপ্নিল সুন্দরী তাকে ডাকছিল-
তাদের হাতছানি উপেক্ষা করে,
এক দৌড়ে, বেরিয়ে এসে,
নিশ্বাস নিলো তাজা বাতাসে|
বীরভোগ্য বসুন্ধরায়|
এইবারে সে, ত্যাগ আর তিতিক্ষায় ভরা,
নতুন কোনো ধর্মমত প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হবে!
@অনামী,
লেখাটা জম্পেশ হয়েছে বেশ;
চালিয়ে যান, এক্কেবারে ফুল স্পিড য়্যাহেড (C)
@কাজী রহমান,
ধন্যবাদ| আপনার লেখাও আমার খুবই ভালো লাগে| স্বভাবজাত কুঁড়েমির কারণে বলে হওয়া ওঠেনি| :)) :))
কিন্তু আপনার কবিতাগুলোতে সর্বদা চোখ রেখেছি|
@অনামী,
কিচ্ছু অসুবিধে নেই। সময় পেলেই মন্তব্য প্রতিমন্তব্য করবেন। ভালো থাকুন।
@অনামী,অসাধারন! ধন্যবাদ আপনাকে কবিতার মাধ্যমে বাস্তবকে ফুটিয়ে তোলার জন্য! (F)
@আকাশ মালিক, খাইসে আমারে! আপনি বানানের ব্যাপারে এতো সচেতন? কপাল আমার ভাল যে আমি নিয়মিত মুক্ত মনাতে আসি না, আসলে আমার খবরই ছিল! 🙁
নিন এটা দিয়ে বানান খুঁজেন (I) 😀
@দারুচিনি দ্বীপ,
এতবড় একটা ইলজাম দিতে পারলেন? ;-( ;-( :-X :-Y
@আকাশ মালিক, ইয়ে ইলজাম নাহি, সাচ হ্যায়! লেকিন কোই বাত নেহি, চালাইয়ে!! ( আমি হিন্দি ভাল পারি না, ভুল হলে সরি :-O ) কাজটা ভাল খারাপ না। এতে অনেকেই সচেতন হবে, যেমন আমার মত কেউ! :)) 😀 ! বাঙ্গালী হয়ে বাংলা টাইপেই আমরা বেশি ভুল করি অভ্রর মত ডালভাত থাকার পরেও (N)
@দারুচিনি দ্বীপ,
তাইলে অন্তরে আল্লাহর নাম লইয়া হাতে কলম তুলে নেন। আপনি এত সুন্দর মন্তব্য করতে পারেন লিখেন না কেন? একটা লেখা দিয়ে বিসমিল্লাহ করে ফেলেন, কথা দিলাম আমি সাথে থাকবো। আই মিন, যদি কানার কাছে পথের সন্ধান চান। :-s 😕
@আকাশ মালিক,
আশ্বাসের জন্য ধন্যবাদ তবে আমি লেখা শুরু করলে সেটা পড়বে কে সেই চিন্তায় আছি 😀 , এত মুক্ত মনা থেকে পাঠক তাড়াবার বুদ্ধি করেছেন!! আমি বরং পাঠক হিসাবেই আপাতত থাকি! 😉
:-O শর্বনাস এতো ভাল লিখেও ( আপনার কিছু লেখা পড়ছি ধীরে ধীরে) যদি নিজেকে কানা বলে দাবী করেন তাহলেই হয়েছে!!অবশ্যই বিনয় করেই কথাটা বললেন বুঝতে পারছি, তা না হলে আমার মত পাবলিক ( যে লেখা লেখি করতে ডরায়; আমি নিশ্চিত আমার মত জনতা মেলা আছে!)এইবার যাই কোথায়!! :-Y
যাই হোক ধর্ম নিয়ে ভাল কিছু লেখা আপনার কাছে পুনরায় আশা করছি আপনার কাছ থেকে! প্রথম দিকে তো বেশ কিছু লেখা দিয়েছেন, থেমে গেলেন কেন বুঝলাম না, খারাপ তো লেখেননি কিছু!! ভাল থাকেন আর লেখেন ওই টাইপ কিছু লেখা আবার!! (Y)
@দারুচিনি দ্বীপ,
আহ, আরো রইলোনি ভাই সময়? দিন আয় না যায়? অবশ্য কোনদিনই গোলাপী রেহমান, গামছা বীর, শাফি মাজহার হবোনা, আপনাদের যাত্রীদলের পেছনেই থাকবো সবসময় ইনশাল্লাহ।
সর্বনাশ তো হবেই। এই জগতে তরুণেরা ছাড়া কে কোথায় কী করতে পেরেছেন? তাই লেখার জগতে আপনাদেরকে আসতেই হবে। যা বলার তা বলে দাও, যা শুনানোর তা শুনিয়ে দাও, যা জানানোর তা জানিয়ে দাও, এখনই সব বলে দেয়ার শ্রেষ্ট সময়।
@দারুচিনি দ্বীপ,
ধন্যবাদ পড়ে পাঠ প্রতিক্রিয়া দেওয়ার জন্যে| শুভেচ্ছা নেবেন আর ভালো থাকবেন|
বাহ, বহুদিন পর ভাল একটি কবিতাই পড়লাম মনে হলো। (Y) (F)
(এতো রুপকথা বা গল্প নয় যে,
পুরানের রাজাদের মতন হটাত করে মাছের পেট থেকে,
হীরক অঙ্গুরীয় বের হবে|
বা ঋষিদের বরে তার দেহ থেকে মাছের গন্ধ মুছে যাবে!) বানানটা হঠাৎ হবেনা?
এমন ভাবনা যাতনার আরো কবিতা আসবে তো?
@আকাশ মালিক,
আকাশ দাদা, ‘বানান পুলিশ’ –
নাই বা হলে !
বোতাম টিপে সাবধানেতে,
লিখছি লেখা |
এর মাঝেতে আঙ্গুলখানা,
পিছলে গেলে-
কম্পুটারে অটো কারেক্ট,
বদলে দিলে, বানানখানা |
‘হঠাৎ’ হঠাৎ ‘হটাত’ হলো,
কেমন করে-
বুঝতে পেলে?
লেখা পরার জন্যে ধন্যবাদ| নিশ্চয়ই চেষ্টা করব আরো লেখার|
@অনামী,
দাদা আপনি মস্ত যেনো
ছড়া লিখিয়ে,
এতো মেধা নিয়ে কেনো
থাকেন লুকিয়ে?
গল্প বুড়োর ঝোলার মত
আপন ঝুলিতে,
মণি-মুক্তো লুকোনো কত
চান না বলিতে?
@ফরিদ আহমেদ,
আমি কোথায় মস্ত?
বরং আপনি সিদ্ধহস্ত!
দারুন লেখেন লেখা-
রাজনীতি বা ধর্ম,
ইতিহাসের কিস্যা,
রাজা-গজার কর্ম।
তবু প্রায়ই হন হাওয়া,
যায়না পাওয়া দেখা।
আপনার থেকে চাওয়া,
আরো অনেক লেখা।
@অনামী,
আপনি শুধু মস্তই নন, চোস্তও বটে।
@অনামী,
পড়া কিন্তু পরা নয়, নাড়ি নয়কো নারী
বাড়ি কভু হয়না বারি, পাড়ি হয়না পারি।
বানান পুলিশ নয়কো আমি, সদস্য এক নগন্য
শিক্ষক হতে আসিনি হেতা, ছাত্র হয়েই ধন্য।
@আকাশ মালিক,
হা হা দারুন বলেছেন| এই ছড়াটা ভাগ্নেকে শোনাতে সে হেঁসে কুটোপাটি|
:hahahee: :hahahee: :hahahee: :rotfl: :rotfl: :rotfl:
আপনিতো চমৎকার কবিতা লেখেন দেখছি। এর আগে আমার ধারণা ছিলো যে, আপনি শুধু দুর্দান্ত সব মন্তব্যই লিখতে জানেন। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
ধন্যবাদ ফরিদ ভাই | কালকে রাতেই আপনার নতুন লেখা গোগ্রাসে পড়ে ফেলেছি| একটা দীর্ঘ মন্তব্য মেরে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার তালে আছি| আর আপনি ভুলে গেলেও আপনার হারেমবাসিনী মোঘল বেগমদের নিয়ে একটা লেখা বাকি আছে| সেইটার জন্যে কিন্তু তক্কে তক্কে আছি| এদিকে আপনি বেগমদের হারেম থেকে হিন্দু রমনীদের অন্তঃপুর অবাধে যাতায়াত করছেন| পর্দা যাদের আব্রু, তাদের শঙ্কিত হবার সময় এসেছে দেখছি!
@অনামী,
আপনাদের অ-আ এর (অনামী-আদিল) অবগুণ্ঠিত আওরাতদের প্রতি আগ্রহের কথা ভুলি নাই আমি। অচিরেই আসিতেছেন তাঁরা আপনাদের চক্ষুকে চমকিত করতে। 🙂
আরে না। আমি মাসুম আদমি। আমার কাছে উনাদের আবার পর্দা কী? 🙂