বহুদিন পর ঢাকার যান্ত্রিক জীবনযাপন থেকে দুদণ্ড শান্তি পেতে নিজের বাসায় আসা। আসার পরের দিনই পড়লো শবে-বরাতের রাত্রি। নিজের সন্তানকে দ্বীনের পথে দাওয়াত দেওয়া বোধ হয় ফরজের মধ্যে পড়ে, তাই বাবা এসে বারবার অনুরোধ করে নামাজ পড়ার জন্য। আমি চুপ করে থাকি, ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে এক মনে কিছু একটা পড়তে থাকি। বাবা আফসোস কিংবা অভিশাপের সুরে আমার ভাগ্যের লাগাম ছুটে যাবার জন্য অনুতাপ করেন। অবশেষে বড় ভাইয়ের সাথে বাবা বেড়িয়ে যান। ছোট বোন আর মা’ও এক সময় নামাজের জন্য প্রস্তুত হন। নামাজ পড়ার পর তাদের চোখে মুখে একটা তৃপ্তির আভা থাকে, ঠিকঠাক টের পাওয়া যায় একটি শান্তির ঝাপটা এসে লেগেছে তাদের হৃদয়ের অভ্যন্তরে। একটা সুখ সুখ ভাব প্রবাহিত হয় পুরো বাসা জুড়ে।
ধর্মে যাদের বিশ্বাস নেই, তাদেরকে আমার মনে হয় মানুষ বাই ডিফল্ট অ্যারোগেন্ট মনে করতে বাধ্য হয়। হাজারো সমস্যায় জর্জরিত মানুষ যখন হাত তুলে দুয়া চায় তাদের মনোবাসনাপূরণকারীর কাছে, তখন ধর্মে অবিশ্বাসীদের স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে বলতে হয় আমাকে সাহায্য করার জন্য কোন পারলৌকিক শক্তি অপেক্ষা করে নেই, বাবা’র আকুল আবেদনকে উপেক্ষা করতে হয় নিতান্তই অভদ্রতার মুখোশ পড়ে, উৎসবের আমেজের মাঝে কিছুটা চিপসে হয়ে বসে থাকতে হয় আনমনা হয়ে।
ধর্মের উপযোগিতার ব্যাপ্তি এই বিন্দু বিন্দু করে যোগ হতেই এক সময় বিশালাকার ধারণ করে। তবে নাস্তিক্যবাদ আর ধর্মের মাঝখানে এখনও একেবারে গেম চেঞ্জার বিষয় আমার কাছে একটিইঃ মৃত্যু।
পৃথিবীর প্রায় সব সংস্কৃতি বা ধর্মেই মৃতদের নিয়ে আলাদা কিছু কৃষ্টি-কালচার, সংস্কার বা আয়োজন থাকে। আর এতসব ধর্ম আর আইডিওলজির মাঝে মৃত্যু নিয়ে সবচাইতে অনাড়ম্বর উত্তর দেয় বোধ হয় নাস্তিক্যবাদ। অন্যদিকে, বলতে গেলে প্রায় প্রতিটি ধর্মই দিবে আপনাকে একটি আড়ম্বরপূর্ণ জবাব। মৃত্যুর পর আর কিচ্ছু নেই এটিকে যদি আপনি ০ বা নিউট্রাল হিসেবে ধরেন, তাহলে ধর্ম আপনাকে উপহার দিবে জান্নাতের লোভ(+) বা জাহান্নামের ভয়(-)।
আমি নিজে মাঝে মাঝে চিন্তা করেছি খুব কাছের কেউ মরে গেলে আমার ঠিক কেমন লাগা উচিত। আমি ভেবে দেখেছি মৃত্যুর পর আর কিচ্ছু নেই এই চিন্তাটি আমার নিজের জীবনের জন্য আমি যত সহজে মেনে নিতে পারছি, আমি তত সহজে আমার আপনজন(মা-বাবা-ভাই-বোন) দের জন্য হজম করতে পারছিনা। নিজের জীবনকে স্বাভাবিকভাবেই অপেক্ষাকৃত বেশি ভালোবাসার পরও এই অনুভূতিকে আমার তাই বেশ অসামাঞ্জশ্যই মনে হচ্ছিল।
কেউ মারা গেলে, বিশেষ করে আপনজন চলে গেলে আমরা স্বভাবতই প্রচণ্ড মন খারাপ করি, কেউবা কেঁদে কেটে ভাসিয়ে দিই চারপাশ। যে ধর্মেই বিশ্বাস করি বা না করি, আমরা সবাই-ই কষ্ট পাই। এখানে একটা ইন্টেরেস্টিং বিষয় হচ্ছে, খুব ধর্মপরায়ণ কেউ মৃত্যুবরণ করলে অন্য বিশ্বাসীদের কিন্তু খুব কষ্ট পাওয়া খুব একটা যৌক্তিক না, কারণ মৃতের ধর্ম সত্য হলে সে অবশ্যই পৃথিবীর তুলনায় হাজার গুণ ভালো জায়গায় চিরকালের মত যাচ্ছে। জান্নাতের যে বর্ণনা আমরা স্ক্রিপচারে দেখি তাতে একজন ধর্মপরায়ণ ব্যক্তি বরং শুধুমাত্র মৃত্যুর মাধ্যমেই সর্বোত্তম সেই পুরস্কার লাভ করতে পারেন। সাধারণ মানুষ এত কিছু হয়ত না বুঝেই কান্নাকাটি করে, কিন্তু সুইসাইড বম্বাররা কিন্তু ঠিকঠাক এই ইন্সেন্টিভ ধরতে পারে।
প্রশ্ন হচ্ছে খুব কাছের কেউ মারা গেলে অবিশ্বাসীরা কী করে? প্রতিটি সমাজেই মৃতদের নিয়ে রিচুয়ালগুলো এত বেশি শক্তিশালী যে আপনি তাতে বিশ্বাস না করলেও তা ধীরে ধীরে আপনাকে গ্রাস করে ফেলবে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে খুবই অসহায় বোধ করি কেউ মারা যাওয়ার পর, ঠিক কী বলা উচিৎ, কী করা উচিত আমি বুঝে উঠতে পারিনা। মৃত্যুর খবর শুনে হয়ত বলি, ‘দ্যাটস সো স্যাড’, কিন্তু আমার শান্তি হয়না, আমার আরও কিছু বলতে ইচ্ছে করে। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন বললে আমি নিজেই কিছুটা বোধ হয় শান্তি পাই। যে ব্যক্তি খুব প্রিয়জনকে হারিয়েছে, আমার কাছে মনে হতে থাকে সে ‘দ্যাটস সো স্যাড’-এর চাইতে বেশি কিছু ডিজার্ভ করে।
এসব চিন্তা করতে করতেই আমি টের পাই ভাষার শক্তির কথা। আমাদের চিন্তাশক্তি বা কল্পনাশক্তি অনেকটাই আমাদের শেখা ভাষার মধ্যে আবদ্ধ। মৃত্যুকে স্বাভাবিকের বদলে পারলৌকিক রূপ দিয়ে হাজার বছরের সংস্কারের বদৌলতে আমাদের মস্তিষ্ক মৃত্যুতেই শেষ এই উত্তরে শান্তি পায়না। ধর্ম একটা চমৎকার ব্যবস্থা উপহার দেয় যেটা বারবার আমাদের মনে করিয়ে দেয় ‘আমি’ গুরুত্বপূর্ণ। আমার প্রার্থনা গুরুত্বপূর্ণ, আমার কথা শোনা হয়, এবং সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আমার জন্য একটি সুন্দর ব্যবস্থা আছে আমার মৃত্যুর পর। ধর্ম যেখানে আমাকে কেন্দ্রীয় ভাবে স্থান দেয়, নাস্তিক্যবাদ সেখানে আমার আমিত্বকে গুরুত্বহীন করে তুলে। ডকিন্সকে একবার প্রশ্নোত্তর পর্বে এক ভদ্রলোক জিজ্ঞেস করলেন, ‘হোয়াট ইজ দ্যা পারপাস অফ লাইফ?’ কিছুদিন আগে ডকিন্স ‘সেক্স, ডেথ অ্যান্ড মিনিং অফ লাইফ’-এ এসব নিয়ে কিছু একটা ত্যানা প্যাঁচাতে চেয়েছেন। তিন পর্বের এই ডকুমেন্টারিতে পারপাস অফ লাইফ নিয়ে যে অংশটুকু ব্যয় করা হয়েছে আমার খুব একটা ভালো লাগেনি। আমার কাছে মনে হয়েছে মাস অডিয়েন্সের কথা চিন্তা করে ডকিন্স কিছুটা নমনীয় হয়েছেন। এর চেয়ে বরং ঐ প্রশ্নোত্তর পর্বে ডকিন্স পাল্টা প্রশ্ন করেছিলেন, মাউন্টেইন্স বা পর্বতমালা পৃথিবীতে কেন আছে? আপনি হয়ত জিওলজি-টিওলজি দিয়ে হরেক রকমের সায়েন্টিফিক ব্যাখ্যা দিয়ে বলতে পারেন পর্বতগুলো কীভাবে আসলো, কিন্তু তাদের এভাবে খাম্বার মত দাঁড়িয়ে থাকার পারপাস জিজ্ঞেস করলে হাঁ করে তাকিয়ে ছাড়া উপায় নেই। এর পরেই ডকিন্স আসল ইঙ্গিত দেন যেইটা আমিও ঠিক বলে মেনে নিয়েছি। ধরুন, হাতি আকাশে ওড়ে। এই বাক্যটিতে সব ঠিক থাকলেও এখানে কোন মিনিংফুল সেন্স কাজ করেনা(ব্যকরণে এইটার একটা আলাদা নামও আছে যেইটা কোন ভাবেই মনে করতে পারছিনা বলে দুঃখিত), ঠিক তেমনি পর্বতমালা কী উদ্দেশে এভাবে দাঁড়িয়ে আছে, এটি কোন মিনিংফুল প্রশ্ন নয়।
অ্যাডাম-ঈভের ন্যারেটিভে আপনার বিশ্বাস না থাকলে আপনার নিজের জীবনের পারপাসও তাই একটি মিনিংলেস প্রশ্ন। পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত যত প্রজাতি এসেছে তাদের ৯৯.৯% ই যেহেতু বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে, তাদের কোন পারপাস নিশ্চয়ই ছিলনা। নিজেকে যদি শুধুই একটি প্রজাতির অংশ বলে মনে করতে আপনার আপত্তি না থাকে, তাহলে এটিও স্বীকার করতে হবে হোমো স্যাপিয়েন্সেরও একদিন বিলুপ্ত হয়ে যাবার প্রবল সম্ভাবনা আছে, সুতরাং এই প্রায় নিশ্চিত ভবিষ্যৎ বিলুপ্ত প্রজাতির পারপাস অফ লাইফ খোঁজা নিতান্তই বাতুলতা।
সমস্যা হচ্ছে এই নিরস ন্যারেটিভের অল্টারনেটিভ হিসেবে ধর্ম বেশ জাঁকজমক কিছুই উপহার দেয়। অধিকাংশ ধর্মই মোটামুটি একটা আল্টিমেট টোটালিট্যারিয়ান গভার্নমেন্টের মত আচরণ করলেও এই কস্ট(cost) টা অফসেট হয়ে যায় বিশাল পুরস্কারের অপেক্ষায়। সেখানে আপনি যেমন চিরশান্তিতে থাকতে পারেন, আপনার আপনজন, প্রিয়জনরাও থাকতে পারবেন চিরশান্তির সুশীতল ছায়ায়। সাধারণ মানুষের মাঝে এটাকেই আমার ধর্মের সবচাইতে বড় ইউটিলিটি বা উপযোগিতা মনে হয়।
অমরত্ব লাভের উদ্দেশ্যকে মাথায় রেখে শুরু হওয়া ‘২০৪৫ ইনিশিয়েটিভ’(১,২) যদি সফলতার মুখ না দেখে, ধর্মের এই উপযোগিতা ফুরনোর কোন কারণ আমি তাই দেখছিনা।
পৃথিবীর বেশীরভাগ মানুষ মারা যায় বিছানায় শুয়ে, অনেকে ঘুমের মধ্যে। কেউ গার্লফ্রেন্ডকে বাহাদুরি দেখাতে গিয়ে বাইক নিয়ে বাসের নিচে পড়ে! ঈদের খুশিতে, বা থার্টিফার্স্ট নাইটে ভেজাল মদ খেয়ে মরে কতজন!
অথচ, আমাদের বিছানায় শুতে, রাস্তায় গাড়ি নিয়ে ভাব দেখাতে, বা মদ খেতে ভয় লাগেনা!!
ভয় জিনিসটা আসলেই আজিব। ভয়ের কোন সংজ্ঞা নেই। ভয় শুধু ভয়েরই মতন। তুলনাহীন 😕
আমি নাস্তিক। আজকে আমি ভয় পাই নিজেকে প্রকাশ করতে এই সব ধর্মভীরুদের মাঝে। কারন আমার কাছে আমার জীবন এখনও প্রিয়। একদিন আসবে যখন এইসব ধর্মভীরুরাও ভয় পাবে নিজেদের প্রকাশ করতে কারন জীবন স্রষ্টা থেকেও বেশি প্রিয়। সেই দিনের অপেক্ষায় :))
কে যেন বলেছিলঃ
আমি জন্মের প্রয়োজনে ছোটো হয়েছিলাম,
এখন মৃত্যুর প্রয়োজনে বড় হচ্ছি।
অপ্রাসঙ্গিক কথা বললাম; এর জন্য দুঃখিত 🙁
লেখাটি চিন্তায় ফেলে দিল; আমিও কি আপনার মতন মৃত্যু নিয়ে একি রকম ভাবি ???
মাথা ঝিমঝিম 😕
মৃত্যুর মধ্য দিয়ে সব কিছুর শেষ,মেনে নিতে আসলে খুব কষ্টকর।সবাই বেঁচে থাকতে চাই।তাই মৃত্যুর পর পরজগতের সৃষ্টি।
ধর্ম টা চলতে থাকুক। তবে ধর্মকে একটু মানব জীবনের বাস্তবতার সংগে মানিয়ে নিতে হবে।
১)ধর্ম কে শুধু মাত্র যার যার গৃহে ও উপাসনালয়ে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
২)উপাসনালয়কে ধর্মীয় রাজনীতির আখড়া বানালে,ধর্মকে রাজপথে আনলে,ধর্ম কে সংসদে আনলে, দেশে শান্তি ও অগ্রগতি সম্ভব নয়।
৩)জনমানুষের ধর্মানুভূতিকে পূজী করে সস্তা রাজনীতি করিলে দেশের অগ্রগতি সম্ভব নয়।পাকিস্তানেও গত নির্বাচনে ধর্মানুভূতিকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। পাকিস্তানের মত একটা কট্টর ধার্মিক দেষ যদি এটা করতে পারে তাহলে আমরা পারবনা কেন?
৪)প্রায় ৪০ হাজার কওমী মাদ্রাসায় বিজ্ঞান শিক্ষা বাধ্যতা মূলক হওয়া উচিৎ।কারন এসমস্ত মাদ্রাসা হতে প্রতি বৎসর হাজার হাজার ছাত্ররা পাশ করে বেরিয়ে কোন রকমের চাকুরী করার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনা। ফলে বাধ্য হয়ে এরাই আবার ধর্মের সেবার উদ্যেশ্যে প্রতিবৎসর হাজার হাজার নূতন কওমী মাদ্রাসা স্থাপিত করতেছে।
এর মাধ্যমে কোন জ্ঞ্যানের বিস্তার ঘটতেছেনা।
৫)আজ সকাল ৭:৩০ এর বিবিসি বাংলার সংবাদটা শুনে দেখুন এখানে।
সিরিয়ার বিদ্রোহীরা সিরিয়ায় গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য লড়াই করতেছেনা,তারা লড়াই করতেছে দেশে একটা শারীয়া ভিত্তিক শাসিত রাষ্ট্র পতিষ্ঠার জন্য।
ইতিমধ্যেই তারা দূরবর্তী দখল কৃত অঞ্চলে যার যার নিজস্ব ব্যাখ্যানুসারে শারীয়া শাসন আরম্ভও করে দিয়েছে।
জীবনের আসলে নিজস্ব কোন লক্ষ্য নেই বলে আমার উপলব্ধি। মহাজাগতিক অবস্থান থেকে জীবন মানেই একটা অর্থহীন পথ চলা। পথ চলতে হবে তাই চলা। এর কোন অর্থ নেই।
তবে প্রকৃতির সন্তান হিসেবে আমাদের জীবনের লক্ষ্যটাকে প্রকৃতি নির্ধারণ করেছে বংশপরম্পরা বজায় রাখার প্রক্রিয়া হিসেবে। এজন্যেই প্রকৃতি আমাদেরকে যতো সব সংবেদনশীলতা দিয়েছে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে বংশগতি রক্ষায় এগিয়ে যেতে। ফলে প্রকৃতির নিরীখে অন্যান্য উদ্ভিদ বা প্রাণীর সাথে আমাদের মৌলিক কোন জৈব-পার্থক্য নেই।
অন্যদিকে মানুষ যেহেতু নিজেকে তার সৃজনশীল শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে অন্য জীব থেকে আলাদা করে ফেলেছে, তাই মানুষ হিসেবে জীবনের লক্ষ্য হলো অহেতুক অর্থহীনতাকে অর্থময় করে তোলে নশ্বর এই অদ্বিতীয় জীবনটাকে যতোটা সম্ভব উপাদেয় করা তোলা। এজন্যেই ধর্ম দর্শন শিল্প সাহিত্য ইত্যাদির জন্ম। এবং একইভাবে আপনার এই পোস্টটার উদ্দেশ্যও প্রকারান্তরে তা-ই ! হা হা হা !!
@রণদীপম বসু, হাহাহা, ভালোই বলেছেন আপনি। মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগলো, ভালো থাকবেন আপনি। 🙂
@রণদীপম বসু,
বেশ কদিন পর দেখলাম আপনাকে। নিরাপদে এবং ভালো আছেন আশা করছি।
ব্লগারদের ভারী দুর্দিনে হাল্কা ধরনের একটা প্রশ্ন। মানুষ নিজেকে নিজেই শ্রেষ্ঠ বলে বেড়াচ্ছে। এই কথাটা কোন অমানুষ দিয়ে সত্যায়ন করা যায় কি করে বলুন তো? :))
পারপাজটা আমার মনে হয় সম্ভাব্য বিলুপ্ত প্রজাতির বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের মধ্য দিয়ে অভিযোজনের পরবর্তী ধাপে সফল ভাবে উপনীত হওয়া। চমৎকার ভাবনা রেজওয়ান।
@কেশব অধিকারী,
নামের বানানে ই-কার এর জায়গায় এ-কার হয়ে গেলো বলে দুঃখিত রিজওয়ান।
@কেশব অধিকারী, প্রজাতির কথা চিন্তা করলে অবশ্যই সেইটা পারপাস হতে পারে, কিন্তু এই পারপাসে ব্যক্তিগত ভূমিকা একেবারেই শুন্যের কাছাকাছি।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। 🙂
পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত যত প্রজাতি এসেছে তাদের ৯৯.৯% ই যেহেতু বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে, তাদের কোন পারপাস নিশ্চয়ই ছিলনা। নিজেকে যদি শুধুই একটি প্রজাতির অংশ বলে মনে করতে আপনার আপত্তি না থাকে, তাহলে এটিও স্বীকার করতে হবে হোমো স্যাপিয়েন্সেরও একদিন বিলুপ্ত হয়ে যাবার প্রবল সম্ভাবনা আছে, সুতরাং এই প্রায় নিশ্চিত ভবিষ্যৎ বিলুপ্ত প্রজাতির পারপাস অফ লাইফ খোঁজা নিতান্তই বাতুলতা।
সহমত। (Y)
@তারিক, মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। 🙂
মানব দেহে যে পরিমাণ নিজস্ব কোষ আছে তার তুলনায় দশগুণ বেশী আছে ব্যাক্টেরিয়াল কোষ। তাই এ কথা বললে ভুল হবে না যে মানব জীবনের পা্রপাস অফ লাইফ হইল সেইসব ব্যাক্টেরিয়াল লাইফ সাপোর্ট করা।
@হোরাস, হাহাহা, দেখুন ধর্ম যেখানে মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে স্থান দিচ্ছে, সেখানে আপনার দেয়া পারপাস অফ লাইফ তুলনামুলক যথেষ্ট গ্রস শুনাচ্ছে। মোট কথা হচ্ছে, পারপাস অফ লাইফ বলতে আমরা যে ধরনের উত্তর কল্পনা করি, এই ধরনের উত্তর আমাদের কোনভাবেই তুষ্ট করতে পারেনা, আর এই লুপহোলটা পুরোপুরি ধর্মের পক্ষে গিয়েছে।
কয়েকদিন আগে বান্দরবানে পাহাড় পর্বত ডিঙ্গিয়ে আসলাম। যেকোন বিপদজনক ঢাল বা গিরিপথ অতিক্রম করার সময় আমার সহযাত্রীগণ তাদের সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করছিল এবং ‘তিনি’ আছেন এই বিশ্বাসটা তাদেরকে বেশ মনোবল সরবরাহ করছিল।কিন্তু আমার ক্ষেত্রে আমার সাথে কেউ ছিল না।কোন গায়বি বিশ্বাস ছিল না আমার অদৃশ্য মনোবল বাড়াতে। এই দিক থেকে চিন্তা করলে সত্যসন্ধানী মানুষগুলো কিন্তু বেশ একাকি এবং শেষ পর্যন্ত নীরস সেই কনক্লুশনঃ মিনিংলেস পারপাজ…………………
ভালো লেগেছে লেখাটি।
@আমি কোন অভ্যাগত নই, ‘মিনিংলেস পারপাস’ শব্দদুটোর পর অনেকগুলো …. দেখে কিছুটা হতাশা আঁচ করতে পারছি। এই যে আমাদের নশ্বর জীবন নিয়ে হতাশা এইটা আমরা করছি মূলত এর অল্টারনেটিভ হিসেবে ধর্ম মনগড়া কিন্তু জাঁকজমক মোড়কে আমাদের অবিনশ্বর জীবনের সন্ধান দেয়।
তবে সবকিছু মিলিয়ে স্রষ্টা সব দেখছেন, স্রষ্টা আমার প্রতি খেয়াল রাখছেন এই ধারণাগুলি সবসময় খুব লাভজনক হয়না। আমি যেহেতু বিশ্বাস করিনা পারলৌকিক কোন শক্তির অস্তিত্বে, পার্থিব জীবনে আমি সাফল্য-ব্যর্থতা নিজের উপরই চাপাই, পক্ষান্তরে বিশ্বাসীদের দেখেছি ভাগ্যকে দোষারোপ করে এক্সকিউজ খুঁজতে অনেক সময়। অজুহাত খোঁজার প্রবণতা থেকে বের হতে না পারলে পেশাগত জীবনে সফল হওয়াও কঠিন বলেই মনে করি।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
@রিজওয়ান, হুম। Prosaic Truth is always better than colorful chimera! (Y)
@আমি কোন অভ্যাগত নই,
ভাই, যখন বন্ধুরা সবাই মিলে কোথাও বেড়াতে যাবেন, তখন যদি কোন বিপদে পড়েন, তখন মনে মনে একটা কথাই শরণ করবে, মরলে আমি একা মরব না, সবাই মিলেই মরব। ওই সময় দেখবেন, সবচেয়ে সুখে আছেন, আপনি। :lotpot:
@(নির্জলা নির্লজ্জ), :))