কফিল কাঙ্গাল।
ধর্মের ভয় নাস্তিকরা সত্য কথা কয়!
ধর্মের ভয় যদি তঞ্চকতা প্রকাশ পায়!
ধর্মের ভয় নাস্তিকরা যুক্তি দিয়ে কথা কয়!
ধর্মের ভয় নাস্তিকরা যুক্তির বাইরে মুক্তির (ধর্মের) পথে যেতে নাহি চায়!
ধর্মের ভয় নাস্তিকরা অনন্ত নরক-জ্বালার করে নাকে ভয়!
ধর্মের ভয় নাস্তিকরা জানতে চায়, কেবলই প্রশ্নাস্ত্র চালায়!
ধর্মের ভয় নাস্তিকরা প্রশ্ন করতে শেখায়!
ধর্মের ভয় নাস্তিকরা কেন এতো সত্যবাদি হয়!
ধর্মের ভয় নাস্তিকদের হাতে বুঝি প্রাণ যায়!
ধর্মের ভয় নাস্তিকদের হাতে নাস্তানাবুদ হতে হয়!
ধর্মের ভয় সমালোচনায় কুসংস্কার প্রকাশ পায়!
ধর্মের ভয় নাস্তিকরা এতো শেখে কোথায়!
ধর্মের ভয় এই বুঝি মান-সম্মান যায়!
ধর্মের ভয় নাস্তিকরা যদি গোমড় ফাঁস করে দেয়!
ধর্মের ভয় নাস্তিকরা ধর্ম ত্যাগ করে বিজ্ঞানের গান গায়!
ধর্মের ভয় নাস্তিকরা অলৌকিতা পরিহার করে বাস্তবে বিশ্বাসী হয়!
তাই তো খড়গ উচিয়ে সিংহাসনে উপবিষ্ট আছেন মহান ঈশ্বর মশায়!
জ্বালিয় রেখেছে আগুন, রেখেছে উপ্তত কড়াই!
বিষাক্ত সর্পের ভয় দেখিয়ে শাসাচ্ছে, ক্রুদ্ধ দয়াময়!
দেখাচ্ছে লোভ যদি করো ধর্ম পালন মিলবে সেথায় তন্বি-হুরি ডাগর আঁখি!
আস্তিকরা নাস্তিকদের সব সময়ই শত্রু মনে করে এবং হত্যা করতে প্রস্তুত থাকে। কিন্তু সত্যিকারার্থে নাস্তিকরা তো কোন ধর্মের বিরুদ্ধে নয়। তারা কেবলমাত্র ধর্মের কুসংস্কারের বিরুদ্ধে অর্থাৎ সত্যের পক্ষে। সেহেতু ধর্ম যদি সত্য হয় তাহলে ধর্মের এতো ভয় কেন? আস্তিদের বলছি, আসুন, অস্ত্র রেখে, ফতোয়া ছেড়ে, হুমকি-ধামকি ভুলে কেবলমাত্র খোলাখুলিভাবে নাস্তিকদের সাথে কলমযুদ্ধ বা তর্কবিতর্কে অংশগ্রহণ করুন? আক্রামানত্মক ভাষা, অশালীন কথাবার্তা/অঙ্গভঙ্গি, ভয়ভীতি… ইত্যাদি বর্জন করুন এক টেবিলে বসুন। ধর্মপুস্তকের প্রতিটি লাইনের সঠিক ব্যাখ্যা করুন, দেখুন কতোটি লাইন আছে যেখানে মানুষের প্রকৃত ধর্ম (মাবতা) লংঘন করা হয়নি? কতোটি লাইন আছে যেখানে ভূতড়ে কাহিনী এবং কুসংস্কার নেই?
অতএব, আস্তিকদেরকে অনুরোধ জানাচ্ছি, অস্ত্র ছেড়ে যুক্তিতর্কের মাঠে আসুন, প্রতিজ্ঞা করুন, নিরাপত্তা গ্যারান্টি দিন, নাস্তিকদের যুক্তিগুলো কেবলমাত্র যুক্তি দিয়েই খণ্ডন করবেন, অস্ত্র দিয়ে নয়। গ্যারান্টি দিন, কাপুরুষের ন্যায় গোপনে এবং অতর্কিতভাবে হত্যা করে নয়, অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে নয়, বেহেশতে যাবার লোভে আত্মঘাতি হয়ে কাফের হত্যা নয় বরং যুক্তিতর্কের মাধ্যমে তাদের সমালোচনার জবাব দিন। কোন পুরোহিত/মোল্লা বা কোন ধার্মিক ধর্ম গেলো, ধর্ম গেলো বলে উত্তেজনা ছড়াবেন না, হত্যা, লুটপাটে মত্ত হবেন না, ফতোয়া দেবেন না, তাদের বিচারের ভার কেবলমাত্র ভগবান/আল্লা/ঈশ্বরের উপর ছেড়ে দেবেন। যদি আপনারা অর্থাৎ ধার্মিকেরা নাস্তিকদের সমালোচনার সুন্দর, সঠিক, যুক্তিপূর্ণ জবাব দিতে পারেন তাহলে পৃথিবীর সব নাস্তিকই আস্তিক হয়ে যাবে। কারণ নাস্তিকরা কখনোই পরগাছা নয়, তারা অপরের বুদ্ধিতে চলে না, আস্তিকদের ন্যায় কোনকিছুই প্রশ্নহীভাবে গ্রহণ করে না, এটাই চিরন্তন সত্য। তাই শুধু একবার ভন্ডামির আশ্রয় না নিয়ে সিত্যকারের গ্যারান্টি দিন যে, নাস্তিকরা ধর্মের কুসংস্কারের ব্যাপারে যা বলছে তার জন্য তাকে কোনরূপ শারীরিক আঘাত করবেন না, হত্যা করবেন না, হত্যার ফতোয়া দিয়ে দেশছাড়া করবেন না, ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়ে নাস্তিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অজুহাত এনে মামলা মোকদ্দমা করবেন না…। তাহলেই কেবল নাস্তিকরা আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে যুক্তিতর্কের মধ্যেই আপনাদের চোখ খুলে দিতে পারবে ১০০% গ্যারিন্টি। এ প্রস্তাবটি রাখলাম কারণ মুখে যে যা-ই বলুক না কেন, জীবনের মায়া সব প্রাণীরই আছে।
মূলত আপনারা যারা নিজেদের ধার্মিক মনে করেন আপনাদের প্রধান সমস্যাই হলো ধর্মপুস্তক পড়েন না। পড়লেও বুঝেন না, বুঝলেও ধর্ম খাটো হয়ে যাবে, বিশেষ করে অন্য ধর্মের চেয়ে নিজের ধর্ম ছোট হয়ে যাবে এই ভয়ে সত্যকে গ্রহণ করতে চান না। ৯৯.৯৯% ধার্মিকই লোকমুখে বা পাদ্রি/হুজুর/ঠাকুরদের কাছ থেকে শুনে শুনেই বিশ্বাস করেন অর্থাৎ যা-ই শোনেন (ধর্মীয় মিথ কিংবা ধর্মীয় বাণী) তা-ই সত্য বলে বিশ্বাস করেন। অন্যদিকে নাস্তিরা তা করে না, তারা প্রশ্ন করে, যাচাই-বাছাই করেই তা গ্রহণ বা বর্জন করে। কারণ সত্য যেখানে একের অধিক অর্থাৎ দুইরকমই হয় না সেখানে প্রত্যেকেই নিজ নিজ (হাজারও ধর্ম) ধর্মকে সত্য বলে দাবি করেন? ধর্ম সম্পর্কে নাস্তিকরা প্রকৃত সত্যই জানে এবং তা জানে ধর্মগ্রন্থগুলো পাঠ করেই অন্য কোথা থেকে নয়। উগ্রতা বর্জন করে চ্যালেঞ্জে আসুন ধর্মপুস্তক থেকেই আপনাদের উত্তরগুলো দেয়া হবে কেন নাস্তিকরা ধর্ম বিশ্বাস করে না, ধর্মের কি কি মানবতাবিরোধী, কুসংস্কারপূর্ণ এবং কেন, এবং এর কতোটুকুই বা গ্রহণযোগ্য। অন্য কোন বইয়ের রেফারেন্স প্রয়োজন নেই।
খোঁজখবর নিয়ে যতোটুকু জেনেছি তাতে অনুমান করতে পারি ৯৯.৯৯% লোকই ধর্মপুস্তক না পড়েই নিজ নিজ ধর্মকে মহৎ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ বলে বিশ্বাস করে। অথচ নাস্তিকরা ধর্মপুস্তক পুঙ্খানুপুঙ্খ পড়েই না নাস্তিক হয়েছে। কেউ নাস্তিক বা আস্তিক হয়ে জন্ম নেয় না, জন্ম নেবার পর মুখে বোল ফোটার সাথে সাথেই তাকে অন্যসব শিক্ষার আগেই সর্বপ্রথম আস্তিক বানানো হয় অর্থাৎ প্রত্যেকেই জন্মসূত্রে আস্তিক। প্রশ্ন, তাহলে তারা নাস্তিক হয় কেন? কারণ, এসব আস্তিকদের নাস্তিক হওয়ার জন্য একমাত্র দায়ী ওই ঈশ্বীবাণী বা ধর্মপুস্তকগুলোই! ধর্মপুস্তকগুলোর বাইরে অন্য কোন পুস্তক পড়ে কিন্তু নাস্তিকরা মোটেই নাস্তিক হয়নি হতে পারেও না। তাই আস্তিকদের অনুরোধ করছি মনোযোগ দিয়ে ধর্মপুস্তক নিজে পড়েন, পাদ্রি/ঠাকুর/হুজুরদের কথামত এটা বিশ্বাস করার দিন আর নেই যে ওগুলোতে যা লেখা আছে তা কেবল ঈশ্বর/ভগবান/আল্লা… এরা জানেন। কেন আপনার নিজের জ্ঞান নেই, বিদ্যা-বুদ্ধি নেই একটু সামান্য মগজ খাটালেই স্পষ্ট হয়ে যাবে ওগুলোতে কি লেখা রয়েছে। আরো অনুরোধ, ওগুলো পাঠ করলেই হবে না, পাঠের সাথে সাথেই প্রশ্ন করতে হবে কেন ঈশ্বর/ভগবান/আল্লা… এসব বলেছে? অর্থাৎ শুধুমাত্র আমাদের ধর্মের লোকেরাই শ্রেষ্ঠ অন্যরা কাফের, কেন কাফের মারলে সোয়াব হবে, কেন অন্য ধর্মের লোকদের বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবো না, কেন যুদ্ধের জন্য সদা প্রস্তুত থাকতে হবে, যুদ্ধ একটি মানবতাবিরোধী এবং অন্যায় কাজ অথচ তাও ঈশ্বর/ভগবান/আল্লা… সমর্থন করছে কেন? কারণ তাদের তো অসীম ক্ষমতা মুখেই যদি হও বলে সব হয়ে যায় তাহলে তরবারি দিয়ে আঘাতের প্রয়োজনটা কি? সামান্য কিছু আস্তিকরা নিজেরা ধর্মপুস্তক পাঠ করেন কিন্তু বোঝেন না, বুঝলে পুরোপুরি নাস্তিক না হলেও অবশ্যই সংশয়বাদী হবেনই। নাস্তিদের সমালোচনাগুলো না পড়েই বা পড়ার আগেই উত্তেজিত না হয়ে দেখুন, এর মধ্যে সত্য আছে কিনা? পৃথিবীর সমস্ত বিষয়েরই দুটি দিক আছে একটি খারাপ এবং অপরটি ভালো। ধার্মিকরা মনে করেন ধর্মের মধ্যে অর্থাৎ ধর্মপুস্তকে যা আছে সবই ভালো কোন খারাপ কিছু নেই, এটাই ধার্মিকদের মূর্খতা। ধর্মেরও দুটি দিক স্পষ্ট একটি খারাপ বা মানবতাবিরোধী অন্যটি ভালো। তবে বর্তমান পৃথিবীতে অন্য সব বিষয়ের চেয়ে ধর্মের খারাপ দিকগুলোই মানব সমাজের জন্য প্রচণ্ড রকমের বিড়ম্বনা। নাস্তিকরা কেবল ধর্মের সেই খারাপগুলোই তুলে ধরে, আপনি বিশ্বাস না করলে তারা অস্ত্র নিয়ে নামবে না কিন্তু আপনারা অস্ত্র হাতে সদা উত্তেজিত। ধর্মের খারাপ দিকগুলোর মধ্যে ঘৃণাই সবচাইতে মারাত্মক অস্ত্র। তাই এটি নিয়ে কিছুটা আলোকপাত করা যাক। ধর্মগুলো যেরূপ ঘৃণা মানুষের মনে জন্ম দিতে পারে সেরূপ ঘৃণা অন্য কোন শাস্ত্র/বিষয়ও দিতে পারে না। এর জন্য কোন প্রমাণের প্রয়োজন নেই, কেবলমাত্র পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরাকের… শিয়া-সুন্নির নিত্য হত্যাযজ্ঞ দেখুন। একই ধর্মালম্বী হয়েও এরা কত ঘৃণ্য ও জঘন্য শিক্ষা পেলে মসজিদের নামাজরত অবস্থায় অথবা শবযাত্রাকালে আত্মঘাতি হামলা চালাতে পারে? আর এ শিক্ষা তাদের দেয়া হয় জন্মের পরেই বোল ফোটার সাথে সাথেই, যা সারা জীবনেও ভোলে না। এরূপ কাজ করা দূরে থাক নাস্তিকরা তা কল্পনাও করতে পারে না।
অপরদিকে একজন নাস্তিক কখনো তার সন্তানকে ঘৃণা শিখায় না, শিখাতে পারে না কারণ নাস্তিদের ধর্ম হলো মানবতা যার উপরে কোন ধর্ম নেই অথচ একজন ধার্মিক তার সন্তানকে শেখায়, তুমি অন্য ধর্মের ছেলেমেয়েদের সাথে মেলামেশা করো না, তারা বিধর্মী, যেমন আমার এক খ্রীস্টান বন্ধুর মেয়ে ৩য় শ্রেণীতে পড়ে তার বেশিরভাগ খেলার সাথীরাই মুসলিম। একদিন খেলতে গেলে তারা তাকে বলছিলো, তোরা খৃস্টান কেন? মুসলমান হলো ভালো ধর্ম, খৃস্টান কোন ধর্মই নয়। মেয়েটি তার বাবাকে এসে একথা বললে বাবাও তাকে বললো, ওরা ভুল বলছে, মুসলমানেরা খুব খারাপ ওদের সাথে মিশবে, খেলবে কিন্তু ওদের কথা বিশ্বাস করবে না। এটি একটি সত্য ঘটনা। তাহলে এবার বিচার করুন ওই মুসলিম ভদ্রলোক বা তার পরিবার এবং খ্রীস্টান বন্ধুটি দু’জনের শিক্ষাই কি ঘৃণ্য এবং জঘন্য। অর্থাৎ নিজ নিজ সন্তানদের কচি মনে কি বিষ বৃ রোপণ করে রাখলো তা নিজেরাও জানে না! বড় হয়ে তারা আজীবন তা বহন করতে বাধ্য; যদি কিনা তারা ভবিষ্যতে নিজের ধর্মগ্রন্থ সঠিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ আকারে না পড়ে তাহলে তাদের ঘৃণা আরো বাড়তেই থাকবে। তারা তাদের ধর্মপুস্তক পড়বেও না কারণ তারা সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম পালন করছে এবং তারা ছাড়া কেউ বেহেশতে বা স্বর্গে যাবে না এটা সেই বাল্যকালেই তাদের হৃদয়ে গেঁথে দেয়া হয়েছে আর পড়েটরে কি হবে এ বিশ্বাসই তো তাদের সেখানে নিয়ে যাবে! আরেকটি সত্য ঘটনা বলছি, একসময় প্রতিবেশী হিন্দুরা কুমির পূঁজা করতো এখন সেটা করে না। আমার সমবয়েসী কিছু দুষ্ট ছেলে প্রতিবছরই চুপি চুপি গিয়ে কুমির ভেঙ্গে দিয়ে আসতো। কোন কোন সময় পূঁজার পরে আবার কখনো পূঁজার আগের রাতেই এক কাজটি করতো। পূঁজার দিন ভোরে ভাঙ্গা কুমির দেখে তাদের সে কি আজহারি! নিরূপায় হয়ে ভাঙ্গা দেবতার সামনেই পূঁজা সারতে হতো। ভাঙ্গা দেবতা দেখে ওরা প্রতিবেশী মুসলমানদেরই সন্দেহ করতো (আমিও জানতাম এটা ওদেরই কাজ, তবে কিছু বলতাম না)। ওদের বাবা-মাও জানতো অথচ হিন্দুরা প্রতিবাদ করলে বাবা-মাসহ বয়স্করা তাদের মালাউন, নোম-কাফের, বেশি বাড়াবাড়ি করলে খুন করে ফেলবো… ইত্যাদি বলে গালিগালাজ করতো অথচ নিজের ছেলেদের শাসন করতো না। ফলে এরূপ কাজে তারা গর্ব করতো, আনন্দ পেতো এতে কোমলমতি ছোট্ট ছোট্ট ছেলেরা ভাবতো তারা একটি মহৎ কাজ করেছে (আমিও তাই ভাবতাম)। অথচ তাদের পিতা-মাতা, আত্মীয়স্বজনরাও খাঁটি ধার্মিক ছিলেন। এখন মানব ধর্ম গ্রহণ করার পর, এ অন্যায় ঘটনাটি মনে পড়লে প্রচণ্ড লজ্জাবোধ করি, নিজেকে অপরাধী মনে হয়, ধিক্কার দেই কেন সেদিন এর প্রতিবাদ করিনি, কেন বলিনি ওটা ভেঙ্গে ওদের দুঃখ দেবার অধিকার আমাদের নেই! তখন বুঝিনি কারণ ছোট ছিলাম এবং ধার্মিকও ছিলাম। আমি ১০০% নিশ্চয়তা দিতে পারি, কোন নাস্তিক (মানব ধর্মের অনুসারী) কখনোই এমন ঘৃণার কাজ তাদের সন্তানদের শেখাবে না। সন্তানরা এটি করলেও অবশ্যই শাসন করবে কিন্তু ধার্মিকরা তা করে না (কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া)।
সুতরাং নাস্তিকদেরও ধর্ম আছে তবে সেটা আস্তিকদের মতো উচ্ছৃংখল কোন ধর্ম নয়। এ ধর্ম পৃথিবীর সবচাইতে শ্রেষ্ঠ ধর্ম। এ ধর্মে কোন ঘৃণা নেই, ধর্মগুলোর বিরুদ্ধে ফুসফাস ছাড়া (অর্থাৎ প্রতিটি ধর্মকেই তারা সমালোচনা করে) আস্তিদের ন্যায় অস্ত্রহাতে হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে না। বলে না যে আমার ধর্ম গেলো… ধর শালকে, মার শালাকে…। শালারা কেন আমার মানবিক ধর্মে আঘাত করেছে। আস্তিদের ন্যায় চিৎকার করে না যে, আমার মানবানুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে। নাস্তিকদের এ মহৎ ধর্মে কোন শ্লোগান নেই যে, “একটা একটা আস্তিক ধর, সকাল বিকাল নাস্তা কর।” নাস্তিক ধর্মের (মানবতার) সবচাইতে বড় আদর্শ হলো, নৈতিকতা। নীতি-নৈতিকতার চাইতে বড় পৃথিবীতে আর কি হতে পারে? তার মানে এই নয় যে, ধর্মগুলোতেও নৈতিকতা নেই। আছে তবে নৈতিকতার চাইতে ঘৃণা, অহংকার, উত্তেজানার… আধিক্যই বেশি। অপরদিকে আস্তিকদের চেয়ে নাস্তিকদের লোভ কম, অতি সামান্য অর্থাৎ খোরপোষ পেলেই খুশি। কারণ তারা জানে মৃত্যু অবধারিত আর মৃত্যুর পর কাউকে অর্থাৎ কোন ঈশ্বর/আল্লা/ভগবান/গডদেরকে… কোনরূপ জবাদিহি করতে হবে না, বেহেশত/স্বর্গে যাবে না কারণ তা নেই। ঈশ্বর/গড ওসবও নেই। অতএব তারাই নীতিধর্ম, বিবেকবোধ সম্পন্ন পূর্ণাঙ্গ এবং খাঁটি মানুষ (ব্যতিক্রম থাকতে পারে যেমন আছে আস্তিকদের মধ্যেও)। অপরদিকে ধর্ম যেখানে তার অনুসারীদের বিভিন্নরকমের প্রলোভন দেখায়, ভয় দেখায় এটা করো, ওটা মানে, নাস্তিদের কেটে ফেলো ইত্যাদি… নাহলে তুমি বেহেশ/স্বর্গে যাবে না। নাস্তিকদের সেসবের বালাই নেই। কারো ভয়ে তারা কিছু করে না, অর্থাৎ ঈশ্বর/আল্লা/ভগবান… এদের নরক/দোযখের ভয়ংকর নির্যাতনের ভয়ে লোকদেখানো ধর্মকর্ম করে না, আবার কোন প্রকার অন্যায়ও করে না। অথচ প্রায় প্রতিটি ধর্ম যেখানে এর অনুসারীদের পরিষ্কারভাবে বলেছে, তোমরা লোভ করো না, পৃথিবী তোমাদের জন্য চিরস্থায় নয়, ধন-সম্পদ লুটেপুটে জমা করো না কারণ এতে ঈশ্বর/আল্লা/ভগবান অখুশি হয়, তারা তোমাদের শাস্তি দেবে… ইত্যাদি এরপরেও কি ধার্মিক বা আস্তিকদের মধ্যে নাস্তিকদের চেয়ে দুর্নীতি ও ধন-সম্পদের লোভ-লালসা, অপকর্ম… কম হচ্ছে? কখনোই না। বিশ্বাস না হলে গবেষণা করে দেখুন, ফল হাতেনাতে পাবেন।
নাস্তিকরা কখনোই কারো ধর্ম পালনে বাধাও দেয় না। কাউকে জোর করে না যে, তুমি মসজিদ/মন্দিরে যেও না, ওখানে ঈশ্বর/ভগবান/আল্লা নেই। কেবলমাত্র আস্তিকরা যেমন বিশ্বাস করে ওখানে ঈশ্বর/ভগবান/আল্লা… আছে নাস্তিকরা তা বিশ্বাস করে না। কোনকিছুতে বিশ্বাস করা না করা সম্পূর্ণ নিজের ব্যাপার। অতএব নাস্তিকদের বিশ্বাস নীতিতে এবং তারা সেটা পালন করে যদি একজন খাঁটি ধার্মিক না হয়ে খাঁটি মানুষ হয় তাহলে সমাজের বা রাষ্ট্রের ক্ষতি কি? একজন ভন্ড আস্তিক না হয়ে যদি প্রকৃত নাস্তিক হয়, তবে সে সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য কতোবড় আশির্বাদ তা সেই সমাজ ও রাষ্ট্রই জানা আছে, যে সমাজে ও রাষ্ট্রে এরূপ বহু নাস্তিক বাস করে। কেবলমাত্র বাংলাদেশের ন্যায় তৃতীয় বিশ্বের মানুষই নাস্তিকদের রক্ত পান করতে চায় কিন্তু যারা নাস্তিকদের সাথে ঘনিষ্টভাবে মেলামেশা করে তারা জানেন যে, আচারে-ব্যবহারে আস্তিকের চেয়ে নাস্তিকরাই শ্রেষ্ঠ। কারণ তারা কখনো মিথ্যা বলে না, অন্যায় করে না, অন্যায়কে প্রশ্রয়ও দেয় না, ছলনার আশ্রয় নেয় না, যা সত্য তা বলে, যা বোঝে না বা জানে তা নিয়ে তর্ক করে না, লোভ করে না, অতি লাভ করে না, খাদ্যদ্রব্য গুদামজাত করে দাম বাড়িয়ে দেয় না…। অথচ আস্তিকরা কি করে? রোজা বা কোরবাণীর সময় এলেই এটা টের পাওয়া যায়। এদেশের প্রায় ১০০% আস্তিক ব্যবসায়ীরা কয়েক বছরের লাভ ওই একমাসেই আয় করে। রোজার মাসের পত্রিকাগুলো পড়লেই আমার বক্তব্যের প্রকৃত চেহারা ফুটে উঠবে।
যাহোক প্রশ্ন উঠতে পারে নাস্তিকরা আস্তিকদের ধর্মের তি করছে কি-না? উত্তর না। কারণ ধর্ম যদি সত্য হয় তাহালে এর ক্ষতি করা কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। যা প্রকৃত/খাঁটি বা পরীক্ষিত সত্য তা ক্ষতির সম্মুখী হতে পারে না অর্থাৎ তা কোনকিছুতেই ধ্বংস হতে পারে না, যদি ধ্বংস বা ক্ষতি হয় তাহলে তা প্রকৃত সত্য নয়; হতে পারে আংশিক সত্য অথবা সম্পূর্ণ অসত্য। নাস্তিকরা ধর্ম নিয়ে পড়াশোনা করে এবং ভুলত্রুটি তুলে ধরে বিশেষ করে বিভিন্ন ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। প্রকাশ্যে পারছে না কারণ ধর্মের হাতে রয়েছে মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র যা নাস্তিদের হাতে নেই, থাকলেও নাস্তিকরা তা ব্যবহার করবে না কারণ তারা রক্তপাতে বিশ্বাসী নয়, কিন্তু ধর্ম রক্তপাতে বিশ্বাসী। কথিত ও বহুল পুঁজিত স্বয়ং ধর্মগুলো সৃষ্টিকারী ঈশ্বর/ভগবান/আল্লা… এরাও রক্ত পছন্দ করে! যাহোক, নাস্তিকরা ব্লগে কেন লিখে এর বিস্তারিত বলার প্রয়োজন নেই কারণ প্রত্যেকের ঘাড়ে একটাই মাথা। আস্তিকরা হুমকি দেন, কেন তাহলে চোরের ন্যায় গোপনে লেখালেখি করা প্রকাশ্যে করুন না দেখি না কেমন শক্তি সাহস? নাস্তিকরা প্রকাশ্যে লেখালেখির কোন প্ল্যাটফরম পাচ্ছেন না বিধায় ব্লগে লিখতে বাধ্য হচ্ছে। একমাত্র উন্নত বিশ্ব ছাড়া প্রকাশ্যে কোন রাষ্ট্র বা সরকার এটা করতে দেবে না। যদি ধর্মীয় রাষ্ট্রের (লিখিত কি অলিখিত, যেমন আমাদের দেশ অলিখিত ধর্মরাষ্ট্র) কোন সরকার একবার এ সুযোগটি দেয় এবং বলে যে নাস্তিকরা যা গোপনে লিখছে তা প্রকাশ্যে লিখুক নিরাপত্তা তারা দেবে, তাহালে নাস্তিকরা অবশ্যই প্রকাশ্যে লিখবে এবং প্রমাণ করে ছাড়বে যে তারা যা লিখছে এবং ভাবছে তা অত্যন্ত অত্যন্ত অত্যন্ত বাস্তব এবং চির সত্য কথা। কারণ কখনোই কোন প্রকৃত নাস্তিক তার মতাদর্শ বিকিয়ে দিয়ে অবাস্তব, অসংলগ্ন, ভৌতিক, গাজাখুরি, অলৌকিক… কোন যুক্তিতর্ক উত্থাপন করবেন না। প্রকৃত নাস্তিকরা কাউকে আঘাত করে না, ধৈর্য ধরে বুঝায়, নিজের ভুল হলে বুঝতে পারার সাথে সাথেই মা চেয়ে নেয়। কিন্তু প্রকৃত ধার্মিকরা তা করেন না নিজের ভুল স্বীকার করতে তারা লজ্জা পায়, কারণ পাছে তাদের ঈশ্বর/ভগবান/আল্লা কষ্ট পাবে, রাগ হবে, অভিশাপ দেবে, দোযখে পাঠাবে, আগুনে পোড়াবে… সেই ভয়ে একটি অন্যায় ঢাকতে আরো হাজারো অন্যায় করে যায়। প্রকৃতপক্ষে আস্তিকরা ভয় পায় এতোদিনের বিশ্বাস গর্বের ধর্ম নাস্তিকদের যুক্তির কাছে হেরে গেলে মান-সম্মান তো আর বজায় থাকবে না, তাই যুক্তিটুক্তির ধার ধারি না, কোপ মার সামছু আমি আছি তোর বেহেশত/স্বর্গদাতা!
অন্যদিকে নাস্তিকদের অন্যায় হলে ক্ষমা চাইতে হয় না কোন ঈশ্বর/ভগবান/আল্লার কাছে কিন্তু তারা ক্ষমা চায় নিজের বিবেকের কাছে, দুঃখ পায়, কষ্ট পায় নিজেকে এরূপ অন্যায় হতে সরিয়ে রাখে, একই অন্যায় দ্বিতীয়বার আর করে না। ভুলেচুকে নতুন করে কোন আন্যায় করে ফেললে পূর্বের ন্যায় বিবেকের দংশনে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে নেয়। অথচ আস্তিকারা পুনপুন একই অন্যায় করে এবং ঈশ্বর/ভগবান/আল্লার কাছে ক্ষমা চেয়ে নেয়। এরপর নতুন নতুন আরো অন্যায়ের সাথে সেই একই অন্যায় চালিয়ে যায় এবং বারংবার তাদের ঈশ্বর/ভগবান/আল্লার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিতে থাকে, এভাবেই চলে তাদের অন্যায়ের মহড়া। অথচ নাস্তিকদের সে সুবিধা নেই। কারণ নাস্তিকদের নেই কোন পূণ্যস্থান যেখানে গিয়ে গঙ্গাস্নান, হজ্জ্ব, ইস্তেমা… ইত্যাদি করে পুনপুন (প্রতিবছরই) পাপমোচন করে আসবে। ঈশ্বর/ভগবান/আল্লা এদের অনুসারীদের এমনই কিছু সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে যার ফলে তাদের অনুসারীরা পুনপুন অন্যায় করে পুনপুন ক্ষমাও পেয়ে যায়। প্রায় প্রতিটি ধর্মের এই নিয়মটি আসলেই চমৎকার! যার ফলে অন্যায়কারী পুনপুন অন্যায় করতেই থাকে আর হজ্ব-ওমরাহ-ইস্তেমা-সাধু-সন্ন্যাসির আখড়া, গয়া-কাশি-বৃন্দাবন-জেরুজালেম ঘুরে আসে, চাঁদা দিয়ে ঈশ্বর/ভগবান/আল্লার… ঋণ (পাপ) শোধ করে দেয়। অতএব বড় বড় অন্যায়কারী যতো বাড়ে, ঈশ্বর/ভগবান/আল্লার… আয়ের পরিমাণও ততো বাড়ে। ফলে নতুন করে পরবর্তী বছর আবার সেখানে গিয়ে চাঁদা দিয়ে যে পাপ ধুতে হবে সে পাপটুকু এবছর না করলে কি চলে! পাপই যদি না করলাম তাহলে কি ধোব সেখানে গিয়ে, পাপই যদি না করলাম সেখানে গিয়ে শুধু শুধু চাঁদা দিয়েই বা লাভ কি? পাপ করেছি বলেই তোমার পূণ্যিস্থানে আসা, পাপ ধুয়ে গেছে বলেই তো নতুন করে আবার পাপ করা! পাপ করবো আবার ধুয়ে ফেলবো এরূপ নিয়ম নাস্তিকাতায় নেই। নাস্তিকতায় আছে (পাপ বলতে যা বোঝায়) তা করবোই না অতএব ধোয়ার প্রয়োজনও নেই অথবা বলা যায়, নাস্তিকতায় পাপ ধোয়ার স্থান নেই বলেই তারা পাপ করে না কিন্তু ভুলে করে ফেলেও একই পাপ বারে বারে করে না। অর্থাৎ ধরুন একজন খাঁটি দুর্নীতিবাজ যেমন (এদেশের বহু রাজনীতিবিদ তথা বদনীতিবিদরা) দুর্নীতির সাথে সাথে ইমামতিও করে, বারে বারে হজ্জে যায়, ফিরে এসে আবার দুর্নীতি করে পরের বছর আবার যায়। আমি একজনকে চিনি, যিনি তিনবার হজ্জ করেছেন আগামী বছর আবার যাবেন বলেছেন। কেন এতো হজ্জে যাওয়া এবং টাকাগুলো সৌদী সরকারকে দেয়া? এর উত্তর ধার্মিকরাই ভালো দিতে পারবেন। অথচ এই অর্থ দিয়ে বাংলাদেশের কয়েক হাজার অভুক্ত মানুষের ব্যবসায়ের পুঁজি জুগিয়ে এখানে বসেই তো ঈশ্বর/ভগবান/আল্লার পূণ্যি বোধকরি বেশি লাভ করতে পারতো। অথচ তা না করে বারো বারে অন্যায় করছেন আর পাপমোচনের জন্য হজ্জ্বে যাচ্ছেন। গণহত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণকারী রাজাকারগণও এ বিশ্বাসে বিশ্বাসী যে খোদা/আল্লা/ভগবান… এদের পাপ ধুয়ে ফেলেছে কারণ বোধকরি এদের শিরোমনিরাও কয়েকবার তীর্থস্থানে গিয়ে ক্ষমা নিয়ে এসেছে। পাপ মোচনের এতো সোজা রাস্তা থাকলে কেউ কি পাপ (অর্থ-সম্পদের লোভ) না করে থাকতে পারে? বিশেষ করে ধর্মই যখন পাপ ধোয়ার বিধান দিয়েছে, তখন পাপ না ধুয়ে কেন থাকবো?
অতএব একজন খুনি একজন লুটেরা অন্যায় করবে আর তীর্থস্থানে গিয়ে ধুয়ে ফেলবে অথচ একজন নাস্তিকের তো সে কায়দা নেই। তাই নাস্তিকরা ভেবেচিন্তে কাজ করে যাতে কারো প্রতি অন্যায় করা না হয়, এর ব্যতিক্রম যে নেই তা নয়। আমি বেশিরভাগ নাস্তকিদের দেখেছি জেনেশুনে কারো প্রতি অবিচার করে না। ধার্মিকদের মধ্যে এমনও ধার্মিক আছে যারা অন্যায় করেন না করলেও স্বীকার করেন এবং ক্ষমা চেয়ে নেন, তবে আমাদের সমাজে এরা মাইক্রোস্কোপিং। কিন্তু বেশিরভাগ খাঁটি বা আধা-খাঁটি বা নামমাত্র আস্তিক অর্থাৎ প্রায় সব আস্তিকদেরই একটি বিশাল দুর্বলতার স্থান রয়েছে যেখানে সামান্য আঘাত পেলেই তারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে যায়, চরম উত্তেজিত হয়ে পড়ে। হোক না সে বিশাল মাপের বিদ্বান, হোক না সে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান/বৈজ্ঞানিক/বুদ্ধিজীবী/ বিচারক/উকিল/ ডাক্তার-মোক্তার… ইত্যাদি। আর এই সামান্য আঘাতটুকু হলো ধর্মকে কথিত অপমান করা! যদি প্রশ্ন করেন কি অপমান বা কি অপকার করা হয়েছে, এরূপ বিদ্বান লোকেরা কিন্তু এর কোন সদুত্তর দিতে পারবে না। এর ভুরি ভুরি প্রমাণ দিতে পারবো। সময় ও স্থানাভাবে দুটি দিচ্ছি, সাম্প্রতিক রামু-উখিয়ার বুদ্ধপল্লী এবং মন্দিরে হামলা এবং অতি সম্প্রতি মানিকগঞ্চে ৫ জন নিহত হওয়ার ঘটনাই যথেষ্ট। রামু-উখিয়ায় খাঁটি ধার্মিকদের কান চিলে নিয়েছিলো কিনা তা আমরা জানি। তবে সেখানে এক বিধর্মীর কথিত অপকান্ডে ছুতায় মুমিন বান্দারা (আওয়ামী-বিএনপি-জামাত… এমন কি প্রশাসন পর্যন্ত তখন নিরব ছিলো) যা ঘটিয়েছে তা ’৭১-কে মনে করিয়ে দেয়। মানিকগঞ্জে হরতাল আহ্বানকারীরা মাইকে ঘোষণা দিয়ে বলেছিলো, আওয়ামী লীগ এবং পুলিশ মসজিদ দখল করে নিয়েছে, (http://www.kalerkantho.com/?view=details&type=gold&data=news&pub_no=1165&cat_id=1&menu_id=13&news_type_id=1&index=7) আর যায় কোথায় দুই-চার গ্রামের লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ বন্দুক-বোমা নিয়ে ঝাপিয়ে পড়লো (যে যেভাবে, যেদিকে যাকে পেলো, তার উপর)… একে কি কোন বুদ্ধিমানদের কাজ বলবেন? কানে হাত দিয়ে দেখারও সময় নেই যে কান আছে কিনা? খোঁজ নিয়ে দেখুন এরূপ প্রতিটি উষ্কানির পেছনে রয়েছে আমাদের দেশের কোন না কোন কথিত ধর্মনেতা, ধর্মরক্ষক, কৃতি সন্তান বা কথিত রাজনৈতিক বড় নেতার হাত। আমরা নিশ্চিতভাবে জানি যে, ধার্মিকরা দেশের বদনীতিবিদের লুটপাট, হানাহানি, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি… ইত্যাদির জন্য জোরালো কোন প্রতিবাদ কখনোই করে না কিন্তু ধর্ম বিষয়েই মহূর্তেই কিছু ভালো-মন্দ বাছ-বিচার না করেই হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয় পড়ে। ফলে সেখানে যদি মাইকে বলা হতো আসুন আমরা সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করি তাহলে কি হতো? যে নেতা (হুজুর) মাইকে ডাক দিয়েছিলো তাকেই বরং পাবলিকের হাতে উল্টো মার খেতে হতো! ধর্মীয় সেন্টিমেন্ট বলে কথা।
নাস্তিকরা যতোটা ধৈর্যশীল ততোটা বোধকরি ঈশ্বর/ভগান/আল্লাও… নয়। এরা কাউকে অযথা খোঁচায় না তবে যা সত্য তা লেখে। তা হোক পিতৃতান্ত্রিক/পারিবারিক ধর্ম বা অন্য কোন ধর্ম বা অন্য কোন অন্যায়-অবিচার। তবে আপন ধর্ম বেশি জানে বলে তা নিয়েই তারা বেশি সমালোচনা করে। লেখার পূর্বে তারা অত্যন্ত সাবধানে পড়াশোনা করে নেয়। এতোটা পড়াশোনা ধার্মিক কেন, কোন হুজুর বা ধর্মব্যবসায়ীরাও করে না। ধার্মিকরা ধর্ম নিয়ে পড়াশোনা করে বটে কিন্তু প্রশ্ন তুলতে জানে না। কিন্তু নাস্তিকরা প্রশ্ন করে বলেই দেখতে পায় ধর্মের বিভিন্ন অরাজক, অবাস্তব বাণী তথা ঈশ্বী বাণী যা মানবতা ও বিজ্ঞানের সম্পূর্ণ বিপরীত। উন্নত বিশ্বে এখন প্রচুর মানুষ তাদের নিজেদের ধর্ম বিশেষ করে খ্রীস্টধর্ম নিয়ে বিভিন্ন কার্টুন আঁকে, বিভিন্ন কুটুক্তি করে, ঈসাকে ন্যাংটা করে ছাড়ে, যদিও (বোধকরি) খ্রীস্টধর্ম অন্যান্য অনেক ধর্মের চাইতে অনেক কম সমালোচনার যোগ্য এবং বেশি সহনশীল। তথাপিও তারা ঈসার চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করে ফেলে (ইন্টারনেট ঘেটে দেখুন) অথচ কটা আন্দোলন দেখেছেন সে দেশের ধার্মিকদের? হত্যা-জখম ইত্যাদি বাদ দিলাম, কটা উচ্ছৃঙ্খল প্রতিবাদ, ভাংচুর… করতে দেখেছেন? ওসব দেশে এরূপ ঘটনা বলতে গেলে শূন্যের কোঠায় অথচ আমদের দেশে চুন থেকে পান খসলেই রামু-উখিয়া নয়তো মানিকগঞ্জ ঘটতে সময় লাগে মাত্র কয়েক সেকেন্ড। অর্থাৎ এদেশের ঈশ্বর/ভগবান/আল্লার… সৈনিকরা সদা জাগ্রত, সদা রণসাজে/রণপ্রস্তুতি নিয়ে আছে, সদাই ধর্মকে পাহারা দিয়ে রাখতে হয়। ধর্মকে পুলিশ পাহারা না দিয়ে কটা পূজা, কটা অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান হতে পেরেছে এই দেশে? এমনকি প্রায় শতভাগ মুসলমানের দেশ পাকিস্তান যেখানে এবং আমাদের দেশ যেখানে ৯০% এর বেশি মুসলমান সেখানেও এই সিংহভাগের ধর্ম পালন করতেও প্রয়োজন গার্ডের। আমি মনে করি বিশ্বে যতো ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয় এবং এর নিরাপত্তার জন্য রাষ্ট্রের যে অর্থ ব্যয় হয় সেই অর্থ দিয়ে কয়েক লক্ষ দরিদ্র/অভুক্তদের সারা বছরের আহার যোগানো যায়। প্রশ্ন হলো, ঈশ্বর/ভগবান/আল্লা… এদের পূঁজা/দোয়া/প্রার্থনা করার জন্য কেন নিরাপত্তার প্রয়োজন হবে? তারা যদি নিজেদের অনুসারীদের নিজেরাই নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয় তাহালে তারা কিসের ঈশ্বর/ভগবান/আল্লা…? রাষ্ট্রকে কেন কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে তাদের জন্য কাজ করতে হবে? চোরের ভয়ে জুতা কোলে নিয়ে প্রার্থনা সভায় বসে বা তা মাথার কাছে রেখে সেজদা দিতে বাধ্য হয় তাদের মুমিনগণ। গার্ড রেখেও পাকিস্তানে আত্মঘাতি বোমারুর হাত থেকে রেহাই পায় না হাজার হাজার লোক। আমাদের দেশে যদি এখনো সেই অবস্থা হয়নি তবে সব দেখে মনে হচ্ছে এ অবস্থা হতে বেশি দেরি নেই। কারণ মানুষ যখন ধর্মকে নিজের জীবনের চাইতে বেশি ভালোবাসে, রাষ্ট্র যখন ধর্মের পক্ষে থাকে তখন সেই রাষ্ট্রে মানবতা হারিয়ে গেলেও ধার্মিকতা হারাবার নয় এবং ছলেছুতায় ধর্মীয় বিবাদ চলতেই থাকবে এটাই তো নিয়ম।
এবার নির্দয় ঈশ্বর প্রসঙ্গে আসি। বিশ্ব মাতা, বিশ্ববিখ্যাত দরিদ্রদের বন্ধু, মানবতার সেবার জন্য পৃথিবীতে যার কোন তুলনা হয় না। সেই মাদার তেরেসাও ঈশ্বরের অস্তিত্বে সন্দেহ করেছেন (যা তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত গোপন ছিলো)। তাঁর প্রশ্নগুলোও অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত। এ চিঠি গোপন রাখার কারণ হয়তো এতে বিশ্বাসীরা আঘাত পাবে, কিন্তু সত্য কখনোই গোপন থাকে না। মাদার তেরেসার বেশ কিছু পত্রে ঈশ্বর/আল্লা/ভগবান সম্পর্কে আসল সত্য প্রকাশ পায়। যাতে দেখা যায় যে, ঈশ্বর/ভগবান/আল্লা… এরা অথর্ব, অবান্তর, অকর্মন্য কারণ তারা ক্ষুধার্তদের অন্ন দিতে পারে না অতএব তাদের ‘সর্বশক্তিমান’ বলাটাও মূর্খতা। (সূত্র: ৮ আগষ্ট ২০০৭, আজকের কাগজ)।
[তোমার প্রতি যিশুখ্রিষ্টের বিশেষ ভালবাসা রয়েছে। কিন্তু আমার কাছে তিনি (যিশু) নিস্তব্ধ, শূন্য। আমি তাঁকে খুঁজি কিন্তু দেখতে পাই না। তাঁর কথা শোনার চেষ্টা করি, কিন্তু শুনতে পাই না।’ (এখানে)…তাঁর (মাদার তেরেসার) অন্য জীবনের এ চিত্র ফুটে উঠেছে। আর্তমানবতার নিবেদিত দূত মাদার তেরেসার অন্য জীবন ছিল! সেটি আধ্যাত্মিক জীবন। তাঁর এ জীবনের কথা গত ৫০ বছর ধরে অনেকটা অপ্রকাশিত ছিল। সদা কোমল মনের মানুষটি মনে-প্রাণে ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে নানা প্রশ্ন সারাজীবন পোষণ করেন। মাদার তেরেসার জীবদ্দশায় বিভিন্ন সময়ে লেখা পত্রের সংকলন নিয়ে প্রকাশিত “মাদার তেরেসা কাম বি মাই লাইট” নামক বই থেকে জানা গেছে, তার অন্য জীবনের নানা বিস্ময়কর তথ্য। এসব তথ্য জেনে রীতিমতো বিস্মিত হয়েছেন তাঁর ভক্তরা। …তিনি লিখেছেন, ৬৬ বছরের জীবনে তিনি কোথাও ঈশ্বরের অস্তিত্ব খুঁজ পাননি। এমনকি …তাঁর হৃদয়ে কখনও ঈশ্বরের স্থান ছিল না, ছিল না ভোজশালাতেও। …লিখেছিলেন, ‘স্বয়ং ঈশবর ক্ষুধার্ত, বিবস্ত্র এবং গৃহহীন ছিলেন। তোমার প্রতি ঈশ্বরের বিশেষ ভালবাসা রয়েছে। …ঈশ্বর নিস্তব্ধ শূন্য। আমি তাকে হাতড়িয়ে বেড়াই, কিন্তু খুঁজে পাই না। তাকে শোনার চেষ্টা করি, শুনতে পাই না। তাঁর জন্য অনবরত প্রার্থন করি, তাকে ডাকি, কিন্তু সাড়া দেন না। আমি কান্না করি তিনি যেন আমার জন্য প্রার্থনা করেন আমাকে যেন উদার হস্তে মঙ্গল কামনা করেন। …মাদার তেরেসার এই ঈশ্বরের প্রতি ধীরে ধীরে আস্থাহীনতার বিষয়টি ফুটে উঠেছে কলকাতায় এসে স্থায়ীভাবে মানবসেবায় আত্মনিবেদন করার পর থেকে। ধারণা করা হয় এর অন্যতম কারণ ছিল, দরিদ্র মানুষের জরাকিষ্ট অবস্থা, ভোগান্তি, তাদের সামান্য চাওয়া-পাওয়া পূরণে ঈশ্বরের অসমতা ও ব্যর্থতা দেখে। …মাদার তেরেসার খেলা ৪০টি পত্রে অসংখ্যবার ঈশ্বর সম্বন্ধে নির্দয়, অদৃশ্য, নির্জন এমনকি নির্যাতনকারী হিসেবে দেখানো হয়েছে।]
একজন ধর্মবিশ্বাসী ঈশ্বরের মহান সেবিকা যদি এরূপ অসংখ্যবার বলতে পারে “ঈশ্বর নির্দয়, অদৃশ্য, নির্জন এমনকি নির্যাতনকারী” তাহলে একজন নাস্তিক কি না বলতে পারে? একজন হতদরিদ্র মানুষ যিনি নাকি ডাস্টবিনের মধ্যে নেমে ধনীদের ফেলে দেয়া পচা-বাসী উচ্ছিষ্ট খাচ্ছে এটা দেখে একজন আস্তিক যতোটা না কষ্ট পায় তার চেয়ে হাজারগুণ বেশি কষ্ট পায় একজন মানবতাবাদী অর্থাৎ কথিত নাস্তিক। নাস্তিকরা যতোটা মানবতাবাদী হতে পারে আস্তিকরা ততোটা হতে পারে না। তার কারণ নাস্তিক হতে হলে জীবন থেকে শিক্ষা নিতে হয় এর জন্য স্কুলে যেতে হয় না যেমনটা প্রয়োজন হয়নি স্বশিতি শ্রদ্ধেয় আরজ আলী সাহেবের এবং এমনি অনেকেই আছেন যারা শুধু আপন বুদ্ধি খাটিয়ে ঈশ্বর/আল্লা/হরিকে হাজারো প্রশ্নে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন, যার একটিও সুন্দর এবং যুক্তিযুক্ত উত্তর সারা পৃথিবীর সমস্ত ধার্মিক এবং তাদের ওস্তাদগণ এক হলেও দিতে পারবে না। তারা যুক্তিপূর্ণ উত্তর না দিতে পেরে একটা বহুল প্রচলিত বাক্যই উচ্চারণ করতে শিখেছেন, এসব একমাত্র ঈশ্বর/আল্লা/হরিই জানে।
অথচ মাদার তেরেসার এরূপ পত্র নিয়ে অর্থাৎ যিশু/ঈশ্বরকে নির্যাতনকারী, নির্দয় বলার পরও তাঁর সংঘ, তাঁর ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, তাঁর খ্রীস্টান সম্প্রদায় তাকে নিয়ে উচ্চবাচ্য না করে চুপ রয়েছে, কেন? কারণ খ্রীস্টানরা জানে ময়লা ঘাটলে দুর্গন্ধ বের হবেই। সত্য ঘাটলে সুগন্ধ বের হয়, ময়লা ঘাটলে তো আর সুগন্ধ পাওয়া যাবে না। খ্রীস্টধর্ম এক সময় প্রতিবাদী একটি ধর্ম ছিলো। তখন অনেক অত্যাচার করা হয়েছে চার্চের বিরুদ্ধে কথা বললেই, পুড়িয়ে মারা হয়েছে কিন্তু সত্য যা তা সত্যই। যাদের উপর অত্যাচার করেছিলো চার্চের নেতারা তারা যে সত্য কথা বলেছিলো তা যখন নেতারা বুঝতে পারলো তখন থেকে এ ময়লা আর ঘাটাঘাটি করে না। এর ফলে কি তাদের ধর্ম পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এখনও যে সব নাস্তিকরা খ্রীস্টধর্ম নিয়ে প্রচণ্ড আক্রমানত্মক লেখালেখি করে তাতেও কি তাদের ধর্ম বিলুপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে? আর বিলুপ্ত হলেই বা কি মানুষ যদি ধর্মের আশ্রয় ছাড়াই নাস্তিক হয়েও খাঁটি মানুষ হতে পারে তাতে ধর্ম বাধা হয়ে দাঁড়াবার কে বা কি?
অতি সমপ্রতি রাজিব হত্যার পর প্রজন্ম চত্ত্বরের আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ধর্মের লেবাস পরিহিত অনেক তথাকথিত সাংবাদিক/বিচারপতি/ উচ্চশিক্ষতরা… উঠেপড়ে লেগেছেন। অথচ রাজিবের লেখালেখি আর প্রজন্ম চত্ত্বরের কোনই সম্বন্ধ নেই, কারণ রাজিব তার লেখালেখি অনেক পূর্ব থেকেই করে আসছে, সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। প্রজন্ম চত্ত্বর কোন ব্যক্তিবিশেষের নয়। কিন্তু মতলববাজরা চিরদিনই কারো সাথে যুক্তিতে না পারলে ধর্মাস্ত্র ব্যবহার করে, কারণ এটি ব্যবহার করা অত্যন্ত সহজ। শুধুমাত্র একবার বলতে পারলেই হলো ওমুকে কাফের, ওমুকে বিধর্মী, আমাদের ধর্ম নষ্ট করে ফেলেছে আর যায় কোথায় দে কোপ নারায়েত তাকবির বলে। এর চেয়ে সহজলভ্য অস্ত্র আর কি হতে পারে? সবচাইতে বেশি অবাক লাগে যখন কোন ঈশ্বর/ভগবান/আল্লা তার নামে মানুষ খুন করার ফতোয়া দেয়, তার নামে মানুষটিকে জবাই করা হয়, তার নাম করেই জেহাদিরা শ্লোগান দেয় এবং সেইসব কর্মকান্ড তিনি বা তারা বেহেশত বা স্বর্গে বসে অনুমোদন দেয়! কি করে সেইসব ঈশ্বর/ভগবান/আল্লা… পরম দয়ালু হতে পারে? যারা কিনা রক্ত চায়, মাংস চায়, হত্যা চায়…? যাহোক মতলববাজরা বলছেন, প্রজন্ম চত্ত্বরে যারা তারা নাস্তিক, কাফের… ইত্যাদি। সেজন্য তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, আস্তিদের ন্যায় মানুষ হত্যা করে তা দিয়ে নাস্তা করার মতো অসভ্য অন্তত নাস্তিকরা নয়। স্বজাতের মাংস দিয়ে নাস্তা শুধু ধার্মিকরাই করতে চায়, পশুরাও করে না। একেকটি আলাদা ধর্মের লোকেই কেবল হত্যাযজ্ঞে লিপ্ত হয় না, একই ধর্মের ধার্মিকরা একদল আরেকদলকে খুন করতে আত্মঘাতি হয়, এমনকি বিপদে ফেলতে নিজ ধর্মপুস্তক পোড়াতে লজ্জাবোধ করে না, খুন করতে আত্মঘাতি হতে গৌরববোধ করে। অথচ একজন খাঁটি বা প্রকৃত নাস্তিক তা কখনোই করবে না, করতে পারে না। কারণ কথিত এই নাস্তিকদের ধর্মই বিশ্বসেরা এবং একমাত্র খাঁটি অন্য সব ধর্মই কমবেশি মিথ্যা, বানোয়াট, কুসংস্কারাচ্ছন্ন, হিংস্র ও ঘৃণ্যতায় ভরা অতএব মানুষ যতো তাড়াতাড়ি এ সত্যটি বুঝবে পৃথিবীর জঞ্জাল ততো তাড়াতাড়ি দূর হবে। আর এজন্য প্রথমেই যা প্রয়োজন তাহলে নিজ নিজ ধর্মপুস্তক পড়া এবং কেবলই প্রশ্ন করা ও উত্তর খোঁজা। তাই আস্তিকদের অনুরোধ নাস্তিকদের দিয়ে নাস্তা করার আগে ধর্মপুস্তক খুলুন মিলিয়ে দেখুন নাস্তিকরা ধর্মপুস্তকগুলোতে যে ভুল পেয়েছে তার সঠিক সমালোচনা করছে কিনা, না করলে তা যুক্তি দিয়ে খণ্ডন করেন, যদি তাদের সমালোচনা ভুল হয়ে থাকে তারা আপনাদের (অর্থাৎ কথিত আল্লা/ঈশ্বর/ভগবানের…) তরবারির/ধর্মাস্ত্রের (যার বৈধ এজেন্ট ধার্মিকরা) তলে মাথা পেতে দেবে! আর আপনারা আল্লা/ঈশ্বর/ভগবানের… নামে নারায়েত তাকবির বলে মারবেন কোপ! সারাজীবনের পাপ ধয়েমুছে যাবেন বেহেশতে! পাবেন তম্বী-হুরি-ডাগার আঁখি ৭০ বা ৭২! ভুলভ্রান্তি হলে মাফ করবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।
লেখাটিকে প্রথম পাতা থেকে লেখকের সরিয়ে ব্যক্তিগত ব্লগে নিয়ে যাওয়া হল।
আমার মনে হয়,এই চরম মুহূর্তে আস্তিকতা সঠিক নাকি নাস্তিকতা সঠিক এটা আমাদের আলোচনার বিষয়বস্ত হওয়া মোটেই উচিৎ নয়।
এতে চলমান গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যেতে পারে।
আন্দোলন বানচাল করার জন্য ষড়যন্ত্রকারীদের অভাব নাই।
বিএনপি তো এতদিন দোটানার মধ্যে থেকে পর্যবেক্ষন করে করে ঠিক যখনই আন্দোলনটা একটা গতি লয়ে সস্মুখে অগ্রসর হয়ে চলেছিল,ঠিক তখনি ধার্মিকদের মনোভাব টাকে সম্বল করে, সমস্ত হত্যার দায় সরকারের ঘাড়ে বর্তিয়ে দিয়ে,জামাত-শিবিরের উপর তাদের চরম নৃসংস কর্মকান্ড ও হত্যার সামান্যতম দায়দায়িত্ব না বর্তিয়ে,অনেক দীর্ঘকাল পরে আরম্ভ হওয়া আন্দোলন টাকে প্রতিহত করার লক্ষে মাঠে ঝাপিয়ে পড়ল।
গতকাল খালেদা জিয়ার ভাষনে কিন্তু একটিবারও জামাত-শিবিরের নৃসংষ কর্মকান্ড ও হত্যাযজ্ঞ্যের কথা উল্লেখ করলনা,সমগ্র হত্যার দায়টা সরকারের উপরই বর্তিয়ে দিয়ে সরকারের সমস্ত প্রতিরোধ কে প্রতিহত করার অঙ্গীকার করল।
এর অর্থ তো এটাই দাড়াল যে জামাত শিবির যা করতে চায় এদের বাধা দিতে পারবেনা।
এধরণের বক্তব্য কিসের ইঙ্গিত বহন করে?
বিএনপি,জামাত ও ধর্মীয় দল গুলী একতাবদ্ধ হয়ে এ আন্দোলন কে যে বানচাল করে দিবেনা বা দিতে পারবেনা এটা নিশ্চিত ভাবে বলা যায়না।
আমার মনে হয় সরকারের উচিৎ হবে অবিলম্বে জামাত-শিবির নিষিদ্ধ করে দেওয়া ও তাদের সমস্ত আর্থিক সূত্র গুলী বন্ধ করে দেওয়া।এবং সমস্ত মসজিদের ইমামদের সংগে যোগাযোগ রক্ষা করা। তাদেরকে বুঝানো দরকার যে আমরা কখনই কারো ধর্ম পালনের বিরোধী তো নইই বরং প্রয়োজনে সাহায্যকারী। তারা যেন আমাদেরকে তাদের শত্রু না ভেবে বরং বন্ধু ভাবে।
তাদেরকে বুঝানো দরকার যেন তারা কোন ধর্মের দোহাই দেওয়া কোন রাজনৈতিক দলের খপ্পরে পড়ে যেন দাবার গুটীতে পরিণত নাহয়।
মসজিদকে ও আলেমদের আমাদের ধরে রাখার দরকার আছে।
যদি আমরা অন্ততঃ মসজিদ টাকে ও কিছু আলেমদেরকে ধরে রাখতে পারি তাহলে ওদের ধর্মের দোহাই দেওয়ার ধুর্তামীটা ব্যর্থ হয়ে যাবে।
এগুলী না করে আমরা যতই যুক্তি দিয়ে দেখাব যে নাস্তিক্য বাদিই সঠিক তাতে কার্যক্ষেত্রে উপকারের চাইতে ক্ষতিই হবে বেশী।
মনে রাখতে হবে “ধর্ম কোন যুক্তি মানেনা”
কিভাবে যেন এসেই নাস্তিকতা নিয়ে লেখা পেয়ে গেলাম—ভাল লাগলো ।ধন্যবাদ লেখককে
নাস্তিকরা ভুল পথে আছে।
@প্রতিবাদ,
কেন?
আপনার লেখাটা এতই নিম্নমানের, এতই দুর্গন্ধযুক্ত, এতই জাতিবিদ্বেষে ভরপুর যে এইরকম একটা পোস্টে মন্তব্য কইরা শক্তি ক্ষয় করতে ইচ্ছা হইতেছে না। তারপরেও কেউ যাতে মনে না করে মুক্তমনায় মূর্খদের কথাবার্তা এমনে এমনে পার পাইয়া যায় এই জন্য মন্তব্য করতেছি।
আমার বক্তব্য পরিষ্কারঃ শিক্ষিত হোন, তারপরে লেখতে আসেন।
“আস্তিকরা নাস্তিকদের সব সময়ই শত্রু মনে করে এবং হত্যা করতে প্রস্তুত থাকে।”
এই কথা যে বলে তার আর যাই হউক, মানবতাবাদ নিয়া চিল্লাফাল্লা মানায় না। সো, তফাত যান।
@সাইফুল ইসলাম,
ইচ্ছা ছিল কফিল সাহেবের এই কথাটা নিয়ে প্রশ্ন করার, কিন্তু সৈকত ভাই আগেই প্রশ্ন করে ফেলেছেন তাই করি নি।তবে আমারো একই প্রশ্ন!!এই থেওরী উনি পেলেন কোথায়!!
এইখানে কি ইসলাম বিদ্বেষী অপবাদের ভয়ে আল্লার সাথে ঈশ্বর আর ভগবানের নাম জুড়ে দিলেন? তা ইসলাম বিদ্বেষ দোষের কিছু না, কাজেই এটার দরকার ছিল না।নারায়ে তকবীর ব্যঙ্গার্থে নিতে পারেন, তবে খ্রিষ্ট ধর্মে বেহেশতে গেলে হুর পাওয়া যায়,এটা আপনাকে কে বলল?
এইটা আবার কি জিনিস? খাঁটি নাস্তিক?যাহোক আমি কিন্তু খাঁটি নাস্তিক না, তাহলে আপনার কি মনে হয় যে আমি খুন করতে পারি? বা এটা আমার দ্বারা সম্ভব?যদি আপনার উত্তর হয় হ্যাঁ, সেক্ষেত্রে খাঁটি নাস্তিক কি এমন হাজী( নাস্তিক হাজী) যে খুন করতে পারবে না?
একেবারে পাক্কা ইমানদার নাস্তিকের মত কথা( নাস্তিক মাদ্রাসা থেকে পাশ করা আর কি)।কোরানেও এমন করেই লেখা থাকে,শুধু নাস্তিক ধর্মের ( এইটা না জানি কি জিনিস! ) জায়গাতে ইসলাম ধর্মের কথা।
ভাই প্রথমেই পড়তে গিয়ে হোঁচট খেলাম আপনার সুরা নাস আর ফিলের সংমিশ্রণ দেখে।
বাকিটা পড়ে পড়ে দেখব ।
ধন্যবাদ। সম্পূর্ণটা পড়ি নি। মাঝে মাঝে অতি-সরলীকরণ করে ফেলেছেন, যেমন
আসলে কি তাই? আস্তিক হলেই নাস্তিকদের হত্যা করতে প্রস্তুত থাকবে কেন?