৪ঠা ফেব্রুয়ারি

‘ইউডক্সাসের গোলক ও অন্যান্য প্রসঙ্গ’ বইখানা এই বছর সবচেয়ে স্মুথলি বের হলো। টুটুল ভাই অনেক দিন ধরেই তাগাদা দিয়েছিলেন, আমিও পাণ্ডুলিপি গুছিয়ে ওঁর হাতে ধরিয়ে দিলুম। তবে বইটির নামকরণ নিয়ে বেশ হ্যাপা পোহাতে হলো, সুসাহিত্যিক আহমেদ মোস্তফা কামাল ভাই অন্যরকম নাম চাইছিলেন, কিন্তু জ্যোতির্বিদ দীপেন দা’র দাবীর মুখে আমাকে পিছু হটতে হলো। এখনো কামাল ভাই উষ্মা প্রকাশ করে মৃদু বকা দেন।
জ্যোতির্বিদ্যার নানা কাহিনী নিয়ে এই বইটি আসছে শুদ্ধস্বর থেকে। মানুষের আকাশচর্চার ইতিহাসের কয়েকটি স্ন্যাপশট এখানে থাকছে – পুরা ক্রনোলজি নয়, তবে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি স্ন্যাপ যা থেকে এই প্রাচীন মানবীয় চর্চাটির একটা আভাস পাওয়া যায়। বোঝা যাবে যে, অ্যাস্ট্রনমি একটি মানবীয় প্রচেষ্টা, এবং সেটা দীর্ঘদিনের বহু মানুষের শ্রমে গড়া। এখানকার লেখা গুলি বিভিন্ন সময়ে bdnews24.com, জিরো টু ইনফিনিটি ,Muktomona, poriborton.com ইত্যাদি ব্লগগুলোতে প্রকাশিত হয়েছিল। এখন এই বইয়ে একত্রে সেসব লেখা উপযুক্ত ছবি সহ পরিবেশিত হলো। এছাড়া এই বইয়ের একটি চমৎকার ভূমিকা লিখে দিয়েছেন রমন রসার্চ সেন্টারের জ্যোতির্বিদ এবং সুলেখক ড.বিমান নাথ, যাঁর দুটি লেখাও এই বইয়ের শেষে ‘অতিথি প্রবন্ধ’ হিসেবে যুক্ত হলো। ফলে পাঠকদের উপরিপাওনাও থাকছে। বইটির কমপোজে আমাকে নানাভাবে সাহায্য করেছে সরক্রের মেজকর্তা ধনঞ্জয় দাস এবং আমাদের সবার প্রিয়মুখ জাহিদ হোসাইন আশা । তাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আর বইটি প্রকাশ করার জন্য ধন্যবাদ আহমেদুর রশীদ টুটূল ভাইকে বইটি প্রকাশ করতে সাহস করায়। সবশেষে বইটির অতি মনোহর কভার পেজ করে দিয়েছে আমাদের আবদাল্লাহ আল মাহমুদ, তাঁর হাতের কাজ প্রশংসার যোগ্য। তবে প্রকাশের পর বইটির ছাপা দেখে বেশ দমে গেছি। টুটূল ভাই আশ্বাস দিয়েছেন, হি উইল ডু সামথিং, বাট টিল নেক্সট টাইম!

বইটির পেইজ এখানে: ইউডক্সাসের গোলক এবং অন্যান্য প্রসঙ্গ

***********************
৮ই ফেব্রুয়ারি

প্রজন্ম চত্ত্বরের গর্জন দূরে বসা শুনি আর মন খারাপ কইরা বইসা আছি, যাইতারতাছি না বইলা। এই আচানক মুহূর্তে আহমাদ মাযহার ভাইয়ের ফোন, ‘আরে আপনার নক্ষত্র, নিউরন ও ন্যানো ত এখন আমার হাতে, দারুন প্রডাকশন।’ মুহুর্তেই মন ভালো হয়ে গেল। এখন এই উপেক্ষিত বইয়ের গল্প বলি।

বইটি আমি ‘তৈরি’ করি আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে। গত এক যুগব্যাপী আমার যেসকল প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে, তার প্রায় সবগুলি এখানে সঙ্কলিত হয়। মনে হল এটা সেই প্রকাশককে দেওয়া যায়, যিনি ২০১২ বইমেলায় আমার একটি বই শেষ মুহূর্তে ছাপতে রাজি হয়েছিলেন। সে বইটি ‘দারুণ’ চলেছিল। সম্ভবত সেই কারণে আগ্রহী হয়ে তিনি নিজেই এক অক্টোবর-সকালে আমার অফিসে আসেন, আমি সঙ্কলনটি তার হাতে তুলে দেই। তিনি প্রায় দুই হপ্তার মধ্যে কম্পোজ করে ফেলেন। আমি সফট কপি কারেক্ট করি, তিনি প্রুফ রিডার দিয়ে সংশোধন করিয়ে, ছবির মেক-আপ দিয়ে একেবারে প্রায়-চূড়ান্ত দশায় বইটা আমার হাতে দেন। আমি দ্বিগুণ উৎসাহে তৃতীয় প্রুফ কাটি। এদিকে ফারহানা মান্নান আপারে দিয়া কাভার কইরা ফালাইসি। কিন্তু প্রকাশক মহোদয় আর আসেন না। ডিসেম্বর পার হয়, তাও তার দেখা নেই। অবশেষে তিনি এলেন জানুয়ারির প্রথম সপ্তায়। সব বুঝিয়ে দেয়ার পর তিনি উসখুশ করে জিজ্ঞেস করলেন এই বইটির পাঠক কারা; আমি বোঝাই ১৪-বছর বা তার উর্ধ্বে সবাই এ বইয়ের পাঠক, সায়েন্সের বিভিন্ন বিষয় আছে এখানে। কিন্তু তার দ্বিধা যায় না। তিনি বইয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞান অংশ আলাদা করতে চান, ফিজিক্স আলাদা করতে চান। আমি বললাম, ভাই আপ্নে প্রকাশক, টেকা আপ্নের, আপ্নের মনে দ্বিধা থাকলে প্রকাশ করবেন কিউ? যদি মনে করেন, আপ্নের টেকাটুকা উঠব না, তয় ছাইড়া দেন। বই রাইখা যান, তয় এইসব দ্বিধাদ্বন্দ আমারে এক মাস আগে কইলে পারতেন, এখন ত আমি বিপদে পড়লাম। তিনি চলে গেলেন। জাফর ইকবালের প্রকাশক যদি এমন টেকাটেকা জিকির করে, তাইলে কেম্নে কী! প্রফেশনালিজম দূরকথা, মিনিমাম স্ট্যান্ডার্ড ত থাকা দরকার, নাকি!আমি খুবই চিন্তায় পড়লাম, আহারে বইটা ত রেডি, এই শেষ মূহূর্তে আমি কারে দেই, কে করবে, কেম্নে কী! বই হইল সন্তানতুল্য, রেডিমেড বই অপ্রকাশিত থাকবে এই ভাবনার মত লেখকীয় আজাব পুন্নাম নরকেও নাই! সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতে ফুন দিলাম আমার ‘সেই পুরাতন’ প্রকাশক মিলন নাথকে। তাঁকে বললাম, এই কাহিনি। তিনি পাঠাতে বললেন। ইতিমধ্যে আমার আবদাল্লাহ আল মাহমুদ সাথে কথা বলে ঠিক করলাম, নিজেই ছাপামু আর আবদাল্লাহ বেচব। হপ্তা খানেক পর ফুন দিলাম, মিলন দা বই ফেরত দেন; তখন মিলন দা অনেক কথা বলে শান্ত করলেন, মাথা ঠান্ডা হইল, বুঝলাম, বই ছাপা হইব। নাম দিলাম, ধাম দিলাম, কাভার দিলাম – সব নতুন করে।

এই সেই বই – আমার সবচেয়ে আদরের, কারণ তার জন্মই যে প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। এই বইতে পাঠক পাবেন বিজ্ঞান বিষয়ে মনোমুগ্ধকর দুই ডজন প্রবন্ধ। হাল্কা-চলতি লঘুভার গদ্য; কিন্তু মর্মে বেধে, মগজকে চালু রাখে। এক কাপ কফি খেতে খেতে আপনি নক্ষত্র থেকে মস্তিষ্কের নিউরন হয়ে ন্যানোস্কেলে পৌঁছে যাবেন; অথবা সমাজ সংস্কৃতির গভীরতম সমস্যা, নিওলিথিক মোমবাতি আমরা নেব অথবা নেব না কিংবা ঢাকা শহরের ‘গড় মুক্ত পথ’ কত তা জানতে পারবেন। দূর পৃথিবীর ডাকে এক মহাজাগতিক বোধে উৎসারিত লাইট অ্যান্ড রিফ্রেশিং রিডিং; এনজয় ইয়োরসেলফ!

কাভার – আবদুল্লাহ আল মাহমুদ. প্রকাশক – অনুপম

বইটির পেইজ এখানে: নক্ষত্র, নিউরন ও ন্যানো

*********
৮ই ফেব্রুয়ারি

একখানি বহুল প্রতীক্ষিত বইয়ের (মানুষ, মহাবিস্ব ও ভবিষ্যৎ) গল্প বলি। এর পান্ডুলিপিটি আমি জমা দেই প্রথমার দপ্তরে ২০১১য়ের এপ্রিলে। আমার ও হারুন স্যারের ‘অপূর্ব এই মহাবিশ্ব’ বইটির সাফল্যে উজ্জীবিত হয়ে ফারহানা আপার প্ররোচনায় প্রথমাকেই পার্ফেক্ট মনে করলাম। তারপর শুরু হলো এক দুই বছর ব্যাপী ‘লুকোচুরি লুকোচুরি গল্প’; প্রথমার কান্ডারী বদলাইল; সেপ্টেম্বর ২০১১ হয়ে গেল, কোনো খবর পাই নাই, আওয়াজ নাই, অথচ এর আগেরবার মার্চ মাসে পান্ডুলিপি জমা দেয়ার মাস চারেকের মধ্যে লিখিত চিঠি পাইসিলাম। অথচ এইবার! অক্টোবরে গেলাম প্রথমার দপ্তরে, সকল দ্বিধা ছুড়ে ফেলে। রাশেদ ভাইয়ের কথা শুনে মনে হলো তিনি কেবল তখন আমার পান্ডুলিপির নাম শুনসেন। কয়েকজন রিভিউয়ারের নাম জানতে চাইলেন। তারপর আবার অল কোয়াইয়েট অন দ্য প্রথমা ফন্ট। ফুনাফুনি শুরু করলাম। এক পর্যায়ে ইনফর্মালি জানলাম সুব্রত বড়ুয়াকে পান্ডুলিপি দেয়া হইসে। আমি সুব্রত কাকুকে ভালই চিনি। ফোন দিলাম, কাকু, মেলা ধরা দরকার, একটু জলদি কিজিয়ে। ওমা! কীসের কী, কাকু ত কিছুই পাননি। তারপর আবার লুকোচুরী – রাশেদ ভাই বলেন দিসি, কাকু বলেন পাই নাই। ডিসেম্বর ২০১১ নাগাদ জানলাম, থ্রু নীলাদ্রি দা [প্রথমার ম্যানেজার], ঠিকানা ফিকানা সব লিখে সুন্দর করে মোড়ানো প্যাকটা পোস্ট করাই হয়নাই! পোস্ট হল, ফুন হল, কিন্তু কিসুতেই মেলা ধরা গেলু না। মন ভেঙ্গে গেল। রাশেদ ভাই বলেন, আমরা ত মেলা দেখে বই করি না! তারপর আবার গঙ্গা-যমুনা দিয়া অনেক জল গড়াইল, মতি ভাইরে গিয়া ধরলাম, একবার আমি রাশেদ ভাইকে দিলাম এক ভীষণ কড়া ইমেইল। হয় হ্যা বলেন, নয় পান্ডু ছাড়েন! রাশেদ ভাই কমপ্লেইন দেয় আপারে, দেখছেন কী কড়া মেইল দিসে? এই করে চলে, আবারো লুকোচুরী খেলা। তারপর আমার একদিন ডাক পড়ল অপূর্ব এই মহাবিশ্বের ২য় সংস্করণ করার জন্য। তখনই জানতে পেলাম, বইটা হচ্ছে, আখতার ভাই পড়া শূরু করেছেন।

এই বইটা ব্যতিক্রমধর্মী বই। বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে একেকটি অধ্যায়, কিন্তু সেখানে আছে অন্য আরো অনেক রিলেটেড বিষয়ের অবতারণা। বিষয় থেকে বিষয়ান্তরে নিয়ে যায় একই বৈজ্ঞানিক মূলসুর। বাস্তবতার সংজ্ঞা কী? প্রকৃতি কেন গণিত মেনে চলে? পুঁজিপতিদের সাথে বৈদ্যুতিক গ্রিডের কী সম্পর্ক? আমরা চিন্তা করি কেন? প্রাণের স্বরূপ কী ? মহাবিশ্বে বুদ্ধিমান প্রাণীর অস্তিত্ব আছে কি? ভূমিকম্প সম্পর্কে আগাম কথা কেন বলা যায় না? এই বইয়ে আরো একটি নতুন বিষয় হলো, বিদেশের বিজ্ঞান বইয়ে যেমন থাকে, বইয়ের শেষে কৃৎকৌশলীয় টার্মগুলোর এক-কি-দুই বাক্যে সহজ করে ব্যাখ্যা দেওয়া – অর্থাৎ গ্লসারি সংযোগ। পরের বার বইয়ে নির্ঘন্ট রাখার চেষ্টা করব, ভাবছি। নন-ফিকশন বইয়ে নির্ঘন্ট থাকা বাঞ্ছনীয়। এরকম বই আমাদের দেশে কমই আছে, মগজের এমন ব্যায়াম। আমার খুব প্রিয় এবং পরিশ্রমসাধ্য গ্রন্থখানি। খুব রিল্যাক্সড রিডিং নয় এটি। কাজেই, পাঠক সাবধান, মগজের জিম্ন্যাস্টিক্স সামনে হাজির।
বইয়ের একটী বাদে সবগুলি প্রবন্ধ রচিত হয়েছে রাজুদার নিরন্তর চেঁচামেচিতে bdnews বিডি -এ। কাজেই তাঁকে ধন্যবাদ। কাভার বিষয়ে আরেক অসাধ্য সাধন কল্লেন শ্রদ্ধেয় ড. রেজাউর রহমান, সে আরেক ফেবু নোটের বিষয়, আরেক জীবনেতিহাস!

বইটির পেইজ এখানে: মানুষ, মহাবিশ্ব ও ভবিষ্যৎ

তবে প্রচ্ছদের ব্যাপারে বলব, আমাদের প্রচ্ছদ শিল্পীরা বিজ্ঞানের প্রচ্ছদের ব্যাপারে এখনো গতানুগতিক। বিদেশের, বা এমনকি কোলকাতার আনন্দের, বইয়ের ক্ষেত্রে আমরা দেখি কী অসাধারণ মননশীলতায় বিজ্ঞানের বইয়ের প্রচ্ছদ করা হচ্ছে। অথচ আমাদের এখানে সেই ঐতিহ্য নাই। আমার এক প্রিয় প্রচ্ছদ শিল্পী এইবার আমাকে যে নাকানি-চোবানি খাওয়ালেন, আমি বাধ্য হয়ে তার প্রচ্ছদ পরিত্যাগ করেছিলাম।

তিনখান কেতাব ২০১৩

***********************************
এবার আমি এবারের তিনটি বইয়ের ব্যাপারে কিছু বলি।

প্রথমটি, অর্থাৎ ইউডক্সাসের গোলক, বইটিতে জ্যোতির্বিজ্ঞানের ইতিহাসের কয়েকটি টুকরো কাহিনি লেখা হয়েছে। কাহিনির শুরু আর্কায়িক যুগ থেকে, যখন তুষার যুগ হয়ে ব্যাবিলনীয়-আক্কাদীয়দের হাত ঘুরে মিনোয়ানদের ছোঁয়া পেয়ে ক্লাসিকাল গ্রিকদের হাতে তারামণ্ডলীর বর্তমান চেহারা ধীরে ধীরে স্ফুট হয়ে ওঠে। ক্লাসিকাল ও আধুনিক গ্রিকদের হাত হয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানের চর্চা কীভাবে ইসলাম ধর্মাবলম্বী বা আরব-ভাষী বিজ্ঞানীদের সযত্ন পরিচর্যায় গিয়ে মধ্যযুগের বিজ্ঞানীদের হাতে পড়ে। মধ্যযুগ থেকে টাইকো এবং কেপলার নির্বাচিত হয়েছে – দেখানো হয়েছে কীভাবে টাইকোর সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষণের হাত ধরে কেপলার গ্রহগতির সূত্রাবলি নির্ধারণ করেন। এরপর ছোট্ট করে গ্যালিলেও, যুক্তরাষ্ট্রে আধুনিক মানমন্দির বানানোর ইতিহাস এবং তারপরে নক্ষত্রের বর্ণালি বিশ্লেষণে মহিলাদের অবিস্মরণীয় অবদান। আমাদের বাংলা পঞ্জিকা সংস্কারের কথা বলে আমি বলেছি আমার নিজের কথা। অনেকেই আমাকে জিজ্ঞেস করেন, আমার নির্মিতির গল্পটি কীরূপ, তাঁদের জন্যে সংক্ষেপে পরিবেশিত হয়েছে আমার জ্যোতির্বিজ্ঞান পাঠের ইতিবৃত্ত, যেটা একইসাথে বাংলাদেশে জ্যোতির্বিদ্যা চর্চার ইতিহাসও বটে। এরপর ড. বিমান নাথের দুটী অতিথি প্রবন্ধ। ক্রনোলজিকাল অর্ডারে না হলেও এই বইটি জ্যোতির্বিজ্ঞানের ইতিহাসকে তুলে ধরবে কয়েকটি নির্বাচতি স্ন্যাপশটের সাহায্যে।

আমার দ্বিতীয় বইটি একটি প্রবন্ধ সংকলন। বিজ্ঞানের নানা বিষয় এখানে এসেছে – গত এক যুগব্যাপী আমার প্রবন্ধের কালেকশন। লাইট অ্যান্ড রিফ্রেশিং রিডিং। এক কাপ কফি হাতে আপনি বিজ্ঞানের ছন্দে ছন্দে দুলতে থাকবেন। লঘুভার গদ্যে গভীর অন্বেষণ। ভেরি এঞ্জয়িং রিডিং।

আমার তৃতীয় বইটি একটু ভিন্ন ধরনের। এখানে আমাদের চিরকালীন প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়া হয়েছে। এছাড়া আরো কিছু আপাত বিচ্ছিন্ন ভৌত প্রপঞ্চও আছে – এরা আপাতভাবে বিচ্ছিন্ন হলেও এদের অন্তর্নিহিত মূলসুর কিন্তু বিজ্ঞানের কোনো-না-কোনো তত্ত্ব। একই তত্ত্ব ঘুরেফিরে প্রকৃতিতে নানাভাবে আসে। বইটিতে বিজ্ঞানের অনেকগুলি বিষয় নিয়ে আলোচনা এসেছে, এতোগুলো বিষয় নিয়ে এমন সুগভীর চিন্তা জাগানীয়া বই আমাদের দেশে বিরল। আমি চেষ্টা করেছি, চিন্তায় এমন এক আন্দোলন আনতে যা আমাদের বাঙালি পাঠককে ভাবতে বাধ্য করবে। এক অর্থে তাই, এই বইটিকে কিছুটা অসম্পূর্ণ বলা যায়, অনেক ক্ষেত্রে মনে হতে পারে প্রবন্ধগুলি হঠাৎ থেমে গেছে। আমার আশা, ঠিক যেখানে প্রবন্ধ থেমে গেছে, আধুনিক বাঙালি পাঠক ঠিক সেখান থেকে শুরু করে গুগল-উইকি’র সাহায্যে একটা সম্পূর্ণ বীক্ষা দাঁড় করাবে। কাজেই এক অর্থে এই বইটি পাঠকদের সক্রিয়তা আশা করছে। বিজ্ঞানের আলোয় পাঠক ও লেখক একসাথে ‘অপরূপ ভবিষ্যের রূপ’ নির্মাণ করবে।