বেহুলা-লখিন্দর
আকাশ মালিক
২য় পর্ব-
প্রথম পর্বে আমরা জেনেছিলাম পার্বতি ছাড়া কারো প্রতি শিবের কাম হয় না। প্রেমে মগ্ন শিব একদিন পার্বতির কথা চিন্তা করে কাম চেতনায় বীর্য বের করে দেন। সেই বীর্য পদ্ম পাতার ওপরে রাখেন। বীর্য পদ্মের নাল বেয়ে পাতালে চলে যায়। সেখানে সেই বীর্য থেকেই মনসার জন্ম। মনসা বড় হন বাসুকীর কাছে । কে এই বাসুকী? তা পরে দেখা যাবে। বাসুকী তার কাছে গচ্ছিত শিবের ১৪ তোলা বিষ মনসাকে দেন। যুবতী মনসা পিতার কাছে ফিরে এসে তার পরিচয় দেন। আবদার করেন কৈলাসে বাপের বাড়ি যাবার। শিব তার স্ত্রী পার্বতির ভয়ে কন্যাকে নিতে চান না। মনসাকে তিনি পরে মন্দিরে ফুলের ডালিতে লুকিয়ে রাখেন। কিন্তু পার্বতি মনসাকে দেখে ফেলেন। তিনি মনসাকে সতীন মনে করে হিংসায় মনসার এক চোখ অন্ধ করে দেন। শিবের প্রতি পার্বতির মানসিক নির্যাতন আর মনসার প্রতি শারিরিক অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে মনসা একদিন পার্বতিকে দংশন করে বসেন। সে দংশনে পার্বতির মৃত্যু হয়। শিব মনসাকে অনুরোধ করেন পার্বতির জীবন ফিরিয়ে দিতে। পিতার অনুরোধে মনসা পার্বতিকে আবার জীবিত করে তোলেন। পার্বতির রোষে ভীত শিব তার আপন কন্যা মনসাকে বনবাসে পাঠিয়ে দেন। মনসা ব্রহ্মর বীর্য ধারণ করে উনকোটি নাগ জন্ম দেন। এরপর মনসা সর্পদেবী আকারে হাজির হন। বনবাস থেকে ফিরে মনসা পিতার কাছে নিজের পূজা প্রচলনের আবদার প্রকাশ করেন। শিব বলেন, যদি চাঁদ সওদাগর মনসার পূজা দিতে রাজী হয়, তবে দুনিয়ায় মনসার পূজার প্রচলন হবে।
মঙ্গলকাব্যে মনসা শিবের কন্যা, পুরাণ অনুসারে ঋষি কশ্যপের কন্যা। মনসাবিজয় কাব্য থেকে জানা যায়, বাসুকীর মা একটি ছোটো মেয়ের মূর্তি নির্মাণ করেছিলেন। শিবের বীর্য এই মূর্তি স্পর্শ করলে মনসার জন্ম হয়। বাসুকী তাঁকে নিজ ভগিনীরূপে গ্রহণ করেন। রাজা পৃথু পৃথিবীকে গাভীর ন্যায় দোহন করলে উদগত বিষের দায়িত্বও বাসুকী মনসাকে দেন। একদিন শিব যুবতি মনসাকে দেখে কামার্ত হয়ে পড়েন। কি আশ্চর্য! স্বয়ং মহেশ্বর তার আপন মেয়েকে চিনতে পারলেন না? মনসা যে ভাবেই হউক তার পিতাকে প্রমাণ করতে সক্ষম হন যে তিনি তারই কন্যা। শিব তখন মনসাকে স্বগৃহে আনয়ন করেন। শিবের পত্নী পার্বতি মনসাকে শিবের উপপত্নী মনে করেন। করার কথা। শিবকে পার্বতি চিনবেন না তো কে চিনবে? তিনি মনসাকে অপমান করেন এবং ক্রোধবশত তাঁর একটি চোখ দগ্ধ করেন। পরে শিব একদা বিষের জ্বালায় কাতর হলে মনসাই তাঁকে রক্ষা করেন। একবার পার্বতি মনসাকে পদাঘাত করলে মনসা তাঁর বিষদৃষ্টি হেনে পার্বতিকে অজ্ঞান করে দেন। শেষে মনসা ও পার্বতির কলহে হতাশ হয়ে শিব মনসাকে পরিত্যাগ করেন। দুঃখে শিবের চোখ থেকে কয়েক ফোটা জল পড়ে আর সেই জলে জন্ম হয় মনসার সহচরী নেতার (মনসার ভাষায় নিতী)। মনসা তাকে সব সময় দিদি বলে ডাকেন। এরপর মনসা তাঁর সহচরী নেতার সঙ্গে পৃথিবীতে অবতীর্ণ হন মানব ভক্ত সংগ্রহ করার উদ্দেশ্যে। প্রথম দিকে লোকেরা তাঁকে ব্যঙ্গ করে। কিন্তু যারা তাকে পূজা করতে অস্বীকার করে, তাদের চরম দুরবস্থা সৃষ্টি করে তাদের পূজা আদায় করেন মনসা। তিনি সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের পূজা লাভে সক্ষম হন। এমনকি তখনকার মুসলমান শাসক হাসানও তাঁর পূজা করেন। জরৎকারুর সঙ্গে যখন মনসার বিবাহ হয়, পার্বতি মনসার ফুলশয্যার রাতটিকে ব্যর্থ করে দেন। তিনি মনসাকে উপদেশ দিয়েছিলেন সাপের অলঙ্কার পরতে আর বাসরঘরে ব্যাঙ ছেড়ে রাখতে যাতে সাপেরা আকর্ষিত হয়ে তাঁর বাসরঘরে উপস্থিত হয়। এর ফলে, ভয় পেয়ে জরৎকারু পালিয়ে যান। পরে তিনি ফিরে আসেন এবং তাঁদের পুত্র আস্তিকের জন্ম হয়। মনসার জন্ম যে ভাবেই হউক না কেন, তিনি যে একজন জনম দুঃখিনী তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। শিশুকালে তাকে তার বাবা ত্যাগ করলেন যৌবনে তার স্বামীও ত্যাগ করলেন। বনবাস থেকে ফিরে এসে মনসা পিতার কাছে নতজানু হয়ে করজোড়ে মিনতি করে বলেছিলেন- ‘পিতা আমি দেবীত্ব চাইনা, তোমার কন্যা হওয়ার অধিকারটুকু চাই’। শিব তাতেও অপারগতা দেখালেন। পার্বতির ডরে মহাদেব মনসাকে ফুলের মধ্যে লুকিয়ে শিবলোকের এক কোণে স্থান দিয়েছিলেন। আর বলেছিলেন এই ফুল কেউ যেন স্পর্শ না করেন। দেবী পার্বতি মহেশ্বরের নির্দেশ অমান্য করে সেই ফুল থেকে মনসাকে খুঁজে বের করে তাকে অপমান করেন। কেন? মনসার জন্মের জন্যে কেউ দোষী হলে তিনিই হবেন যিনি তাকে জন্ম দিয়েছেন। মনসার জন্মের জন্যে তো মনসা দোষী হতে পারেন না। কেন মনসার প্রতি দেবী পার্বতির এত ক্ষোভ এত ঘৃণা? নিম্নবর্ণের আদিবাসী দেবতা বলে? হ্যাঁ মনসা আদিবাসী দেবতা ছিলেন। কিন্তু এরাও যে স্বর্গলোকের ভিত নাড়িয়ে দিতে পারে, দেবীত্ব অর্জন করতে পারে, মানুষের পুঁজো পেতে পারে, ইন্দ্রসভায় সঠান বুকে দাঁড়িয়ে, তর্জনী উঁচিয়ে দেবকুলের অনাচারের প্রতিবাদ করার স্পর্ধা দেখাতে পারে, উচ্চপদের দম্ভ আর অহংকারে আকন্ঠ নিমজ্জিত দেবী পার্বতি তা বুঝি ভাবতেও পারেন নি? বাসুকী যদি মনসাকে আশ্রয় না দিতেন, মনসাবিজয় কাব্য হয়তো লেখাই হতোনা আর স্বর্গলোকের উচ্চবর্ণের রাজা-মহারাজা, শাসক-শোসক, দেব-দেবীদের সুকীর্তি- কুকীর্তি মর্ত্যলোকের নিম্নবর্ণের সাধারণ মানুষের অজানাই থেকে যেতো।
বলছিলাম বাসুকীর কথা পরে জানাবো। বাসুকীর নাম, দুটো কবিতায় উল্লেখ হতে দেখেছি, আপনাদের জন্যে সংক্ষেপিত করে এখানে তুলে দিলাম-
মহাভারত: আদিপর্ব
সুকুমার রায়
বুদ্বিভ্রংশ ঘটে হায় শান্তনু রাজার,
বিবাহের লাগি বুড়া করে আবদার।
মৎস্যরাজকন্যা আছে নামে সত্যবতী,
তারে দেখি শান্তনুর লুপ্ত হল মতি।
মৎস্যরাজ কহে, ‘রাজা, কর অবধান,
কিসের আশায় কহ করি কন্যাদান?
সত্যব্রত জ্যেষ্ঠ সেই রাজ্য অধিকারী,
আমার নাতিরা হবে তার আজ্ঞাচারি,
রাজমাতা কভু নাহি হবে সত্যবতী,
তেঁই এ বিবাহ- কথা অনুচিত অতি।’
ভগ্ন মনে হস্তিনায় ফিরিল শান্তনু
অনাহারে অনিদ্রয় জীর্ন তার তনু।
মন্ত্রী মুখে সত্যব্রত শুনি সব কথা
মৎস্যরাজপুরে গিয়া কহিল বারতা-
রাজ্যে মম সাধ নাহি, করি অঙ্গীকার
জন্মিলে তোমার নাতি রাজ্য হবে তার।’
রাজা কহে, ‘সাধুতুমি, সত্য তব বাণী,
তোমার সন্তান হতে তবু ভয় মানি।
কে জানে ভবিষ্যকথা, দৈবগতিধারা-
প্রতিবাদী হয় যদি রাজ্যলাভে তারা?’
সত্যব্রত কহে, ‘শুন প্রতিজ্ঞা আমার,
বংশ না রহিবে মম পৃথিবী মাঝার।
সাক্ষী রহ চন্দ্র সূর্য লোকে লোকান্তরে
এই জন্মে সত্যব্রত বিবাহ না করে।’
শুনিয়া অদ্ভুত বাণী ধন্য কহে লোকে,
স্বর্গ হতে পুষ্পধারা ঝরিল পলকে।
সেই হতে সত্যব্রত খ্যাত চরাচরে
ভীষণ প্রতিজ্ঞাবলে ভীষ্ম নাম ধরে।
ঘুচিল সকল বাধা, আনন্দিত চিতে
সত্যবতী রাণী হয় হস্তিনাপুরীতে।
ক্রমে হলে বর্ষ গত শান্তনুর ঘরে
জন্ম নিল নব শিশু, সবে সমাদরে।
রাখিল বিচিত্রবীর্য নামটি তাহার
শান্তনু মরিল তারে দিয়া রাজ্যভার।
অকালে বিচিত্রবীর্য মুদিলেন আঁখি
পাণ্ডু আর ধৃতরাষ্ট্র দুই পুত্র রাখি।।
হস্তিরায় চন্দ্রবংশ কুরুরাজকুল
রাজত্ব করেন সুখে বিক্রমে অতুল।
সেই কুলে জন্মি তবু দৈববশে হায়
অন্ধ বলি ধৃতরাস্ট্র রাজ্য নাহি পায়।
কনিষ্ঠ তাহার পাণ্ডু, রাজত্ব সে করে,
পাঁচটি সন্তান তার দেবতার বরে।
জ্যেষ্ঠপুত্র যুধিষ্ঠির ধীর শান্ত মন
‘সাক্ষাৎ ধর্মের পুত্র’ কহে সর্বজন।
দ্বিতীয় সে মহাবলী ভীম নাম ধরে,
পবন সমান তেজ পবনের বরে।
তৃতীয় অর্জুন বীর, ইন্দ্রের কৃপায়
রুপেগুণে শৌর্যেবীর্যে অতুল ধরায়।
এই তিন সহোদর কুন্তীর কুমার,
বিমাতা আছেন মাদ্রী দুই পুত্র তাঁর-
নকুল ও সহদেব সুজন সুশীল
এক সাথে পাঁচজনে বাড়ে তিল তিল।
অন্ধরাজ ধৃতরাষ্ট্র শতপুত্র তার,
অভিমানী দুর্যোধন জ্যেষ্ঠ সবাকার।
পাণ্ডবেরা পাঁচ ভাই নষ্ট হয় কিসে,
এই চিন্তা করে দুষ্ট জ্বলি হিংসাবিষে।
হেনকালে সর্বজনে ভাসাইয়া শোকে
মাদ্রীসহ পান্ডরাজা যায় পরলোকে।
‘পান্ডু গেল’, মনে মনে ভাবে দুর্যোধন,
এই বারে যুধিষ্ঠির পাবে সিংহাসন!
ইচ্ছা হয় এই দণ্ডে গিয়া তারে মারি-
ভীমের ভয়েতে কিছু করিতে না পারি।
আমার কৌশলে পাকে ভীম যদি মরে
অনায়াসে যুধিষ্ঠিরে মারি তারপরে।’
কুচক্র করিয়া তবে দুষ্ট দুর্যোধন
নদীতীরে উৎসবের করে আয়োজন-
একশত পাঁচ ভাই মিলি একসাথে
আমোদ আহ্লাদে ভোজে মহানন্দে মাতে।
হেন ফাঁকে দুর্যোধন পরম যতনে
বিষের মিষ্টান্ন দেয় ভীমের বদনে।
অচেতন হল ভীম বিষের নেশায়,
সুযোগ বুঝিয়া দুষ্ট ধরিল তাহায়,
গোপনে নদীর জলে দিল ভাসাইয়া,
কেহ না জানিল কিছু উৎসবে মাতিয়া।।
এদিকে নদীর জলে / ডুবিয়া অতল তলে
ভীমের অবশ দেহে / কেমনে জানে না কেহ,
কোথায় ঠেকিল শেষে / বাসুকী নাগের দেশে।
ভীমের বিশাল চাপে / নাগের বসতি কাঁপে
দেহ ভারে কত মরে / কত পলাইল ডরে ,
কত নাগ দলে বলে / ভীমেরে মারিতে চলে
দংশিয়া ভীমের গায় / মহাবিষ ঢালে তায়।
অদ্ভুত ঘটিল তাহে / ভীম চক্ষু মেলি চাহে ,
বিষে হয় বিষক্ষয় / মুহুর্তে চেতনা হয়,
দেখে ভীম চারিপাশে / নাগেরা ঘেরিয়া আসে
দেখিয়া ভীষণ রাগে / ধরি শত শত নাগে
চূর্ণ করে বাহুবলে / মহাভয়ে নাগে দলে
ছুটে যায় হাহাকরে / বাসুকী রাজার দ্বারে।
বাসুকী কহেন, ‘শোন / আর ভয় নাহি কোন,
তুষি তারে সুবচনে / আন হেথা সযতনে।’
রাজার আদেশে তবে / আবার ফিরিয়া সবে
করে গিয়া নিবেদন / বাসুকীর নিমন্ত্রণ !
শুনি ভীম কুতুহলে / রাজার পুরীতে চলে ,
সেথায় ভরিয়া প্রাণ / করিয়া অমৃত পান
বিষের যাতনা আর / কিছু না রহিল তার ,
মহাঘুমে ভরপুর / সব ক্লান্তি হল দুর
তখন বাসুকী তারে / স্নেহভরে বারে বারে
আশিস করিয়া তায় / পাঠাইল হস্তিনায় ।
সেথা ভাই চারিজনে / আছে শোকাকুল মনে
কুন্তীর নয়নজল / ঝরে সেথা অবিরল ,
মগন গভীর দুখে / ফিরে সবে ম্লান মুখে ।
হেন কালে হারানিধি / সহসা মিলালো বিধি
বিষাদ হইল দুর / জাগিল হস্তিনাপুর ,
উলসিত কলরবে / আনন্দে মাতিল সবে।।
এবার প্রথম বাঙ্গালী মহিলা কবি চন্দ্রাবতীর বন্দনাগীতি : মলুয়া থেকে-
আদিতে বন্দনা গাই অনাদি ইশ্বর।
দেবের মধ্যে বন্দি গাই ভোলা মহেশ্বর।।
দেবীর মধ্যে বন্দি গাই শ্রীদুর্গা ভবানী।
লক্ষী-সরস্বতী বন্দুম যুগল নন্দিনী।।
ধন-সম্পদ মিলে লক্ষ্মীরে পূজিলে।
সরস্বতী বন্দি-গাই বিদ্যা যাতে মিলে।।
কার্ত্তিক-গণেশ বন্দুম যত দেবগণ।
আকাশ বন্দিয়া গাই গড়ুর-পবন।।
চন্দ্র-সূর্য্য বন্দিয়া গাই জগতের আখি।
সপ্ত পাতাল বন্দুম নাগান্ত বাসুকী।।
মনসা দেবীরে বন্দুম আস্তিকের মাতা।
যাহার বিষের তেজে ডরায় বিধাতা।।
ভক্তমধ্যে বন্দিয়া গাই রাজা চন্দ্রধর।
তার মধ্যে বন্দিয়া গাই বেউলা-লক্ষ্মীন্দর।।
চার কুনা পৃথিবী বন্দিয়া করিলাম ইতি।
সলাভ্য? বন্দনা গীত গায় চন্দ্রাবতী।।
(মধ্যযুগের প্রখ্যাত কবি দ্বিজবংশী দাসের কন্যা, বাংলার প্রথম মহিলা কবি চন্দ্রাবতীর বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার ফুলেশ্বরী নদীর পাশে পাতোয়াইর গ্রামে। এই মন্দিরে বসে চন্দ্রাবতী রামায়ণ লিখতেন)
আর এই চন্দ্রাবতীর বাড়ি- (সুত্র প্রথম আলো)
– আমি আমার অধিকারটুকু চাই পিতা-
http://www.youtube.com/watch?v=87c2Q1VnKSw
– পার্বতি মহাদেবের আদেশ অমান্য করলেন-
http://www.youtube.com/watch?v=pbcRFiPYZM8
– এ যুদ্ধ টিকে থাকার, স্বার্থের, ক্ষমতার?
http://www.youtube.com/watch?v=_3l0TqSOULU
চলবে-
মুক্তমনায় তাহলে আজকাল কল্প কাহিনীও পড়তে হবে?ছেরে দে মা কেঁদে বাঁচি
@নিগ্রো,
কেন ভাই, অসুবিধা কোথায়, গ্রীক পুরান থেকে শুরু করে, হিন্দু পুরান সহ ধর্মীয় পুস্তক গুলো কল্প কাহিনী ও মিথে ভরপুর, আর এই মিথ গুলো সাহিত্যের প্রধান উপাদান হিসাবে যুগে যুগে ব্যাবহার হয়ে আসছে এবং সাহিত্যকে উন্নত করেছে। মিথ ব্যতীত প্রাচীন কোন সাহিত্য আছে কি? আর “মুক্তমনা” র নীতিমালার সাথে সাহিত্য চর্চার কোন বিরোধ আছে , আমার তা মনে হয় না।
ভাল থাকুন
খুবই ভালো লাগলো। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম। (F)
@ভক্ত,
আপনার ভাল লাগা আমার লেখার প্রেরণা। সাথে থাকার জন্যে ধন্যবাদ।
@আকাশ মালিক
‘ছাগ বলি দিলে বাগ্মী হয়’
দেখেন চিন্তা করে কতো গিয়ানি কথা লিখা আছে ধর্মগ্রন্থে? মুমিনরা তো এমনি এমনি বলে না যে পশ্চিমারা কুরান নিয়ে গবেষণা করে দিনরাত। আসলে আমাদের সবাইকে ধর্মগ্রন্থ পড়তে হবে, বুঝতে হবে সে যেই ধর্মগ্রন্থই হোক না ক্যান। আফসোস যে আমাদের দেশের নেতারা ধর্মগ্রন্থ পড়েন না, নাহলে তারা দিনরাত ছাগু( 🙂 ) বলি দিতো আর বাগ্মী হতো আর বিজয়ী হতো।
পুরাতন অজানা কাহিনী পড়ে বেশ আনন্দ পেলাম। চালিয়ে যান।
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্যে।
আচ্ছা, আপনি আজ পর্যন্ত একটা লেখাও দিলেন না, বিষয়টা কী ভাই? কী লিখবেন? বাংলাদেশে শিবিরের তান্ডব, কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদন্ড, কতকিছু লেখার আছে, একটা লেখা বউনি করে ফেলুন। হ্যাঁ এক্ষুণি। (Y)
@আকাশ মালিক,
না ভাই, লেখা লেখি করতে গেলে অনেক বেশী পড়াশুনা ও পরিশ্রম করার দরকার হয়। জীবনে কোনদিন এ কাজ করিনাই। এখন আর নূতন করে আরম্ভ করা সম্ভব নয়।
তার চেয়ে বরং আপনারা কষ্ট-পরিশ্রম করে সংগ্রহ আমাদের সম্মুখে হাজির করে দেন, আর আমরা সুবিধাবাদীর ন্যায় উপভোগ করি, এইটাই আমাদের জন্য বেশী উপভোগ্য।
ভাল থাকুন।
আমি যে জায়গা থেকে আসছি সেটা বিশাল একটা হিন্দুঅধ্যুষিত এলাকা। সারা শ্রাবণ মাসে বাড়ি বাড়ি মনসা পুঁথি পাঠ চলে কখনো খালি গলায় কখনো মাইক লাগিয়ে। মহিলাদের পুঁথি পাঠে থাকে চা বিস্কিট এবং সাধারণত সন্ধ্যার দিকে শেষ। আর কৈশোরে আমাদের আকর্ষণ ছিল অন্য পাড়া থেকে আশা সুন্দরী কিশোরীরা 🙂 । আর পুরুষের পুঁথিপাঠ একটু ভিন্ন, চা বিস্কিটের সাথে রাতে চলতো ক্যানিভাস। কিশোরদের মাদকের দিকে ঠেলে দেবার ক্ষেত্রে (কমপক্ষে আমার পাড়ায়) মনসার পুথিপাঠের ভুমিকা অস্বীকার করার উপায় নেই। বড়রাও কিছু বলেন না কারন ওই আসরে গঞ্জিকাকে ঈশ্বরের প্রসাদ হিসেবেই দেখা হয়। আর সারামাসব্যাপি চলা ধর্মীয় সামাজিকতার শেষ হয় প্রকাশে এক কোপে ছাগল বলি দেবার মত মধ্যযুগিও বর্বরতার মাধ্যমে। জয়তু সর্পদেবী মনসা।
@ঐশ্বরিক,
খুবই অন্যায়। আচ্ছা দেখা যাক ধর্মতন্ত্র কী বলে-
দেহ ত্যাগ করেও আত্মা গরম রক্ত খায়? আত্মা কী, থাকে কোথায়? হায় ভগবান, হায় ঈশ্বর, হায় আল্লাহ, তোমাদের লীলা বুঝা বড় দায়। তবে শুনলাম যে, বৈষ্ণব, শৈব, শাক্ত, সৌর এবং গাণপত্য-হিন্দু ধর্মের এই পাঁচটি ধারার মধ্যে কেবলমাত্র শাক্তদের মধ্যে বলির রেওয়াজ আছে? এক জায়গায় যেন পড়লাম, এই রক্তা-রক্তি বাদ দিয়েই না অনার্যরা আর্যদের উপর পপুলারিটি পেল? আর ভারতের আইনে তো দেখলাম এটা দন্ডনীয় অপরাধ। যুক্তিবাদী সংগঠনগুলো একত্র হয়ে শক্ত করে সরকারকে ধরেন। আমাদের বাংলাদেশের কথা বাদ দেন। আগামীতে দেশে পশুর অভাব পড়লে আমরা নিজেরাই কুরবানী হবো, পবিত্র ঈমানী আত্মাকে রক্ত পান করায়ে জীবিত রাখবো।
লেখাটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
খুব মজার কাহিনী লিখেছেনতো। খুব উপভোগ করলাম। আরো লিখুন।
“বেহুলা-লখিন্দর” পড়তে ভালই লাগছিল। কিন্তু বেহুলা-লখিন্দরের কাহিনীতে ইব্রাহিম, মোহাম্মেদ, হাছন রাজার অনুপ্রবেশ কেমন যেন অপ্রাসঙ্গিক মনে হচ্ছে। কাহিনীর সাদৃশ্য পাওয়া গেলেও তা কত টুকু প্রাসঙ্গিক একটু বিস্তারিত আশা করছি।
ধন্যবাদ আপনার সুন্দর লেখার জন্য। (F)
@ওমর ফারুক,
লেখাটি পড়ে সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আপনার কথা আগামীতে মনে রাখবো।
ভাল লেগেছে, আকাশ ভাই।
এই মিথগুলি আমার পড়তে খুব ভাল লাগে।
@কাজি মামুন,
তাইলে তো আরো কিছুদিন লেখা চালিয়ে যেতে হয়। আপনাদের মতো সাথী পেলে পথ চলায় ভরসা পাই।