প্রাক কথনঃ
কলাম বা প্রবন্ধ বা ব্লগ লেখা আজো হয়ে ওঠেনি, পারিনি। ওই ধরণের লেখায় মন্তব্যের ঘরেই আমার দৌড়, বিরতি। এবং না-পারা যে কতটুকু দরিদ্র টের পাই, মন্তব্যের ঘরে ছোট-খাটো প্রশ্ন করেও কোন সারা না পেয়ে।
সেই রকম জ্ঞান-গম্যি-র জগতে প্রবেশ করার সাহস থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে এনে, ছন্দহীন গদ্যে ভীতু বাঙালীর একখানা অকাব্যঃ
স্মৃতি-চিহ্ন স্বরূপ দু’চারটে
বৃক্ষের কি-বা এমন প্রয়োজন?
তার চেয়ে
মরুভূমি হয়ে যাক এই জীবন।

কবি-র কণ্ঠ, ফাঁসির রজ্জু সম্বলিত পোস্টার;
সমবেত শকুন,
শবদেহের প্রতিক্ষায় উচ্চকিত,
এ বাংলায় আর কোন কবিতা নয়,
আর কোন গান নয়।

হাজার বছর পুরনো তলোয়ার
অন্ধকার গহ্বর থেকে বেরিয়ে এসে,
উদ্ধত কণ্ঠে বলে –
চোখের আড়ালে আলো না অন্ধকার
প্রশ্ন করিস নে, মেনে নে।

প্রশ্নহীন মেনে নে’য়ার,
পথ-ঘাট এইসব দিন।

প্রয়োজন নেই দানবের দেশে
কবি আর সবুজ বৃক্ষের ।

৯১ ব ৯২ এ গণ আদালতের বিচারকরা যখন রাষ্ট্রদ্রোহী, আমি রাগে ক্ষোভে আমার মত করেই ছন্দহীন কয়েকটা বাক্যে নিজের ভাবনাকে আটকে রাখলাম। একটা বই বের করে নিজের গুদাম ঘরে রেখে দিলাম। আজ মনে হলো, এই যে রেখে দে’য়া, যেন কিছুটা হলেও কয়েক ফোটা বৃষ্টি পেল।
টানা ১৪ ঘন্টা কাজ করেও ঘুমুতে যাইনি। জেগে ছিলাম, প্রথম রায় শুনবো বলে। শুনলাম। রুমি-র মা জাহানার ইমামকে স্মরণ করছি, স্মরণ করছি আহমদ শরীফ স্যারকে। স্মরণ করছি ‘একাত্তরের ঘাতক ও দালালরা কে কোথায়’-র কুশীলবদের।
স্মরণ করছি, এই বিচার চেয়ে চেয়ে যারা এতটাকাল, অনেক কাঠ-খড় পুড়িয়েছেন, এখনো অনেকটা বাকি, অনেকটা বাকি, এটা শুধু শুরু।