পেছনের ইতিহাস
পশ্চিম গোলার্ধে ইউরোপীয় ঔপনেবিশক আমলের শুরুর সময় উত্তর আমেরিকা অঞ্চল মধ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকা হতে ভিন্ন ছিল; এখানে সেই অর্থে কোন প্রি-কলম্বাইন নগর সভ্যতা গড়ে উঠেনি। তৎকালীন সময়ে এখানে যারা বসতি স্থাপন করত তাদের সাধারণত নিজেদের নিরাপত্তা নিজেদের বিধান করতে হত নিজেদের তৈরি বসতিতে। সবার সাথেই অস্ত্র থাকত। আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধে সাধারণ মানুষ তাদের এই ব্যক্তিগত অস্ত্রের মাধ্যমে মিলিশিয়া বাহিনী গঠন করে যারা নিয়মিত মহাদেশীয় বাহিনীর সাথে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে তথা ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধ করে। যুদ্ধের পর পর পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মত এসব মিলিশিয়াদের নিরস্ত্র করা হয়নি কারণ যুক্তরাষ্ট্র পুরো-দমে কার্যকরী হবার সাথে সাথে আরেক ইতিহাস রচিত হতে থাকে-
সময়টা ১৮দশ শতাব্দী, আমেরিকায় তখন মেনিফেস্ট ডেস্টিনি তত্ত্বের জয় জয়কার। জনগণ ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য পশ্চিমে ছুটছে ফ্রান্স হতে ক্রয় করা উত্তর পশ্চিমের বিশাল লুইজিয়ানা অঞ্চল এবং এর কিছু পরে সুবিশাল মেক্সিকো হতে জবর দখল করা আমেরিকার গোটা মধ্য এবং দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল। এ যেন এক নতুন “নতুন পৃথিবী” যেখানে বসতি স্থাপন করতে জাহাজ নিয়ে কোন হাজার মাইলের নৌপথ পারি দিতে হয়না; পারি দিতে হয় ঘোড়া এবং কারাভানের বহরে বিপদ সকুল সড়ক পথ। নৌ পথের মত এখানে প্রধান বিপদ প্রকৃতি কিংবা জলদস্যুর মত অপরাধীরা নয়। স্থানীয় ভূমিপুত্ররা যারা সত্যিকার অর্থেই এই অঞ্চলের আদিবাসী কিংবা অ্যাবোরিজিনাল তাদের যৌক্তিক প্রতিরোধের স্বীকার হতে হত ইউরোপীয় বসতি স্থাপনকারীদের দের। নতুন অধিবাসীরা সেখানে ছোট ছোট টাউন গড়ে তুলেন এবং এর আশে পাশে কৃষি এবং গবাদি পশুর খামার গড়ে তুলেন। অনেকেই আসেন মাটির নিচের সম্পদের খোঁজে। তৎকালে যুক্তরাষ্ট্র মোটেও বর্তমান কালের মত পরাশক্তি ছিলনা; সবচাইতে বড় কথা তৎকালীন বিশ্বের ইউরোপীয় পরাশক্তিগুলো নতুন বিশ্ব থেকে নিজেদের দৃষ্টি ফিরিয়ে আফ্রিকা এবং এশিয়াতে তাৎক্ষণিক লাভের দিকে মনোযোগ দেয়।
উনবিংশ শতাব্দীতে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকার কিংবা বিভিন্ন অঙ্গরাষ্ট্রের সরকারের পক্ষে সম্ভব ছিলনা মহাদেশ-সম রাষ্ট্রে সবার জন্য নিরাপত্তা বিধান করা। বিভিন্ন অঞ্চলে নাগরিকেরা তাদের নিজেদের নিরাপত্তা বিধান নিজেরাই করত, যেমন করত স্বাধীনতার আগে ব্রিটিশ আমলে। স্থানীয় আদিবাসীদের সাথে বড় ধরনের সমস্যা হলে মাঝে মাঝে কেন্দ্র হতে সৈন্য পাঠানো হত । কিন্তু বিভিন্ন ধরনের অপরাধী এবং ডাকাতদের স্থানীয় জনগণই সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে মোকাবেলা করত। এজন্য তাদের প্রতি ঘরেই অস্ত্র থাকত এবং তা সামাজিক ভাবে গ্রহণযোগ্য ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের অপরাধ দমন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পুলিশ বিভাগের গঠনের উপর, স্থানীয়ভাবে অপরাধ দমনের প্রবণতা এবং অস্ত্র সংস্কৃতির ধারণা পাওয়া যায়। বিশ্বের সবচাইতে বেশি স্বাধীন পুলিশ বিভাগ আছে যুক্তরাষ্ট্রে, ৪০০০ এরও বেশি; প্রতিটি এলাকা যেমন স্টেট, সিটি,কাউন্টি কিংবা টাউন এমনকি পার্কের জন্যও আলাদা পুলিশ ডিপার্টমেন্ট। যার সবচাইতে ছোটটির সদস্য ৫০ জন থেকেও কম থেকে বৃহত্তম গুলোর সদস্য প্রায় ৩৪০০০ এরও অধিক। প্রধান প্রধান কেন্দ্রীয় পুলিশ কিংবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যেমন এফবিআই, ডিইএ, এটিএফ একেবারে নতুন সৃষ্টি, বিংশ শতাব্দীতে এদের যাত্রা শুরু। অন্যান্য দেশের মত যুক্তরাষ্ট্রে কেন্দ্রীয় ভাবে কোন ইউনিফর্মড পুলিশ সার্ভিস নেই। তাছাড়া ঐতিহ্যবাহী “শেরিফ বিভাগ” বিভিন্ন জেলা আকৃতির কাউন্টিতে স্থানীয় পুলিশ বিভাগের সাথে কাজ করে; লোকাল শেরিফ সাধারণত কোন এলাকার প্রধান আইন প্রয়োগকারী ব্যক্তি যিনি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন। শেরিফের আরেকটি দায়িত্ব হল তিনি স্থানীয় মিলিশিয়া প্রধান। ঐতিহ্যগত ভাবে যুক্তরাষ্ট্রে মিলিশিয়া বলতে বোঝায় অস্ত্রধারী নাগরিক স্বেচ্ছাসেবক দল যারা প্রয়োজনের সময় নিয়মিত সরকারি বাহিনীর সঙ্গে কাজ তথা যুদ্ধ করবে কিংবা এলাকার নিরাপত্তা বিধান করবে।
পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলে ব্যাক্তিগত অস্ত্রের ব্যবহার
পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই লাইসেন্সকৃত অস্ত্র রাখা যায়। এমনকি বাংলাদেশেও রাখা যায়। অনেকেই রাখেন, কারও আসলেই আত্মরক্ষার প্রয়োজনে রাখতে হয়, কেউ কেউ রাখেন নিতান্ত শখে; এটা একটি স্ট্যাটাস সিম্বল কিংবা আত্ম প্রশান্তি। তবে এসবের কোনটিও স্বয়ংক্রিয় কিংবা আধা স্বয়ংক্রিয় নয়। এধরনের অস্ত্র রাখা রীতিমত ফৌজদারি অপরাধ। যুক্তরাষ্ট্রে কিছুকাল আগে পর্যন্তও পূর্ন স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র সিভিলিয়ায়নারা রাখতে পারত। এখন তারা আধা স্বয়ংক্রিয় রাখতে পারেন।
ব্যাক্তি ব্যবহার্য অস্ত্র
ব্যাক্তিগত হালকা অস্ত্র (সামরিক স্ট্যান্ডার্ডে) সম্পর্কে সামান্য ধারণা পেলে এসব ব্যাপারে ব্যাপারটা পরিষ্কার হবে। ব্যক্তিগত অস্ত্রকে মোটা দাগে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়
১।রাইফেল এবং কার্বাইন
২।পিস্তল তথা হ্যান্ডগান এবং রিভলবার
৩।লংগান এবং শট গান
এই তিন শ্রেণীর মধ্য উপরুক্ত দুই শ্রেণীর (১ এবং ২ নং) অস্ত্র থেকে গুলি সাধারণত দুই ভাবে ছোড়া যায় – স্বয়ংক্রিয় (এক ট্রিগার চাপে এক নাগাড়ে পুরো ম্যাগাজিন কিংবা ২-৩ রাউন্ডের বার্স্ট) এবং আধা স্বয়ংক্রিয় ( এক ট্রিগার চাপে এক রাউন্ড তবে অটোমেটিক লোড)
শেষোক্ত (৩ নং), অর্থাৎ লংগান কিংবা শটগান হতে গুলি ছোড়ার পর সাধারণত আবার লোড দিতে হয়। তবে আধুনিক কিছু শটগান আধা স্বয়ংক্রিয় ডিজাইনেরও আছে। আমাদের দেশে লংগান এবং শটগান, বন্দুক হিসেবে পরিচিত।
মোটা দাগে, এসব অস্ত্রের কার্টিজকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় রাইফেল এবং হ্যান্ডগান কার্টিজ; বুলেট এই কার্টিজের ভেতরে থাকে। তাছাড়া শট গানের কার্টিজ শেল হিসেবে পরিচিত এবং লংগানে বল ব্যবহৃত হয়। অস্ত্রের নলের আভ্যন্তরীণ তথা ব্যারেলের ভেতরের আনুমানিক ব্যাস ক্যালিবার হিসেবে পরিচিত। ব্যারেল এবং কার্টিজের ব্যাস ইঞ্চি কিংবা মিলিমিটারে হিসেব করা হয়। সিভিলিয়ান সাইজের বুলেট এবং কার্টিজ বহনের আইন একেক জায়গায় একেক রকম। প্রয়োজন অনুসারে এসবের ডিজাইনের ভিন্নতা থাকে।
যেসব দেশে সিভিলিয়ানদের ব্যক্তিগত অস্ত্র রাখার অনুমতি আছে সেখানে সাধারণত লংগান, শট গান এবং সল্প ক্যালিবারের আধা স্বয়ংক্রিয় পিস্তল এবং রিভলভার রাখার অনুমতি দেওয়া হয় এবং তাও কঠোর নিয়ন্ত্রিত অবস্থায়। পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই রাইফেল-কার্বাইন জাতীয় অস্ত্র (স্বয়ংক্রিয় কিংবা আধা স্বয়ংক্রিয়) নিষিদ্ধ।
পোস্টে অস্ত্রের তথ্য সরলীকরণ করা হয়েছে। যারা আরেকটু বিস্তারিত এবং ট্যাকনিক্যালি অস্ত্র সম্পর্কে জানতে আগ্রহী তারা এই “ওয়ার্ল্ড গানস” সাইটে যেতে পারেন।
আমেরিকায় বিতর্ক এই রাইফেল, কার্বাইন এবং স্বয়ংক্রিয় হ্যান্ড-গান নিয়েই।
বিশ্বের বিভিন্ন সেনাবাহিনী এমনকি বিশেষ বাহিনীর ব্যবহার্য রাইফেল, কার্বাইন (যেমন M16, M82, G3, G36, HK416, AK47, AK101 কিংবা FT2000) কিংবা পিস্তলের (যেমন M9) এর সমমানের তথাকথিত সিভিলিয়ান আধা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র আমেরিকায় খোলা বাজারে কিনতে পাওয়া যায় যা অনেক ক্ষেত্রেই অনেক দেশের সেনাবাহিনী কর্তৃক ব্যবহার্য অস্ত্র থেকেও অনেক আধুনিক।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ব্যবহার করে মূলত Type 56 কিংবা 84 ভার্সনের স্বয়ংক্রিয় রাইফেল যা মূলত AK 47 এর উপর ভিত্তি করে প্রস্তুত, অতি অল্প কিছু ইউনিটের G3 সমমানের রাইফেল আছে।
এখানে বহুল প্রচলিত ভার্সনের নাম উল্লেখ করা হল, এসবের সিভিলিয়ান সংস্করণের সাংকেতিক সিরিয়াল ভিন্ন এমনকি নামও অনেক ক্ষেত্রে ভিন্ন। যেমন HK416 এর সিভিলিয়ান ভার্সনের যুক্তরাষ্ট্র সংস্করণের নাম MR556।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারী তদারকি সংস্থা
লাইসেন্স-কৃত কিংবা অবৈধ অস্ত্র-কেনা বেচা এবং এই ব্যবসার সরকারি তদারকি প্রতিষ্ঠান ATF (Bureau of Alcohol, Tobacco, Firearms and Explosives) যা স্থানীয় পুলিশের সাথে সাথে অন্যান্য কেন্দ্রীয় আইন প্রয়োগকারী FBI কিংবা DEA এর সঙ্গে জাস্টিস বিভাগের অধীন কাজ করে।
অস্ত্রের উপর ব্যাক্তিগত মালিকানা অধিকারের আন্দোলনকারী
অস্ত্র বহন অধিকারের প্রধান মুখপাত্র সংগঠন “ন্যাশনাল রাইফেল এ্যাসোসিয়েশন (NRA)” যারা নিজেদের সিভিল লিবার্টি সংঘটন হিসেবে পরিচয় দিতে ভালোবাসে। এর সদস্য ৪০ লাখেরও বেশি এবং সঙ্গে পরিবারের অনন্য সদস্য এবং অ-নিবন্ধিত মানুষদের ধরলে, কোটির উপর মানুষ এই অস্ত্র রাখার পক্ষপাতী । এই সংঘটনের বার্ষিক আয় এবং সংগ্রহীত চাঁদার মোট পরিমাণ ২০ কোটি ডলারেরও বেশি। ওয়াশিংটনে এদের লবি সবচাইতে প্রভাবশালী গুলোর মধ্য একটি।
যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাক্তিগত ভাবে অস্ত্র রাখাটাকে নাগরিক অধিকার মনে করা হয় । যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের মূল মানবাধিকার সনদে এর উল্লেখ আছে-
A well regulated Militia, being necessary to the security of a free State, the right of the people to keep and bear Arms, shall not be infringed.
এই আর্টিকেলটি অষ্টদশ শতাব্দীতে করা যা বর্তমানে সমরাস্ত্র অধিকারের পক্ষপাতীদের প্রধান অস্ত্র। তবে কালের পরিক্রমায় বর্তমানে নিজের কাছে বিপজ্জনক মারনাস্ত্র রাখার যুক্তি নেই কারণ-
১।সমগ্র আমেরিকা ব্যাপী পুলিশ, কেন্দ্রীয় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী এবং অপরাধ দমনকারী সংস্থার নেটওয়ার্ক বিস্তৃত। যারা অত্যন্ত সফলতার সাথে তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।
২। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী একটি পুরো পেশাদার বাহিনী। জরুরী অবস্থায় মিলিশিয়া বাহিনীর কিংবা গণবাহিনীর অস্ত্র রক্ষণাবেক্ষণ এবং শান্তিকালীন সময়ে নিয়মিত প্ররশিক্ষনের ব্যবস্থা তারা করতে পারে; নিয়মিত তা করাও হয়।
কালে কালে ব্যক্তিগত অস্ত্রের মাধ্যমে অপরাধ বাড়তে থাকলে, ক্রমেই আইন করে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হয়। তবে বিরোধীদের কারণে কোন সময়ই পুরোপুরি সফল হয়নি
১। জাতীয় আগ্নেয়াস্ত্র আইন ১৯৩৪
২।সামগ্রিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপদ সড়ক আইন ১৯৬৮
৩।আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৬৮
৪।আগ্নেয়াস্ত্র মালিকদের নিরাপত্তা আইন ১৯৮৬
৫।ব্র্যাডি হ্যান্ডগাম সহিংসতা প্রতিরোধ আইনের ১৯৯৩
এছাড়া আরও দুটি আইন করা হয়েছিল যা বর্তমানে বাতিল হয়েছে কিংবা অকার্জকর হয়ে গিয়েছে-
১।অস্ত্র-মুক্ত বিদ্যালয় এলাকা আইন ১৯৯০
২।কেন্দ্রীয় আক্রমণাত্মক অস্ত্র নিষিদ্ধ ১৯৯৪-২০০৪
লক্ষণীয়, উপরোক্ত আইন গুলোর প্রধান লক্ষ মোটেও অস্ত্র নিষিদ্ধ করা ছিলনা। এসব মূলত অস্ত্র কেনা বেচা কিংবা হস্তান্তর অথবা কি কি কারণে অস্ত্র বহন কেনা যাবেনা সেসবের আইন। খুব অল্পকাল আগেও ভারি মেশিনগান এবং পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় রাইফেল ব্যক্তিগত ভাবে রাখা যেত; কাগজে কলমে এখনো রাখা যায় যেগুলো ১৯৮৪ সালের আগে প্রস্তুত। স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল রাখা যেত ১৯৯৪ সালে আগ পর্যন্ত, মজার ব্যাপার হল এটাও যদি শুধু এই বছরের পর তৈরি অস্ত্রের ক্ষেত্রে। এখন শুধু সেমি স্বয়ংক্রিয় রাইফেল রাখা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের খতিয়ান এবং সমসাময়িক অবস্থা
প্রতি ১০০ জনে ৮৯ টি অস্ত্র আছে তথা আমেরিকার নাগরিকদের কাছে প্রায় ২৭ কোটি অস্ত্র আছে। সিভিলিয়ান অস্ত্র ব্যবসা বিলিয়ন-ডলার ব্যবসা। প্রতিবছর বিভিন্ন গান ভায়োলেন্সে ৯০০০ এর ও বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। এ সংখ্যা শান্তিকালীন সময়ে যেকোনো দেশ থেকে বহুগুন বেশি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আগ্নেয়াস্ত্র অপরাধ এর একটি চিত্র এই তিনটি সাইট – “গার্ডিয়ান” , ওয়াশিংটন পোস্ট এবং গান সাইট থেকে পাওয়া যাবে।
অতি সাম্প্রতিক কালে কানেটিকাটে ঘটে-যাওয়া একেবারে হত্যাযজ্ঞের হত্যাকারী নিজেই তিনটি অস্ত্র সঙ্গে নিয়ে আসে, একটি সেমি অটোম্যাটিক Bushman M4 কার্বাইন যা মূলত M16 এর সিভিলিয়ান ভার্শন AR15 উপর ভিত্তি করে তৈরি এবং দুটি 9MM পিস্তল (গ্লক এবং সোওর) যা সাধারণত সামরিক বাহিনীতে ব্যবহার করা হয়। এবং এই তিনটি অস্ত্ররই বৈধ লাইসেন্স আছে।
তাছাড়া, এই সমসাময়িককালে সংঘটিত ভার্জিনিয়া , নেভাদা ,উইস্কন্সিন , অরিগন , অ্যারিজোনা , ফ্লোরিডা , কলোরাডো , কলোরাডোতে তে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞেও প্রায় একই রকম অস্ত্র ব্যবহৃত হয়। বিপজ্জনক মারণাস্ত্রের সহজ লভ্যতাই এর মূল কারণ।
যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের একটি বড় অংশ মনে করে, প্রতিবছর যে বন্দুকের সহজ লভ্যতার কারণে মানুষের মৃত্যু হচ্ছেনা। তাদের কাছে ব্যক্তিগত অস্ত্র একটি সম্মানের কারণ। এটা বহু মানুষের অবসর কাটানোর সঙ্গী। তারা শিকার করে এবং বিভিন্ন খেলাধুলায় অশ নেয় অস্ত্র নিয়ে। বেশিরভাগ মানুষই ব্যাক্তিগত অস্ত্রই আত্মরক্ষার মূল মাধ্যম হিসেবে দেখে। আসলে এটা বংশ পরম্পরায় চলে এসেছে। এক সময় এমন অস্ত্র রাখা তাদের প্রয়োজন হলেও এখন এটা মানুষের পারিবারিক ঐতিহ্য এবং সামাজিক স্ট্যাটাস ও বটে।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে এখনই যদি এসব রাইফেল – কার্বাইন নিষেধ করতে হয় তাহলে প্রেসিডেন্টকে আক্ষরিক অর্থেই প্রশাসনিক ডিক্রী জারি করতে হবে কারণ নিকট ভবিষ্যতে মার্কিন পার্লামেন্ট, কংগ্রেসে এসব অস্ত্র নিষিদ্ধ হয়ে আইন পাস হবার আপাত কোন সম্ভাবনাই নেই।
বিপজ্জনক আগ্নেয়াস্ত্রের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে-তোলা এখন সময়ের দাবী। সবার বোঝা উচিৎ, এখন আর সেই অষ্টদশ-উনবিংশ শতাব্দী নেই, একবিংশ শতাব্দী। কালের প্রয়োজনে সংবিধান পরিবর্তনযোগ্য। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে বহু পরিবর্তন এবং পরিমার্জন হয়েছে এবং তা যুগোপযুগি করা হয়েছে। এই আর্টিকেল (দ্বিতীয় অ্যামেন্ডমেন্ট) টা আক্ষরিক অর্থেই যুগোপযুগি নয়। এটা বাদ দেওয়ার সাথে সাথে যুক্তরাষ্ট্রে অস্ত্র আইন আরও কঠোর করা উচিৎ। নাহলে ভবিষ্যতেও এমন সধারন মানুষদের নিজের জীবন দিয়ে এর মূল্য দিতে হবে।
বিস্তারিতঃ
# U.S. gun violence compares with the rest of the world:washingtonpost
# International Homicide Comparisons
# America’s deadly devotion to guns:guardian
# Timeline: US gun massacres:guardian
# Milestones in Federal: Gun Control Legislation
# Gun crime statistics by US state: latest data
# Gun Violence in America:The Suit
# How Prevalent is Gun Violence in America?
# Global Impact of Gun Violence
# UNODC Homicide Statistics 2012
# Murders with firearms (most recent) by country
# Bureau of Alcohol, Tobacco, Firearms and Explosives (ATF)
# National Rifle Association of America (NRA)
———————x———————
আমেরিকার গান রাইট নিয়ে খুব ভালো আলোচনা।
আমার প্রতিটা প্রতিবেশীরই একাধিক বন্দুক আছে। আমিও বন্দুক কিনব কিনব ভাবছিলাম। বন্দুক রাখাটা আমেরিকান সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। কানেক্টিকাটের ঘটনার পর অন্যরকম ভাবছি। এই দেশের মানুষের মন বেশ বেশী রকমের যুদ্ধবাজ এবং হিংসাত্মক। এবং এর কারন সবাই প্রায় আগ্নেয়াস্ত্র চালাতে সক্ষম।
রামায়নে সীতা লক্ষণকে বলেছিলেন, অস্ত্রর সংস্পর্ষে আসলে মানুষের মনে হিংসাত্মক ভাব আরো বেশী হয়। কথাটা আমেরিকানদের জন্যে বিশেষ ভাবে সত্য।
এই একবিংশ শতকে যখন খুবই উন্নত মানের সিকিউরিটি সিস্টেম এবং সার্ভিলেন্স বানানো সম্ভব, তখন দরকার নেই বন্দুক রাখার সাংবিধানিক রক্ষাকবচ। অবশ্য কংগ্রেস যদ্দিন রিপাবলিকানদের কিছুই হবে না-ওবামার ও বিশেষ কিছু করার নেই।
@বিপ্লব পাল,
সহমত। মৌলিক অধিকার ব্যতীত অন্যান্য কোন কিছুই কালোত্তীর্ণ নয়। অস্ত্র রাখাটাকে আমেরিকায় মৌলিক অধিকারে ফেলা হয়েছে। এজন্যই এত বিতর্ক। আশা করা যাচ্ছে আমেরিকার জনগণ এটা আসতে আস্তে বুঝবে। যখন এই আইন করা হয় তখন আগ্নেয়াস্ত্র মোটেই নির্ভর যোগ্যও অস্ত্র ছিলনা, তলোয়ার তখনও ব্যবহৃত হত। এখন এসব অস্ত্র এত বেশী আধুনিক হয়েছে যা আক্ষরিক অর্থেই ব্যাপক বিধ্বংসী মারণাস্ত্রে পরিণত হয়েছে।
কিভাবে আইন, সমসাময়িক পরিস্থিতির সাথে যুগ উপযোগী করা যায় তাই সবার ভাবা উচিৎ।
শিরোনাম দেখেই লেখাটা বেশ আগ্রহ নিয়ে পড়া শুরু করেছিলাম, কিন্তু একটা বিষয়ের উপর খুব কম নজর দেয়া হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। পোস্ট এবং মন্তব্যে কোথাও বিষয়টা তেমন হাইলাইট হয়নি মনে হল। সেটা হল অস্ত্র ব্যবসায়ীদের বিশাল প্রভাব প্রতিপত্তি। এই অংশটা নিশ্চয়ই সংস্কৃতির বাইরে নয়। সেদিন একটি টিভি রিপোর্টে দেখলাম ক্লিনটনের সময়ে নেয়া সেমি অটোমেটিক অস্ত্র সংক্রান্ত একটি আইন ২০০৪ এ এসে আর নবায়ন করা সম্ভব হয়নি পর্যাপ্ত ভোটের অভাবে – ঠিক কি ধরণের প্রভাব এর পেছনে কাজ করেছে বলে মনে হয় ? মার্কিন দেশে অস্ত্র ব্যাপারীদের প্রভাব নিয়ে কি কোন অথেনটিক প্রতিবেদন হয়েছে ?
@সুমন সাত্তার,
যুক্তরাষ্ট্রের খতিয়ান এবং সমসাময়িক অবস্থা
প্রতি ১০০ জনে ৮৯ টি অস্ত্র আছে তথা আমেরিকার নাগরিকদের কাছে প্রায় ২৭ কোটি অস্ত্র আছে। সিভিলিয়ান অস্ত্র ব্যবসা বিলিয়ন-ডলার ব্যবসা।
এখানে এ সম্পর্কিত এই লাইনটিই দেওয়া হয়েছে। আসলে এটা একটা সারমর্ম মূলক লেখা। এই সামাজিক বিষয়টি অনেক ব্যাপক। বিস্তারিত আলোচনা করতে হলে অনেকটা অনুসন্ধানী রিপোর্ট কিংবা সিরিজ ব্লগিং এর মত লেখতে হবে যা একটি প্রবন্ধের স্কোপের বাহিরে।
আপনাকে ধন্যবাদ 🙂
রামগড়ুড়ের ছানা, ধন্যবাদ আপনাকে। 🙂
মুক্তমনার সিকিউরিটি সংক্রান্ত কিছু কাজ করছি আমরা তাই একটু সমস্যা হতে পারে। মন্তব্য করা বা লগইন করা টাইপের সমস্যা কারো হলে জানাতে অনুরোধ করছি। সাময়িক সমস্যার জন্য দু:খিত।
যদিও ওবামা বলেছেন তার সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা করবেন গান কন্ট্রোলের ব্যাপারে এক্টা কিছু করতে। কিন্তু সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। আমেরিকায় এনআরএ’র যা ক্ষমতা তাতে ব্যাপারটা খুবই কঠিন হবে। ওরা আবার এমন কিছু পরিস্হিতি সৃষ্টি করবে যাতে মনে হবে আগ্নেয়াস্ত্র না থাকাটাই মানে জীবন বিপন্ন।
@হোরাস,
একেবারে সম্ভব হবেনা বলাই বাহুল্য। প্রক্রিয়া শুরু হলেও কয়েক জেনারেশন লেগে যাবে পুরোপুরি সফল হতে। তবে মনে হচ্ছে বিপজ্জনক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। হয়ত ২০-৩০ বছর পর এর ফল দেখা যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপারে বলতে পারি না। তবে আমাদের দেশে এমন অস্ত্র সংস্কৃতি থাকা দরকার ছিলো। আমাদের আইন প্রোয়গকারী সংস্থা এখন স্রেফ লাইসেন্সধারী সন্ত্রাসী ছাড়া কিছু নয়। তারা, শুধু যে মানুষকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ তা-ই নয়। নিরাপত্তা দেওয়ার ইচ্ছা করতেও তারা ব্যর্থ। এ ছাড়া আছে লাইসেন্সবিহীন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। বিজয় দিবসের আগেই তো শীর্ষ এক সন্ত্রাসীকে কঠোর গোপনীয়তায় ছেড়ে দিলো। এমতাবস্থায়, নিজের নিরাপত্তা নিজেই নিশ্চিত করতে পারলে সবচেয়ে ভালো। নইলে কবে আমি বিশ্বজিত হয়ে যাই তার নেই ঠিক। পোস্টমর্টেম রিপোর্টে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যাবে না। বিশ্বজিতের বাবার এ-কে ফোর্টিসেভেন থাকলে ক্যামেরার সামনে ওভাবে কুপিয়ে মারার সাহস পেতো না ওরা।
আমেরিকার সংবিধান প্রণেতাদের উপর আমার দিন দিন শ্রদ্ধা বাড়ছে, তো বাড়ছেই….
@তানভীরুল ইসলাম,
সহমত।
যে আইন মানুষদের নিরাপত্তা দিতে পারেনা তার আসলে কোন মূল্যই নেই। এর থেকে অকল্পনীয় আর কি হতে পারে…… সন্ত্রাসীরা পুলিশের সামনে নিরস্ত্র সাধারণ মানুষকে মারছে, পুলিশ নির্বিকার দেখেও না দেখার ভান করছে, যেন নৈরাজ্য…… মৎস ন্যায়। পোর্স্টমার্টেম রিপোর্টটি অলিভার গোল্ডস্মিথের একটি উক্তির স্বার্থকতা প্রমাণ করছে-
“দরিদ্ররা আইনের দ্বারা শোষিত (চূর্ণ) হয় এবং ধনীরা (এবং ক্ষমতাবানেরা) আইনকে শাসন করে”
@সংবাদিকা, ধন্যবাদ ।লেখাটি ভাল লেগেছে আমার। তবে সেনাবাহিনী নিয়ে একটা লেখা দিন না। এই বিশাল সেনাবাহিনীর কি দরকার এই দেশে, এইসব নিয়ে আর কি।এরা তো আসলে বসে থাকা ছাড়া কিছুই করছে না। কি বলেন আপনি? 🙂
@অর্ফিউস,
ধন্যবাদ 🙂
সেনাবাহিনী অবশ্যই থাকতে হবে। অন্তত দেশের অস্ত্র এবং গোলা-বারুদ রক্ষণাবেক্ষণের কাজে এবং জরুরী অবস্থায় গণবাহিনীকে নেতৃত্ব দেবার জন্য হলেও। অনেকের কাছে তেমন কিছু না মনে হলেও সমর বিদ্যা বিষয়টি খুবই ব্যাপক; সমরবিদ্যা একাধারে বিজ্ঞান এবং কলা। হঠাৎ কেউ আসলে যুদ্ধের নেতৃত্ব দিতে পারেনা। ক্যান্টনমেন্টের যেমন অবস্থা, আসলে সমগ্র দেশেই তেমন পরিচ্ছন্ন এবং নিরাপদ থাকা উচিৎ। ওখানে করা যায় কেননা একটি শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে যায়।
তবে অবশ্যই আমাদের দেশের সশস্ত্র বাহিনী আমাদের দেশের উপযুক্ত করেই গড়ে তোলা উচিৎ, কোন বৃহৎ দেশের অতি বৃহৎ সশস্ত্র বাহিনীকে স্ট্যান্ডার্ড ধরে করা শুধু অর্থের অপচয় নয়, সময়েরও অপচয়। যেমন নৌ বাহিনীকে “ত্রি-মাত্রিক করার পরিকল্পনা। আমাদের দেশের মত এমন ছোট সামরিক বাহিনীর জন্য এটা অদূরদর্শী পরিকল্পনা, যেখানে আরও দুটি মাত্রায় আলাদা বাহিনী আছেই।
ছোট দেশ এবং ছোট সশস্ত্র বাহিনী এটা চিন্তা করেই সমর পরিকল্পনা হওয়া উচিৎ। ভবিষ্যতে যদি দেশ বড় হয় কিংবা যুদ্ধের প্রয়োজন হয়, তখন এভাবে পরিকল্পনা করা যেতে পারে। তবে সশস্ত্র বাহিনী অবশ্যই থাকা প্রয়োজন; হয়ত বড় আকারে কিংবা ছোট আকারে; কিন্তু থাকতে হবে।
@সংবাদিকা,
আসলে যদিও আমি সেনাবাহিনী থাকার ঘোর বিরোধী, তবু আপনার এই কথাটিও ভাল লেগেছে ।তবে আমার মনে হয় যে দেশের সীমান্ত রক্ষায় বরং বর্ডার গার্ড কে আরো শক্তিশালী করা উচিত। আর নৌবাহিনীর পরিবর্তে কোস্ট গার্ডকে শক্তিশালী করা দরকার, ওই প্রহরী হিসাবেই।আমেরিকা বা ব্রিটেনের যেমন কোস্টগার্ড একটা আলাদা বাহিনী, তেমনটাই বাংলাদেশেরও থাকা উচিত,উদ্ধারকারী বাহিনী হিসাবে।
আসলে যুদ্ধের প্রয়োজন যত কম হয় ততই ভাল।না হওয়াটাই সবচেয়ে ভাল। তবে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী মনে হয় না যুদ্ধে সুবিধে করতে পারবে প্রতিবেশী কোনদেশের সাথেই।কথাটা কতটুকু সত্য জানিনা, তবে শুনেছি যে মিয়ানমার নাকি সীমান্তে সেনা সমাবেশ করলেই বাংলাদেশের সেনা অফিসাররা নানা অজুহাতে ঢাকা চলে আসেন ( পড়ুন পালিয়ে আসেন 😉 ) । খুবই দুঃখজনক হবে যদি এই কথাটা শুধুই গুজব না হয়ে বরং সত্যি হয় 🙂 ।
এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে একটা অলিখিত শান্তি চুক্তি হতে পারে, কেউ কাউকে আক্রমন না করার চুক্তি।তাহলেই সেনা বাহিনীর দরকার হবে না। তবে এটা না হলেও আমার মনে হয় সীমান্ত পাহারা দেবার ফর্মালিটিটুকু করার জন্য বর্ডার গার্ডই যথেষ্ট।
@অর্ফিউস,
সেক্ষেত্রে ভারতের কথা নাইবা বললাম। সর্বাত্বক যুদ্ধ যদি সত্যই শুরু করার দরকার হয়, তবে ভারতের কাছে বাংলাদেশ কয়দিন টিকে থাকতে পারবে, সেটা ভেবে দেখার মত বিষয়।
@অর্ফিউস,
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, কূটনীতি কিংবা সমরবিদ্যা যত সহজ মনে হয়, বাস্তবে তার চেয়ে অনেক কঠিন এবং জটিল…… কেয়োটিক। খুব বেশী কিছু নিয়ে চিন্তা করার দরকার নেই। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন অবস্থাই খুব সুন্দর উদাহরণ।
অফটপিক, আপনি কি রিভার্স খেলছেন নাকি আসলেই মনে করেন দেশে সামরিক বাহিনীর কোনই প্রয়োজন নেই। যাই হোক, আপনার মতের যুক্তি আছে এবং মতের বিরোধিতারও যুক্তি আছে। এসব মনে হয় এই প্রবন্ধের স্কোপের বাহিরে। এই আলোচনার জন্য আলাদা প্রবন্ধ লেখার প্রয়োজন। আশা করছি হাতে সময় পেলে আপনি এ বিষয় নিয়ে একটি প্রবন্ধ লিখবেন।
ধন্যবাদ।
@অর্ফিউস,
ভুল শুনেছেন 🙂
এমন হলে পৃথিবী শান্তিতে শান্তিতে ভরে যেত। ক্ল্যাসিক্যাল দার্শনিকেরা যুগের এসব নিয়ে ব্যপক গবেষণা এবং লেখালেখি করেছেন। বর্তমানের দার্শনিকেরা এসব নিয়ে আর সময় নষ্ট করতে চাননা। “০K” তাপমাত্রা যতটুকু সম্ভব রাষ্ট্র এবং সমাজের এই ইউটোপিয়ান অবস্থাও ততটুকু সম্ভব।
@সংবাদিকা, ইউরোপের দেশগুলো কিন্তু পরস্পরের সাথে বেশ শান্তিপুর্ন সহাবস্থানে আছে বলেই মনে হয়। তাদের মিলিটারী আছে ,কিন্তু বেশিরভাগ দেশ গুলোর ক্ষেত্রেই কিন্তু সেটা নাম মাত্র।আর তাই আপনার উপরে করা আরো একটি প্রশ্নের জবাব এখানেই দিয়ে দেই। না আমি রিভার্স খেলছিনা, বরং সত্যি মনে করি যে দেশে মিলিটারির দরকার নেই।তবে হ্যাঁ সৎ আর দক্ষ পুলিশ ফোর্স দরকার আছে বলেই আমি মনে করি। এখানে দেখুন বেশ কিছু দেশেই কিন্তু এমন সিস্টেম আছে। ধন্যবাদ। 🙂
@অর্ফিউস, একটা ব্যাপার খেয়াল করুন যে বাংলাদেশের মতো তীব্র পলিটিক্যাল পোলারাইজেশনের দেশে আওয়ামী, বিএনপি, আর্মি এই তিন ক্ষমতার কেন্দ্র থাকার কারনে কিছুটা ব্যালেন্স ওফ পাওয়ার আছে। এখানে পলিটিক্যাল পার্টিগুলো ক্ষমতায় এলে বলতে গেলে দেশের যাবতীয় ক্ষমতার অধিকারী হয়। পুলিশ, বিচার বিভাগ, মিডিয়া সবকিছুই তারা চাইলে নিয়ন্ত্রন করতে পারে। যদি ক্ষমতার তৃতীয় পক্ষ না থাকতো তবে অবলীলায় তারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নি:শেষ করার প্রয়াস নিতে পারতো। বিএনপি বা আওয়ামী আপাতত প্রতিপক্ষকে পুরোপুরি দমনের পথ যায় না কারন তাদের মাথায় আছে যে বাইরের আর্শীবাদে তৃতীয় পক্ষ যেকোনো সময়ে এসে তাদের দুই দলকেই শায়েস্তা করতে পারে। এই মুহুর্তে বলতে গেলে দেশে একটা শীতল গৃহযুদ্ধ চলছে। এই শীতল যুদ্ধ পুরো গরম হতে পারছে না কারন তারা জানে যে বেশী অবস্থা খারাপ হলে ট্যাংক-কামান ধারী বাহিনী নেমে পড়বে।
এই রকম অবস্থা কারোই কাম্য নয়, কিন্তু ‘ সৎ আর দক্ষ পুলিশ ফোর্স ‘ যখন নেই এবং তার আশা করাটাও দুরাশা তখন একটা প্রফেশনাল আর্মীর বিকল্প কি আছে? হাইপোথেটিক্যাল কথা আর বাস্তবতা দুটি ভিন্ন জিনিশ, আমি মনে করি যে বাংলাদেশের এই পরিস্থিতিতে একটা তৃতীয় ক্ষমতাশালী সংগঠন থাকা দেশের পরিস্হিতি কোন রকম স্টেবল রাখার জন্যে সহায়ক।
@সফিক,
ইন্টারেস্টিং।
একটা বিষয় খেয়াল করলাম যে এই সমীকরণটা অনেকটাই বাংলাদেশ স্পেসিফিক, বা সেসব দেশ স্পেসিফিক যেখানে মিলিটারি সরকারের সরাসরি তাবেদার নয়। যেমন একই যুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয় না, কারণ মিলিটারি সেখানে তৃতীয় শক্তি নয়, বরং সরকারের তাবেদার, বা সরকার ও মিলিটারি একই গোষ্ঠির তাবেদার। কিন্তু বাংলাদেশে মিলিটারি যেহেতু বাইরের শক্তি দ্বারা কেনা হয়ে গেছে, এতে একরকম শাপে বর হয়েছে বলে আপনার কথাটা থেকে মনে হচ্ছে। চিন্তার বিষয়। এর বিরুদ্ধে আমার একটা অভিযোগ হচ্ছে এটা প্রচলিত তথা এস্টাবলিশমেন্টকে র্যাশনালাইজ করছে। দেয়ার মাস্ট বি সাম ওয়ে আউট।
@রূপম (ধ্রুব),এটা অবশ্যই এস্টাবলিশমেন্টকে পারপেচুয়েট করছে। খেয়াল করুন যে এই ব্যালেন্স ওফ পাওয়ারের কারনে এই তিন পক্ষ কিন্তু একে অপরের মূল স্বার্থে আঘাত হানছে না। আওয়ামী বা বিএনপি সরকার তাদের পূর্ববর্তী সরকাররের বড়ো বড়ো অপরাধগুলোকে যথাযোগ্য বিচারের আওতায় আনছে না এবং এরা কেউই সামরিক বাহিনীর ব্যয়, পলিসি, মানবতা লংঘনকে ছুতে সাহস করছে না।
প্রতিটি মানুষের জীবনের মতো প্রতিটি দেশের রাজনৈতিক এবং সামাজিক সংষ্কৃতি অবশ্যই ইতিহাসের পাথ ডিপেনডেন্ট। আমরা ভারতের মতো শুরু থেকেই নিয়মতান্ত্রিক গনতন্ত্র এবং সামরিক বাহিনীর উপরে সিভিলিয়ান কতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারি নি। এর মাশুল আমাদের দিয়ে যেতে হচ্ছে ৪০ বছর ধরে। আমার খুব ভাবতে ইচ্ছে করে যে এই দুই মহিলা সরে যাবার পরে হয়তো আমরা সংষ্কৃতিটি পরিবর্তনের একটা সুযোগ পাবো। আমি নিশ্চিৎ জানি যে এখনো দুই পার্টির মধ্যে অনেক নেতা রয়েছে যারা বাংলাদেশে নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি এবং পারষ্পরিক নেগোশিয়েশনের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনায় বিশ্বাসী। আর সামরিক বাহিনীর অফিসার কোরও দেশের ক্ষমতায় সরাসরি অধিষ্ঠিত হবার চিন্তা আগের মতো করে না।
বাইরের শক্তি দ্বারা দেশকে নিয়ন্ত্রনের ব্যাপারেও আমার অবজার্ভেশন কিছুটা অন্যরকম। আপনি যদি ২০০৬ -০৭-০৮ এর সময়ের বাংলাদেশ সম্পর্কিত উইকি লিকস বার্তাগুলো দেখেন তবে দেখবেন বাইরের শক্তি (আমেরিকা!) এই দুই মহিলাকে নেগোশিয়েট করার জন্যে অনেক চাপ দিচ্ছিলো কিন্তু তারা তাদের কথা কোনো গ্রাহ্যই করে নি। খালেদা তো সরাসরি মার্কিন দূতাবাসকে আওয়ামী লীগের পক্ষপাতি বলে অভিযুক্ত করছিলো। Contrary to popular perception আমেরিকা বাংলাদেশের রাজনীতির সবকিছু নিয়ন্ত্রন করে না। আমাদের নেতারা নিজের স্বার্থ অনুযায়ী আমেরিকান সরকারকে অনেকটাই অগ্রাহ্য করতে পারেন। এই তিন বছরে শেখ হাসিনা আমেরিকান সরকারের বাংলাদেশ নীতির বিরোধিতায় অদৃষ্টপূর্ব সাহস দেখিয়েছে। এর কারনে হয়তো হাসিনা সরকার আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট এর অনেক বিরাগভাজন হয়েছে কিন্তু এতে এখন পর্যন্ত কোনো সরাসরি বিরোধিতার সম্মুখীন হয় নি। আসলে একেবারে আইডিওলজিক্যালী আমেরিকা বিরোধী সরকার না আসা পর্যন্ত আমেরিকান সরকার বাংলাদেশের রাজনীতিতে বেশী জড়াতে খুব একটা আগ্রহী নয়।
আর বাংলাদেশ আর্মীর অফিসারেরা জাতিসংঘ, আমেরিকান ট্রেনিং, আমেরিকার ভিসা, আমেরিকায় ইমিগ্রেশন এসবের কারনে অবশ্যই আমেরিকান সরকারের আস্থাভাজন ক্লায়েন্ট হয়ে থাকতে চায়।
@সফিক,
আমার কিন্তু তা মনে হয় না যে সৎ আর দক্ষ পুলিশ ফোর্সের আশা করাটা দুরাশা। প্রথমেই আমাদের দেখতে হবে যে পুলিশ কেন অসৎ হচ্ছে।কারা পুলিশকে অসৎ করছে বা অসৎ হতে বাধ্য করছে। এখানে আমরা প্রথমেই আলোচনা করতে পারি দেশের রাজনৈতিক দলগুলো আর রাজনীতিবিদ দের সীমাহীন দুর্নিতি নিয়ে, কিন্তু তাতে এই প্রবন্ধের সৌন্দর্য হানী হবে। এগুলো আলোচনার জন্য আলাদা প্রবন্ধ দরকার;অবশ্যই সেটা হতে হবে আবেগ আর আদর্শবাদ মুক্ত।
সংক্ষেপে শুধু এটুকুই বলতে চাই যে আমাদের দেশে দেখুন, পাতি নেতা, ক্যাডার,অথবা শুধু একটি দলের জন্য মারামারি করছে, এমন লোকদেরকেও প্রতিদান দিতে দল ভুল করছে না, ক্ষমতায় গেলে। আপনি যদি ভাল করে লক্ষ্য করে থাকেন তবে দেখবেন যে কিছু নেতার আছে রেস্টুরেন্ট।এখানে অনেক অশিক্ষিত কিন্তু নিবেদিত প্রাণ দলীয় কর্মীদের নেতা চাকুরী দিচ্ছেন বয়ের।বেতন কত একটা বয়ের?সেখান থেকেই সে জমিজমার মালিক হচ্ছে গ্রামের বাড়িতে,এমনকি কেউ কেউ ৫ তলা বাড়িও করে ফেলছে, অবশ্যই টাকাপয়সা মেরে।
হ্যাঁ তার নেতার টাকা মেরে, কিন্তু এতে কিন্তু নেতা অখুশি নন।কারন উনি নিজেই নিজের টাকা মারার সুযোগ ওই কর্মীকে প্রতিদান দিচ্ছেন, একদা তার অবদানের কথা স্মরন করে।আর নেতা বিনিময়ে কি পাচ্ছেন?সরকারী দলের এমপি হবার সুবাদে কি পাওয়া যায় সেটা আপনি, আমি , আমরা সবাই খুব ভাল করেই জানি।
এবার আসেন আমাদের মত শিক্ষিত মধ্যবিত্ত আম জনতার কথা। আমরা কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে কি করছি? ফ্যা ফ্যা করে ঘুরছি চাকরির সন্ধানে। কেউ বেসরকারী কোন ভাল প্রতিষ্ঠানে চাকরি পাচ্ছি ভাল বেতনে,কেউ বা অল্প বেতন কিন্তু নিরাপদ চাকরি পাচ্ছি সরকারী চাকরি পাবার মাধ্যমে, খুব অল্পসংখ্যক লোক সামর্থ্য অনুযায়ী ক্ষুদ্র বা মাঝারী ব্যবসা শুরু করছি, যদিও একটি চাকরির দিকেই বাংলাদেশের ছেলে মেয়েদের ঝোঁক বেশি থাকে।
এবার আসুন সরকারের বেতন কাঠামোর দিকে তাকাই। আপনি বিসিএস দিয়ে প্রথম শ্রেনীর সরকারী কর্মকর্তা হিসাবে চাকরীতে ঢুকছেন, ১১৫৫০ টাকা মুল প্রারম্ভিক বেতনে।আপনি বাড়ী ভাড়া পাচ্ছেন কত?যা পাচ্ছেন তা দিয়ে মফঃস্বলে হয়তো একটি মানসম্মত বাড়ি ভাড়া করে থাকতে পারছেন। কিন্তু ঢাকাতে পারছেন কি?বউকে কতটাকা দামের শাড়ি কিনে দিতে পারছেন?বাইরে রেস্তোরাঁয় খেতে গেলে বাজেট কত হয়? একটু যৌক্তিক ভাবে চিন্তা করে দেখুনতো, আপনার পদমর্যাদার তুলনায় আপনার জিবনযাত্রার মানটা কি আপনি আদৌ মেনটেইন করতে পারছেন?
না পারছেন না।এমনকি তার ধারে কাছেও যেতে পারছেন না। এবার আসেন সেই অশিক্ষিত বয়ের কথা, যে হয়ত কর্মরত আছে সেই রেস্তোরাঁতেই, যেখানে আপনি আপনার সৎ উপার্জনের টাকাতে বউকে নিয়ে খেতে গিয়ে একবারেই খরচ করে আসছেন আপনার মুল বেতনের কমপক্ষে এক পঞ্চমাংশ।আর সেই বয় মালিকের টাকা মেরে ৫তালা বাড়ি তুলছে শুধুমাত্র একদা মালিকের সেবা করা , তথা ভাংচুর সহ নানা নৈরাজ্য সৃষ্টি করে, মালিককে ক্ষমতায় যেতে সাহায্য করে?অথবা আপনার সম মর্যাদার চাকরী করে আপনার বন্ধুটি জিনি একটি বেসরকারী চাকরি করেন( ধরে নিন একটি ব্যাঙ্কে), তিনি কতই না উন্নত জীবন যাপন করতে পারছেন; অন্তত আপনার চেয়ে অনেক ভাল। তাহলে আমার প্রশ্ন হল, আপনি কেন দুর্নীতি করবেন না, সুযোগ থাকা সত্বেও, যেখানে আপনি আপনার সামাজিক মর্যাদা আর পদমর্যাদা অনুযায়ী চলতে পারছেন, দুর্নীতি থেকে প্রাপ্ত অর্থের কারনে?
এখানে যদি আপনি বলেন যে আপনার বিবেক, আর আদর্শের কারনে আপনি সেটা পারছেন না, সেখানে আমার আর কিছু বলার থাকেনা। কিন্তু ভাল করে যদি লক্ষ্য করে দেখেন তবে দেখবেন যে সর্বগ্রাসী অভাবের কাছে, নৈতিকতা সর্বদাই পরাজিত সৈনিক। আদর্শবাদের কথাবার্তা খুব সহজে তখনই মুখ দিয়ে আসে, যখন পেটে ক্ষুধা থাকে না, আর ক্ষুধা থাকলে পুর্নিমার চাঁদটিকেও আসলেই ঝলসানো রুটি বলেই মনে হয়; মনে হয় আদর্শবাদ আর নৈতিকতা চুলোয় যাক, আগে পেটে কিছু দিয়ে নেই।
রাস্তার একটা ক্ষুধার্ত ভিখারীই বুঝবে খুধা কাকে বলে, আমরা যারা অন্তত পেটের ভাত জোগাড় করতে পারি, তারা আর সব অভাব বুঝলেও ক্ষুধা কাকে বলে বুঝব না, হাজার না খেয়ে থাকলেও না, কারন আমরা জানি যে না খেয়ে থাকলেও, চাওয়া মাত্র খাবার আমরা পেয়ে যাব।
যাক এই নিয়ে কথা না বাড়িয়ে আসেন জীবনযাত্রার মান আর সরকারী চাকরীর বেতন কাঠামোতে ফিরে যাই। পুলিশকে ন্যায্য বেতন দিন ( শুধু পুলিশ নয়, সবাইকেই তার যোগ্যতা আর কর্মদক্ষতা অনুসারে বেতনের ব্যবস্থা করুন),রাজনীতিতে সুস্থতা ফিরিয়ে আনুন,প্রায় দুর্নীতি মুক্ত( প্রায় বললাম কারন পুরা দুর্নীতি মুক্ত সমাজ আর রাষ্ট্র একটিও নেই) সমাজ আর রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ার মাধ্যমে সৎ আর দক্ষ পুলিশ বাহিনী গড়া তেমন কঠিন হবে না।আর সেক্ষেত্রে মিলিটারীকে আপনি যেভাবে বিকল্প হিসাবে দেখছেন, সেটারও দরকার হবে না। দুর্নিতি আর অপকর্মের জন্য ঢালাও ভাবে শুধু পুলিশকে দোষ দিয়ে, আর সৎ ও যোগ্য পুলিশ বিভাগ কল্পনা করাটা দুরাশা মাত্র, এইরকম চুড়ান্তবাদী কথাবার্তা বলে, সামরিক বাহিনীকেই অগনতান্ত্রিক ভাবে ৩য় তথা বিকল্প শক্তি হিসাবে দেখলে, সমাজের কোন পরিবর্তন আসা সম্ভন কিনা,তা আমার জানা নেই। এতে শুধু হতাশাই বাড়ে আর শক্তিশালী হয় অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াগুলোই।অন্তত এমন ব্যবস্থাকে আমি কোনদিনই গনতান্ত্রিক ব্যবস্থা বলতে রাজী নই যেখানে, ( তথাকথিত) গণতান্ত্রিক সরকারকে সোজা রাখতে হলে প্রফেশনাল সেনাবাহিনীকে ৩য় শক্তি হিসাবে দায়িত্ব পালন করতে হয়,অথবা তারা সেই শক্তি হতে পারে, এমনটা কল্পনা করতে হয়।
যাক এতগুলো কথা খরচ করলাম কিন্তু মিলিটারির দরকার আছে কি নেই সে জন্য নয়, বরং সৎ আর দক্ষ পুলিশ বাহিনী আশা করা যে মোটেও দুরাশা নয়, সেটাই বুঝানোর চেষ্টা করতে।জানি না বুঝাতে পারলাম কিনা।ধন্যবাদ ভাল থাকবেন। 🙂
@অর্ফিউস, মুক্ত মনা অ্যাডমিন একটু লক্ষ্য করুন দয়া করে। উপরে সফিক কে করা মন্তব্যটি কিছুতেই লগ ইন করে করতে পারছি না। কিছুই বুঝলাম না কি হচ্ছে!যদিও ইউজার নেম আর পাসওয়ার্ড সঠিক ছিল আমার!
@অর্ফিউস, লগ ইন করছি, ওয়েলকাম ও করা হচ্ছে কিন্তু মন্তব্য করতে গেলেই আমি যে লগ ইন করেছি সেটা রিজেক্ট করা হচ্ছে।
@অর্ফিউস,
ঐ তালিকায় কোন কোন দেশের নাম আছে আপনি কি পড়ে দেখেছেন প্রায়ই সব প্রশান্ত মহাসাগরীয় মেলানেশিয়া-পলিনেশিয়া অঞ্চলের অতিক্ষুদ্র দ্বীপ রাজ্য; বিশেষত ইউরোপের এন্ডোরা এবং ভ্যাটিক্যানের মত ছোট রাষ্ট্র 🙂
বড় বড় দেশ, জার্মান, ফ্রান্স কিংবা যুক্তরাজ্য বাদই দিলাম। বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড এমনকি সুইজারল্যান্ডের যথেষ্ট শক্তিশালী সামরিক বাহিনী আছে আর তাদের অস্ত্রের কথা নাই বা বললাম।
ইউরোপের শান্তি!!! পশ্চিম ইউরোপে সবেতো ১৯৯০-৯১ র পর কমবেশি মাত্র ২০ বছর গেছে; পূর্ব ইউরোপে যদিও যুদ্ধ হয়ে গিয়েছে এর মধ্য। দেখা যাক আর কত দিন যায়। তবে ইতিমধ্যো তারা পৃথিবীর অনেক দেশেই যুদ্ধের জন্য সৈন্য পাঠিয়েছে।
সশস্ত্র বাহিনীর যেমন প্রয়োজন ঠিক তেমনি পুলিশেরও প্রয়োজন । (পুলিশের ক্ষেত্রে “ফোর্স” শব্দ ব্যবহার করতে আমি নারাজ)। সৎ এবং দক্ষ পুলিশ এবং অপরাধ দমন বিভাগ ছাড়া শান্তিকালীন সময়ে দেশের উন্নয়ন আসলেই বাধাগ্রস্থ হয় সাথে সাথে নাগরিকের অধিকারও নিশ্চিত করা সম্ভব হয়না।
ধন্যবাদ 🙂
@তানভীরুল ইসলাম,
আমার মনে হয় আমাদের দেশের সিস্টেমের পরিবর্তন জরুরী।কারন একটা অস্ত্র দিয়ে আর কতগুলো সশস্ত্র লোককে থামাতে পারবেন আপনি? মনে হয় পুলিশের বেতন ভাতা বাড়িয়ে, তাদের প্রাপ্য সুযোগ সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে একটা দক্ষ আর সৎ পুলিশ বাহিনী গড়া দরকার। আর অবশ্যিই বাংলাদেশের সেনা বাহিনীর বিলুপ্তি সাধন করে, সেনা বাজেটের পুরোটাই সৎ আর দক্ষ পুলিশ বাহিনী গড়ার কাজে ব্যয় করা উচিত।
বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর মত অপদার্থ একটা সংগঠন কে কেন যে দুধ কলা দিয়ে পোষা হচ্ছে মাথায় আসে না আমার।গরীব একটা দেশে হাতিসমান সেনা বাহিনী যাদের প্রধান কাজ বসে বসে অন্ন ধ্বংস করা, আর সব সুযোগ সুবিধা ভোগ করা। ঢাকার অন্যান্য যায়গার সাথে সেনানিবাসের পার্থক্যটা একবার ভেবে দেখুন! 🙂 সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।
@অর্ফিউস,
বিভিন্ন বিষয়ের উপর আপনার গভীর বিশ্লেষণী ক্ষমতা এবং মন্তব্য দেখে মুগ্ধ হই। আপনি নিজে লেখেন না কেন মুক্তমনায়? আমি নিশ্চিত যে মন্তব্যগুলোর মত আপনার লেখাগুলোও পাঠকদের চিন্তার খোরাক জোগাবে।
@সংশপ্তক, ধন্যবাদ আপনার সুন্দর কথাগুলোর জন্য 🙂 । আসলে আমি লিখলে পাঠযোগ্য হবে কিনা জানিনা, তবু একবার চেষ্টা করে দেখব কিছু একটা লেখার।আসলে ইদানিং এতই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছি ( পেশাগত কারনে)যে নেটে বসাই হচ্ছে না এবং আরও কয়েকমাস এটা চলবে 🙁 ।
@অর্ফিউস,
সাধু! সাধু!! সাধু!!!
@অর্ফিউস,
বাংলাদেশের সামরিক ব্যয় পৃথিবীর অন্যতম ক্ষুদ্র সমর ব্যয়। GDP এর মাত্র ১ শতাংশ। মোট ব্যয়ও অনেক কম। পৃথিবীর অনেক দেশ তাদের ব্যয় জনসম্মুখে প্রকাশ করার সময় অনেক পার্শ্ব -ব্যয় উহ্য রাখে এবং আলাদা ভাবে প্রকাশ করে, যেমন গবেষণা, পারমানবিক কিংবা গোয়েন্দা ব্যয়। সেই হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান আন্তর্জাতিক অবস্থার তুলনায় আরও কম। তবে আমার মনে হয় যা ব্যয় করা হচ্ছে তা আরও কার্যকরী ভাবে ব্যয় করা উচিৎ।
@সংবাদিকা,
সঠিক। বাংলাদেশের ১% এর বিপরীতে পাকিস্তানে ২.৮%, ভারত ২.৭% শ্রী লঙ্কা ৩.৫%। শ্রী লঙ্কার কোন প্রতিবেশীও নেই। বাংলদেশের তাও মায়ান্মার আছে। বাংলাদেশের চেয়ে কম জিডিপি আলা অনেক দেশের মিলিটারী বাংলাদেষ থেকে বেশী। কয়েকটি ব্যতিক্রমী দেশ ছাড়া কোন দেশই সশস্ত্র বাহিনী না গড়ার মত অন্যন্য ও চরম পদক্ষেপ নেয়নি।
“বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর মত অপদার্থ একটা সংগঠন কে কেন যে দুধ কলা দিয়ে পোষা হচ্ছে মাথায় আসে না আমার।” এর মত পপুলিস্ট কথা কেউ বলে না কোথাও। বাংলাদেশের রাজনীতিকরাও তো চরম অপদার্থ। তাদেরকে বাদ দেয়া হোক না কেন। তাদের ভাড়া করা কুকুরদের কত জান মাল ক্ষতি করতে দেয়া হচ্ছে কেন সেটা মাথায় আসে কি। দুর্নীতিতে যে পরিমাণ জনগণের টাকা লুটেরা রাজণিতিক ও তাদের আশ্রিত ব্যবসায়ীদের পকেটে যাচ্ছে মিলিটারী বাজেট তার তুলনায় তুচ্ছে। হরতালে কত শ কোটী টাকা ক্ষতি হচ্ছে,হরতাল নিষিদ্ধ করা হচ্ছে না কেন সেটা মাথায় আসে? বাংলা একাডেমী, ইসলামী ফাউন্ডেশন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস, বাংলা, আরবী, দর্শন ইত্যাদি বিভাগ খুলে দেশের টাকা ব্যয় করা হচ্ছে কেন? আর্ট কলেজ কি করছে দেশের অর্থনীতিতে? এরকম শয়ে শয়ে উদাহরণ দেয়া যাবে যাবে।
@কালযাত্রী,
আপনিও একজন মুক্তমনা ,তেলাপোকাও একটা পাখি :-Y
@কালযাত্রী, আরে মশাই ক্ষেপেন কেন?আমি তো আমার একটা মতামত দিয়েছি মাত্র।আর তাছাড়া আপনি যে জিনিসগুলোর কথা বললেন সেগুলোর কমবেশি প্রয়োজনীয়তা আছে কি নেই, সে নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে।কিন্তু সেনাবাহিনীর দরকার কি কেবল বসিয়ে রেখে খাওয়ানোর জন্য?বাংলাদেশে বিশাল লঙ্গর খানা খোলা হয়েছে নাকি? আচ্ছা বলেনতো আগে। সেনাবাহিনীর দরকারটা কিসের? একটু বুঝিয়ে বললে এই নাচীজের বুঝতে সুবিধে হত। ভারতের সাথে যুদ্ধ করার জন্য?সেক্ষেত্রে নুন্যতম ওদের অর্ধেক ক্ষমতাশালী একটা সেনাবাহিনী দরকার, সেটা কি আমাদের আছে?
@কালযাত্রী,
অনেক কিছুরই বিরোধিতা থাকতে পারে। তবে সুদূর প্রসারী চিন্তা করলে আপাত অনেক কিছু অপ্রয়োজনীয় মনে হলেও আসলেই তার প্রয়োজন আছে।
ধন্যবাদ 🙂
@অর্ফিউস,
এ পর্যন্ত কোন লেখা বোধ হয় মুক্তমনায় লিখেন নাই। দেশের অপদার্থদের নিয়ে ব্লগে খুব একটা কেউ লিখতে চান না। আমি এই ব্লগে অপদার্থ হাসিনা আর তার আবাল-ছাবাল মন্ত্রীদের আকাম কুকাম নিয়ে, ‘বুবুজানের চিঠি’ নামে একটা ব্যাঙ্গাত্বক লেখা লিখেছিলাম কিছুদিন আগে। তারপর হাসিনার কুত্তাদের গুন্ডামীর প্রতিবাদে আরেকটি লেখাও দিয়েছি। আপনি এবার দেশের অপদার্থ সেনাবাহিনী নিয়ে একটা লেখা বউনি করে ফেলুন আমরা পড়ি।
@আকাশ মালিক,
🙂
আপনি গুণীজন, যখনতখন আপনার কলম গর্জে উঠতে পারে যেকোনো বিষয় নিয়ে, কিন্তু সবাই কে তেমন ভাবছেন কেন?
আংশিক জবাব আগেই দিয়েছি, আরেকটু কথা যোগ করি।লেখাটা দিয়ে কি আকাম কুকাম বন্ধ করতে পেরেছেন শুধু ঝাল ঝাড়া ছাড়া? বিশেষণ প্রয়োগের অভ্যাসটা বাদ দিয়ে( হাসিনার কুত্তা, অথবা আরো কিছু)আসেন না একটু কাজের কাজ করি। আমি এক বছর আগে থেকে একটা গোঁ ধরে আছি আর তা হল, “না” ভোট অপশন থাকলে ওটাই দেব, তা না হলে ভোটই দেব না। পারবেন এটা করতে?দেখেন আমরা সবাই এই কাজ করতে পারলে, কাজের কাজ কিছু হতেও পারে।
@তানভীরুল ইসলাম,
(Y) (Y)
এমন কমনসেন্স আজকাল রেয়ার, এমন কি নিন্দিত।
এই বিষয়টি উপলব্ধি করেছিলাম হিলারি ও ওবামার মহাকাব্যিক প্রাইমারি ইলেকশানের সময়। আমি ঐ প্রাইমেরি ইলেকশানটি খুব আগ্রহ নিয়ে অবজার্ভ করছিলাম। আমার কাছে হিলারি ও ওবামা দুজনেই ছিলেন রহস্যপুরীর দেব-দেবী। যাহোক, ঐ ইলেকশানে ব্যাপকভাবে এগিয়ে থাকা ওবামা হঠাৎ নীচের মন্তব্য করে বেকায়দায় পড়েছিলেনঃ
“You go into these small towns in Pennsylvania, and like a lot of small towns in the Midwest, the jobs have been gone now for 25 years and nothing’s replaced them. And they fell through the Clinton Administration, and the Bush Administration, and each successive administration has said that somehow these communities are gonna regenerate and they have not. And it’s not surprising, then, they get bitter, they cling to guns or religion or antipathy to people who aren’t like them or anti-immigrant sentiment or anti-trade sentiment as a way to explain their frustrations.”
লেখিকাকে ধন্যবাদ।
@কাজি মামুন,
সবই রাজনীতি, গণতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ 🙂
প্রবন্ধের জন্য ধন্যবাদ। আপনার প্রবন্ধের একটি দিক আমার কাছে ভাল লেগেছে, সেটি হল আপনি স্পষ্টই স্বীকার করেছেন সেকেন্ড অ্যামেন্ডমেন্ট বন্দুক নিয়ন্ত্রণের পথে একটা বড় ধরণের বাধা। সেকেন্ড অ্যামেন্ডমেন্টকে বজায় রেখে কোন উল্লেখযোগ্য বন্দুক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। ওই অ্যামেন্ডমেন্ট রিভলভার রাখার অধিকার দেয় কিন্তু অ্যাসল্ট রাইফেল নয়, এটা ভাবের ঘরে ফাঁকি, এবং সেকেন্ড অ্যামেন্ডমেন্টের পেছনের যুক্তির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। কারণ প্রয়োজনে আপনার উল্লেখ্য “সমগ্র আমেরিকা ব্যাপী পুলিশ” বা “যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী”-র বিরূদ্ধে বিপ্লবী সংগ্রামের সম্ভাবনা বজায় রাখাই ওই অ্যামেন্ডমেন্টের কাজ।
এই ইস্যুতে আমার অভিমত? আমি সেকেন্ড অ্যামেন্ডমেন্ট প্রচণ্ডই পছন্দ করি, কিন্তু সেমি-অটোমেটিক বন্দুকের মারণশক্তি বিষয়টিকে একটি breaking point এ এনে ঠেকেছে।
@রৌরব,আপনি ঠিকই বলেছেন। সেকেন্ড এমেন্ডমেন্ট অক্ষুন্ন রেখে গান কন্ট্রোল এর চেষ্টা ধরি মাছ, না ছুই পানি’র মতো ব্যাপার।
আমি নিজে মনে করি সেকেন্ড এমেন্ডমেন্ট আমেরিকার জন্মলগ্নের রিভলিউশনারী ওয়ার এবং কনফেডারেশন ওফ স্টেট ব্যবস্থার ফসিল যার প্রয়োজনীয়তা অনেক আগেই ফুরিয়েছে। এবিষয়ে আপনার কাছে কি একটা জমাট বিতর্ক আশা করতে পারি?
@সফিক,
সেকেন্ড অ্যামেন্ডমেন্টের ব্যাপারে নিজেকে রোমান্টিকতার দায়ে নিজেই অভিযুক্ত করি মাঝে মাঝে 🙂 , কিন্তু এটা ভুলে যাওয়া শক্ত যে Glorious Revolution এবং তার একশ বছর পরের মার্কিন বিপ্লবে এই অস্ত্র ধারণের অধিকার একটা গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করেছে। Tyranny-র ভয় যুক্তরাষ্ট্রে আজ খুব কম ঠিকই, কিন্তু সেটা কি because of নাকি in spite of দ্বিতীয় অ্যামেন্ডমেন্ট? নিশ্চিত না।
বাংলাদেশে একটা সেকেন্ড অ্যামেন্ডমেন্ট (এবং সংশ্লিষ্ট সংস্কৃতি) থাকলে ভাল হত না মন্দ হত? আপনার কি মনে হয়?
@রৌরব,আমি কিন্তু স্বতন্ত্র ন্যাশনাল হিস্টরিক্যাল পাথ এবং ন্যাশনাল ক্যারেক্টারে বিশ্বাস করি। সবকিছু পেছনে ফেলে ওল্ড ওয়ার্লড ফেলে আমেরিকার নতুন ওয়ার্ল্ডে আসা ইনডিভিজুয়ালিস্টিক এবং রাজতন্ত্র-অভিজাততন্ত্র বিদ্বেষী নতুন নর্থ আমেরিকানদের সাথে আমাদের মতো রাজশাসনের অনুরক্ত বাংগালী (বা ভারতীয়, এশিয়ান, ইউরোপীয়ান যার কথাই বলেন) র তুলনা চলে না।
সেকেন্ড এমেন্ডমেন্ট রাজশাসনের বিরোধিতার একটি উপসর্গ মাত্র এর কারন বা নিয়ামক বলা যায় না। কেন্দ্রীয় শাসনের বিরোধিতা আমেরিকার ডিএনএ তে এতটাই প্রোথিত যে রিভলিউশনারী ওয়ার এর পড়ে আর কখনো well regulated Militia কে tyranny র বিরুদ্ধে সংগঠিত হতে হয় নি। সিভিল ওয়ারের সময়টা ব্যতিক্রম বলা যায়। একটু সরলীকরন করলে বলা যায় সিভিল ওয়ার দক্ষিনের উপরে নর্দার্ন tyranny রই বিজয় বলা যায়। ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হলো যে মাস্কেট-কারবাইনের যুগেও শেষ পর্যন্ত সেকেন্ড এমেন্ডমেন্ট দক্ষিনের জনতাকে ফেডারেল সরকারের হাত থেকে বাচাতে পারেনি। আজকের ট্যাংক, এফ-৩৫ আর ড্রোন এর যুগে সেকেন্ড এমেন্ডমেন্ট কি ধরনের রক্ষাকবচ হবে সেটা প্রশ্নসাপেক্ষ।
@সফিক,
তা ঠিক। এজন্যই লাইনটা লিখে পরে আবার ব্র্যাকেটে “সংশ্লিষ্ট সংস্কৃতি” কথাটা ঢুকিয়েছিলাম 😛
ঠিক।
ঠিক। নর্দার্ন tyranny-র বিজয় সন্দেহ নেই, কিন্তু তুলনাহীন অন্য এক tyranny-এর পরাজয়। Contradiction আছে, মেনে নিতে হবে :-s ।
Fair enough। এই যুক্তির সারকথা হল, সেকেন্ড অ্যামেন্ডমেন্ট ইন-ইফেক্টিভ। বিরূদ্ধ যুক্তি, সেকেন্ড অ্যামেন্ডমেন্ট গ্যারান্টি নয়, কিন্তু সম্ভাবনা। সিভিল যুদ্ধটা ঠিক কাদের মধ্যে হয়েছিল, সেটাও বিবেচ্য বিষয়।
@রৌরব,
এখানে সেকেন্ড অ্যামেন্ডমেন্ট নিয়ে তাত্ত্বিক আলাপের আগ্রহ হলো। এটা ইন-ইফেক্টিভ কেনো হলো? ট্যাংক, এফ-৩৫ আর ড্রোনের জন্য? ওয়েল, সরকারের tyranny রোধ করাই যদি এর উদ্দেশ্য হয়, তাহলে সেটাকে ইফেক্টিভ রাখার জন্যে ট্যাংক, এফ-৩৫ আর ড্রোনও প্রাইভেটলি ঔন করতে দেয়াটাই তাহলে তাত্ত্বিকভাবে যৌক্তিক নয় কি? ব্যাপারটার ভেতরে একটা অ্যাবসার্ডিটি আছে। যে সরকার ড্রোন বানায়, সে তার প্রাইভেট সিটিজেনকে দিবে ড্রোন রাখতে? সরকার কবে এতো সাধু হলো? আমেরিকার ফাউন্ডিং ফাদাররা সরকারকে অসাধুই ভেবেছে, আবার ভেবেছে সেই অসাধু সরকারই নিশ্চিত করবে যে তার tyranny কে যাতে জনগণ প্রতিহত করতে পারে। এখানে কারেকশনের একটা উপায় রাখার ইচ্ছা স্পষ্ট। কিন্তু সিস্টেমটা কনসিস্টেন্ট, বা ভায়েবল হলো না। অনেকটা শিয়ালের কাছে মুরগি রাখার মতো শোনাচ্ছে। বাট শিয়াল মাস্ট ইট দা মুরগি টুগেদার উইথ ইট্স কারেক্টিভ অ্যামেন্ডমেন্টস। তার চেয়ে কিন্তু বাম উদারদের চিন্তাভাবনাটা বেশি কন্সিস্টেন্ট লাগছে। তাদের নিয়ন্ত্রণমূলক সকল যুক্তির পেছনে সরকারকে নিশ্চিতরকম এক অশিয়াল সাধু চরিত্র ভাবার একটা অনুমান কাজ করে, সেটার সত্যাসত্য যা-ই হোক না কেনো।
@রূপম (ধ্রুব),
চেক এন্ড ব্যালান্স। নির্ভুল নয়, কিন্তু ওয়াটার-টাইট সামঞ্জস্য খোঁজার চাইতে ভাল বলেই আমার মনে হয়।
@রৌরব,
হক কথা।
আরেকটা তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব খেয়াল করেছেন? সেকেন্ড অ্যামেন্ডমেন্ট বহাল থাকবে, নাগরিক অস্ত্র বহন করবে, অস্ত্রের সুপ্রাপ্যতা থাকবে, কিন্তু স্কুলের মতো ভলনারেবল জায়গায় অস্ত্র এলাউড থাকবে না। অ্যাজ ইফ সন্ত্রাসী সরকারি সাইন মেনে কাজ করে। নো ওয়ান্ডার স্কুলেই ম্যাস কিলিং বেশি হয়। ব্যাপারটা নিচের কৌতুকটাতে সামারাইজ করা –
[img]http://www.marfdrat.net/wp-content/uploads/2011/01/no-guns-allowed.png[/img]
ফলে উপায় কী? যুক্তিটা আজকাল এভাবে এগোয়। সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে আত্নরক্ষার জন্যে সশস্ত্র হবার চেষ্টা করা যেহেতু ভয়ানক অমানবিক ধারণা, ফলে নাগরিকের আরো নিরস্ত্রীকরণ প্রয়োজন।
@রূপম (ধ্রুব),
এখানে আমি লিবারাল ক্রিটিকের একেবারে বিরোধী নই। বন্দুক নিয়ন্ত্রণ করলে নিউটাউনের মত ঘটনা (বা সাধারণ বন্দুক মৃত্যু) কমিয়ে আনা যাবে — এমনটা হতেই পারে। আমি ডেটা সব ঘেঁটে দেখিনি, কিন্তু হওয়ারই কথা। এমনও হতে পারে যে “বন্দুক নিয়ন্ত্রিত সমাজ” আর “স্কুলের প্রিন্সিপাল বন্দুক নিয়ে বেড়াচ্ছেন সমাজ”-এর মধ্যেও প্রথমটি শান্তিপূর্ণ। প্রশ্ন হল, Tyranny-র বিরূদ্ধে লড়াই-এর সম্ভাবনার জন্য এই মূল্যটি দেওয়া উচিত হবে কিনা?
@রৌরব,
আপনার উপরের আর্গুমেন্টটা “সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে আত্নরক্ষার জন্যে সশস্ত্র হবার চেষ্টা করা ভয়ানক অমানবিক ধারণা” এই আর্গুমেন্টের চেয়ে ফার মোর রিজনেবল। লিবারেল ক্রিটিক ডেটাভিত্তিক শান্তিপূর্ণতার আলোচনা নিয়ে যতোটা আগ্রহী, তার চেয়ে বেশি কোনটা প্রগতিশীল, মানবিক, উদারনৈতিক ঠেকছে সেটাতে বেশি আগ্রহী। “স্কুলের প্রিন্সিপাল বন্দুক নিয়ে বেড়াচ্ছেন সমাজ”টা বেশি শান্তিপূর্ণ দেখালেও ইন প্রিন্সিপল “লিবারেল কনশাসনেস” নৈতিকভাবে সেই সমাজের বিরুদ্ধে যাবে বলে আমার আন্ডারস্ট্যান্ডিং।
ডেটার জন্যে অভিজিৎ ভাইয়ের এ সংক্রান্ত ইংরেজি লেখাটা ও ওখানে আমার কমেন্টটা দেখতে পারেন। উভয় দিকের ডেটা আছে। কিন্তু ইভেন ডেটা ইনাফ না, কারণ কোরিলেশন থেকে কজালিটি ইম্প্লাই করা যায় না।
আপনি যদি এভাবে ব্যাপারটাকে উপস্থাপন করেন যে – “স্কুলের প্রিন্সিপাল বন্দুক নিয়ে বেড়াচ্ছেন সমাজ”টা বেশি অশান্তিপূর্ণ হলে Tyranny-র বিরূদ্ধে লড়াই-এর সম্ভাবনার জন্য এই মূল্যটি দেওয়া উচিত হবে কিনা, তাহলে কিন্তু এক অর্থে ডেটা এখানে ইররিলেভেন্ট হয়ে যাচ্ছে। ফাইনাল প্রশ্নটা তখন নৈতিক, রাজনৈতিক। তাই তো মনে হলো। এর সাথে সম্ভবত এই প্রশ্নটা তুলনীয় –
অন্য দিকে চিন্তা করুন, এই ডিলেমাগুলো কেনো উৎপত্তি হচ্ছে? কারণ আমরা অনুমান করছি যে সমাজে একটা পাওয়ার মনোপলি বিরাজ করে যেটা কিনা একটা অর্ডারকে পরিকল্পনা করতে পারে। ফলে আমাদের যে সমস্যাটা বাকি, সেটা হলো রাইট অর্ডারটা বাছাই করা। কিন্তু সেই সুযোগ যদি আমাদের না থাকতো, তখন আমরা যেকোনো কিছুই হতে পারে এক্সপেক্ট করে সেটার জন্যে প্রস্তুতি নিতাম। সেটা স্কুল বলুন আর tyranny বলুন। এবং সেটাই বেশি প্র্যাক্টিকাল লাগছে। কারণ, প্রথম তরিকাতে আমাদের যে অনুমানগুলো, সেগুলো ইভেন বর্তমান ব্যবস্থাতেও মোটের উপর ভঙ্গুর। অস্ত্রমুক্ত স্কুলের মতো বোকামিপূর্ণ ধারণা কিন্তু তেমনই ভঙ্গুর অনুমান নির্ভর পরিকল্পনার বাই প্রোডাক্ট।
@রূপম (ধ্রুব),
ফাইনাল প্রশ্নটা সবসময়ই নৈতিক পর্যায়ে যায়। তাই বলে ডেটা ইররিলেভেন্ট নয়, কারণ কোন পক্ষে কোন weight গেল সেটা বোঝার জন্য ডেটা দরকার। তবে কত weight এ গিয়ে ব্যক্তিবিশেষ মত পরিবর্তন করবে সেটা নৈতিক। এই threshold টা সবসময় যে apriori ঘোষণা দিয়ে রাখা সম্ভব তা না। Newtown এর ঘটনায় কারো হঠাৎ করেই মনে হতে পারে — যথেষ্ট হয়েছে, আর না।
আমার মতে এটাও একটা “অর্ডার”, যা কিনা আপনি ইউটিলিটিরিয়ান বা নৈতিক পয়েন্ট ভিউ থেকে সমর্থন করছেন। মনে হচ্ছে না পরিস্থিতিটা মৌলিক ভাবে পরিবর্তন হয়েছে। বিভিন্ন ব্যবস্থা সম্ভব, যা থেকে কোন একটা আমাদের চুজ করতে হবে। স্ট্যালিনিস্ট রাশিয়াও “সম্ভব” — সেটা আপনি চুজ করছেন না কেন? পছন্দ করেন না বলে, শেষ বিচারে।
@রৌরব,
কিন্তু আর কী না, বলুন তো? আমাকে নিজের আত্মরক্ষার জন্যে অস্ত্র রাখতে অনেক দেয়া হয়েছে, আর না? এখানে একটা ইম্প্লিসিট অনুমান আছে যে আমার নিজের আত্মরক্ষার কৌশল ও অধিকার সামষ্টিক সিদ্ধান্ত দ্বারা নির্ধারিত। সেটা দেয়া হয়েছিলো। এখন নিয়ে নেয়া হবে। অনুমানটা অস্বীকার করাটা খুব কঠিন কিন্তু না। অনুমানটার প্রিভ্যালেন্স আমাদের চিন্তার অ্যাপ্রোচের দুর্বলতা প্রকাশ করে, সম্ভাবনার ঘাটতি নয়।
অবশ্যই। পার্থক্য এই যে এটা মনোপলি পাওয়ার দিয়ে কষে কষে পরিকল্পনা করার বিষয় না, অ্যাজ অপোজ্ড টু আদার অর্ডার্স। এটা বটম আপ, ডিস্ট্রিবিউটেড ভাবনা। যেটা টপ ডাউন মননে কল্পনা করাটাও অস্বস্তিকর।
@রৌরব,
এটাও একটা গুরুত্বপূর্ন আর্গুমেন্ট। যখন এসবের রচনা হয় তখন আগ্নেয়াস্ত্র এত বেশি ইনইফিস্যান্ট ছিল যে, তলোয়ার তখনও অস্ত্র হিসেবে বাতিল হয়ে যায়নি। ঐ সময়ের সবচাইতে আধুনিক ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্র রাইফেল্ড মাস্কেট, অটোম্যাটিক কিংবা সেমি-অটোম্যাটিক রাইফেল কিংবা কার্বাইন তো দূরে থাক, সুবিখ্যাত এনফিল্ড – থ্রি-নট-থ্রি রাইফেল এরও সম পর্যায়েরও ছিলনা 😕
@সফিক,
সিএনএন এর একটা লেখায় এক পাঠকের মন্তব্য, যেটা আমি আমার এই লেখায় উল্লেখ না করে পারলাম না –
@রৌরব,
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান রচনার সময় এর প্রণেতারা অস্ত্র রাখার চেয়েও আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিছু আলোচনায় “বিশেষ” কারণে চুপ ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম দশটি অ্যামেন্ডমেন্ট এর গাল ভরা নাম “বিল অফ রাইটস” হলেও তাঁরা আফ্রিকান আমেরিকান মুক্ত মানুষ, দাস এবং নারী – এদের নাগরিক অধিকারের পক্ষ নিয়ে একেবারে টুঁ শব্দ করেনি। সেই সঙ্গে জন্ম সূত্রে আমেরিকার নাগরিক না হলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অনধিকার, এটাও যোগ করে দিয়েছিলেন।
ঐ বিখ্যাত “অরিজিনাল” ইংলিশ ১৬৮৯ সালেরটা নিয়েও একই কথা বলা যায়। এসবের সমাধান হতে বহু বছর লেগেছিল। ইংল্যান্ডের আগে জার্মানি-পোল্যান্ড। এদেরও কয়েকশত বছর আগে রোম এবং মদিনায় কিংবা তারও হাজার বছর আগে ব্যাবিলন এবং পারশ্য। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা-কালীন আইন প্রণেতাদের এসবের প্রায় প্রত্যকটির সাথে পরিচয় ছিল; তাঁদের বিভিন্ন লেখায় তা ফুটে উঠে এবং রেফারেন্সেও তা আছে জানা যায়। তার পরেও তারা একেবারে কালোত্তীর্ণ হতে পারেননি। তাঁদের দোষ দিয়েও লাভ নেই। যুগের সমসাময়িক সাধারণ গ্রহণযোগ্য ব্যাপার গুলোর বাহিরে চিন্তা করা মোটেও সহজ নয়, চিন্তা করলেও বাস্তবে রূপ দেওয়া আরও কঠিন। অনেক সময় লেগে যায়, এক জেনারেশনের চিন্তার ফসল পরবর্তী কয়েক জেনারেশন পর বাসবে রূপ নেয়। মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ দুটিই আছে।
এসব আসলে সামাজিক বিজ্ঞান এবং কলা এর জ্ঞানের জগতের বিশাল আলোচনা। এই পোষ্টের স্কোপের বাহিরে।
সংবিধানকে কখনই অলঙ্ঘনীয় মনে করা উচিৎ নয়। মানুষ এটা তার নিজের প্রয়োজন অনুসারে রচনা করে এবং যৌক্তিক প্রয়োজন হলে বদলাবে। নৈরাজ্য রোধের জন্য নাগরিকদের মধ্য লিখিত সমঝোতা স্মারক বলা যায়।
@সংবাদিকা,
শিউর, কিন্তু এর প্রাসঙ্গিকতা কি? আপনি নিশ্চয় বলবেন না, দাসপ্রথার কারণে ফার্স্ট অ্যামেন্ডমেন্ট বা ফোর্থ অ্যামেন্ডমেন্ট অর্থহীন হয়ে গেছে। ওই যুক্তি দিয়ে আলাদা ভাবে সেকেন্ড অ্যামেন্ডমেন্টকে টার্গেট করা সম্ভব নয়।
নিশ্চয়ই। আমার বক্তব্য ছিল, এক্ষেত্রে সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে, যেটা সব পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় নয়। অনেক পরিবর্তন সাধারণ আইন বলবৎ করার মাধ্যমেই করা যায়। গান কন্ট্রোল সেরকম পরিস্থিতি নয়। আর আলোচ্য পরিরবর্তনটি করা উচিত কিনা সেটা নিয়ে আমার অবস্থানটাও বলেছি।
@রৌরব,
তাত্ত্বিক ভাবে এর ভাষা গুলো মোটেই অর্থহীন হয়ে যায়নি তবে আমেরিকান আদিবাসী, আফ্রিকান আমেরিকান এবং নারীদের বাদ দিয়ে তা বাস্তবে (de facto) তা “উক্ত” সময় কখনও সার্বজনীন হতে পারেনি। অনেক বছর পর এই তিন ক্যাটাগরির জনসাধারণদের যুক্ত করে এর নামের এবং অন্তর্গত বাক্যর যৌক্তিকতা (de jure) পূরণ করেছে।
তাত্ত্বিক পরিবর্তন থেকেও বাস্তব পরিবর্তন অনেক জরুরী। এই “বিল অফ রাইটস” যুক্তরাষ্ট্র সরকার অনেক বার বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন ভাষায় লঙ্ঘন করেছে। এই মূহুর্তে মনে পড়ছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মূল ভূখণ্ডে জাপানী বংশোদ্ভূত আমেরিকানদের আলাদা ভাবে কনফাইন্ড করে গেটোতে রাখা যার গালভরা নাম ছিল ইন্টার্নমেন্ট, এমন আরও অনেক উদাহরণ দেওয়া যাবে। আবার এই “ট্যাকনিক্যালিটি” বজায় রেখে বিকল্প ভাবে কিভাবে কাজ করা যায় তাও জানা থাকে, আল কায়দা নেতা ওসামার বিরুদ্ধে অপারেশনে কম্যান্ডো বাহিনীকে কাগজে কলমে সামরিক বাহিনী থেকে সিাআইএ তে নিযুক্ত করা হয়। যেন “কাগজে কলমে” যুদ্ধ ঘোষণা না হয়। আসলে আইন যতই করা হউক না কেন, এর লুপহোল থাকবেই। অনেক সময় এই লুপহোল পজেটিভ কারণে জনগণের বৃহত্তম স্বার্থে ব্যবহৃত হয় আবার অনেক সময় ক্ষুদ্র শাসক গোষ্ঠীর ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহৃত হয়।
সুতরাং, অ্যামেন্ডমেন্ট থাকল কি থাকলনা তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হল, জন-নিরাপত্তার জন্য যা করা প্রয়োজন তা বাস্তবে করা গেল কিনা।
@সংবাদিকা,
একমত নই। জন-নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজন হলে, এবং জনসাধারণের যথেষ্ট অংশ চাইলে সংবিধান পরিবর্তন করে সেটা করা উচিত। নইলে সংবিধানের কোন অর্থ থাকে না। পরের দিন যখন ফোর্থ বা থারটিনথ অ্যামেন্ডমেন্ট ইচ্ছা মত ইন্টারপ্রেট করা শুরু হবে, তখন?
আপনি সংবিধান লংঘনের যেসব বিখ্যাত উদাহরণ দিয়েছেন সেসব মাথায় নিয়েই এটা বলছি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র খুব ধীরে ধীরে যে More Perfect Union এ দিকে এগিয়েছে, বিভিন্ন কন্ট্রাডিকশন সত্বেও সাংবিধানিক শাসন তাতে বিরাট ভূমিকা পালন করেছে।
@রৌরব,
আমি এখানে আসলে বৃহৎ পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনা করছিনা। মূল আর্গুমেন্ট “অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ” কে মাথায় রেখেই করছি। যদি দ্বিতীয় অ্যামেন্ডমেন্ট বজায় রেখেই আধা স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ করা যায়, যেমন পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র নিষিদ্ধ করা গিয়েছে তাহলে ভালো; না হলে সংবিধান তো বদলাতেই হবে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান এই পর্যন্ত ২৭ বার পরিমার্জন করা হয়েছে।
সংবিধানের preamble এ উল্লেখিত “More Perfect Union” ব্যাপারটা আমার কাছে জাতীয়তাবাদী catchphrase হয়, যেমন আরেকটি এখন প্রায়ই শোনা যায় “greatest nation of the earth“।
নিম্নের এটা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রে- খুবই ভালো ভালো কথা। একটু চিন্তা করলে বোঝা যায়, লেখা অনেক সহজ কিন্তু সাথে সাথে বাস্তবায়ন তারচেয়েও অনেক বেশি কঠিন 🙂
@সংবাদিকা,
আমার কাছে ওই phrase টা চমৎকার মনে হয়, কারণ সেখানে চলমান উন্নতির কথা বলা হয়েছে…ক্রমশ, more। এর সাথে greatest nation এর মনোভঙ্গিগত পার্থক্য দেখতে পাই।
আর পরের বাক্যটার সাথে more এর phrase টা একত্র করলে আমেরিকার ইতিহাসের একটি চমৎকার precis পাওয়া যায় — অসাধারণ একটি ভিত্তি, যেটি ধীরে ধীরে more ভাল হয়েছে।
তবে এগুলি সবই সাবজেকটিভ বিচার।
@সংবাদিকা,
নারীরা কোন সময় ফার্স্ট বা ফোর্থ অ্যামেন্ডমেন্ট এর সুরক্ষা পায়নি, এটা আমার জানা নেই। তবে হতে পারে। কিন্তু পয়েন্ট তো সেটা নয়। পয়েন্ট হল, এগুলি যদি সংবিধানকে illegitimate করে, তবে পুরো সংবিধানকেই করে। আলাদা ভাবে সেকেন্ডকে নয়।
@রৌরব,
মানুষ হিসেবে নিশ্চয়ই পেয়েছে তবে মনে হয় নাগরিক হিসেবে অনেকসময় পায়নি। এটা অ্যাবোরিজিনাল আমেরিকান এবং আফ্রিকান আমেরিকান দের জন্যও সত্য; তবে এদের ক্ষেত্রে অনেক সময় মানুষের নূন্যতম অধিকারও ছিলনা।
সংবিধানে কিছু গলদ কিংবা উহ্য অথবা শূন্য ছিল বলেই অ্যামেন্ডমেন্ট আনা। এর জন্য সংবিধান illegitimate হয়ে যায়না। এখন কোন অ্যামেন্ডমেন্ট যদি পরে সাংঘর্ষিক প্রমানিত তাহলে তারও আবার অ্যামেন্ডমেন্ট করা যেতে পারে এমনকি বাদও দেওয়া যেতে পারে। এর জন্যও সংবিধান illegitimate হয়ে যাবেনা।
উনবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে ১৮তম অ্যামেন্ডমেন্ট এর মাধ্যমে অ্যালকোহল এর উপর কড়াকড়ি আনা হয় এবং ২১তম অ্যামেন্ডমেন্ট এর মাধ্যমে কড়াকড়ি উঠিয়ে কার্যত আগের অ্যামেন্ডমেন্টকে বাতিল illegitimate করে দেওয়া হয়। এর জন্যতো গোটা সংবিধান illegitimate হয়ে যায়নি।
@সংবাদিকা,
উনবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে ১৮তম……
দুঃখিত এখানে বিংশ শতাব্দী হবে। ১৯১৯ সালে ১৮ তম অ্যামেন্ডমেন্ট আনা হয়েছিল এবং ১৯৩৩ সালে ২১ তম অ্যামেন্ডমেন্ট আনা হয়েছিল।
লেখাতে কয়েক জায়গায় ব্যক্তিগত, সংগঠন এবং ঔপনিবেশিক বানান ভুল হয়েছে। কয়েকটি বাক্য কিছু শব্দ বাহুল্য। এক বার সাবমিটেড হয়ে গেলে পোস্টে আর এডিট করার সুযোগ থাকেনা এটা আসলে জানা ছিলনা। ভবিষ্যতে একেবারে ফাইনাল এডিট না করা পর্যন্ত পোস্ট সাবমিট করা যাবেনা 😕
ধন্যবাদ 🙂
@সংবাদিকা,
– ঠিক না। মূল লেখক সব সময়ই সম্পাদনা করতে পারেন, লেখার নীচে নীল কালিতে সম্পাদনা বাটন থাকার কথা।
অবশ্য আপনি নিয়মিত সদস্যপদ না পেলে সম্পাদনা অপশন নাও আসতে পারে, ঠিক নিশ্চিত নই।
@আদিল মাহমুদ,
এটাই মনে হয় কারণ। তবে ব্যাপারনা; এটা থাকলেই মনে হয় ভালো। বাংলা বানান এবং ভাষা শৈলীর উপর দক্ষতা বাড়বে। 🙂
আমেরিকানদের অনেক কিছুই ভাল লাগে, কিছু কু-অভ্যাস আছে যা মাথা গরম করিয়ে দেয়। এই অস্ত্র প্রীতি তার একটা। কত ঘটনা হল, কত নিরীহ লোক, কচি ছেলেমেয়ের জীবন গেল শুধু হাতে সহজলভ্য অস্ত্র থাকার কারনে কে তার হিসেব রাখে। ওয়াইওমিং এ ১৬ বছরের এক ছেলে একবার সত মা আর ছোট ছোট ৩ ভাই বোনকে ঠান্ডা মাথায় শটগানের গুলিতে মেরে ফেলে…জীবনের কি নিদারুন সব অপচয় স্রেফ গোয়ার্তূমির কারনে।
লেখাটির জন্য ধন্যবাদ।
ওবামাকে দেখছি খুব কান্নাকাটি করছে, …
এবার দেখা যাক আমাদের নেতা নেত্রীদের মত লোকদের আমেরিকার ক্ষমতায় বসালে এ ঘটনার প্রতিক্রিয়া কেমন হতে পারতঃ
১। হোম সেক্রেটারীঃ গডের মাল আল্লাহয় নিয়ে গেছে…দুনিয়া হল মোমিনের জন্য জেলখানা……যে যত ভাগ্যবান সেই তত তাড়াতাড়ি বিদায় নেয়…নিষ্পাপ অবস্থায় পরকাল পাড়ি খুবই সৌভাগ্যের ব্যাপার। বাড়িতে বাড়িতে মা ছেলের কাইজ্জা দমন করা সরকারের দায়িত্বে পড়ে না। দেশে গনহত্যা বেড়েছে, কিন্তু অপরাধ কমেছে।
২। ওবামার বানীঃ এ ঘটনার জন্য রিপাবলিকান পার্টিই দায়ী…তাদের সময়ই সবচেয়ে বেশী গাল লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে……এ ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাস বিরোধী কার্যক্রম থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নেবার এক আন্তর্জাতিক নীল নকশার অংশ।
৩। মিট রমনীর বানীঃ এসব ঘটনার মাধ্যমে আমেরিকাকে বিদেশীদের হাতে তুলে দেওয়ার এক সুদুর প্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ হিশেবে গত নির্বাচনে জনতার রায় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে…। নিহতদের পরিবারের প্রায় সকলেই রিপাবলিকান দলের সমর্থক……
৪। উপস্থিত পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা সম্পর্কে পুলিশ কর্মকর্তাঃ কে রিপাবলিকান আর কে ডেমোক্র্যাট তা চেহারা দিয়ে বোঝা যায় নাকি? ডেমোক্র্যাট ছদ্মবেশেও রিপাবলিকান থাকে……
@আদিল মাহমুদ,
প্রতিবছর আসলে হাজার হাজার অপরাধ হচ্ছে যার অন্যতম কারণ বিপদজনক অস্ত্রের সহজ লভ্যতা।
এনালজিটা আসলে বাস্তব সম্মত। ঢাকায় ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক ঘটনাই এর প্রমাণ। এনালজিটা কৌতুকর হলেও রুঢ় বাস্তবতা বড়ই দুঃখজনক।
আপনাকে ধন্যবাদ 🙂
@আদিল মাহমুদ,
ওয়েল, হার্ভাড পাশ ওবামাও কম যায়না। রবিবার নিঊ টাঊন, কানেক্টিকাটে উনি টেলিভাইজড ভাষনে বলছেন, “”Let the little children come to me,” Jesus said, “and do not hinder them — for to such belongs the kingdom of heaven…………. God has called them all home.”
আমাদের হোম সেক্রেটারীর একজন মহাপরাক্রমশালী বন্ধু আছেন। জিসাস শিশুদেরকে ঈশ্বরের কাছে যাওয়ার জন্যে বাধা দিতে মানা করছেন তারপরো ওবামা গান কন্ট্রোল করতে চান। এইটা জিসাসের কথার সরাসরি বরখেলাপ। এখন কি করা যায় বলেন দেখি?
@হোরাস,
ধরে ইনকুইজিশন করা যেতে পারে। 😉
কানেটিকাটের বিয়োগান্তক ঘটনাটির পরেই আমি একতা লেখা লিখব ভাবছিলাম ইংরেজীতে। লেখা আর হল না। আপনার লেখাটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন।
আমেরিকায় গান-কালচারের যে সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে তা বিপজ্জনক দিকে চলে গেছে বলাই বালহুল্য। গত পঞ্চাশ বছরে সবেচেয়ে বড় শুটিং ম্যাস মার্ডারের বেশিরভাগই আমেরিকায় হয়েছে। এর কারণ তো আছে। পরিসংখ্যান বলে আমেরিকায় প্রতি ১০০ জন লোকের মধ্যে ৮৯টি ফায়ারআর্ম আছে। কোন দেশেই সেটা ৪০ এর উপরে নয়। ব্রিটেন এবং অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে আমেরিকায় গান-হোমিসাইড এর হার অন্ততঃ ৩০ গুন বেশি। কেউ বলবে না যে আমেরিকার লোকজনের কোন কারনে জেনেটিক মিউটেশন হয়ে ব্রিটেনের লোকের চেয়ে বেশি গনহত্যাপরায়ন হয়ে গিয়েছে, বরং সবাই জানে আমেরিকার সংস্কৃতি মোটাদাগে ব্রিটেনের মতোই। পার্থক্য কেবল – আমেরিকায় ফায়ার আর্ম এবং অ্যাসল্ট ওয়েপনের সহজলভ্যতা বেশি।
যদিও ‘গান-ডোণ্ট-কিল’ ক্রেজি রাইটউইঙ্গারেরা অন্যথা দাবী করবেন, কিন্তু হার্ভার্ড ইঞ্জুরি কণ্ট্রোল রিসার্চ সেন্টারের সমীক্ষায় পরিস্কার দেখা গেছে “More guns tend to mean more homicide” (এখানে)। আরো অনেক কিছুই এনআরআই এর পাণ্ডারা প্রচার করে ( যেমন, সেকেণ্ড এমেন্ডমেন্ট নাকি গান কণ্ট্রোলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, বন্দুক বহন বন্ধ করা নাকি অধিকারের উপর হস্তক্ষেপ ইত্যাদি) যার কিছু খণ্ডন পাওয়া যাবে এখানে।
যদিও ব্লগের লিবার্টেরিয়ান বন্ধুদের কারো কারো কন্ট্রোল শুনলেই মাথায় বাজ পড়ার উপক্রম হয়, কিন্তু আমার মনে হয় বন্দুকের ব্যাপারে কন্ট্রোল ব্যাপারটা খারাপ হবে না। এটাই সময়ের দাবী। বব ডিলানকে স্মরণ করি –
কত হাজার মরলে পরে বলবে তুমি শেষে
বড্ড বেশি মানুষ গেছে, বানের জলে ভেসে?
@অভিজিৎ,
অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ করা আসলেই খুব কঠিনই হবে। এটা আমেরিকার সংস্কৃতির একটি অংশ। হঠাত জোর করে করলে এটা ক্ষণস্থায়ী হবে এবং অকার্যকর হতে পারে, যেমন হয়েছিল বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ আইন।
একাডেমিক আলোচনায় গণতান্ত্রিক সরকারের ঋণাত্মক দিক আলোচনা করা হয়; সহজে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন করতে না পারা এটার একটা বাস্তব উদাহরণ। যদিও গণতন্ত্রের আসলে বিকল্প নেই। এর জন্য আসলে ধীরে ধীরে জনমত গড়ে তুলতে হবে। এক জেনারেশনে মনে হয় বিষয়টি সম্ভব হবেনা। তবে এটা নিশ্চিত করতে হবে ১০-১৫ বছর পর যেন পূর্ণ অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়।
গণতন্ত্র এবং নৈরাজ্য – এ দুটোর মাঝে তাত্ত্বিক বিভাজন কম থাকলেও বাস্তব দূরত্ব আসলে অনেক বেশি। উদারনীতির বাস্তব প্রতিফলন মঙ্গলদায়ক না হলে তা গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা উচিৎ।
আপনাকে ধন্যবাদ 🙂