শান্ত হয়ে বসুন, একটু দম নিন।
আমি জানি আপনি বাংলাদেশী হিসেবে জন্মে খুব গর্ব বোধ করেন। কারন আপনার পূর্ব পুরুষেরা পাক হানাদারদের মত হিংস্র পশুর কাছে থেকে ছিনিয়ে এনেছে এই দেশটির স্বাধীনতা। একাত্তরের কথা চিন্তা করলেই গর্বে আপনার বুক কয়েক ইঞ্চি ফুলে ওঠে। আপনাদের সরকারী বেসরকারী সব টিভিতেই ১৯৭১ সালে পাকহানাদার বাহিনী এবং তাদের এ দেশীয় সমর্থক রাজাকার-আলবদরদের কুকর্ম নিয়ে সংবাদ পরিবেশিত হয়। আপনার মনে হতেই পারে রাজাকার-আলবদরেরা বিলুপ্ত হয়েছে দেশ থেকে।
কিন্তু আসল সত্যটা কি জানেন?
না, তারা উবে যায়নি। বরং তারা আবার তৈরি হচ্ছে পুরো দেশের মানুষকে জিম্মি করার জন্য। তারা হল জামাত-শিবির।
প্রতি বছর ডিসেম্বর আর মার্চ আসলেই যেমন আমরা সবাই দেশ প্রেমী হয়ে উঠি, জামাত শিবির কিন্তু তা নয়। তারা সারা বছরই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ১৯৭১ সালে তাদের দুষ্কর্মের ফল ভোগ করার হাত থেকে বাঁচতে।
আমাদের সরকার খুবই বোকা। প্রতিবার যে ক্ষমতায় যায়, বিটিভিকে নিজের দখলে নিয়ে নিজের প্রচারণার কাজে লাগায়। বর্তমান আওয়ামিলীগ সরকারও তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু আসল সত্য হল অন্য বাংলা চ্যানেল দেখার সুযোগ থাকলে পারত পক্ষে বাংলাদেশের কোন মানুষই বিটিভি দেখেনা। বিদেশীদের দেখার প্রশ্নই ওঠে না। বিদেশিরা যেসব মিডিয়ার খবর দেখে, সেসবে গিয়ে প্রচার চালায় জামাত-শিবিরের বেতন ভুক্ত কর্মীরা। তারা মোটামুটি বিশ্ববাসীকে জানিয়ে ফেলেছে যে তারা রীতিমত দরবেশ প্রকৃতির মানুষ, এবং বাংলাদেশে আওয়ামিলীগ তাদের নিশ্চিহ্ন করতে চাইছে।
সত্যই কি তাই? সত্যই কি ৭১-রে কোন গণহত্যা ঘটেনি? কেউ পাকিস্থানীদের দালালী করেনি?
এটাই যদি ভেবে থাকেন, তবে আপনি ১৯৭১-রে পাকি ক্যাম্পে শতবার ধর্ষিত আপনার মা কিংবা বোনের সাথে প্রতারণা করছেন। আপনি প্রতারণা করছেন বুকের সব রক্ত হারিয়ে অবসন্ন হাতে শত্রুর দিকে বন্দুক তাক করে থাকা মুক্তিযোদ্ধা বাবার সাথে।
এত কিছুর পরেও এই দেশেরই অসংখ্য মানুষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই বলে গলা ফাটিয়েছে। এই মানুষদের সংখ্যা দেশে এতটাই বেশি ছিল যে তাদের সমর্থন দিয়ে আওয়ামিলীগ ক্ষমতায় বসেছে। এখন সারা দেশের মানুষ উন্মুখ হয়ে আছে কবে সেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় হবে, সেই আশায়। সেই চাপেই আওয়ামিলীগকে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে অভিযুক্তদের বিচার শুরু করতে হয়েছে।
দেশের বাইরে কিন্তু জামাত-শিবিরের প্রচারণা এক বিন্দুও কমেনি। তারা লক্ষ লক্ষ পাউন্ড খরচ করে ব্রিটিশ আইনজিবি নিয়োগ করেছে। হাজার হাজার ডলার নিয়ে মার্কিন লবিস্ট নিয়োগ দিয়েছে। শত শত বেতনভুক্ত ব্লগার তৈরি করেছে বিভিন্ন ব্লগে তাদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য। প্রায় সবগুলো নামকরা বিদেশি পত্রিকার ব্লগে তারা তাদের মনের মাধূরী মিশেয়ে যা খুশি লিখে চলেছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সেমিনারে ট্রাইব্যুনাল বিরোধী কথা বলছে। এরাই আবার ফেসবুকে চটকদার পেজ খুলে বিভ্রান্তিকর বা মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। সব কিছুর উদ্দেশ্য একটাই। আর তা হল প্রকৃত অপরাধীদের বিচার বন্ধ করা।
তাদের সর্বশেষ কর্মকান্ড হল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত বিশেষ আদালত “ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল” এর একজন বিচারপতির সাথে আর এক জন আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞের স্কাইপে কথোপোকথন এবং ইমেইল হ্যাক করে “দ্য ইকোনোমিস্ট” পত্রিকার হাতে তুলে দেয়া। ইকোনোমিস্ট এখনো সেটা প্রকাশ না করলেও বাংলাদেশের একটি পত্রিকা “আমারদেশ” সেই কথোপোকথনের একাংশ তাদের পত্রিকায় প্রকাশ করেছে।
কথোপোকথনে অস্বাভাবিক তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। সেখানে বিচারপতি বলেছেন সরকার চাইছে ডিসেম্বরের মধ্যে তাড়াহুড়ো করে রায় দিয়ে দিতে। তাতে বিচারপতি না করেছেন। অর্থাৎ বিচার তার নিজস্ব গতিতেই চলছে। পুরো ব্যপারটা হল আসলে চমক লাগানো এবং ট্রাইব্যুনাল বিষয়ে মানুষের মনকে বিষিয়ে তোলার একটা প্রক্রিয়া। কথায় বলে একটা মিথ্যাকে ১০০ বার বললে তা সত্য হয়ে যায়। তারা সেটাই করছে। এমনকি জামাত-শিবিরের কিছু ফেসবুক পেজ থেকে আরো অনেক অপ্রাসঙ্গিক ঘটনার সাথে এই ঘটনাকে মিলিয়ে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে।
আমরা এই দরিদ্র বাংলাদেশের মানুষ। অপরাধ সংঘটনের ৪১ বছর পরে তার বিচার শুরু করতে যাচ্ছি। এটা খুব সহজ একটা ব্যাপার নয়। তেমন কোন সুযোগ সুবিধা-ই এই ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের দেয়া হয়নি। এমনকি এই বিচারক পয়সা বাঁচাবার জন্য স্কাইপে বিনে পয়সায় কথা বলেছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞের সাথে। এই ধরনের বিচার এই দেশে আগে হয়নি। তাই তিনি বিশেষজ্ঞ কারো সাথে আলোচনা করতেই পারেন। এতে দোষের কি আছে?
এখন বোঝা যাচ্ছে যে ঠিক কি কারনে এই যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে আসা মানুষেরা ভয় পেত। প্রতিটি পদক্ষেপে জামাতি-শিবির আঁড়ি পেতে রেখেছে। আমাদের অদক্ষ সরকার এসব সামাল দিয়ে উঠতে পারছে না।
এত কিছুর পরেও আপনাকে কিন্তু এই ঘৃণ্য পশু জামাত-শিবিরই ব্যবহার করে চলেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিপক্ষে হাদিস লিখে, পুরো বিচার প্রক্রিয়াকে ভূল ভাবে ব্যাখ্যা করে, চটকদার পোস্টার বানিয়ে তারা আপনাকে বোঝাতে চাইছে যে পুরো বিচারটা আসলে ভূয়া। আপনি এই সবের প্রকৃত ঘটনা না জেনেই সেটাকে সত্য হিসেবে ধরে নিচ্ছেন। ফেসবুকে এই সব ছবিতে লাইক দিচ্ছেন, কমেন্ট করছেন। একবারও ভেবে দেখছেন না, তারা কিভাবে আপনাকে ব্যবহার করছে।
দয়া করে নিজেকে এই পশুদের ক্রীড়নক হতে দেবেন না। এবারে যদি এই শয়তানদের বিচার না হয়, তবে আর কখনোই হবে না। সারা বিশ্বে আমরা সেরা বেঈমান জাতি হিসেবে পরিচিত হব। তখন আপনি আপনার সন্তানকে মুখ দেখাবেন কি করে? যে তার নিজের পূর্বপুরুষ হত্যার বিচার করতে পারেনা, তার সন্তানের চোখে সে মেরুদন্ডহীন কেঁচো হিসেবেই ধরা দেবে? মানুষ হিসেবে নয়!
আসুন, হাতে হাত এবং কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে যাবতীয় প্রপাগান্ডা প্রতিরোধ করি। প্রতিটি ইংরেজী নামকরা পত্রিকার ব্লগে একাউন্ট খুলে ১৯৭১ এর প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরি। সেসব জায়গায় জামাত-শিবিরের বিভ্রান্তিকর লেখাগুলো ডিফেন্ড করি। বিশ্ববাসীর কাছে তাদের প্রকৃত পরিচয় তুলে ধরি। এই মুহূর্তে আপনার নীরবতা শত্রুর পক্ষেই যাবে।
অবশ্যই আমরা এই যুদ্ধে জয়ী হব, যেমনটা হয়েছিলাম ১৯৭১-রে।
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
সহমত।
জামাতের আর কি অপরাধ? তারা তো ইসলাম রক্ষার জন্য সব কিছু করতেছে।এমনকি দরকার হলে বিচারকদের ও আক্রমণ করতেও দ্বিধাবোধ করবেনা।
আসলে যেটা দরকার ছিল তাহল-
ধর্ম কে রাজনীতী ও শাসন ব্যবস্থা থেকে অনেক দূরে রেখে ওটাকে যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার।
রাজনীতি ও শাসন ব্যবস্থার সংগে ধর্ম সম্পৃক্ত হলে সেখানে শান্তি ও অগ্রগতি সম্ভব নয়।
চিলে কান নিয়ে গেছে শুনে আমাদের কেউ কেউ নিজের কানে হাত না দিয়ে চিলের পেছনে ছুটে। তেমনি বিচারকরা কি বলেছে না শুনে অনেকেই শুনে শুনে মহা চিন্তিত।কেউ কেউ মহা কম্পিতও। আমার দেশ পত্রিকা পড়ুয়া কম। অফিসে আমার সামনেই একজন বলল পত্রিকায় বেরিয়েছে বিচারকদের চাপ দিয়ে আওয়ামীলীগ যুদ্ধপরাধীদের নিয়ে রায় দেয়াচ্ছে ডিসেম্বরে। আরেকজন বলল, কোন পত্রিকায়? আমি তো নিয়মিত পত্রিকা পড়ি।দেখলাম না তো। আমি বললাম আমার দেশ মনে হয়। আবাক কান্ড। আমার আন্দাজে বলে দেয়াটাই ঠিক হল।
আপনার লেখায় বুঝা গেল বিচারকদের কথোপকথনের বিষয়। ধন্যনাদ সময়োপযোগী এ মূল্যবান লেখাটির জন্য।
@গীতা দাস,
হুজুগে বাঙালি বলে একটা কথা আছে। যে কোন শিক্ষিত মানুষ কোন কথা বিশ্বাস করার আগে একবার অন্তত চিন্তা করে। তাদের মাঝে প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে লাভ নেই। লাভ আছে অক্ষর চেনা মূর্খদের মাঝে গুজব ছড়িয়ে। জামাত-শিবির সেটাই করছে।
কিছুক্ষণ আগের খবর হল হ্যাকিং ঘটনার শিকার ট্রাইব্যুনালের বিচারক নিজামুল হক নাসিম আজ পদত্যাগ করেছেন। চিন্তার কিছু নেই। বিচার তার নিজস্ব গতিতেই হবে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ গীতা দি।
নতুন প্রজন্মের কেউ যে লিখেছে এটা দেখেই মন ভরে গেলো। সাদাচোখকে বিশেষ ধন্যবাদ।
গত মার্চে খুব কষ্ট লেগেছিলো কেউ নতুন কিছু লিখছে না দেখে। কিছুটা গজর গজর করেছিলাম তাই। এই ধরনের লেখা হালকা না হবার জন্য অভিজিৎ একটা কাজের মন্তব্য করেছে। স্পর্শকাতর রক্তাক্ত এসব গুরুত্বপুর্ণ লেখায় স্বাধীনতার চেতনার অযত্ন যেন না হয় তা খেয়াল রাখা খুব দরকার।
যারা বয়সে একটু বড় তারা নিজেদের, দেশের আর নতুনদের কাছে দায়বদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস আর স্বাধীনতার চেতনাকে তুলে ধরতে।
বারবার বলতে চাই, আজকের নতুনদের দেশচেতনার ভালোবাসা অনুভবে উষ্ণতার অভাবের দায় বড়রা কি নেবে না? তারা কি শেখাবার যথেষ্ট চেষ্টা করেছে বা করছে? সময় দিয়েছে কিংবা আজো দিচ্ছে? নাকি শুধুই করছে জাবর কাটা স্মৃতিচারণ? প্রত্যক্ষদর্শী যারা, সত্যি যারা মুক্তিযুদ্ধ মনে রেখেছে; তাদের কি আজ ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত, অভিমানী, আবেগপ্রবণ, কিংবা ছিঁচকাঁদুনে, আলসেমিতে দায়িত্বজ্ঞানহীন হয়ে ব্যর্থ হয়ে যাওয়া ঠিক হবে? যারা নতুন, দেশ চেতনায় তারা কি হবে শুধুই আচারিক? নিদেনপক্ষে, অন্তত নিজেকে তো প্রশ্ন করতেই পারি, আমি কি আমার দায়িত্ব পালন করছি?
@কাজী রহমান,
আপনার মন্তব্যের সাথে এই লেখাটা প্রাসঙ্গিক হতে পারে।
লেখাটা পাল্টে দেব। কিন্তু কোন এডিট করার অপশন খুঁজে পাচ্ছি না। কেউ একটু সাহায্য করবেন প্লিজ?
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
গুরুত্বপূর্ণ সময়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি লেখা লিখেছেন। আপনাকে ধন্যবাদ।
তবে কিছু লাইন একটু বদলে লিখতে পারতেন। বিশেষ করে এই প্যারাটা –
না, যুদ্ধপরাধীদের বিচার যারা চায় তারা মোটেই গাধা-টাইপের মানুষ নয়। এটা আমাদের প্রাণের দাবী। হয়তো ইচ্ছে করেই সার্কাজম করে বলেছেন। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ লেখায় হাল্কা চালে গাধা বকা সম্বোধন করে এভাবে লিখলে ভুল বোঝার অবকাশ থেকে যায়। আর জানেনই ত – জামাতীরা এর মধ্যেই নানা পদের ফন্দি ফিকির করছে, বিচারপতির আলোচনা হ্যাকিং থেকে শুরু করে তথ্যবিভ্রান্তি সবই। আপনার লেখাটা গুরুত্বপূর্ণ সময়ের সাক্ষী হয়ে আর্কাইভ হয়ে থাকবে। সেজন্যই সতর্কতা জরুরী।
@অভিজিৎ, আপনার সাথে একমত , গাঁধা-বোকা লেখা অংশটুকু এডিট করার আহবান জানাই লেখককে ।
এই জায়গায় একটু এডিট করেন , বিচারপতি বলেছেন সরকার চাইছে –
সরকার চাইছে এই কথাটা বাদ পড়ছে
@একুশ তাপাদার,
তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে উল্টা পাল্টা হয়ে গিয়েছে। এডিট অপশনটা না পাবার কারনে পাল্টাতে পারছিনা।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
@অভিজিৎ,
আপনার সংগে আমিও একমত ওটা এডিট করার জন্য।
@অভিজিৎ,
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ অভিজিৎ দা। আপনার ঊদ্ধ্বৃত অংশটুকু আসলেই সারকাজম করে লেখা। ঠিক আছে পাল্টে দেব। কিন্তু এডিট বাটন টা কোন এক অজানা কারনে খুঁজে পাচ্ছি না। একটু হেল্প করবেন প্লিজ?
@সাদাচোখ,
আপনি এখন দেখুন লেখার নীচে ‘সম্পাদনা’ অপশনটি পাচ্ছেন কীনা।
সম্পাদনা করতে সমস্যা হবার কথা নয়।
@মুক্তমনা এডমিন,
এখন দেখতে পাচ্ছি। ব্লগ খতিয়ানেও এডিট অপশন এসে গেছে। 🙂
ধন্যবাদ মুক্তমনা এডমিন। 🙂
যুদ্ধাপরাধের বিচার যেই করুক না কেন। যেভাবেই করুক না কেন। তাতে আমার কোন মাথা ব্যথা নাই। একজন সাধারন মুক্তিকামী নাগরিক হিসেবে। একজন ইতিহাসকে স্বীকার করে নেয়া মানুষ হিসেবে আমি যুদ্ধাপরাধের বিচার চাই। চূড়ান্ত শাস্তি চাই। অতীত ভয়াবহ বোঝার মতো চেপে আছে আমাদের কাঁধে। দায়মুক্ত হতে হবে বিচার করে।
সুন্দর লেখার জন্য ধন্যবাদ।
@মুনসুর সজীব,
আপনাকেও ধন্যবাদ সজীব।
তবে বিচার চেয়ে হাতগুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না। নিচের লিংকে যান। ছাগুদের প্রতিহত করুন কীবোর্ডে।
http://www.economist.com/blogs/banyan/2012/12/bangladesh
এছাড়া ফেসবুকে, ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগে, ব্লগার্সে ছাগুদের অপপ্রচারে টেকা দায়। সাধ্যমত সেসবের জবাব দিন। এ যুদ্ধ সরকারের একার না, এ যুদ্ধ আমাদের সবার।
আমরা বাঙ্গালীরা এত নিকৃষ্ট মানের জাতি যে অতীতের কোন সমস্যা অথবা দুঃখ দুর্দশার কথা এক দমই মনে রাখি না……আমিও তার ব্যতিক্রম নই। আর আমাদের দীর্ঘ মেয়েদি কোন কাজ কারবার ভাল লাগে না…… আমরা চাই ১ মিনিটেই ফলাফল, যার কারনেই আমাদের এই করুন অবস্থা। আর জামাত শিবিরের কি দোষ দেব, জামাত শিবির এত শক্তি শালি হওয়ার পেছনে আওয়ামীলীগ আর বি এন পি দায়ী, তাদের দুর্বল রাজনীতির কারণেই জামাত শিবির এত দূর আসতে পেরেছে……… বর্তমানে বিভিন্ন চেনেলের টক শো গুলাতে দেখা যায়, বি এন পি পন্থি লোকজন জামাতের পক্ষে কথা বলছে……… এই হল আমাদের অবস্থা।
সুন্দর একটা লেখা দেবার জন্য ধন্যবাদ
ভাল থাকবেন
আপনার জন্য রইল শুভ কামনা।
@(নির্জলা নির্লজ্জ),
এর জন্যই ৪১ বছর ধরে যুদ্ধাপরাধীদের বোঝা আমাদের বয়ে বেড়াতে হচ্ছে।
আপনার কথা সঠিক। আমরা যুদ্ধপরাধীদের বোঝা বয়ে বেরাইনি, ছাপিয়ে দেয়া হয়েছিলো। সাথে দুধ কলা খাইয়ে, ঘাড়ে বসিয়ে সংসদে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। স্বাধীন পতাকা হাতে দেয়া হয়েছিলো। তার জন্য দায়ি কে?? আমরা না!
নাকি আমাদের মূর্খ নেতা কর্মীরা?? ক্ষমতার জন্য যে দলটি ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিলো, সেই ক্ষমতার লোভেই বাংলা বিরোধী দলটিকে পক্ষে নিয়েছে কিছু দল। সে জন্য ফাইনাল ম্যাচটি ১ মিনিটেই হওয়া উচ্ছিৎ। মাথা কাঁটলেই লেজ থামবে। নিতির গান গেয়ে সময়ের অপেক্ষায় থাকলে বিচার কোন দিন আর হবে না। ৪১ বছর কেন ৪১ হাজার বছর পরেও এই যুদ্ধাপরাধীরা বিজয়ের গান গেয়ে স্বাধীনতা হরন করবে।
স্বাধীন দেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা কেন নাই? এ কেমন মুক্তমনা??
@অরণ্য,
কিছুই বুঝলাম না। কোন পক্ষের হইয়া কথা কইতেছেন? স্পেসিফাই করেন।
@সাদাচোখ,
গতকাল করা মন্তব্য প্রকাশ না পাওয়া প্রসঙ্গে বলছিলাম আর কি। আসলে ভাই মন টন ভাল নাই। ছাত্রদল, ছাত্রলীগ, ছাত্রশিবির সবাই খালি মানুষ মারে। কেউ বৈঠা, কেউ লাঠি, কেউ রড চাপাতি পিস্তলও বাদ যায় না। বাংলেদেশের শিক্ষিত মানুষ মাত্রই বিপদজনক। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হলে কোপাবে আর সচিব মন্ত্রি পুলিশ হলে দুর্নীতি করবে, বিপদে ফেলবে। স্বদেশী প্রবাসী সবাই শুধু দেশ প্রেমের কথা বলে। স্বদেশীরা মুখে আর প্রবাসীরা ব্লগ এ।
সবাই কোন না কোন দলের। সাধারণের পক্ষে কেউ নাই। কিছু বলতে গেলে সবাই আপনার মত করেই বলবে…
কোন না কোন পক্ষের হওয়াটা কি খুব জরুরী? যুদ্ধ অপরাধীদের বিচারের বেপারে আপনার কোন দ্বিধা আছে কি? যদি থেকে না থাকে তাহলে তো এমন প্রশ্ন করার কি মানে। যুদ্ধ অপরাধীদের অন দা স্পট মেরে ফেলা উচিৎ ছিল।
@অরণ্য,
অযাচিত ভাবে এসে বাক স্বাধীনতা হরণের কথা এখন ছাগুরা ছাড়া আর কেউ বলে না। তাই জিজ্ঞেস করেছিলাম আপনি কোন পক্ষে।
এটা রাগের কথা, কাজের কথা না। নিয়মতান্ত্রিক ভাবে বিচার শেষ হলে সেটাই আমাদের পরম পাওয়া।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
@সাদাচোখ,
চারদিক দেখেশুনে আমারও মেনে হচ্ছে, আ’লীত এই দীর্ঘমেয়াদি, সুষ্ঠ ও গ্রহনযোগ্য বিচারকার্য না চালালেই বোধ করি ভাল হত। আজকের এই দীর্ঘমেয়াদি , সাক্ষ্য-প্রমানভিত্তিক বিচার কয়জনের কাছে গ্রহনযোগ্যতা পাচ্ছে, বলুনতো? হিলারি শাসিয়ে যাচ্ছেন, অ্যামনেস্টি অভিযোগ তুলেছে, ইকোনোমিস্ট বলছে – রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমনের জন্য এই বিচার করা হচ্ছে। সুতরাং, গ্রহনযোগ্য করতে পারলেন কই? বলবেন, এরা তো জামাতের দালাল। কথা হচ্ছে, জামাতের টাকা খাওয়া দালাল বা মানবতার ধ্বজাধারী আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর গ্রহনযোগ্য পেতেই হবে কেন, যখন এই বিচারকার্যটি করতে ইতিমধ্যেই ব্যয় হয়েছে ৪০ টি বছর?
দেখুন এর চেয়ে সরকারে প্রথম বছরেই যদি সংক্ষিপ্ত ট্রায়ালের মাধ্যমে এদেরকে লটকানো যেত, তাহলে অন্তত জামাত-শিবির-বিএনপি মাঠ গরম করার সুযোগ পেত না। কারণ ওদের ক্যাডাররা তখন পলাতক আর কোনঠাসা ছিল। তাছাড়া, তখন সাধারণ মানুষের মাঝে সরকারের জনপ্রিয়তাও ছিল অক্ষুন্ন। আর এখন সাধারণ মানুষের ক্ষোভের সুযোগ নিয়ে সারা দেশে প্রবল অরাজকতা সৃষ্টি করে যাচ্ছে জামাত-বিএনপি, যুদ্ধাপরাধের বিচার ঠেকিয়ে দিতে তারা মরিয়ে, প্রয়োজনে যেকোন নাশকতা করতে বা ঘটাতে তারা পিছপা হবে না বলে মনে হচ্ছে।
@সাদাচোখ,
চারদিক দেখেশুনে আমারও মনে হচ্ছে, আ’লীগ এই দীর্ঘমেয়াদি, সুষ্ঠ আর গ্রহণযোগ্য বিচারকার্য না চালালেই বোধ করি ভাল হত। আজকের এই দীর্ঘমেয়াদি, ও ব্যাপক সাক্ষ্য-প্রমানভিত্তিক বিচার কয়জনের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে, বলুন-তো? হিলারি ক্লিনটন শাসিয়ে যাচ্ছেন, অ্যামনেস্টি অভিযোগ তুলেছে, ইকোনোমিস্ট বলছে – শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমনের জন্যই এই বিচার করা হচ্ছে। সুতরাং, গ্রহণযোগ্য করতে পারলেন কই? বলবেন, এরা তো জামাতের দালাল। কথা হচ্ছে, জামাতের টাকা খাওয়া দালাল বা মানবতার ধ্বজাধারী আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর গ্রহণযোগ্যতা পেতেই হবে কেন, যখন এই বিচারকার্যটি করতে ইতিমধ্যেই অপেক্ষা করতে হয়েছে ৪০ টি বছর?
দেখুন, এর চেয়ে সরকারের প্রথম বছরেই যদি সংক্ষিপ্ত ট্রায়ালের মাধ্যমে এদেরকে লটকানো যেত, তাহলে অন্তত জামাত-শিবির-বিএনপি এই ইস্যুতে মাঠ গরম করার সুযোগ পেত না। কারণ ওদের ক্যাডাররা তখন পলাতক আর কোণঠাসা ছিল। তাছাড়া, তখন সাধারণ মানুষের মাঝে সরকারের জনপ্রিয়তাও ছিল অক্ষুণ্ণ। আর এখন সাধারণ মানুষের সাধারণ ক্ষোভের সুযোগ নিয়ে সারা দেশে প্রবল অরাজকতা সৃষ্টি করে যাচ্ছে জামাত-বিএনপি, যুদ্ধাপরাধের বিচার ঠেকিয়ে দিতে তারা মরিয়া, প্রয়োজনে যেকোনো নাশকতা করতে বা ঘটাতে তারা পিছপা হবে না বলে মনে হচ্ছে। সবচেয়ে দুঃখজনক, সাধারণ মানুষও সরকারের কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছে মনে হয়।
@কাজি মামুন,
বলাটা যত সহজ, করাটা তত সহজ নয়। কথা না বাড়িয়ে শুধু একটা কথাই বলি। অনেক চিন্তা ভাবনা করে সবচেয়ে কার্যকরী এবং সবচেয়ে ফলপ্রসূ পথটাতেই বিচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাংলাদেশ সৌদীআরব না, যে ইচ্ছে হল আর গর্দান নিয়ে নিলাম। প্রতিটা বিচারের একটা নিজস্ব পদ্ধতি আছে। সেটার জন্য নির্দিষ্ট সময়ও আছে। আজ যদি আপনি যেন তেন ভাবে সব কটা রাজাকারকে ঝুলিয়ে দেন। কিছু দিন পর আপনিও যে যেন তেন ভাবে ফাঁসিতে ঝুলবেন না, তা কেউ বলতে পারেনা। এটা মানতেই হবে। আপনার ভালো লাগুক, বা না-ই লাগুক।
অস্থির হয়ে ১ দিনে কোন কিছু চাওয়াটা যৌক্তিক নয়। জামাত-শিবির এত নর্তন কুর্দন করার পর্যায়ে ১ দিনে আসেনি। ৪১ বছর ধরে একটু একটু করে এগিয়ে এসেছে। বিষয়টা মনে রাখা দরকার।
@সাদাচোখ,
হুম।
নিজের দল ছাড়া অন্য সকল কে ছাগু ভাবার একটা বিশেষ প্রবণতা দেখাযাচ্ছে আজকাল। এ ব্যাপারে একটু মুক্তমনে ভেবে দেখবার আবেদন রইল।
ক্ষমতাশালী গণ্যমান্য জঘন্য ব্যাক্তিদের বিচারের বেলা শুধু নিয়মতান্ত্রিকতা, আর বিশ্বজিৎ দের বেলা- পিটাইয়া মাইরালা অক্ষনি!
রাগ অভিনাম অপমানবোধ আত্মমর্যাদা ছিল বলেই দেশ স্বাধীন হয়েছিলো। নিয়মতান্ত্রি ভাবে কেউ প্রাণ দেন নাই। ৪২ বছরের অনিয়মের নিয়মানুবর্তিতা দেখে দেখে ক্লান্ত।
@অরণ্য,
আপনার মন্তব্যটি ভুলক্রমে স্প্যাম ফোল্ডারে চলে গিয়েছিল। এখন প্রকাশ করে দেওয়া হল। 🙂
-মুক্তমনা মডারেটর
@মুক্তমনা মডারেটর,
ধন্যবাদ। 🙂
সদ্য খুন হওয়া বিশ্বজিৎ দাস এর খুনের বিচারের দাবিতে কি কিছু লিখা যায়? প্রতিদিন ঘটে যাওয়া নৃশংসতা নিয়ে কি কিছু করার আছে?
আমাদের সরকার বোকা, বুদ্ধিজীবীরা খোকা, পুলিশ ন্যাকা, আইন শুধু বই এ লেখা, আর সাধারণ জনগণ -একা।
কি লিখব ভেবে পাচ্ছি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সব। মেধাবী ডিগ্রিধারী। ছাত্রদল, ছাত্রলীগ, ছাত্রশিবির… কী নিবিড় সম্পর্ক সবার। আহা! এর নাম উচ্চশিক্ষা? উচ্চশিক্ষা চাই না ভাই, মানুষ চাই। ধর্ম অধর্ম বুঝিনা, ভাল ভাবে বাঁচতে চাই।
সবাই দেখি দেশপ্রেমিক। দেখা যাবে শিবিরও কোন দেশপ্রেমের কথা বলবে। আমার মনে হয় দেশপ্রেমটা একটু সস্তা হয়ে গেছে। অতি গর্বে আমরা গর্ভবতী। শুনতে খারাপ হলেও ঘটনা সত্য। ধর্মের নামে দলের নামে সবাই শুধু বাংলাদেশকে ধর্ষণ করছে। প্রতিদিন! দেশ যে মাতা, যতই ভালবাসো এ যে প্রেমিকা নয় যে প্রণয় করবে। কিন্তু বাংলাদেশের সাথে তাই হচ্ছে।
সবাই বলবে কেউ কিচ্ছু করবে না।
যে দেশে আইনের কোন প্রয়োগ নাই, অপরাধের কোন বিচার নাই সেই দেশে যুদ্ধ অপরাধীর বিচার একটা প্রহসন মাত্র। বিজয় না দেখলেও বিজয়ের মাস অনেক দেখছি। দেশপ্রেম দেখি নাই কিন্তু দেশপ্রেমের কথা অনেক শুনছি। দেশ প্রেম যে কোন রূপ কথা না তা বিশ্বাস করাই মুশকিল।
কথা গুলো লেখকের জন্য নয়। কার জন্য আমি নিজেও জানি না। হয়তো নিজের জন্যই।
প্রকৃতি আমাদের ক্ষমা কর।
অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এই পোস্টটি লেখার জন্য ধন্যবাদ সাদাচোখ। এদের বিচার হতেই হবে যে কোনো অবস্থাতেই। জামাত-শিবির যে এই বিচারের বিরোধিতা করছে, তাদের কি সামান্যতম লজ্জাবোধও নেই!
@তামান্না ঝুমু,
ওদের লজ্জা থাকলে জামাত-শিবির না করে মানুষ হয়ে যেত।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
এই সময়ে এই লেখাটার খুব দরকার ছিল। লেখককে অভিনন্দন।
আর কয়দিন বাদেই ঘোষিত হতে যাচ্ছে যুদ্ধাপরাদের বিরুদ্ধে প্রথম রায়। আর তাই জামাত মরিয়া। বিএনপির নৈতিক সমর্থন নিয়ে হরতালে তার একাত্তরের নৃশংসতাকে ফিরিয়ে এনেছে, আজকের অবরোধে তারাই নজীরবিহীন সহিংসতা করেছে, বিএনপি অফিসের সামনে তারাই লোক সমাগম করেছে এবং বিচারপতিদের হুমকি দিয়েছে। সাঈদির রায় ঠেকাতে তারা আগামী মঙ্গলবারও হরতাল দিতে বাধ্য করেছে বিএনপিকে। উদ্দেশ্যটা পরিষ্কারঃ দরকার হলে তয় শক্তিকে ক্ষমতা দখলের আমন্ত্রণ জানানো হবে, তবু রায় প্রকাশ করতে দেয়া হবে না।
সাদা চোখ ভাইকে অসংখ্য অভিনন্দন এই সময়োপযোগী লেখাটার জন্য।
@কাজি মামুন,
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
তবে,
এই জাতীয় মন্তব্য আমাদের ক্ষতি ছাড়া ভালো করবে না। আওয়ামিলীগের মন্ত্রী-নেতা-পাতি নেতারা এটাকে যথেচ্ছে ব্যবহার করেছে। এটা তো সৌদী আরব না, যে বিচার ছাড়া গর্দান নেয়া হবে। ট্রাইব্যুনালের কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলে। সেটার জন্য প্রয়োজনীয় সময় তাকে দিতে হবে। তা না হলে এটা সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবেনা। কবে বিচার শেষ হবে, সেটা পুরো প্রক্রিয়ার উপর নির্ভর করছে। কেউ এসে বলতে পারেনা অমুক দিনের মধ্যে রায় দিয়ে দেব।
সেকারনে কষ্ট করে হলেও ধৈর্য্য ধরে শেষ পর্যন্ত দেখে যেতে হবে।