লিখেছেন: মুক্তি চাকমা
জাতীয় সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী এটা কি বললেন! তিনি আবার পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়কও! এ থেকেই বোঝা যায় আমাদের পাহাড়িদের প্রতি সরকার কেমন মানসিকতা পোষণ করে এবং তারা আদতেই কেমন আন্তরিক পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রকৃত সমস্যা প্রকৃতই সমাধানের জন্য।
তিনি বলেছেন, ‘ওখানে (পার্বত্য চট্টগ্রামে) অনেক রকম পলিটিকস ঢুকে গেছে। অনেক গ্রুপ সেখানে। ইংলিশ, জার্মানিরা ওখানে যাচ্ছে। তারা বড় ব্যথিত পাহাড়িদের জন্য। আসলে পাহাড়ে রাস্তা করে বিপদ হইছে।’
একজন শিক্ষিত এবং প্রবীণ রাজনীতিবিদের একি ভাষা আর মানসিকতা! তার ব্যবহৃত সব বুলি যদি সেনাবাহিনীর তথাকথিত এবং চর্চিত বুলিগুলোকেই সমর্থন (আদতে হুবহু) করে তাহলে এত দীর্ঘ সময় ধরে উনি কি রাজনীতি করলেন??!! নিজের মগজটি কি খাটানো উচিত নয়! ব্রিটিশ, জার্মান সহ বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা সমূহ (এতটুকুও কি বোঝার ক্ষমতা নেই যে উন্নয়ন সংস্থা আর সম্পূর্ণ একটি জাতি এক বিষয় নয়!) কেবল পার্বত্য চট্টগ্রামে নয় বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানেই সহায়তা দিচ্ছে, কিন্তু যত সমস্যা বুঝি এই পার্বত্য অঞ্চলে সহায়তা দিলে!
পাহাড়িদের জন্য ব্যথিত তো রাষ্ট্রযন্ত্র এবং তার উপাদান সরকারের হওয়া উচিত ছিল, কিন্তু স্মরণাতীতকাল থেকেতো এটাই প্রমাণিত হচ্ছে যে এই অঞ্চলের ভূমিকেই সরকারেরা ভালোবেসে গেছে, আর অঞ্চলের মানুষগুলো বরাবরই তাদের কাছে থেকে গেছে উটকো ঝামেলা। বিভিন্ন সময়ের সরকারেরা যদি আমাদের পাহাড়িদের জন্য শুরু থেকেই ‘ব্যথিত’ হত তাহলে আর বুঝি এই ‘ইংলিশ, জার্মানিরা’ এখানে আসারই সুযোগ পেত না। কারণ প্রয়োজনই হত না।
পাহাড়ে রাস্তা করেতো বিপদ হয়েছেই! তা নাহলে ট্রাকে ভরে ভরে কোরবানীর গরুর মত করে চার লক্ষ ভাসমান মানুষকে বয়ে এনে এই অঞ্চলে ছেড়ে দেয়ার মত দুর্বুদ্ধি আসতো না।
পার্বত্য চট্টগ্রামে সক্রিয় বিদেশি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর ভূমিকার সমালোচনা করেছেন জাতীয় সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। তাঁর অভিযোগ, এসব বিদেশি পাহাড়ের শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করছে।
আবার সেই সেনাবাহিনীয়-জামতশিবিরীয়-বিএনপিয়-হালের আওয়ামিলীগিয় বুলি। আসলে একটা বিষয় আছে যেটা খুব দুঃখ নিয়েও ঠোঁটের কোণায় মৃদু হাসি নিয়ে আসতে বাধ্য করে, সেটা হল, পার্বত্য চট্টগ্রাম ইস্যুতে সবাই এক ছাতার নীচে চলে আসে। সবাই অভিন্ন শব্দ আর বাক্য ব্যবহার করে। যে কাজগুলো রাষ্ট্রের করা উচিত, সরকারের করা উচিত সেগুলো তারা করার প্রয়োজন বোধ করছেন না আর আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা যদি এখানে কাজ করে তা হয়ে যায় ‘অশান্তি সৃষ্টি’। অবশ্য এটাতো নতুন কিছু নয় যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো সবকিছুতেই কেবলই বিদেশী ষড়যন্ত্রের গন্ধ পান। তাই বাকী গুন থাকুক না থাকুক এদের ঘ্রাণ ইন্দ্রিয় যে প্রচুর কার্যক্ষমতা সম্পন্ন, সন্দেহ নেই! ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে কখনো কখনো প্রশ্ন জাগে বাংলাদেশ বিশ্বের মানচিত্রে এত কি গুরুত্ব বহন করে যে সব বিদেশী শক্তিরাই এত দেশ ফেলে কেবল বাংলাদেশের পিছনেই লাগে! আর, বাংলাদেশের মাটি দেশপ্রেমিক বীর সেনাবাহিনীরা তাদের বুকের রক্ত এবং জীবনের বিনিময়ে যেভাবে গার্ড দিয়ে রাখে, যদি নাওবা রাখে কোন বিদেশী শক্তি যেমনঃ ‘ইংলিশ’, ‘জার্মানিরা’ বা ভারতীয়রা কি এই ভূমি দখল করে নেবে!! কারণ, এই মাটি দখল মানেতো জনগণও তাদের দখলে – কোন পাগল কি এই সুবিশাল জনসংখ্যার দায়িত্ব নিবে! অবশ্য আমি তা না বোঝার কারণও রয়েছে। কারণ আমি রাজনীতি করিনা (একজন সাধারণ খেটে খাওয়া নাগরিক মাত্র), তাই ঘ্রাণ শক্তিও দুর্বল! এই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বাকি সকলের মতই নিশ্চয় মনে করেন বাংলাদেশের এই পার্বত্য অঞ্চলের সাধাসিধা, সরল উপজাতিরা (ব্যবহারগতভাবে তা অবশ্য কিছু অশিক্ষিত, জংলী, অসভ্য, হিংস্র, বাঙ্গালীর শ্রেষ্ঠত্ত্বের কাছে অস্তিত্ত্বহীন- জাতীয় কিছু জনগোষ্ঠী, যাদেরকে রাষ্ট্র মনের আনন্দে আপন ভেবে রাখতেও পারছেনা আবার রাষ্ট্রের সীমানার বাইরে ছুঁড়েও দিতে পারছেনা হাজার হোক চক্ষু লজ্জা আর মানবিকতা বলে দুটো জিনিষ তাদেরওতো আছে, নাহয় একটু কমই হল) এই হতচ্ছাড়া অদৃশ্য বিদেশীদের মদদে বেশী চালাক আর গরল হয়ে যাচ্ছে! সবাই মিলে খ্রীষ্টান হয়ে যাচ্ছে – কি সর্বনেশে কথা! কারণ সরকারতো অনেক উদার, তারা চিন্তিত এই সরলেরা খ্রীষ্টান হয়ে গেলে যে তাদের উপজাতীয় ঐতিহ্য থাকবেনা (এমন অবশ্য আমার এক জজ বন্ধুও বলেছেন, তিনি প্রথমবারের মত বান্দরবান ভ্রমণ অভিজ্ঞতা করে আমাকে ফোন দিয়ে তার চিন্তার এবং আশংকার কথা বলেছিলেন), তবে এই চিন্তাটা হচ্ছে খোলস, মূল ভয় হল যদি সবাই খ্রীষ্টান হয় আরতো চলমান নীপিড়ন চালানো যাবেনা, কারণ পেছনে তখন খ্রীষ্টান বিশ্বের ঠেলা থাকবে – তখন দেশটাইনা আবার হারাতে হয়।
হাসি পায়, রাজনীতির বাহিনীরাতো দলমত নির্বিশেষে বটেই, শিক্ষিত-উচ্চ পদমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তিরাও এই পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং তার আদিবাসীদের বিষয়ে এত দৈন্যতার পরিচয় বহণ করেন দেখে। আমাদের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্য রক্ষা এবং অধিকার বিষয়ে যদি সবাই এত সচেতন এবং আন্তরিক হত তাহলে অতীতের ক্ষমতাসীন জিয়ার সরকার এভাবে এই অঞ্চলে বৃহৎ একটি বহিরাগত সংখ্যার অস্বাভাবিক মাইগ্রেশন ঘটা্তোনা, পরবর্তীতে বাকী সরকারেরা অতি উৎসাহ নিয়ে বিভিন্ন কার্যকলাপের মাধ্যমে তার সাপোর্ট দিয়ে যে্তোনা, সেনাবাহিনী তান্ডব করার সুযোগ পেতনা, আর বৃহত্তর বাঙ্গালীদের সুবৃহৎ একটি অংশ (শিক্ষিত, অশিক্ষিত, উচ্চশিক্ষিত নির্বিশেষে) চোখ বন্ধ করে এই রেডি্মেড বুলি আওড়াতোনা। আমি নিজে একজন উন্নয়নকর্মী, যখন দেখি যে কোন গ্রামে পৌঁছাতে আট দিনের রাস্তা হাঁটতে হয়, অতিক্রম করতে হয় দুর্গম পাহাড়, প্রতিমূহুর্তে সম্ভাবনা থাকে মৃত্যুর দুয়ারে পৌঁছার, তখন প্রশ্ন জাগে ওই গ্রামের লোকেরাও কি মানুষ নয় তাদেরও কি অধিকার নেই উন্নয়নের সুবাতাস পাবার! সেখানকার মানুষের জন্য যদি অন্য কেউ চিন্তা করে (সরকার চিন্তা করবে কি করে, বন্ধ চোখে কল্পনা করার মত জ্ঞানইতো নেই)তাহলেই সেই বিদেশী সংস্থা কুচক্রী হয়ে গেল! অথচ জনগনের উন্নয়নের মূল দায়িত্বটা কার ছিল- সেই বিবেকটা কি কাজ করে যারা বুলি আওড়ায় তাদের? আর আদিবাসীরা সকলে মিলে খ্রীষ্টান হতে যাবে কোন দুঃখে! এখানকার আদিবাসীদের জনসংখ্যা অনুযায়ী অধিকাংশ তো বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান হবার ইচ্ছে থাকলে (খ্রীষ্টান হয়ে যদি এতই লাভ হয়) এতদিন এরা বসে থাকতো! আমিইতো তাহলে সবার আগে খ্রীষ্ট ধর্ম গ্রহণ করে বিশাল লাভবান (তাদের ভাষায়) হতাম, খ্রীষ্টান রাষ্ট্রে গিয়ে লম্ফঝম্প করতাম, কিন্তু এখানে তাহলে কেন শুধু শুধু মরছি গ্রামে ঘুরে, গ্রামবাসীদের জন্য কাজ করে! কারণ এসব রাজনীতির নোংরা খেলা আমরা চাইনা, ধর্মের খেলা আমরা চাইনা, কেবল যা চাই, যা বুঝি তা হল এখানকার জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা হোক। যারা এত আমাদের ধর্মান্তরকরণ নিয়ে চিন্তিত, আমাদের ঐতিহ্য রক্ষা নিয়ে চিন্তিত তারা কিন্তু আবার খুব সুখের হাসি দিবেন সবাই যদি মুসলমান হয়ে যায়, তখন সাত খুন মাফ এবং মুসলমানকরণের সেই প্রক্রিয়া শুরুও হয়ে গেছে।
সাজেদা চৌধুরীর দাবি, আগে পাহাড়িরা ভালো ছিল। তেমন কিছু বুঝত না। ওদের টাকা দিয়ে, নানা প্রলোভন দেখাচ্ছে বিদেশিরা।
এথেকেই বোঝা যায় আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামের অভিধান থেকে ‘শান্তি’ শব্দটাই চিরতরে মুছে গেছে। কারো ভালো থাকা সেটা বোধ করি নির্ণয় করবে সেই ব্যক্তি যার বিষয়ে বলা হচ্ছে, নিশ্চয় অন্য আরেকজন নয়। মাননীয় সংসদ উপনেতা কি আমপাহাড়ি যে উনি জানবেন কিসে আমরা ভালো থাকবো বা আদৌ ভালো আছি কিনা??!! দেশের একাংশ জনগণ (পারলে পুরো দেশের জনগন) কিছু না বুঝলে সেটাই যে আখেরে তাদের লাভ তা স্পষ্ট উল্ল্যেখ করলেন আমাদের মাননীয় সংসদ উপনেতা। অর্থাৎ, রাষ্ট্র চায় নাগরিকেরা অধিকার সচেতন না হউক, কিছু না বুঝুক – অদ্ভুত! রাষ্ট্রের এই শ্রদ্ধেয় কান্ডারীদের বক্তব্য যেতে যেতে আর কতদূর যাবে…!
আমার কিছুপ্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে- যেই ‘ইংলিশ’, ‘জার্মানিরা’, কুচক্রী বিদেশীরা এই পার্বত্য চট্টগ্রামকে অশান্ত করছে, উপজাতিদের আদিবাসী হতে শিখাচ্ছে, টাকা ঢেলে উপজাতিদের উন্নয়ন আর মানবাধিকার শিখাচ্ছে সর্বোপরি খ্রীষ্টান বানাচ্ছে এবং দেশের সার্বভৌমত্বকে নষ্ট করে স্বাধীন রাষ্ট্র বানানোর ধান্দায় আছে তারা কি কেবল পার্বত্য চট্টগ্রামেই টাকা দিচ্ছে! তাতো নয়, তারা সারা বিশ্বেই উন্নয়নের উদ্দেশ্যে টাকা ঢালছে তাহলে কেন শুধু তাদের টাকাতে পাহাড়িরাই চালাক হয়ে যাচ্ছে আর বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়ছে!!! একই ব্যপার, ঘ্রাণ শক্তি দুর্বল বলেই হয়তোবা এই প্রশ্ন করতে হচ্ছে।
এটা কি কোন ন্যয় যখন প্রশাসনিকভাবে একটি উন্নয়ন সংস্থাকে বাধ্য করা হচ্ছে পাহাড়িদের পাশাপাশি সমতল থেকে আসা বাঙ্গালীদেরও উপকারভোগী করতে! সাধারণত রিমোট অঞ্চলকে উন্নয়নের অঞ্চল হিসেবে ধরলে বাঙ্গালীরা অন্তর্ভূক্ত হয়না, কারণ সেসব অঞ্চলে বাঙ্গালীদের বসবাস নেই, তারপরও প্রশাসন থেকে চাপ দেওয়া হয় বাঙ্গালীদের শতাংশ উল্ল্যেখ এবং বৃদ্ধির জন্য। বাঙ্গালীদের উন্নয়ন সংস্থার রেজিষ্ট্রেশন খুব সহজেই হয়ে যাচ্ছে। সেখানে পাহাড়িদের সংস্থাগুলি রয়েছে কড়া নজড়দারী আর হুমকির মুখে। পাহাড়ে অশান্তি তৈরী আর খ্রীষ্টান রাষ্ট্র সৃষ্টির চক্রান্তের যেই অপবাদ এই অঞ্চলের পাহাড়ী সংস্থাগুলিকে দেয়া হচ্ছে তা যেন আর থামতেই চাইছেনা। এ থেকেই পরিষ্কার সরকার কখনই এই অঞ্চলের আদিবাসীদের ভূমি অধিকার দিবেনা কারণ এই অঞ্চলের বসতকারী বাঙ্গালীদের শেকড়টাকে বরং আরো বিস্তৃতির সু্যোগ দেয়া হচ্ছে। এককালের এই ভাসমান বাঙ্গালীদের দিয়ে আমাদের ভূমি দখল করিয়ে নিয়ে এখন কিনা তাদের উন্নয়নে কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে আবার আমাদেরকেই, সাথে দেয়া হচ্ছে ‘কুচক্রী’র অপবাদ – ষড়যন্ত্রটা আসলে কাদের পক্ষ থেকে!!
পার্বত্য চট্টগ্রাম আমাদের পাহাড়ীদের জন্মভূমি কিন্তু তার হর্তা-কর্তা হলেন সেনাবাহিনী, তারাই নির্ধারণ করেন এই অঞ্চল আর আমাদের ভাগ্য, তাহলে আমরা ভালো থাকি কি করে! পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তির পায়রা ওড়ানোর গুরু দায়িত্বটি যদি এই সেনাবাহিনীর হাতেই থাকে তাহলে ‘মানবাধিকার’ আর যে রাস্তা দিয়েই হেঁটে যাক, পার্বত্য অঞ্চলে যে এসে পৌঁছাতে পারবেনা তা নিশ্চিত।
তথ্যভিত্তিঃ প্রথম আলো ০৩/১০/১২ সংখ্যা
আমি সমঅধিকারে বিশ্বাসী । পার্বত্য এলাকাসহ যে সব এলাকা অনুন্নত সে সমস্ত এলাকার সমভাবে উন্নয়ন করতে হবে । শিক্ষা, চাকুরি ইত্তাদি েক্ষত্রে সমতলের জনগোষ্ঠীর চাইতে পাহাড়িরা এখন অনেক খানি এগিয়ে শুধুমাত্র কোটা পদ্ধতির কারনে। সাওতাল, কোল, গারো এরা হল এদেশের আদিবাসী,কোনোভাবেই চাকমা, মারমা নয় । এ সমন্ধে যারা দ্বিমত পোষণ করেন তাদের নৃ্তাত্তিক জ্ঞান সম্বন্ধে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে । রোহিঙ্গারা কিছুদিন পর আদিবাসী হিসাবে দাবি করলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবেনা । দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে আমাদের দেশের যারা প্রকৃ্ত আদিবাসী যেমন সাওতাল, কোল, গারো তাদের এদেশের ভূমির উপর কোন অধিকার নেই । অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা এদেশ পেয়েছি । কাজেই এদেশে বসবাসরত সকল নাগরিকদের সমভাবে উন্নয়ন করতে হবে। সকল নাগরিকের দেশের সকল স্থানে বাস করার আধিকার নিশ্চিত করতে হবে ।
@পলাশ,
অতি বিনয়ের সাথে আপনাকে বলতে চাই যে, আমারও সন্দেহ আছে, তবে তা কেবল আপনার নৃতাত্ত্বিক জ্ঞান নিয়ে নয়, আপনার ইতিহাস জ্ঞান এবং আপনার আধুনিক ‘আদিবাসী’ সংজ্ঞা সম্পর্কিত জ্ঞান নিয়েও। আপনাদের যাদের আমাদেরকে আদিবাসী বলতে কষ্ট হয় তাদের চিন্তা শুরু হয় “পার্বত্য চট্টগ্রাম গর্বিত বাংলাদেশ এবং ততোধিক গর্বিত বাঙ্গালী জাতির অংশ”- ঠিক এই পয়েন্ট থেকে এবং শেষও হয় এখানেই, তাহলে আর প্রকৃত নৃতাত্ত্বিক জ্ঞান এবং ইতিহাসের স্বীকৃতির অবকাশ কোথায়!!
এটা কি জানেন যে পার্বত্য চট্টগ্রাম ১৮৬০ সালের আগ পর্যন্ত না ছিল বাংলার অংশ, না ছিল ব্রিটিশ ভারতের? পার্বত্য চট্টগ্রাম আইনত সবসময়ই এক্সক্লুডেড এরিয়ার মর্যাদা পেয়ে এসেছে। আর সেখানে প্রথম বসতি যে কোন বাঙালী করেছে তাতো বোধহয় উন্মাদরাও বলবেনা (মাটি লোভীরা ছাড়া)। আমার ইচ্ছে রয়েছে এই সংক্রান্ত আইন, ইতিহাস নিয়ে একটি বিশদ লেখা তৈরির। কিন্তু যেহেতু এক্ষেত্রে প্রয়োজন পুঙ্খানুপুঙ্ক তথ্য তাই বিস্তর পড়াশোনা দরকার। এই ক্ষেত্রে বই জোগাড়টা কঠিন হবে অনেকখানিই, আর যেহেতু ওয়ার্কিং ওম্যান তাই সময় ম্যানেজ করাটাও কঠিন। তবে লেখা আমি লিখবই।
বিশেষ করে যারা কেবল মনে করেন বাংলাদেশের বাঙ্গালীরাই আদিবাসী (হাজার হাজার বছরের ইতিহাস তাদের আছে কিনা), পাহাড়িরা ভাসতে ভাসতে এসেছে এই দেশে (মাত্র কয়েক শত বছর আগে এসেছে কিনা) (অথচ যেই ‘দেশ’ থেকে সকল চিন্তার শুরু তা বয়স মোটে ৪১ বছর!)(এই চিন্তার বাহকরা ভাব করেন বাংলাদেশ বুঝি হাজার বছরের পুরোনো, নিদেন পক্ষে বাঙ্গালীরাতো পুরোনো আর তাদের দখলেই বুঝি ছিল এই পার্বত্য চট্টগ্রাম), কাউকে আদিবাসী হতে গেলে আগে অষ্ট্রেলিয়া, আমেরিকা বা নিউজিল্যান্ডের এবরোজিন, রেডইন্ডিয়ান বা মাওরি হয়েই জন্মগ্রহণ করতে হবে সর্বোপরি যারা মনে করেন যে নৃতাত্ত্বিক জ্ঞা্নের দখল কেবল তাদেরই আছে—— তাদের জন্য লিখতে হবে বৈকি!
@মুক্তি চাকমা,
এদেশ এক সময় ভারতের অংশ ছিল, তাই বলে এখনতো আর ভারত নয় । আপনি ১৮৬০ সালের আগের ইতিহাস তুলে ধরে কি বোঝাতে চেয়েছেন ? আপনারা কি বাংলাদেশ রােষ্ট্রর মধ্যে আলাদা কোন রাষ্ট্র চান, না বাংলাদেশ থেকে আলাদা হয়ে যেতে চান ? আমি আবার বলছি সাওতাল, কোল, গারো এরা হল এদেশের আদিবাসী,কোনোভাবেই চাকমা, মারমা নয় । আর চাকমা জন গোষ্ঠী কোনোভাবেই সমগ্র পাহাড়িদের রিপ্রেজেন্ট করেনা ।
@পলাশ,
আমি কখন বললাম যে চাকমারা সমগ্র পাহাড়িদের রিপ্রেসেন্ট করে!!!
আর কখনই বা বললাম যে বাংলাদেশের মধ্যে বা সম্পূর্ণ আলাদা রাষ্ট্র চাই!!!
ইতিহাস জানতে দেখি আপনার প্রচন্ড অনীহা!! কেন ভাই, আপনি হাজার বছরের ইতিহাসের কাঁধে চড়ে বলতে চাচ্ছেন (বংগের ইতিহাস) বাংলার প্রকৃত আদিবাসী কারা (এবং আমি একমতও আপনার সাথে), কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রাম আর তার আসল অধিবাসীদের ক্ষেত্রে কেন ইতিহাসকে আমলে নিবেননা??
আপনার ঘ্রাণ শক্তিও দেখি প্রচন্ড প্রখর——!!!!!!! তাই ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন!!
বাংলাদেশ ভারতের অংশ ছিল কিন্তু এখন নেই_____হুম এটাইতো ইতিহাস এবং না মেনে উপায় নেই, কিন্তু ভায়া তার মানেতো এই নয় যে এখন নেই দেখে আপনি ইতিহাসকে বেমালুম হাপিস করে দিবেন আর অস্বীকার করবেন ভারতবর্ষের ইতিহাস পরিক্রমার সন্তান এই বাংলাদেশ। তাই বাংলাদেশের অস্তিত্ত্ব যেহেতু ইতিহাসের ধারাবাহিকতার ফল এবং তা অপাংতেয় নয় মোটেও, সেহেতু পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূগোল এবং নৃতত্ত্বের ইতিহাসও কবর দেয়ার মত জিনিষ নয় বা পার্বত্য চট্টগ্রাম দুম করে আকাশ থেকে পড়ে আজকের বাংলাদেশের অংশ হয়ে যায়নি। তাই পার্বত্য এলাকার ১৮৬০ সালের পরবর্তী এবং পূর্ববর্তী ইতিহাস অবশ্যই গুরুত্ত্ব বহনের দাবীদার – স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের জন্য নয়, আত্ম পরিচয় নির্ধারণের জন্য (এই কথাটা অনুধাবন করতে গেলে অবশ্য শুধু সম-অধিকার সমর্থক দাবী করলে হবেনা, সম-অধিকারটাকে মানবিকতা দিয়েও বুঝতে হবে)(নাহলে ১৮৬০ সালের পূর্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম স্বাধীন এলাকা ছিল সেটা বললে ষড়যন্ত্রের গন্ধতো আপনি পবেনই আর হা হা হা ______ অঞ্ছলের ইতিহাস আপনার কাছে গুরুত্বহীন কিন্তু পাহাড়িরা মাত্র কয়েক শতক হল এসেছে {যদিও সময় উল্ল্যেখ করেন নি কিন্তু আপনার কথার সুর ধরে বুঝে নিলাম সেটাই বলতে চাচ্ছেন} জাতীয় ইতিহাস ঠিকই গুরুত্ত্বপূর্ণ)।
আপনি সব মানুষের সম-অধিকারে বিশ্বাসী, কিন্তু সব মানুষের ইতিহাস সমানভাবে জানতে আগ্রহী নন। ইতিহাসই যদি স্বীকার না করলেন তাহলে জনগোষ্ঠীর আত্ম পরিচয়ের আবেদন বুঝবেন কিভাবে!! আপনার সম-অধিকার মানসিকতাতো আমাদের জন্য স্যাট্যাইয়ার হয়ে থাকবে।
বিদ্রঃ সম-অধিকার দেয়া মানে কিন্তু শুধু কোটা দিয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলা নয়।
@মুক্তি চাকমা,
আমি কোনও ষড়যন্ত্রের কথা বলিনি । আপনি ষড়যন্ত্রের কথা বলায় আমি আমার উত্তর পেয়ে গেছি । ইতিহাসে আপনার দখল দেখে আমি রীতিমত হতাশ । পড়ুন ঃ
Although no historical facts can be given, the earliest people to arrive in the Chittagong Hill Tracts (CHT) may belong to the larger Kuki group of peoples: Lushai, Pankho, Mro, Kyang and Khumi. The subsequent migration came from the Tripura group: Murung and Tripura. The Marmas are basically from the Arakan region of the present-day Myanmar (Burma).
The origin of the Chakmas – the largest and most dominant indigenous group – is veiled in legends. According to this legend, they came from a place called Champaknagar and descendants of one of the Prince of the kingdom – Bijoygiri. But legends apart, they probably settled in the CHT at least as early as the sixteenth century – a map of that period by a Portuguese named Joao De Barros show a people called “Chakomas” living in the region, although the exact relations between the Chakomas of Barros’ map and the Chakmas could not be fully corroborated.
During the late eighteenth century when the rule of the East India Company was established in the province of Bengal, the Chakmas exerted the greatest influence and their kings exercised almost total control over indigenous society of the region
(this proves that not only the other tribes but also chakmas migrated here from some other areas, they have been nomads.
To be termed as indigenous people, one’s ancestor must be born in that certain area like red Indians and aborigines.
The Hill Tracts were excluded area—that does not mean that tribal people, who migrated from other areas would be termed indigenous. And now it is part of Bangladesh, like any other place of Bangladesh, any Bangladeshi citizen can live there.
Anthropological studies show that Bangladeshi people owe their origin to proto- australoid indigenous group, remnants are found in saontal, garo and coal indigenous tribe.
If the chakma and other tribes migrated to and settled in the hill tracts prior to other inhabitants of Bangladesh, they merely may termed as first comer in that particular area. They are not indigenous people.
Indigenous peoples primarily refers to ethnic groups that have historical ties to groups that existed in a territory prior to colonization or formation of a nation state, and which normally preserve a degree of cultural and political separation from the mainstream culture and political system of the nation state within the border of which the indigenous group is located.
Colonization started since 1757 in Bangladesh.
May I ask you to clarify since when the tribes along with chakma tribe started migrating and settling in the hill tracts?
If you please manage time to read Muhommod Habibur Rahman’s Gangariddhhi theke Bangladesh, Professor Sufi Mustafizur Rahman’s writing on Wari Bateshwar, you will find that the Bangladeshi people started living here for 2000 years. So can you please give some evidence which shows that the tribes came here to live prior to the formation of Bengali civilization? Bangla was formed as a nation during King Shashanka’s reigning.
In 1972 the United Nations Working Group on Indigenous Populations (WGIP) accepted as a preliminary definition a formulation put forward by Mr. José Martínez Cobo, Special Rapporteur on Discrimination against Indigenous Populations:
Indigenous populations are composed of the existing descendants of the peoples who inhabited the present territory of a country wholly or partially at the time when persons of a different culture or ethnic origin arrived there from other parts of the world, overcame them, by conquest, settlement or other means, reduced them to a non-dominant or colonial condition; who today live more in conformity with their particular social, economic and cultural customs and traditions than with the institutions of the country of which they now form part, under a state structure which incorporates mainly national, social and cultural characteristics of other segments of the population which are predominant.
In this definition to be an indigenous group, you should be overcome by conquest or reduced to non-dominant or colonial condition—its nice and fortunate that none of these happened to the tribes.
That area was excluded area in1860. Not now, not since 16th December 1971. Tribal people are provided with quota systems in education and job sectors. Please try to show gratefulness without thinking of exclusion. Now the hill tracts are part of Bangladesh, and it is the unique greatness of Bangladeshi people that they never differ in groups, consider everybody as part of Bangladesh.
শেষ প্রশ্ন , আপনি কি বলে নিজেকে পরিচয় দিতে পছন্দ করেন ? উত্তরটা সরাসরি দিবেন।
@পলাশ,
আপনার উত্তর দিতে গিয়ে দেখলাম অনেক বিষয় এখানে কম্প্রিহেন্সিভলি বলতে হবে। তাই আমি বরং সেটা ব্লগ হিসেবেই দেবো ভাবছি। আপাতত অল্প কয়েকদিন দিন বেশী ব্যস্ত এবং নেটওয়ার্কের বাইরে থাকবো, তারপর খুব শীঘ্রই আসছি। তর্কযুদ্ধ চলবে সেই ব্লগে।
সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। আশা করি তখন সব উত্তর পেয়ে যাবেন।
@পলাশ,
আপনি শুধু একা নন, আপনার মত মানসিকতা পোষনকারী একটা বড় অংশই আছে এবং শুনতে শুনতে তাদের কথা আমাদের মূখস্থ হয়ে গেছে। তাই ইকজেক্টলি কি বলবেন বা বলতে চান সেটা বুঝতে কষ্ট হয়না তবুও তর্কের দরকার আছে, যদি কোন একজন নতুন সহমর্মীর সৃষ্টি হয়।
আপাতত আমাকে কয়েকটা উত্তর দিয়ে রাখতে পারেন;
“To be termed as indigenous people, one’s ancestor must be born in that certain area like red Indians and aborigines”
– আপনি কি আমাকে এই সম্পর্কিত যথাযথ কোন আইনী আর্টিকেল বা সেকশন দেখাতে পারবেন, যেখানে বলা আছে যে ইন্ডিজিনাস হতে গেলেই তাকে রেড ইন্ডিয়ান এবং এবরোজিন হিসেবেই জন্মাতে হবে বা কেবল তারাই ইন্ডিজিনাস? বা,আন্তর্জাতিকভাবে মোটামুটি গৃহীত সংজ্ঞা গুলির পুরোটাই কি অনুধাবন করতে পেরেছেন!!
“you will find that the Bangladeshi people started living here for 2000 years. So can you please give some evidence which shows that the tribes came here to live prior to the formation of Bengali civilization”
– আপনি বাংলাদেশী না বলে বাঙ্গালী বললেই ভালো হত। কারণ আমরাও বাংলাদেশী এবং নৃতাত্ত্বিক বা ঐতিহাসিকভাবে আমরা পাহাড়িরা আলাদা। যাক এটাতো অন্তত স্বীকার করলেন যে পার্বত্য চট্টগ্রামে আমরাই ফার্সট কামার।
সে জন্যই বলছি এই এলাকা যে এক্সক্লুডেড ছিল সেটা তুরি মেরে উড়িয়ে দেয়ার জিনিষ নয়।
কেউ কি অস্বীকার করেছে যে বাঙ্গালী জাতির সহস্রবছরের ইতিহাস আছে! কই আমিওতো করিনি!! এটাও অস্বীকার করছিনা যে পাহাড়িরা একটা সময়ে রাজ্য বিজয় এবং পরাজয়ের মাধ্যমেই পার্বত্য অঞ্ছলে এসে থিতু হয়েছে এবং সেটা কয়েক শত বছরের ঘটনা। কিন্তু আপনি আমাকে বলেন বাংলার জনপদ যখন গড়ে উঠছিলো তখন কি সেটা পার্বত্য অঞ্ছলেও বিস্তৃত ছিলো! আপনি খালি ধরে বসে আছেন অতীত কি ছিল ব্যাপার না, বর্তমানে বাংলাদেশের একটি অঞ্ছল এই পার্বত্য চট্টগ্রাম, সেটাই ব্যাপার। এই একই মানসিকতায় কিন্তু সরকার নিজেই নিজের লাইসেন্স বানিয়েছে এই এলাকায় ইচ্ছামত মানবাধিকার লংঘন করার। আমারও তাই আশংকা আপনিও সেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে নেইতো, নাহলে একস্ক্লু্ডেড এরিয়ার ইতিহাসকে মারো গুল্লি, কোটা পাও তাই ঝামেলা না করে সুখে শান্তিতে থাকো জাতীয় কথা বার্তা আপনার লেখায় পাচ্ছি বলে মনে হচ্ছে!!
“Tribal people are provided with quota systems in education and job sectors. Please try to show gratefulness without thinking of exclusion”
– আপনার মতে কিকি উপায়ে আমরা পাহাড়িরা কৃতজ্ঞতা দেখাতে পারি রাষ্ট্রএর প্রতি দয়া করে ক্লারিফাই করবেন কি (এবং আমি সিরিয়াসলিই জিজ্ঞেস করছি)??
– কি কি কারণে আপনার মনে হয় যে আমরা এক্সক্লুডেড হতে চাই? আপনার মুখ থেকে শুনতে চাচ্ছি, (পরবর্তী লেখার জন্য সত্যিই দরকার)
“Now the hill tracts are part of Bangladesh, and it is the unique greatness of Bangladeshi people that they never differ in groups, consider everybody as part of Bangladesh”
– এখানে বোল্ডকৃত অংশের বাংলাদেশী কারা? যদি ভুল না বুঝে থাকি, আপনার লেখার সুরে মনে হচ্ছে আপনি বৃহত্তর বাঙ্গালীকে বোঝাতে চেয়েছেন (সকলের {মূলতঃ আমাদের পাহাড়িদের}প্রতি আচরণ অর্থে)(যেহেতু আপনার ধারণাও হল আমরা বাংলাদেশ থেকে আলাদা হয়ে যেতে চাই)। ইউনিক গ্রেটনেস!! একটু ব্যাখ্যা পেলে ভালো হত।
-ইতিহাস সম্পর্কে আমার অক্ষমতা প্রকাশ করে পক্ষান্তরে দাবী করেছেন আপনার ভালোই দখল আছে ইতিহাসে। মানলাম আমার অক্ষমতা, যদিও তর্ক যুদ্ধ এখনো বাকী আছে অনেক। এখন জিজ্ঞেস করি যে, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রেক্ষাপট এবং মানবাধিকার অবস্থা নিয়েও আপনার আইডিয়া কেমন? তবে ভাই একটা কথা বলে রাখি আপনি যদি উৎস হিসেবে মেজর জেনারেল ইব্রাহীমের কোন কিছুকে ভিত্তি করেন তবে এই তর্ক যুদ্ধই বৃথা।
আমার পরবর্তী ব্লগে আপনার উত্তরগুলি পাবেন আশা রাখি।
@মুক্তি চাকমা,
তর্কের খাতিরে তর্ক নয় । তর্ক করতে হয় যুক্তি দিয়ে, আবেগ দিয়ে নয় । আপনাকে অনেকগুলো প্রশ্ন করেছিলাম যার কোনটারই আপনি উত্তর দেন নি। আপনাকে প্রশ্ন করেছিলাম
১) আপনারা কি বাংলাদেশ রােষ্ট্রর মধ্যে আলাদা কোন রাষ্ট্র চান, না বাংলাদেশ থেকে আলাদা হয়ে যেতে চান ?
২) আপনি কি বলে নিজেকে পরিচয় দিতে পছন্দ করেন ?
সরাসরি উত্তর দিতে না পারলে খামোখা প্যাচাবেন না। বাবার নাম জিজ্ঞেস করলে বাবার নাম ই শুধু বলবেন, চোদ্দগোষ্ঠী্র নাম নয়।
যদি কখন ও মিরপুরে বনফুল স্কুলে আসেন তাহলে সামনা সামনি কথা হবে, ওখানে আমার ছেলে পড়ে। বিতর্কের জন্য ধন্যবাদ ।
খবররে সরাসরি লিঙ্ক থাকলে ভাল হত।
আওয়ামী লীগ তাদের জন্মের সময়ের পরিচয় অর্থাৎ আওয়ামী মুসলিম লীগে আবারো ফেরত যাবার সুযোগ চাইছে তার আরেক সংকেত মনে হয় সাজেদা চৌধূরীর বক্তব্য। নইলে পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে ওনার বক্তব্য আর মৌলবাদী ধরনের লোকজনের বক্তব্যে এত মিল হয় কিভাবে? মৌলবাদীদের যেমন ফতোয়া দিতে কোন লাইসেন্স লাগে না তেমনি মনে হয় সরকারের দায়িত্বশীল মহলেরও যা ইচ্ছে ব্যাখ্যা বা উপযুক্ত তথ্য প্রমান ছাড়াই বলার রাইট থাকে। বিদেশীদের ততপরতা পার্বত্য চট্টগ্রামে ঠিক কি উনি বলতে চান? ওনার সরকার জেনে শুনে বিদেশীদের ষড়যন্ত্র চালাতে দিচ্ছে কেমন করে? বিদেশীদের শয়তানী ধরে ফেললে তাদের সাথে সম্পর্ক চুকিয়ে দেশ থেকে বার করে দিলেই তো ল্যাঠা চুকে। সরকার থেকে পড়ে গেলে তো সেই বিদেশীদের পেছু পেছু দৌড়াতে হবে নাকি কান্না কেঁদে।
মৌলবাদী ধরনের লোকজনেও পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদেশী ষড়যন্ত্র দেখে, সেখানে তারা পূর্ব তিমুর, দক্ষিন সুদানের আলামত দেখে; বিদেশী মিশনারীরা নাকি পার্বত্য চট্টগ্রামে সক্রিয় আছে লোককে ইসলাম থেকে সরিয়ে ফলার কাজে।
এই মহিলার ‘৭১ সালের ভূমিকার জন্য কিছুটা শ্রদ্ধা ছিল, সেটা পুরোই গেছে রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে ওনার দূর্নীতিবাজ ছেলেকে শাস্তি থেকে রেহাই দেওয়ানোর পর। এত নির্লজ্জও মানুষ হতে পারে কিভাবে আর এক সময় এরাই কিভাবে মুক্তিযুদ্ধের মত পবিত্র কোন দায়িত্বের সাথে কোন সাথে যুক্ত ছিল সেটা ভাবলেও অবাক লাগে।
@আদিল মাহমুদ,
সুযোগ চাইছে কি ভাইয়া বলে যে ইতিমধ্যেই ফিরে গেছে।আর ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে যে রসিকতা এরা করল এর থেকে কদর্য জিনিস র কি হতে পারে বলেন ? 🙂
ইরতিশাদ, বিপ্লব রহমান, তামান্না ঝুমু – অসংখ্য ধন্যবাদ
মুক্তি চাকমা, প্রথমত আপনাকে মুক্তমনায় স্বাগতম।
দেশের ভূখণ্ডের কিছু অংশ ও কিছু মানুশকে কিসের লোভে বা লাভে সরকার এমন দুঃসহ ভাবে জিম্মি করে রেখেছে বুঝি না।
[img]http://www.banglanews24.com/images/imgAll/2012September/SM/Sajeda–sm20121002082518.jpg[/img]
উগ্র জাত্যাভিমানের ঝাণ্ডাধারী আওয়ামী স্কুলিং-এর নীট ফল সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর এই কাণ্ডজ্ঞানহীন অশালীন উক্তি [তোরা সবাই বাঙালি হইয়া যা: শেখ মুজিব, ১৯৭২। বাংলাদেশে কোনো আদিবাসী নেই/বাঙালিরাই আদিবাসী/উপজাতিরা বহিরাগত: দীপু মনি, ২০১১]।
স্মরণ করা ভালো, বিগত আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক মন্ত্রী সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী সরাসরি অবস্থান নিয়েছিলেন আদিবাসীদের বিপক্ষে। ২০০৩-০৪ সালে গণবিরোধী ইকো-পার্ক প্রতিরোধ আন্দোলনে গর্জে উঠেছিলো মধুপুরের শালবন এবং মৌলভীবাজার-কুলাউড়ার খাসিয়া পাহাড়। সে সময় আদিবাসীর প্রাণের দাবি উপেক্ষা করে সৈয়দা সাজেদা খাসিয়া পাহাড়ে ইকো-পার্ক প্রকল্প উদ্বোধন করতে চাইলে আদিবাসীরা তাকে কালো পতাকা দেখিয়ে ধাওয়া করে। পিরেন স্নালের তাজা রক্তে রুখে দেওয়া ইকো-পার্ক।
ইতিহাসের লীলায় আদিবাসী শত্রু সৈয়দা সাজেদাই এখন আবার পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক! তিনিও আওয়ামী-ছেলে ভুলানো বুলিটি অহরাত্র আউড়ে চলেছেন:
এ যেনো নরুণ পড়েছে বানরের হাতে! অথবা ভুতেরাই এখন শর্ষের চাষ করছে!
মানলাম, পাহাড়িরা আগে ভালো ছিলো [সরকারি পরিভাষায়: সহজ-সরল উপজাতি], বিদেশীরাই তাদের আস্কারা দিচ্ছে। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন-০১: পাহাড়িরা আগে ভালো [নাকি সহজ-সরল উপজাতি?] থাকায় সরকারের কী কী সুবিধা/উপকার হয়েছে? প্রশ্ন-০২: পাহাড়িরা এখন [খারাপ] হওয়ায় সরকারের কী কী ক্ষতিবৃদ্ধি/অসুবিধা হয়েছে? প্রশ্ন-০৩: বিদেশীদের পাহাড় সফরে সরকারের সিদ্ধান্ত কী উপপাখির মতো? প্রশ্ন-০৪: যদি তাই হয়, বিদেশ/এনজিও [নাকি সাম্রাজ্যবাদ?] বিরোধী বিপ্লবী সৈয়দা সাজেদা-সরকার কেনো অষ্ট্রেলিয়ান ডেপুটি হাইকমিশনারকে গ্রেফতার করে হিম্মতটি প্রদশর্ন করলেন না?
দ্রষ্টব্য: সরকার কিন্তু অনেক তেল খরচ করে পদ্মায় [বিদেশী] কর্জ হালাল করতে বিশ্ব ব্যাংকে দেশে নিয়ে এসেছে। প্রশ্ন-০৫: তাহলে পাকিস্তান/বিএনপি/আইএসআই জুজুর পর সৈয়দা সাজেদা কী বিদেশী জুজু দেখাতে চাইছেন?
প্রশ্নগুলো সহজ; আর উত্তরো তো জানা।
মুক্তি চাকমাকে ধন্যবাদ– এই গুরুত্বপর্ণ বিষয়ে লেখার জন্য। মুক্তমনায় স্বাগতম। চলুক। (Y)
* টাইপো: উপপাখির=উটপাখি।
@বিপ্লব রহমান,
কি বলেন ভাই তাহলে মারাত্বক ক্ষতি না? প্রথমত ভিক্ষা পাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে।যে ভিক্ষার টাকায় নেতানেত্রীরা দেশের সেবার নামে নিজদের সেবা করে থাকেন। ২য় কথা হল আগামীবার মেরে কেটে চুরি চামারী করে হলেও ক্ষমতায় আসতে হবে না? না হলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কে করবে?তার পর পুরা বিচার হবে না সুতরাং আরেক টার্মে ক্ষমতা চাই। না পেলে পরের বার বিরোধী দল হিসাবে সরকারের চোদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধারপুর্বক আবার যুদ্ধাপরাধী বিচারের ইস্যু নিয়ে ক্ষমতায় আসার রাস্তা।যদিও ততদিন যুদ্ধাপরাধীরা মরে ভুত হয়ে যাবে, আর জামাতি ভাইদের কাছে ভাবে মুর্দা পীরের সম্মান।অবশ্য আওয়ামীলীগের যা উন্নতি দেখছি তাতে পরের বার জামাতের সাথে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করলেও অবাক হব না।
যাহোক বিপ্লব ভাই, একটু টপিক থেকে সরে যেতে হচ্ছে , কিছু মনে করবেন না।আপনার অনেক মন্তব্য পড়ে মনে হয় যে আপনি সমাজতন্ত্রের সমর্থক। আমিও নিজেকে ওদিকেই ঝুঁকিয়ে নিচ্ছি। আপনারা( সম্ভবত সাইফুল ইসলাম ভাই ও) মানে যারা সমাজতন্ত্রি তারা কি বিশুদ্ধ সমাজতন্ত্রের ইতিহাস নিয়ে লেখা কিছু বই অথবা সাইট সাজেস্ট করতে পারেন?সমাজতন্ত্রের প্রকৃত ইতিহাস বা এর রূপ নিয়ে ভাল কোন বই আমি পাইনি।কাজেই কিছু বইয়ের না জানালে কৃতজ্ঞ থাকব। খুব ভাল হয় যদি বইগুলো বাংলা তে হয়, সাইটগুলোও। ধন্যবাদ ভাল থাকবেন।
মুক্তি চাকমা,
আপনার প্রতিবাদে আমার সমর্থন রইলো।
এই বছরের গ্রীষ্মে বান্দরবান যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। সেনাবাহিনী যে ভাবে এই অঞ্চলটার ওপরে তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে দেখে দুঃখ লাগলো। আগে সরকারের বনবিভাগের হাতে ছিল এই অঞ্চলটা, এখন সেনাবাহিনীর অধীনে। এমন কি পর্যটনের ব্যবসাটাও আর পর্যটন কর্পোরেশনের হাতে নেই, পুরোপুরি জলপাইদের দখলে। সরকারও এখন মনে হয় সেনাবাহিনীর কাছে জিম্মি। এ হেন সরকারের প্রতিনিধি সাজেদা চৌধুরির আবোল-তাবোল কথায় আশ্চর্যান্বিত হচ্ছি না। তবে এইসব ছ্যাবলামির জোরালো প্রতিবাদ হওয়া দরকার।
@ইরতিশাদ,
আসলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে সেনাবাহিনীই সরকারের জিম্মী হয়ে যায়। ৭১ থেকে এ পর্যন্ত সব ঘটনাই তার সাক্ষ্য বহন করে। বিস্তারিততে নাই বা গেলাম এখানে। কিন্তু, শুধু পাহাড়িদের ব্যাপারে সরকার, সেনাবাহিনী কেউ কারো জিম্মী নয়। উভয়ই একটা কমন আদর্শ শেয়ার করে, সেটা হল (উগ্র)মুসলীম বাংগালী জাতীয়তাবাদ। তাই পাহাড়িদের ব্যাপারে যা কিছুই হচ্ছে সেটা এই মুসলীম বাংগালী জাতীয়তাবাদের প্রতিফলন, সেটা সেনাদের যতটা, সরকারের ততটা, বাঙ্গলাদেশের মুসলীম জনগনেরও ততটা। বাংলাদেশের অন্তত ৯৯% মুসলীম বাঙ্গালী মাত্রই এই মুসলীম বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী।
@কালযাত্রী,
(Y)
@কালযাত্রী,
মানতে পারলাম না। বাংলাদেশের মানুষকে মোটাদাগে ‘মুসলীম বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী’ মনে করাটা বাস্তবোচিত নয় মোটেও। আর একটা কথা, সরকার-সেনাবাহিন্ীর কোন আদর্শ-ফাদর্শ নাই, এ্রদের েকমাত্র উদ্দেশ্য জমিদখল।
@ইরতিশাদ,
আমারো সমর্থন রইল। আর সাথে এটা কামনা করি যে শীগগির বাংলাদেশ এই হাতি সমান সেনা বাহিনী পোষার হাত থেকে নিস্তার পাক।যে সেনাবাহিনীর কাজ হল বসে বসে অন্ন ধংস করা, আর জনগন এর সাথে রাজাসুলভ ব্যবহার করা।